23/12/2024
💥আজকের আলোচনার বিষয় "গরুর পরজীবী" মূলত কি? এবং কিভাবে গরুকে সর্বোচ্চ"কৃমি" বা "পরজীবী মুক্ত করণ" করা যায় ।💥
♻️ ইনশা, আল্লাহ আশা করি ধর্য সহকারে এই বিষয়টি একবার পড়লে গরুর কৃমি ও গরুকে সর্বোচ্চ পরজীবী মুক্তকরণ বিষয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না ♻️
💥♻️এই কৃমি বা পরজীবী গরুর বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি সাধন করে ♻️
তাহলে প্রথমেই জেনে নেই গরুর পরজীবী মূলত কি?
♻️যে সব জীব বেঁচে থাকার জন্য ও বংশবিস্তারের জন্য গরুর অভ্যন্তরে ও বাহিরে বসবাস করে তাদেরকে গরুর পরজীবী বলে। গরর পরজীবের মধ্যে অন্যতম হলো : গোল কৃমি, ফিতা কৃমি, পাতা কৃমি, কলিজা কৃমি, ও উকুন, আটুলি, মাইট ।
♻️ গরুর পরজীবীকে আবার দুই ভাগেভাগ করা যায়।
💠 ১) অন্ত:পরজীবী।
💠২) বহি: পরজীবী।
💥💥আন্ত: পরজীবী💥💥
.......//..............//..................//................//..........
⏩ যেসব পরজীবী গরুর শরীরের অভ্যন্তরে বসবাস করে তাকে অন্তঃপরজীবী বলে।
যেমন: গোল কৃমি, ফিতা কৃমি, পাতা কৃমি, ও কলিজা কৃমি।
। 💥💥 বহি: পরজীবী 💥💥
.............//..........//..................//..............//..........
⏩ যেসব পরজীবী গরুর শরীরের বাহিরে বা উপরে বসবাস করে তাকে বহি:পরজীবী বলে।
যেমন : উকুন, আটুলি, মাইট।
💥💥 আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ ও সৃষ্ট সমস্যা💥💥..........//................//..................//..............//......
♻️ একটি গরু অন্তঃপরজিবি ও বহি:পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা গুলোকেই মূলত অন্ত: পরজীবী ও বহি: পরজীবী আক্রান্ত গরুর লক্ষণ হিসেবে ধরা যায়। একটি গরুর যেসব সমস্যা দেখা দিলে মূলত গরুটি অন্ত:পরজীবী বা বহি:পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত সে সমস্যা গুলো বা লক্ষণ গুলো হলো :
♻️ ১) আক্রান্ত প্রাণির ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা দেয়।
♻️২) ক্ষুধামন্দা ভাব বা লক্ষণ প্রকাশ পায়।
♻️ ৩) প্রাণির শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা যায়।
♻️ ৪) দেহত্বকের লোম উস্কো খুস্কো হয়ে যায়, অনেক সময় লোম ঝরে ঝরে যায় ।
♻️ ৫) প্রাণির ত্বকে প্রচন্ড চুলকানি হয়। এক পর্যায়ে প্রাণি চুলকানির জন্য শক্ত বস্তুর সাথে শরীর ঘষে । ফলে অনেক সময় চামড়া উঠে রক্ত বের হয়ে আসে ।
♻️৬) প্রাণির শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
♻️ কোনো গরুর মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা গেলে বুঝতে হবে যে সেই গরু পরজীবীতে আক্রান্ত ♻️
💥 💥চিকিৎসা 💥💥..........//..........//...........................//..........//........
♻️আমরা উপরন্তু আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে গরুর পরজীবী গুলো হলো : গোল কৃমি, ফিতা কৃমি, পাতা কৃমি ও কলিজা কৃমি এবং উঁকুন, আটুলি, মাইট।
💥তাহলে এই কয়েকটা পরজীবী জীব কে ধ্বংস বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই আমরা গরুকে সর্বোচ্চ কৃমি বা পরজীবী মুক্ত করতে পারবো এবং উপরন্তু সমস্যা গুলো থেকে আমাদের গরুকে হেফাজতে রাখতে পারবো। তাহলে আমরা যেভাবে আমাদের খামারের গরুকে সর্বোচ্চ কৃমি মুক্ত বা পরজীবী মুক্ত করি তার নিয়মাবলী এখানে তুলে ধরতেছি।।।
