10/03/2023
উনার দাদির নাম ফাতিমা, মায়ের নামও ফাতিমা। স্ত্রীর নামও ফাতিমা, এক কন্যার নামও ফাতিমা। ফাতিমাময় এই মানুষটি লালিত হয়েছেন মহানবী ﷺ এর প্রত্যক্ষ তারবিয়াতে। বলছিলাম আলী (রা:) এর কথা!
এই সিংহপুরুষ লড়াইয়ের ময়দানে ভয়ংকর হয়ে উঠলে কারো রক্ষে ছিলোনা। কিন্তু ঘরে? তিনি ছিলেন প্রেমময় স্বামী। দাম্পত্য কলহ ছাড়া সংসার আছে?! আজকাল মিয়া-বিবির মাঝে কলহ হলেই বৌকে ঘরছাড়া করা হয়। আর আলী (রা:) এমন পরিস্থিতিতে নিজে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেতেন। মসজিদে নববীর মাটিতে শুয়ে থাকতেন। নবীজি ﷺ পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে মেয়ের জামাইয়ের মান ভাঙাতে যেতেন। মিটিমিটি হেসে বলতেন- কি ব্যাপার মাটিওয়ালা! নামটা এত পছন্দ হলো আলীর, জনে জনে বলে বেড়াতেন নবীজি ﷺ তাঁর নাম দিয়েছেন আবু তুরাব- মাটিওয়ালা।
একদিন তো আলী অভিমান করেই বসলেন। নবীজিকে ﷺ জিজ্ঞেস করলেন- আপনার কাছে কে বেশি প্রিয়? আমি নাকি ফাতিমা? (রা:). মুচকি হেসে নবীজি ﷺ বললেন- ফাতিমা আমার সবচেয়ে প্রিয়, আর তুমি আমার কাছে সবচেয়ে সম্মানিত! এমন একজন শশুর মানবেতিহাসে আর কে আছেন?!
এখন যুবকদের মুখে রাতদিন মাসনা করার ফ্যান্টাসি। আর ওদিকে প্রথম স্ত্রী-প্রথম প্রেমের জীবদ্দশায় নবীমনে কখনো দ্বিতীয় বিয়ের চিন্তাও আসেনি। তাঁর আদর্শে লালিত আলীও প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় অন্য বিয়ে করেননি। নবীজির ﷺ এক নিখুঁত ছায়া ছিলেন তিনি। হাসানকে (রা:) কাঁধে নিয়ে যখন পথ চলতেন, হাসান বলতো- আমার বাবা হুবহু নবীজির ﷺ মতো। কিন্তু নবীজি ﷺ আমার বাবার মত নন। এই শুনে হেসে গড়িয়ে পড়তেন আবু বকর (রা:)।
যখন হাসান (রা:) জন্ম নিলো, নবীজি ﷺ ছুটে এলেন। বললেন, আমার বংশ কই আমার কোলে দাও। কি নাম রেখেছো? আলী বললেন- হারব। নবীজি ﷺ বললেন- উহু, ওর নাম হাসান। এরপর হুসাইন (রা:) জন্মালেও একই ঘটনা ঘটলো। নাম কি রেখেছো? আলী বলেন: হারব! উহু, এর নাম হুসাইন। এরপর একই ঘটনা যখন মুহসিন হলো।
আহ! নবীপরিবার! সোনালী পরিবার। কতটা নিবিড় আর সাদাসিধে! কতটা ভালোবাসা আর মিষ্টি বন্ধন!
আল্লাহুম্মা সল্লি আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাল্লাম।
©