MD Rayhan Raju

MD Rayhan Raju As-salamu ʿalaykum ♥️♥️ (ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ)

FREE PALESTINE 🇵🇸🇵🇸 I have also 5 Year experience in Photoshop and illustrator. MY SERVICE-- 1. Flyer Design 3.

MD Rayhan Raju (born January 3, 2001, in Dhaka, Bangladesh) is a Bangladeshi Graphic Designer, Web Designer, Entrepreneur, Blogger. he helps entrepreneurs and Celebrates to get fame and publicity, MD Rayhan Raju is the Founder and CEO of MRR ( www.facebook.com/mdrayhanrajuofficial001 ). I will help you to maximize your profits and beat the competition with extremely low cost, but effective gigs. A

nd I am committed to total client satisfaction. Here are some of the ways I can help you. Business Card design 2. Web Banner 4. Brochure Design 5. ID card Design 6. Calendar Design 7. Company Profile Design 8. Letterhead Design 9. Logo Design

01/02/2025

"Precision Captions & Engaging Subtitles"

Enhancing videos with accurate, well-timed captions and subtitles for better accessibility, engagement, and global reach. I ensure clarity and impact across all platforms, from manual transcription to stylized, animated text.

গাঁ**ঞ্জার মেয়াদ ঠিকই ছিল  কিন্তু  মাথার মধ্যে গো**বর আর গরুর মু**ত ছিল তাই গাঁঞ্জা ঠিকমতো কাজ করতে পারে নাই 😁😁
27/01/2025

গাঁ**ঞ্জার মেয়াদ ঠিকই ছিল
কিন্তু মাথার মধ্যে গো**বর আর গরুর মু**ত ছিল তাই গাঁঞ্জা ঠিকমতো কাজ করতে পারে নাই 😁😁

চাকমা:আদিবাসী নয়,বহিরাগতআব্দুস সাত্তারপার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিদের মধ্যে চাকমা, মগ, মুরং, কুকি, খুমি, বনজোগী, পাঙ্খো, ল...
23/01/2025

চাকমা:আদিবাসী নয়,বহিরাগত
আব্দুস সাত্তার

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিদের মধ্যে চাকমা, মগ, মুরং, কুকি, খুমি, বনজোগী, পাঙ্খো, লুসাই, তংচঙ্গা, টিপ্পা (ত্রিপুরা) এবং সেন্দুজ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। টিপ্লারা হিন্দুধর্মাবলম্বী, মগ ও চাকমারা বৌদ্ধ এবং অপরাপর জাতির মধ্যে কেউ কেউ নিজেদেরকে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী বলে স্বীকার করলেও ধর্মীয় অনুশাসন ও সামাজিক জীবনের রীতিনীতিতে তাদের বৈসাদৃশ্য লক্ষণীয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পূর্বে চট্টগ্রামের সাথে সংযুক্ত ছিল। পাহাড়ী জাতিদের আলাদা বৈশিষ্ট্যের দাবীতে ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের ১লা আগস্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বতন্ত্র জেলার মর্যাদা লাভ করে। 1

চাকমারা কোথা থেকে এখানে এসেছে এবং এদের উৎপত্তিই-বা কোথায়, এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই মনে আসে। উপজাতিদের উদ্ভব ও বসতি বিস্তার সম্পর্কে সবকিছু জানা সম্ভব না হলেও এ সম্পর্কে আমাদের মন সব সময়েই কৌতূহলী ও উৎসুক।

চাকমা জাতি যে এককালে ব্রহ্মদেশে ছিল, সে সম্বন্ধে কর্নেল ফেইরী আলোকপাত করেছেন। 2 ব্রহ্মদেশের পুরাবৃত্ত 'চুইজং ক্য থং' এবং আরাকান কাহিনী 'দেঙ্গ্যাওয়াদি আরেদফুং' নামক গ্রন্থদ্বয়েও অনুরূপ উল্লেখ রয়েছে।

প্রেদঙ্গ্যাওয়াদি আরেদফুং' গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী ৪৮০ মগাব্দে (খ্রীষ্টীয় ১১১৮-১৯ সালে) চাকমাদের সর্বপ্রথম উল্লেখ পরিদৃষ্ট হয়। "এ সময়ে পেগো (আধুনিক পেগু) দেশে আলং চিছু নামে জনৈক রাজা ছিলেন। পশ্চিমের বাঙ্গালীদিগের সহিত মিলিত হইয়া চাকমাগণ তাহার বিরুদ্ধে যুদ্ধ উপস্থিত করে। পেগো রাজা স্বীয় প্রধানমন্ত্রী কোরেংগ্রীকে সেনাপতি পদে বরণ করিয়া যুদ্ধার্থ প্রেরণ করিলেন। তিনি যুদ্ধ স্থলে উপনীত হইলে একটি সারসপক্ষী একখানি মৃত প্রাণীর চর্ম মুখে লইয়া তাঁহার সম্মুখে পতিত হইল। তিনি তাহাকে ধরিয়া রাজার শিবিরে লইয়া গেলেন এবং বুঝাইয়া দিলেন যে, এই সারস-বাঙালী ও চর্মখানি-চাকমা, উভয়ের মিত্রতা ঘটিয়াছে। কিন্তু আমাদের এই যুদ্ধে নিশ্চয়ই বাঙালী ও চাকমাগণ এই সারসের ন্যায় বশ্যতা স্বীকার করিবে।

"রাজা মন্ত্রীর এহেন যুক্তিগর্ত আশ্বাসবাক্যে অতিশয় আহ্লাদিত হইয়া তাঁহাকে একটি হস্তী উপহার প্রদান করেন। অনন্তর হঠাৎ চতুর্দিকে নানা অশুভ লক্ষণ দেখা দিল, পবিত্র 'মহামুনি' মূর্তি স্বেদসিক্ত হইলেন। ঘন ঘন অশনি নিপাত, অকাল বৃষ্টি-সমস্তাৎ হাহাকার পড়িয়া গেল। রাজা যুদ্ধে ক্ষান্ত হইয়া এই অমঙ্গল শান্তির নিমিত্ত পুরোহিতকে শতমুদ্রা প্রদান করিলেন।

"এই ঘটনার বহুকাল পরে আনালুম্বা নামক পেগুরাজার শাসন সময়ে পুনরায় বাঙালী ও চাকমাগণ মিলিয়া উত্থিত হয়। রাজা পঞ্চাশ হাজার সৈন্য লইয়া দাম্বাজিয়াকে সেনাপতি করিয়া পাঠাইলেন। দাম্বাজিয়া যাত্রা করিয়া সম্মুখে দেখিলেন একটি বক ও একটি কাক ঝগড়া করিতেছে, অবশেষে বক কাকের ডানা ভাঙ্গিয়া দিল। তিনি রাজার নিকট আসিয়া ইহা বিবৃত
করিলেন। মন্ত্রী বুঝাইয়া দিলেন, এই কাক বাঙালী এবং বক আমরা। ইহা দ্বারা সুস্পষ্ট দেখা যাইতেছে, এই যুদ্ধে আমাদের জয়লাভ নিশ্চিত।

"সেনাপতি অমিত-উৎসাহে যুদ্ধারম্ভ করিলেন। পাঁচদিন অবিরাম যুদ্ধের পর বাঙালী ও চাকমাগণ পলায়ন করে।"3

