EidgahNews.Com - ঈদগাঁও নিউজ

EidgahNews.Com - ঈদগাঁও নিউজ প্রতিমুহূর্তে ঈদগাঁওকে জানতে আমাদের

20/12/2024

ঈদগাঁওতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির মতবিনিময়
শোষণ মুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে ছাত্র-জনতা বদ্ধপরিকর
মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও।
২০২৪ এর জুলাই- আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণ সভায় বক্তারা বলেছেন, এ বিপ্লবের স্প্রিটকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র- জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো মাঠে- ময়দানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকি তাহলে তারা আবারো ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠায় তৎপরতা চালাবে। বিপ্লব রক্ষার্থে সকল ধরনের দলাদলি ও মতভেদ ভুলে যেতে হবে। আন্দোলনকে দ্বিধা- বিভক্ত করা যাবে না। ছাত্র- জনতার ঐতিহাসিক এ মহাজাগরণ আমাদেরকে নতুন পথের দিশা দিয়েছে। মুক্ত, অবাধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে ছাত্র জনকে সদা সোজাগ থাকতে হবে। ফ্যাসিস্টদের কোন মতে সহ্য করা হবে না। তারা দেশের মানুষের সকল ধরনের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। দেশের সম্পদ লুটেপুটে খেয়েছে। বিদেশে পাচার করেছে হাজার হাজার কোটি টাকা। দেশের মানুষ অনাহারে- অর্থাহারে থাকলেও তাদের কোন মাথা ব্যাথা ছিল না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ঈদগাঁও উপজেলা শাখা শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর বিকেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত এ আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও ঈদগাঁও উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজার জেলা শাখার সমন্বয়ক সাহাব উদ্দিন ও ঈদগাঁও উপজেলা শাখার প্রতিনিধি এডভোকেট এস, কে আহমদ ফারুকীর যৌথ সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন ও বিভাগীয় প্রতিনিধি রাকিব হোসাইন নওশাদ (চট্টগ্রাম কলেজ)। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঈদগাঁও উপজেলা শাখার প্রতিনিধি হাবিব আজাদ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা প্রতিনিধি আখতার হোসেন, সাহাব উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ। ঈদগাঁও উপজেলার পক্ষে বক্তব্য দেন ছাত্র প্রতিনিধি নাহিদুল ইসলাম শাহীন, মাহাথির আনাস ও বেলাল আহমেদ। জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন তারেকুর রহমান। এতে জুলাই- আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত প্রার্থনা ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া- মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচকরা আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এখনো যারা মাঠে ময়দানে- ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
তারা বলেন, যতদিন না বৈষম্যহীন ও শোষণ মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব না হবে ততদিন সাধারণ ছাত্র-জনতা মাড ছাড়বে না।
ছাত্র প্রতিনিধিরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধাভোগী যে সকল আমলা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে তাদের প্রতি কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

মাহবুবুর রহমান। ‌কক্সবাজারে  "২৭ তম ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, আইসিসিআইটি শীর্ষক আ...
20/12/2024

মাহবুবুর রহমান। ‌কক্সবাজারে "২৭ তম ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, আইসিসিআইটি শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আজ শুরু হয়েছে।

কলাতলীর একটি অভিজাত হোটেলে ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই), বাংলাদেশ সেকশন-এর উদ্যোগে
তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে এর উদ্বোধন করেন সংগঠনটির (আইইইই) গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট টম কফলিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইইইই এশিয়া প্যাসিফিক রেজিওন ডিরেক্টর তাকাকো হাশিমোতো এবং গেস্ট অব অনার ছিলেন এশিয়া প্যাসিফিক রেজিওন ডিরেক্টর সামির এস. এম.।
জেনারেল চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাসাচুসেটসের ডক্টর মোহাম্মাদ এ. করিম, যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা ইউনিভার্সিটির ডক্টর মোহাম্মাদ এস. আলম এবং বুয়েটের ইইই বিভাগের প্রফেসর ড. সেলিয়া শাহনাজ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক। বক্তব্য রাখেন কনফারেন্সের টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম চেয়ার ও বুয়েটের ইইই বিভাগের প্রফেসর ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ।

এবার জমাকৃত প্রায় দেড় হাজার প্রবন্ধ থেকে উপস্থাপিত হচ্ছে প্রায় সাড়ে ছয়শোটি। সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি ও পাওয়ার সিস্টেমস বিষয়ক গবেষণার তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ের পাশাপাশি প্রযুক্তি সম্পর্কিত সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে আলোকপাত করা হচ্ছে। এতে দেশ-বিদেশের শিক্ষক, গবেষক ও প্রকৌশল শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অন্তত এক হাজার জনের মিলনমেলা বসেছে। আগামীকাল সন্ধ্যায় এর সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকার ফাইনালে ইউক্রেনের অলিম্পিয়ান শাটলার খেলাধুলা। শুক্রবার ছুটির দিন ও শীতের বিকেলে ভালোই জমেছিল পল্টনের শহীদ তাজউদ্দি...
20/12/2024

ঢাকার ফাইনালে ইউক্রেনের অলিম্পিয়ান শাটলার খেলাধুলা। শুক্রবার ছুটির দিন ও শীতের বিকেলে ভালোই জমেছিল পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টন লড়াই। নারী এককের সেমিফাইনালে ইউক্রেনের পলিনা বুহরোভা ও আমেরিকান ইসিকা জয়সওয়ালের খেলা হয়েছে সেয়ানে-সেয়ানে। দুই জনই এক সেট করে জেতায় খেলা গড়ায় তৃতীয় সেটে। তৃতীয় সেটেও দুই জনের ২০-২০ পয়েন্টে সমতা ছিল। শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনের পলিনা ২৪-২০ পয়েন্টে জিতে ফাইনালে উঠেন।পলিনা বুহরোভা সদ্য সমাপ্ত প্যারিস অলিম্পিকে খেলেছেন। অলিম্পিয়ান এই শাটলারের বাংলাদেশে আগমন নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ইতিবাচক। ঢাকার আমন্ত্রণমূলক এই টুর্নামেন্টে আসার কারণ সম্পর্কে পলিনা বলেন, ‘বছরের শেষ মাসে আমার একটি টুর্নামেন্ট খেলা প্রয়োজন ছিল। এটা চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্ট। ব্যাডমিন্টনের তৃতীয় শীর্ষ স্তর। তাই বছরের শেষ টুর্নামেন্ট হিসেবে এটা বেছে নিই।’

