দর্পণ

দর্পণ A Sister Concern of Bangladesh Doctors' Foundation-BDF
(1)

"দর্পণ" ডাক্তার ও মেডিকেল স্টুডেন্ট দ্বারা চালিত স্বাস্হ্য ও স্বাস্হ্য বিষয়ক একটি নিউজ পোর্টাল।দপর্ণের প্রতিষ্ঠাতা ডা. নিরুপম দাশ। ২৬শে মার্চ,২০২০ সালে যাত্রা শুরু করে দর্পন অনলাইন নিউজ পোর্টাল।বর্তমানে দর্পণ নিউজ পোর্টালের প্রধান সম্পাদক হিসেবে আছেন ডা. মাহফুজুর রহমান রাজ এবং ডাঃ মিথিলা ফেরদৌস। বর্তমান সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় সংগঠন "বাংলাদেশ ডক্টরস‘ ফাউন্ডেশন"এর একটি সহযোগী অঙ্গসংগঠন দর্পণ। স

্বাস্থ্য ও স্বাস্হ্য বিষয়ক অনলাইন নিউজ পোর্টাল হলেও সকল বিষয়ের নিউজ এই পোর্টালে প্রকাশ করা হয় থাকে। বিভিন্ন শাখায় ভাগ হয়ে নিউজগুলো প্রকাশিত হয়ে থাকে। শাখা গুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য, বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক, ক্রীড়াঙ্গন, ক্রাইম, শিক্ষা, ক্যাম্পাস পরিচিতি, ক্যারিয়ার, মুক্তবাক, বিডিএফ এ্যাকাডেমিয়া উল্লেখযোগ্য।এছাড়াও সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ নিউজগুলো'এক্সক্লুসিভ 'শিরোনামে প্রকাশিত হয়ে থাকে। স্বাস্হ্য বিষয়ক পরামর্শও ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। এছাড়াও বাংলাদেশে অবস্হিত বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস পরিচিত, বাংলাদেশে ডাক্তারদের জন্য পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি, বিসিএস এর বিশদ বর্ননা এবং দিক নির্দেশনা মূলক লেখা ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ এর মেধাবী ছাত্রছাত্রী তার নিজস্ব লেখনী প্রতিভা প্রকাশ করেন মুক্তবাক অংশে। ভবিষ্যতে দর্পণ অনলাইন পোর্টালের দ্বারা প্রকাশিত হবে একটি সাময়িকী। খুব বেশিদিন যাত্রা শুরু হয়নি দর্পণের,ভবিষ্যতে আরো সমৃদ্ধি লাভ করবে দর্পণ। অদূর ভবিষ্যতে দর্পণ হবে সবচেয়ে সমৃদ্ধ বিশ্বস্ত এবং ভরসাযোগ্য স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক নিউজপোর্টাল। সত্য ও সচ্ছতার মাধ্যমে সময়ের দর্পণে স্বাহ্যসেবাকে প্রতিফলিত করবে "দর্পণ"। দর্পণে লেখা পাঠাতে হলে লেখা সম্পর্কিত ছবি এবং লেখা, নাম -পরিচয় সহ পাঠিয়ে দিন এই ই-মেইলে: [email protected]

20/03/2024
25/02/2024

পত্রিকায় দেখলাম, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে এক শিশুর মুসলমানী করার সময় তার লজ্জাস্থান কর্তন করা হয়েছে । বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং উদ্বেগজনক । তাই এর প্রতিক্রিয়াও বেশী হয়েছে । এখন থেকে কি মুসলমানি করা বাদ দিতে হবে ?

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ লক্ষ শিশু কিশোরের খৎনা করা হয় । এর মধ্যে মারা যায় কত জন ? ১৫ জন ? এত বেশি হওয়ার কথা নয় । ৫ জনও হবে কি না সন্দেহ । ১৫ লক্ষ খৎনার মধ্যে ৫টি মৃত্যু মানে প্রতি ৩ লাখে একটি মৃত্যু । এই সংখ্যা কি ভীতিকর বা আতঙ্কজনক কিছু ? বরং বলা যেত, বছরে এই ৫টি মৃত্যুও যেন না-ঘটে সে জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ।

আমার আবার সত্যতা যাচাই করার ব্যামো আছে । কোনো কিছু শোনা মাত্রই বিশ্বাস করি না, উত্তেজিতও হই না । প্রকৃত ঘটনা জানার ইচ্ছা আমাকে তাড়া করে । সে জন্য ফোন করেছিলাম নোয়াখালী জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিভিল সার্জন মহোদয়কে । তিনি বলেছেন, ‘২২ তারিখ দুপুর বেলা । জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত মেডিক্যাল অফিসার গিয়েছেন হাসপাতালের অন্তঃবিভাগে ভর্তিকৃত রোগী দেখতে । এমন সময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার (SACMO) বিজয় কুমার, শিক্ষানবিশ চিকিৎসা সহকারী (MA) সৌরভ ভৌমিককে সাথে নিয়ে এক শিশুর খৎনা শুরু করেন । যারা এনাটমী পড়েছেন, তারা জানেন, পুরো অংশটি highly sensitive and highly vascular. অগ্রত্বকের নীচের দিকে চামড়া কেটে ফেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং শিশুটি ব্যথায় চিৎকার করে উঠে ।’

তখন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সেলিম আরেকজন ডাক্তারকে সাথে নিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন । খবর পেয়ে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার কোম্পানীগঞ্জে ছুটে যান । কিছুক্ষণ পর নোয়াখালী জেনারেল সার্জারির সিনিয়র কনসাল্ট্যান্টও সেখানে উপস্থিত হন । ততক্ষণে শিশুটি পুরোপুরি শংকামুক্ত । তারপরও শিশুটিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । পরদিন এই শিশুকে দেখতে যান চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন ।

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, বিদ্বেষবশত কিংবা আতংক ছড়ানোর জন্য 'লজ্জাস্থান কর্তন' করা হয়েছে কি না । এর সঠিক উত্তর হল, লজ্জাস্থান কর্তন করা হয় নি । অগ্রত্বক একটু বেশী কেটে ফেলা হয়েছিল এবং এ কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে । SACMO বিজয় কুমার অর্থ উপার্জনের জন্য খৎনা করছিলেন, এবং একই সাথে শিক্ষানবিসকে শেখাচ্ছিলেন । আমি ধারণা করছি, কাঁচিটি শিক্ষানবিসের হাতে ছিল । কর্মপরিধির বাইরে গিয়ে কাজ করায় এবং অনভিজ্ঞতা ও অসাবধানতার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে ।

অতিরিক্ত ত্বক কেটে ফেলা ও বাড়তি রক্তক্ষরণের ঘটনায় অভিযুক্ত উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা বিজয় কুমার দে'কে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বদলি করা হয়েছে । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষানবিশ চিকিৎসা সহকারী সৌরভ ভৌমিককে।

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার খুবই কর্মতৎপর একজন কর্মকর্তা । জরুরী বিভাগে কর্মকালীন সময়ে খৎনা না-করানোর জন্য তিনি অনেক আগেই নির্দেশ দিয়েছেন । সবাই যেন নিজ নিজ জব ডেসক্রিপশন / কর্মপরিধি মেনে চলেন এবং মেডিক্যাল ইথিক্স অনুসরণ করেন, সে ব্যাপারেও তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন । কোনো অঘটন ঘটলে তিনি সেটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন ।

অগ্রত্বকের একটু বেশি কাটায় রক্তক্ষরণ বেশি হয়েছিল । অল্প সমইয়ের মধ্যেই সেটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে । কিন্তু ঘটনাটা ছড়িয়েছে বেশি । কেউ কেউ বংলাদেশে খৎনা না-করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।

