SBS SAHEL

SBS SAHEL long way to go......

06/10/2023
20/05/2023

Best movie clips.

28/03/2023

゚viral

05/03/2023

রাতের কাওরানবাজার। আমার সামনেই প্যান্টশার্ট পরা কেতাদুরস্ত এক ভদ্রলোক এসে মুরগির গিলা-কলিজা-গলা মিলিয়ে কেজিখানেক কিনলো, আর সাথে চেয়ে নিলো ওই ট্রের এক কোনায় রাখা দুইপিস ভালো মাংস। অভিযোগের সুরে বলতে লাগলো যেই টাকা বেতন পাই, তাতে করে এইদামে আস্ত মুরগি কেনা আর সম্ভব না। আগে সোনালি কিনতাম। ব্রয়লার ছুঁয়েও দেখতাম না, সেই ব্রয়লার এখন ২৫০ টাকা কেজি! ভাবতে পারেন?

এই গিলা-কলিজা দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। কিন্তু ঘরে তো ছোট ছেলে আছে, সে তো এসব বুঝেনা। তার তো গলা-গিলা ভালো লাগেনা, খাইতে চায়না এসব। তাই তার জন্য জাস্ট দুইপিস ভালো মাংস নিলাম।

নিশ্চয়ই ঘরে ফিরে ওইগুলো রান্না করার পর ছেলের পাতে
ওই দুইপিছ ভালো মাংস তুলে দিতে দিতে এই অসহায় বাবা বলতে থাকবে ওই মাংস তার ভালো লাগেনা, ছেলেকে হয়ত বুঝাতে থাকবে যে মুরগির গলার মাংসই তার সবচেয়ে প্রিয়!

আপনারা কাউয়ার মত কা কা করে উন্নয়নের পর উন্নয়নের ছবক শুনিয়ে দেশটারে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর বলে হাতেতালি দিতেই পারেন, কিন্তু আপনাদের ওইসব উন্নয়নের
গান শুনতে শুনতে আমার চোখে ভাসতে থাকবে ওই প্যান্টশার্ট পরা লোকটার কথা, যে একজন চাকরিজীবী হয়েও একটা সামান্য ব্রয়লার মুরগি কিনতে না পেরে রাতের বেলায় মুরগির জাস্ট গলা-গিলা কিনে একটা পোটলায় করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বাড়ি যাচ্ছে!

এই দীর্ঘশ্বাসটাই কি আমাদের সাধের স্মার্ট বাংলাদেশ?

- Saiyed Abdullah

02/10/2022

#প্রেক্ষাপট_১
উচ্চ বেতনে চাকুরি করা এক যুবক আরেক গরীব যুবককে প্রশ্ন করলো,
- তুমি কোথায় চাকুরি করো?
- একটা কোম্পানিতে ।
- স্যালারি কতো?
- ১০০০০ টাকা।
- মোটে দশ হাজার? চলো কিভাবে? তোমার মালিক তোমার প্রতি অবিচার করছে। তুমি যেই ছেলে তোমার যা যোগ্যতা,তাতে হেসেখেলেই তুমি অনেক টাকা বেতন পেতে পারো।
যুবকের মেজাজ খাট্টা হয়ে গেলো। নিজের কাজের প্রতি ও বসের প্রতি
বেজায় রুষ্ট হয়ে উঠলো। পরদিন গিয়ে সরাসরি বসকে বেতন বাড়ানোর কথা। জানালো। কথা কাটাকাটি হওয়ার একপর্যায়ে বস তাকে চাকরিচ্যুত করলো।
এখন যুবকটি বেকার।
#প্রেক্ষাপট_২
- তোমার প্রথম সন্তান হলো বুঝি?
- জ্বি।
- তোমার স্বামী এ উপলক্ষ্যে তোমাকে কিছু দেয় নি? উপহার, টাকা বা এ জাতীয় কিছু?
- না। কেন দিবে? এ তো আমাদেরই সন্তান! উপহার বা টাকা দিতে হবে কেন?
- কেন তোমাকে হাত খরচার জন্যেও তো দু’চার পয়সা দিতে পারে। তার কাছে কি তোমার কোনও মূল্য নেই? তুমি চাকরানি?
স্ত্রীর মনে ধরলো কথাটা।
সারাদিন কথাটা ভাবতে ভাবতে মনটা বিষিয়ে উঠলো। সত্যিই তো! আমাকে একটা টাকাও কখনো ছোঁয়ায় না! রাতে কর্মক্লান্ত স্বামী ঘরে ফিরলো।
স্ত্রীর মুখ দিয়ে বোমা বিস্ফোরিত হলো। রেগে গেলো দু’জনে, কথা কাটাকাটি ঝগড়া আর ঝগড়া। পরে হাতাহাতি, শেষ পর্যন্ত তালাকে গিয়ে গড়ালো।
#প্রেক্ষাপট_৩
- এই বৃদ্ধ বয়েসে কষ্ট করছেন? ছেলে ঢাকায় থাকে,বড় চাকুরি করে শুনেছি। মস্ত বড় ফ্ল্যাটে বউ-বাচ্চা নিয়ে থাকে। আপনাদের দু’জনকে সাথে নিয়ে যেতে পারে না? আপনাদের দেখতেও তো আসে না!
- না না, ছেলে আমার খুবই ব্যস্ত। টাকা পাঠায় তো। ফোনে ও খোঁজ-খবর নেয় নিয়মিত।
- কী এমন ব্যস্ততা তার শুনি? নিজের জন্মদাতা-জন্মদাত্রীকে দেখতে আসার সময় হয় না?
- সারাদিন অফিস-বাসা করতে করতেই তো তার সবটা সময় চলে যায়!
- আপনি খোঁজ নিয়েছেন? সে ঢাকায় বাড়ি-গাড়ি হাঁকিয়ে বেড়াচ্ছে।
আর আপনারা অজপাড়াগাঁয়ে ধুঁকছেন?
বৃদ্ধ বাবা বাসায় এসে স্ত্রীকে খুলে বললো।
স্ত্রীও বাধা দিল,
- আপনি ভুল শুনেছেন। সে আসলেই ব্যস্ত।
- নাহ,সেকি কি মিথ্যা বলতে পারে ?
আহা রে! কাকে বুকের রক্ত পানি করে বড় করলাম। এটা ভেবেই করে বসলেন ব্রেইন স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক!
# এবার_আসি_মূলকথায়
-কিছু নিরীহ-অযাচিত প্রশ্ন আমাদের সুখী জীবনকে ক্ষণিকের মধ্যেই দুঃখী করে দিতে সক্ষম।
-আমাদের সমাজে ছদ্মবেশী দরদীরা নিরন্তর শান্ত জীবনে অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দেয়।
-ছদ্মবেশী ডাইন/ডাইনীগুলো নিজের থেকে কিন্তু আপনাকে কিছুই দিবেনা। কিন্তু অন্যের থেকে অবৈধভাবে আদায় করার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়ে আপনাকে জিতিয়ে দেয়ার নামে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে।
#গল্পের_হিতোপদেশঃ
---জীবনে ৩য় ব্যাক্তি কে প্রবেশ করার সুযোগ দেবেন না। আর যদিও কোন ভাবে ঢুকে যায় তাহলে যথা সম্ভব তার কথা কানে তুলবেন না। ৩য় ব্যাক্তি হতে সাবধান।
(সংগৃহীত)

07/08/2022

এক পর্বের গল্প

"আমার বাবলুকে খেয়ে ফেলসে ওই লিফট! আমার বাবলুকে এনে দাও, বাবলুকে এনে দাও... "

লাভলি চিৎকার করে কাঁদছে!তার স্বামী আসাদ তাকে সামলে রাখতে পারছে না। মহিলার মাও পাশে বসে চোখ মুচ্ছেন। অফিসার সামশাদ ক্লান্ত চোখে তাকিয়ে আছেন।

" ম্যাডাম প্লিজ আরেকবার চিন্তা করে দেখুন। বাচ্চা লিফট থেকে গায়েব হয়ে যেতে পারে না। হতে পারে অন্য কোথাও... "
লাভলি কাঁদতে কাঁদতে বলল -" ওই লিফট খেয়ে ফেলেছে আমার বাবলুকে....।এনে দেন স্যার! বাবলুকে এনে দেন, আমি শ্বাস নিতে পারছিনা.৷ আমি বাঁচবো না স্যার..."