ত্রিপুরার ইতিবৃত্ত রাজমালায়4-ও একই কথার প্রতিধ্বনি বর্তমান। এ সম্বন্ধে ১৭৮৭ খ্রীষ্টাব্দের ২৪শে জুন তারিখে চট্টগ্রামের তদানীন্তন শাসনকর্তাকে লিখিত ব্রহ্মরাজের একটি চিঠির উদ্ধৃতি থেকেই আমাদের বক্তব্যের যথার্থতার কিছুটা প্রমাণ মিলবে 'পাঁচ'শ ষাটটি দেশ নিয়ে আমাদের সাম্রাজ্য গঠিত। আমরা পরস্পর এতদিন বন্ধুত্বসূত্রে আবদ্ধ ছিলাম এবং এক দেশের অধিবাসীরা অন্য দেশের অধিবাসীদের সাথে অবাধ মেলামেশা করতে পারতো।... ত্রুটি নামে এক ব্যক্তি আমাদের সাম্রাজ্য থেকে পালিয়ে গিয়ে আপনার সাম্রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে। তাকে জোরপূর্বক আনার ইচ্ছে আমাদের ছিল না বলেই তাকে ফিরিয়ে দেবার অনুরোধ করে আমরা আপনাদের কাছে বিনয়সহকারে চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু আপনারা তাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করেন। আমাদের সাম্রাজ্যের পরিধি নেহাৎ কম নয় এবং ত্রুটি তার অবাধ্য আচরণে আমাদের রাজশক্তির অবমাননা ও শান্তিভঙ্গ করেছে।... ডোমকান, চাকমা, কিরুপা, লেইস মুরং এবং অন্যান্য জাতির লোকও আরাকান থেকে পালিয়ে গিয়েছে ও আপনাদের দেশের পার্বত্য অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা সীমান্তবর্তী উভয় দেশের অধিবাসীদের উপর অত্যাচার ও লুটতরাজ করেছে। তাছাড়া, তারা নাফ নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের একজন খ্রীস্টানকে হত্যা করে তার যথাসর্বস্ব হরণ করে নিয়ে গেছে। এই কথা শুনে আমি একদল সৈন্য নিয়ে সীমান্ত এলাকায় এসেছি তাদের ধরে নেবার জন্যে। যেহেতু, তারা আমাদের সাম্রাজ্যের অধিবাসী এবং আমাদের রাজশক্তির অবমাননা করে বর্তমানে ডাকাতিবৃত্তি গ্রহণ করেছে।... তাদেরকে আশ্রয় দেওয়া আপনাদের পক্ষে মোটেই সমীচীন নয় এবং মগরা যারা আরাকান থেকে পালিয়ে গিয়েছে, তাদেরকেও ফেরত পাঠাতে যথাবিহিত ব্যবস্থা করবেন। এতে আমাদের পরস্পরের বন্ধুত্বসূত্র আরও দৃঢ় হবে এবং দুই দেশের পথিক এবং ব্যবসায়ীরাও ডাকাতির হাত থেকে অব্যাহতি পাবে।... মোহাম্মদ ওয়াসিমের মারফত এই চিঠি পাঠাচ্ছি। চিঠি পেয়ে যথাবিহিত ব্যবস্থা করবেন এবং অনুগ্রহ করে চিঠিটার উত্তরও তাড়াতাড়ি দিবেন।....'

এ চিঠির উত্তরে কি বলা হয়েছিল তা অবশ্য আমাদের প্রতিপাদ্য নয়, তবে চিঠিটার ঐতিহাসিক মূল্য যে যথেষ্ট তাতে সন্দেহ নেই। এ থেকে চাকমারা কি করে ব্রহ্মদেশ থেকে চট্টগ্রামে আগমন করেছিল তার হদিস পাওয়া যায়।

শাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্য বেঙ্গল গভর্নমেন্ট ১৮৮১ খ্রীষ্টাব্দের পহেলা সেপ্টেম্বর ১ এই বিস্তৃত পার্বত্যভূমিকে তিনটি সার্কেল যথা: চাকমা সার্কেল, বোমাং সার্কেল ও মঙ সার্কেলে বিভক্ত করেন এবং প্রত্যেক সার্কেলের জন্য একজন করে রাজা বা প্রধান নিযুক্ত করেন। চাকমা সার্কেলের (২৪২১ বর্গমাইল) রাজা রাঙ্গামাটিতে, বোমাং সার্কেলের (২০৬৪ বর্গমাইল) রাজা বান্দরবনে এবং মঙ সার্কেলের (৬৫৩ বর্গমাইল) রাজা রামগড় মহকুমার মানিকছড়িতে অবস্থান করেন। উল্লিখিত জাতিদের মধ্যে চাকমারা সংখ্যার দিক থেকে রাঙ্গামাটিতেই সর্বাধিক এবং অন্যান্য জায়গায়ও এদেরকে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত অবস্থায় দেখা যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের এসব উপজাতি যে এখানকার ভূমিজ সন্তান নয় তা আমাদের উপরোক্ত আলোচনা থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায়। নৃতত্ত্ববিদদের মতে, উপমহাদেশের আদিম অধিবাসী মাত্রই বাইরে থেকে এখানে আগমন করেছে এবং ভাষাতত্ত্ববিদরাও বিভিন্ন আদিম জাতির ভাষা বিশ্লেষণ করে একই কথার সমর্থন জানিয়েছেন। 'সুদূর অতীতে অন্যান্য ভূখণ্ডের মতো এই উপমহাদেশের মাটিতেও হয়তো এক শ্রেণীর দ্বিপদ বৃক্ষচরপ্রাণী নিতান্ত জন্তুদশা থেকে কালক্রমে বিবর্তিত হয়ে নরদশা লাভ করেছে। ' 6 নৃতত্ত্ববিদ ডক্টর জে. এইচ. হাটনও এখানকার আদি অধিবাসী সম্বন্ধে এই মত পোষণ করেন এবং তাঁর ধারণা ক্রমবিবর্তন ও বিভিন্ন সময়ের বংশানুক্রমিক রক্তের মিশ্রণে এই সব আদি মানব নিজেদের আদিম অবস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ৭

পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাদের বেলায় এই যুক্তি আংশিক সত্য। এদের ধর্ম ভাষ্য আচার-ব্যবহার এবং সামাজিক জীবনের রীতিনীতি বিভিন্ন ধর্মের সাথে এমনভাবে মিশে গেছে যে, তাদের আদিম বৈশিষ্ট্য অনেক ক্ষেত্রে খুঁজে বের করা অসম্ভব।

চাকমারা মূলত কি ছিল কিংবা কোন্ জাতি থেকে এদের উৎপত্তি, সে বিষয়টি জানা নিতান্ত কষ্টসাধ্য হলেও অনুসন্ধানের অপেক্ষা রাখে। কোনও জাতির সঠিক পরিচয় নির্ণয়ে সে জাতির অতীত ইতিহাস অনেকটা সহায়ক। ইতিহাসের অভাবে সেসব মানবগোষ্ঠীর আকৃতি-প্রকৃতি, বেশ-ভূষা, আচার-ব্যবহার, ধর্ম-কর্ম, ভাব-ভাষা ইত্যাদির সাথে সম্যক পরিচয় কিংবা তাদের কালস্থায়ী পরিবেশের গূঢ় উপলব্ধি না থাকলে সেসব জাতি সম্বন্ধে কিছু বলা সম্ভব নয়।