ঢাকায় আয়োজিত সানরাইজ-ইউনেক্স ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী নারী শাটলারদের মধ্যে পলিনার বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংই সবচেয়ে কম। স্বাগতিক বাংলাদেশ ও অন্য বিদেশি শাটলারদের মান তার চেয়ে নিচেই। এরপরও এই টুর্নামেন্টের মান ও আয়োজনে মুগ্ধতার কথাই শোনালেন এই অলিম্পিয়ান, ‘আমরা এখানে খেলেই হোটেলে যাচ্ছি। অন্য ম্যাচগুলো সেভাবে দেখা হয় না। কোর্ট ও পরিবেশ সবকিছুই সুন্দর ও ভালো লেগেছে।’

শুক্রবার ছুটির দিন ও শীতের বিকেলে ভালোই জমেছিল পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টন লড়াই। নারী এককের সেমিফাইনালে ইউক্রেনের পলিনা বুহরোভা ও আমেরিকান ইসিকা জয়সওয়ালের খেলা হয়েছে সেয়ানে-সেয়ানে। দুই জনই এক সেট করে জেতায় খেলা গড়ায় তৃতীয় সেটে। তৃতীয় সেটেও দুই জনের ২০-২০ পয়েন্টে সমতা ছিল। শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনের পলিনা ২৪-২০ পয়েন্টে জিতে ফাইনালে উঠেন।

পলিনা বুহরোভা সদ্য সমাপ্ত প্যারিস অলিম্পিকে খেলেছেন। অলিম্পিয়ান এই শাটলারের বাংলাদেশে আগমন নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ইতিবাচক। ঢাকার আমন্ত্রণমূলক এই টুর্নামেন্টে আসার কারণ সম্পর্কে পলিনা বলেন, ‘বছরের শেষ মাসে আমার একটি টুর্নামেন্ট খেলা প্রয়োজন ছিল। এটা চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্ট। ব্যাডমিন্টনের তৃতীয় শীর্ষ স্তর। তাই বছরের শেষ টুর্নামেন্ট হিসেবে এটা বেছে নিই।’

ঢাকায় আয়োজিত সানরাইজ-ইউনেক্স ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী নারী শাটলারদের মধ্যে পলিনার বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংই সবচেয়ে কম। স্বাগতিক বাংলাদেশ ও অন্য বিদেশি শাটলারদের মান তার চেয়ে নিচেই। এরপরও এই টুর্নামেন্টের মান ও আয়োজনে মুগ্ধতার কথাই শোনালেন এই অলিম্পিয়ান, ‘আমরা এখানে খেলেই হোটেলে যাচ্ছি। অন্য ম্যাচগুলো সেভাবে দেখা হয় না। কোর্ট ও পরিবেশ সবকিছুই সুন্দর ও ভালো লেগেছে।’

বিজ্ঞাপন

যেকোনো ক্রীড়াবিদের স্বপ্ন অলিম্পিকে খেলা। পলিনা মাত্র ২০ বছর বয়সেই সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। প্যারিস অলিম্পিকে খেলা সম্পর্কে তার মন্তব্য, ‘আসলেই অলিম্পিক সকল ক্রীড়াবিদের জন্য আলাদা মোহ। আমি খুব আনন্দিত এবার প্রথমবারের মতো অলিম্পিক খেলেছি। এবার পদক পাইনি, সামনে পদক জয়ের চেষ্টা করব।’ অলিম্পিকের মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় খেলোয়াড়দের। নিজের ব্যাডমিন্টন পরিশ্রম নিয়ে পলিনা বলেন, ‘প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা অনুশীলন করি। এরপর ভিডিও বিশ্লেষণ ও বিশ্রামে কাটে আরও কয়েক ঘণ্টা। টুর্নামেন্টের সময় অনুশীলনের তারতম্য হয়।’

ইউক্রেন ফুটবল, অ্যাথলেটিক্স ও জিমন্যাস্টিক্সের প্রচলন এবং জনপ্রিয়তা বেশি। ওই দেশ থেকে অলিম্পিকের ব্যাডমিন্টনে অংশগ্রহণ বেশ কৃতিত্বপূর্ণই। তার ব্যাডমিন্টনে আগমনের গল্পটিও বেশ মজারই। ‘স্কুলে পড়াবস্থায় আমি একটু স্থুলকায় ছিলাম। গানও শিখতাম। গানের শিক্ষক বললেন ওজন কমাতে। আমাদের স্কুলে ব্যাডমিন্টন প্রচলন ছিল। তখনই ব্যাডমিন্টন বেছে ছিলাম। ওজন কমার পাশাপাশি খেলাটায় মজাও পেলাম। এরপর থেকেই ব্যাডমিন্টনের সঙ্গে’, গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে বলছিলেন পলিনা।

বিজ্ঞাপন

অনেকটা কাকতালীয়ভাবেই ব্যাডমিন্টনে আসা পলিনার। তার পরিবারের কেউ খেলাধুলার সঙ্গে সেভাবে জড়িত ছিলেন না। পরিবার প্রথমদিকে ব্যাডমিন্টনকে সেভাবে সমর্থনও করত না বলে জানান পলিনা, ‘আমার মা জিমন্যাস্টিক্স ও বাবা অ্যাথলেটিক্স করতেন ছোটবেলায়। সেটা তেমন কোনো পর্যায়ে ছিল না। আমি ব্যাডমিন্টন সিরিয়াসলি নেওয়ার পর তারা একটু উদ্বিগ্ন ছিলেন। শুরুর দিকে চ্যালেঞ্জিং ছিল, পরবর্তীতে সফল হওয়ার পর তারাও সহায়তা করেছে।’

পলিনা ইউক্রেনের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। নিজ দেশে গত ২-৩ বছর থাকতে পারছেন না যুদ্ধের জন্য। এখন ইতালির পালেরমো শহরে থাকেন। তার পরিবারও ইতালিতে থাকছে। ইতালিতে এসে জুটি গড়েছেন ইউক্রেনের আরেক নারী শাটলার ইয়েভলিনা কান্তেমার সঙ্গে। ঢাকায় একসঙ্গে দ্বৈত ইভেন্টেও খেলছেন তারা। তাদের সঙ্গে এসেছেন একজন ইতালি কোচও।