-"আচ্ছা, এমন কাউকে সন্দেহ হয় যারা আপনার বাচ্চাটাকে তুলে নিয়ে যেতে পারে বা আপনার বাচ্চাটার এপসেন্সে তাদের লাভ আছে? "

লাভলী চমকে উঠলো - "আমার ছয়-সাত বছরের বাচ্চা,এত লক্ষ্মী বাচ্চা..কে ওর ক্ষতি চাইবে? "

বাবলুর বাবা আসাদ বললেন - স্যার, আমাদের কোথাও কিছু নাই। আমরা ছাপোষা মানুষ,এই দামী এরিয়াতে এসে এই একবছরে কাজের লোকও রাখতে পারি নাই। আমার বাচ্চাটা কার কি ক্ষতি করসে... "

"তবু একটু ভেবে বলুন আসাদ সাহেব! ম্যাম আপনি বলুন না হয়.. "

লাভলী উত্তর কী দেবে, কাঁদতে কাঁদতে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। বেশ অল্পবয়সী মা ছাপোষা আটপৌরে জীবনে স্বামী-পুত্রময় ছোট্ট পৃথিবী। এই পৃথিবী হঠাৎ উজাড় হলে ধাক্কা সামলানো মুশকিল।

সামশাদ প্রতিদিন এমন অনেক আহাজারি শোনে। খুনের কেস, ডাকাতির কেস, রেপ কেস, সব খানে নিম্নগামী মনুষ্যত্বের ঘায়েল হওয়া আর্তনাদ। সামশাদের কেমন যেন গা সহা হয়ে গেছে। তবু অসহায় লাগে এমন ধরনের বাচ্চা হারানোর কেসে। লাভলীর কান্নাটা লাগছে সামসাদের স্ত্রী এষার মতো।

সামশাদ হেঁটে পাশের ঘরে এলো।এটা বাচ্চটার ঘর। অল্প ফার্নিচারে বেশ বড় ঘর। দেখার মতো শুধু ছবিটা, ফুটফুটে একটা মুখ, মিষ্টি ফোকলা দাঁতের হাসি। মায়ের সাথে বেশ মিল। ছোট একটা নিঃশ্বাস অজান্তেই বেরিয়ে এলো।

ঢাকার মধ্যে নিকেতন জায়গাটা বেশ অবস্থা সম্পন্নদের এলাকা। বাড়িঘরের বাহির-অন্দর ঝকমক করে বিলাসী জীবনের একটা জলছবি । সেই তুলনায় এই ফ্ল্যাটটাতে তেমন দামী কোন আসবাব নেই, বেশ সাদামাটা।
পরিবারটা আগে থাকতো মগবাজার টি এন টি কলোনিতে। এক বছর হলো ভদ্রলোকের মোটা বেতনের একটা চাকরি হয়েছে। অফিসের কাছাকাছি বাড়ি নিয়েছেন। এলাকা অনুযায়ী ঠাটেবাটে সব কিছু গোছানো হয়নি ।

বাচ্চাটার রুমে কোণার দিকে একটা বাক্সে কিছু জিনিস পাওয়া গেল।ম্যাচবক্স গাড়ি সেটের সাথে তার বাবার খালি পারফিউমের বোতল, শার্টের বোতাম, ঘড়ির বাক্স, কাপলার বাটন, ভাঙা কলম, একটা ভাঙা সিরামিকের ফুল,কোন আংটির বাক্স, বাবলুর গুপ্তধন!সাতবছরের হলেও বেশ গোছানো বাবু তো।

কুহু এমন ছিলো না, খুব এলোমেলো থাকতো । তার আগ্রহ ছিল মায়ের কসমেটিকসের ওপর। লিপস্টিক নষ্ট করতে ওস্তাদ ম্যাডাম। সামশাদ দ্রুত কুহুর চিন্তা থেকে বের হয়ে এলো। খেলনার ঝুড়ি থেকে একটা খেলনা তুলে নিল। একটা রোবটকার,এটার প্যাকেট খোলা হয়নি। এমেরিকান লেগো সেট, টয় ইঞ্জিনিয়ারিং সেট, মিনিয়ন সেট সবই নতুন। একেবারে ছোঁয়াই হয়নি ।এইসব খেলনায় বাচ্চাটার আগ্রহ ছিল না ।তবে কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস জমাতো; আশ্চর্য তো! কুহু হলে হামলে পড়ে সেদিনই তছনছ করা শুরু করত।

- আমার মেয়েটার কলিজা ছিল বাবলু! সংসারে কিচ্ছু সঞ্চয় করত না স্যার। সব উড়াইতো বাচ্চার পিছনে! রাজপুত্রর মতো করে বড় করতেসিলো।এখানে এসে নামী ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করসিল... "

বাবলুর নানি পেছনে এসে দাঁড়িয়েছেন। মহিলার হাতে গাড়ির সেট সেটাও খোলা হয়নি ডলারের প্রাইজ ট্যাগ লাগানো ।

- আসাদসাহেব কাজের জন্য খুব দেশের বাইরে যান কি?

মহিলা কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়ে বললেন- যায়, মাঝে মাঝেই অফিসের কাজে, চিটাগং সিলেট এই সব জায়গায় যাইতেই থাকে "

- এর মধ্যে বাবলুর প্রিয় খেলনা কোনটা?

- সবই তো নিয়া খেলতো, তয় মনেহয় বাশিটা!ওর আব্বায় আনসিলো সারাক্ষণ বাজাইতো, এইখানেই তো ছিল"

মহিলা খুঁজতে লাগলেন। লেগোর প্যাকেটের নিচে রাখা একটা কালার বুক পড়ে গেল। সামশাদ কুড়িয়ে নিল সেটা। বেশ কিছু ছবি আঁকা। বেড়ালের মত দেখতে বাঘ, নীল রঙের গাছ, সবুজ রঙের সূর্য... বাচ্চটার নিজের কল্পনার পৃথিবী। একটা ছবিতে সামশাদ ভ্রুকুটি করে তাকালো।

,******
লাভলীকে ঘুমের ওষুধ দেয়া হয়েছে। তার স্বামী আসাদকে জানানো হলো কোন ধরনের থ্রেট কল আসলে জানাতে। আসাদ আর লাভলীর মোবাইলের কল ট্র‍্যাকিং করা হচ্ছে।
আসবার সময় আসাদ হঠাৎ ধরা গলায় বলল - আমার ছেলেটা কি বেঁচে ফিরবে স্যার?