জনগণের কাছে কোনো দুর্ঘটনার খবর পরিবেশনের সময় এর কম বেশি না-করে যথাযথভাবে তুলে ধরা উচিত । অগ্রত্বকের চামড়া সামান্য বেশি কেটেছে । কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যম লিখেছে, ‘শিশুর লজ্জাস্থান কর্তন’ । অনেকেই বাছ বিচার না-করে ফেসবুকে এ খবরটিই ছড়িয়ে দিয়েছেন ।

খৎনাকালে শিশুমৃত্যু ঘটায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেশ নড়েচড়ে বসেছে । ইতোমধ্যে তারা দশ দফা নির্দেশনা জারি করেছে । আমি মনে করি মেডিক্যাল ইথিক্স পুরোপুরি অনুসরণ করে অপারেশন পূর্ব পরীক্ষা ও প্রস্তুতি (pre-operative examination and preparation) যথাযথভাবে অনুসরণ করলে দুর্ঘটনা কমে আসবে ।

ঢাকায় শিশুর খৎনা করার সময় শিশুর মৃত্যু নিয়ে অন্যসময় লিখব ।

Zainal Abedin Tito

১৯৮১ সালে মোস্তাফিজুর রহমান সাতকানিয়া কলেজে উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র ছিলেন। তাঁর হৃৎপিণ্ডের ছিদ্র ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্য...
10/11/2023

১৯৮১ সালে মোস্তাফিজুর রহমান সাতকানিয়া কলেজে উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র ছিলেন। তাঁর হৃৎপিণ্ডের ছিদ্র ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে ঠিক করা হয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম ওপেন হার্ট সার্জারী। করেছিলেন অধ্যাপক নবী আলম খান আর অধ্যাপক এস আর খান। অনেক বড় সাহসী কাজ ছিল। সেই আমলে দরিদ্র দেশে যন্ত্রপাতি ছাড়া এই জিনিস করা!

হার্ট খুলার পর হার্ট সচল রাখার হার্ট-লাং মেশিন দিয়েছিল জাপান।

এই দুই ডাক্তারকে ধন্যবাদ জানাই। ইংল্যান্ডে ১২ বছর এটা নিয়ে পড়াশোনা করেন তারা।

07/11/2023

তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-

ঘড়ির কাঁটায় তখন সন্ধ্যা ৬টা। বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। মেঘ বারবার গর্জন করে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে। ভারী বৃষ্টির কবলে পড়ে ব্যাপক ভোগান্তি এড়াতে ঢাকাবাসী দ্রুত নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছে।

গত ৫ অক্টোবর বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় নগরবাসীর এই ছোটাছুটির মধ্যে রাজধানীর তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেল, এক ভিন্ন দৃশ্য।

কমপ্লেক্সের ভেতরে পৃথক কক্ষের সামনে নারী-পুরুষ-শিশু রোগীর সারি। একেক করে রোগী চিকিৎসাকক্ষের ভেতরে যাচ্ছেন। চিকিৎসক সময় নিয়ে রোগী দেখছেন। রোগীকে চিকিৎসাপত্র দিচ্ছেন। চিকিৎসাপত্রের সঙ্গে ছোট ছোট কাগজে ওষুধ লিখে দিচ্ছেন চিকিৎসক। এই কাগজ দেখিয়ে কমপ্লেক্স থেকেই ওষুধ নিচ্ছেন রোগী।

তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ২৬ জুলাই বিনামূল্যে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু হয়। নগরবাসীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের এই নতুন উদ্যোগের আওতায় এখানে রোগীরা ওষুধসহ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন বিনা মূল্যে।

বর্তমানে সারা দেশের মধ্যে শুধু তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই বিনামূল্যে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। এই সেবা নিতে এখানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগী আসছেন।

কমপ্লেক্সে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারী রোগীর সংখ্যা প্রতি মাসেই বাড়ছে। কমপ্লেক্সটির মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, গত আগস্টে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৬৪৭ রোগী। সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৪৭ জন সেবা নিয়েছেন। অক্টোবরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন, নারী ৭৯৮ জন, শিশু ৩৮৬ জন।

কমপ্লেক্সে সম্প্রতি বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসেছিলেন সুমি আক্তার নামের এক নারী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখানকার চিকিৎসকেরা খুব যত্ন নিয়ে রোগী দেখেন। আবার প্রয়োজনীয় ওষুধও দিয়ে দেয় হাসপাতাল।

মো. কাজল নামের আরেক পুরুষ রোগী বলেন, কোনো সরকারি হাসপাতালে এমন সেবা পাওয়া যায়, তা তিনি আগে ভাবতে পারেননি। অনেক জায়গায় টাকা খরচ করেও এমন সেবা পাওয়া যায় না।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার জাতীয় নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পাশেই পরিপাটি, সাজানো-গোছানো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা জানান, একতলা টিনশেড কমপ্লেক্সের সকালের পালার নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ৮টায়। চলে বেলা ২টা পর্যন্ত।

হাসপাতালটির কার্যক্রম পুরোপুরি বহির্বিভাগভিত্তিক। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন বহির্বিভাগ চালু থাকে। বহির্বিভাগে নারী, পুরুষ, শিশুদের (৬-১৩ বছর) পৃথকভাবে সাধারণ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। পাশাপাশি গাইনি-প্রসূতি, অসংক্রামক ব্যাধি, অসুস্থ শিশুর (১-৫ বছর) সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা, দন্তরোগ, জরায়ুমুখ-স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং-প্রতিরোধে ভায়া, বিকল্প চিকিৎসাসেবা বহির্বিভাগ থেকে দেওয়া হয়।

হাসপাতালটিতে জরুরি বিভাগ আছে। সপ্তাহের ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা জরুরি বিভাগ চালু থাকে।

কমপ্লেক্সটির মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে এখানকার সকালের পালায় বিভিন্ন বিভাগে ১১ হাজার ৪৮৯ রোগী সেবা নিয়েছেন। ১১ হাজার ৭৫৮ রোগী সেবা নিয়েছেন অক্টোবরে। সেপ্টেম্বরে জরুরি বিভাগে সেবা নিয়েছেন ৬৫১ রোগী। অক্টোবরে ৬১৭ রোগী।

হাসপাতালটিতে পরীক্ষাগার আছে। এখানে রক্ত-মূত্রের ১৫ ধরনের পরীক্ষা (ল্যাব টেস্ট) করা হয়। হাসপাতালে ইসিজি ও আলট্রাসনোগ্রামের ব্যবস্থা আছে। সব ধরনের পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি রাখা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু হয় বেলা আড়াইটায়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলে। বহির্বিভাগভিত্তিক এই কার্যক্রমে নারী, পুরুষ ও শিশুদের পৃথকভাবে তিনজন চিকিৎসক নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেন। তাঁদের মধ্যে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

হাসপাতালটির মেডিসিনবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুরেশ কুমার নন্দী বলেন, ‘বৈকালিক পালায় রোগীর ভিড় থাকলে আমরা নির্ধারিত সময়সীমার (সন্ধ্যা ছয়টা) পরও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকি। কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দিই না।’

সকাল-বিকেল উভয় পালায় রোগীদের কমপ্লেক্সের ওষুধ বিতরণকেন্দ্র থেকে প্রায় ৩০ ধরনের ওষুধ বিনা মূল্যে প্রয়োজন অনুযায়ী দেওয়া হয়। কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে প্রতিবার রোগীদের ৩ থেকে ৫ দিনের ওষুধ দেওয়া হয়। আর ডায়বেটিস, রক্তচাপ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্‌রোগসহ দীর্ঘমেয়াদি রোগের রোগীদের একবারে দেওয়া হয় এক মাসের ওষুধ।

