Salma jahan ruji

Salma jahan ruji আল্লাহ,, রাহমানু,জাব্বারু,কাদিরু Simple person
(68)

03/11/2023

বান্ধবীর ভাইয়ের বিয়েতে এসে অচেনা একটা ছেলের হাতে দাবাং মার্কা চড় খেয়ে মানসম্মান খোয়াতে হবে ভাবি নি কখনো।চড়টা খেয়ে মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছিলো তবুও নিজেকে স্বাভাবিক করে মাথাটা ধরে দাঁড়ালাম।

হাও ডেয়ার ইউ?? তোমার সাহস কি করে হয় আদ্রান আহমেদ আর্দ্র চৌধুরী কে চড় মারার,, রেগে লাল হয়ে চিৎকার করে বলল ইয়াশ।

আর আমি ভয়ে এককোণে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,, আসলো ব্যাপার টা হলো আমি ওয়াশরুম থেকে বেরোনোর সময় পিছন থেকে কেউ আমার শাড়ির আঁচল টা টেনে ধরল,, আমি রেগে পিছনে ঘুরেই পিছনে থাকা লোকটাকে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলাম তারপর অনেক গুলি কথা শুনালাম লোকটা রেগে লাল হয়ে তার দু হাত বুকে গুজে দাঁড়িয়ে আছে,, তখন আমার হুঁশ আসলো আরে ওনার দু-হাত তো বুকে রাখা তাহলে আমার শাড়ির আঁচলটা ধরলো কে? তারপর আঁচলের দিকে তাকিয়ে দেখি ওটা আসলে দরজার সিটকেনির সাথে আটকানো, আমি ভয়ে শুকনো একটা ঢোক গিলে ওনার দিকে তাকাতেই ওনিও আমার নরম গালে একটা চড় বসিয়ে দিলেন।

কি হলো কথা বলছো না কেনো বোবা নাকি তুমি??

আমি নিরবতা ভেঙে বললাম,, আপনি আমায় মারলেন কেনো?? যখন দেখলেন আমি ভুল বসত কাজটা করে ফেলেছি তখন আপনার উচিত ছিলো আমার ভুলটা ভাঙিয়ে দেওয়া কিন্তু আপনি সেটা না করে আমার গায়ে হাত তুললেন কেনো??

একে তো ভুল করেছো তার উপর সরি না বলে মুখের উপর বড় বড় কথা বলছো,, অভদ্র মেয়ে।

এই শুনুন ভুল করলে সরি বলতে হয় সেটা আমি জানি, তবে আপনাকে মোটেও সরি বলবো না কেননা আপনি সরি পাওয়ার যোগ্যই নন,, অভদ্র পুরুষ।

এই তুমি জানো আমি কে?? রেগে বলল আর্দ্র।

আপনি যেই লাট সাহেবই হন না কেনো আমি আপনাকে সরি বলবোনা মানে বলবো না।

হেই লিসেন ভুলটা তুমি করেছো তাই তোমার উচিত নিজ দায়িত্বে ভুলটা শুধরে নেওয়া,, পরবর্তীতে আমার সাথে এ ধরনের ভুল করলে ভুল শুধরানোর সময়টা আর পাবে না,, বুঝেছো?? আশা করি বুঝেছো,, এই বলে আর্দ্র চলে গেলো।

এটা কি ধরনের ছেলে কোনো ভদ্রতা জানে না আহ আমার গালটা,, এতো জোরে কেউ মারে, মনে হয় দাঁতই নরিয়ে দিয়েছে।

এই ইয়ানা এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস চল খেতে হবে না?? আন্টি সেই কখন থেকে তোকে খুঁজছে,,,তারপর রোজা (বান্ধবী) ওর সাথে চলে গেলাম।

,,,,,রাতে,,,

কি হলো মা কি এতো মন দিয়ে ভাবছো?? মায়ের পাশে বসে বললাম।

এভাবে আর কতদিন চলবে ইয়ানা তোর বাবার পেনশনের টাকায় তো সংসার চলছে না,, আবার তোর ভার্সিটি,,, বলছি কি একটা চাকরির খোঁজ করনা তাহলে আমাদের মা মেয়ের ভালোভাবেই চলে যাবে।

কি যে বলো মা চাকরি?? সেটা তো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য একটা সোনার হরিণ যেটা কিনতে টাকা লাগে,, আর যেখানে মানুষ মাস্টার্স কম্পিলিট করে আরো বড় বড় সার্টিফিকেট নিয়ে অফিসে অফিসে ঘুরেও তাদের চাকরি হচ্ছে না , সেখানে তোমার মেয়ে কেবল অর্নাস পড়ছে,, তোমার এই অর্নাস পড়ুয়া মেয়েকে কে চাকরি দিবে?? আচ্ছা আমি দুইটা টিউশনি করছি তো কালকে না হয় আরেকটা খুঁজবো তাহলেই হয়ে যাবে,, এবার চলো তো তোমাকে আর এসব ভাবতে হবে না।

সকালে খেয়ে রেডি হয়ে বেরিয়ে পরলাম সাড়ে আটটায় আবার একটা টিউশন আছে ওখান থেকে একেবারে ভার্টিসিটি যাবো তারপর ভার্সিটি শেষে আরেকটা আছে,,, তার উপর আজকে আবার আরেকটা টিউশনি খুঁজতে হবে,,, কথাগুলি ভাবতে ভাবতে হাঁটতে লাগলাম,, রোজাকে ওর বাসা থেকে নিয়ে সোজা ভার্সিটি চলে গেলাম।

দুপুরের দিকে ভার্সিটি শেষে বেরিয়ে পরলাম মাসুমদের বাসার উদ্দেশ্য,, মাসুম হলো আমার স্টুডেন্ট এবার ক্লাস ফাইভ এ পড়ে,,, মাসুম কে পড়ানো শেষ করে রাস্তায় এসে ফোনটা বার করে দেখলাম প্রায় চারটা বেজে গেছে ভাবছি সাড়ে পাঁচটা অবধি দেখবো তারপর বাড়ি চলে যাবো,, এই বলে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে লাগলাম কিছুদূর যাওয়ার পর একটা বড় গাড়ি আমাকে পাচ করে বেরিয়ে গেলো একটুর জন্য আমার গায়ের সাথে লাগেনি।

কত্তবড় অভদ্র গাড়ি আছে বলেই কি এভাবে গায়ের মধ্যে দিয়ে চালাতে হবে নাকি, মনে হচ্ছে ওনার বাপের রাস্তা,, রেগে কথাগুলি বলে সামনে তাকিয়ে দেখি গাড়িটা উঁচু দেওয়াল ঘেরা একটা গেটের ভিতর দিয়ে চলে গেলো আমি সামনে এগিয়ে গেলাম গাড়ির মধ্যে কে আছে সেটা দেখার জন্য,, গাড়ি থেকে একটা ছেলে বার হয়ে সোজা সামনের দিকে চলে গেলো,, উফ ছেলেটার ব্যাগ সাইট দেখেই ক্রাশ নামক বাঁশটা খাইলাম দুঃখের বিষয় মুখটা দেখতে পেলাম না,, কেবলি ভালোমতো ক্রাশটা খাবো তখনি মনে মধ্যে একটা গান বেজে উঠল,

৷৷ বালিকা তোমার প্রেমের পদ্দ দিও না এমন জনকে, যে ফুলে ফুলে উড়ে মধুপান করে অবশেষে ভাঙে মন কে।

না ইয়ানা খবরদার ক্রাশ খাশ না তোর ডিকশিনারির তে প্রেম নামক কোনো শব্দই নাই, তোর জন্য প্রেমে পড়া বারণ,,আমি যখন নিজেকে এসব বলে শান্তনা দিচ্ছিলাম তখনি ওই বড় বাড়ির গেটের ভিতর থেকে একটা বাচ্চা ছেলে ফুরুত করে দৌড়ে বাইরে চলে আসলো আমার সামনে দিয়েই দৌড়ে গেলো মনে হয় রাস্তার উপারে যাবে, তখনি দেখি অপর সাইড থেকে একটা কার আসছে আর পিচ্চি টা রাস্তার মাঝে বসে পড়ে পা থেকে জুতা খুলছে,, আমি চারপাশে দেখে দৌড়ে গিয়ে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে রাস্তার কিনায় আসতে গেলেই হুমরি খেয়ে পড়ে গেলাম বাচ্চাটার কিছু হয়নি কিন্তু আমার হাতে অনেক টা ছড়ে গেছে।

তোমার নাম কি?? আর এভাবে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছিলে??

