09/12/2024
🔱🔱🔱জয় গুরু 🔱🔱🔱
🌷🌹🌷 শুভ মোক্ষদা একাদশী 🌹🌷🌹
আগামী ১১ই ডিসেম্বর ২০২৪ ইংরেজি (২৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১ বাংলা ) বুধবার মোক্ষদা একাদশী।
🙏🙏পারণ বৃহস্পতিবার।🙏🙏
পারণ পরদিন বাংলাদেশ সময় সকাল ৭:০০ হতে ১০:১৪ পর্যন্ত।
পরদিন ভারতের সময় সকাল ৬:৩০ হতে ০৯:৪৪ পর্যন্ত।
🙏 মোক্ষদা একাদশী ব্রতের মাহত্মা 🙏
অবশ্যই পাঠ করুন
🌹🌷 যুধিষ্ঠির বললেন---হে বিষ্ণু! আপনাকে আমি বন্দনা করি। আপনি ত্রিলোকের সুখদায়ক, বিশ্বেশ্বর, পুরুষোত্তম। আমার একটি সংশয় আছে। অগ্রহায়ন মাসের শুক্লপক্ষের যে একাদশী তার নাম কি, বিধিই বা কি এবং কোন দেবতা এই একাদশীতে পূজিত হন, তা আমাকে বলুন।
শ্রী কৃষ্ণ বললেন---হে মহারাজ! আপনি উত্তম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, যার মাধ্যমে আপনার যশ চতুর্দিকে বিস্তৃত হবে। এখন এই একাদশীর কথা বর্ণনা করছি যা শোনামাত্রেই বাজপেয় যজ্ঞের ফল লাভ হয়।
অগ্রহায়ন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী 'মোক্ষদা' নামে পরিচিত। সর্বপাপবিনাশিনী ও ব্রত মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা এই একাদশীর দেবতা শ্রী দামোদর। তুলসী, তুলসী মঞ্জরী, ধূপ, দীপ ইত্যাদি উপচারে শাস্ত্রবিধি অনুসারে শ্রী দামোদরের পূজা করতে হবে। পূর্ব বর্ণিত বিধি অনুসারে দশমী ও একাদশী পালন করতে হবে। এই উপবাস দিনে স্তব-স্তুতি, নৃত্য-গীত আদি সহ রাত্রি জাগরণ করা কর্তব্য।
হে মহারাজ! প্রসঙ্গক্রমে একটি অলৌকিক কাহিনী আমি বলছি। মনোযোগ দিয়ে এই ইতিহাস শ্রবণ মাত্রই সর্বপাপ ক্ষয় হয়। যে পিতৃ পুরুষেরা নিজ নিজ পাপে অধঃযোনি প্রাপ্ত হয়েছে, এই ব্রত পালনের পুণ্য ফল বিন্দুমাত্র তাদেরকে দান করলে তারাও মুক্তিলাভের যোগ্য হন।
কোন এক সময় মনোরম চম্পক নগরে বৈখানস নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন সমস্ত বৈষ্ণব সদ্ গুনে বিভূষিত। প্রজাদের তিনি পুত্রের মতো পালন করতেন। তার রাজ্যে বহু বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ বাস করতেন। রাজ্যের সকলেই ছিল বেশ সমৃদ্ধশালী। একবার রাজা স্বপ্নে দেখলেন যে তার পিতা নরকে পতিত হয়েছেন। তা দেখে তিনি অত্যন্ত বিস্মিত হলেন। পরদিন ব্রাহ্মণদের ডেকে বলতে লাগলেন---হে ব্রাহ্মণগণ! গতরাত্রিতে স্বপ্নে নরকযাতনায় পিতাকে কষ্ট পেতে দেখে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে। তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বলতে লাগলেন---'হে পুত্র! তুমি আমাকে নরক সমুদ্র থেকে উদ্ধার কর।' তার সেই অবস্থা দেখে আমার অন্তরে সুখ নেই। আমার এই বিশাল রাজ্য, স্ত্রী-পুত্র, কিছুতেই আমি শান্তি পাচ্ছি না। কি করি, কোথায় যাই কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমার পূর্বপুরুষেরা মুক্তিলাভ করতে পারেন এমন কোন পুণ্য ব্রত, তপস্যা ও যোগের কথা আমাকে উপদেশ করুন। আমি তা অনুষ্ঠান করব। আমার মতো পুত্র বর্তমান থাকা সত্ত্বেও যদি পিতা-মাতা, পূর্বপুরুষেরা নরক যাতনা ভোগ করতে থাকেন, তবে সে পুত্রের কি প্রয়োজন?
