25/10/2022
ফ্রিল্যান্সিং করতে ল্যাপটপ আর একটি স্মার্ট ফোনের প্রয়োজন, এছাড়া আর কী প্রয়োজন?
- ফ্রিল্যান্সিং জগতে আসতে হলে প্রথমেই আপনার মনকে স্থির রাখতে হবে।
- ধৈর্যের শেষ সীমানায় নিজেকে নিয়ে পোঁছাতে হবে।
- আপনার টার্গেটটি নিশ্চিত করে রাখতে হবে।
- ইনকান নিয়ে ভাবনা ছেড়ে স্কিল নিয়ে ভাবতে হবে।
মনস্থির, ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টি এমন নয় যে আপনি ৩/৪ মাসের কোর্স শেষ করে হাতে নাগালেই কাজ পেয়ে যাবেন। ধরুন, আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করলেন। সাধারণত, কোর্সে আপনাকে কেবল শেখানো হবে,
কোন কাজটি কীভাবে করবেন।
কীভাবে ক্লাইন্টের সাথে ডিল করবেন।
এর থেকে বেশি আপনাকে শেখানো হবে না। সহজভাবে বললে ব্যাপারটি এমন দাঁড়ায় যে, আপনাকে হাত ধরে হাঁটা শেখানো হবে, যখন আপনি হাঁটা শিখে ফেলবেন তখন আপনাকে ছেড়ে দেওয়া হবে মার্কেটপ্লেসে। সুতরাং নিজে নিজেই হাঁটতে হবে।
একটি কোর্স থেকে আপনি কেবল এতটুকুই সাপোর্ট পাবেন। আপনাকে কেউ কাজ এনে দেবে না। কাজের জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতেই হবে। নিজেই ক্লাইন্ট খুঁজতে হবে, নিজেই ক্লাইন্টকে সন্তুষ্ট করতে হবে, এবং আপনার প্রতি ক্লাইন্টের ভরসা বলেন বা বিশ্বাস তা কেবল আপনাকেই অর্জন করে নিতে হবে।
অনেকেই আছেন কোর্স করে কাজ পাচ্ছেন না। যা যা শেখানো হয়েছে সব টেকনিক এপ্লাই করেছেন তবুও কাজ পাচ্ছেন না। তাদের ক্ষেত্রে বলা যায় যে তাদের ভিত্তি মজবুদ করতে পারেননি। আপনি আপনার ভিত্তি মজবুদ করুন কাজ পেয়ে যাবেন। আর কাজ শিখেই যে কাজ পেয়ে যাবেন তা কোনো ইন্সটিটিউট গ্রান্টি দিতে পারবেন না। যারা এসব কথা বলে তাদেরকে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। সুতরাং একমাস, দুইমাস, পাঁচমাস, সাতমাস হোক তবুও আপনাকে আপনার কাজে অটল থাকতে হবে।
ধৈর্য, কথায় আছে সবুরে মেওয়া ফলে। তা কিন্তু অক্ষরে অক্ষরে ঠিক। অনেক সময় দেখা যায় যে ক্লাইন্ট আপনাকে প্রশ্ন করতে করতে আপনার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিবে। তারপর দেখা যায় ক্লাইন্ট বলে উঠে “আমি চিন্তা করে জানাব”। আর আপনি দুইতিন দিন পর পর তাঁকে অনবরত নক দিলেন। তখন সে বিরক্ত হয়ে আপনাকে না বলে দিল আর তাতেই আপনি রেগে গিয়ে উলটো-পাল্টা কিছু বলে দিলেন। সাবধান এমন কাজ করবেন না। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমার একটি ক্লাইন্ট, সে আমার সাথে কাজ নিয়ে কথা বলত কিন্তু কাজ দিত না। বারবার তারিখ করত। আমিও কথা বলতাম। তবে আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম তার থেকে কাজ পাওয়ার। তো হঠাৎ একদিন দেখি ক্লাইন্ট অর্ডার দিয়ে ফেলেছে। তারপর আমাকে ছোট একটি এসএমএস করে বলে,
“তুমি অনেক ধৈর্যশীল। তোমার সাথে আমি কাজ করতে পারি। আর এতদিন আমি কাজ দিব দিব বলে যে তারিখ করেছি তার জন্য দুঃখিত, আমি ছুটিতে ফ্যামিলি নিয়ে ট্যুরে ছিলাম”
এখনো অবধি আমি এই ক্লাইন্টের সাথে কাজ করছি। সুতরাং, ডিজিটাল মার্কেটিং মানে শুধু নির্দিষ্ট ইনকাম নয়, আপনাকে মাথায় রাখতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং মানে হচ্ছে “অন্যের পকেটের টাকা আপনার পকেটে নিয়ে আসা”। আপনি ক্লাইন্টকে অফার করলেন আর ক্লাইন্ট আপনার অফার একসেপ্ট করে ফেলবে এমন আশা করাটা প্রায় বোকামি। বাইরের দেশের মানুষ অনেক হিসেব-নিকেশ করে চলাফেরা করে। তাদের কাছে সময়ের মূল্য যেমন রয়েছে তেমনি এক একটি পয়সারও মূল্য আছে। আপনি ধৈর্য ধরুন, নিজেকে এবং নিজের কাজকে সুন্দরভাবে ক্লাইন্টের সামনে উপস্থাপন করুন।
টার্গেট, আজকে কাজ পাননি কিংবা বিগত কয়েকমাস ধরে কাজ পাননি! ধ্যাত, না-বলে আপনার ক্লাইন্ট খোঁজার টার্গেট প্রতিদিন ফিলআপ করুন। এখানে কখনোই অলসতা টেনে আনবেন না। কিছু কিছু বিষয় আছে যা আপনার চাহিদা মতো ঘটবে না মাঝেমধ্যে ভাগ্যেরও সহায়তা লাগে।
ইনকাম এবং স্কিল, আপনি যদি রাতারাতি বড়লোক হতে চান তাহলে আপনার জন্য ফ্রিল্যান্সিং নয়। আপনি বরং শেয়ার মার্কেটে যান বা অন্য কোথায় যেখানে রাতারাতি কপাল বদলায় কিংবা কপালে কেউ কেউ হাত দিয়ে বসে থাকে। একজন ফ্রিল্যান্সার যখন তার ইনকান দেখায় (আপনার উৎসাহ বাড়ানোর জন্য) তারমানে এই নয় যে আপনি কোর্স কমপ্লিট করলে এভাবে ইনকাম করতে পারবেন। তার ইনকামের পেছনে তার কতটুকু সময়, শ্রম ব্যয় হয়েছে সেটা নিয়ে কখনো ভেবেছেন? উপরের কথাগুলো সময় করে ভেবে দেখবেন।
ফ্রিল্যান্সিং জগতে আপনার স্কিল বা দক্ষতার উপর নির্ভর করে আপনার সফলতা।
ধন্যবাদ,
ভালো থাকুন।😊
সংগৃহীত........