ইসলামের আলো

ইসলামের আলো Assalamualaikum Everyone.It's An Islamic Content Based Page.Stay Connected.

"শৈশবের নৈতিক শিক্ষা: জীবনের পথপ্রদর্শক"মুসলিম পরিবারের ছোট্ট একটি ছেলে, রিয়াদ, প্রতিদিন সকালে মক্তবে যায় কুরআন শিখতে। এ...
22/11/2024

"শৈশবের নৈতিক শিক্ষা: জীবনের পথপ্রদর্শক"

মুসলিম পরিবারের ছোট্ট একটি ছেলে, রিয়াদ, প্রতিদিন সকালে মক্তবে যায় কুরআন শিখতে। একদিন মক্তব থেকে ফেরার পথে সে রাস্তায় ১০০ টাকার একটি নোট কুড়িয়ে পায়। প্রথমে সে খুব খুশি হয় এবং নোটটি হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।

বাড়িতে গিয়ে সে তার মাকে পুরো ঘটনাটি জানায়। তখন তার মা, যিনি রান্নাঘরে রুটি বানাচ্ছিলেন, তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক শিক্ষা দেন। মা বলেন, "অন্যের জিনিস বা টাকা কুড়িয়ে নিলে তা হারামের মতো হয়। আমাদের উচিত, এটি প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া বা যেখানে পেয়েছি সেখানে রেখে আসা।" মায়ের কথা শুনে রিয়াদ বুঝতে পারে যে এটি সঠিক কাজ নয়। সে সঙ্গে সঙ্গেই মায়ের নির্দেশ মেনে টাকাটি যেখানে পেয়েছিলো সেখানে গিয়ে রেখে আসে।

এই ছোট ঘটনাটি রিয়াদের কচি মনে গভীর প্রভাব ফেলে। সেই দিনের শিক্ষাটি সে কখনও ভুলে যায়নি। আজ রিয়াদ বড় হয়েছে এবং তার জীবনে সেদিনের নৈতিক শিক্ষা দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করছে। সে কখনও অন্যের কোনো জিনিসের প্রতি লোভ দেখায় না এবং অন্যায়ভাবে কারও সম্পদ নেওয়ার বিপক্ষে থাকে। যদি কোনো হারিয়ে যাওয়া জিনিস পায়, সে সবসময় চেষ্টা করে প্রকৃত মালিককে তা ফিরিয়ে দিতে।

এই গল্পটি আমাদের শেখায় যে ছোটবেলায় পরিবার থেকে পাওয়া নৈতিক শিক্ষা একজন শিশুর পুরো জীবনকে প্রভাবিত করে। পরিবারই হলো একটি শিশুর প্রথম বিদ্যালয়, আর মা-বাবা হলো তার প্রথম শিক্ষক। শিশুরা তাদের আশেপাশের মানুষদের থেকে যা দেখে ও শিখে, তা তাদের জীবনের ভিত্তি গড়ে তোলে।

তাই প্রত্যেক মা-বাবার উচিত ছোট থেকেই তাদের সন্তানদের সৎ ও নৈতিক জীবনের দীক্ষা দেওয়া। কারণ, ছোটবেলার এই মূল্যবোধ শিশুর জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সাহায্য করে। নৈতিক শিক্ষায় গড়া শিশুরাই ভবিষ্যতে সৎ, দায়িত্বশীল এবং ন্যায়পরায়ণ সমাজ গড়তে পারে।

যেই বয়সে তার পুতুল নিয়ে বাসার এই রুম থেকে ওই রুমে ছোটাছুটি করার কথা, সেই বয়সে সে তার ছোট্ট আহত/অসুস্থ ভাইকে কাধে নিয়ে এই...
25/10/2024

যেই বয়সে তার পুতুল নিয়ে বাসার এই রুম থেকে ওই রুমে ছোটাছুটি করার কথা, সেই বয়সে সে তার ছোট্ট আহত/অসুস্থ ভাইকে কাধে নিয়ে এই এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটছে একটু নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য। যেই বয়সে তার পরিবার, বাবা-মায়ের সঙ্গে বেড়ে ওঠার কথা, সেই বয়সে সে তার ছোট্ট ভাইয়ের দেখাশুনা করছে। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস।

তবুও তারা মনোবল হারায়না, তাদের মানসিক শক্তি কতটা অসীম সেটা তার ছোট একটা উক্তি থেকে উপলব্ধি করা যায়। "এটা আমার ভাই, আমার কাছে ভারী নয়"। আল্লাহ তাদের মানসিক শক্তি এবং ঈমানি শক্তিকে আরও বাড়িয়ে দিক।

নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুর হিসাব রাখেন এবং ন্যায়বিচার করেন।

'আল্লাহ কি বিচারকদের শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?'
(সূরা : আত ত্বীন - আয়াত ৮)

‘অচিরেই জালিমরা জানতে পারবে, তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল কোথায় হবে।’
(সূরা : শুআরা, আয়াত : ২২৭)