ইতালির পালেরমো শহরে বেড়ে ওঠা এক বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল ব্যাডমিন্টনের গ্যালারিতে। তিনি বাংলাদেশের ব্যাডমিন্টনের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলেও ইতালিতে পলিনাদের সঙ্গে একই ক্লাবে খেলেন। ইউক্রেনের দুই শাটলারেরই তার সঙ্গে বেশ সখ্য। তার দেওয়া তথ্য– ইউক্রেনের দুই শাটলার গত দুই বছর ইতালীয় নারী কোচের অধীনে অনুশীলন করছেন। সেই কোচের স্বামী তাদের নিয়ে এসেছেন ঢাকায়। ইউক্রেনের শাটলারদের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ ও সরঞ্জামের খরচ বহন করে ‘ভিক্টর’ কোম্পানি।

গাজায় নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল : এইচআরডব্লিউগাজায় নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক ...
20/12/2024

গাজায় নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল : এইচআরডব্লিউ
গাজায় নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

সংস্থাটি বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইল গাজাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এর মধ্য দিয়ে গাজায় নিদারুণ ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে তারা। সেখানে তারা এত অধিক পরিমাণ মানুষকে হত্যা করছে, যা গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে। এটি স্পষ্ট মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

গাজার চলমান যুদ্ধ গত বছরের ৭ অক্টোবর শুরু হয়। এরপর থেকে অব্যাহতভাবে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তারা সেখানে এত নৃশংসতা প্রদর্শন করেছে যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।

আইসিসি ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার কয়েক দিন আগে ১৪ নভেম্বর জাতিসঙ্ঘের একটি বিশেষ কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে ইসরাইল গাজায় অনাহার ও এমন কিছু নীতিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যাতে গণহত্যার আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠেছে।

সূত্র : মিডল ইস্ট আই

কোরআন-সুন্নাহর মাধ্যমেই শান্তির সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব : জামায়াত আমিরকোরআন-সুন্নাহর মাধ্যমেই শান্তির সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব ...
20/12/2024

কোরআন-সুন্নাহর মাধ্যমেই শান্তির সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব : জামায়াত আমির
কোরআন-সুন্নাহর মাধ্যমেই শান্তির সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আল্লাহ মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, একথা পরখ করার জন্য যে, কে সবচেয়ে বেশি নেক আমল করে। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য সকলকে নেক আমল ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী এমন এক বৈষম্যহীন ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় যে সমাজে কেউ না খেয়ে থাকবে না, আর কেউ অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে বিদেশে পাচারের মাধ্যমে অর্থবিত্তের পাহাড় জমাবে এমন হবে না। আর কোরআন-সুন্নাহর আইনের মাধ্যমে এমন শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। যে সমাজে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করা হবে, সেই সমাজই আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণে সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।’

কাফরুল পশ্চিম থানা আমির আব্দুল মতিন খানের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মাওলানা আতিক হাসান রায়হানের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ ও শাহ আলম তুহিন প্রমুখ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেইআইন আদালত। অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসা...
20/12/2024

উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই
আইন আদালত। অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার দুপুরে তিনি রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে মারা যান।

উপদেষ্টার একান্ত সচিব মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন মানবজমিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরে বাসায় সকলের সঙ্গে খাবার খেতে বসলে হঠাৎ করে স্যার পড়ে যান। এরপর ল্যাব এইড হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক বেলা ৩টা ১০ মিনিটের দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে তার মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ.এফ. হাসান আরিফ অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। এছাড়া তিনি ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও উপদেষ্টা ছিলেন।

এ. এফ. হাসান আরিফ ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে ১৯৬৭ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এ অনুষ্ঠান
20/12/2024

কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এ অনুষ্ঠান

স্মরণ সভা, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা আয়োজনে- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি, ঈদগাঁও উপজেলা শাখা।
20/12/2024

স্মরণ সভা, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা
আয়োজনে- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি, ঈদগাঁও উপজেলা শাখা।

20/12/2024

সরাসরি---
ঈদগাঁও উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির অনুষ্ঠান থেকে।

20/12/2024

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল-
২০২৪ জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান ঘোষণা দিলেন দৈনিক আমার দেশ পুনঃ প্রকাশ হচ্ছে ২২...
20/12/2024

জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান ঘোষণা দিলেন দৈনিক আমার দেশ পুনঃ প্রকাশ হচ্ছে ২২ ডিসেম্বর, রবিবার

ইসলামের দাওয়াতে এসে সংঘর্ষ-মৃত্যু, কী হচ্ছে তাবলিগেহোমঅন্যান্যইসলামের দাওয়াতে এসে সংঘর্ষ-মৃত্যু, কী হচ্ছে তাবলিগেসালমান ...
20/12/2024

ইসলামের দাওয়াতে এসে সংঘর্ষ-মৃত্যু, কী হচ্ছে তাবলিগে

হোমঅন্যান্য
ইসলামের দাওয়াতে এসে সংঘর্ষ-মৃত্যু, কী হচ্ছে তাবলিগে
সালমান তারেক শাকিল
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:০০

গাজীপুরের টঙ্গী ইজতেমা মাঠে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা ঠেকাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের বিক্ষোভ, বুধবারের ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে গিয়ে তাবলিগ জামাতে যুক্ত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাচ্চু। ইসলামের দাওয়াতের কাজে ইজতেমার মাঠে আসা ৭০ বছরের এই বৃদ্ধের প্রাণ গেছে প্রতিপক্ষের হামলায়। ঘুমন্ত অবস্থায় বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ঘটনাস্থলেই নিহত হন দুই পুত্র সন্তানের পিতা আমিনুল ইসলাম।

সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসরের পর বিগত ছয়-সাত বছর ধরে তিনি যুক্ত হন তাবলিগ জামাতে। যেদিন ভোরে নিহত হন তার আগের দিন রাতেই কিশোরগঞ্জ মারকাজ মসজিদ থেকে ইজতেমার কাজে টঙ্গীতে আসেন। অসিয়ত মতো ৭০ বছর বয়স্ক আমিনুল ইসলাম এই মসজিদ প্রাঙ্গণেই চিরশায়িত হয়েছেন ।

তাবলিগে এসে প্রতিপক্ষের হামলায় তার মৃত্যুর কারণে পুরো এলাকায় শোক ছড়িয়ে পড়েছে। খামা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. খুরশিদ উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘পুরো এলাকার মানুষের মন খারাপ। বৃদ্ধ বয়সে আল্লাহর ইবাদতে গেছিলেন আমিনুল। এখন আসলেন মৃত লাশ হয়ে। প্রশাসন থেকে বলেছে মামলা হয়েছে, আসামিদের গ্রেফতার করবে।’

খুরশিদ উদ্দিন মেম্বার জানান, আমিনুল ইসলামের জানাজা তার অসিয়ত মতো কিশোরগঞ্জ জেলার মারকাজ মসজিদে হয়েছে এবং সেখানকার গোরস্থানে তাকে দাফন হরা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমিনুল ইসলাম এটা অসিয়ত করে গিয়েছিলেন। তার পরিবারের অবস্থা বেশি সচ্ছল না। তার দুই ছেলে। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও সন্তানসহ আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।’

মৃতের সংখ্যা কত?