স্যার রিজলীর মতে, ব্রহ্ম ভাষার 'সাক' বা 'সেক' জাতি থেকে চাকমাদের উৎপত্তি। ক্যাপ্টেন লুইন বলেন:
..the name Chakma is given to this tribe in general by the inhabitants of the Chittagong District, and the largest and dominant section of the tribe recognises this as its rightful appellation. It is also sometimes spelt Tsakma or Tsak, or as it is called in Burmese Thek', 8

এই মন্তব্যে চাকমা কথাটি যে মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের নয় সম্ভবত এ কথাটিই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন।

আরাকানের প্রাচীন রাজধানী রামাবতী নগরের নিকটবর্তী অঞ্চলে এই সাক বা সেক জাতি এককালে খুব প্রবল ও প্রতিপত্তিশালী হয়ে উঠেছিল। তাদের সাহায্যে ব্রহ্মরাজ ন্যা সিং ন্যা থৈন ৩৫৬ মগাব্দে (৯৯৪ খ্রীষ্টাব্দ) সিংহাসন অধিকার করেছিলেন। কর্নেল ফেইরী এর মতে, ৯ তখন সেই অঞ্চলে পশ্চিম দেশের বিভিন্ন লোক বাণিজ্য ব্যাপদেশে আগমন করে এবং পরিশেষে উপনিবেশ স্থাপন করে। তাদের উপাধি ছিল সাক বা সেক।

কেউ কেউ অনুমান করেন, তখন আরব-ইরান তুরস্ক থেকে বহু মুসলমান সমুদ্র-উপকূলবর্তী কেউ নব্যবসা-বাণিজ্য উদ্দেশ্যে আগমন করে এবং তাদের অনেকেই দেশে ফিরে না গিয়ে সে অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। অতএব বোঝা যাচ্ছে, এইসব সাক বা সেক শব্দ ইসলামী শায়খের অপভ্রংশ।

এখনও ব্রহ্মদেশের সমুদ্র-উপকূলবর্তী স্থানে এই সাক সম্প্রদায় দেখা যায়। ধর্মীয় রীতিনীতিতে তাদের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাদের মিল না থাকলেও আকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে চাকমারা সাকদেরই উত্তর পুরুষ।

মগদের মতে, চাকমারা মুঘলদের বংশধর। 10 কোন এক সময়ে মুঘলরা আরাকান রাজের হাতে পরাজয়বরণ করে; ফলে বহু মুঘল সৈন্য বন্দিদশায় আরাকানে অবস্থান করতে বাধ্য হয়। আরাকানরাজ তাদেরকে স্বদেশের মেয়েদের সঙ্গে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হবার আদেশ জানিয়ে আরাকানেই অন্তরীণ করে রাখেন। এসব মুঘল সৈন্যের ঔরসে এবং আরাকানী নারীদের গর্ভে যে জাতির উদ্ভব হয়েছিল তারাই সাক বা সেক।

জে. পি. মিলস্-ও একই মত পোষণ করেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, "চাকমাগণ মগনারী ও মুঘল সৈন্যদের সমন্বরজাত। সপ্তদশ শতাব্দীতে চাকমাদের অনেকেই মুঘল ধর্ম গ্রহণ করে তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং তখনকার চাকমা প্রধানগণও মুসলমানী নাম ধারণ করেন। অতঃপর সেখানে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং ফলে তারা হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়, কিন্তু পরবর্তীকালে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব প্রকট হয়ে দেখা দেয় এবং হিন্দু ধর্ম অন্তর্হিত হয়।"11 ক্যাপ্টেন হার্বার্ট লুইন-এর মন্তব্যেও এই উক্তির সমর্থন মিলে। তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন চাকমারা মুঘলদের বংশধর না হলেও এককালে এরা মুসলমান ছিল। কালের বিবর্তনে হয়ত ধর্মীয় ধারা পরিবর্তিত হয়েছে। এই মন্তব্যের সমর্থনে শ্রী সতীশচন্দ্র ঘোষ প্রতিপন্ন করেছেন যে, '১৭১৫ খ্রীষ্টাব্দ হইতে ১৮৩০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত জামুল খাঁ, সেরমুস্ত খাঁ, সের দৌলত খাঁ, জান বক্স খাঁ, জব্বার খাঁ, টব্বার খাঁ, ধরম বক্স খাঁ প্রভৃতি চাকমা ভূপতিবর্গ 'খাঁ' উপাধি পরিগ্রহ করিতেন। তদানুষঙ্গিক ইহাও উল্লিখিত হইতে পারে যে, এই সময়ে তাঁহাদের কুলবধূগণেরও 'বিবি' খেতাব প্রচলিত ছিল।

এখনও অশিক্ষিত সাধারণে 'সালাম' শব্দে অভিবাদন করে এবং আশ্চর্য বা খেদসূচক আবেগে 'খোদায়' নাম স্মরণ করিয়া থাকে। 12

কেউ কেউ অনুমান করেন তখন মুসলিম (মুঘল শাসন) শাসনের প্রাধান্য ছিল বলে চাকমা রাজারা তাঁদের সন্তুষ্টিবিধানের জন্য মুসলমানী নাম, 'খাঁ' খেতাব 13 ইত্যাদি গ্রহণ করেছিলেন, ফলে তাঁদের চাল-চলনে মুসলমানী ভাব এবং কথা-বার্তায়ও অনেক আরবী-ফারসী শব্দ অনুপ্রবেশ করেছিল।

প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, 'খাঁ' উপাধি গ্রহণের বেলায় এই মতবাদ কতকটা শিথিল বলে ধরা যেতে পারে; কেননা, মধ্যপ্রদেশের কোন কোন স্থানে হিন্দুরাজাদের মধ্যেও 'খাঁ' খেতাব পরিলক্ষিত হয় এবং বাংলাদেশেরও কোন কোন হিন্দু পরিবারের 'খাঁ' পদবী দেখা যায়। কিন্তু মুসলমানী নাম আচার-ব্যবহার এবং কথাবার্তায় ইসলামী ভাব গ্রহণ করে এভাবে নিজের সত্তাকে বিলিয়ে দেবার প্রমাণ একমাত্র চাকমা সমাজেই দেখা গেছে। অনুরূপ দৃষ্টান্ত দুনিয়ার আর কোন জাতির ইতিহাসে দেখা যায় না।

প্রসঙ্গত আরও উল্লেখযোগ্য যে, চাকমা রাজাদের মুদ্রার প্রতিকৃতি খাস ফারসী ভাষায় উৎকীর্ণ ছিল। মুদ্রাগুলোর মধ্যে একটিতে খোদিত আছে 'আল্লাহু রাব্বী'। ১৪ এমন কি চাকমা রাজাদের কামানগুলোও 'ফতেহ খাঁ' 'কালু খাঁ' নামে পরিচিত।

'শ্রী শ্রী জয়কালী জয়নারায়ণ জব্বর খাঁ ১১৬৩'

[রাজা জব্বর খাঁর আমলের ফারসীতে উৎকীর্ণ (১১৬৩ মগাব্দ) মুদ্রার প্রতিকৃতি।

'জান বখশ খাঁ জামেনদার'

[চাকমা রাজা জান বখশ খাঁ জমিদারের

আমলের ফারসীতে উৎকীর্ণ মুদ্রার

প্রতিকৃতি]