❌কি অবস্থা ?❌কেমন চলছে দিনকাল ?❌হেই ব্রো !❌হেলো ব্রাদার !☑️ আসসালামু আলাইকুম ।কথোপকথন শুরু হোক সালাম দিয়ে।
18/10/2024

❌কি অবস্থা ?
❌কেমন চলছে দিনকাল ?
❌হেই ব্রো !
❌হেলো ব্রাদার !
☑️ আসসালামু আলাইকুম ।

কথোপকথন শুরু হোক সালাম দিয়ে।

কুরআনে বর্ণিত ঘটনাগুলো নিয়ে আমি কিছু কথা বলতে চাই। এ ব্যাপারে একটি ব্যাপার লক্ষ্য করবেন যে, একই ঘটনা বিভিন্ন সূরাতে বার ...
06/03/2024

কুরআনে বর্ণিত ঘটনাগুলো নিয়ে আমি কিছু কথা বলতে চাই। এ ব্যাপারে একটি ব্যাপার লক্ষ্য করবেন যে, একই ঘটনা বিভিন্ন সূরাতে বার বার এসেছে। শুধু ইউসুফ (আ) এর ঘটনা ব্যতীত কোনো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা এক স্থানে উপস্থাপন করা হয়নি।

অর্থাৎ, ইউসুফ (আ) এর সম্পূর্ণ ঘটনা একটি সূরাতে একত্রে বর্ণনা করা হয়েছে। কোন সূরাতে? সূরা ইউসুফে। কিন্তু, মূসা (আ) এর ঘটনা এভাবে এক সূরায় একত্রে বর্ণনা করা হয়নি। তাঁর ঘটনা বিভিন্ন সূরাতে বিভিন্নভাবে এসেছে। বনী ইসরাইলের সকল ঘটনাও এক সূরাতে একত্রে তুলে ধরা হয়নি। ইব্রাহিম (আ) এর ঘটনাও এক স্থানে আসেনি। আদম (আ) এর ঘটনাও সমগ্র কুরআন জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এসেছে এবং পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে।

তাহলে এখানে দুইটি ইস্যু। ঘটনাগুলো কুরআনের বেশ কয়েক জায়গাতে এসেছে। এবং একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বা ঘটনার কিছু অংশ কয়েকবার তুলে ধরা হয়েছে।

এখন, কেউ প্রথম প্রথম কুরআন পড়তে এলে তার মনে প্রশ্ন জাগ্রত হয়, এই রিপিটিশনের কারণ কী? ঘটনাগুলো এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বর্ণনা করার কারণ কী? কেন মূসা (আ) এর সকল ঘটনা এক সূরাতে একত্রে বর্ণনা করা হয়নি? সূরাটির নাম দেওয়া যেত সূরা মূসা। এভাবে আসেনি। কেন?

কুরআনের প্রায় সত্তর জায়গায় মূসা (আ) এর ঘটনা এসেছে। কুরআন পড়তে গেলে বার বার মূসা (আ) এর ঘটনা সামনে এসে পড়ে।

এখন প্রশ্ন হলো কুরআনের সূরাগুলোকে কিভাবে সাজানো হয়েছে? এটা নিয়েই আমি মূলত কথা বলতে চাই।

এভাবে চিন্তা করুন। কুরআনের প্রতিটি সূরা অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ কিছু পাঠের সমষ্টি। আর সবগুলো পাঠ একটি আরেকটির সাথে এক ধরণের বন্ধনে আবদ্ধ। তো, একটি সূরা একটি থিসিসের মত। ভার্সিটির একটি কোর্সের মতো।

অনেক সময় আমরা একটি আয়াত এক সূরা থেকে পড়ি, অন্য আরেকটি আয়াত অন্য আরেকটি সূরা থেকে পড়ি। কুরআনে বর্ণিত ঘটনাগুলোকেও বিভিন্ন জায়গা থেকে একত্র করে পড়ি। অন্য কথায়, সূরার সীমানা থেকে বেরিয়ে আমরা বিষয়গুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে অধ্যয়ন করি।

কিন্তু একটি সূরা আসলে একটি সমন্বিত সমগ্র। এর সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য আছে। এর হয়তো অনেকগুলো শিক্ষা আছে। কিন্তু শিক্ষাগুলো একটি বৃহৎ ধারণার দিকে নির্দেশ করে।

কখনো সাপোর্টিং এভিডেন্সের কথা শুনেছেন? সমর্থনকারী প্রমাণের কথা? কুরআনের ঘটনাগুলো শুধু ঘটনা বলার জন্য উল্লেখ করা হয়নি। কোনো সূরাতে যে শিক্ষাগুলো বর্ণনা করা হয়েছে ঐ শিক্ষাগুলোর সমর্থনেই কেবল ঘটনাগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিটি সূরার সুনির্দিষ্ট কিছু শিক্ষা রয়েছে। ঐ শিক্ষাগুলোর সমর্থনেই কেবল কোনো ঘটনা বা ঘটনার অংশ বিশেষ উল্লেখ করা হয়। ঘটনার অন্য কোনো অংশ সূরাটিতে উল্লেখ করা হয় না।

