28/06/2023
তাকবিরে তাশরিক পুরুষের জন্য জোরে পড়া ওয়াজিব। আস্তে পড়লে তাকবীরে তাশরীক পড়ার হক আদায় হবে না। আর মহিলারা নিচু আওয়াজে অর্থাৎ নিজে শুনতে পায় এমন আওয়াজে পড়বে।
শুধু পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে। বিতরের পর এবং অন্য কোনো সুন্নত বা নফলের পরে পড়ার নিয়ম সুন্নাহসম্মত নয়।
৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত কোনো নামায কাজা হয়ে গেলে এবং ঐ কাজা এই দিনগুলোর ভিতরেই আদায় করলে সে কাজা নামাযের পরও তাকবিরে তাশরিক পড়বে।
হাজীদের ওপর ইহরাম অবস্থায় পূর্বোক্ত নিয়ম অনুযায়ী তাকবিরে তাশরিক পড়া ওয়াজিব।
ঈদুল আজহায় ঈদগাহে পৌঁছার আগ পর্যন্ত পথে পথে উচ্চস্বরে তাকবীর বলে বলে যাবে।
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা: হাদিস ১৯২)
ঈদের দিন সাহাবায়ে কেরামের তাকবির ধ্বনিতে পুরো আশপাশ কেঁপে উঠত। আর এই তাকবির উচ্চ স্বরে বলার তাৎপর্য এটাও যে, এর দ্বারা ইসলামের তাওহিদের ঘোষণা প্রকাশ্যে উচ্চস্বরে দেওয়া হবে। গুনগুন শব্দে এর বহিঃপ্রকাশ কি সম্ভব?
(ইসলাহী খুতবাত ২/১২৬-১২৯)
সার্বক্ষণিক জিকির ও তাকবিরের আমল ছাড়াও জিলহজের প্রাথমিক দিনগুলোর প্রায় প্রতিটি ইবাদত ও আমলের সাথে জিকির ও তাকবিরকে এমনভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে যেন সব আমল-ইবাদতের মূল কথা হল জিকরুল্লাহ, তাকবির ও তাওহিদ। এজন্য এ সময়ের সকল ইবাদতের পরতে পরতে রয়েছে নির্ভেজাল তাওহিদের উপস্থিতি।
সাহাবায়ে কেরাম এই দিনগুলোতে সর্বদা আল্লাহু আকবারের ধ্বনি তুলতেন। হযরত ইবনে উমর (রা.) ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বাজারে গিয়ে তাকবিরের আওয়াজ তুলতেন। শুনে শুনে লোকেরাও তাদের সাথে তাকবিরের সুর তুলত।
ইবনে ওমর রা. পথে-ঘাটে, বাজারে-ঘরে এবং নামাযের পরে শুধুই তাকবির বলতে থাকতেন। মিনার দিনগুলোতো তার তাকবিরের সাথে সমস্বরে মানুষের তাকবিরে মিনার প্রাঙ্গন মুখরিত হয়ে উঠত। মহিলারাও (নিচু স্বরে) তাকবীর বলতে থাকতেন।
(সহীহ বুখারী;ফাতহুল বারী ২/৫৩০-৫৩৬)
তাই আসুন, তাকবিরে তাশরিকের যে বাক্যজুড়ে রয়েছে তাওহিদ, আল্লাহর বড়ত্ব ও প্রশংসার কথা; সে বাক্যে উচ্চকিত করে তুলি পৃথিবীর প্রতিটি জনপদ।
এ জিকির গুঞ্জরিত হোক, প্রতিটি মসজিদে, প্রতিটি মুসলিমের ঘরে; প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর, নারী-পুরুষ সকলের মুখে।
তথ্যসূত্র: রদ্দুল মুহতার ২/১৭৭-১৮১; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২; আল বাহরুর রায়েক ২/১৬৪-১৬৫,ইলাউস সুনান ৮/১৪৮-১৬২;বাদায়েউস সানায়ে' ১/৪৫৮-৪৬৫।