বাচ্চাটা কোনো কথা বললো না, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল।

কি হলো বলো?? তখনি একটা মেয়ে দৌড়ে আমাদের কাছে এসে ছেলেটাকে বকতে লাগল।

পরশ তোমাকে কতবার বলেছি এভাবে রাস্তায় আসবে না যদি করে আমার কথা শোনো,, মেয়েটা বাচ্চাটাকে বকা দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,, দেখে তো মনে হচ্ছে তুমি আমার থেকে বয়সে ছোট তাই তুমি করেই বললাম,, তোমাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না তবে আজকে তুমি আমার বড় উপকার করলে,,, একি তোমার হাত তো অনেকটা ছড়ে গেছে আসো আমার সাথে।

না না আমি ঠিক আছি,,

কিচ্ছু ঠিক নেই চলো তো,, তারপর ওনি আমাকে নিয়ে বাড়ির মধ্যে চলে গেলো অনেক বড় বাড়ি,, বাড়ির দুপাশে ফুলের বাগান আর মাঝখান দিয়ে রাস্তা আমি বাড়ি ভিতর গিয়ে দেখি ডয়িং রুমে একজন মহিলা আর দুইজন পুরুষ বসে আছে,, একজন বয়স্ক লোক আর একজন ছেলে টাইপ।
মেয়েটা আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো আর সবকিছু বলল।

তোমার কাছে তো আমরা রিনি হয়ে গেলাম,, তুমি আজকে আমাদের অনেক বড় উপকার করলে,,মহিলাটা বলল।

ওনাদের সাথে অনেক কথায় হলো উনারা অনেক ভালো মানুষ, এক পর্যায়ে কথায় কথায় ওনারা জিগাস করলেন যে আমি এদিকে কোথায় যাচ্ছিলাম তখনি বললাম যে টিউশনি খুঁজছিলাম তারপর ওনারা বললেন যে আমি যেনো ওই পিচ্চি মানে পরশকে পড়ায় আমিও রাজি হয়ে গেলাম এতবড় বাড়ি বেতনও ভালো দিবে, তখনি মহিলাটা বলল।

দাঁড়াও তোমাকে আর একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই, এই বলে ওনি মনা বলে কাউকে ডাকতে লাগলেন, আমি ভাবছি যে ওনার মেয়ে হবে হয়ত, কিন্তু না রুমের ভিতর থেকে একটা ছেলে বেরিয়ে আসলো আর ছেলেটাকে দেখে তো আমার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম।

এই অভদ্র মেয়েটা এখানে কি করছে।

এই আপনি অভদ্র পুরুষ,, আপনি এখানে কি করছেন?? নিশ্চয়ই এখানেও খেতে আসছেন বড়লোক দেখেছেন আর চলে আসলেন??

আরে তুমি কাকে কি বলছো?? আমি ওই মেয়েটাকে কিছু বলতে না দিয়ে বললাম,, দাঁড়ান আপু আমি বুঝেছি এনি নিশ্চয়ই চুরি করতে এখানে এসেছে নয়ত বাড়ির ভিতর ঢুকলো কীভাবে,, আর আন্টি আপনার মেয়ে কই মানে যাকে আপনি ডাকলেন মনা।

আরে মনা আমার মেয়ে হবে কেনো আমিতো মনা বলে আমার ছেলেকে ডাকলাম আর এটাই তো আমার ছেলে।

আন্টির কথা শুনে আমি হা করে সেই রাগি ছেলেটার দিকে তাকিয়ে হু হা করে হেসে দিলাম।

#আমার_গল্পে_তুমি🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
্ব

,,,,
চলবে,,,,,,??