তাই, কুরআনের সন তারিখ নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই। ঘটনাগুলো কোথায় সংঘটিত হয়েছে সেসব স্থানের বিস্তারিত বর্ণনাও কুরআনে পাওয়া যায় না।

কুরআনে বর্ণিত সবচেয়ে বিস্তারিত ঘটনা হলো ইউসুফ (আ) এর ঘটনা। কিন্তু, এখানে কি ইউসুফ (আ) এর ভাইদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে? বা মন্ত্রীর নাম? ইউসুফ (আ) এর মায়ের নাম কি উল্লেখ করা হয়েছে? মন্ত্রীর স্ত্রীর নামও কি এসেছে? সমগ্র সূরাতে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট মাত্র দুইটি নাম এসেছে। কার কার নাম? ইউসুফ এবং ইয়াকুব (আ) এর নাম।

কেন উল্লেখ করা হয়নি? কারণ, এসব বিস্তারিত জানানো ঘটনাটির উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্যটা আরও বড় কিছু। তাই, যা কিছু বড় উদ্দেশ্য শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় তা বাদ দেওয়া হয়েছে।

আপনারা হয়তো ভাবছেন সুরা ইউসুফের মূল উদ্দেশ্য হলো আমাদেরকে ঘটনাটা শিক্ষা দেওয়া। কিন্তু, আসলে ঘটনাটা মূল উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হলো রাসূলুল্লাহ (স) এর সিরাত। জানতেন এটা?

সমগ্র সূরাটি রাসূলুল্লাহ (স) এর জীবনী নিয়ে। সূরা ইউসুফ এবং রাসূলুল্লাহ (স) এর জীবনীর মাঝে অসাধারণ সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

সূরাটি নাজিল হয় রাসূলের দুঃখের বছর। আর সূরাটি হলো ইউসুফ (আ) এবং তাঁর পিতার দুঃখ নিয়ে।

ইউসুফ (আ) এর ভাইয়েরা তাঁকে নির্যাতন করেছিলো। আর রাসূলের স্বগোত্রের লোকজন তাঁকে নির্যাতন করেছিলো। ইউসুফ (আ) কে একটি কুয়ায় নিক্ষেপ করা হয়েছিল। আর রাসূলুল্লাহ (স) কেও শিয়াবে আবু তালিব নামক গিরি সংকটে আশ্রয় নিতে হয়েছিল।

ইউসুফ (আ) পরিশেষে তাঁর বাবা ইয়াকুবের ঐতিহ্য প্রতিষ্ঠা করেন। রাসূলুল্লাহ (স)ও পরিশেষে তাঁর পিতা ইব্রাহীমের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনেন।

ইউসুফ (আ) তাঁর ভাইদের বললেন- لَا تَثۡرِیۡبَ عَلَیۡکُمُ الۡیَوۡمَ - আজ তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কোনই অভিযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ (স)ও মক্কা বিজয়ের পর কুরাইশদের একই কথা বললেন।

উভয় রাসূলের ঘটনার মাঝে খুবই অসাধারণ সাদৃশ্য পাওয়া যায়!!

- নোমান আলী খানের আলোচনা অবলম্বনে
- YM Intensive: Lessons from the Story of Musa (as)
by Nouman Ali Khan Collection In Bangla

জায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ) যখন আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিতে দিতে বদর যুদ্ধের বিজয়ের খবর নিয়ে মদিনায় প্রবেশ করছিলে...
05/03/2024

জায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ) যখন আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিতে দিতে বদর যুদ্ধের বিজয়ের খবর নিয়ে মদিনায় প্রবেশ করছিলেন, তখন একজন বিশেষ ব্যক্তিও এই তাকবীরের আওয়াজ শুনতে পেলেন। আর তিনি ছিলেন ওসমান ইবনে আফফান (রা।) তিনি মাত্র রুকাইয়া (রা) কে কবর দেয়া শেষ করলেন। যেদিন জায়েদ (রা) যুদ্ধ জয়ের খবর নিয়ে এসেছিলেন, সেই দিন, ঠিক সেই সময় হজরত ওসমান মাত্র রাসূলুল্লাহ (স) এর কন্যার দাফন সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি তখন আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার আওয়াজ শুনতে পেলেন। "কী হয়েছে? কেন এই তাকবীর?" তখন তাকে বদর যুদ্ধের বিজয়ের খবর জানানো হল।

ব্যাপারটা নিয়ে যদি একবার ভেবে দেখেন...বদরের যুদ্ধে বিজয়ের দিন ছিল মুসলমানের জন্য, ইসলামের জন্য অন্যতম খুশির একটি দিন। এখন পর্যন্ত এর চেয়ে খুশির কোন কিছু ঘটেনি। এর চেয়ে আনন্দদায়ক কিছু ঘটেনি।