হাসপাতালটিতে বর্তমানে ২০ চিকিৎসক কর্মরত আছেন। তাঁরা সকাল-বিকেল পালায় রুটিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া নার্স আছেন ১৫ জন। ধাত্রী (মিডওয়াইফ) চারজন। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) ১৯ জন। স্বাস্থ্য পরিদর্শক একজন। স্বাস্থ্য সহকারী একজন।

হাসপাতালটির সহকারী সার্জন মাহমুদা আক্তার বলেন, গত প্রায় এক বছরে কমপ্লেক্সের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা গত বছরের তুলনায় এখন প্রায় দ্বিগুণ। এখানে তেজগাঁও এলাকার বাইরে থেকেও অনেক রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন।

‘মডেল প্রতিষ্ঠান গড়তে চাই’

তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গাজী আহমাদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এক বছরের কিছুটা বেশি সময় আগে এখানে দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন। হাসপাতালটিতে নিয়মশৃঙ্খলায় ঘাটতিসহ বেশ কিছু সমস্যা, সংকট ছিল। তবে সবার সহযোগিতায় এগুলোর যথাসম্ভব সমাধান করা হয়েছে। কমপ্লেক্স এলাকার অবৈধ বসতি-স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। নতুন সাজে কমপ্লেক্সকে সজ্জিত করা হয়েছে। নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে। জরুরি বিভাগ সুসজ্জিত করা হয়েছে। পরীক্ষাগার সম্প্রসারণ ও আধুনিক করা হয়েছে। এখন চিকিৎসকসহ সব স্বাস্থ্যকর্মী সময় মতো হাসপাতালে আসেন। তাঁরা অত্যন্ত আন্তরিকতা নিয়ে রোগীর সেবায় কাজ করেন।

গাজী আহমাদ হাসান আরও বলেন, ‘সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে একমাত্র এখানেই বিনা মূল্যে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু রয়েছে। এই হাসপাতালের সেবার দরজা সবার জন্য খোলা। সেবার মাধ্যমে এই কমপ্লেক্সকে সরকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

03/11/2023

ইতিহাস

ডা. রিয়াদ শরীফ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম আর তাজউদ্দীন আহমেদ ছিল বন্ধুর মতো,,বয়সে দুই তিন মাসের ছোট বড় হবে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধপরবর্তী নানান সময়ে নানা ক্ষেত্রে তাঁদের মতভেদ ছিল কিন্তু তাঁদের বন্ধূর্তে কোনদিন ফাটল ধরেনি,,এখন তারা জেলার ১ নাম্বার সেলে বন্দী।।তারা ছাড়াও আরও ৬ জন বন্দী ছিল তাদের সঙ্গী।।

মাঝে মাঝে দুজন গল্প করেন কিন্তু বেশির ভাগ সময় নিরাসক্ত দৃষ্টিতে বন্ধ সেলের ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন,,হয়তো ফেলে আসা জীবনের কথা ভাবেন কিম্বা তাঁদের প্রিয় মুজিব ভাইয়ের কথা ভাবেন,,

সৈয়দ নজরুল তাজউদ্দিনের দিকে তাকিয়ে বললেন

-- উপরের দিকে তাকিয়ে কি দেখ তাজউদ্দীন?
কিছু দেখি না নজরুল ভাই,, ভাবি!!

-- ভাব? কি ভাব এ সময়ে,,

এইতো কত কিছু,,

--আচ্ছা তাজউদ্দিন ,মুজিব ভাইয়ের প্রতি তোমার কোন রাগ হয়?

রাগ!! রাগ কেন হবে,,!!

-- এই যে তোমাকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিল,,

নাহ,,আমি জানতাম , কিছুদিন পর উনি ঠিকই আমাকে কাছে নিয়ে নিতেন ,,রাগ থাকলে তো আমি এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতাম,,তবে আফসোস হয় নজরুল ভাই, খুব আফসোস হয়,,

-- কি নিয়ে আফসোস ,,,মুজিব ভাই তোমাকে ভুল বুঝেছে সেজন্য,,উনি তো এমনই,,কিছুদিন পর ঠিকই বলতো,,এই চলে আয়, আজ তোকে নিয়ে দুপুরে ভাত খাব ,বিশাল বড় বড় কৈ মাছ রান্না হয়েছে,, আই খাবি ,, কৈ মাছের ঝোল দিয়ে,,,

সেটা আমি জানি ,,কিন্তু আমার আফসোস , যুদ্ধের নয় মাসের গল্প টা আমি মুজিব ভাইকে বলতে পারিনি,,উনি বলেছিল ,আমি শুনবো তাজ,,সব কথা শুনবো, কিন্তু সে সময় আর এলো না ,,মুজিব ভাই আর নেই

তাজউদ্দীন খুব শক্ত মানুষ ছিলেন , তবু তার চোখের কোনে অশ্রু,,

সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেটা না দেখার ভান করলেন,,

অশ্রু মুছে তাজউদ্দীন বললেন ,,আপনার আফোসস হয় কোন কিছু নিয়ে নজরুল ভাই,,??

-- না তাজউদ্দীন ,,আমার বড় কোন কিছু নিয়ে আর আফসোস হয় না ,খালি মনে হয় , দীর্ঘশ্বাস ফেলে নজরুল ইসলাম বলেন ,একটি বার যদি নাফিসার রান্না করা পাবদা মাছ দিয়ে ভাত খেতে পারতাম,,

দুজনেই আবার চুপ করে যায়,,হয়তো ঘুমিয়েও পড়েলেন

কিন্তু ভোর রাতে জেলের ভিতর বেঝে উঠলো পাগলা ঘণ্টা

ভযঙ্কর সে ঘণ্টা,,জেলার আইজি প্রিজন নুরুজ্জামান দৌড়ে গেলেন মূল ফটকে,,ফটকে দাড়িয়ে আছে রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে এক দল ঘাতক,,,সবাই পার মাতাল,, যা করার এরা করবেই,,দরকার হলে ফটক ভেঙে,,

-- গেট খুলেন,,রাষ্ট্রপতির অর্ডার,,

নুরুজ্জামান তবু নিজে রাষ্ট্রপতি মোশতাক কে ফোন দিলেন,,

-- স্যার,,আমি আইজি প্রিজননুরুজ্জামান বলছি,,

আমি জানি সব,,ওরা যা করতে চায় তা করতে দিন,

রাষ্ট্রপতির কথার পর দ্বিতীয় কথা চলে না , তবু হতভম্ব নুরুজ্জামান বললেন,, স্যার এসব কি বলছেন??

যা বলছি , বোঝেন না ,,নাকি কানে কম শোনেন,,এই বলে রাষ্ট্রপতি ফোন রেখে দিলেন,,,

এদিকে পাগলা ঘণ্টার আওয়াজে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ দুজনেরই ঘুম ভেঙে গেল,,

-- এ কিসের ঘণ্টা তাজউদ্দীন,,,আমাদের মৃত্যুর ঘণ্টা !!