15/10/2023

#অবহেলার_শেষে
#পার্টঃ৭_ও_শেষ
"শোন অপরিচিতা বোন এখন তোমার বয়স সবে মাত্র ১৮ হয়েছে। হয়ত তুমি মনে করছ সেই কলেজ লাইফের রিলেশন টা অনেক মজার ছিল। সে অনেক ভালোবাসতো। আরে বোকা মেয়ে সে যদি তোমাকে ভালোবাসতো তবে একেবারের জন্য হলেও তো তোমার পরিবারে বলতে পারত৷ অথবা তার পরিবার থেকে কাউকে পাঠাতে পারত। সে কিন্তু কিছুই করেনি। আরেক টা কথা শোন স্কুল কলেজ লাইফে কেউ কেউ রিলেশন কেন রাখে জানো! কেউ কেউ কেবল মাত্র একটু ফোনে গল্প করার জন্য আর কলেজে, স্কুলে টাইমপাস করার জন্যই রিলেশন করে৷ আবার কেউ কেউ রিলেশনে জড়ায় তার ঐ উঠতি বয়সের চাহিদা মিটানোর জন্য৷ একটা বার লুকিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখো৷ তোমার অবর্তমানে সে হয়তোবা আরেক টা রিলেশনশিপ এ জড়িয়ে গেছে। আবার নতুন করে কাউকে বলছে তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব না৷ তুমি হয়তোবা এখন আমাকে বলবে আমি যে তোমাকে এতো জ্ঞান দিচ্ছি আমি কেন তবে ঐ ভুল টা করেছিলাম৷ আসলে আমার ঐ ভুলের কারনে শিক্ষা হয়েছে বলেই তো তোমাকে আজ বুঝাতে পারছি৷ ভুল থেকেই তো সবাই শিক্ষা নেয়।' এই বলে অবন্তী অপরিচিতাকে বুঝাতে লাগল।
অপরিচিতা বলে উঠল, "আপু আমি যেমন ২ বছরের সম্পর্কের মায়ায় জড়িয়ে গেছি সে কি জড়িয়ে যায় নি?"
আবন্তী বলে, "হ্যা এটা ঠিক বলেছ। এক সাথে চলার ফলেই আসলে মায়া জন্মায় ভালোবাসা জন্মায়। প্রথম দেখায় তো কেবল সুন্দর চেহারাটাই ভালো লাগে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবে ৩-৪ বছরের রিলেশনশিপ এর মায়ার চাইতে ৩ অক্ষরের "কবুল" শব্দটার মায়া অনেক বেশী। হুট করেই একজন কে আই লাভ ইউ বলে ফেলা যায়। কিন্তু কবুল শব্দটা উচ্চারণের সময়ে হৃদয় টা ছিঁড়ে যায়। চোখে থেকে আপনা আপনি পানি ঝরে। সেই পানিটা একদিক দিয়ে সুখের অন্যদিক দিয়ে বেদনার। তুমি আজকে যদি তোমার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে বাড়ি চলে যাও এবং ইদ্দত পালন শুরু করে দাও। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি৷ তুমি কালকেই হাতের 'অনামিকা' আঙুল টার দিকে তাকিয়ে ভাববে এখানে অনেক যত্নের একটা আংটি ছিল। খেতে গেলে ভাববে সে কি খেয়েছে না আমার জন্য কষ্ট পেয়ে না খেয়েই ঘুমিয়ে গেছে। ঘুমাতে গেলে ভাববে সে কি ঠিক মতো ঘুমাতে পারছে নাকি বিছানার দিকে তাকিয়ে আমার কথা ভাবছে! তারপর দিন শেষে পরিসংখ্যান করবে তুমিই তার চাইতে বেশী ভেবেছ। তুমি তার চেয়ে কম ঘুমাতে পেরেছ। তুমিই ঠিক মতো খেতে পারোনি। তখন আবার ভাবতে শুরু করবে ঐ দিন কত কষ্ট করে "আলহামদুলিল্লাহ, কবুল" শব্দ গুলো বলে ছিলাম। আজ এতো তাড়াতাড়ি সব ভুলে চলে এলাম। আমি কি ভুল করিনি! তখন তোমার বুঝে আসবে যে, হ্যাঁ তুমি কি জিনিস পিছনে ফেলে রেখে চলে এসেছ। তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে তুমি আর সেই হারানো জিনিস আগের মতো করে ফিরে পাবে না৷"
অপরিচিতা উত্তর দেয়, "আপু তবে এখন আমি কি করব আমাকে একটা সঠিক রাস্তা বলে দাও"।
অবন্তী বলে, " আমি এতোক্ষণ যা বল্লাম, খুঁজে দেখ তার মাঝেই তোমার সঠিক রাস্তা। তুমি ঐ সব অতীত ভুলে এখন বাস্তবতার চিন্তা করো। এখন তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। বিয়ের পরে তুমি যতই অতীত ভাববে ততই তোমার পাপের পাল্লা ভারী হবে। আর তাছাড়া তুমি যদি এখন আবার সেই পুরাতন প্রেমিক এর কাছে ফিরে যাও তুমি কি ভাবছ তুমি সুখি হবে! মোটেও না। ছোট থেকে ছোট ভুলে সে তোমাকে খোঁটা দিবে৷ তোমার একটু ভুলেই শাশুড়ী ননদের খোঁটা শুনতে হবে। তাই যা বলেছি তাই কর। যাও পিছনের সিটে গিয়ে বসো। রাতে অতীত ভুলের জন্য স্বামীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিও আর সুন্দর করে সংসার শুরু করো।"
অপরিচিতা একটু চুপ থেকে আবার বলে, "সত্যিই যাব আপু"।
অবন্তী বলে, "তো আর কি, যাও পিছনের সিটে যাও৷ আর আমার জন্যও দোয়া করো যেন সব ঠিক হয়ে যায়৷"
অপরিচিতা মুচকি হেঁসে অবন্তীর পাশ থেকে উঠে দুই সিট পিছনে গিয়ে স্বামীর পাশে বসে।
অবন্তীর মুখে ও হাসি ফুটে উঠে। মনে মনে বলতে থাকে, "আল্লাহ আমি পেরেছি নিজে ভুল করলেও অন্যকে ভুল করতে দেইনি৷ আমি তাকে বুঝাতে পেরেছি । আমি একটা সংসার সুন্দর করার উছিলা হয়েছি আল্লাহ। আল্লাহ এই কাজকে উছিলা করে তুমি আমার সংসারটা ঠিক করে দাও। আল্লাহ তুমি ওনার মন পরিবর্তন করে দাও। এখন থেকে যেন উনি আমাকে আগের মতেই ভালোবাসে সেই ব্যবস্থা করে দাও।" (প্লিজ গল্পের শেষে লেখা কথাগুলো অবশ্যই পড়বেন)
অবন্তী আজকে তার বাপের বাড়ি যাচ্ছিল। একা একা তো আর যাওয়ার কথা ছিল না। অবশ্যই তার স্বামী সাথে থাকত। আসার সময় স্বামীকে অনেক বলেছিল কিন্তু তার স্বামী আব্দুল্লাহ বলে, "দেখ আমি কোন মুখ নিয়ে তোমাদের বাড়িতে যাব৷ আমি পারব না৷ আব্বা আমাকে দেখলেই অপমানিত হবেন। আম্মা আমাকে দেখলে অপমানিত হবেন। আমি কারো দিকে মুখ তুলে তাকাতে পারব না৷ কারন মুখ তুলে তাকালেই তারা অপরাধ বোধে ভুগবেন। আমি চাইনা ওনাদের অপমানিত করতে৷ তার চেয়ে ভালো তোমার যেতে মন চায় যাও। আমি গাড়িতে তুলে গিয়ে আসি৷ বাস একবারে তোমাদের এলাকার স্টেশন হয়ে যাবে৷ সেখান থেকে পরে রিকশা করে চলে যাবে৷"
অবন্তী আর কিছুই বলতে পারে না। কারন তার বুঝা হয়ে গেছে, কি ভুল সে করে ফেলেছে। তাই কেবল মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানায়৷ আব্দুল্লাহ ও স্ত্রীকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে নিজে অফিসে চলে যায়৷ আর সেই বাসেই উঠে অন্য আরেক নববিবাহিত দম্পতি। যখনই মেয়েটি তার স্বামীর সাথে না বসে বরং অবন্তীর পাশের খালি সিটে এসে বসল তখনই অবন্তীর মনে হলো হয়তোবা তাদের কোন ঝগড়া হয়েছে নতুবা তার মতোই কোন সমস্যা।