আসাদের ঘোলাটে দৃষ্টি; সামশাদ তাকে কি সান্ত্বনা দেবে জানেনা।হঠাৎ করে যেন বুকটা শূন্য অনুভব হলো । ছয় বছরের ছোট্ট কুহুকে মাটির ঘরে শুইয়ে দেবার সময় লেগেছিল এমন।

"তুমি ডিউটিতে সামশাদ। কনট্রোল ইউর সেল্ফ! "

নিজেকে শাসাতে শাসাতেই লিফটে উঠলো সামশাদ। স্টেইনলেস স্টিলের ছয় বাই চারফিট আয়তক্ষেত্রাকার চৌকো বাক্স। এখান থেকেই রহস্যময় ভাবে কিডন্যাপ হয় বাচ্চাটা ।
তবে ব্যাপারটা কিডন্যাপিং কিনা তাও বলা যাচ্ছ না। তিন দিন আগে গায়েব হয়েছে, এখনো কোন হুমকিমূলক ফোনকল নেই..।

সাত বছরের বাচ্চাটা মায়ের সাথে মার্কেটে যাচ্ছিল। দুষ্টুমি করে দরজা থেকে একাই ছুটে হাসতে হাসতে লিফটের ভেতরে ঢুকে গেল।দরজা লাগাতে লাগাতে মা বোতাম টিপে ভেবেছেন নিচে নেমেছে, কিন্তু তারপর আর বাবলুর হদিস নেই। মহিলা প্রতিটা ফ্লোর তন্ন তন্ন করে খুঁজেছেন; ছেলেটা রহস্যময়ভাবে উধাও !

এমনকি সিকিউরিটি চাবি নিয়ে সিংগাপুর ট্যুরে থাকা তারেক সাহেবের ফ্ল্যাটেও ঢু দেয়া হয়েছে। ছাদে, গ্যারেযে এমন কি ছাদের পানির ট্যাংকিতেও দেখা হয়ে গেছে, কোথাও নেই বাবলু।

পুলিশ এসে কুল কিনারা করতে অপারগ দেখে ভি আইপি কলে ডি বি থেকে সামশাদ এসেছে।

"এইরে! কোন ফ্লোরে আসলাম? "

সামশাদের সাথের মোটাসোটা মহিলা অবাক হয়ে জানতে চাইলেন।
বাড়ির ওয়াচম্যান বলল," কোন ফ্লোরে যাবেন?"

" পাঁচ তালায়"

" চার টিপতে হইতো আপনি পাঁচে টিপে দিয়েছেন।

- ওরে আল্লাহ! খেয়ালই থাকে না... নয় মাস ছয় মাসে আসি পরিস্কার করতে,...।

সামশাদ বলল, পরিস্কার করতে? বুঝলাম না,

- আমার বোনের ফ্ল্যাট,ফুল ফার্নিশড।বোন ওমানে থাকে তো, আমি এসে এসে ক্লিন করি কিছুদিন পরপর !

সামশাদ বুঝলো এই ফ্ল্যাটেও পুলিশ এসেছিল।তন্নতন্ন করে খুঁজেছে প্রতিটা কর্নার। ফোর্থ ফ্লোরে সিক্স বিতে মহিলা নেমে গেলেন। সামশাদ খেয়াল করল সিক্সের এ ফ্ল্যাটটার ঠিক নিচেই বাবলুদের ফ্ল্যাট! প্রতি ফ্ল্যাটের দরজার ওপর সিসি ক্যাম সেট করা। সামশাদ লিফট থেকে আর বের হলো না নেমে এলো। সেকেন্ড অফিসার আদিত্য সাথেই ছিল,
-" আদিত্য, এই ফ্যামিলির সাথে কারো ঝগড়া বা ঝামেলা হয়েছে ?

- "স্যার দারোয়ানদের ভাষ্যমতে ফোর "এ"র হায়দার সাহেবেরর সাথে কয়েক বার ঝামেলা হয়েছে। বাচ্চাটা ভদ্রলোকের নতুন কেনা টয়োটা ক্যাম্রের পালিশ লোহার তার দিয়ে খুঁচিয়েছিল। ভালো ঝামেলা হয়েছিল স্যার, পরে আসাদ সাহেবের ফ্ল্যাট ওনার তারেকসাহেব মিটমাট করে দেন! তবে দারোয়ানরা বলেছে বাচ্চাটাকে হায়দার সাহেবের স্ত্রী ছাদে বা গ্যারেজে কাছে পেলেই ধমকে উঠতেন। "

-বাহ এলেমদার মানুষ!বাড়িতে আছেন? দেখা করে আসি নাহয়।

- আমি গিয়েছিলাম বাড়িতে নেই স্যার, ফিরলে যোগাযোগ করতে বলেছি।

সামশাদ বলল, এর নাম্বারও ট্র‍্যাকিংয়ে দাও। আর শোন, লাভলী আর আসাদের কল রেকর্ডও বের কর।বাচ্চা হারানোর একমাস আগের থেকে সব রেকর্ড । আসাদের ব্যাংক ডিটেইলস নাও। লাইফ ইন্সুরেন্স করা আছে নাকি বাচ্চার নামে দেখ। মহিলার ফেসবুক ইমেইল এড্রেস বের কর। আমি প্রত্যেকটা জিনিসের ডিটেইলস চাই।

- অসম্ভব কিছুই না স্যার, যেহেতু এখনও কোন থ্রেট কল আসেনি।

- ইনভেস্টিগেশনের সময় আমি আমার ছায়াটাকেও সাসপেক্টের মধ্যে ফেলে দেই ।পিরিতের আবেগ দিয়ে বিবেচনা করলে তদন্ত হয় না। এনিওয়ে সেদিনের গ্যারেজের সিসি ক্যাম ফুটেজ নিয়েছো?

- নেয়া হয়েছে স্যার কোথাও বাচ্চাটার চিহ্ন নেই! অনেকে এসেছে, গেছে কিন্তু বাচ্চাটা লিফট থেকে বের হয়নি!

- আচ্ছা কোন বড় বাক্স বা বড় লাগেজ নিয়ে কাউকে দেখা যায় নি?

- না স্যার আমিও খেয়াল করেছিলাম, কিন্তু এমন কিছু না! তবে সিসিক্যামে দেখা যায় বাচ্চা হারানোর আগের দিন একটা ফ্রিজ নেমেছিলো লিফট দিয়ে।আরেকটা নতুন ফ্রিজ উঠেছে। কিন্তু সেও আগের দিন বিকালবেলা স্যার। বাচ্চাটাকে গ্যারেজে খেলতে দেখা গেছে সেই সময়। "
সামশাদ বুঝলো এর দুটা অর্থ হয়, লিফটে হারানোর ব্যাপারে বাবলুর মা লাভলী মিথ্যা বলছে, নয় বাচ্চাটা এই এপার্টমেন্ট হাউজের মধ্যেই কোথাও আছে...।

সামশাদ বলল- এনিওয়ে নতুন ফ্রিজটা এসেছে কোন ফ্ল্যাটে?

- হায়দার সাহেবের বাসায় স্যার! যাদের সাথে আসাদ সাহেবের ঝামেলা।
*******-

"আব্বু টুকি!