হতে পারে,,হওয়া খুব সম্ভব,,বুঝলেন নজরুল ভাই,,,,,,,

কথা শেষ করতে পারলেন না এরই মধ্যে ঘাতক রা ঢুকে গেল,,ছয় জনকে সরিয়ে নিয়ে গেল তারা,,

দুজন দুজনের দিকে অপলক তাকিয়ে রইলো,,মনে পড়ছে সেই পুরনো দিনের কথাগুলো ,,সেই মুজিবনগরে অস্থায়ী সরকারের কথা,,

-- আমাদের বোধহয় সময় শেষ তাজউদ্দীন,,

না,, আরও কিছু সময় বাকি আছে,,জেলার ভিতর তো আর মারবে না,,এটা তো স্বাধীন দেশ,, জেলের ভিতর তো পাকিস্তানিরাও মারে নি,,

-- হু কোথায় মারে সেটাই ভাবছি,,

একটু পর ঘাতক রা কেপটেন মুনসুর আলী আর কামরুজ্জামান কেও নিয়ে এলেন,,

আহারে কত দিন পর দেখলেন মুনসুর আলী আর কামরুজ্জামান কে,,নজরুল ইসলাম ভাবছেন , কামরুজ্জামান এত শুকিয়ে গেল কেন?

চার নেতা,,তারা কত একসঙ্গে কত মিটিং করেছেন , খাওয়া দাওয়া করেছেন,,আবার উনারা একসাথে,,বহু দিন পর,,

কিন্তু সেটা ছিল কয়েক মিনিট ,,এরই মধ্যে সবার চোখ বাধা হয়ে গেল,,এক লাইনে দাঁড় করিয়ে দিল চার জন যেন লেফ রাইট করবে,,,লেফ!! রাইট!! লেফ!! রাইট!!

আর অল্প কিছু মুহূর্ত,,সৈয়দ নজরুল ইসলাম দু হাত সামনের দিকে নিলেন,,,যেন ছুটে আসা বুলেট গুলো হাত দিয়ে থামিয়ে দিবে,,কিন্তু বুলেট আসলে কত স্পিডে যায়,,

নাফিসা যখন তার স্বামীর লাশটা পান তিনি দেখেন বুকের মধ্যে ছোট ছোট ছিদ্র,কিন্তু পিঠের দিকে বিশাল বিশাল গর্ত,,আসলে কত জোড়ে যায় বুলেট,,,তিনি পরম মমতায় পিঠের গর্তগুলো তে হাত দিলেন,,যেন হাত দিলেই গর্ত গুলো পুরন হয়ে যাবে আবার মাংস রক্ত দিয়ে,,

এদিক দিয়ে সবচেয়ে দুর্ভাগা ছিলেন তাজউদ্দীন,, ,,বুলেট উনার পেটে লেগেছিল,,রক্ত ক্ষরণ হতেই থাকে,,কিন্তু মৃত্যু তো হয় না উনার ,,ঘণ্টা খানেক ছিলেন তিনি এ যন্ত্রনা সহ্য করে,,রক্তক্ষরণ হতেই থাকে হতেই থাকে,,কত রক্ত থাকে একটা মানুষের? পাঁচ লিটার ? ছয় লিটার?

উনি অনেকবার বললেন ,পানি!! পানি!!,,
কে দিবে পানি!!আহারে,,

সেই সময় কি ভাবছিলেন তাজউদ্দীন ,,তার প্রিয়তমা স্ত্রী জোহরা বা রিপি, মিমি , রিমি নাকি সোহেলের কথা,,,

কষ্ট থেকেও লোকটা অভিমান ছিল আরও বেশি,,নয়টা মাস এত কষ্ট করলেন , সে স্বাধীন দেশে জেলের ভিতর এভাবে তাকে মরতে হবে,,,তবে কি তিনি স্বাধীনতায় অনিচ্ছুক কোন জাতির জন্য এভাবে কষ্ট করেছিলেন,,,?

সেদিন ১ নাম্বার সেলে নরক নেমে এসেছিল,,কি রক্ত!! গরু জবাই দিলেও কি এত রক্ত হয়,,

পরদিন ভোরে কিন্তু ঠিকই সূর্য্য উঠেছিল,,পূর্ব গগনের ভোরের মিষ্টি আভা ছড়িয়ে পড়েছিল,,কিন্তু যারা ভোর এনেছিল তারা নেই,,তাতে আকাশ বা সূর্য্যএর অবশ্য কিছু যায় আসে না,,,,

01/11/2023

বাজার কথন
ডা. রিয়াদ শরীফ
আর দুদিন পর শুক্রবার।মাসের প্রথম শুক্রবার টা আমি খুব ভয়ে থাকি কারন ঐ দিন আমি বাজার করি।। বলা বাহুল্য , এনেসথেসিয়া মোটামুটি ত্রুটিহীন থাকলেও আমার বাজার হয় অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ।

বাজার এর প্রথম ধাক্কা যায় আমার বুয়া কে সামলাতে,,

-- মামা এগুলো তো চাষের মাছ

আরে কি যে বল বুয়া শিং মাছ কি চাষ হয় ? দেখনা নড়তেছে,,

-- কি যে কন, আমি সুনামগঞ্জের হাওড়ের মানুষ ,,আমি মাছ চিনিনা ,,আমি এসব খাইনা,,

আমি খাই , তুমি রান্ধ।। এরপর দেখি সে নিজের জন্য ডিম ভুনা করতেছে,,বনেদি বুয়া , আমি কিছু বলি না , কারন সার্জনদের পর যাকে আমি সবচেয়ে বেশি যাকে তেল দেই সে হচ্ছে বুয়া।।

বাজার করতে গেলে দরদাম শিখতে হয় যেটা আমি পারি না ,এদিক দিয়ে মেয়েরা এগিয়ে,,আমি একজনকে চিনি, যিনি অনলাইন প্রচুর কেনাকাটা করলেও ঢেঁড়সের কেজি ৮ টাকা কমানোর জন্য প্রায় আধা ঘন্টা বিরতিহীন ভাবে দরদাম করতে পারে এবং সফল হয়,,,মেয়েটির নাম বলছি না তবে সে সুন্দরী এবং একটা সরকারি মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।।

যাই হোক , বাজারে গেলে আমি আমার কলিগ দের দেওয়া বিভিন্ন টেকনিক এপ্লাই করি । যেমন ধরা যাক মুরগী কেনার ব্যাপারটা,,আজকাল কক মুরগি কে নাকি দেশী বলে চালিয়ে দেওয়া হয় , এ ক্ষেত্রে আমার একসময়ের কলিগ মোসাদ্দেক ভাই এর টেকনিক টা ফলো করি,,মোসাদ্দেক ভাই বলেছিল মুরগির পেটের কাছাকাছি ধরে দুই আঙ্গুল দিয়ে জোরে চাপ দিতে হয় ,,যদি মুরগি টা কেক করে শব্দ করে তবে সেটা দেশী আর যদি চিও করে শব্দ করে তবে সেটা কক মুরগি,,

সেদিন মুরগির বাজারে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
-- দেশী মুরগি
কি কন স্যার, আমারে আপনি চিনেন না , আমি দেশী ছাড়া বেচি? কেজি ১২০০ টাকা,,

আমি মোসাদ্দেক ভাই এর টেকনিক এপ্লাই করলাম,, পেটের মধ্যে জোরে চাপ দিলাম,,মুরগি দেখি কোন শব্দ করে না ,আমার দিকে একবার উদাস হয়ে তাকিয়ে মাথা নামিয়ে ফেললো,,আবার চাপ দিলাম , আবারো একই অবস্থা,,

আমি তাড়াতাড়ি মোসাদ্দেক ভাই কে ফোন দিলাম,,
-- ভাই মুরগি কিনতে আইছিলাম,, চাপও দিলাম কিন্তু কোন শব্দ করে না

বলেন কি ? কেক বা চিও কোনটাই করে না ,,

-- না

ভাই এ মুরগি নিয়েন না ,,ঝামেলা আছে,মুরগি টা শকে আছে,,

বলেন কি ভাই মুরগির রানীক্ষেত রোগ এর কথা জানি কিন্তু মুরগি যে শকে যায় এটা তো জানতাম না