💥আমরা প্রথমত গরু কিনার ৭ দিন পর, গরুকে সর্বপ্রথম কৃমি মুক্ত বা পরজীবী মুক্ত করণের জন্য কীটনাশক জাতীয় গুলোর মধ্যে টেবলেট জাতীয় একটি ঔষুধ দেই। ঔষুধ গুলোর নাম হলো :
✅১) এলটি ভেট /৫০ কেজির জন্য ১ টা
✅২) রেনাডেক্স ভেট / ৫০ কেজির জন্য ১ টা
✅৩) এলটি ভেট ডিএস / ১০০ কেজির জন্য ১ টা
♻️(বিঃ দ্রঃ যে কোনো একটি দেই )
⚠️⚠️⚠️ শীতকালীন সময়ে আমরা গরুকে কৃমির টেবলেট এর পরিবর্তে "এ-মেকটিন প্লাস " ইনজেকশন করি চামড়ার নিচে ১০০ কেজি ওজনের জন্য ৩ মিলি। এটিও টেবলেটের মতো একই কাজ করে।
শীতকালীন সময়ে কৃমির টেবলেট দিলে গরুর খাওয়ার রুচির সমস্যা দেখা যায় অনেক বেশি তাই ইনজেকশন প্রয়োগ করি।
টেবলেট গরুকে খালি পেতে খাওয়াতে হয় এবং টেবলেট খাওয়ার পর সর্বনিম্ন ২ হতে৩ ঘন্টা কোনো খাদ্য দেওয়া যাবে না। এবং টেবলেট খাওয়ার ৩ হতে ৪ ঘন্টা পর গরুকে গোসল দিয়ে খাদ্য দেওয়া উত্তম। এবং গরুকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে লিভার টনিক ও জিঙ্ক খাওয়ানো শুরু করা উত্তম।
♻️ এগুলো ঔষুধের মাধ্যমে গরুর মধ্যে থাকা অন্ত:পরজীবীর মধ্যে গোল কৃমি, ফিতা কৃমি, ও পাতা কৃমি ধ্বংস হয়। ♻️
💥তাহলে গরুকে সম্পূর্ণ পরজীবী মুক্ত করণের জন্য আমাদের এখনো "কলিজা কৃমি" ও উঁকুন, আটুলি, মাইট ধ্বংস করা বাকি আছে।এসবের মধ্যে আমরা আগে গরুকে কলিজা কৃমি মুক্ত করি, টেবলেট প্রয়োগের প্রায় ১৫ দিন পর । এর জন্য আমরা ব্যবহার করি
✅১) নাইট্রোনেক্স ইনজেকশন / ৫০ কেজির জন্য "১. ৫" মিলি।
♻️ তাহলে এই ইনজেকশনের মাধ্যমে আমাদের কলিজা কৃমি ধ্বংস হয়ে গেলো ♻️
💥 এখন আমাদের গরুকে সর্বোচ্চ পরজীবী মুক্ত করার জন্য ধ্বংস করা বাকি আছে, " উঁকুন, আটুলি, মাইট " এগুলো ধ্বংস করার জন্য ঔষুধ প্রয়োগ করি কলিজা কৃমি মুক্ত করার ২ দিন পরেই। তাহলে এগুলো ধ্বংস হলেই ইনশা,আল্লাহ আমাদের গরু সর্বোচ্চ পরজীবী মুক্ত হবে। এগুলো ধ্বংসের জন্য আমরা ব্যবহার করি :
✅১) এ- মেকটিন ভেট ড্রপ(১০০ কেজির জন্য ১ টি )
🤔২) অথবা আইভারমেক ড্রপ (১০০ কেজিতে ১ টি
⚠️⚠️বিঃ দ্রঃ যে কোনো একটি ড্রপ ব্যবহার করি গরুর "গরুর মাথার উপরি ভাগ গুলা উপর থেকে শুরু করে পিঠ দিয়ে লেজের শেষ অংশ পর্যন্ত একটি রেখা টেনে দেই )💠
♻️এতে আলহামদুলিল্লাহ গরুতে থাকা সকল পরজীবী ( গোল কৃমি, ফিতা কৃমি, পাতা কৃমি, কলিজা কৃমি, উঁকুন, আটুলি, মাইট ) ধ্বংস হবে। আমরা এভাবেই আমাদের ২ মাসে হাড্ডিসার গরু মোটাতাজা খামারের সব গরু সম্পূর্ণ রূপে কৃমি, বা পরজীবী মুক্ত করণ করি♻️
⚠️⚠️ বি দ্রঃ অনেক জন পরিপূর্ণ কৃমি মুক্ত করার লক্ষে গরুকে কৃমির বুস্টার ডোস দেয় । আমরা মূলত আমাদের কোনো গরুকে বুস্টার ডোস দেই না। কারণ গরুকে কখনো সম্পূর্ণ কৃমি মুক্ত করা সম্ভব না। আর যদি বুস্টার ডোস দিয়ে সম্পূর্ণ কৃমি মুক্ত হয় তাহলে আবার কেনো ৩ মাস পর গরুকে কৃমির টেবলেট খাওয়াতে হয়??প্রশ্ন থেকে যায়!! যাক এই বিষয়ে আলোচনা করলে অনেক বড়ো হয়ে যাবে অন্য কোনো দিন্ করবো ইনশাআল্লাহ। বলতে কী বুস্টার ডোস করা হয় কৃমির ডিম ধ্বংস করার জন্য, আর কৃমির ডিম সম্পূর্ণ ধ্বংস করা গরুর জন্য হবে ক্ষতিকর, আর এটা সম্ভব না,, সম্ভব হলে ১ বার বুস্টার ডোস দিয়ে সারাজীবন গরুকে কৃমির টেবলেট খাওয়ানো আর লাগতো না।।
⚠️ গরু ও খামার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য পেতে পেজটিতে ফলো দিয়ে আমাদের সাথে থাকতে পারেন, এবং প্রয়োজনে ইউটুবে গিয়ে চাষী ভাই নাম সার্চ দিয়ে আমাদের চ্যানেলে যুক্ত থাকতে পারেন।
যাজাকাল্লাহ খাইরুন। ♻️♻️
#গরুরহাট