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোররাতে টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠে বাংলাদেশ তবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত তিন জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যদিও বুধবার সচিবালয়ে তাবলিগের সমস্যাকেন্দ্রিক এক বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ‘ইজতেমা মাঠে চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’

জামাতসহ একাধিক দল বিবৃতিতে চার জন নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। তবে পরিচয় মিলেছে তিন জনের। বৃহস্পতিবার দুপুর একটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত নিহত অপরজনের সম্পর্কে কোনও তথ্য জানা যায়নি।

বুধবার ভোররাতের সংঘর্ষে নিহত বগুড়ার বেলাল হোসেন (৬৫), তাজুল ইসলামও (৭০) আমিনুল ইসলাম বাচ্চুর মতো এসেছিলেন ইজতেমার মাঠে দ্বীনের দাওয়াত কাজে।

সাদপন্থি তাবলিগ গ্রুপের বিশেষ মিডিয়া সমন্বয়ক তৌহিদুর রহমান সোহেল জানান, বেলাল হোসেন তাদের ‘সাথী’ ছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সাদপন্থি গ্রুপের একজন বাংলা ট্রিবিউনের কাছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করে দাবি করেন, তাদের অনুসারীদের অন্তত তিন জন ঢাকা মেডিক্যালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা গুরুতর।

গতকাল বুধবার সংঘর্ষের পর দুঃখ প্রকাশ করে ইজতেমা মাঠ ত্যাগ করেন সাদপন্থিরা। ঘটনার পর গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। উত্তরার অংশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে ডিএমপি।

বুধবার ১৮ ডিসেম্বর হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদে সড়ক দখল করে বিক্ষোভ করেন জুবায়েরপন্থিরা

‘ট্র্যাপে পা’ দিয়েছেন সাদপন্থিরা

বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি হিসেবে ইজতেমা মাঠে ‘জোড় ইজতেমা’ হয়ে থাকে। এবার ২৯ নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ‘জোড় ইজতেমা’ ছিল জুবায়েরপন্থিদের। এরপর সাদপন্থিরাও ‘জোড় ইজতেমা’ করতে চায় ময়দানে।

সাদপন্থি একজন সক্রিয় তাবলিগ জামাত কর্মী জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ইজতেমা মাঠকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চলছিল। মূল ময়দানে জুবায়েরপন্থিরা অবস্থান নিলে সাদপন্থিরা অবস্থান নেয় আহসানিয়া মিশন এলাকা থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত। আমরা সেখানে অবস্থান নিই।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সাদপন্থিদের মিডিয়া টিমের একজন প্রভাবশালী সদস্য এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা মূলত জুবায়েরপন্থিদের ট্র্যাপে পা দিয়েছি। ওরা আমাদের উসকানি দিয়েছে। তাই সংঘর্ষ বেঁধেছে। বুধবার রাত তিনটার দিকে কামারপাড়ার দিকে যখন আমরা, তখন ওদের দুই-তিনশত লোক আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে আমাদের সাথী ভাইদের উদ্দেশে ঢিল নিক্ষেপ করছিল। এরপর লাঠির মাথায় চাকু বেঁধে আমাদের সাথী ভাইদের ওপর আক্রমণ করা হয়।’

তাবলিগের সাদপন্থি একজন সাথী বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরের শুরু থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে জানিয়েছি যে জুবায়েরপন্থিরা জোড় করছে, তাদের শেষ হলে আমরা জোড় আয়োজন করবো। কিন্তু তারা মাঠ ছাড়েনি।’

বুধবার রাতে জুবায়েরপন্থি হাবিবুল্লাহ রায়হান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিসসহ কয়েকজন সমন্বয়ক বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটায় কাকরাইল মসজিদে যান। সেখানে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সাদপন্থি কাকরাইল মসজিদের ইমাম মুফতি আজিমুদ্দীন বলেন, ‘মূলত প্রশাসন ময়দানের নিয়ন্ত্রণ না নেওয়ার কারণে বুধবারের সংঘর্ষ হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, জোড় আয়োজন নিয়ে বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান -সংলগ্ন টঙ্গী স্টেশন রোড-কামারগাঁও রাস্তায় এক প্রতিবাদ সমাবেশে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘প্রয়োজনে তুরাগ নদীকে আমাদের রক্তে লাল করে দেবো, তবু ইজতেমা ময়দান ছাড়বো না।’

বুধবার সংঘর্ষের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের উপস্থিতিতে মামুনুল হক বলেন, ‘তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিদের ইজতেমার আর কোনও সুযোগ নেই।’ ‘সাদপন্থিদের সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধের দাবি’ জানান মামুনুল।

২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল সংঘর্ষের দিন, ছবি: বাংলা ট্রিবিউন

ইজতেমা মাঠে সাদপন্থিদের নিষেধাজ্ঞার দাবি

সরকার নির্ধারিত আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ে বিশ্ব ইজতেমা করার ঘোষণা দিয়েছে তাবলিগ জামাতের জুবায়েরপন্থিরা। সাদপন্থিরা ইজতেমা করতে চাইলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে জুবায়েরপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবউল্লাহ রায়হান এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় তিনি জানান, গতকালের (বুধবার) সংঘর্ষে তাদের তিন জন সাথী মারা গেছেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হবে।

হাবিবউল্লাহ রায়হান আরও বলেন, ‘মাওলানা সাদের অনুসারীরা প্রশাসনের আদেশ অমান্য করেছে। সাদপন্থিরা যদি ইজতেমা মাঠ দখলের চেষ্টা করে তাহলে সাধারণ মুসল্লিরা প্রতিহত করবে। এই বিভক্তি ইজতেমার সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে কোনও প্রভাব ফেলবে না।’

‘মাওলানা সাদ তার মতবাদ থেকে ফিরে এসে ক্ষমা চাইলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব’ বলেও মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার সচিবালয়ে বৈঠক শেষে জুবায়েরপন্থি মাওলানা মামুনুল হক সাদপন্থিদের ইজতেমা করতে না দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি সাদপন্থিদের সন্ত্রাসী হিসেবে দাবি করেন।

‘তাবলিগে রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ বন্ধ চায়’ সাদপন্থিরা