কিন্তু আল্লাহ ইচ্ছা করলেন, সেই দিন একটি ট্রাজেডিও আঘাত হানবে, ঠিক সেই ঘরে যেই ঘর সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হওয়ার কথা ছিল। আর তা ছিল রাসূলুল্লাহ (স) এর ঘর। রাসূল (স) এর কন্যা রুকাইয়া (রা) সেদিন মৃত্যুবরণ করেন।

এর মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যেন আমাদেরকে দেখিয়ে দিচ্ছেন, তুমি যত খুশিই হও না কেন এই পৃথিবী একটি পরীক্ষা এবং কষ্ট ক্লেশের স্থান। এমনকি বদরের দিনেও....আল্লাহ যদি ইচ্ছে করতেন কিছুদিন পিছিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু, একেবারে বদরের দিন, যেদিন মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হওয়ার কথা ছিল সেইদিন এমন একটি দুঃখজনক ঘটনাও ঘটল।

এর মাধ্যমে আমাদের সবাইকে এই মেসেজ দেয়া হচ্ছে - উপলব্ধি করার চেষ্টা করো, এই দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। জীবন মৃত্যু কারো জন্য বন্ধ থাকে না। এর আগমন এমন সময় ঘটে যখন কেউ এটা নিয়ে ভাবে না। এটাই দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা। আমাদের রাসূল (স) যেমন একবার একটি রেখা টেনে বুঝিয়েছিলেন - আমাদের সবারই অমুক অমুক কাজের বিশাল এক লিস্ট থাকে। আর এ লিস্টের শেষে পৌঁছানোর পূর্বেই মৃত্যুর রেখা এসে তা কেটে ফেলে। তিনি এই উপমা দিয়েছেন।

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি রেখা আঁকলেন এবং বললেন, এটা হল মানুষ, (এটা তার আশা-আকাঙ্ক্ষা) আর এটা হল তার মৃত্যু, সে এ অবস্থার মধ্যেই থাকে; হঠাৎ নিকটবর্তী রেখা (অর্থাৎ, মৃত্যু) এসে পড়ে। (বুখারী ৬৪১৮)

আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমাদের সবারই যখন শেষ সময় এসে যাবে, তখন আমাদেরও বিভিন্নরকম কাজের বিশাল এক লিস্ট থাকবে। ''আমাকে এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে।'' কিন্তু মৃত্যুর সাথে সাথে এই লিস্টের আর কোনো মূল্য থাকবে না। মৃত্যুর সাথে সাথে এর সমাপ্তি ঘটবে। এটাই জীবনের বাস্তবতা।

আমাদের রাসূল (স) কে এই ব্যাপারটা দেখিয়ে দেয়ার মাধ্যমে আমাদের সবাইকে দেখানো হচ্ছে। কারণ, তিনি হলেন আমাদের রোল মডেল। এমনকি এমন একটা খুশির দিনেও আমাদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই দুনিয়া আনন্দ উৎযাপনের জায়গা নয়। আনন্দ উৎযাপনের আসল জায়গা হলো জান্নাত।

-- শায়েখ ইয়াসির কাদি
-- Seerah of Prophet Muhammed ﷺ - part 41 এর অংশবিশেষ।

সময় টাকার চেয়েও মূল্যবান -------------------------------একজন মুমিন কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে সক্রিয়তার সাথে সময় নষ্ট করে না। ভা...
07/07/2023

সময় টাকার চেয়েও মূল্যবান
-------------------------------

একজন মুমিন কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে সক্রিয়তার সাথে সময় নষ্ট করে না। ভাবতে পারেন? কেউ টাকার কতগুলো বান্ডিল নিয়ে একটার পর একটা আগুনে জ্বালাতে থাকলো! কাউকে এমন করতে দেখলে মনে মনে বলবেন, হায়রে! মানুষ কি কোনোদিন এমন বোকা হতে পারে!

আল্লাহর শপথ! যখন আমরা সময় নষ্ট করি, আমরা আমাদের মূল্যবান সময়গুলোকে জ্বালিয়ে দিচ্ছি। এর চেয়েও খারাপ। টাকা হয়তো আবার উপার্জন করা যাবে। কিন্তু, সময় আমরা আর ফিরে পাবো না।

পরেরবার যখন সময় নষ্ট করবেন, তখন কল্পনায় একটি চিত্র অঙ্কন করুন- এটিএম থেকে টাকা তুলে সেগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছেন। নিজেকে তখন জিজ্ঞেস করুন- আমি কি কোনোদিন এমন কাজ করব? আমি কি আমার এটিএম থেকে টাকা তুলে ডাস্টবিনে ফেলে দিবো? আমি কখনো এমন কাজ করবো না। তাহলে কেন আমি টাকার চেয়েও মূল্যবান, উত্তম একটি জিনিস এভাবে অপচয় করে ফেলছি!

