27/09/2023
জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সুখী—সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল
বিএনএসঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন—সার্বভৌম বাংলাদেশ। যা বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহত্তম অর্জন। জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের ১৬ মার্চ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে অবিরাম কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিলো একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। সে দেশই হলো এই বাংলাদেশ। আর এই দেশের স্থপতিকে হত্যা করা হলো ১৫ আগস্ট’ ৭৫—এ। স্বাধীনতা বিরোধীচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মৃত্যুঞ্জয়ী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে— ভাষা আমাদের বাংলা, জাতিতে আমরা বাঙালি, ধর্মে আমরা নিরপেক্ষ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করে গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল—এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতী তথা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের উন্নতি। তাদের ভাত, কাপড়, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের গ্যারান্টিসহ বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। শান্তি, স্বস্তি, শৃঙ্খলা ও জান—মালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা তথা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। সকল নাগরিকের জন্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বাঙালির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির আলোকে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধুর উপরি ওই আদর্শ—লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর ডাকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায়। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে মহত্তম ও গৌরবময় ঘটনা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলো ভূলণ্ঠিত। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ও কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ১৯৭৫ সালে পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় বেঁচে যান। পরবর্তীকালে তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ে ৬ বছর ভারতে অবস্থান করেন।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে অবশেষে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।
১৯৮১ সালে দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার পরপরই তিনি শাসকগোষ্ঠির রোষানলে পড়েন। তাঁকে বারবার কারান্তরীণ করা হয়। তাঁকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার সশস্ত্র হামলা করা হয়।
১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সামরিক সরকার তাঁকে আটক করে ১৫ দিন অন্তরীণ রাখে। ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারি এবং নভেম্বর মাসে তাঁকে দু’বার গৃহবন্দী করা হয়। ১৯৮৫ সালের ২রা মার্চ তাঁকে আটক করে প্রায় ৩ মাস গৃহবন্দী করে রাখা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে তিনি ১৫ দিন গৃহবন্দী ছিলেন। ১৯৮৭ সালে ১১ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করে এক মাস অন্তরীণ রাখা হয়। ১৯৮৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা গ্রেফতার হয়ে গৃহবন্দী হন। ১৯৯০ সালে ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে অন্তরীণ করা হয়।
শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে উল্লেখযোগ্য হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে তাঁকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলিবর্ষণ। এতে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, বাবুল ও ফাত্তাহ নিহত হন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাঁকেসহ তাঁর গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও ৩০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী শহীদ হন। লালদীঘি ময়দানে ভাষণদানকালে তাঁকে লক্ষ্য করে ২বার গুলি বর্ষণ করা হয়। জনসভা শেষে ফেরার পথে আবারও তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা হয়।
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বারবার হামলা করা হয়। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপ—নির্বাচন চলাকালে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে তাঁর কামরা লক্ষ্য করে অবিরাম গুলিবর্ষণ করা হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় হেলিপ্যাডে এবং শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের দু’টি বোমা পুতে রাখা হয়। শেখ হাসিনা পৌঁছার পূর্বেই বোমাগুলো সনাক্ত হওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বিএনপি সরকারের সময় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হয় ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট। ঐদিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এক জনসভায় বক্তব্য শেষ করার পরপরই তাঁকে লক্ষ্য করে এক ডজনেরও বেশি আর্জেস গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। লোমহর্ষক সেই হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পেলেও আইভি রহমানসহ তাঁর দলের ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন এবং ৫ শত এর বেশি মানুষ আহত হন। শেখ হাসিনা নিজেও কানে আঘাত পান।
২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে সংসদ ভবন চত্বরে সাবজেলে পাঠায়। প্রায় ১ বছর পর ২০০৮ সালের ১১ জুন তিনি মুক্তিলাভ করেন।
শত বাধা—বিপত্তি এবং হত্যার হুমকিসহ নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা ভাত—ভোট এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাক—স্বাধীনতা। বাংলাদেশ পেয়েছে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা। শেখ হাসিনার অপরিসীম আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।
১৯৯৬—২০০১ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো ছিল: ভারতের সাথে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ং—সম্পূর্ণতা অর্জন। এছাড়া, তিনি কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন, দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: দুস্থ মহিলা ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বয়স্কদের জন্য শান্তি নিবাস, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে একাধারে প্রায় ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জন গুলির মধ্যে রয়েছে, বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ২৪০০০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, ৮.২০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন, ৮ কোটি মানুষকে নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উন্নীতকরণ, ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক জলসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি, ভারতের সাথে স্থলসীমা (ছিটমহল) সমস্যা সমাধান, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের ঋণ প্রদান, চিকিৎসাসেবার জন্য সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, দারিদে্র্যর হার ৩৮.৪ থেকে ২১.৩ শতাংশে হ্রাস, পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল নির্মাণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলির টার্নেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন ওড়ালসেতু নির্মাণ, প্রায় সকল মহাসড়কগুলো চার লেনে উন্নীতকরণ, রেলপথে ব্যাপক উন্নয়ন, আকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট—১ এর সফল উৎক্ষেপন, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার, পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচার, জঙ্গী দমন ইত্যাদি।