এদিকে মুরগির বেপারী রেগে আগুন,,আপনি তো টিপ্পা মুরগি মাইরা ফেলতেছে ,, যান আপনার কাছে মুরগি বেচুম না,,,

এদিকে গরুর মাংস কিনতে আমি মাহফুজার আপার টেকনিক টা খুব কাজে দেয়,,মাহফুজ আপাকে রাগালে অভিশাপ দিত,,

আঙুল তুলে বলতো,আমি অভিশাপ দিচ্ছি তুমি ফেল করবে,,
আমি পলাশ দা, অনিক , সোহেল সবাই আমরা মাহফুজ আপার অভিশাপের শিকার হই এবং ফেল করি,,এবং সেইবার একমাত্র মাহফুজা আপা পাশ করে,,

এরপর আমরা সবাই ঠান্ডা ,, পাশ করার আগ পর্যন্ত আমরা কোনদিন মাহফুজা আপা কে রাগাতাম না ,,

তো আমি যার কাছ থেকে গরুর মাংস নেই তার নাম সাজু ।সে কিছুদিন হয় বিয়ে করেছে,,,

ঐ দিন দুই কেজি মাংস নেবার পর মাহফুজা আপার অভিশাপ টেকনিক এপ্লাই করলাম,তবে একটু অন্যভাবে,,,

যাবার আগে হাত তুলে কসাইয়ের জন্য দোয়া করলাম।

আল্লাহ এই সাজু কসাই নতুন বিয়া করছে।সে যদি ওজনে কম দিয়ে না থাকে তবে তার সংসারে সুখে ভরিয়ে দিও,,প্রেম বাড়িয়ে দিও আর যদি ওজনে কম দিয়ে থাকে , খারাপ মাংস মিশিয়ে থাকে তবে বউয়ের হতে মার খাবার ব্যাবস্থা কর,,আমিন!!,,

আশেপাশের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,তবে আমি কেয়ার করলাম না,,

-- স্যার খাড়ান

এরপর সে ঝুলন্ত রান থেকে এক চাক মাংস কেটে আমার ব্যাগে ভরে দিল,, দেড় দুইশ গ্রামের কম হবে না,,

-- তুমি না বললে ঠিক আছে,,,তবে আমার মাংস দিচ্ছ কেন ?

ওজন ঠিকই আছে,,তবে সকালে মাংসে পানি থাকে,,আপনি যে দোয়া করছেন ,,ওজনে উনিশ বিশ হলে তো বউ এর হাতে মার খাব,,

এই হলো অবস্থা,, বাজারে গেলেই তাই আমার মোসাদ্দেক ভাই আর মাহফুজা আপার কথা মনে আসে,,তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ দেই,, তো আজ এ পর্যন্তই,,

সামনের শুক্রবারের জন্য রেডি হচ্ছি।।।

23/10/2023

আজকে যে বিষয়টা নিয়ে লিখব স্বপ্নেও ভাবিনি এমন কিছু নিয়ে ভাবতে হবে।
আমাদের ব্যাচের প্রাণ Sharmistha Ghosal.আমার সকল সুখদুঃখের সাথী। আমার সংগী ভ্রমনকণ্যা। দুজন মিলে নানা জায়গায় ঘোরাঘুরি করে আমাদের দিন কেটে যায়।
সে পড়াশোনায়ও একনম্বর। শিশু বিষয়ে FCPS ডিগ্রী অর্জনের পর আবার শিশু পরিপাকতন্ত্র বিষয়ে উচ্চতর MD ডিগ্রী লাভ করেছে।
তার এই অর্জন এদেশে অতি বিরল।
ওর মতো মানবিক চিকিৎসকও আমি খুব কম দেখেছি। কাজ ও রোগীদের প্রতি ওর ডেডিকেশনের তুলনা হয়না। আর আমার ব্যাচ K 55 এর যেকোন কাজে সে সবার আগে ছুটে আসে। হোক তা আয়োজন আনন্দ বা কারো অসুস্থতা বা বিপদ আপদ। আর কেউ না থাকুক শর্মি থাকবেই।
ওর লক্ষী মেয়ে পারিজাত অসম্ভব ভালো ছবি আঁকে। একদিনেই ছোট্ট মেয়েটা যেন অনেক বড় হয়ে গেলো।এমন একটা পরিবারকে গতকাল নিজের চোখের সামনে ভেঙে পড়তে দেখলাম। মূহুর্তেই কিভাবে সব আশা আকাংখা স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে যায় অন্তর দিয়ে অনুভব করলাম।

ওর স্বামী ডা. তপন কুমার মন্ডল ,সহকারী অধ্যাপক, সার্জারী বিভাগ, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ, গোপালগঞ্জ (ফেলো আইডি: ৪১৯৮, বিষয়: সার্জারী) গতকাল দুপুরে গোপালগঞ্জ নিকটবর্তী কাশিয়ানী উপজেলায় এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯.৩০ মিনিটে মারা যান।দুপুর থেকে শর্মিষ্ঠার পাশে থাকাতে প্রতিটা মিনিট আর সেকেন্ডে ওর কষ্ট আর উদ্বেগ অনুভব করতে পেরেছি।গোপালগন্জ থেকে সড়কপথে ঢাকায় আনার পুরো সময়টায় শুধু মনে হয়েছে যদি উড়ে চলে যেতে পারতাম। এই সময়টা যদি নষ্ট না হতো।
তপনদা একজন পুত্র,স্বামী বা বাবা হবার পাশাপাশি একজন সুপরিচিত ফেলো, দক্ষ সার্জন , সুচিকিৎসক , সর্বোপরি একজন জনপ্রিয় শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এমন একজন চিকিৎসককে হারানো আমাদের দেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর হলো তা ভাবতেও পারছিনা।
He was at the prime of his surgical and teaching career . এইরকম তরুন সার্জন হয়ত আরো ২০ বছর দেশকে সেবা দিতে পারতেন।এধরনের মৃত্যু কারো জন্যই কাম্য নয়।
আজকে এত কথার উদ্দেশ্য একটাই । পরবর্তীতে যাতে আর কোন শর্মিষ্ঠা স্বামীহারা না হয়, আর কোন পারিজাত বাবার ছায়াহারা হয়ে বড় না হয়।
আমার আজকের প্রস্তাব আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান BCPS এবং সেইসাথে বাকী সব চিকিৎসক সংগঠন এর উদ্দেশ্য।
আমাদের BCPS এবং বাকী সংগঠনগুলোর কল্যান তহবিল আছে। আমরা যারা এসবের সদস্য নিয়মিতই চাঁদা দিয়ে থাকি।
এ তহবিল ব্যবহার করে কি একটা Polytrauma helpline and system develop করা যায়?দেশের যেখানেই একজন চিকিৎসক কোন দূর্ঘটনায় পতিত হবে সাথে সাথে জানানো যাবে এবং immediately air ambulance dispatch করা যাবে।
আমরা জানি আমাদের CMH গুলো very well equipped আর বিভিন্ন সামরিক চিকিৎসকের সাথে কাজ করার সুবাদে আমি জানি they are extremely capable of managing such situations .যদি ঢাকা মেডিকেল বা অন্য multidiscipline hospital দূরে হয় তাহলে কাছের CMH এ রোগীর primary adequate management ensure করবে। আমরা কি সেভাবে একটা chain of treatment system তৈরী করতে পারি? কারন এইরকম road traffic accidents এ every minute is golden, every second counts.
আমি অনেক ছোট ডাক্তার । এ ব্যাপারটা implement এর ব্যাপারে বিভিন্ন জটিলতা ও difficulty হয়ত আমি বুঝতে পারছিনা।কিন্তু earliest possible time এ এইসব চিকিৎসকদের চিকিৎসা করে বাঁচানোর কোন বিকল্প নেই। প্রতিদিন কোন না কোন চিকিৎসক দুর্ঘটনায় পড়ছেন। সব তরুন চিকিৎসকরা অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন।এ চলতে দেয়া যায় না। যেকোন উপায়ে এর প্রতিকার করা অতি জরুরী। করতেই হবে যেভাবে হোক। আমাদের দক্ষ চিকিৎসকের অভাব নেই। অভাব শুধু সদিচ্ছার।
আজকে সকল discipline এর সকল society সকল সংগঠন একসাথে বসে আগান। Accident and emergency কে priority দিয়ে decision নেন।
Road traffic accidents চাইলেই দুদিনে কমাতে পারব না। রাস্তাঘাটে চলাচলও নিয়ন্ত্রন করতে পারবনা। কিন্তু চাইলে দ্রুত চিকিৎসা ensure করতে পারব।
এখানে আমার শিক্ষক , অগ্রজ ও অনুজরা আছেন। আপনারা অসম্ভব মেধাবী। আরও ভালো কোন আইডিয়া বা পরামর্শ থাকলে শেয়ার করতে পারেন। যে যেভাবে পারেন এগিয়ে আসুন।