উপলব্ধি করুন। কুরআনের বহু আয়াত আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেছে। দুনিয়াতে সময় নষ্ট করার কারণে রোজ হাশরের দিন তাদের আফসুসের আর অন্ত থাকবে না। আল্লাহ স্বয়ং আমাদের কুরআনে বলেছেন- اَوَ لَمۡ نُعَمِّرۡکُمۡ مَّا یَتَذَکَّرُ فِیۡهِ مَنۡ تَذَکَّرَ - "আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি (সময় দেইনি) যে, তখন কেউ নসীহত গ্রহণ করতে চাইলে নসীহত গ্রহণ করতে পারতে?" (৩৫:৩৭) এটি বিস্ময়কর একটি আয়াত।

খেয়াল করুন তিনি কী বলছেন। আমি কি তোমাদের যথেষ্ট সময় প্রদান করিনি যে, যদি তোমরা সুযোগ গ্রহণ করতে চাইতে সুযোগ গ্রহণ করতে পারতে? ভালো ভালো আমল করতে পারতে। পরকালের পাথেয় সংগ্রহ করতে পারতে।

এ কারণে যারা এ সুযোগ কাজে লাগায়নি তাদের নিকট সমগ্র জীবনটি একটি মিলি সেকেন্ডের মত মনে হবে। এ নিয়ে কুরআনে কত যে আয়াত আছে। সূরা আন-নাজিয়াতে আল্লাহ বলেন- کَاَنَّهُمۡ یَوۡمَ یَرَوۡنَهَا لَمۡ یَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا عَشِیَّۃً اَوۡ ضُحٰهَا - "যেদিন তারা তা দেখবে (শেষ বিচার) সেদিন তাদের মনে হবে, যেন তারা (পৃথিবীতে) এক সন্ধ্যা বা এক সকালের বেশি অবস্থান করেনি।" ৭৯:৪৬

ফেরেশতারা অনেক মানুষের আমলনামার দিকে তাকাবে। দেখবে যে তারা কিছুই অর্জন করতে পারেনি। তাদের নেক আমলের অংশ একেবারেই শূন্য। তখন তারা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করবে- তোমরা কত বছর পৃথিবীতে অবস্থান করেছিলে? তারা তখন বলবে- قَالُوۡا لَبِثۡنَا یَوۡمًا اَوۡ بَعۡضَ یَوۡمٍ - "আমরা একদিন বা এক দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি।" এরপর তারা নিজেদের দাবিতে ঔদ্ধত্য দেখিয়ে বলবে-"(যদি বিশ্বাস না হয়) যান যারা হিসাব রাখতো তাদের জিজ্ঞেস করুন।" আমরা নিশ্চিত আল্লাহ আমাদের শুধু একদিন বাঁচতে দিয়েছেন। কারণ, আমার ভালো আমল বলে কিছু নেই। আমি কিছুই অর্জন করিনি। কিভাবে আমি হিসাবের দিনের কথা, বেহেশত দোজখের কথা জানা সত্ত্বেও কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করিনি? এটা অসম্ভব। তাই, আমি নিশ্চিত আমি পৃথিবীতে একদিন বা এক দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি মাত্র। আমি সময় পাইনি।

সময় অপচয় রোধ করার জন্য সক্রিয়তার সাথে, ক্ষিপ্রতার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

সুরাতুজ যুমারে আল্লাহ আমাদের বলেন। সাবধান হও। اَنۡ تَقُوۡلَ نَفۡسٌ یّٰحَسۡرَتٰی عَلٰی مَا فَرَّطۡتُّ فِیۡ جَنۡۢبِ اللّٰهِ - “যাতে কাউকে বলতে না হয়- হায় আফসোস! আমি আল্লাহর প্রতি (আমার কর্তব্যে) অবহেলা করেছিলাম, আর আমি তো ঠাট্টা বিদ্রূপকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।” (৩৯:৫৬) তার মত হবে না যে বলবে...এক ব্যক্তি এভাবে বলবে, আসলে অনেক ব্যক্তি এভাবে বলবে। তাদের মত হবে না।

সে বলবে- আমার নিজের প্রতি কি যে দুঃখ হয়!! আমি কত যে সময় নষ্ট করেছি। 'ফাররাততু' মানে আমি মূল্যবান সময়গুলো নষ্ট করে ফেলেছি অর্থহীন কাজে। আমি সবগুলো নষ্ট করে ফেলেছি; আল্লাহর প্রতি আমার কর্তব্যগুলো পালন না করে।

আমরা তাদের মত হতে চাই না। আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হতে চাই না।

আল্লাহ সূরা আহকাফে বলেন- یَوۡمَ یَرَوۡنَ مَا یُوۡعَدُوۡنَ ۙ لَمۡ یَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا سَاعَۃً مِّنۡ نَّهَارٍ ؕ - তাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল (অর্থাৎ দোজখের আগুন) যখন তারা তা দেখতে পাবে তারা তখন নিশ্চিত হয়ে যাবে তারা পৃথিবীতে এক ঘণ্টার বেশি জীবন পায়নি। (৪৬:৩৫) আক্ষরিক অর্থেই তারা এটা বলবে।