চাকমা রাজাদের মধ্যে শের দৌলত খাঁর (১৭৫৪ খ্রীষ্টাব্দ) উপাসনাপদ্ধতি ছিল খাঁটি ইসলামী ভাবধারাসম্ভূত এবং মারেফাতের শিক্ষাই ছিল তাঁর সাধনার প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়। সেই সাধনার বলে তিনি এতদূর উন্নীত হয়েছিলেন বলে জানা যায় যে, নিজের নাড়ীভূড়ি পর্যন্ত বের করে পানিতে পরিষ্কার করে পুনরায় তা যথাস্থানে সংস্থাপন করতে পারতেন। গৃহের এক নিভৃত কক্ষে তিনি আরাধনায় রত থাকতেন। তাঁর উপাসনাকালে কেউ যাতে তাঁর গৃহে প্রবেশ না করে এমন নির্দেশও দেওয়া থাকতো। কিন্তু একদিন তাঁর স্ত্রী কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে সেই সাধনাকক্ষের ছিদ্রপথে দৃষ্টি দিতেই দেখতে পান যে, রাজা তাঁর নিজের অস্ত্র বের করে পরিষ্কার করছেন। এই দৃশ্য অবলোকন করে রাণী অবাক হয়ে চীৎকার দিয়ে ওঠেন, ফলে রাজার ধ্যান ভেঙ্গে যায়। কথিত আছে, সবগুলো অস্ত্র তিনি যথাস্থানে সংস্থাপন করতে পারেননি, যার ফলে তিনি উন্মাদ হয়ে যান। এ সম্পর্কে এখনও চাকমা সমাজে একটি গান প্রচলিত আছে:

মুনি দরবেশ ধ্যান গরে

পাগলা রাজা আপন চিৎ-কব্জা খৈ-নাই স্যান গরে।

[সাধু-দরবেশ যেমন ধ্যান করে থাকে, সেই রকম পাগলা রাজা নিজের কলজে বের করে স্নান করাতেন।

এ ছাড়াও চাকমা রাজারা যে ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশেষ অনুরক্ত ছিলেন তার আরও অনেক প্রমাণ উপস্থিত করা যায়।

চাকমা রাজমহিষী শ্রীমতী কালিন্দী রাণী প্রথম দিকে ইসলাম ধর্মের প্রতি অটল বিশ্বাসী ছিলেন এবং ইসলামের অনেক অনুশাসনও তিনি মেনে চলতেন। রাজানগরে বিরাট মসজিদ তাঁর

নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মসজিদ তদারক ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মুসল্লিদের ইমামত করার জন্য তিনি একজন মৌলানা নিযুক্ত করেন। কথিত আছে, রাণী সেই মৌলানার কাছ থেকে অনেক সময় ইসলাম ধর্মের মর্মবাণী সম্পর্কে জ্ঞান সংগ্রহ করতেন। চাকমা রাজপরিবারের মহিলাদের অবরোধ প্রথা প্রচলিত ছিল। ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশেষ বিশ্বাসী থাকা সত্ত্বেও শ্রীমতী কালিন্দী রাণী পরবর্তীকালে ধর্মবিশ্বাস পরিবর্তন করেন। তিনি প্রথমে হিন্দুধর্ম এবং পরিশেষে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন।

এসব প্রমাণাদি থেকে অনুমিত হয় যে, চাকমারা হয়ত বা মুসলমান ছিল। মুঘল বংশধর না হলেও এরা যে ব্রহ্মদেশের সাক বা সেক জাতির (ইসলামী শায়েখ বা শেখ থেকে) অন্তর্ভুক্ত ছিল তা অনুমান করা যায়।

কিন্তু চাকমাদের নিজেদের মতে উপরোক্ত যুক্তিসমূহ সর্বৈব মিথ্যা। মুসলমানী নাম গ্রহণ এবং তাদের মধ্যে মুসলিম প্রভাবের কারণ সম্পর্কে তারা শুধু এই বলতে চায় যে, অতীতকালে কোন এক চাকমা রাজা জনৈক মুসলমান নবাব কন্যার প্রেমে পড়ে তাঁকে বিয়ে করেন। সেই নবাব-কন্যার প্রভাবে চাকমারাজ ইসলামী ভাবধারার সমর্থক হয়ে ওঠেন। যার ফলে পরবর্তীকালে তাঁদের নামকরণ উপাধি গ্রহণ আচার-ব্যবহার প্রভৃতিতেও ইসলামী প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। ১৫ এক সময় চাকমা সমাজে কোনও রমণীর মৃত্যু ঘটলে তাকে রীতিমত কাফনপরিবৃত করে উত্তরশিয়রে কবরস্থ করা হতো এরূপ ঘটনাও বিরল নয়।

কোনও জাতির আদিপরিচয় উদঘাটনে প্রাচীন সংস্কারের দান অপরিসীম। এ দিক দিয়ে বিচার করলে চাকমাদের এই যুক্তি অনেকটা শিথিল বলে মনে হয়। কিন্তু চাকমারা কোনক্রমেই মানতে রাজী নয় যে, তারা কোনোকালে মুসলমান ছিল। চাকমারাজ শ্রী ভুবনমোহন রায় (মৃত্যু ১৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৩৬ খ্রীষ্টাব্দ) দেখাতে চেয়েছেন যে, চাকমারা আসলে শাক্যবংশসম্ভূত মহামুনি বুদ্ধের বংশধর। ১৬ পুরাকালে যে তাঁরা পৈতাধারী ক্ষত্রিয় ছিলেন-একথাও তিনি উল্লেখ করেছেন।

মগভাষায় 'শাক্য' অর্থ 'সাক' আর যারা রাজবংশসম্ভূত তাদেরকে বলা হয় 'সাকমাং' ('মাং' রাজা অর্থে)। এই 'সাকমাং' থেকে 'চাকমা'। এই বিশেষ কথাটির উপর চাকমারা সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে থাকেন। চাকমাদের এই নিজস্ব মতামত এবং মগদের এই ভাষাগত অর্থের পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁরা প্রমাণ করতে চান যে, তাঁরা শাক্যবংশসম্ভূত মহামুনি বুদ্ধের বংশধর।

চাকমা জাতির আদি উৎস সম্পর্কে চাকমা সমাজে দুটি পুরাকাহিনী প্রচলিত আছে-'রাধামোহন-ধনপতি' উপাখ্যান এবং 'চাটিগাঁ ছাড়া'। এই কাহিনী দু'টি মূলত এক এবং দ্বিতীয়টি প্রথমটির দ্বিতীয় অধ্যায় মাত্র। উক্ত কাহিনীতে রাজা সাধ্বিংগিরির উল্লেখ রয়েছে। রাজা সাধ্বিংগিরি চম্পকনগরের (মতান্তরে চম্পানগরে) বাস করতেন। এই চম্পক বা চম্পা থেকে না-কি চাকমা জাতির নামকরণ করা হয়েছে। সেকালে চম্পানগরে বিজয় গিরি ও হরিশ্চন্দ্র নামে আরও দুজন সামন্ত রাজা ছিলেন। তাঁরা সবাই চন্দ্রবংশীয় ক্ষত্রিয়। চাকমারা নিজেদেরকে এঁদেরই বংশধর বলে দাবী করে। ত্রিপুরার ইতিবৃত্ত 'রাজমালা'য় অবশ্য উক্ত কাহিনী দু'টি সম্বন্ধে মতভেদ রয়েছে।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, এই চম্পানগর বা চম্পকনগরের ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ উপস্থিত করা যায় কি-না। কেউ কেউ অনুমান করেন, চম্পানগর বিহারে অবস্থিত। আবার চীন-পর্যটক ফা-হিয়েনের (৪২৯ খ্রীষ্টাব্দ) বর্ণনায় পাওয়া যায় চম্পানগর ছিল তখনকার সময়ে ভাগলপুরের কর্ণপুর রাজ্যের রাজধানী। ক্যাপ্টেন থমাস হার্বার্ট লুইন বলেন, 'চম্পানগর মালাক্কার নিকটবর্তী একটি শহর।' এ থেকে কেউ কেউ অনুমান করে থাকেন যে, চাকমারা 'মালয়বংশজ'। অবশ্য এ সম্পর্কেও মতভেদ রয়েছে।