- উউ উ কুহু! কাজ করি মা",

- না, আমার সাথে খেল!আমি লুকাই"
সামশাদ ল্যাপটপে কাজে মনোযোগ দিল।

"আব্বু আমায় খুঁজো! পিইইইই পিইইই"

কুহুর মুখে একটা হুইসেল। ক্রমে বাজাচ্ছে। সামশাদ মাথা তুলে তাকালো, কুহু নেই। অথচ কানে হুইসেলের আওয়াজ আছে । সামশাদ খুঁজছে মেয়েকে। কুহু ঘরের কোথাও নেই ।সামশাদ দরজা খুলে ঘরের বাইরে গিয়ে দেখে কুহু লিফটের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। লিফটের মাঝে তার হাত-পা সহ গোটা শরীরে একধরনের সাদা বরফের স্তর। একটু একটু বরফের পাথরে পরিনত হচ্ছে সে।

- "আব্বু আমার শীত করে "

সামশাদ ছুটে যেতে চাইল মেয়ের কাছে ; লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে।

বিছানায় আধশোয়া সামশাদ বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে। সারা শরীরে ঘাম। এষাও উঠেছে। স্বামীর ঘাড়ে হাত রাখলো।
- কুহুকে আবার স্বপ্ন দেখেছো?

সামশাদ জবাব দিলো না! এষা বলল, "শোন, তুমি ছুটি নাও কয়েকদিন, আমরা কোথাও ঘুরে আসি! এভাবে থাকলে আমরা কেউ বাঁচবো না।

সামশাদ উঠে দাঁড়ালো,এষা বলল - কোথায় যাও?
- পানি খেয়ে আসি।
- আমি এনে দেই,
- না তুমি ঘুমাও, আমি পানি খেয়ে আসি!
এষা কথা বাড়ালো না, পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো। সামশাদ এই ভঙ্গি জানে এষা কাঁদছে। মায়েদের কত সুবিধা কষ্টের গরল কান্নার মধ্যে বের করে ফেলতে পারে! বাবারা পারে না কেন?

************
" আসাদ সাহেব, কেমন আছেন?"

সামশাদকে দেখে আসাদ থতমত খেয়ে গেল। হাতের মুঠোয় লুকিয়ে ফেলল কিছু। তাকে পাওয়া গেল এপার্টমেন্টের পাশেরগলিতে সম্ভবত ফোনে কথা বলছিল।

- তেমন কিছু না স্যার, ছেলেরে খুঁজি! যেখানেই যাই..

" সিড়িঘরেও? না মানে আপনাকে সব সময় সিড়ি দিয়েই উঠতে নামতে দেখি"

" লিফটের অভ্যাসটা আমার হয়ে উঠে নাই স্যার। দমবন্ধ লাগে, আর আমি আসলেও সব সময় বাবলুরে খুঁজি যদি চলে আসে কোথা থেকে। "

সামশাদ নির্লিপ্ত গলায় বলল, ছেলে ফিরে এলে ইনসুরেন্সের টাকাটা পাবেন না হয়ত.. "

- জি?

-আপনার ছেলের নামে পনেরো লক্ষ্য টাকার ইনসুরেন্স আছে, যেই তথ্যটা আপনি আমাদের দেননি। গত বছরই করেছিলেন। আপনার আয়ের অনেকটুকু তার প্রিমিয়ামেই তো যেত, এখন তো নতুন ব্যাবসা ধরেছিলেন তার ধার কর্যও অনেক ঠিক কি না?

আসাদের মুখ কঠিন হয়ে গেল - আপনি বলতে কি চাচ্ছেন আমি আমার নিজের ছেলেকে...

- যুক্তি দেখাচ্ছি।খিদে লাগলে বাঘ তার নিজের সন্তানকে খেয়ে ফেলে। মানুষ সেক্ষেত্রে আরও ভয়াবহ প্রাণী আসাদ সাহেব।আর এমন কুৎসিত প্রাণীদের নেড়ে চেড়েই অভ্যাস আমাদের। যাহোক আপনার ছেলে যেখানেই থাকুক খুঁজে বের করা হবে। এখন হাতের মুঠিটা খুলুন তো, যা আমায় দেখে লুকিয়েছেন"

আসাদ তার বামহাতের মুঠো খুলে দেখালো, একটা প্লাস্টিকের গোলাপি হুইসেল!

"আমার বাবুর প্রিয় জিনিস, অফিস থেকে ফিরতি পথে কিনেছি!"

সামশাদ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সেটার দিকে। এটা এর আগেও কোথাও দেখেছে সে কিন্তু কোথায়?

************
- খুব লক্ষ্মী বাচ্চা ছিল স্যার! আমরা তো নিঃসন্তান,বড় মায়া হতো "
হায়দার সাহেব সোফায় গা এলিয়ে চি চি করতে করতে বললেন।
- নিঃসন্তান বলেই বুঝি দামী দামী গাড়ি এডপ্ট করতেন? সামশাদ হাসিমুখে বলল।

- কী বলেন স্যার? গাড়ি এডপ্ট করব কেন?

- তাছাড়া আর কি , সেদিন বাচ্চাটা আপনার নতুন কেনা গাড়িতে স্ক্র‍্যাচ করেছিল বলে আপনিই আসাদ সাহেবকে বলেছিলেন যে তার বাচ্চার গায়ের চামড়া উঠে গেলে তার কেমন লাগবে!

- স্যার ওইটা রাগের মাথায় বলা কথা ,মানে কথার কথা...."

-কথায় কথায় অনেক কথা বাড়ে হায়দার সাহেব।

সামশাদ ডাইনিং স্পেসের দিকে হেঁটে এলো, টেবিলের ফলের ঝুড়িতে রাখা ছুরিটা তুলে নিতে নিতে বলল, " আরে বাহ! নতুন ফ্রিজ, সাড়ে ছয়শো লিটার শার্প! রঙটা দারুণ তো"

- স্যার আমরা খুবই নিরীহ মানুষ, নিজের মতো থাকি ;একটু আধটু নতুন জিনিসের শখ শুধু কিন্তু আমরা মানুষ.... স্যা আ আ আ র র র!"

হায়দারের মিনমিনে অমায়িক স্বরের মাঝেই হঠাৎই তারস্বরে চিৎকার ! তার মনে হয়েছিল নতুন ফ্রিজে সামশাদ ছুরি দিয়ে পোঁচ দিতে যাচ্ছে। সামশাদ ধারালো হাসি দিয়ে ছুরি রেখে দিল।

হায়দার সামলে ঢোক গিলে বলল, নতুন জিনিসের শখ থাকা অন্যায় তো না!