ডা. মুশতাব শীরা মৌসুমী
K 55
DMC
FCPS ( Pediatrics)
FCPS ( Pediatric Neurology and development)
Fellow ID: 4227
Junior consultant
Upazilla health complex
Nawabganj
Dhaka

17/10/2023

সে বহুকাল আগের কথা,,

ডেনিস ফ্র্যাডিন নামে একজন সার্জন ছিলেন,,বেশ ভারী পদমর্যাদার সার্জন। এখন যেমন সার্জন দের পদোন্নতি তার সার্জন হিসেবে কাজ করার সময় জার্নাল ইত্যাদির উপর নির্ভর করে সে সময় নির্ভর করতো কোন সার্জন কত দ্রুত অপারেশন টি শেষ করতে পারেন, কারন সে সময় এনেসথেসিয়া দেওয়া দূরে থাকুক , ব্যাথা নিরাময়েরই কোন উপায় ছিল না ,,অপারেশনের সময় রোগীর অসহায় চিৎকার আর মৃত্যু ছিল খুব কমন ব্যাপার ।

তো ডেনিস ফ্র্যাডিন তার বন্ধুর একটা অপারেশন করবেন ,,ব্যাথার কথা চিন্তা করে বন্ধু কিছুতেই অপারেশন করতে রাজি না ,,ডেনিস ফ্র্যাডিন তখন বন্ধু কে বললেন
-- বন্ধু“আমরা ব্যথাকে জয় করেছি” “তুমি ভয় পেও না

ফ্র্যাডিন তখন দুই বোতল মদ নিয়ে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকলেন। এক বোতল তার সেই বন্ধু রোগীর জন্য আর অন্য বোতল তার নিজের জন্য, যাতে ব্যথায় কাতর রোগী যখন চিৎকার করে উঠবে তখন তা তিনি সইতে পারেন।”

বন্ধু হাসবে না কাদবে বুঝতে পারছিল না ,,,
আসলে সেই সময় এভাবেই চলতো অপারেশন,,,মদ গাজা আফিম খাইয়ে কিংবা মাথায় আঘাত করে ,, আরও কত কি ,,

এরপর এলো ১৮৪৪ সাল।হোরেস ওয়েলস নামে আমেরিকার একজন ডেনটিস্ট ছিলেন ,,এক রোগীর পোকা খাওয়া দাত তুলবেন,,কিন্তু রোগী দাত তোলার সময় ওয়েলস এর হাতে দাত তোলার বিকট যন্ত্র দেখে ভো দৌড়।।
ওয়েলস এর খুব মন খারাপ হলো ,,

তিনি মন খারাপ ভাব কাটানোর জন্য ভ্রাম্যমান বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখতে যান। সেখানে গার্ডনার কলটন নামে একজন ভদ্রলোক নাইট্রাস অক্সাইড দেখান। ওয়েলস মঞ্চে গিয়ে ওই গ্যাস নেন কিন্তু তার অনুভূতি পুরোপুরি যায় না আর তাই তিনি দেখতে পান যে, অন্য একজন অংশগ্রহণকারী তার পা জোরে জোর বেঞ্চের ওপর আঘাত করায় পা কেটে রক্ত পড়ছে কিন্তু সে কোন ব্যথা পাচ্ছে না। ওই রাতে ওয়েলস দাঁতের অস্ত্রোপচার করার সময় নাইট্রাস অক্সাইড ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তবে এর আগে তিনি নিজের ওপর তা পরীক্ষা করান। তিনি কলটনের কাছ থেকে এই গ্যাস নিয়ে আসেন এবং জন রিগস্‌ নামে তারই এক সহকর্মীকে দিয়ে তার একটা আক্কেলদাঁত তোলান। কোন ব্যথা ছাড়াই দাঁত তোলা সম্ভব হয়।

এরপর আনুষ্ঠানিকতার পালা,,আসল পরীক্ষা ,,শহরের নামী দামী সার্জন ,,গণ্যমান্য লোক সবাই উপস্থিত ,,ওয়েলস ব্যাথা ছাড়া দাত তুলবেন আর ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবেন ,,
কিন্তু এত মানুষ দেখে তিনি খুবই ঘাবড়ে যান এবং যথেষ্ট পরিমাণে গ্যাস প্রয়োগ না করে অস্ত্রোপচার করতে শুরু করেন। তাই, রোগীর দাঁত তোলার সময় সে ব্যথায় চিৎকার করতে থাকে। ওয়েলসের বন্ধুরা তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করতে থাকে।

ওয়েলস পারলেন না ইতিহাসের অংশ হতে,,

ঠিক এরপর দু বছর অবশেষে সেই স্মরণীয় দিন, ১৬ই অক্টোবর, ১৮৪৬ সাল, আমেরিকার বোস্টন শহরের ম্যাসাচুসেস্ট জেনারেল হাসপাতাল, ডেন্টিস্ট উইলিয়াম থমাস গ্রিন মর্টন রোগী এডওয়ার্ড গিলবার্ট এবট এর বাম চোয়ালের পাশে রক্তনালীর টিউমার অপসারণে ইথার গ্যাস প্রয়োগ করে নিরাপদ, ব্যথামুক্ত অপারেশনে সার্জন জন কলিন্স ওয়ারেন সহ সফল হন। এটা ছিল উচ্চ পর্যায়ের এক চিকিৎসক – সুধী সমাবেশের সামনে অনেকটা উন্মুক্ত প্রদর্শনী যাদের উদ্দেশ্যে সার্জন ওয়ারেন বলেন, ভদ্র মহোদয়গণ, এ নয় কোন ছলনা।

এটা পেনিসিলিন আবিষ্কারের মতোই একটা যুগান্তকারী ঘটনা,,সেইদিন শুধু এনেসথেসিয়া যাত্রা শুরু করে নি , যাত্রা শুরু হয়েছিল সার্জারিরও নতুন ভাবে নতুন চিন্তায়,,
গতকাল ছিল সেই ১৬ অক্টোবর,,১৭৭ তম ওয়ার্ল্ড এনেসথেসিয়া ডে,,