ত্রিপুরার ইতিবৃত্ত 'রাজমালায়'য় চম্পা বা চম্পকনগরের কোন সরাসরি উল্লেখ নেই। তবে চাকমা সমাজে প্রচলিত একটি গানে চম্পানগর নয়-নূরনগরের উল্লেখ আছে। গানটির রচনাকাল জানা যায়নি, তবে চাকমা রাজাদের কেউ হয়ত একবার নিজ দেশ ছেড়ে ব্রহ্মদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠার ফলে দেশে ফিরে আসার অভিলাষ জ্ঞাপন করে তাঁরা ছড়া কেটে গান করতেন (আনুমানিক ৭০০ মগাব্দ):

ডোমে বাজায় দোল্ দগর

ফিরে যাইয়ম্ নূরনগর

[বাদ্যকরেরা ঢোল-ডগরা বাজায়। আমাদের নূরনগর ফিরে যেতে ইচ্ছা হয়।

এই নূরনগর পার্বত্য ত্রিপুরায় অবস্থিত। চাকমারা আগে (বর্তমানেও আছে) পার্বত্য ত্রিপুরায় ছিল। ত্রিপুরা জেলায় অবস্থিত গোমতী নদীর উৎস সম্বন্ধে যে আখ্যান প্রচলিত রয়েছে চাকমা সমাজে এখনও তা পবিত্রজ্ঞান করা হয়। পার্বত্য ত্রিপুরার সাথে চাকমাদের যোগসূত্র প্রাচীনকাল থেকেই। বস্তুত, এই নূরনগরই আসলে চম্পানগর কি-না তাও অবশ্য গবেষণার বিষয়।

সুতরাং এ-সব কাহিনীর উপর ভিত্তি করে একটা জাতির আসল পরিচয় উদ্‌ঘাটন সম্ভব নয়। চাকমাদের ধর্মভাবের পরিবর্তন সম্পর্কে প্রসঙ্গত আরও একটি প্রমাণ উপস্থিত করা যায়। নিম্নে কয়েকজন চাকমা রাজার নাম এবং তাঁদের সিংহাসন লাভের সময়কাল উল্লেখ করা হলো:

জব্বার খান ১৬৮৬ খ্রীষ্টাব্দ বেল্লাল খান ১৭০০ খ্রীষ্টাব্দ জালাল খান ১৭০৬ খ্রীষ্টাব্দ শেরমুস্ত খান ১৭৩১ খ্রীষ্টাব্দ শের দৌলত খান ১৭৫৪ খ্রীষ্টাব্দ জান বখশ খান ১৭৮২ খ্রীষ্টাব্দ ধরম বখশ খান ১৮১৮ খ্রীষ্টাব্দ ইত্যাদি।

শেষের নামটির 'ধরম' (সংস্কৃত) কথাটি সম্ভবত বাংলা 'ধর্ম' শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং 'বঙ্গ' কথাটি খাঁটি ফারসী ভাষার শব্দ।

'ফতেহ খাঁ ১১৩৩'-

'শুকদেব রায় ১২১০ হিঃ'

[চাকমা রাজা ফতেহ্ খাঁর আমলের (১১৩৩ হিজরী) ফারসীতে উৎকীর্ণ মুদ্রা।

চাকমা রাজা শুকদেব রায় (১২১০ হিজরী)-এর আমলের মুদ্রার প্রতিকৃতি।

জয়কালী সহায় ধরম বখশ খাঁ'

[রাজা ধরম বশ খাঁর আমলের মুদ্রার প্রতিকৃতি।

'সিংহ চিহ্নিত চাকমা মুদ্রা'

ধরম বখশের শ্রীশ্রী মতী কালিন্দী রাণী এই সময়েই হিন্দু ভাবাপন্ন হন। পূর্বে চাকমা রাজাদের মুদ্রায় আরবী ফারসী শব্দের প্রতিকৃতি 'আল্লাহ' 'খোদা' ইত্যাদি লেখা থাকতো; কিন্তু এই ধরম বশ খান তাঁর মুদ্রার মধ্যে 'জয়কালী সহায়' খুদিত করেন।

পরে শ্রীমতী কালিন্দী রাণী বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং রাজানগরে বাংলা ১২৭৬ সালের ৮ই চৈত্র 'মহামুনি' সংস্থাপন করেন। মন্দিরগাত্রে সর্বসাধারণের জ্ঞাপনার্থে একটি প্রস্তরফলক স্থাপিত হয়। নিম্নে প্রস্তরফলকটির হুবহু উদ্ধৃতি দিচ্ছি:

শ্রী শ্রী ভোক্ত

ফড়া

বিজ্ঞাপন

সর্বসাধারণের অবগতার্থে এ বিজ্ঞাপন প্রচার করিতেছি যে, অত্র চট্টগ্রামস্থ পার্বত্যাধিপতি আদৌ রাজা সেরমস্থ খাঁ তৎপর রাজা যুকদেব রায় অতঃপর রাজা সের দৌলত খাঁ পরে রাজা জানবক্স খাঁ অপরে রাজা টর্বর খাঁ অনন্তর রাজা জর্বর খাঁ আর্য্যপুত্র রাজা ধরম বক্স খাঁ তৎসহধর্মিনী আমি শ্রীমতি কালিন্দী রাণি আপোন অদৃষ্ট সাফল্যাভিলাসে তাহানদ্বিগের প্রতি কৃতজ্ঞতাষুচক নমস্কার প্রদান করিলাম যদিও পূর্ববর্তীর ধর্মার্থে বৌদ্ধ ধর্মের শ্রীবৃদ্ধিসাধন জন্য দ্বিগদ্বেসিয় অনেকানেক যুধিগণ কর্তৃক সান্ত্রানুসারে ১২৭৬ বাঙ্গলার ৮ই চৈত্র দিবস অত্র রাজানগর মোকামে
স্থলকুল রত্নাকর 'চিহ্ন' সংস্থাপন হইয়াছে তাহাংশে শ্রী শ্রী ছাইকা মুনি করে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ঠাকুর স্থলকুল রাইবেক উলোকিত পূণ্যক্ষেত্রের দক্ষিণাংশে শ্রী শ্রী ছাইকা মুনি স্থাপিত হইয়া তদুপলদো হই্যেক সনাখেরিতে মহাবিষুর যে সমারোহ হইয়া থাকে ঐ সমারোহেতে ক্রয়-বিক্রয় করণার্থে প্রভেন্সমস্ত দোকানি ব্যাপারি আগমন করে ও মঙ্গলময় মুনি দর্শনে যে জাত্রিক উপনিত হয়, সোহারার দ্বিগ হইতে কোন প্রকারের মহাযুল অর্থাৎ কর গ্রহণ করা জাইবেক না ইদানিক কি ভাহারাতে উলোকিত ব্যক্তিগণ হইতে ইহা লঙ্গন করিয়া কর গ্রহণ করি বা করাই কি করে বা করায় তব এই জন্মে ঐ জর্মে এবং জন্মে জর্মে মহাপতিকিপাত্র পরিগণিত হইবেন।