সামশাদ একঝলক ফ্রিজের ভেতর দেখে বলল- না অন্যায় না, তবে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের চেয়ে বস্তুগত বিষয়ে মমতা থাকা একটা অন্যায়। মানব জীবনের অবজ্ঞা করলে বড় ঝামেলা হয়ে যায় । জিনিস নষ্ট হলে পয়সা দিয়ে কেনা যায় মানব শিশু প্রত্যকেই খুব ইউনিক। টাকা দিয়ে তার জোড়া পাওয়া যায় না। বাচ্চার খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত বা এই তদন্ত না শেষ হলে, আপনারা ঢাকা ছেড়ে কোথাও যাবেন না। নয়তো আরও বড় ঝামেলা লেগে যাবে।
হায়দার সাহেব আবারও ঢোক গিললেন!
*********

"হায়দার এক নম্বরের চামার, ছিল তো আসলে আলুবাজারের মরিচের ব্যাপারি! আদমব্যাপারির ব্যবসায় আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ধরা কে সরা জ্ঞান করছে। সেদিন আমি না এলে আসাদ সাহেবের সাথে হাতা-হাতিই হয়ে যেত, " আসাদ সাহেবের উপরতলার বাড়িওয়ালা তারেক সাহেব ক্ষোভ নিয়ে বললেন কথাটা।

সামশাদ বলল- আপনার কি মনে হয় আক্রোশবশত বাচ্চাটাকে তারা লুকিয়ে রাখতে পারে?

তারেক মাথাটা শ্রাগ করে বললো - মানুষ চাইলে অনেক ভয়াবহ কাজ করতে পারে অফিসার। তবে আমার মনে হয় না হায়দাররা এমন ঝামেলায় যাবে, ব্যবহারে চাড়াল হলেও দূর্বল স্নায়ুর। এনিওয়ে চা নিন প্লিজ।

ভদ্রলোক চায়ের পেয়ালা বাড়িয়ে দিলেন। সামশাদ একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে ফুল তোলা চায়না সিরামিকের ফ্লাওয়ার ভাসটার দিকে।
তার মাথায় চিন্তা অন্যকিছু , আসাদ সাহেবের ফোন কলে সাধারণ অফিস আর আত্মিয়ো স্বজনের কল-রেকর্ড পাওয়ার গেছে।ভদ্রলোকের সোশাল মিডিয়ায় একাউন্ট নেই।বাবলুর মায়ের আছে তবে সেটাও নিয়মিত নয়। অর্থাৎ টেকনিক্যাল ভাবে দুজনই ক্লিন। তেমন সম্পদও নেই। নেহাত ব্যাক্তিগত আক্রোশ ছাড়া অন্য কারণ পাওয়াও যাচ্ছে না। তবে বিনা কারনে বাচ্চাটা এভাবে গায়েব হয়ে যেতে পারে না,সব জট পেকে যাচ্ছে।

"সামশাদ সাহেব চা নিন! জানিনা কেমন হয়েছে!ছুটা কাজের লোকটাও নেই.... "

তারেক সাহেবের কথায় সম্বিত ফিরলো, সামশাদের লজ্জিত হয়ে পেয়ালা নিল বলল, - ধন্যবাদ, আমি আসলে খুবই দুঃখিত যে কেস পাওয়ার এতদিন পর আপনার সাথে যোগাযোগ কর‍তে এলাম। আজই সম্ভবত এসেছেন সিংগাপুর থেকে।

- জি রাত একটায়, আসলে আমিও যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। আসাদ সাহেবকে ফোন দিয়েছিলাম । উনিই বললেন পুলিশ শুধু শুধু সময় নিচ্ছে, তাই দুলাভাইকে দিয়ে আপনাকে খবর দিয়েছিলাম। যাহোক ইনভেস্টিগেশন কত দূর?

- চলছে, আচ্ছা স্যার, আসাদরা একবছর আগেই ভাড়া নিয়ে এসেছে আপনার ফ্ল্যাটে। পত্রিকা দেখে না শুধু বাড়িতে টুলেট দেখে?

- না না এড দেই নি। ওরাই বাড়ি খুঁজছিল , আমার ফ্ল্যাটটাও মাত্র খালি হয়েছিল,ভাবলাম শুধু ফেলে রাখলে মেইনটেনেন্স হবে না, স্বস্তাতেই ভাড়ার জন্য ছেড়ে দিলাম, ছোট ফ্যামিলি ঝঞ্জাটমুক্ত লাগলো।

- ভাড়া ঠিকঠাক ভাবে দিতো?

তারেক হাল্কা হাসলো " হ্যাঁ দিতো তবে বেশ দেরি হতো.... "

- কেমন মানুষ ছিল মনে হয়?

-ভালোই তো, কথা যদিও কম হতো আমার সাথে । বাসায় তো থাকিই না। তবে আসাদ সাহেব কিছুটা রগচটা স্বভাবের মনে হতো...

-সেটা কেরকম?

- খেলনা বাঁশি বাজাচ্ছিল বলে বাচ্চাটাকে বকছিলেন একবার লিফটে।

- আচ্ছা তারেক সাহেব ঘটনার দিন আপনি কোথায় ছিলেন ?ডোন্ট মাইন্ড নেহাৎ রুটিন ইনভেস্টিগেশন... !

তারেক হেসে ফেলল - হা হা হা, আরে না, ইটস্ ওকে। লেট মি রিমেম্বার, যতদূর মনে পড়ে বায়ারসদের সাথে সারাদিন মিটিং ছিল। বাড়ি ফিরলাম সন্ধ্যায়। অল্প টুকটাক কাজ সারলাম, রাতে সিংগাপুরের ফ্লাইট তাই গুছিয়ে বেশি দেরি করলাম না দ্রুতই বেরিয়ে গিয়েছিলাম!

"স্যার ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড আপনার টিকিটটা দেখতে পারি, জরুরি নয় জাস্ট এ রুটিন চেক,"

- ইয়া ইয়া অফকর্স একটু অপেক্ষা করতে হবে ,

- নিশ্চয়ই স্যার!

তারেক সাহেব ভেতর চলে গেলেন! সামশাদের মোবাইলে ম্যাসেজ এলো, ব্যাংক থেকে এই ম্যাসেজটা আসতে অনেক দেরি হলো... !

বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে এলেন তারেক সাহেব। সামশাদ তখন ড্রইংরুম ছেড়ে ডাইনিং স্পেসে।

" স্যরি সামশাদ , মনে ছিল না পাসপোর্ট আমিই সকালে অফিসে পাঠিয়েছি। আসলে সেনজেন ভিসার জন্য ট্রাভেল এজেন্টকে দেবার কথা"

- সেটার আর দরকার হবে না বাচ্চাটার খোঁজ পাওয়া গেছে!সামশাদ ঠান্ডা গলায় বলল!

তারেক মুখে উদ্বিগ্নতা ফুটিয়ে বলল- পাওয়া গেছে? কোথায়! অক্ষত আছে তো?

- অক্ষত আছে শুধু শরীরে প্রাণ নেই। ইনফ্যাক্ট আপনারই ফ্রিজের মধ্যেই আছে।

তারেক বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। তারপর হঠাৎ দ্রুত দরজার দিকে পালাতে লাগল। দরজার ওপাশ থেকে আদিত্য ঢুকে পড়লো। সামশাদ তারেকের কলার ধরে সজোরে একটা চড় দিয়ে মেঝেতে যখন ফেলে দিল,তাতে তারেকের একটা দাঁত খুলে পড়েছে। তাকে টেনে তোলার কেউ নেই, আদিত্য তারেকের বিশাল ফ্রিজের দরজা খুলে স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
*********

এষা কফিটা রেখে বলল-" কীভাবে বুঝলে?

সামশাদ ঠান্ডা গলায় বলল- আমি বুঝিনি বাবলুই বুঝিয়ে বলেছে।

- মানে?

