13/01/2023
আমরা যারা দেখতে খুব একটা আকর্ষণীয় হই না, মেধা থাকে মিডিওকোর লেভেলের এবং আর্থিক সক্ষমতা থাকে টানাপোড়েনের মধ্যে, আমাদের মধ্যে না কিছু বিষয় খুব কমন থাকে!!
আমরা দেখতে এত সাধারণ হই যে, কেউ কখনো দ্বিতীয়বার ঘুরে তাকায় না। আমরা রাস্তার ধারে নাকেমুখে তরমুজ মাখিয়ে খেলেও যেমন কারো চোখে পড়ি না, তেমনি কোন প্রোগ্রামের গেইটে সেজেগুজে রিকশা থেকে নামলেও কেউ পাত্তা দেয় না।
আমরা কখনো কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় টপ করি না। স্কুল কলেজে টপের দুই ধাপ নীচে থেকে থেকে পরিবার পরিজনের এক্সপেকটেশন বাড়াই শুধু। এরপর প্রতিযোগিতার আসল সমুদ্রে নামার পরে এক্সপেকটেশনের চাপে টুপ করে ডুবে হারিয়ে যাই। কিংবা মরে গিয়ে পেট উপরে জাগিয়ে ভেসে উঠি, বিষ ঢালা পুকুরের বোয়াল মাছের মত।
আমাদের আর্থিক সক্ষমতার গল্পগুলো হয় খুবই পীড়াদায়ক। ছোটবেলায় যখন আমাদের ২০ টাকার পেটিস খাওয়ার শখ হয়, তখন আমাদের কাছে থাকে ১৬ টাকা। মাঝবয়সে যখন আমাদের ২০ হাজার টাকার বাসায় থাকতে ইচ্ছে করে, তখন আমাদের কাছে থাকে ১৬ হাজার টাকা। শেষ বয়সে যখন ২০ লাখ টাকার গাড়িতে চড়তে ইচ্ছে করে, আমাদের ব্যাঙ্কে থাকে ১৬ লাখ।
এরকম দুই বা চারের ছোট্ট ফাঁকগুলো গলে বেরিয়ে যায় আমাদের সব স্বপ্ন, সাধ, আহ্লাদগুলো!!
আমরা কখনো গান গাইতে পারি না, কবিতা আবৃত্তি পারি না, ছবি আঁকতে পারি না, বিতর্ক পারি না, গল্পের জমজমাট আসরের মধ্যমণি হতে পারি না। এরপর একদিন আমরা হুট করে আবিষ্কার করে বসি, উপরওয়ালা আমাদেরকে কোন ধরণের বাড়তি গুণ দিয়ে পৃথিবীতে পাঠান নি।
তিনি আমাদেরকে পাঠিয়েছেন শুধু অন্যের গিফটেড কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে হাততালি দিয়ে যাওয়ার জন্য, হাততালি পাওয়ার জন্য নয়!!
আমরা ভীড় তৈরী করি, কিন্তু কখনো ভীড়ের কারণ হতে পারি না। আমরা অন্যকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি, কিন্তু নিজে কখনো কারো স্বপ্নের কারণ হতে পারি না। আমরা সবাইকে এপ্রিশিয়েট করে চলি, কিন্তু নিজেরা কখনো এপ্রিসিয়েশন পাই না।
ভীড় থেকে নিজেকে আলাদা করার চেষ্টা আমরা যারা করি, আমরা সবসময় হেরে যাই। দুটো হাততালি পাওয়ার আশায় আমরা হয়ে উঠি পিপল প্লিজার। ব্যতিক্রম কিছু হতে চেয়ে আমরা সবসময়ই হয়ে উঠি কাছের মানুষের উপহাসের পাত্র।
যাকে মুগ্ধ করতে চাই, তার চোখে দেখি করুণা। যার কাছে প্রায়োরিটি চাই, তার কাছে পাই অবহেলা। যাদের পায়ে দুনিয়াটা এনে দিতে চাই, তারা বলে, ইউ আর নট এনাফ!!
আমাদের কপালে দিনশেষে থাকলে শুধু মারই থাকে, পিঠ চাপড়ানোর মত।