তখনই অবন্তীর প্রশ্নের জবাবে অপরিচিতা বলে তার জীবনের ১ম প্রেমের গল্প। তার ভালোবাসার গল্প এবং তার পরিবার তার অমতে তাকে বিয়ে দিয়েছে সেই গল্প।
অবন্তী অপরিচিতার ভুলটা বুঝতে পেরে নিজের জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলে অপরিচিতা কে বুঝাতে সক্ষম হয়, যে আসলে বিয়ের সম্পর্কটাই আসল সম্পর্ক।
অবন্তীর স্টেশন এসে পরেছে। তাই নামতে যায়, তখন খেয়াল করে পিছনের সিটে তাকিয়ে দেখে অপরিচিতা তার স্বামীর কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে৷ নিজের অজান্তেই হাসি ফুটে উঠে তার ঠোঁটে।
বাস থেকে নেমে রিকশায় উঠে৷ রিকশায় বসে ভাবতে থাকে। আমি কত কিছু হারিয়ে ফেলেছি৷ আজ হয়তোবা উনি সাথে আসলে আমিও এমন করে উনার কাঁধে মাথা রেখে প্রকৃতির সুন্দর্য উপভোগ করতে পারতাম।
বাপের বাড়িতে সবাই জিজ্ঞেস করে, "জামাই কে নিয়ে আসলি না কেন"?
অবন্তী নিজের চেহারা যথাসম্ভব সাভাবিক রেখে বলে, " আসলে উনার আজকে নাকি জরুরি কাজ আছে তাই আসে নাই৷ পরে আসবে"।
কিন্তু অবন্তীর ভাবী বুঝে ফেলে যে অবন্তী মিথ্যা বলছে৷ রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে অবন্তীকে জিজ্ঞেস করে, "অবন্তী তোমার জামাই কি এখনো রাগ করে আছে নাকি? আজকে আসল না কেন"?
অবন্তী ভাবীর কাছে কিছু লুকায় না সব বলে দেয়৷
অবন্তীর ভাবী ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, "কেঁদো না সব ঠিক হয়ে যাবে৷ একটা বাবু হলে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে৷ দেখো নাই তোমার ভাইয়া আগে আমার সাথে কতো রাগ দেখাতো কিন্তু যেদিন শুনছে আমার বাবু হইব ওই দিন থেইকা তো আমি যা বলি তাই শুনে। আগে তরকারিতে একটু লবন কম বেশী হলেই রাগারাগি করত। আর ঐ দিন তরকারিতে ভুলে লবন দেইই নাই কিন্তু চুপচাপ কষ্ট করে খাইয়া নিছে। খাওয়া শেষ কইরা তারপর বলছে। এই তরকারি তে লবন মনে হয় কম হইছে৷ পরে তো আমি দেখি যে লবন দেই নাই। আমি পরে যখন কইলাম আপনে লবন ছাড়া তরকারি কেমনে খাইছেন একবার বললেন ও না। পরে তোমার ভাইয়া কইতাছে, তুমি সারাদিন এতো কষ্ট করো। এই গরমের মধ্যে রান্না করো। আমি একটু কষ্ট করে না হয় খাইলামই'। পুরুষ মানুষের এমনই রাগ বেশী।
কিন্তু দেইখ বাবু হইলে তখন আর রাগ করত না। তুমি যা কইবা তাই শোনব।
( অনেক পুরুষ বলে একবার চিন্তা করি বউ এইটা ডিভোর্স দিয়ে আবার বিয়া করমু খালি পোলাডা/মাইয়াডার দিকে চাইয়া পারি না। তাদের বলি ভাই আপনার পোলা/মাইয়াডা কিন্তু আপনার স্ত্রী এর কারনেই হইছে। সুতরাং সন্তানের চেয়ে সন্তানের মাকে অধিক ভালোবাসতে শিখুন)
অবন্তী মনে মনে ভাবে উনি তো এখনো আমাকে ভালোইবাসে না ঠিক মতো আবার বাবু!
অবন্তীর ভাবি বলে, " অবন্তী হইছে এখন আর চিন্তা করন লাগতো না যাও গিয়ে ঘুমাও। আমিও জাইগা তোমার ভাই মশারি ছাড়াই শুইয়া রইছে৷ যেই মশা! যাই আমি, গিয়ে তোমার ভাইরে মশারি টানিয়ে দিতে হইব", বলেই চলে যায়।
অবন্তী ও নিজের মতো মশারি টানিয়ে শুয়ে পরে। তারপর স্বামীকে ফোন দিয়ে খাওয়াদাওয়ার খোঁজ নিয়ে ঘুমিয়ে পরে৷
দু'দিন পর অবন্তীর আর বাপের বাড়িতে মন বসে না৷ খালি ভাবির কথা গুলো চিন্তা করে। স্বামীকে ফোন দিয়ে বলে এসে নিয়ে যেতে। কিন্তু আব্দুল্লাহ আসবে না জানিয়ে দেয়৷ কোন ভাবনা অন্তর না পেয়ে বাবাকে বলে ফেলে, "আব্বু তুমি একটু বলো না হলে উনি আসবে না"।
অবন্তীর বাবা লজ্জা সত্ত্বেও কোন রকমে মেয়ের জামাইকে কল দিয়ে বাড়িতে আসার কথা বল্লো।
আব্দুল্লাহও শশুড়ের কথা ফেলতে পারল না৷ অবন্তীকে নিতে চলে আসল। খাবার টেবিলে যখন সবাই একসাথে খেতে বসল আব্দুল্লাহ একবারও মাথাটা উচু করতে পারল না, পাছে তার শশুড়ের সাথে চোখাচোখি হয়ে যায়৷ বিকালে স্ত্রী কে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসল আব্দুল্লাহ।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবন্তীকে সাজাতে দেখে প্রশ্ন করে, " এই রাতের বেলায় সাজগোজ করার মানে টা কি?"
অবন্তী একটু লজ্জা মাখা সুরে বলে, "খুব ইচ্ছে হচ্ছিল তাই"।
আব্দুল্লাহ আর কিছু না বলে শুয়ে পরে। অবন্তী হতাশ হয়ে তাকিয়ে থাকে স্বামীর দিকে। "কত কষ্ট করে সাজলাম আর উনি ঘুমিয়ে পরল", মনে মনে রাগে গুনগুন করতে করতে কথাটা বলেই। যত্ন করে আঁচড়ানো চুল গুলোকে আউলা করে দেয় রাগে৷ শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে চোখের কাজল লেপ্টে দেয়। রাগে উল্টো দিকে ফিরে ঘুমানোর চেষ্টা করে৷
হঠাৎ করেই আব্দুল্লাহ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কানে কানে বলে, "এতো রাগ করলে কি চলে?"
আবেগি স্বরে উত্তর দেয় অবন্তী, "কি করব তবে কতো কষ্ট করে সাজলাম আমি আর আপনি কিনা ঘুমিয়ে যাচ্ছেন।"
"তা এতো রাতে সাজগোজ করার মানেটা কিন্তু বুঝলাম না"!
"কেন সেজেছি তা বুঝি আপনি বুঝেন না!"
"না বুঝিনা তো, তুমি না বললে কি করে বুঝব কেন করেছ"।
" আমার একা একা ভালো লাগে না। আপনি তো সারাদিন ই অফিসে থাকেন। আর আমি বাড়িতে সারাদিন একা একা থাকি। আমার বোরিং লাগে"।
"তা ওই একা থাকার সাথে এই সাজুগুজুর কি সম্পর্ক"!
-" কোন সম্পর্ক নেই। আমার মন চাইছে তাই সেজেছি। ন্যাকামি করে কিছু যেমন বুঝে না৷ আপনার শুনতে হবে না কিছু", বলেই একটা কৃত্রিম রাগ দেখিয়ে উল্টো পাশ ফিরে শোয়।
আব্দুল্লাহ অবন্তীর রাগ দেখে হেঁসে ফেলে। অবন্তীকে পিছনে থেকে জড়িয়ে ধরে বলে, "এই শুনো না, আমাদের যদি একটা ছোট্ট মেয়ে থাকত তবে কত ভালো হতো তাই না! সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করত। কতো ভালো হতো তাই না!"
অবন্তী মুখ ঘুড়িয়ে আব্দুল্লাহ বুকে মাথা রাখে। বিড়াল ছানার বুকের সাথে মিশে গিয়ে বলে, 'একটা কথা বলবো আপনাকে?'
- ' বলতে থাকো।'
- ' জানিনা আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা তবু বলি। আমার আর ওর মধ্যে যদিও ৩ বছরের একটা সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কসম করে বলতে পারি আমাদের মধ্যে কোন খারাপ সম্পর্ক ছিল না।'
