20/08/2023
অভিশাপ
পর্ব_০৩
-চুপ! ডাইনি,, নিজের সন্তান কাকে দাবি করিস।ওটা একটা জারজ সন্তান।তোর পাপ কর্মের সন্তান!! (মাধবীলতার আম্মু)
মাধবীলতা কান্না শুরু করে দিলো।মাঝ খানে ডাক্তার বলল....
-বাচ্চা এখন আর নষ্ট করা সম্ভব না।আপনারা চাইলে কয়েকটা সপ্তাহ বাদে অপারেশন করতে পারেন।এখন নষ্ট করলে মা এবং সন্তান দুজনেরই ঝুকি আছে... (ডাক্তার)
-আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম তোমার মেয়ের পেট বেরে যাওয়া নিয়ে।নাহ্! তুমি বলেছিলে মেয়ে মোটা হচ্ছে।মোটা হলে কোন মেয়েরই এভাবে পেট হয়ে যায় না..!(মাধবীলতার আম্মু)
মাধবীলতার বাবাকে ইঙ্গিত করে এসব কথা বলল।
মেয়ের এরকম কাজে বার বার লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে।লজ্জায় টকবক করছে বাবার চেহারাটা, টোল পরা গালে লজ্জায় লাগ লাল রং এর পষ্ট ছাঁঁপ।
চেয়ারটা সরিয়ে দিয়ে উঠে গেলো নিজেস্ব গাড়িতে।এক হাতে ড্রাইভিং করছে অন্য হাতে জ্বলন্ত সিগারেট।
মাধবীলতা তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে, সে লোকটা তার মেয়ের মায়াবী মুখ-খানা দেখলে সিগারেটের কথা ভুলে যেত।অন্য দিনের মতো আজও মুখ থেকে টান দিয়ে নিয়ে বাহিরে ফেলে দিলো..
-ঠাসসস্, সাহস কিভাবে হয় তোর সিগারেট ফেলে দেবার?
-আবব্বুউঁ...!
(গালে হাত রেখে কাঁদছিলো মাধবীলতা, যে বাবা তাকে মামুনী ছাড়া ডাকতো না আজ তার মুখে তুই শব্দটা শুনে কান্না আটকাতে পারেনি)
-ছিঃ তোর মেয়ে যেন কোন বাবা-মা না পায়, তুই হয়তো জানিস না বাবা-মা তাদের সন্তানকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখে থাকে..!
টপ করেই একটা ফোঁটা চোখের-জল কালো জুতোই চুইয়ে পরে।সহজেই কোন পুরুষ কাঁদেনা,,,
গাড়িটা থামিয়ে হন-হনিয়ে বাবা-মা বাসার ভেতরে চলে গেলো। নিরব কান্নায় ভেসে দিচ্ছে নরম বালিশটা, সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতের অন্ধকার নিমে এসেছে, রুমের সব লাইট'টা বন্ধ করানো।
পাগলের মতো ছুটে গেলো মোবাইল ফোনের কাছে।কায়েস বার কার মাধবীলতার ফোনটা কেটে দিচ্ছে।
সে এখন অন্য মেয়ের জন্য ব্যস্ত!
শেষে বিরক্ত হয়ে ফোনটা ধরেই মেজাজ দেখিয়ে বলল....
-তোমার কি কোন কাজ থাকেনা নাকি? সব সময় এত ফোন কেন দাও!
-আমাকে বিয়ে করতে পারবা?
-বিয়ে...!!
(আচর্য হয়ে)
-কেন তুমিই তো বিয়ের স্বপ্ন দেখি অনেক কিছু করেছো।এখন আমার চরিত্রটা রক্ষা করো,,
(কেঁদেই দিয়েছে ফোনের ওপাশ থেকে)
-কখন?
-দেখি আমি সিরিয়াসলি বলছি।আই এম প্রেগন্যান্ট, তুমিই বলো এই সন্তানের কি করবা?
-আমি এখন বিয়ে টিয়ে করতে চাইনা, আর তুমি একটা চরিত্রহীন মেয়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারলে অন্যজনের সঙ্গে করতেও...
-কায়েস!