এরপর আল্লাহ বলেন 'বালাগ'। তোমাদের প্রতি এটি একটি সতর্কতা। এখানে বালাগ মানে মনোযোগ দিয়ে শোনো। সময়ের কথা উল্লেখ করার পর আল্লাহ বলেন এটার প্রতি মনোযোগ দাও। মানুষ শপথ করে বলবে তারা শুধু এক ঘণ্টার জীবন পেয়েছিল। 'বালাগ' আমি এখনি তোমাদের বলছি। সতর্ক হও। তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

প্রিয় ভাই এবং বোনেরা, আমাদের পূর্বের ধার্মিক মানুষেরা এটা ভালোভাবে বুঝেছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন- "ঐ দিনের চেয়ে আর কোনোদিনই আমার কাছে বেশি অনুতাপের নয়; যেদিনের সূর্যাস্ত হয়ে গেলো, আমার জীবনকালও কমে গেলো কিন্তু আমার আখিরাতের জন্য উপকারী কিছু করলাম না।" হাসান আল বসরী মন্তব্য করেন- যে প্রজন্মের সাথে আমি বড় হয়েছি (অর্থাৎ সাহাবা এবং তাবেয়িরা) তারা তাদের সময়কে তার চেয়েও বেশি আগ্রহের সাথে কদর করতো যেভাবে তোমরা তোমাদের স্বর্ণ রৌপ্যের কদর করে থাকো।

তাই, সময় অপচয় রোধ করার জন্য সক্রিয়তার সাথে, ক্ষিপ্রতার সাথে উদ্যম গ্রহণ করুন। তখন প্রত্যক্ষ করবেন আপনার হাতে প্রচুর সময় আছে। 'আমার হাতে সময় নেই' বলা বন্ধ করুন। সত্য কথা হলো- আপনি আমাকে যা যা করতে বলেন আমি তার চাইতে অন্য কিছুতে বেশি প্রায়োরিটি দিয়ে থাকি। এটাই আসল কথা। আমি টিভি দেখাকে প্রায়োরিটি দিয়ে থাকি, আমি ইন্টারনেটে ঘুরাঘুরি করাকে বেশি প্রায়োরিটি দিয়ে থাকি, আমি ফোনে সময় নষ্ট করাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি; পারিবারিক কাজ-কর্ম করার চেয়েও, অফিসের কাজ করার চেয়েও, বাড়ির কাজ করার চেয়েও, আল্লাহ আমাকে যা যা করতে বলেন তা করার চেয়েও।

নিজের প্রতি সৎ হোন। ব্যাপারটা এমন নয় যে আপনার হাতে সময় নেই। আসল ব্যাপার হলো আপনার প্রায়োরিটির লিস্টটা ভিন্ন।

—শায়েখ ইয়াসির কাদি

সময় অপচয় কিভাবে রোধ করবেনঃ প্ল্যান প্ল্যান এবং প্ল্যান। আপনার সারাদিন কিভাবে কাটবে তার একটি প্ল্যান আপনার মাথায় থাকতে হবে। সকালে ঘুম থেকে জাগার পর থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সমগ্র দিনের জন্য একটি সুপরিকল্পিত প্ল্যান থাকতে হবে এবং সে প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

এই পরিকল্পনায় নামাজ অগ্রাধিকার পাবে। নামাজ যদি ঠিক থাকে তাহলে সমগ্র দিন ঠিক আছে। আর যদি নামাজ ঠিক না থাকে তাহলে সবকিছুই ব্যর্থ হয়ে গেল।

© NAKInBangla Sponsored

© আরিফ আজাদ
07/07/2023

© আরিফ আজাদ

নোংরা অন্তরকে কিভাবে পরিষ্কার করবেন? -------- * -------------- আমি বলি অন্তর হলো স্ফটিক ফুলদানির মত। স্বচ্ছ ফুলদানি, ঝকঝ...
08/04/2023

নোংরা অন্তরকে কিভাবে পরিষ্কার করবেন?
-------- * --------------

আমি বলি অন্তর হলো স্ফটিক ফুলদানির মত। স্বচ্ছ ফুলদানি, ঝকঝকে সুন্দর। আল্লাহ একে সৃষ্টি করেছেন। "আল্লাহু নু-রুস সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ।" এর কি হয় যখন আমরা দৈনন্দিন জীবন যাপন করতে থাকি? এটি ধোঁয়াটে হয়ে পড়ে। কিছুটা ময়লা পড়ে যায়। দিন দিন আরো মলিন হতে থাকে। আরো অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। কখনো কখনো একেবারে কালো হয়ে যায়।

এ ময়লাটা আসলে কী? রাগ, হিংসা, মিথ্যা, দুনিয়াপ্রীতি, অনুরাগ, প্রতিযোগিতা, আমি সবার সেরা হতে চাই। আমি তাদের ধ্বংস করে ছাড়বো। ব্যবসা। এ সবকিছু। পরনিন্দা।পাপসমূহ। পাপসমূহ এর উপর ঝেঁকে বসে।