-- ' অবন্তী এখন ওসব কথা থাক।'
-- ' সব কিছু আপনাকে না বললে যে আমার ভিতরে শান্তি হচ্ছে না। আমার বুকটা ফেটে যায় যখন আপনি আমার সাথে ঠিক মতো কথা না বলেন। আমি অবশ্যই মানছি আমি যা করেছি তার কোন ক্ষমা নেই। তবুও বলি প্লিজ বিশ্বাস করুন আমাদের আট দশটা রিলেশনশিপের মতো আমাদেরটা ছিল না। আমরা এটলিস্ট কোথাও একসাথে ঘুরতে পর্যন্ত যাই নি। আমার ভুল গুলো আমি অবশ্যই মেনে নিয়েছি কিন্তু প্লিজ আপনি কখনো আমাকে চরিত্রহীন বলে মনে করবেন না।'
-- ' অবন্তী, চরিত্রহীন কথাটা হয়তো ছোট। কিন্তু এর মানে অনেক বিশাল। আমি কখনোই হয়তো তোমাকে একথাটা বলতে পারব না। যদি একথা বলতে পারতাম তবে কখনোই তোমাকে ফিরিয়ে আনতাম না। অবন্তী থাক আগে যা হয়েছে তা ভুলে যাও। শুধু এতো টুকুই মনে রেখো আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালোবাসি অনেক। তাই অন্তত এমন কথা আমার সামনে বলো না যাতে আমি কষ্ট পাই।"
-- ' আপনি যে আমাকে ভালোবাসেন এটা আমি খুব ভালো করে জানি। ইনফেক্ট আমিও কোনদিন আপনাকে এতোটা ভালোবাসতে পারব কিনা জানি না। এতো ভালোবাসার পরেও কেন তবে আমাকে দুরে রাখেন। '
-- ' জানি না কেন! কেন জানি একটু রাগ জমে গেছিল তোমার প্রতি।"
-- ' এটাকে রাগ বলে না, ঘৃণা বলে। আপনি আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। তাই আমি যখন আপনাকে একটুও ভালোবাসিনি তখন আস্তে আস্তে আপনার কষ্ট লাগতে থাকে। আর সেই কষ্ট থেকে আস্তে আস্তে আমার প্রতি ঘৃণা জন্মে গেছে। যখনই আমি চাই যে একটু আপনার বুকে মাথা রাখব। তখনই আমার স্পর্শটা পর্যন্ত আপনার ঘৃণা লাগতে থাকে। জানেন আমার কতটা কষ্ট হয়। হয়তো আপনি বলবেন সবাই বলবে যে, আমি অন্য কোথাও যেতে পারিনি বলেই এসে আপনার কাছে ঠাঁই নিয়েছি। আমিও এটা অনেকটাই মানি। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমিও অনেক ভালোবাসি আপনাকে। আপনার প্রতিও আমার অনেক মায়া ছিল। কিন্তু কেন জানিনা আমি শয়তানের কাছে হেরে গেলাম। আমি পারিনি সব ভুলে আপনার বুকে মাথা রাখতে। "
আব্দুল্লাহ কাঁদতে কাঁদতে বলে, ' আমার মা শেষ মুহুর্তে এসে শুধু তোমার জন্য কষ্ট পেয়েছে অবন্তী। মা আমাকে ভরসা করার মতো কারো কাছে রেখে যেতে পারেনি এই জন্য কষ্ট পেতে পেতে মারা গেছে। অবন্তী মায়ের জন্য কি তোমার একটুও মায়া লাগনি?"
অবন্তী ডুকরে ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে হঠাৎই পাগলের মতো করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে, " মা আমাকে এতো ভালোবাসত, আমাকে এতো আদর করত। আমাকে যেদিন বলেছিল "তুই তো আমার মেয়ের মতোই" সেদিন থেকেই উনি আমার কাছে নিজের মায়ের মতোই হয়ে গিয়েছিল। জানিনা তবু কেন আমি মাকে এতোটা কষ্ট দিলাম। ঐ কথা মনে পড়লে আমার কলিজাটা ছিঁড়ে যায়। আজও ঐ ঘরে গেলে আমার চোখে ভেসে ওঠে উনি হাসতে হাসতে বলছেন "তুই তো আমার মেয়ের মতোই"।
অবন্তী আর বলতে পারে না পাগলের মতো কাঁদতে থাকে। আব্দুল্লাহ অবন্তীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে প্লিজ আর বলো না। একটু শান্ত হও নয়তো শরীর খারাপ করবে।"
অবন্তী একটা ভীত বিড়ালের বাচ্চার মতো করে স্বামীর বুকের সাথে লেপ্টে থাকে। একটু পর পর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে।
বেশ অনেকক্ষণ পরে অবন্তীকে চুপ থাকতে দেখে আব্দুল্লাহ বলে, ' এই অবন্তী, ঘুমিয়ে গেছো?'
-- ' না, আর কতক্ষণ এভাবে থাকতে দিন না প্লিজ। আরেকটু শক্ত করে ধরবেন আমাকে! যেন এতোদিনের সব কষ্ট মিশে যায়।'
-- ' অবন্তী, তোমার কি হয়েছে বলতো। আচ্ছা শোন, আজকে থেকে আর অতীতের কোন কিছু নিয়ে ভাবতে হবে না কেমন! আর এই কয়দিনের জন্য দুঃখীত আর বকা দিব না তোমাকে।'
-- ' সত্যি! এভাবে আগলে রাখবেন তো সবসময়। আর একটা কথা দিবেন।'
-- ' আবার কি কথা! '
-- ' আজকের পর থেকে আমি যদি কোন ভুল করি তবে আমাকে প্রয়োজনে যতক্ষণ ইচ্ছে মারবেন। কিন্তু আমাকে আপনার কাছ থেকে দুরে যেতে দিবেন না।
-- ' আচ্ছা ঠিক আছে, এবার বলো ছাঁদে যাবে! আজকে অনেক সুন্দর একটা চাঁদ উঠেছে। '
-- ' এই চাঁদ সবসময়ই উঠবে। কিন্তু আমার এখন যতটা ভালো লাগছে এই ভালো লাগা আর কখনো পাবো না।'
আব্দুল্লাহ মুচকি হেঁসে বলে, 'এভাবেই সব সময় থাকবে তো! যদি আবার কখনো আমাকে ছেড়ে যাও আমি হয়তো বাঁচবো না।'
সেই দিনটা পৃথিবীর ইতিহাসে আর কখনো আসবে না। যতদিন বেঁচে আছি এভাবেই পাশে থাকবো। বিনিময়ে শুধু একটু ভালোবাসা দিবেন।'
আব্দুল্লাহ্ আর কিছু না বলে অবন্তীর কপালে একটা গাঢ় চুমু দেয়। অবন্তী যেন তার জীবনের সবচেয়ে বড় কিছু পায়। সে গুটি মেরে আবারও মিশে যায় স্বামীর বুকে। স্বামীর গেঞ্জি দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে ভাবতে থাকে, 'এরচেয়ে সুখ আর কি হতে পারে। আর আমি কিনা অবৈধতায় সুখ খুঁজেছিলাম। সে আব্দুল্লাহর কানে কানে বলে, 'খুব ভালোবাসি। কখনো ছেড়ে যাবো না। শুধু এভাবে একটু আদর দিও।'
পৃথিবীর দুপ্রান্তের দু'টো মানুষ একত্রে মিলিত হলে হয়তো এভাবেই একে অপরের সাথে জরিয়ে যায়। তারা তখন চাইলেও একে অপরের থেকে দুরে থাকতে পারে না। কোন এক অজানা সুতো তাদের বেঁধে রাখতে চায়। হয়তো সেটা সেই তিন অক্ষরের শব্দ 'কবুল'। এই শব্দটা উচ্চারণ করতে যেমন কষ্ট হয়। ঠিক তেমনি এটা ভেঙে আলাদা হয়ে যাওয়াও হয়তো কষ্ট। পরিশেষে একটা কথাই বলা যায়। অবৈধতার সুতোয় বাঁধা পরার আগেই প্রিয়জনদের এই বৈধ ভালোবাসার সুতোয় বেঁধে দিতে চেষ্টা করুন। হয়তো তারা এই সুতোটা ধরেই জীবন কাটিয়ে দিতে পারে সাচ্ছন্দ্যের মাঝে। ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটা স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন। একে অপরের ভরসায় কাটিয়ে দিক সারাটি জীবন এই কামনা............. ( সমাপ্ত )........