-চিল্লাও ক্যান? বাচ্চা নষ্ট করে দিলে সমস্যার সমাধাণ হয়ে যাবে,,!
কায়েস ফোনটা কেটে দিয়ে সিমটাই ফেলে দিলো।
মাধবীলতার টেবিল ল্যাম্পের উপর প্লিল বরি দেখে হাতে নিতেই দেখলো "আউট অফ ডেট" হয়ে গেছে প্লিল গুলোর।
সব মা-বাবাই তার সন্তানের ভালো চায়।অবস্যই মাধবীলতাকে তার বাবা মাও একটা সুযোগ দিতে পারে।
টিপটিপিয়ে তার আম্মু আব্বুর রুমে চলে গেলো।
কয়েকটা নক দিতেই ভেতর থেকে ছিটকেরি খুলে দিলো।বিষন্যতা মুখে তাকিয়ে আছে তার আম্মু।জোরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো..
-আবার কাঁদছিস কেন? যা হবার হয়ে গেছে।আমরা একটা না একটা ব্যস্ততা করবই.. (মাধবীলতার আম্মু)
-সরি আম্মু!
-পাগলী মেয়ে চোখের জল মুছ!! (মাধবীলতার আম্মু)
-সরি আম্মু আব্বু এখন থেকে তোমরা যা বলবে তাই শুনবো...,
(মাথা নিচু করে, কেঁদে বলল)
মাধবীলতার আম্মু-আব্বু নিজেস্ব কিছু কথা বলল।
আব্বু নড়েচড়ে বসলো, হুট করেই তার আম্মু বলল...
-তোর বাচ্চা হওয়ার ডেট আর কিছু দিন পর।আমরা জারজ বাচ্চাটা ফেলে দিতে চাই.. (মাধবীলতার আম্মু)
-নাহ্! আম্মু এসব তুমি কি বলো? হাজার হলেও সেটা আমার সন্তান।তুমি কি আমাকে মেরে ফেলতে পারবে?
-এই না বললি "যা বলবে তাই করব"! (মাধবীলতার আম্মু)
-আমার সন্তানকে মারতে পারব না,,
(রাগি মেজাজ দেখিয়ে)
-জারজ সন্তান, ওই সন্তানের কি পরিচয় দিবি? যদি বড় হয়ে বাবার পরিচয় চায় তখন কি জবাব দিবি (মাধবীলতার আম্মু)
-আমার সন্তানকে আমার পরিচয়ে বড় করব...
-লোক সমাজে কি পরিচয়ে বড় করবি।সবার তো আর জানার বাঁকি নেই তোর এসব নোংরামির ঘটনা জানার!! (মাধবীলতার আম্মু)
-আমি বুঝবো সেটা,,,
-হুমম তোর যেটা ভালো মনে হয়।ওই সন্তান যেন কোনো দিন আমাকে নানী ডাকটা না ডাকে, বিধাতার কাছে এটাই চাওয়া..... (মাধবীলতার আম্মু)
-প্লীজ আম্মু একটু চুপ করবা?
-যদি মেয়ে জন্মই না হতো তাহলে হয়তো সমাজের সামনে মাথা নিচু করে হাঁটতে হতো না,, (মাধবীলতার আব্বু)
-আব্বু তুমিও আমাকে অবহেলা করতেছো?
-আমার একটা বন্ধু ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করেছি, মাইনে অনেক ভালো।একবার বিয়ে হয়েছিলো বউ রেখে চলে গেছে।সংসারের কাজ বলতে তেমন কিছু করতে হবে না শুধু একটা বাচ্চা মেয়ে আছে তার যত্ন নিতে হবে" (মাধবীলতার আব্বু)
-একটা ডিভোর্সি ছেলের সাথে বিয়ে!
(আচর্য হয়ে)
-তো কি রাজকুমারের সাথে বিয়ে করতে চাচ্ছিস (হা হা) (মাধবীলতার আম্মু)...........................................................................
পরের পর্ব পেতে কমেন্ট অবশ্যক
বিঃদ্রঃ আপনি যদি গল্প প্রেমি হন তাহলে পেইজটা ফলো দিয়ে পাশে থাকুন। পরবর্তী পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে নোটিফিকেশন পেয়ে যাবে।