উল্লেখ্য যে গত ১৫ বছরে পর্যায়ক্রমে সরকার এক একটি সমস্যার সমাধান করেই চলেছে। ২০০৯ সালে শুরুতেই সরকারকে বিপদে ফেলানোর জন্যে পিলখানা হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। সরকারের বয়স যখন মাত্র দুই মাস তখনই ঘটলো পিলখানার বিডিআর হত্যাকান্ড। জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতা, প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা গতিশীল নেতৃত্বে প্রতিটি সংকটে সরকার উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ও যথাযথভাবে সমস্যার সমাধান করেছে। সম্প্রতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ত্রাস ও দূর্নীতিবিরোধী অভিযান চলছে। এই অভিযানেও সরকার সফল হবে বলে আমরা মনে করি। দেশের মানুষের মানবিক মর্যাদা, সমঅধিকার ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতিমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগকে শতভাগ সফল করতে সকলের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা প্রয়োজন। জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে বিশ্ব নেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাকে মাদার অব হিউমিনিটি বা মানবতার মা হিসেবে উপাধি প্রদান করা হয়েছে।
শান্তি, মানবতা ও উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় তিনি ইতোমধ্যে ৪০টি আন্তর্জাতিক মর্যাদা সম্পন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে জননেত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করছেন।
সম্প্রতি চলমান মাদক, জুয়া, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি বিরোধী অভিযান তারই অংশ বিশেষ।
২০২০ সালের শুরুতেই বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী চলছে, বাংলাদেশে ওই বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার সাথে সাথেই জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও দক্ষ নেতৃত্বের ফলে দ্রুত প্রতিরোধ ও জনসচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ফলে বিশ্বে যেখানে করোনা ভাইরাসে অর্থনৈতিক বিপর্যয়সহ মানুষের চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি ক্ষেত্রে নাজুক অবস্থা ও জনদুর্ভোগ চরমে। সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যবস্থা সচল ছিলো এবং ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়েছে। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সক্ষম হয়েছে। যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্বে অল্প কয়েকটি দেশ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন দেওয়া চালু করতে সক্ষম হয়েছে। অনেক উন্নত দেশ এখনও তাদের জনগণকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে যেখানে সফল হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার জনগণকে করোনা প্রতিরোধে কোভিড—১৯ ভ্যাকসিন দিতে সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পন্নোত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অল্প দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে বলে আমরা আশা করি। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ জাতিসংঘের দাপ্তরিক সকল ভাষায় অনুবাদ হয়ে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ জাতিসংঘের ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে আন্তর্জাতিক প্রামান্য দলিল হিসেবে স্বীকৃত দিয়েছে। যা বিশ্বের সকল নিপীড়িত, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মুক্তিকামী মানুষের মুক্তির সনদ হিসেবে কাজ করছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত আধুনিক সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে জননেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতা ও প্রশংসার সাথে দিনরাত কাজ করে আসছেন। আমরা যার যার অবস্থান থেকে স্বীয় সামর্থ অনুযায়ী জননেত্রী শেখ হাসিনার এ সকল ভাল কাজে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করবো। পাশাপাশি আমরা হৃদয়ে—অন্তরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শকে ধারণ করবো। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষে বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করতে সফলতার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এই উন্নয়ন—অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে প্রত্যেক নাগরিককে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে স্বীয় দায়িত্ব পালন করতে হবে। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস দমনে সরকার যথেষ্ট সফল, তবে গাফটি মেরে বসে থাকা জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা যেন আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেই দিকে সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে। সেই সাথে ব্যাংকিং খাতসহ সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন সুনিশ্চিত করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকলকে সততা ও দেশপ্রেমের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যসমূহ জাগ্রত করতে হবে। উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এখন বাংলাদেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালে মধ্যে বাংলাদেশ পৌঁছে যাবে উন্নত দেশের তালিকায়। এই বছরের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করার জন্যে বর্তমান সরকার কাজ করছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। কিন্তু সুষ্ঠ নির্বাচনের তথাকথিত দাবিতে মার্কিন ভিসানীতির ভয় দেখানোসহ দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশের সদ্যবিদায়ী প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, “যারা ভিসা নীতির ভয় দেখাচ্ছে তারাই আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল।” দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র—চক্রান্তের বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থাকতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। দেশবিরোধী অশুভ শক্তিকে মোকাবেলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে অব্যাহত রেখেছেন। এই উন্নয়ন—অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মনোনীতদেরকে ভোট প্রদান করে নির্বাচিত করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা সুখী—সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চয়ই প্রতিষ্ঠিত হবে জাতি তা প্রত্যাশা করে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতি বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। ২০২৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তাঁর ৭৭তম জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের পক্ষ থেকে তাঁকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক, আমরা হৃদয়ে—অন্তরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শকে ধারণ করবো। আমরা সততা, স্বচ্ছতা ও দেশপ্রেমের সাথে স্বীয় দায়িত্ব পালন করবো।