এখন, পরিশুদ্ধি কী করে? এটি একটি প্রক্রিয়া। মূলতঃ সহজ করে বলছি, সেই স্বচ্ছ ফুলদানিটি সময়ের পরিক্রমায় ময়লাযুক্ত হয়ে পড়লো। আবরণযুক্ত হয়ে পড়লো। আর যখন একে পরিষ্কার করছেন? একে পালিশ করছেন? তখন এটি আবার আগের মত স্বচ্ছ হয়ে যায়।

ফোকাস হলো- আমি এই দুনিয়াতে এসেছি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার খলিফা হিসেবে। প্রতিনিধি হিসেবে। বর্তমানে আমরা সবাই এটা নিয়ে কথা বলছি। কিভাবে? এখানেও মেডিসিনের কথা আসে। সুবহানাল্লাহ।

আপনার শরীরে যদি কোনো ক্ষত থাকে। আর ক্ষতটিতে ইনফেকশন হয়ে গেছে। যে কোনো ধরণের ক্ষত। সবার আগে কী করেন? ক্ষতটি পরিষ্কার করেন। এরপর ক্ষতটির আশে পাশের সবকিছু মুছে ফেলেন, যা ক্ষতটিকে আবার সংক্রমিত করতে পারে। এরপর আপনি এমন কিছু প্ৰয়োগ করেন যা ক্ষতটিকে ভালো হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

এর নামই হলো তাজকিয়া। পরিশুদ্ধি। আপনি আবার অন্তরের সুস্থতা ফিরিয়ে আনছেন। অন্তর আজ ক্ষতবিক্ষত। হিংসা, গীবত, ঘৃণা, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসহীনত সবকিছু। ঠিক না?

এখন আমি ক্রমান্বয়ে এগুলো দূর করতে থাকবো। দূর করবো। ক্ষতিকর উপাদান দূর করবো। পাপসমূহ দূর করবো। অর্থাৎ, পরিষ্কার করবো।

আমি বোনদের সবসময় বলি। মানে, প্লেট গ্লাস পরিষ্কার করার মতো। এখানে প্লেট হলো আপনার হার্ট। আপনি একে ধৌত করছেন। পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ধুতে থাকবেন। ঠিক না?

ব্যাপারটা এমনই।

প্রসঙ্গত, অন্তরের পরিশুদ্ধি অর্থ্যাৎ তাজকিয়া হলো তিনটি মেসেজের একটি যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা রাসূলুল্লাহ (স) প্রতি প্রেরণ করেছেন, আমাদের জন্য।

প্রথমটা হলো... সূরাতুল বাকারায় এসেছে (ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের দোআ) رَبَّنَا وَ ابۡعَثۡ فِیۡهِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡهُمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡهِمۡ اٰیٰتِکَ وَ یُعَلِّمُهُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ وَ یُزَکِّیۡهِمۡ -

- এটা ছিল ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের দোআ। সাইয়িদিনা ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের দোআ। সূরাতুল বাকারায়।

"হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যে তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবে আর তাদেরকে পবিত্র করবে।"

এমন একজন রাসূল প্রেরণ করুন যিনি তিনটি কাজ করবেনঃ

১. তাদের নিকট আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবেন।
২. তাদেরকে কিতাব ও হিকমত অর্থাৎ সুন্নাহ শিক্ষা দিবেন।
৩. এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন। এটাই হলো অন্তরের পরিশুদ্ধি। তাজকিয়া।

এই এ কথাগুলো কুরআনে চারবার এসেছে। আপনি যদি সূরাতুল বাকারার সাথে তুলনা করেন সুরাতুল জুমুয়ায় দেখবেন এ কথাগুলোর ক্রম পরিবর্তিত হয়ে গেছে। هُوَ الَّذِیۡ بَعَثَ فِی الۡاُمِّیّٖنَ رَسُوۡلًا مِّنۡهُمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡهِمۡ اٰیٰتِهٖ وَ یُزَکِّیۡهِمۡ وَ یُعَلِّمُهُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ ٭ - "তিনিই নিরক্ষরদের মাঝে পাঠিয়েছেন তাঁর রসূলকে তাদেরই মধ্য হতে, যে তাদের কাছে আল্লাহর আয়াত পাঠ করে, তাদেরকে পবিত্র করে, আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয় অথচ ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গুমরাহীতে নিমজ্জিত।" (৬২:২)

এখন দেখুন পবিত্র করার কথা দ্বিতীয়বারে এসেছে। অর্থাৎ আপনি যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, মুসলিম হয়ে যান, তখন তাজকিয়া হয়ে যায় কোনো কোনো স্কলারের মতে ফরদে আইন। প্রতিটি ব্যক্তির উপর ফরজ হয়ে যায়।

এখন, অল্প কথায় বলছি কিভাবে আমি এটি অর্জন করবো? তার আগে একটি কথা বলে রাখি এটি একটি প্রসেস। একটি প্রক্রিয়া। একদিনে এটি সম্ভব হবে না।