দিনটি আমাদের কাছে স্মরনীয় এবং বরণীয়। আজ সার্জারির এত উন্নতি সেটা শুধু মাত্র সম্ভব নিরাপদ এনেসথেসিয়া জন্যই,,
এখন এনেসথেসিয়ার অনেক দিক , অনেক ডাইমেনশন ,,এ করোনা মহামারীর প্রথম সারির যোদ্ধা ছিল এ এনেস্থেটিস্ট রা। সব সময় স্ট্রেসের মধ্যে থাকে বলে একজন এনেস্থেটিস্ট অন্য পেশার মানুষ থেকে গড়ে ১০। বছর কম বাঁচেন,,

একজন ভালো এনেস্থেটিস্ট হলে জানতে হবে সব কিছু,,এখানে কোন শর্ট কাট নেই,,মুহূর্তে রোগী খারাপ হয়ে যাবে যদি এনেস্থেটিস্ট একটু আনমনা থাকেন,,
একজন এনেস্থেটিস্ট সবসময় ইমারজেন্সি ম্যানেজ করেন ,,রোগী কে ঘুম পাড়ানি র মাসী পিসির মতো ঘুম পাড়ান আবার রূপার কাঠি সোনার কাঠির মতো ঘুম থেকে জাগিয়েও তোলেন,,

আরেকটা তথ্য দেই,, এনেস্থেটিস্ট এর অসলে নিজের সময় বলে কিছু নেই রাত যত গভীর ই হোক না কেন রোগী খারাপ হলে আপনাকে যেতে হবে ,,যেতে হবেই ,,কারন

আপনি একজন এনেস্থেটিস্ট
আপনি ইমার্জেন্সির ডাক্তার
মৃত্যু দুতের সঙ্গে যুদ্ধ আপনাকেই করতে হবে,,
আইসিসির র ভেন্টিলেটরে থাকা রোগী টিকে আপনাকেই তুলতে হবে,,
কাজেই একজন দক্ষ এবং বিজি এনেস্থেটিস্ট আসলে নির্বাসিত একজন মানুষ ,,সে একজন ভালো স্বামী হতে পারে না , ভালো সন্তান হতে পারে না , ভালো পিতা হতে পারে না ,,

সবাইকে ১৭৭ তম বিশ্ব এনেসথেসিয়া দিবসের শুভেচ্ছা,,
আপনার এনেস্থেটিস্ট কে চিনুন,,জানুন,,তাদের মূল্যায়ন করুন,,
Dr,Riad Sharif
Office secretary
SYLHET BSA-CCPP বিএস‌এ-সিসিপিপি,সিলেট

19/09/2023

#বাচ্চার_খাদ্য_রুচি_নাকি_অভ্যাস?

নবজাতক শিশু বিশেষজ্ঞ হিসাবে সবচেয়ে বেশি যেই অসুবিধার কথা শুনে থাকি --

বাচ্চার খাবারে রুচি নাই। একদম কিছু খেতে চায় না। অথচ তখনই হয়তো বাচ্চা চিপসের প্যাকেট হতে চিপস বের করে বা দোকানের জুস নল দিয়ে টেনে খাচ্ছে।

তাহলে সমস্যা কোথায়??

সমস্যা হলো যখন মায়েরা খাবারকে রুচি মনে করে। অথচ খাবার একটি অভ্যাস।

Food কে Habit বলে, রুচি বলে না।

যখন বলি বাচ্চা তো এখনই চিপস খাচ্ছে। আবার কেউ চাইলেও একটুকরো দেয় না। তাহলে রুচি নাই বলছেন কেন??

পরবর্তী কথাই থাকে - বাহিরের খাবার খায়, শুধু বাসার খাবার খেতে চায় না। তখন মায়েদের জিজ্ঞেস করি, মা পৃথিবীতে এমন কোন ঔষধ আছে, যা দিলে চোর আর চুরি করবে না?

যদি মনে করেন, ঔষধ খেলেই চোর আর চুরি করবে না - তাহলেই শুধুৃমাত্র ঔষধ দিলে বাচ্চা বাহিরের খাবার না খেয়ে, বাসার খাবার খাবে।

অতএব যে অভ্যাস তৈরি করার দায়িত্ব বাবা-মায়ের, তা কেন চিকিৎসকের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন?

বরং অভ্যাস তৈরি করুন। পৃথিবীর কোন ঔষধ যদি রুচি বাড়ায়ও, এই বাচ্চা অতিরিক্ত রুচির জন্য - আরো বেশি চিপস্, চকলেট, ফোসকা খাবে। বাড়ির তৈরি খাবার খাবে না।

তাই দায়িত্ব নিতে শিখুন। আর অভ্যাস কখনই একদিনে গড়ে উঠে না। সময় দিন। ভিটামিন রুচি বাড়ানোর ঔষধ নয়। যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন, ততই আপনার জন্য মঙ্গল।

শেষে বলি - বাচ্চার দায়িত্ব, ক্ষুধা লাগলে খাবে। আর বাবা-মায়ের দায়িত্ব, বাচ্চা কি ধরনের খাবার খাবে, তা ঠিক করে দেওয়া।

বর্তমান পরিস্থিতিতে উল্টো ঘটনাই সকল সমস্যার কারণ। বাচ্চা ঠিক করে, কি খাবে? চিপস্, চকলেট নাকি আইসক্রিম?

আর ক্ষুদা লাগে বাবা-মাদের। সারাদিন একই দুশ্চিন্তায় থাকে - বাচ্চাতো কিছুই খেলো না। ফলে ২০-৩০ মিনিট পর পরই একটা খাবার নিয়ে বাচ্চার সামনে হাজির হয়। আর বাচ্চা খাবার দেখলেই চিল্লাচিল্লি করে। খেতে তো চায়ই না, সাথে জোর করার জন্য, বমি করে পরিস্থিতি আরো কঠিন করে তোলে।

বাচ্চার খাবারে গ্যাপ তৈরি করুন। ক্ষুধা বুঝতে দিন। বাচ্চার বাড়ির খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন। অকারণে নিজের দায়িত্ব চিকিৎসকের উপর চাপিয়ে দিবেন না।

Mohammad Neamat Hossain Ripon
সহকারী অধ্যাপক (নিওনেটোলজী)
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
SOMC 29
Session 90-91

18/09/2023

নবজাতক শিশু বিশেষজ্ঞ হিসাবে সবচেয়ে বেশি যেই অসুবিধার কথা শুনে থাকি --

বাচ্চার খাবারে রুচি নাই। একদম কিছু খেতে চায় না। অথচ তখনই হয়তো বাচ্চা চিপসের প্যাকেট হতে চিপস বের করে বা দোকানের জুস নল দিয়ে টেনে খাচ্ছে।

তাহলে সমস্যা কোথায়??

সমস্যা হলো যখন মায়েরা খাবারকে রুচি মনে করে। অথচ খাবার একটি অভ্যাস।

Food কে Habit বলে, রুচি বলে না।

যখন বলি বাচ্চা তো এখনই চিপস খাচ্ছে। আবার কেউ চাইলেও একটুকরো দেয় না। তাহলে রুচি নাই বলছেন কেন??

পরবর্তী কথাই থাকে - বাহিরের খাবার খায়, শুধু বাসার খাবার খেতে চায় না। তখন মায়েদের জিজ্ঞেস করি, মা পৃথিবীতে এমন কোন ঔষধ আছে, যা দিলে চোর আর চুরি করবে না?

যদি মনে করেন, ঔষধ খেলেই চোর আর চুরি করবে না - তাহলেই শুধুৃমাত্র ঔষধ দিলে বাচ্চা বাহিরের খাবার না খেয়ে, বাসার খাবার খাবে।

অতএব যে অভ্যাস তৈরি করার দায়িত্ব বাবা-মায়ের, তা কেন চিকিৎসকের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন?