সাড়ে ৩ মাস ধরে প্রশাসনের কাছে গেলেও কোনও সাড়া না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাবলিগের সাদপন্থি অনুসারীরা। তাদের অভিযোগ, সাড়ে তিন মাস ধরে প্রশাসনের নানা স্তরে গিয়ে, যোগাযোগ করেও কোনও সাড়া পাননি তারা। এ কারণে ইজতেমা মাঠে বুধবার হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে মনে করেন সাদপন্থিরা।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম মুফতি আজিমুদ্দীন।

সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন সাদ অনুসারীরা। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির অংশগ্রহণ নিশ্চিত, কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের স্বাভাবিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনার সুযোগ, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান সরকারের নিয়ন্ত্রণে রেখে সাদপন্থিদের ইজতেমার আগে ময়দান বুঝিয়ে দেওয়া।

৫ নভেম্বর হেফাজত সংশ্লিষ্ট দলগুলোর মহাসমাবেশ, সেখানেই সাদপন্থিদের কাকরাইল ও ইজতেমা মাঠে প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হয়

‘দ্বন্দ্বের সূত্রপাত অর্থে’

তাবলিগের উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে যে বিদ্যমান বিরোধ খুব সহসা কাটছে না। ইতোমধ্যে তিন জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে ইজতেমা মাঠে পরস্পরের হাতে খুন হন তাবলিগের দুই সাথী। ওই সময় থেকে ভাগ হয়ে যায় তাবলিগ। জুবায়েরপন্থি ও দিল্লির নিজামুদ্দিনের সাদপন্থি হিসেবে দুভাগে আত্মপ্রকাশ ঘটে।

তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশীদারত্বের বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বিরা। ২০১৫ সালে তাবলিগের দিল্লির নিজামুদ্দিন বিশ্ব মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিরোধিতা করেন পাকিস্তান ও ভারতের কয়েকজন মুরুব্বি।

তাবলিগের সাথীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বাংলাদেশে ঐক্যবদ্ধ তাবলিগ-জামাত পরিচালনা কমিটির সুরা সদস্য ছিলেন ১১ জন। ফায়সাল বা আমির হিসেবে সাত জন দায়িত্ব পালন করতেন। আর্থিক লেনদেন ও তাবলিগের অর্থ ভাগকে কেন্দ্র করে মূলত বিরোধ শুরু হয় ২০১৪ সালের দিকে।

‘তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ’র মজলিসে শুরা সদস্য এবং ফায়সাল (আমির) বর্তমানে সাদপন্থিদের শীর্ষনেতা সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলামের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহারের’ অভিযোগ তুলেছিলেন তাবলিগের প্রবীণ দায়িত্বশীল মুরুব্বি অধ্যাপক মুশফিক আহমেদ ও তার অনুসারীরা। পাশাপাশি মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের প্রতিও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ওয়াসিফ অনুসারীদের।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে অধ্যাপক মুশফিক আহমেদের মৃত্যুর পর কোণঠাসা হয়ে পড়েন তার অনুসারীরা। সেই বিরোধ প্রায় চার বছর ধরে চলে। ওয়াসিফ-বিরোধীদের অংশের নেতৃত্বে চলে আসেন মাওলানা জুবায়ের।

এরপর বিরোধ প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর। ওই বছর পাকিস্তানে তাবলিগ-জামাতের একটি আয়োজনে মাওলানা জুবায়েরের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়ান সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর জুবায়ের ও ওয়াসিফপন্থিদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ রূপ নেয় ভাঙচুরে।

২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

তাবলিগের উভয়পক্ষের সশস্ত্র বিরোধিতা এখানেই থেমে থাকেনি। ছড়িয়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে রাজধানীর ভাটারায় একটি মাদ্রাসার দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ দুই গ্রুপের অন্তত ৯ জন আহত হয়।

এ বছর সূত্রপাত যেখান থেকে…

চলতি বছর তাবলিগে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর। হেফাজত সংশ্লিষ্ট একটি দলের মহাসচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার আমাদের কাছে খবর ছিল সাদ সাহেবকে ইজতেমায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তার অনুসারীরা। এটা আমরা টের পাওয়ার পরই সব ইসলামি দল মিলে সিদ্ধান্ত নিই প্রতিহত করার। ওই চেষ্টার অংশ হিসেবে ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছিল ‘উলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ’। ‘দাওয়াত ও তাবলীগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দ্বীনের হেফজতের লক্ষ্যে’ এ সমাবেশ হয়েছিল।’

ওই সমাবেশে আলেমরা ৯টি দাবি দেন। এর মধ্যে একটি ছিল—‘কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের যাবতীয় কার্যক্রম উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শুরারি নেজামে পরিচালিত হবে। এই স্থানগুলোতে সাদপন্থিদের কোনও কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না।’

একাধিক আলেম বলেন, ওই সময় থেকেই বিষয়টি অস্থিরতার দিকে যাবে, এমনটি আশঙ্কা ছিল অনেক আলেমের। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ নভেম্বর সিনিয়র কয়েকজন আলেম সংঘর্ষের আশঙ্কা জানিয়ে বিবৃতি দেন। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে হেফাজত সমর্থিত দুটি ভুঁইফোড় রাজনৈতিক দল দেশে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক ভ্রাতৃঘাতী রক্তক্ষয়ী ভয়াবহ সংঘাত তৈরি করে এই সরকারের চলমান সব অর্জনকে ম্লান করে দিতে চায়।’

এই মুখোমুখি অবস্থার মধ্যেই ১২ ডিসেম্বর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিবসহ জুবায়েরপন্থি আলেমদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করা হয়। যদিও সাদপন্থিরা মামলা করেনি বলে দাবি করেছেন। ওই মামলার প্রতিবাদে ১৩ ডিসেম্বর বায়তুল মোকাররমে প্রতিবাদ সমাবেশ করে মাওলানা জুবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা।

আলেমরা কী বলছেন?

হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা মনে করেন, তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে চক্রান্তের অংশ হিসেবেই কয়েক বছর ধরে এই কার্যক্রমের বিরোধিতা চলে আসছে। বিশেষ করে মাওলানা সাদের দেওবন্দি আলেমদের উদ্দেশে দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই বিরোধিতার সূত্রপাত।

তবে কোনও কোনও আলেম মনে করছেন, তাবলিগের একটি পক্ষে চলমান সরকারসমর্থিত হেফাজতভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, অপরপক্ষে বাইরের একটি দেশের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠছে। এ কারণেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও সাদপন্থিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে—এমন দাবি করেছেন তাবলিগের কোনও কোনও সদস্য।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে তাবলিগের মাওলানা জুবায়ের ও সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সাদপন্থিদের দায়িত্বশীলদের অনেকেই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোথাও কোথাও জুবায়েরপন্থিদের দ্বারা প্রতিহত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।

হোমঅন্যান্য
ইসলামের দাওয়াতে এসে সংঘর্ষ-মৃত্যু, কী হচ্ছে তাবলিগে
সালমান তারেক শাকিল
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:০০

গাজীপুরের টঙ্গী ইজতেমা মাঠে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা ঠেকাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের বিক্ষোভ, বুধবারের ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে গিয়ে তাবলিগ জামাতে যুক্ত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাচ্চু। ইসলামের দাওয়াতের কাজে ইজতেমার মাঠে আসা ৭০ বছরের এই বৃদ্ধের প্রাণ গেছে প্রতিপক্ষের হামলায়। ঘুমন্ত অবস্থায় বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ঘটনাস্থলেই নিহত হন দুই পুত্র সন্তানের পিতা আমিনুল ইসলাম।

সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসরের পর বিগত ছয়-সাত বছর ধরে তিনি যুক্ত হন তাবলিগ জামাতে। যেদিন ভোরে নিহত হন তার আগের দিন রাতেই কিশোরগঞ্জ মারকাজ মসজিদ থেকে ইজতেমার কাজে টঙ্গীতে আসেন। অসিয়ত মতো ৭০ বছর বয়স্ক আমিনুল ইসলাম এই মসজিদ প্রাঙ্গণেই চিরশায়িত হয়েছেন ।

তাবলিগে এসে প্রতিপক্ষের হামলায় তার মৃত্যুর কারণে পুরো এলাকায় শোক ছড়িয়ে পড়েছে। খামা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. খুরশিদ উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘পুরো এলাকার মানুষের মন খারাপ। বৃদ্ধ বয়সে আল্লাহর ইবাদতে গেছিলেন আমিনুল। এখন আসলেন মৃত লাশ হয়ে। প্রশাসন থেকে বলেছে মামলা হয়েছে, আসামিদের গ্রেফতার করবে।’

খুরশিদ উদ্দিন মেম্বার জানান, আমিনুল ইসলামের জানাজা তার অসিয়ত মতো কিশোরগঞ্জ জেলার মারকাজ মসজিদে হয়েছে এবং সেখানকার গোরস্থানে তাকে দাফন হরা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমিনুল ইসলাম এটা অসিয়ত করে গিয়েছিলেন। তার পরিবারের অবস্থা বেশি সচ্ছল না। তার দুই ছেলে। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও সন্তানসহ আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।’

মৃতের সংখ্যা কত?

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোররাতে টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠে বাংলাদেশ তবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত তিন জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যদিও বুধবার সচিবালয়ে তাবলিগের সমস্যাকেন্দ্রিক এক বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ‘ইজতেমা মাঠে চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’

জামাতসহ একাধিক দল বিবৃতিতে চার জন নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। তবে পরিচয় মিলেছে তিন জনের। বৃহস্পতিবার দুপুর একটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত নিহত অপরজনের সম্পর্কে কোনও তথ্য জানা যায়নি।

বুধবার ভোররাতের সংঘর্ষে নিহত বগুড়ার বেলাল হোসেন (৬৫), তাজুল ইসলামও (৭০) আমিনুল ইসলাম বাচ্চুর মতো এসেছিলেন ইজতেমার মাঠে দ্বীনের দাওয়াত কাজে।

সাদপন্থি তাবলিগ গ্রুপের বিশেষ মিডিয়া সমন্বয়ক তৌহিদুর রহমান সোহেল জানান, বেলাল হোসেন তাদের ‘সাথী’ ছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সাদপন্থি গ্রুপের একজন বাংলা ট্রিবিউনের কাছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করে দাবি করেন, তাদের অনুসারীদের অন্তত তিন জন ঢাকা মেডিক্যালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা গুরুতর।

গতকাল বুধবার সংঘর্ষের পর দুঃখ প্রকাশ করে ইজতেমা মাঠ ত্যাগ করেন সাদপন্থিরা। ঘটনার পর গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। উত্তরার অংশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে ডিএমপি।

বুধবার ১৮ ডিসেম্বর হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদে সড়ক দখল করে বিক্ষোভ করেন জুবায়েরপন্থিরা

‘ট্র্যাপে পা’ দিয়েছেন সাদপন্থিরা

বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি হিসেবে ইজতেমা মাঠে ‘জোড় ইজতেমা’ হয়ে থাকে। এবার ২৯ নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ‘জোড় ইজতেমা’ ছিল জুবায়েরপন্থিদের। এরপর সাদপন্থিরাও ‘জোড় ইজতেমা’ করতে চায় ময়দানে।

সাদপন্থি একজন সক্রিয় তাবলিগ জামাত কর্মী জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ইজতেমা মাঠকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চলছিল। মূল ময়দানে জুবায়েরপন্থিরা অবস্থান নিলে সাদপন্থিরা অবস্থান নেয় আহসানিয়া মিশন এলাকা থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত। আমরা সেখানে অবস্থান নিই।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সাদপন্থিদের মিডিয়া টিমের একজন প্রভাবশালী সদস্য এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা মূলত জুবায়েরপন্থিদের ট্র্যাপে পা দিয়েছি। ওরা আমাদের উসকানি দিয়েছে। তাই সংঘর্ষ বেঁধেছে। বুধবার রাত তিনটার দিকে কামারপাড়ার দিকে যখন আমরা, তখন ওদের দুই-তিনশত লোক আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে আমাদের সাথী ভাইদের উদ্দেশে ঢিল নিক্ষেপ করছিল। এরপর লাঠির মাথায় চাকু বেঁধে আমাদের সাথী ভাইদের ওপর আক্রমণ করা হয়।’

তাবলিগের সাদপন্থি একজন সাথী বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরের শুরু থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে জানিয়েছি যে জুবায়েরপন্থিরা জোড় করছে, তাদের শেষ হলে আমরা জোড় আয়োজন করবো। কিন্তু তারা মাঠ ছাড়েনি।’