ব্রাহ্মণগণ বললেন---হে মহারাজ! আপনার রাজ্যের কাছেই মহর্ষি পর্বত মুনির আশ্রম রয়েছে। তিনি ত্রিকালজ্ঞ। তার কাছে আপনার মুক্তির উপায় জানতে পারবেন।
ব্রাহ্মণদের উপদেশ শ্রবণ করে মহাত্মা বৈখানস তাদের সঙ্গে নিয়ে সেই পর্বত মুনির আশ্রমে গমন করলেন। তারা দূর থেকে ঋষিবরকে সষ্টাঙ্গ প্রণাম করে তার কাছে গেলেন। মুনিবর রাজার কুশলবার্তা জিজ্ঞাসা করলেন।।
রাজা বললেন---হে প্রভু! আপনার কৃপায় আমার সবই কুশল। তবে আমি একদিন স্বপ্নযোগে পিতার নরক যাতনা ও কাতর আর্তনাদ শুনে অত্যন্ত দুঃখিত ও চিন্তাগ্রস্ত হয়েছি। হে ঋষিবর! কোন পুণ্যের ফলে তিনি সেই দুর্দশা থেকে মুক্তি পাবেন, তার উপায় জানতেই আপনার শরণাগত হয়েছি।
রাজার কথা শুনে পর্বত মুনি কিছুক্ষন ধ্যানস্থ হয়ে বললেন---হে মহারাজ! পূর্বজন্মে তোমার পিতা অত্যন্ত কামাচারী হওয়ায় তার এরকম অধোগতি লাভ হয়েছে। এখন এই পাপ থেকে মুক্তির উপায় বর্ণনা করছি অগ্রহায়ন মাসের শুক্লপক্ষের মোক্ষদা একাদশী পালন করে সেই পূণ্য ফল পিতাকে প্রদান কর। সেই পূণ্য প্রভাবে তোমার পিতার মুক্তি লাভ হবে।
মুনির কথা শুনে রাজা নিজের প্রাসাদে ফিরে এলেন। সেই পবিত্র তিথির আবির্ভাবে তিনি স্ত্রী-পুত্রাদি সহ যথাবিধি মোক্ষদা একাদশী ব্রত পালন করলেন। ব্রতের পুণ্য ফল পিতার উদ্দেশ্যে প্রদান করলেন। ঐ পুণ্য ফল দানের সঙ্গে সঙ্গে আকাশ থেকে পুষ্প বৃষ্টি হতে লাগল। 'হে পুত্র! তোমার মঙ্গল হোক।'এই বলতে বলতে বৈখানস রাজার পিতা নরক হতে মুক্ত হয়ে স্বর্গে গমন করলেন।
হে মহারাজ যুধিষ্ঠির! যে ব্যক্তি এই মঙ্গলদায়িনী মোক্ষদা একাদশী ব্রত পালন করে, তার সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয় এবং মৃত্যুর পরে মুক্তি লাভ করে। এই ব্রতের পুণ্য সংখ্যা আমিও জানিনা। চিন্তামণির মতো এই ব্রত আমার অত্যন্ত প্রিয়। এই ব্রত কথা যিনি পাঠ করেন এবং যিনি শ্রবণ করেন, উভয়েই বাজপেয় যজ্ঞের ফল প্রাপ্ত হন। 🙏 🌹
🙏🙏🙏হরে কৃষ্ণ🙏🙏🙏
#প্রচারেঃ_শ্রীশ্রী_দেবব্রত_গোস্বামী_সমাচার #গুরু_ধাম #রাধেরাধে ুরু #গোস্বামী_মতে