15/10/2023

#অবহেলার_শেষে
#পার্টঃ৬
কথা শেষ হতেই ভাবী আমাকে একটা থাপ্পড় মারে। আমি গালে হাত দিয়ে কাঁদতে থাকি। আর ভাবী আমাকে বকতে থাকে, " তুমি এটা কি করছ? স্বামী হাজারটা দোষ করলেও যেখানে মাটি কামড়ে পরে থাকতে হয় কথাটা ছোট থেকে শুনে আসছি। বারবার বুঝিয়ে ঠিক করতে হয় আর সেখানে তুমি কিনা। ছিহ্ অবন্তী এটা তুমি কি করলে আব্বা আম্মা যদি জানতে পারে কি হবে একবার ভেবে দেখোনি! আব্বা হার্টের রোগী তিনি এসব শুনলে কি একটা অবস্থা হবে ভেবেছ একবার! এই তোমার ভাইয়া যে আমাকে এতো বকাঝকা করে এর পরেও কি আমি এখানে আছি না? আর তুমি কিনা কোন কারণ ছাড়াই স্বামীর সংসার ছেড়ে ছেড়ে চলে আসছ। ঐ'দিন আব্বা জামাই কে এতো গুলো কথা শুনিয়ে আসছে এখন কোন মুখে তুমি জামাইয়ের সামনে যাবে। আর আব্বা কি কোন দিনও জামাইয়ের সামনে যেতে পারবে?আমি কিছু জানি না। এখনো সময় আছে কয়েকদিনের মাঝে যেভাবে পারো জামাইকে বুঝিয়ে চলে যাও। নয়তো পরে আর যেতে পারবে না। আর যেই ৫-৭ দিন আছে এর মাঝেই চলে যাও। নয়তো পরে সারা জীবন পস্তাতে হবে।"
আমি ভাবীকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকি। কেননা, আমি কি করব তখন আমার মাথায় কিছু আসছিল না৷ আমি কেবল কান্নাকাটি ছাড়া আর কিছুই করতে পারছিলাম না৷ ভাবী আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, "এখন আর কেঁদেই কি হবে যা করার তাতো করেই ফেলছো।আমার তোমার ভাইয়াকে বুঝিয়ে বলব দেখি কি হয়। "
আমি ভাবীকে বার বার না করতে থাকি, "ভাবী ভাইয়ার যেই রাগ আমাকে আস্ত রাখবে না। "
ভাবী বলে, "তা কি আব্বাকে বলব এখন যাতে ষ্টোক করতে পারে"?
আমি বলি ভাবী, " না না আব্বুকে ভুলেও বলা যাবে না। সব কিছু যদি ঠিক হয় তবেই আব্বুকে বলো"।
ভাবী বলে, "তা দেখো আগে তুমি কথা বলে যদি ঠিক না হয় তবে না হয় তোমার ভাইয়াকে বলব৷"
অতপর ভাবী চলে যায়।আমি ওনাকে ফোন দেই কিন্তু ফোন ঢুকেনা। আমার নাম্বার টা হয়ত ব্লক করে রেখেছে। আমি ভাবীর ফোন নিয়ে ফোন দেই। ২-৩ বার রিং হওয়ার পরে উনি ফোন ধরে৷
সালাম দিয়ে কেমন আছেন বলতেই উনি উওর দেয়, "আলহামদুলিল্লাহ,কে বলছেন"?
আমি আমতা আমতা করে বলি, " আমি অবন্তী।"
উনি বলেন, "কেন কল দিছেন"?
আমি উত্তর দেই, " কথা ছিল একটু সময় হবে আপনার"?
উনি বলেন, "আমার কোন সময় নেই,আর একবার ও কল দিবেন না"।
আমি কিছু বলতে পারিনা শুধু কাঁদতে থাকি। যতই চেষ্টা করি কান্না থামাতে কিন্তু থামাতে পারিনা।উনি ও-পাশ থেকে কল কেটে দেন। তখন পৃথিবীতে নিজেকেই সবচেয়ে বেশি অসহায় মনে হচ্ছিল। নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম।
পৃথিবীর সব সুখ হয়তো আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। উনার জমানো সব ভালোবাসা হয়তো আমার ভাগ্যে জুটতো। কিন্তু আমি সব ছেড়ে অবৈধতার টানে চলে আসলাম? আমার ভিতরটা হাহাকার করতে থাকে। অনেক বার কল দিয়েছিলাম তারপর৷ একবারও কল রিং হয় নি৷ ওনার মনে হয়তোবা অভিমান গুলো তীব্র আকার ধারন করেছে। কষ্ট পেতে পেতে ভিতর টা শক্ত হয়ে গেছে। আমার জন্য হয়তোবা শুধু ঘৃণা গুলোই অবশিষ্ট আছে।
বাধ্য হয়ে পরের দিন ভাইয়াকেই জানাতে হয় ব্যপার টা। আমার আর তখন কিছুই করার ছিল না৷ ওনাকে আমি আর বুঝাতে পারব না। এতটুকু জ্ঞান আমার হয়ে গিয়েছিল। ভাইয়াকে কথা টা জানাতেই ঐ দিন রাতেই বাড়িতে আসে।
ভাইয়া যখন আমার সামনে দাঁড়ায়, আমি ভাইয়ার দিকে তাকাতে পারি না ভয়ে।এমনিতেই ভাইয়া অনেক রাগী। তার উপর আমি যেই অপরাধ করছি এর কোন ক্ষমা নেই। পাছে ভাইয়া আমাকে মারে, সেই ভয়ে আমি আগেই ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকি। এতে করে ভাইয়া আমাকে আর মারতে পারেনি। কিন্তু কথা শুনিয়েছে প্রচুর। কেন এই রকম একটা কাজ করেছি। তারা কি কখনো আমার খারাপ চেয়েছিল কিনা যার ফলে আমি এই ভুল কাজটা করেছি। আমি কোন জবাব দিতে পারিনি সেই সময়।
পরে ভাইয়াই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, "একটা মাত্র বোন তুই, তোর কষ্ট আমি সহ্য করতে পারব না। আব্দুল্লাহর (আমার স্বামীর নাম) কাছে না হয় আমার একটু ছোট হতে হবে। তবুও তোর জীবনটা তো আমি নষ্ট হতে দিতে পারি না৷ তার আগে তুই একটা কথা বল। আর কোন দিন তুই কোন প্রকার ভুল কাজ করবি না। আব্দুল্লাহর, আমার কথার বাইরে একটা কাজ ও করবি না। আর যদি করিস তবে মনে করবি যে তোর ভাই আর নেই। তুই আর জীবনে ও আমার সামনে আসতে পারবি না।"
আমি কি উওর দিব বুঝে পাইনি। ভাইয়াকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম৷ 'আমি কোন দিন ও তোমার অমর্যাদা হতে দিব না ভাইয়া৷ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও ভাইয়া৷' আমি তখন স্পষ্ট ভাবে ভাইয়ার চোখেও পানি দেখতে পাচ্ছিলাম। ভাইয়েরা যতই রাগী হোক না কেন ছোট বোন গুলো যে তাদের কলিজা সেটা আমি ঐদিন বুঝতে পারি। আমিও অঝোরে কাঁদতে থাকি। আর বলতে থাকি, 'ভাইয়া আই সরি ভাইয়া।'
ভাইয়া আমাকে কিচ্ছু বলতে পারেনি। আমার চোখ মুছিয়ে দিয়ে বলে, 'তুই যে আমার কলিজা, তোর কান্না আমার সহ্য হয়না। আর কাঁদতে হবে না। আব্দুল্লাহ্কে আমি খুব ভালো করেই চিনি। সব ঠিক হয়ে যাবে। '
ভাইয়ার কথা শুনে আমার কান্না থামেনি রবং বেরে গিয়েছিল। কিন্তু ঐ কান্নাটা ছিল খুশির, ভাইয়ার মুখ থেকে আমার প্রতি ভালোবাসার কথাটা শোনা।
পর দিন শনিবার আমার স্বামীর অফিস বন্ধ এটা আমি জানতাম। সকাল বেলায় ভাইয়া আমাকে নিয়ে আমার স্বামীর বাড়িতে যায়। দড়জায় নক করার কিছুক্ষনের মাঝেই উনি দরজা খুলে দেন। ওনার মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে। ঘামার্ত মুখটা দেখে বুঝতে পারছিলাম উনি রান্না করছিলেন। উনি আমাকে দেখেই আবার মুখ ঘুরিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতে নেন। কিন্তু পরবর্তীতে ভাইয়াকে দেখে আর দরজা লাগাতে পারেনি। আমরা দু'জনে ঘরে ঢুকে পড়ি। ভাইয়া আমাকে দুরে যেতে বলে। তারপর ওনার হাত ধরে কি সব যেন বলছিলেন। আমি কিছুই শুনতে পাইনি। কিন্তু সুমুন্দি হয়ে এভাবে ছোট বোনের জামাইর হাত ধরে আকুতি করে কথা বলায় আমার স্বামী বেশ লজ্জা পাচ্ছিলেন। এটা আমি বেশ ভালো করেই বুঝতে পারি। কথা শেষ করে ভাইয়া এক মুহুর্তও দেরি করে নি হনহন করে বেড়িয়ে যায়৷ ভাইয়া চলে যেতেই উনি আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। কিছুক্ষন কি যেন ভাবতে থাকেন। তারপর ঠাস করে আমার গালে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দেন।
আর বলেন, "মেয়েদের মুখের উপরে মারা নিষিদ্ধ তারপরও মারলাম। কেন আসছেন আবার হুম, কেন আসছেন৷ আপনার কোন দরদী না আছে! গেলেন না তার কাছে? কেন আসছেন এইখানে। কি দরকার ছিল আসার। আজকে আপনার জন্য ভাইয়াকে এই ভাবে আমার সামনে দাঁড়াতে হইছে৷ আমি কি জীবনেও আর ভাইয়ার দিকে তাকাতে পারব। ভাইয়াই বা লজ্জায় আমার সামনে আসতে পারবে? আব্বা সেই দিন এতো গুলো কথা বলে গেছে আমাকে৷ এখন আমিই কি করে আব্বার সামনে যাব৷ আর আব্বা জীবনে আমার সামনে দাঁড়াতে পারবে? আমি তাকালেই তো অপমানিত হবেন।কি ভাবছেন কি নিজেকে? পৃথিবীতে একমাত্র আপনিই সব বুঝেন! আর কেউ কিছু বুঝে না! আপনাকে আর কোন দিনও এই ঘরে আনার ইচ্ছে ছিলনা আমার। শুধু ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আমি কিছু বলতে পারিনি। তবে মনে রাখবেন আসছেন এ বাড়িতে থাকেন কোন সমস্যা নেই কিন্তু ভুলেও আমার কোন খাদেমদারি করতে আসতে হবে না। এতো দিন যেমন ভাবে চলে আসছি বাকি দিনও চলতে পারব।"