বরং অভ্যাস তৈরি করুন। পৃথিবীর কোন ঔষধ যদি রুচি বাড়ায়ও, এই বাচ্চা অতিরিক্ত রুচির জন্য - আরো বেশি চিপস্, চকলেট, ফোসকা খাবে। বাড়ির তৈরি খাবার খাবে না।

তাই দায়িত্ব নিতে শিখুন। আর অভ্যাস কখনই একদিনে গড়ে উঠে না। সময় দিন। ভিটামিন রুচি বাড়ানোর ঔষধ নয়। যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন, ততই আপনার জন্য মঙ্গল।

শেষে বলি - বাচ্চার দায়িত্ব, ক্ষুধা লাগলে খাবে। আর বাবা-মায়ের দায়িত্ব, বাচ্চা কি ধরনের খাবার খাবে, তা ঠিক করে দেওয়া।

বর্তমান পরিস্থিতিতে উল্টো ঘটনাই সকল সমস্যার কারণ। বাচ্চা ঠিক করে, কি খাবে? চিপস্, চকলেট নাকি আইসক্রিম?

আর ক্ষুদা লাগে বাবা-মাদের। সারাদিন একই দুশ্চিন্তায় থাকে - বাচ্চাতো কিছুই খেলো না। ফলে ২০-৩০ মিনিট পর পরই একটা খাবার নিয়ে বাচ্চার সামনে হাজির হয়। আর বাচ্চা খাবার দেখলেই চিল্লাচিল্লি করে। খেতে তো চায়ই না, সাথে জোর করার জন্য, বমি করে পরিস্থিতি আরো কঠিন করে তোলে।

বাচ্চার খাবারে গ্যাপ তৈরি করুন। ক্ষুধা বুঝতে দিন। বাচ্চার বাড়ির খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন। অকারণে নিজের দায়িত্ব চিকিৎসকের উপর চাপিয়ে দিবেন না।

Mohammad Neamat Hossain Ripon
সহকারী অধ্যাপক (নিওনেটোলজী)

10/09/2023

অতিরিক্ত ভালোবাসা ও আহ্লাদ জিনিসটা বোধহয় কখনও কখনও খারাপ ফল নিয়ে আসে। শুধু খারাপ না, বেশ খারাপ।

মধ্যবয়স্ক রোগী। প্রচণ্ডমাত্রার বুকে ব্যথা। বুক ধড়ফড়। ঘাম। পেশেন্ট শকে। অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা যাচ্ছে, সম্ভবত রোগীর হার্ট এটাক হয়েছে। ইসিজিতে চলে এলো ভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া। মনিটরে দেখাচ্ছে হার্ট রেইট ২৪৩ বিটস পার মিনিট! এটা এমনই এক খারাপ অবস্থা যে কার্ডিওলজিতে কাজ করে এমন কোনো চিকিৎসক আমি দেখিনি যিনি বিশেষভাবে এলার্ট না হয়ে যান এমন রোগী এলে। ব্রেইনের মাঝে অটোমেটিক্যালি 'স্পেশাল ইমার্জেন্সি এটেনশান'-এর সাইরেন বেজে ওঠে। পেশেন্টের যা অবস্থা তা হৃদরোগ শাস্ত্র অনুযায়ী ডিসি শক দিয়ে তার হার্টের রিদম স্বাভাবিক আনার চেষ্টা করতে হবে অনতিবিলম্বে। ডিসি শক দেওয়ার আগে আমরা পেশেন্ট পার্টিকে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলি। পরে আবার অভিযোগ না যায় ডাক্তার শক দিয়ে আমার ভালো রোগী মেরে ফেলেছে। কে-ই বা চায় অনলাইন পত্রিকার "এ কী করলেন লোভী ডাক্তার : কারেন্টের শক দিয়ে কথা বলতে থাকা রোগীকে খুন (দেখুন ভিডিওসহ)" শিরোনাম হতে?

বুঝিয়ে বলা হলো বিস্তারিত। শক না দিলে মৃত্যুর সম্ভাবনা যে প্রবল তাও জানালাম। রোগীর স্ত্রী অসম্মতি জানালেন এবং যুক্তি হিসেবে যা দাঁড় করালেন তা আমাকে রীতিমতো বিস্মিত করেছে। বললেন উনি 'নরম', শক দেবেন না৷ পেশেন্ট পার্টি পারমিশান না দিলে আমরা শক দিই না। হ্যাঁ, উন্নতবিশ্বে হয়তো পারমিশানের প্রয়োজন পড়ে না প্রটোকল অনুযায়ী কাজ করে। কিন্তু আমাদের এতো এতো খারাপ অভিজ্ঞতা আছে যে পারমিশান ছাড়া শক দেওয়ার এই ঝুঁকি আমরা কখনও নিতে চাই না। ভাবলাম ওষুধ দিয়ে চেষ্টা করে দেখা যাক। সব ওষুধ দেওয়া হলো। এমিওডারোন (এ রোগের প্রধান ওষুধ) নামক ওষুধটি সাপ্লাই নেই। লিখে দিলাম বাইরে ফার্মেসি থেকে নিয়ে আসতে। রোগীর সাথের লোক গেলেন। এই যে গেলেন তার আর দেখা মেলে না৷ আমি আরও আড়াইশো রোগীর ব্যস্ততার মাঝেও চিন্তিতবদনে রোগীর কাছে যাই। সেই ওষুধ তো আর আসে না। রোগীর স্ত্রী বসে বসে পান খায়। মেজাজ চরমে উঠে গেলো। কিছু বললে বলবে রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার করলেন ডাক্তার। ঘণ্টা যায় দুঘণ্টা যায় তিন ঘণ্টা যায়... সে তো আসে না। রোগীর অবস্থা খারাপ থেকে খারাপ হতে থাকে। এরমধ্যে একবার এসে বলে রোগীর এখানে অস্থির লাগছে, বাসায় চলে যেতে চায়, ছুটি দিতে! আক্কেল দেখলে! দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর তারা ওষুধ নিয়ে এসেছেন। ততোক্ষণে রোগী মৃতপ্রায়। শুরু করা হলো ওষুধ। কী ভাবছেন? বেঁচে গেলো? নাহ ডাক্তাররা ম্যাজিশিয়ান না। এই রোগী বাঁচানো যায় না। কোনো চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব না। মনিটরে যখন স্ট্রেইট লাইন চলে এসেছে তখন রোগীর ওয়াইফ বলে আপনারা রোগী বাঁচাতে যেভাবে ভালো হয় করেন শক দিতে চাইলে দিন!! এই কথাটা সাড়ে ৪ ঘণ্টা আগে যদি বলতেন তিনি!

এই মৃত্যুর দায়টা আসলে কার? এই রোগের চিকিৎসা আমি জানি, আমার কাছে মেশিন ছিল আমি কেন শক দিতে পারলাম না? আমার চোখের সামনে কেন রোগী মারা গেলো? আপনি আপনার স্বজনকে অতিমাত্রায় ভালোবাসেন মানলাম, আমরাও আমাদের রোগীকে কম ভালোবাসি না। জানপ্রাণ এক করে আমরা রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। মাঝেমধ্যে আপনার 'আলগা আজাইরা দরদ'-এর জন্য পারি না। লোকটা শুধু তড়পাচ্ছিল--এই স্মৃতি আমাকে দংশন করে।

ডা. মারুফ রায়হান খান
মডারেটর, বিডিএফ
বিডিএফ আইডি : ১০৬৪৮০

Address

Shyamoli, Ring Road
Dhaka
1207

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when দর্পণ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to দর্পণ:

Videos

Share


Other Media/News Companies in Dhaka

Show All