-"দেখ বাচ্চাদের পৃথিবীটায় নিজেস্ব ভাষা আছে। বড়দের করা অনেক কর্মকান্ডের সঠিক ব্যখ্যা তারা হয়ত দাঁড় করাতে পারেনা, কিন্তু ন্যায় অন্যায়বোধ তাদেরও প্রবল হয়। মনে আছে , তুমি আমি যখন ঝগড়া করতাম ,কুহু ঘরের দেয়ালে রঙ দিয়ে হিজিবিজি আঁকা বাড়িয়ে দিতো। আমাদের অশান্তি দেখে ওর কষ্ট হতো।কিন্তু আমাদের স্বার্থপর চোখ খালি নিজেদের সুবিধা দেখতো....।

বাচ্চারা বুঝতে পারে তাদের আশেপাশে কিছু ভুল হচ্ছে। কিছু খটকা চোখে পড়ে তাদের।এই বাচ্চাটা সেই খটকাগুলোকে এক করছিল বা তার মায়ের করা পাপের প্রমাণ গুলো সংগ্রহ করছিল । বাচ্চাটার খেলার ঘরে একটা বাক্সের মধ্যে কিছু জিনিস দেখেছি আমি। যেমন ট্যাগ হুগারের ঘড়ির বাক্স, দামী হুগো বস পারফিউমের খালি বোতল ,ডিজি ব্র‍্যান্ডের শার্টের বোতাম,আর্মানির কপলার বাটন, সব আসল দামী ।এসব জিনিস কেনা বাচ্চাটার বাবার সমর্থের বাইরে।
বাচ্চাটার যেসব খেলনা ছিল সেগুলোও অনেক দামী। বাবলু তা ছুঁয়েও দেখেনি অথচ বাবার দেয়া একটা বাঁশী নিজের কাছ ছাড়া করতো না ।

কিন্তু কেন? অর্থাৎ হয়তো জিনিসগুলো তার পছন্দ ছিল না বা যে দিয়েছে তাকে তার পছন্দ ছিল না। কথা হলো বাচ্চারা সহজে কাউকে অপছন্দ করে না, আর করলে সাধারণত তার পেছনে জোড়ালো কারণ থাকে!

বাক্সের জড়ো করা ভাঙা পুরাতন জিনিস সবগুলোই যেহেতু দামী, তার মানে উৎস সম্ভবত একই জায়গার। যেখানে সে নিয়মিত যায়। আমার প্রশ্ন কোথায় যেতে পারে? এরমধ্যে বাবলুর আঁকার খাতায় চোখ পড়লো। তখন একটা বিচিত্র জিনিস দেখলাম, বাচ্চাটার আঁকা তিনটা ছবি। একটাতে হলুদ জামায় সে ,সবুজ শার্টে বাবা, লাল শাড়িতে তার মা তিনজন হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে ; আরেকটাতে সে তার বাবা, দরজার ওপাশে তার মা আরেকজন নীল শার্ট পরা কোন পুরুষ। আরেকটা ছবিতে সে একটা ঘরের বাইরে ঘরের মধ্যে লাল শাড়িতে তার মা আর নীল শার্টপরা লোকটা, বাচ্চাটা কাঁদছে; দূরে দাঁড়িয়ে সবুজ শার্ট পরা তার বাবা সেও দুঃখী ।

ছবিগুলোয় কেমন যেন ঘোলাটে বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাপার লাগলো । জিনিসগুলো সংগ্রহ করলাম।বাক্সে পাওয়া সিরামিকের ফুলটা আমার পাজেল মিলিয়ে দিল। অন্যান্য জিনিস থেকে সম্পুর্ণ আলাদা এটা তবু এই বাক্সেই এটার স্থান হলো; অর্থাৎ এর উৎসও এক।
এখন শুধু বাকি ছিল আমার সাবকন্সাস মাইন্ড অনুযায়ী প্রমাণ মেলানোর।প্রতিটি ফ্ল্যাটের সিসি ক্যাম রেকর্ড দেখে হঠাৎ খেয়াল করলাম, তারেক সাহেবের দরজার ওপরের ক্যামেরা কখনো কখনো তার পজিশন চেঞ্জ করে। অর্থাৎ দিনের কিছু সময় তার মুখটা অন্যদিকে ঘুরে থাকে। এইসব ক্যামেরার সাথে ওয়াইফাই সেটিং করা থাকে। মোবাইল দিয়েও সেটা কন্ট্রোল করা যায়। অর্থাৎ গৃহস্বামী নিজেই চাইছে না ঘরে কে আসছে কে যাচ্ছে সেটার প্রমাণ থাকুক ।

এষা বলল- কিন্তু বাবলুর মা এই খুনে ইনভলভ কীভাবে ...

" ইনভলভমেন্ট আছে আবার নেইও। অন্তত বাবলুর এই পরিণতির জন্য পরোক্ষভাবে সে দায়ী। আমি যখন তাকে শুরুতেই প্রশ্ন করি যে বাবলুর অনুপস্থিতিতে কার লাভ বেশি সে চমকে গিয়েছিল, আর আমি অপরাধীর চোখ চিনি এষা। তার চমকে যাওয়াটাই প্রথম কাটা ফুটেছে মাথায়। তারেক এরেস্টের পর মহিলা রিমান্ডে বলে ফেলেছে সব,
নতুন এরিয়াতে এসে অনভ্যাসে লিফটের মাঝে মাঝে তিন নম্বর সুইচ টিপতে চার নাম্বারে এসে যেত বাড়িওয়ালা তারেকের বাড়িতে।

দুটা ফ্ল্যাটের দরজার ডিজাইন এক হওয়ায় ভুল আরও বাড়তো।চল্লিশের কোঠার তারেকও ভদ্রলোক, মিতভাষী,তবে রমনীমোহন সুপুরুষ ৷
স্বামীর অনুপস্থিতিতে লাভলীর তারেক সাহেবের সাথে সখ্য গড়ে উঠে। একাকী ডিভোর্সি, ধনবান তারেক সাহেবের ধন ঐশ্বর্য ক্ষমতার মোহে জড়িয়ে যায় লাভলী।আর তারেক ঢুবে যায় লাভলীর ভরা যৌবনে...। অত:পর যা হয়, আসাদের ট্যুরের চাকরিতে সুযোগে দুজনের একান্ত সময় যাপনের পর্যাপ্ত সুযোগ আসে। আদিম লালসায় হিতাহিত জ্ঞান হারায় দুজন। তবু একটা বিষয়ে তাদের মাথা ঠান্ডা ছিল। কোন সোশাল নেটওয়ার্কে কানেক্টেড ছিল না দুজন।লিফটে সাংকেতিক চিরকুট রেখে যোগাযোগ হতো। শুরুতে হয়ত বাইরেই অভিসারের ব্যবস্থা ছিল তবে পরে নিজ ঘরেই নোংরামো শুরু হলো।

বলে না, স্খলনের নেশা যাদের ধরে তাদের মাথায় চড়ে যায় পাপের বীজ। চুরি করে করে এরা ক্রমে বেপরোয়া হতে লাগলো । তারেকের সামনের খালি ফ্ল্যাট, খেয়াল করারও কেউ ছিল না। আসাদ যখন ঢাকা থাকতো না তখনই তারেকের ফ্ল্যাটেই প্রেমলীলা চলতো দুজনের ।

ভালোই চলছিল, তাদের অপকর্মের নীরব সাক্ষী লাভলীর অবোধ ছেলেটা, সব দেখেও কিছু বুঝছিল না। তবে অজান্তেই মায়ের স্থান নীচে নামছিল ছেলের চোখে। এক সময় লাভলীর বোধদয় হয়। দ্রুত গুটিয়ে আনতে চায় নিজেকে।ভয় ছিল ছেলে এখন স্বামীকেও বলে দেবে সব। ততদিনে বাঘের মুখে রক্ত লেগেছে ভালোভাবে !