অতপর আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রান্না ঘরে চলে যান।
আমি যে জীবনে কি জিনিস হারিয়েছি তা তখন বুঝতে পারি৷ কত আদর আহলাদ ভালোবাসা হয়তো আমার জন্য ছিল। কিন্তু ক্ষনিকের ভুলে আমি সব হারিয়েছি৷
বাবা-মার সামনেও আমি অপরাধী হয়ে গেলাম। আমার ভাইয়াকে আমার জন্য নিজের ছোট বোন জামাইয়ের কাছে ছোট হতে হলো৷ আর যিনি আমাকে এতো ভালোবাসতেন তিনিও আমাকে অবহেলা করে চলে গেলেন। তবু অন্য কেউ হলে হয়তোবা আর কোন দিন আমার এ বাড়িতে মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুন ও পেতাম না। কিন্তু উনি তো তবু আমাকে অন্তত ঠাঁই দিয়েছেন। তাতেই আমি খুশি ছিলাম।
ঐ দিনের পর থেকে আর কখনো উনার ভালোবাসা টুকু পাইনি। কখনো সুযোগ পাইনি ওনার বুকে একটু মাথা রাখার । ঘুমের মাঝেও একবারের জন্য জড়িয়ে ধরতে পারিনি৷ একটি বারের জন্যও কাঁধে মাথা রেখে কাঁদতে পারিনি। উনি বিছানায় ঘুমাতেন না আমার স্পর্শ পাবেন বলে৷ সেই আগের মতো সোফাতেই ঘুমিয়ে পরতেন। কত বার চেষ্টা করেছি ফ্লোরে বসে অন্তত ওনার হাতে মাথা রেখে ঘুমাতে। পারিনি, কখনো ঘুম থেকে উঠে ধমকাতে একটুও দেরি করেনি। কতো বার চেষ্টা করেছি পা ছুঁয়ে ক্ষমা চাইতে কিন্তু একটি বারের জন্যও ওনাকে ছুঁতে পর্যন্ত দেন নি৷ আমার ভিতরে কষ্ট গুলো পাহাড়ের মতো বিশাল হতে থাকে৷ প্রতিনিয়ত চোখের পানি ঝরিয়েও কষ্ট কমাতে পারিনি আমি। মাঝে মধ্যে মাঝরাতে উঠে চুপ করে ফ্লোরে বসে থাকতাম। একদৃষ্টিতে ওনার ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। কত সুন্দর একটা মুখ ছিল আগে। আমি যাওয়ার পরে একদম শুঁকিয়ে গেছে। যে মানুষটা কখনো রান্না করেনি সে ঐ ক'টা দিন কি খেয়ে বেঁচে ছিলেন তা আল্লাহ্ তা'য়ালাই ভালো জানেন। ওভাবে কখনো ঘন্টার পর ঘন্টাও বসে থাকতাম। চোখ থেকে পানি গুলো গাল বেয়ে বেয়ে পড়ে গলা পর্যন্ত ভিজিয়ে দিত। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে আবারও ঘুমিয়ে যেতাম।
একদিন রাতে উনি অফিস থেকে ফিরতে খুব দেরি করছিল। টেনশনে আমার বুক শুকিয়ে আসছিল। অতঃপর প্রায় ১০টার দিকে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাড়ি ফিরে। সারা শরীরের কাপড় ভিজে একাকার। একদম কাক ভেজা হয়ে কাঁপতে কাঁপতে ঘরে ঢুকেন। তাড়াতাড়ি কাপড় পাল্টে কোন রকমে ক'টা খেয়ে কাঁথা-মুড়ি দিয়ে সোফায় শুয়ে পড়েন।
রাতে প্রচুর জ্বর আসে। আধোঘুমে গোঙাতে গোঙাতে আবল-তাবল বকতে থাকে৷ ঘুম থেকে উঠিয়ে কাঁধে ভর দিয়ে সোফা থেকে কোন রকম বিছানায় নিয়ে আসি ওনাকে। শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। মাথার নিচে পলিথিন কাগজ দিয়ে মাথায় প্রায় ২ বালতি পানি দিতে হয়। তারপর জ্বর কিছুটা কমে আসে। ভেজা বালিশ থেকে মাথা সরিয়ে আমার পায়ের উপরে শুইয়ে দিই৷
রাত তখন প্রায় ১ টা বাজে আমার চোখেও প্রচুর ঘুম আসে। কিন্তু ওনার মাথাটা পা থেকে সরিয়ে বালিশ দিয়ে আমিও যে একটু ঘুমাবো তার সাহস হয় না। কতোদিন পরে উনাকে কাছে পাওয়ার একটু সুযোগ পেয়েছি সেই ভাবনায়৷ পিঠ দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে থাকি। কখন যে ঘুমিয়ে পরি নিজেও জানিনা।
হঠাৎ ওনার ডাকে ঘুম ভেঙে যায়, "এই অবন্তী, অবন্তী এই উঠ।"
আমি ঘুম জড়ানো কন্ঠে উত্তর দেই, "কি হয়েছে, আবার খারাপ লাগছে"?
উনি বলে, " না এখন একটু ভালো লাগতেছে।"
আমি বলি, "আচ্ছা তবে ঘুমিয়ে থাকুন সব ঠিক হয়ে যাবে।"
উনি বলে, "তুমি এভাবে ঠেস দিয়ে ঘুমাতে পারবে? বালিশ নিয়ে শুয়ে পরো।"
আমি উত্তর দেই, "আসলে বালিশ একটা ভিজে গেছে আর একটাতে কি করো দু'জন ঘুমাবো, তার চেয়ে ভালো এভাবেই ঘুমিয়ে থাকুন আমি ও ঘুমাই।"
আর কোন কথা না বলে উনি উঠে বলিশ নিয়ে শুয়ে পরেন। আর একটু পরে আমাকে ও টেনে শুইয়ে দেন। আমি এমনিতেই বসে বসে ঘুমিয়েছি, আমার ঘুম ভালো হয়নি। ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। তাই বিছানায় মাথা রাখতেই আমি ঘুমে তলিয়ে যাই৷
সকালে ঘুম থেকে উঠে নড়তে পারিনা। তখন ও পুরো পুরি সকাল হয়নি। আমি নিজেকে আবিষ্কার করি ওনার বুকে। একটা মাত্র বালিশে উনি শুয়ে আছেন আর আমি ওনার হাতের উপরে শুয়ে আছি। ওনার ডান হাতের উপরে আমার মাথা আর বাম হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছেন৷ তখন আমার যে কতোটা ভালো লাগে আমি বলে বুঝাতে পারব না। খুশিতে আমার কান্না চলে আসতে থাকে। আমি কোন রকমে মাথাটা ওনার দিকে ঘুরিয়ে ওনার বুকে মুখ রেখে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করি৷ কিন্তু বিভিন্ন ভাবনা আমাকে ঘুমাতে দেয় না। তাই বিড়ালছানার মতো গুটি মেরে সজাগ হয়েই শুয়ে থাকি৷ উঠতে মন চায় না৷ কিন্তু বেশী দেরি হলে আবার নামাজ কাযা হয়ে যাবে৷ আর ওনাকে যদি নামাজের জন্য না ডেকে দিই তবে হয়তো আবার রাগ করতে পারে৷ তাই কোন রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ওজু করে এসে ওনাকে ডেকে দিই। কিন্তু রাতে জ্বর থাকার কারনে হয়তো উঠতে কষ্ট হচ্ছিল। খালি বার বার হু হু করে আবারও ঘুমিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি ওনার কপালে চুমু দিয়ে কানে কানে বলি, "এই যে এতো ঘুমালে হবে নামাজ পড়তে হবে না, উঠুন নামাজ পড়ে তারপর আবার মন চাইলে ঘুমাবেন।"
এবার তিনি ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি গিয়ে ফ্রেজ হয়ে ওজু করে আসেন৷ দু'জনে এক সাথে নামাজ শেষ করি৷
নামাজ শেষ হতেই উনি বলেন, "দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নাও।"
আমি ও ওনার কথা মতো নফল নামাজ পরে নিই৷ তবে নামাজ শেষে বুঝতে পারি এটা হলো সেই নামাজ যা দুই প্রান্তের দুজন এক সাথে হওয়ার শুকরিয়া সরূপ আদায় করে।
ঐ দিনের পর থেকে আমি কিছুটা ভালোবাসা পাই। কিছু টা বলতে আমাকে আগের মতো অতটা অবহেলা করতোনা। অবহেলা কমে গেছে ঠিকই কিন্তু আজও আমি ভালোবাসা টা পাইনি। জানিনা কবে পাবো। (গল্পটা সম্পূর্ণ পড়তে চাইলে গল্পের শেষে লেখা কথা গুলো অবশ্যই পড়ে নিবেন)।
হঠাৎ বাস ড্রাইভার হার্ড ব্রেক করতেই সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে অবন্তী আর অপরিচিতা। নিজেদের'কে তাড়াতাড়ি সামলে নেয় তারা। এতোক্ষণ ধরে ঝিম ধরে অবন্তীর কথা গুলো শুনতে থাকা অপরিচিতা বলে, "আপু তবে এখন আমার কি হবে আমিও যে বড় একটা ভুল করে ফেলেছি"।
চলবে.............
পরবর্তী পর্বেই শেষ করে দে্ওয়া হবে। আর গল্পটা কেমন হলো জানাবেন। কারন আপনাদের একটা কমেন্টেই আমাদের আগ্রহের চাবি কাঠি। অতএব চাবিটা ঘুরানোর সময় এসে গেছে।