বুধবার রাতে জুবায়েরপন্থি হাবিবুল্লাহ রায়হান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিসসহ কয়েকজন সমন্বয়ক বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটায় কাকরাইল মসজিদে যান। সেখানে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সাদপন্থি কাকরাইল মসজিদের ইমাম মুফতি আজিমুদ্দীন বলেন, ‘মূলত প্রশাসন ময়দানের নিয়ন্ত্রণ না নেওয়ার কারণে বুধবারের সংঘর্ষ হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, জোড় আয়োজন নিয়ে বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান -সংলগ্ন টঙ্গী স্টেশন রোড-কামারগাঁও রাস্তায় এক প্রতিবাদ সমাবেশে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘প্রয়োজনে তুরাগ নদীকে আমাদের রক্তে লাল করে দেবো, তবু ইজতেমা ময়দান ছাড়বো না।’

বুধবার সংঘর্ষের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের উপস্থিতিতে মামুনুল হক বলেন, ‘তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিদের ইজতেমার আর কোনও সুযোগ নেই।’ ‘সাদপন্থিদের সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধের দাবি’ জানান মামুনুল।

২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল সংঘর্ষের দিন, ছবি: বাংলা ট্রিবিউন

ইজতেমা মাঠে সাদপন্থিদের নিষেধাজ্ঞার দাবি

সরকার নির্ধারিত আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ে বিশ্ব ইজতেমা করার ঘোষণা দিয়েছে তাবলিগ জামাতের জুবায়েরপন্থিরা। সাদপন্থিরা ইজতেমা করতে চাইলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে জুবায়েরপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবউল্লাহ রায়হান এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় তিনি জানান, গতকালের (বুধবার) সংঘর্ষে তাদের তিন জন সাথী মারা গেছেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হবে।

হাবিবউল্লাহ রায়হান আরও বলেন, ‘মাওলানা সাদের অনুসারীরা প্রশাসনের আদেশ অমান্য করেছে। সাদপন্থিরা যদি ইজতেমা মাঠ দখলের চেষ্টা করে তাহলে সাধারণ মুসল্লিরা প্রতিহত করবে। এই বিভক্তি ইজতেমার সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে কোনও প্রভাব ফেলবে না।’

‘মাওলানা সাদ তার মতবাদ থেকে ফিরে এসে ক্ষমা চাইলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব’ বলেও মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার সচিবালয়ে বৈঠক শেষে জুবায়েরপন্থি মাওলানা মামুনুল হক সাদপন্থিদের ইজতেমা করতে না দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি সাদপন্থিদের সন্ত্রাসী হিসেবে দাবি করেন।

‘তাবলিগে রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ বন্ধ চায়’ সাদপন্থিরা

সাড়ে ৩ মাস ধরে প্রশাসনের কাছে গেলেও কোনও সাড়া না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাবলিগের সাদপন্থি অনুসারীরা। তাদের অভিযোগ, সাড়ে তিন মাস ধরে প্রশাসনের নানা স্তরে গিয়ে, যোগাযোগ করেও কোনও সাড়া পাননি তারা। এ কারণে ইজতেমা মাঠে বুধবার হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে মনে করেন সাদপন্থিরা।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম মুফতি আজিমুদ্দীন।

সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন সাদ অনুসারীরা। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির অংশগ্রহণ নিশ্চিত, কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের স্বাভাবিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনার সুযোগ, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান সরকারের নিয়ন্ত্রণে রেখে সাদপন্থিদের ইজতেমার আগে ময়দান বুঝিয়ে দেওয়া।

৫ নভেম্বর হেফাজত সংশ্লিষ্ট দলগুলোর মহাসমাবেশ, সেখানেই সাদপন্থিদের কাকরাইল ও ইজতেমা মাঠে প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হয়

‘দ্বন্দ্বের সূত্রপাত অর্থে’

তাবলিগের উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে যে বিদ্যমান বিরোধ খুব সহসা কাটছে না। ইতোমধ্যে তিন জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে ইজতেমা মাঠে পরস্পরের হাতে খুন হন তাবলিগের দুই সাথী। ওই সময় থেকে ভাগ হয়ে যায় তাবলিগ। জুবায়েরপন্থি ও দিল্লির নিজামুদ্দিনের সাদপন্থি হিসেবে দুভাগে আত্মপ্রকাশ ঘটে।

তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশীদারত্বের বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বিরা। ২০১৫ সালে তাবলিগের দিল্লির নিজামুদ্দিন বিশ্ব মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিরোধিতা করেন পাকিস্তান ও ভারতের কয়েকজন মুরুব্বি।

তাবলিগের সাথীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বাংলাদেশে ঐক্যবদ্ধ তাবলিগ-জামাত পরিচালনা কমিটির সুরা সদস্য ছিলেন ১১ জন। ফায়সাল বা আমির হিসেবে সাত জন দায়িত্ব পালন করতেন। আর্থিক লেনদেন ও তাবলিগের অর্থ ভাগকে কেন্দ্র করে মূলত বিরোধ শুরু হয় ২০১৪ সালের দিকে।

‘তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ’র মজলিসে শুরা সদস্য এবং ফায়সাল (আমির) বর্তমানে সাদপন্থিদের শীর্ষনেতা সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলামের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহারের’ অভিযোগ তুলেছিলেন তাবলিগের প্রবীণ দায়িত্বশীল মুরুব্বি অধ্যাপক মুশফিক আহমেদ ও তার অনুসারীরা। পাশাপাশি মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের প্রতিও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ওয়াসিফ অনুসারীদের।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে অধ্যাপক মুশফিক আহমেদের মৃত্যুর পর কোণঠাসা হয়ে পড়েন তার অনুসারীরা। সেই বিরোধ প্রায় চার বছর ধরে চলে। ওয়াসিফ-বিরোধীদের অংশের নেতৃত্বে চলে আসেন মাওলানা জুবায়ের।

এরপর বিরোধ প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর। ওই বছর পাকিস্তানে তাবলিগ-জামাতের একটি আয়োজনে মাওলানা জুবায়েরের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়ান সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর জুবায়ের ও ওয়াসিফপন্থিদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ রূপ নেয় ভাঙচুরে।

২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

তাবলিগের উভয়পক্ষের সশস্ত্র বিরোধিতা এখানেই থেমে থাকেনি। ছড়িয়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে রাজধানীর ভাটারায় একটি মাদ্রাসার দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ দুই গ্রুপের অন্তত ৯ জন আহত হয়।

এ বছর সূত্রপাত যেখান থেকে…

চলতি বছর তাবলিগে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর। হেফাজত সংশ্লিষ্ট একটি দলের মহাসচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার আমাদের কাছে খবর ছিল সাদ সাহেবকে ইজতেমায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তার অনুসারীরা। এটা আমরা টের পাওয়ার পরই সব ইসলামি দল মিলে সিদ্ধান্ত নিই প্রতিহত করার। ওই চেষ্টার অংশ হিসেবে ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছিল ‘উলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ’। ‘দাওয়াত ও তাবলীগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দ্বীনের হেফজতের লক্ষ্যে’ এ সমাবেশ হয়েছিল।’