দারুণ ঝগড়া হয় তারেক আর লাভলীর। লাভলী এড়ানো শুরু করে তারেককে।।কামনায় অন্ধ হিংস্র তারেক বাচ্চাটাকে লিফটের থেকে তুলে নিয়ে আসে নিজের ঘরে। এই বাচ্চাই যত নষ্টের গোড়া তাদের দূরত্বের কারণ। প্রচন্ড ক্ষোভে শ্বাসরোধ করে সেদিনই বাবলুকে মেরে ফেলে। কিন্তু লাশ সরাতে পারেনি তার আগেই লাভলী চিৎকার জুড়ে দেয়। তারেক দ্রুত বাবলুর লাশটা ফ্রিজে ভরে চলে যায় বাইরে। আসাদের কাছে ফোনে ঘটনা শুনে তারেক একটা কাজ করে; বেশি চালাকি দেখাতে আমায় কল দেয়। আর সেদিন রাতেই চলে যায় সিংগাপুর। ফেরে আরও সাতদিন পর!

- একটা কথা বল, তুমি কিভাবে জানলে বাচ্চাটাকে ফ্রিজে রাখা? সত্যি বলবে!

এষার হাত ধরে সামশাদ বলল, যদি বলি আমাদের কুহু এসে বলেছে,?

এষা তাকিয়ে আছে চোখের কোনে চকচক করছে অশ্রু। ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলল।তার স্বামী কিছুতেই কন্যার প্রস্থানের ট্রমা থেকে বের হতে পারছে না।
সামশাদ স্ত্রীর হাত চাপ দিয়ে বলল, ডোন্ট ওয়ারি আমি ঠিক আছি... তুমি তো আছো সাথে।

" আসলে কি জানো, সাব কনসাস মাইন্ড বলে একটা জিনিস আছে। তারা অনেক কিছু আগে বুঝে ফেলে । চোখের কোণে যা কিছু আমরা এড়াই তারা সেটাই আগ্রহ নিয়ে দেখে । আমাদের সামনে সেই সত্যিটার ইশারা দেয় বিভিন্নভাবে। আমার কল্পনায় তা কুহুর রূপে ধরা দিয়েছে। নয়তো প্রথম দিন তারেকের খালি ফ্ল্যাটটায় কেয়ারটেকার যখন খুলে দিলো তখনই দেখেছিলাম একমাপে কাটা কাচের বেশ কিছু স্লাইড আর কার্পেটের উপর একটা প্লাস্টিকের হলুদ হুইসেল। আমায় যেহেতু তারেক নিজেই এপয়েন্ট করেছে, তাই স্বাভাবিক ভাবে তারেককে রেখেছিলাম সন্দেহের উর্ধ্বে। গৃহস্বামীর অনুপস্থিতিতে ঘরে ঢোকার কারণে দ্রুত সার্ভে করে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। তবু অবচেতনে বারান্দায় রাখা ওই কাচের স্লাইড আর হুইসেলটা মাথায় আটকে ছিল।

হায়দারদের একই কোম্পানির ফ্রিজ খুলে জানতে পারলাম সেগুলো ছিল ফ্রিজের র‍্যাক আর আসাদের হাতে তার ছেলের প্রিয় হুইসেলটা দেখে মাথায় জট পেকে গেল। তখন একটা কাজ করলাম, তারেকের ইন্টারন্যাশনাল ভিসা কার্ডের স্লিপ যা বাবলুর খেলনার ঝুড়িতে একটা আংটির বাক্সে পেয়েছিলাম সেটার রেকর্ড বের করলাম,তখন সব পরিষ্কার হয়ে গেল।

তারেক সাহেবের বাড়িতে ভাঙা ফ্লাওয়ার ভাসের মাঝখানের ফুলটা নেই। তখন সিরামিকের ফুলটা মিলিয়ে দিলাম! বাচ্চাটা মায়ের সাথে আসতো এখান, সম্ভবত তাকে একঘরে রেখে তারা আরেক ঘরে চলে যেত।

এষা জিজ্ঞেস করলো " শয়তানটা কি দোষ স্বীকার করেছে?"

- এখনও না, লাভলী সব খুলে বলেছে আজ তারেককে রিমান্ডে থার্ড ডিগ্রি দেয়া হবে, স্বীকার করে ফেলবে নিশ্চিত! এরপর টাইট একটা চার্জশিট বানাবো, দেখি সে ছোটে কীভাবে।

এষা ক্ষোভের সাথে বলল, আহারে বাচ্চাটা! মানুষের মন কি কুৎসিত হতে পারে। ছিঃ...! বাচ্চার বাবাটার জন্যও খারাপ লাগছে,বেচারা সব কিছু হারালো

সামশাদ চুপ করে গেল, আসলেই।
এমন সময় মোবাইলে কল, অদিত্য ফোন করেছে,
"হ্যা স্যার ভিসেরা রিপোর্ট এসে গেছে গলা টিপে মারা হয়েছে , গলায় বাম হাতের সব দাগ স্পষ্ট! এই তারেক একটা জানোয়ার স্যার "

সামশাদের মুখ বিতৃষ্ণায় ভরে গেল, "স্টেটমেন্ট নাও আজকের মধ্যে চার্জশিট রেডি কর। এই তারেককে কঠিন ফাসাবো,"

"আমার বাবুর প্রিয় জিনিস অফিস থেকে ফিরতি পথে কিনেছি"!

হুইসেল হাতে আসাদের কথাটা মনে পড়লো সামশাদের। ফাইলে স্বাক্ষর করার সময়ও খেয়াল করেছে ব্যাপারটা ।কিন্তু তারেক তাকে ডান হাতে চায়ের পেয়ালা দিয়েছে। সামশাদ হঠাৎ চমকে উঠলো,
" অদিত্য তুমি কী বললে?গলায় বাম হাতের আঙুলের দাগ?