15/10/2023

#অবহেলার_শেষে
#পার্টঃ৫

যাকে এতো বছর ধরে ভালোবাসি। যার মায়ায় আমি স্বামী সংসার ছেড়ে চলে এসেছি। যার জন্য আমার স্বামীর মনে কষ্ট দিয়েছি৷ আমার অসুস্থ শাশুড়ীকে মন কষ্ট নিয়ে পৃথিবী ত্যাগ করতে হয়েছে। সে কিনা আজকে বলল, "আমি কেবল তোমার টাকা গুলোর জন্যই বিয়ে করতে চেয়েছিলাম,এখন তুমি নাকি টাকাই খরচ করতে পারবে না।আমি অতো টাকা কোথাও পাবোও না, আর বিয়েও করতে পারব না। আর বাড়িতে আমি একজন অবিবাহিত ছেলে হয়ে যদি একটা ডিভোর্সি মেয়েকে বিয়ের কথা বলি তবে আমার বাবা আমাকে ত্যাজ্য পুত্র ও করতে পারেন। আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারব না৷ আর ভালো ও বাসি না।আমাকে আর ২য় বার কল দিবে না।"
আমি কার জন্য এতো কিছু করলাম। কার জন্য? কার জন্য সব কিছু ছেড়ে চলে আসলাম! আমার আর কিছুই ভালো লাগতো না।
আমার বাড়িতে প্রতিনিয়ত আমার স্বামীকে নানান কথা বলতে থাকে। আগে সহ্য হলেও পরে আর আমার ওই কথা গুলো সহ্য হয়না৷ উনি কেন এতো কথা শুনবেন? ওনার তো কোন দোষ ছিল না। ওনার মাঝেতো কোন কিছুরই কমতি ছিল না৷ আমিই তো ভালোবাসা গুলোকে দুরে ঠেলে দিয়েছি। কেন করলাম আমি এই সব, কেন?একটা বার এর জন্য আমি ওনার কথা ভাবলাম না! আমি এতোটাই সার্থপর হয়ে গেলাম! উনি কি কখনো আমাকে ক্ষমা করতে পারবেন? আর কি কোন সুযোগ আছে আমার ওনার কাছে থেকে ক্ষমা নেয়ার?
এমন হাজারটা প্রশ্ন আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করতে থাকে। বিবেকের ছুঁড়ে দেওয়া প্রতিটা গভীর প্রশ্ন আমার হৃদয়টাকে ক্ষত বিক্ষত করতে থাকে৷ আমার মন চায় যদি একটি বারের জন্য হলেও উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে পারলাম। চোখের পানিতে ওনার বুকটা ভিজিয়ে দিতে পারতাম। হয়তোবা উনিও আমাকে জড়িয়ে বলতে, "আর কাদতে হবে না,ভালোবাসি তোকে,খুব ভালোবাসি কথা দে আর কখনো ছেড়ে যাবিনা।"
আমি তখন ওনার বুকে মুখ লুকিয়ে বলতাম, "এ জীবন যত দিন আছে কখনো আর ছেড়ে যাবোনা।শুধু একটি বার আপনার বুকে ঠাঁই দিবেন আমায়?"
কিন্তু?
এই কথা গুলোকে কেবল কল্পনায় জায়গা দেয়া যায়৷ বাস্তবতা অনেক ভিন্ন। আমি কী কখনো ওনার সামনে দাঁড়াতে পারব? ওনার চোখে চোখ রাখতে পারব?ওনার বুকে মাথা রাখতে পারব? শক্ত করে একবার জড়িয়ে ধরতে পারব?
জানিনা কখনো সম্ভব কিনা। আমি পারব না আমি হয়তো পারব না। তবে আজ কেন জানি মনে হচ্ছিল হ্যাঁ আমিও ওনাকে খুব করে ভালোবেসে ফেলেছিলাম৷ ঐ পুরোনো সিম কার্ড। সেই ৩ বছরের মায়া আমাকে শেষ করে দিয়েছে আমার ভালোবাসাকে শেষ করে দিয়েছে।
এসব ভাবতে ছিলাম ঠান্ডা ফ্লোরে বসে।কাঁদতে ও শরীরের অনেক শক্তি ব্যায় হয়।তাই খুব ক্লান্ত লাগছিল। একটু ঘুমালে মনে হয় ভালো হতো। এই ভেবে ফ্লোর থেকে উঠে বিছানার কাছে যেতেই ঝুনঝুন শব্দ আমার কানে বাজতে থাকে। হ্যাঁ ই
ঐ দিন আসার সময়ে পায়েল গুলো রেখে আসিনি। উনিও আমাকে বারন করে নি। হয়তোবা ভালোবাসতেন বলেই কিছু বলেনি। নতুবা আমার সাথে আর কথা বলার কোন রুচি হয়নি। তাই আমার ও আর রাগের সময় খেয়াল হয়নি।
বিছানায় বসে এক নজরে তাকিয়েছিলাম পায়েল গুলোর দিকে। রেডিমেড জিনিস নয়। অর্ডার দিকে বানানো৷ একটা পায়েল খুলে প্রতিটা অংশ ভালোভাবে খুঁটিয়ে দেখছিলাম৷ খোদাই করে খুব সুন্দর করে লিখাছিল। "A"..
আবার একটু দুরেই লেখা " I"..একটু উচু করে আঁকা ❤.. তারপরই লেখা "U"..
এই ছোট ছোট সংক্ষিপ্ত লেখা গুলোর মানে সবাই বুঝে। আমি ও সেদিন বুঝেছিলাম। পায়েলটা বুকে জড়িয়ে অনেক কান্না করি। এতো ভালোবাসা জমাছিল আমার জন্য। আর আমি একটুও অর্জন করতে পারলাম না। পায়েলেই কি কেবল এটা লিখা ছিল! না প্রতিটা জিনিসেই এভাবে লেখা ছিল! আর আমি সেগুলোকে আমার গলায়,আমার হাতে এক জায়গায় ও স্থান দিতে পারলাম না।শুধু মাত্র পায়েই স্থান দিতে পারলাম। আমি নির্বোধ সব চেয়ে বড় নির্বোধ। বৈধ ভালোবাসা গুলোকে দুরে ঠেলে দিয়ে একটা অবৈধ মায়ায় জড়িয়ে ছিলাম৷ অন্ধকার হয়ে আসে আমার পৃথিবীটা।
অনেকে হয়তোবা ঐ সময়ে আত্মহত্যা করেও ফেলত৷ কিন্তু আমি করিনি। আমার যে সেই হারানো ভালোবাসা পেতেই হবে। এ পৃথিবীতে যদি না-ও পাই। পরের জগতে হয়তোবা পাবো। আর যদি আত্মহত্যা করি তবে তো আর কোন জগতেই আমি সেই ভালোবাসা পাব না। সেই চিন্তায়ই বেঁচে ছিলাম। (এই গল্প পুরোটা পড়তে চাইলে গল্পের শেষে লেখা কথা গুলো অবশ্যই পড়বেন)
প্রতিদিন ভাবতে থাকি ওনাকে একটু ফোন দেই অন্তত। কিন্তু সাহসে কুলোয় না। আমি পারি না ফোন দিতে। এভাবে প্রায় ১০ দিন কেটে যায়। মনে হয় আরো বেশি ও হতে পারে। একদিন রাতে খেতে বসেছি তখন একটা মেসেজ আসে। আমি খাওয়া শেষ করে আর সেটা দেখতে মন থাকেনা। পরে রাতে ঘুমানোর আগে ফোন হাতে নিলে মেসেজ টা দেখি। মেসেজ টা আমার স্বামীর নাম্বার থেকে এসেছে।
আমি তাড়াতাড়ি সেটা পড়তে উঠে বসি। অনেক বড় একটা মেসেজ, কি রেখে কি পড়বো আমি বুঝতে পারিনা। অবশেষে শুরু থেকে খুব মন দিয়ে পড়তে শুরু করি।
উনি লিখেছেন, "কেমন আছো? আশাকরি খুব ভালো আছো।আমি কেমন আছি তা বল্লেও চলবে৷ আজ আম্মু মৃত্যুর ৪০ দিন হলো৷ যদিও এই দিন হিসেবে বিশেষ কোন কিছু নেই৷ তবুও আমি এই দিনটা একটা বিশেষ দিন ধরে নিয়েছিলাম। ইসলামী শরিয়তে ৪০ খুব প্রশংসনীয়, তাই আরকি৷ আমি ঠিক করে রেখেছিলাম আম্মুর মৃত্যুর ৪০ দিন পর্যত্ন তোমাকে সময় দিব।কিন্তু তুমি! এই দিন গুলোর মাঝে একটা বারের জন্যও যোগাযোগ করনি। কি দোষ করেছিলাম।না হয় রাগের মাথায় একটা থাপ্পড়ই দিয়েছিলাম৷ কই এতো দিন তো কিছু বলিনি৷ তোমার এতো অনিয়মের পরেও কিছু বলিনি৷ কিন্তু যেদিন শুনি যে আমার আম্মু সব জেনে গেছে। ঐদিন থেকে আমার রাগ চলে আসে৷ তবুও তোমাকে এই কয়দিনের সময় দিয়েছিলাম। খুব ভালোবাসতাম তোমাকে। খুব খুব। তাই সহজেই ভুলতে পারিনি৷ তুমি নিজে যদি ডিভোর্স টা দিতে তবে তোমার বাড়িতে অনেক সমস্যা হতো তাই বাধ্য হয়ে আমিই ডিভোর্স দেই। আজ প্রায় ২২ দিন হয়ে গেছে তুমি চলে গেছ। একটা বারের জন্য মনে হলোনা যে আমি একা একা কিভাবে চলি! কে রান্না করে দেয়৷ কিভাবে সময় মতো অফিসে যাই৷ আমি কি ঠিক মতো অফিসে যেতে পারি,ঠিক সময় মতো খেতে পারি, সময় মতো ঘুম থেকে উঠতে পারি! একটা বারের জন্যও জানতে মন চাইলোনা? আমি বেঁচে আছি না মরে গেছি তারও খোঁজ নাও নি। ঐদিন আমার অফিসে এসে সবার সামনে তোমার বাবা আমাকে প্রায় ৩০ মিনিট নানান কথা বলেছে৷ কতোটা অপমান করেছে সবার সামনে৷ একটা বারও আমি উনার দিকে মুখ তুলে তাকাতে পারিনি৷ একবার ও বলিনি যে আমি কিছুই করিনি আপনার মেয়ের জন্যই এই সব হয়েছে। বললে হয়তো তুমি অনেক কথা শুনতে। লোকে তোমাকে খারাপ ভাবতো, তুমি অনেক বকা খেতে। তাই ঐদিন তোমার নামে কোন অভিযোগ করতে পারিনি। কেন জানো! বড্ড ভালোবাসতাম যে তোমাকে। অফিসের কলিগ রা আমায় বাজে ছেলে ভেবেছে ঐদিন। কিন্তু আমি একবার ও তাদের ভুল শুধরে দেইনি। কারন একটাই বড্ড ভালোবাসতাম তোমাকে। কিন্তু তুমি একটু ভালোবাসনি আমাকে৷ একটু ও না। তাই প্রতিটি মুহুর্তে কষ্টে কষ্টে তোমাকে ভুলতে শিখেছি। একাকী বাঁচতে শিখেছি। হ্যাঁ এখন থেকে আর ভালোবাসি না তোমাকে। না একটু ভালোবাসি না। সব ভালোবাসা শেষ হয়ে গেছে। এখন তোমার জন্য আমার মনে কেবল ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই নেই। ক্ষমা করে দিও তোমার জীবনের অনেকটা সময় আমার কারনে নষ্ট হয়ে গেছে। আর একটা কথা আজ থেকে আর কোন সম্পর্কে নেই তোমার সাথে। তাই আর আমার খোঁজ নেয়ার ও প্রয়োজন নেই৷ আর কোন ফোন দেয়ার ও প্রয়োজন নেই । ভালো থাকবেন!"
মেসেজ টা পড়ার পর আমার কেমন লাগছিল তা আমি নিজেও বলতে পারব না। আমি চিৎকার করে কেঁদেছিলাম ঐদিন। অতো কান্না আমি জীবনেও করিনি। আমার ঘরটা থেকে আব্বুর ঘর দুরে, ভাইয়ার ঘর থেকেও দুরে। আর রুমের দরজা ও লাগানো তাই কেউ শুনতে পায়নি আমার কান্না। সারাটা রাত ঘুমাতে পারিনি। কান্নায় কান্নায় কাটে পুরো রাত। শেষ রাতে ক্লান্ত হয়ে একটু ঘুমাই।
সকাল বেলা ঘুম থেকে দেরীতে উঠি। তখন রান্না প্রায় শেষ তবুও ভাবীকে সাহায্য করার জন্য যাই৷ ভাবী আমার দিকে তাকিয়েই বলতে থাকে, "অবন্তী তোমার চোখ এমন লাল কেন,ঘুমাও নি ঠিক মতো"?
আমি বলি, " হুম ভাবী ঘুম হয়নি বেশী"।
ভাবী বলে, "তোমাকে বলছি না কান্নাকাটি করবে না৷যে কিনা ২ মাসের বউকেই ডিভোর্স দিয়ে দেয়৷ তাও মা মরার ১৫ দিনের মাঝেই ঐ রকম বাজে লোকের জন্য কান্নার কোন মানে হয়না৷ আমরা আছি না কোন টেনশন করবা না।"
আমি বলি, "ভাবী প্লিজ ওনাকে কিছু বলবেন না।"
ভাবী রাগে ফুলতে ফুলতে বলে, "এহ দরদ উতলায়া পরতাছে এই সব হারামির জন্য কিসের দরদ এতো। "
আমি শুধু বলি, "ভাবী প্লিজ এখন কিছু বলো না, রাতে তোমার সাথে কথা আছে। সবাই ঘুমালে তারপর আমার রুমে এসো।"
ভাবী বলে, "আচ্ছা ঠিক আছে। যাও এখন গিয়ে ভালো করে হাত মুখ ধোও চোখ যেন লাল না থাকে"।
আমি এসে হাত মুখ ধুয়ে নিই ভালো করে। যেন আব্বু আম্মু লাল চোখ না দেখে।
রাতে খাওয়ার পরে সবাই যখন ঘুমিয়ে যায়। তখন ভাবী আমার রুমে আসে। আমি ভাবীকে আস্তে আস্তে সব বলি।
কথা শেষ হতেই ভাবী জ্বলজ্বল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর হঠাৎই জোরে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দেয় আমার গালে। আমি হতভম্ব হয়ে গালে হাতে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি।.....
চলবে............

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Salma jahan ruji posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category

Nearby media companies