ওই সমাবেশে আলেমরা ৯টি দাবি দেন। এর মধ্যে একটি ছিল—‘কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের যাবতীয় কার্যক্রম উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শুরারি নেজামে পরিচালিত হবে। এই স্থানগুলোতে সাদপন্থিদের কোনও কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না।’

একাধিক আলেম বলেন, ওই সময় থেকেই বিষয়টি অস্থিরতার দিকে যাবে, এমনটি আশঙ্কা ছিল অনেক আলেমের। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ নভেম্বর সিনিয়র কয়েকজন আলেম সংঘর্ষের আশঙ্কা জানিয়ে বিবৃতি দেন। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে হেফাজত সমর্থিত দুটি ভুঁইফোড় রাজনৈতিক দল দেশে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক ভ্রাতৃঘাতী রক্তক্ষয়ী ভয়াবহ সংঘাত তৈরি করে এই সরকারের চলমান সব অর্জনকে ম্লান করে দিতে চায়।’

এই মুখোমুখি অবস্থার মধ্যেই ১২ ডিসেম্বর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিবসহ জুবায়েরপন্থি আলেমদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করা হয়। যদিও সাদপন্থিরা মামলা করেনি বলে দাবি করেছেন। ওই মামলার প্রতিবাদে ১৩ ডিসেম্বর বায়তুল মোকাররমে প্রতিবাদ সমাবেশ করে মাওলানা জুবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা।

আলেমরা কী বলছেন?

হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা মনে করেন, তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে চক্রান্তের অংশ হিসেবেই কয়েক বছর ধরে এই কার্যক্রমের বিরোধিতা চলে আসছে। বিশেষ করে মাওলানা সাদের দেওবন্দি আলেমদের উদ্দেশে দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই বিরোধিতার সূত্রপাত।

তবে কোনও কোনও আলেম মনে করছেন, তাবলিগের একটি পক্ষে চলমান সরকারসমর্থিত হেফাজতভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, অপরপক্ষে বাইরের একটি দেশের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠছে। এ কারণেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও সাদপন্থিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে—এমন দাবি করেছেন তাবলিগের কোনও কোনও সদস্য।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে তাবলিগের মাওলানা জুবায়ের ও সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সাদপন্থিদের দায়িত্বশীলদের অনেকেই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোথাও কোথাও জুবায়েরপন্থিদের দ্বারা প্রতিহত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।

গত ৬ নভেম্বর সাদপন্থি আলেমদের সংবাদ সম্মেলন (ফাইল ফটো)

ইসলামি ঘরানার জনপ্রিয় লেখক সালাহউদ্দিন জাহাঙ্গীর তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘জুবায়েরপন্থি তাবলিগের মুরুব্বিদের একটা বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তাবলিগকে তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া। ‘ওয়াজাহাতি সম্মেলন’ নামে ২০১৮ সালে তাবলিগকে যখন রাজনীতিকরণ করা হলো, তখনই মনে হয়েছিল যে তাবলিগ হজরতজি মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (রহ.) শুরু করেছিলেন, সেই তাবলিগকে কলুষিত করার মারণাস্ত্র তুলে দেওয়া হলো রাজনৈতিক নেতাদের হাতে।’’

‘অনেকে প্রশ্ন তুলবেন, আমি সাদপন্থিদের ব্যাপারে কিছু বলছি না কেন? সাদপন্থিদের ব্যাপারে তো নতুন করে বলার কিছু নেই। তাদের ভ্রষ্টতা, অপরিণামদর্শিতা, ঔদ্ধত্য এবং তাবলিগের নামে পেশিশক্তির ব্যবহার কোনোভাবেই তাবলিগের স্পিরিটকে ধারণ করে না।’

লেখক সালাহউদ্দিন তাবলিগ ভাঙনের পেছনে আওয়ামী লীগের ভূমিকাকে দায়ী করেন।

তাবলিগের চলমান ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় বৃহত্তর মিলনমেলা বিশ্ব ইজতেমাকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। এর অংশ হিসেবে ইজতেমা মাঠে এই সংঘর্ষ। সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের অবিলম্বে বিচার দাবি করছি।’

বুধবারের মরণঘাতী সংঘর্ষের আগে গত ১২ ডিসেম্বর টঙ্গীতে জুবায়ের ও সাদ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সাদ গ্রুপের ৫ মুরুব্বি আহত হন। বুধবারের আক্রমণের বিষয়ে ওই ঘটনার প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন জুবায়েরপন্থি একাধিক আলেম।

বিরোধ মেটাতে পরিপত্র

২০১৭ সালের বছরের শেষের দিকে তাবলিগের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের (মূল কেন্দ্র) মাওলানা সা’দ কান্ধলভির বাংলাদেশে আসা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বন্দ্বের জেরে ওই বছরের ১৪ নভেম্বর রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে হাতাহাতিসহ ভাঙচুর হয়।

তাবলিগের একাধিক সাথী জানান, বিশ্বজুড়ে তাবলিগ জামাতের মারকাজ দিল্লির নিজামুদ্দিন। যা ‘নিজামুদ্দিন মারকাজ’ নামে পরিচিত। ওই মারকাজের শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা সা’দ কান্ধলভির বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। মাওলানা সা’দ আলেমদের অর্থের বিনিময়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার বিরোধিতা করেন। ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল পকেটে রেখে নামাজ হয় না বলেও মন্তব্য করেন।

মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, ‘এসব ঘটনায় দারুল উলুম দেওবন্দের পক্ষ থেকে সা’দ কান্ধলভির বক্তব্যের প্রতিবাদ করা হয়। দারুল উলুম দেওবন্দের তৎকালীন আলেমসহ শীর্ষ আলেমরা বিবৃতি দেন তার বিরোধিতা করে।’

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও তাবলিগের দ্বন্দ্ব সমাধানে উদ

Address

Cox's Bazar

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when EidgahNews.Com - ঈদগাঁও নিউজ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to EidgahNews.Com - ঈদগাঁও নিউজ:

Share

EIDGAHNEWS.COM

Eidgahnews.com, is one of the leading online Bangla news portals, begun with commitment of fearless, investigative, informative and independent journalism delivers local, national, international, campus, sports, entertainment and others news 24 hours.