"জি স্যার ডাক্তার তাই বললেন শুকনা বাচ্চা এক হাতে টিপেই... "

"আদিত্য তারেকের ফিঙ্গার প্রিন্টের রিপোর্ট কি এসেছে? আমার মনে হচ্ছে তারেক খুনি নয়, ফোর্স রেডি কর আমাদের হাতে সময় কম এর আগে সেই সাইকো পালায়..."
*******
পার্কের বেঞ্চে আসাদ হাত-পা ছড়িয়ে বসে আছে।বাচ্চার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট শোনার পর অদ্ভুত করুণা নিয়ে তাকাচ্ছিলো থানার সবাই তার দিকে । সত্যি কথা হলো আসাদেরই করুণা হচ্ছিল তাদের প্রতি! আর লাভলীর প্রতি তীব্র ঘৃণা। একটু একটু করে যা চরমে পৌঁছে মাথার ভেতর কেমন ভোঁতা অনুভুতির জন্ম হয়েছিল।

সব জানতো সে, সবই ! স্ত্রীর আঙুলে হীরের আংটি, দামী কাপড়, চোখে চকচকে ঘোরধরা স্বপ্ন, এই সবকিছুর উৎস কোথায় সবই আসাদ জানতো। দেখেও না দেখার ভান করছিল।তবুও দেখছিল স্ত্রীর বদলে যাওয়া রূপ, লাভলীর আনমনা থাকা,সংসারে অমনোযোগীতা,কথায় কথায় ছ্যানছ্যান করা, কাছে আসতে না চাওয়া, বিনা কারণে ছেলেকে ধরে মারা; সবই খেয়াল করতো আসাদ। এসব দেখে বোবা একটা ক্ষোভ হতো ,তবু সয়ে গেছিল । কষ্ট হতো শুধু ছেলেটার জন্য। যার চোখে লাভলী প্রমাণ করে দিচ্ছিল আসাদ কতটা অক্ষম।

বাবলু তার মাকে অনেক ভালোবাসতো।
মায়ের অধঃপতনে একটু একটু করে ছেলেটাও প্রতিদিন মরছিল। বাবার হাতে লিফটে পুরা মুক্তি পেয়ে গেল সেদিন। ক্রোধ ব্যর্থতায় অন্ধ হয়ে একহাতে জড়ো করে চেপে ধরেছিল বাবলুর ছোট্ট দুটা হাত অন্যহাতে গলা....!বাবার দিকে কেমন হতভম্ব চেয়েছিল বাবলু।

ওই জানোয়ারটা বেশিই ভালোবাসতো লাভলীকে। নিজের ঘরের ডুব্লিকেট চাবি দিয়ে ফেলেছিল প্রেয়সীকে। আসাদ চাবিটা লাভলীর ব্যাগ থেকে সরিয়েছিল সাথে তারেকের দরজার উপরের ক্যামেরার পজিশনটাও কৌশলে বদলে ফেলেছিল । সাতদিন পর ওই শালা সিংগাপুর থেকে এসে সকালে ফ্রিজই খোলেনি হয়ত। একেই বলে বিধিবাম! সোজা ধরা পড়লো ডিবির চোখে...
হা হা হা!

লাভলী বলেছিল," ওই লিফটই আমার ছেলেকে খেয়েছে। "
আসলেই তাই। বিলাসের স্বপ্ন পুরনে মানুষ এখন আর কষ্ট করে সিড়ি ভাঙতে চায় না, চায় একটা লিফট, যাতে দ্রুত ওপরে উঠা যায়। কিন্তু ওপরে উঠতে পারে কজন? বেশিরভাগ মানুষ আরও নীচে নেমে যায়।

( সমাপ্ত)
গল্প-- #লিফট
(ক্রাইম স্টোরি)
রিপোস্ট (২০১৮তে লেখা)
শেয়ার করুন -কপি নয়
#শারমিন_আঞ্জুম

20/07/2022

মা: কিরে,ফ্রিজে ছয়টি মিষ্টি রেখেছিলাম, এখন দেখছি মাত্র তিনটে রয়েছে.....
এটা নিশ্চয়ই তোর কাজ?😒
Me: লোড-শেডিং এর জন্য ঐ তিনটি দেখতে পাইনি মা!!😀

06/07/2022

মুনাফিকের লক্ষণ নিয়ে পোস্ট দেওয়া ব্যাক্তিটিও..
In a Relationship with.....😶

#মদষ্টিক #আবাল

05/07/2022

কতটা সমৃদ্ধ ছিলো শাহী বাঙ্গালা ?

সালতানাত-ই বাঙ্গালাহ্ ছিলো তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম ধনী সাম্রাজ্য , তার মুদ্রামান ছিলো বিশ্বের অধিকাংশ সাম্রাজ্যর মুদ্রার মান অপেক্ষা বেশি।

শাহী বাঙ্গালার মুদ্রামানকে বর্তমান সময়ের ব্রিটিশ পাউন্ডের সাথে তুলনা করা যায়। বর্তমান মুদ্রার ক্ষেত্রে পাউন্ডের সমৃদ্ধি যতটুকু সেযুগে বাংলার মুদ্রার ক্ষমতা ছিলো ঠিক সেরকম।
তৎকালীন বিশ্বের অধিকাংশ বিখ্যাত সাম্রাজ্যের মুদ্রামানই বাংলার মুদ্রামানের তুলনায় কম ছিল..।

০১. হিন্দুস্তানের ২ দিনার (স্বর্ণমুদ্রা)= ১ বাঙ্গালি স্বর্ণমুদ্রা...

মিশরের মামলুক সাম্রাজ্যের ২ স্বর্ণমুদ্রা ছিলো হিন্দুস্তানের ১টি স্বর্ণমুদ্রা। সুতরাং, মিশরের ৪ দিনার ছিলো ১ বাঙ্গালি স্বর্ণমুদ্রার সমতুল্য।

২.মিশরের ৪ স্বর্ণমুদ্রা = ১ বাঙ্গালী মোহর

৩. মরক্কোর ৮ রৌপ্যমুদ্রা = বাংলার ১ রৌপ্যমুদ্রা

৪. মরক্কোর ৫ স্বর্ণমুদ্রা = ১ বাঙ্গালী স্বর্ণমোহর

৫. ২০ ওসমানি স্বর্ণমুদ্রা = ১ বাঙ্গালী স্বর্ণমুদ্রা

৬. ৪০ পর্তুগিজ রিয়াল= ১ বাঙ্গালী স্বর্ণমুদ্রা

---- ------------ -------- ------------------------
মামলুক সালতানাত ছিলো পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার সবচাইতে ধনী ও শক্তিশালী সাম্রাজ্য। মরক্কো ছিলো পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম ধনী রাজ্য। উসমানিয় সাম্রাজ্য তখন রুমেলিয়া-আনাতোলিয়া অঞ্চলের সবচাইতে ধনী ও শক্তিশালী রাজ্য ছিলো । আর পর্তুগাল ছিলো তৎকালীন ইউরোপের শ্রেষ্ঠ নৌশক্তিধর রাজ্য।

এদের সবার চাইতে আমাদের মুদ্রামান বেশি ছিলো। এটাই প্রমাণ করে যে- বাংলা কি ছিলো।
সুলতান সুলেমান দ্যা ম্যাগনিফিসেন্টের শাসনামলেও ওসমানিয় মুদ্রার মানের চাইতে বাংলার রৌপ্যমুদ্রা- টংকার মান ছিলো বেশি।

এই ছিলো বাংলা, আমাদের বাংলা....

মহানদী গঙ্গা একদিন পলি ফেলে গড়ে তুলেছিলো বিশ্বের উর্বরতম ব-দ্বীপ, গঙ্গার তীরেই গড়ে উঠেছিলো তিলোত্তমা গৌড় - যার তুলনা ভূ-ভারতে দিল্লি ছাড়া আর কেউ না।

আজ সবই গর্বের অতীত
শাহী বাঙ্গালা, শাহী সময়....!!

#কপি

02/07/2022

Ambivert 😔

27/06/2022

সঙ্গীত শিক্ষক: তুমি কোন তাল টা ভালো বোঝো?
ছাত্র: হরতাল
😂😂

04/05/2022


Address

Cox's Bazar

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when SBS SAHEL posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to SBS SAHEL:

Videos

Share

Nearby media companies


Other Digital creator in Cox's Bazar

Show All