কিমাধিক মিতি.... কালিন্দী রাণী

শ্রীমতি কালিন্দী রাণীর হস্তলিপি

শ্রীমতী কালিন্দী রাণী যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন এই অনুশাসনলিপির প্রতিটি অক্ষর তিনি যথাযথ প্রতিপালন করে গিয়েছেন। শ্রীমতী কালিন্দা রাণীর সময়ই চাকমারা পুরোপুরি বৌদ্ধধর্মের শাসনে চলে যায়।

চাকমাদের 'খাদি উৎস নির্ণয় সম্পর্কে যে-সব যুক্তি ও প্রমাণাদির উল্লেখ করা হয়েছে তার সঙ্গে তার ধর্মীয় বিষয়াদিও জড়িত। পাহাড়ী জাতি মাত্রই অপেক্ষাকৃত সরল। এদের মনোভাবও বিশেষ কোমল। এ-কারণে তাদের ধর্মবিশ্বাসেও স্থৈর্য লক্ষ্য করা যায় না। বর্তমানে, অবশ্য মিশনারীদের প্রচেষ্টায় অনেক পাহাড়ী সম্প্রদায়ও খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করতে আরম্ভ করেছে; কাজেই প্রবহমান ধর্মনীতির উপর নির্ভর করে কোন জাতির উৎস নির্ণয় সবক্ষেত্রে সঠিক ও নিরাপদ নয়।

তথ্য সূত্র

১. Vide Bengal Govt. Act XXIII dt. 1.8.1860.

২. Colonel Phayre: The History of Burma, p. 39.

৩. দেঙ্গ্যাওয়াদি আরেদফং, পৃ ১৭-১৯।

৪. 'দেঙ্গ্যাওয়াদি আরেদফুং' এবং 'রাজমালা'র বর্ণনায় যথেষ্ট সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। শুধুমাত্র রাজা-বাদশাহদের নামের মধ্যে কিছু কিছু তফাৎ দেখা যায়। যথা: রাজমালা দেঙ্গ্যাওয়াদি আরেদফুং অরুণ যুগ (চাকমা-রাজা ৬৯৬ মগাব্দ) ইয়াংজ (৬৯৬ মগাব্দ) মইসাং রাজা পৃ ৯৮ মংদুই রাজা পৃ ১১২ মারিক্যা রাজা পৃ ৫৭ মরেকাজ রাজা পৃ ৫৫ জনু রাজা (৮৮০ মগাব্দ) পৃ ৩৯ চনুই রাজা (৮৮০ মগাব্দ) পৃ ৫৮ সাজেস্বী (৮৮১ মগাব্দ) পৃ ২৩ সাজাইয়ু

(৮৮১ মগাব্দ) পৃ ৫৯ ইত্যাদি। 2. Vide letter No. 1985/797 LR dt. 1. 9. 1881.

৬. সুবোধ ঘোষঃ ভারতের আদিবাসী (উদ্ধৃত), পৃ৪।

4. Census Report of Bengal 1931.
T.H. Lewin: The Hill Tracts of Chittagong and the Dwellers Therein, p. 62. 20 Colonel Phayre: Journal of Asiatic Society of Bengal, No. 145, 1844, pp 201-202.

১০. সতীশচন্দ্র ঘোষঃ চাকমা জাতি, পৃ ৫।

of India Mills: Notes on a Tour. in the Chittagong Hill Tracts in 1926. Census

1931.

১২. সতীশচন্দ্র ঘোষ: প্রাগুক্ত, পৃ ৬।

১৩০ভাইর দীনেশচন্দ্র সেনঃ 'বঙ্গভাষা ও সাহিত্য'। 'সেকালের উপাধিগুলি কিছু অদ্ভুত রকমের ছিল। "পুরন্দর খাঁ'

খাঁ' এ সব রাজদত্ত খেতাব।'

১৪. সতীশচন্দ্র ঘোষ: প্রাগুক্ত, পৃ ৬৯।

১৫. শ্রী মাধবচন্দ্র চাকমাধর্মী: শ্রী শ্রী রাজনামা, পৃ ভূমিকা c/o

১৬. ভবন মোহন রায়: চাকমা রাজাবংশের ইতিহাস, (১৯১৯) পৃ ৩৭।

#চাকমা #উপজাতি #আদিবাসী

13/01/2025

"Explore the fascinating history of the Rothschild family, one of the most influential and enigmatic dynasties in the world. From their humble beginnings in 18th-century Frankfurt to building a global banking empire, the Rothschilds have shaped finance, politics, and society like no other.

This video delves into:

The origins and rise of the Rothschild family
Their role in shaping modern banking and financial systems
Common myths and conspiracies surrounding their name
"Explore the fascinating history of the Rothschild family, one of the world's most influential and enigmatic dynasties. From their humble beginnings in 18th-century Frankfurt to building a global banking empire, the Rothschilds have shaped finance, politics, and society like no other.

🔔 Don’t forget to like, subscribe, and share for more historical insights!

"














Title: 𝙏𝙝𝙚 𝘿𝙚𝙫𝙞𝙡 𝙃𝙞𝙢𝙨𝙚𝙡𝙛.. 👿 artist credit | Michel De Kok 👨‍🎨
12/01/2025

Title: 𝙏𝙝𝙚 𝘿𝙚𝙫𝙞𝙡 𝙃𝙞𝙢𝙨𝙚𝙡𝙛.. 👿
artist credit | Michel De Kok 👨‍🎨

28/12/2024

Discovering Germany: From Bustling Cities to Charming Villages and Stunning Landscapes

This video showcases the diverse beauty of Germany, capturing its vibrant cities, picturesque villages, and breathtaking natural landscapes. From the cultural richness of Berlin and Munich to the serene charm of the countryside and the majestic Alps, the video highlights Germany's unique experiences. It invites viewers to immerse themselves in the country’s history, savor its culinary delights, and explore its unparalleled natural beauty. This project was a creative journey to bring Germany's story to life through captivating visuals and dynamic storytelling













It's true 😂      Ten Unknown Facts About   1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 191...
24/12/2024

It's true 😂

Ten Unknown Facts About
1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s.
2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky.
3. Innovation in Technology: BMW is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains.
4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics.
5. Global Presence: BMW is a global automotive Company
6. Luxury and Design: BMW is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort.
7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX.
8. Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the and other countries, ensuring a global reach and localized production.
9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments.
10. Cultural Impact:

Sati, the heartbreaking practice of widows being forced to immolate themselves on their husbands' funeral pyres, was a c...
06/12/2024

Sati, the heartbreaking practice of widows being forced to immolate themselves on their husbands' funeral pyres, was a cruel social custom that has scarred the history of Bengal and India. Despite being officially abolished in 1829, its tragic legacy lingers, with modern cases of glorification still haunting society.
To read the entire article, check the comments.

Perhaps your lordships will oblige him as well, considering he is wearing a saffron muffler. 😃
01/12/2024

Perhaps your lordships will oblige him as well, considering he is wearing a saffron muffler. 😃

26/11/2024

কথিত সং***খ্যাল**ঘু!😄

26/11/2024
বাংলায় বর্গী আক্রমণের সেই কবিতার পুরোটা কতজন জানেন?ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালোবর্গী এল দেশেবুলবুলিতে ধান খেয়েছেখাজনা দেব কি...
26/11/2024

বাংলায় বর্গী আক্রমণের সেই কবিতার পুরোটা কতজন জানেন?

ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো
বর্গী এল দেশে
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে
খাজনা দেব কিসে।।
ধান ফুরল, পান ফুরল
খাজনার উপায় কি?
আর ক’টা দিন সবুর কর
রসুন বুনেছি।।
ধনিয়া পিয়াজ গেছে পচে
সর্ষে ক্ষেতে জল
খরা-বন্যায় শেষ করিল
বর্ষ এর ফসল।
ধানের গোলা, চালের ঝুড়ি
সব শুধু খালি
ছিন্ন কাপড় জড়িয়ে গায়ে
শত শত তালি
ধানের গাছ, বিলের মাছ
যাই কিছু ছিল
নদীর টানে বাঁধটি ভেঙ্গে
সবই ভেসে গেল।
এ বারেতে পাঁচ গাঁয়েতে
দিয়েছি আলুর সার
আর কটা দিন সবুর করো
মশাই জমিদার।

শৈশব কালে আমাদের মা-খালা, দাদী-নানীরা প্রায় এই ছড়াটা শুনিয়ে ঘুম পারাতেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বর্গী মানে কি? কাদের কে বর্গী বলে ডাকা হতো? আমাদের সাথে বর্গীদের কি সম্পর্ক?

অষ্টাদশ শতাব্দীর লুটতরাজপ্রিয় অশ্বারোহী মারাঠা সৈন্যদলের নাম ‘বর্গি’। বাংলাদেশের পশ্চিমের নানান স্থানে প্রতি বছর প্রায় নিয়মকরেই একটা নির্দিষ্ট সময় (১৭৪১ – ১৭৫১) পর্যন্ত মারাঠাদের কিছু সংঘবদ্ধ লুটেরা এদেশে এসে লুটপাট করতো, সৃষ্টি করতো বিশৃঙ্খলার। লুট করে নিতো খেতের ফসল। ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিতো, হত্যা করতো নিরীহ মানুষ। এইসব লুটেরাদেরকেই বাংলার মানুষজন বর্গী বলে ডাকতো। বর্গিহানা এই সময় একপ্রকার বাৎসরিক ঘটনায় পরিণত হয়েছিল।

মারাঠি ধনগর জাতীয় লোকেরা অভিযানে যাওয়ার সময় কেবলমাত্র একটি সাত হাত লম্বা কম্বল ও বর্শা নিয়ে বের হত। এই বর্শাকে মারাঠি ভাষায় বলা হত ‘বরচি’। এই নাম থেকেই ধনগররা বারগির বা বর্গা ধনগর বা বর্গি নামে পরিচিত হয়। বর্গি শব্দটি মারাঠি বারগির শব্দের অপভ্রংশ। বারগির বলতে মারাঠা সাম্রাজ্যের সেই সব অশ্বারোহীদের বোঝাত। এরা ছিল ধনগর জাতীয় এবং মারাঠা নেতা ছত্রপতি শিভাজী মারাঠী প্রশাসন কর্তৃক এদের ঘোড়া ও অস্ত্র সরবরাহ করা হত। মারাঠারা প্রধানত ভারতের মহারাষ্ট্রের অধিবাসী হলেও তারা ভারতবর্ষের গোয়া গুজরাট কর্নাটক অন্ধ্রপ্রদেশ তামিলনাড়ু– ও মধ্য প্রদেশেও বাস করে। সনাতন ধর্মের অনুসারী মারাঠারা মুগল আমলে ছিল ক্ষত্রিয় যোদ্ধা।

মারাঠাদের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন ছত্রপতি শিবাজী (১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৬২৭-এপ্রিল ৩, ১৬৮০); তিনিই ১৬৭৪ সালে মহারাষ্ট্রের মারাঠী সাম্রাজ্যটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । মারাঠী সাম্রাজ্য রাজধানী ছিল মহারাষ্ট্রের রাইগাড। ১৮১৮ অবধি মারাঠী সাম্রাজ্যটি টিকে ছিল। মারাঠী সাম্রাজ্য পতনের কারণ ভারতবর্ষে নতুন শক্তির আগ্রাসন।

মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেব (নভেম্বর ৪, ১৬১৮-মার্চ ৩, ১৭০৭) সম্রাটের দক্ষিণ ভারতের সামরিক অভিযানের সময় মারাঠা সাম্রাজ্যটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, যার ফলে মারাঠারা মুগল শাসনের প্রতি বিক্ষুব্দ হয়ে উঠে। যেহেতু মুগল আমলে মারাঠারা ছিল হিন্দু ক্ষত্রিয় যোদ্ধা সুতরাং সম্রাট আওরঙ্গজেব মনসব পদ দিয়ে মারাঠা সৈন্যদের মুগল সেনাবাহিনীতে অর্ন্তভূক্ত করে মারাঠাদের রোষ প্রশমিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে তেমন কোনো লাভ হয়নি। কিছু কিছু মারাঠা সেনাপতি সম্রাট আওরঙ্গজেব-এর অনুগত থাকলেও বেশির ভাগ মারাঠা সৈন্যই রোষবশত ভারতবর্ষে মুগল শাসিত প্রদেশগুলিতে লুঠপাঠ আরম্ভ করে। রোষের শিকার মুগল শাসিত প্রদেশগুলিতে সুবা বাংলা ছিল অন্যতম।

বাংলা মুগলশাসিত প্রদেশ বলেই ১৭৪২ থেকে ১৭৫১ সাল পর্যন্ত বার বার বাংলায় বর্গীদের আক্রমন সংঘটিত হতে থাকে। নওয়াব আলীবর্দী খান ১৭৪০ সালে বাংলার নওয়াব নিযুক্ত হন। ১৭৪২ সালের ১৫ এপ্রিল বর্গীরা বর্ধমান (বর্তমান পশ্চিম বাংলা) আক্রমন করে। জরুরি সংবাদ পেয়ে নওয়াব আলীবর্দী খান সসৈন্য বর্ধমানের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। বর্গীদের নেতা ছিল ভাস্কর পন্ডিত, তার নির্দেশে বর্গীরা নওয়াব-এর রসদ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ২৬ এপ্রিল বর্গী বেষ্টনী ছিন্ন করে কোনওমতে প্রাণে বাঁচেন নওয়াব ।
৬ মে, ১৭৪২। মুর্শিদাবাদের দ্বারপ্রান্তে সশস্ত্র বর্গীরা এসে উপনীত হল। নওয়াব আলীবর্দী খান সে সময় মুর্শিদাবাদে ছিলেন না। নির্মম বর্গীরা মুর্শিদাবাদ নগরের বড় একটি বাজার পুড়িয়ে দেয়। এবং এভাবে বর্গীদের নির্বিকার ধ্বংসযজ্ঞ বাংলার মানসে চিরতরে প্রোথিত হতে থাকে: যে রুদ্ধশ্বাস অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছিল মনোরম বিষন্ন একটি ছড়ার আকারে ...

খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো
বর্গী এল দেশে,
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে
খাজনা দেব কীসে?

মুর্শিদাবাদ নগরে জগৎ শেঠ নামে এক ধনী সওদাগর বাস করতেন । বর্গীরা তার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা আদায় করে নেয়। পরের দিনই, অর্থাৎ ৭ মে নওয়াব আলীবর্দী খান মুর্শিদাবাদ উপস্থিত হন। ততক্ষণে মুর্শিদাবাদের অনেকটা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে বর্গীরা আরও দক্ষিণে পালিয়ে গেছে ।
১৭৪২ সালের জুলাই মাসে, অর্থাৎ মুর্শিদাবাদ আক্রমনের ২ মাস পর হুগলি জেলায় বর্গীরা একটি সৈন্য শিবির স্থাপন করে এবং খাজনা আদায় করতে লাগল। (‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে’-এই লাইনটি একটি বিশেষ সময়ের প্রতীক। বাঙালির রসিক মনের গূঢ়তম অভিব্যাক্তি ...)

সপ্তদশ ও অস্টাদশ শতকে বাংলার রেশমি কাপড়ের আড়ংগুলি (আড়ং শব্দটা ফারসি। আড়ং বলতে বড় আকারের বাজারকে বোঝায়) ছিল জমজমাট। বর্গী আক্রমনে আড়ংগুলি লোকশূন্য হয়ে পড়ে, আড়ংগুলি খাঁ খাঁ করতে থাকে। বাংলার অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়তে থাকে। বাংলাজুড়ে খাদ্যশস্যের অভাব দেখা দেয়, ব্যবসা-বানিজ্য বন্ধ হয়ে যেতে থাকে। যা হোক। বর্গীরা চৌথ আদায় করতে থাকে এবং পুবের যশোর জেলা অবধি বর্গীদের খাজনা আদায় ক্রমেই সম্প্রসারিত হতে থাকে। বর্গীদের নির্মম অত্যাচারে বহু লোক ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করে গঙ্গার পূর্বাঞ্চলে ( বর্তমান বাংলাদেশে) চলে আসে। পূর্বাঞ্চলের বাঙালিরাও বর্গী লুন্ঠনের শিকার হয়।

বাংলাপিডিয়ায় মোহাম্মদ শাহ লিখেছেন, ‘ঘন ঘন মারাঠা হামলা বাংলাকে মহাবিপর্যয়ে নিপতিত করে। বাংলার জনগনের জন্য এটা এতটাই ধ্বংস আর দুঃখ বয়ে আনে যে, মারাঠা বর্গীদের হামলার ভীতিকর গল্প বাংলার শিশুদের ঘুমপাড়ানি গানে বিশেষ স্থান অধিকার করে। এর সাথে অজন্মা ও খরা মিলে বাংলার অবস্থা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। মারাঠা হানাদাররা লুন্ঠন, অগ্নি সংযোগ ও হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে বাংলার জনগনের মনে এমনি ত্রাসের সঞ্চার করেছিল যে, বহুলোক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে গঙ্গার পূর্বদিকের জেলাগুলিতে পালিয়ে যায়। এতে উক্ত এলাকার জনসংখ্যার চাপ বৃদ্ধি পেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করে। মূল এই অর্থনৈতিক সংকটই পরবর্তী সময়ে বাংলার নওয়াবকে বিপর্যস্ত ও পর্যুদস্ত করে।’
বাংলার ইতিহাসে মীর জাফরের আগেও মীর হাবিব নামে বাংলায় আরও একজন বিশ্বাসঘাতক ছিল! পারস্য সেই অভিজাতটি এক সময় নওয়াব আলীবর্দী খানের ঘনিষ্ট ছিল; অথচ, এই লোকটিই লোকাল এজেন্ট হিসেবে বর্গীদের সাহায্য করত! আসলে মীর হাবিব ছিল রাজাকার; তার বাংলা সম্বন্ধে খুঁটিনাটি জ্ঞান ছিল। বর্গীরা সে জ্ঞান প্রয়োগ করে সহজেই বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ত!

১৭৪২ সালের মাঝামাঝি বাংলা থেকে বর্গীদের নিমূর্ল করার কঠিন সিদ্ধান্ত নেন নওয়াব আলীবর্দী। নওয়াবের এ সিদ্ধান্ত বাঙালিদের ভালোবেসে নয়, দিল্লির প্রাপ্য খাজনায় বর্গীরা ভাগ বসাচ্ছিল বলেই। ১৭৪৩ সালে বর্গীরা মেদিনীপুর আক্রমন করে। নওয়াব আলীবর্দীর নেতৃত্বে মুগল সৈন্যরা মেদিনীপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ৯ ফেব্রুয়ারি দুপক্ষের তুমুল সংর্ঘষ হয়। নওয়াব আলীবর্দীর উন্নততর রণকৌশলের ফলে মেদিনীপুর থেকে বর্গীরা উৎখাত হয়ে যায়। ১৭৪৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বর্গী নেতা ভাস্কর পন্ডিত আবার বাংলা আক্রমন করে বসে। নওয়াব আলীবর্দী খান বাধ্য হয়ে এবার ষড়যন্ত্রের পথ ধরেন। বর্গী নেতা ভাস্কর পন্ডিতকে বৈঠকের আহবান জানান। বৈঠকে ২১ জন বর্গীসহ ভাস্কর পন্ডিত এলে তাঁবুর আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুগল সৈন্যদের আক্রমনে বর্গীরা নিহত হয়। ১৭৫০ সালের বর্গীরা আবার বাংলায় হানা দেয়। ১৭৫১ সালে বর্গী আক্রমনের তীব্রতা এতই বেড়ে যায় যে, নবাব আলীবর্দী খানকে মারাঠা-বর্গীদের সঙ্গে সন্ধিচুক্তি করেন। এই সন্ধিচুক্তি অনুযায়ী তিনি উড়িষ্যার অধিকার ছেড়ে দেন। চুক্তির শর্তানুসারে মীর হাবিব নওয়াবের কর্মকর্তা হিসেবে পরিগণিত হবেন এবং উড়িষ্যায় নওয়াবের নায়েব নাজিম বা ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্ব পালন করবেন; আলীবর্দী মীর হাবিবের জন্য উড়িষ্যায় ১২ লক্ষ টাকা চৌথ পাঠাবেন এবং প্রদেশের রাজস্বের উদ্বৃত্ত টাকা রঘুজীকে পাঠাবেন। এ চুক্তি অনুসারে ভবিষ্যতে আর কখনও যেন আলীবর্দীর এলাকায় হানাদার মারাঠাদের পদার্পণ না ঘটে মারাঠা সরকার সেই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। কিন্তু ১৭৫২ সালের ২৪ আগস্ট মারাঠা সৈন্যদের হাতে মীর হাবিব নিহত হলে আলীবর্দী উড়িষ্যায় তাঁর নিয়ন্ত্রণ হারান এবং প্রদেশটিতে পুনরায় মারাঠাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
আর তার মাত্র ৬ বছর পর ইংরেজদের করতলগত হয়ে যায় বাংলা । ওদিকে মারাঠা-বর্গীরা মুগলদের পরির্বতে নতুন এই শক্তির মুখোমুখি হতে হয়- যে শক্তিটি মুগলদের চেয়ে সহস্রগুণ চতুর খল ও শক্তিশালী।

তথ্যসূত্রঃ ১/সিয়ার উল মুখতারিন
২/বাংলাপিডিয়া

Tathagata Banerjee এর ওয়াল থেকে নেওয়া

#ফব

Babu'S Philosophy

Address

Sher-E-Bangla Road
Dhaka
1207

Telephone

+8801757534337

Website

https://mrrcreations.my.canva.site/

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when MD Rayhan Raju posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to MD Rayhan Raju:

Videos

Share

Category