আচ্ছা। এক নাম্বারঃ আপনার সমস্যা খুঁজে বের করুন। আমার সমস্যা কী? আমার সমস্যা রাগ। আমি যখন রেগে যাই, আমি আল্লাহর অবাধ্য হয়ে পড়ি। আমি খারাপ কথা বলে ফেলি। মানুষকে কষ্ট দেই।

অন্য আরেকজন বলতে পারে, আচ্ছা আমার সমস্যা কী? হিংসা। তার কেন এটা থাকবে আমার তো নেই। সে তো এটা পাওয়ার যোগ্য না।

কেউ কেউ বলবে, আমার সমস্যা হলো আমি যখন মুখ খুলি মানুষকে কষ্ট দিয়ে ফেলি। গীবত, মিথ্যা, মানুষকে অপমান করা, টিটকারি করা এ ধরেনর সবকিছু।

তাহলে এক নাম্বার বিষয় হলো আপনার সমস্যাগুলো শনাক্ত করুন। এরপর একটি একটি করে ধৌত করতে থাকুন। মুছে ফেলুন নিজের জীবন থেকে।

সহজ একটি সমাধান হলো ভাল মানুষদের সঙ্গ।

আমি জানি আমি যদি ওদের সাথে যাই আমি মানুষের গীবত করবো। আমি যদি ঐ মহিলার বাড়িতে যাই, আমি অন্তরে হিংসা অনুভব করব। তার আছে চার বেড রুমের বাসা। আর আমারটা তিন রুমের। তাই, আমাকে এসব সামাজিকতা বাদ দিতে হবে।

দ্বিতীয় সমাধানঃ মুজাহাদা বা প্রচেষ্টা, সাধনা। প্রসেসটা খুবই সহজ। চারটি জিনিস আপনাকে কমাতে হবে আর একটি জিনিস বাড়াতে হবে। ইমাম ইবনুল কাইয়েম খুবই সন্দর করে এটি তুলে ধরেছেন।

যে চারটি জিনিস কমাতে হবে। ১। কথা বলা কমাতে হবে। ২। ঘুম কমাতে হবে। ৩। আহার কমাতে হবে। এবং ৪। মানুষের সাথে আড্ডা, গল্পগুজব কমাতে হবে।

আর যে একটি জিনিসটি বাড়াতে হবে তাহলো আল্লাহর জিকির। এটি একেবারে তাজকিয়ার ভিত্তিপ্রস্তর। একটি কথা আছে যা রাসূলুল্লাহ (স) এর প্রতি আরোপ করা হয়। কথাটি হলো- وإن سقالة القلوب ذكر الله - নিশ্চয়ই আল্লাহর জিকির অন্তরের পরিষ্কারক।

মনে আছে? আমি যে শুরুতে স্বচ্ছ ফুলদানির কথা বলেছিলাম? সাবান পানি দিয়ে যেভাবে ফুলদানি পরিষ্কার করেন ঠিক তদ্রূপ আল্লাহর স্মরণ দ্বারা অন্তর পরিষ্কার করবেন।

এখন জিকির বলতে কী বুঝায়? জিকির মানে আল্লাহর স্মরণ। যে কোনো ধরণের স্মরণ। নামাজ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা, মুখস্ত করা। আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া। সকাল সন্ধ্যার জিকির আজকারগুলো করা। সুবহানাল্লাহ বলা। প্রকৃতি দেখা এবং সেজন্য আল্লাহর তারিফ করা। এভাবে বলা- ইয়া আল্লাহ! কতইনা সুন্দর করে আপনি এসব সৃষ্টি করেছেন! এর নাম জিকির। দোয়া করাও জিকির।

(শায়েখ ইয়াসির কাদি বলেছেন, সেরা জিকির চারটি। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার।)

আর এটা একদিন দুইদিন করলে হবে না। এটা একটা প্রক্রিয়া। নিয়মিত করবেন। তখন ধীরে ধীরে নিজের মাঝে পরিবর্তন দেখতে পাবেন। এখন অনেক প্রশান্তি অনুভব করেন। আল্লাহ যা দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর প্রতি অনেক বেশি কৃতজ্ঞ থাকেন। এখন আর আগের মত অভিযোগ করেন না। বস্তুগত জিনিসের প্রতি পূর্বের মত অনুরাগ অনুভব করেন না। জিনিসটা যদি থাকে আলহামদুলিল্লাহ্‌। যদি না থাকে তবু আলহামদুলিল্লাহ্‌।

এরকম অবস্থায় যখন পৌঁছবেন তখন আপনি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে শুরু করবেন। কুরআন পড়ার সময় চোখ দিয়ে এমনিতেই অশ্রু গড়িয়ে পড়বে। নামাজ পড়তে ভালো লাগবে। তাহাজ্জুদ পড়তে কষ্ট লাগবে না।

আমি সমগ্র দুনিয়া ভ্রমণ করি এবং আমি বুঝতে পারি সমগ্র দুনিয়াজুড়ে মানুষ আজ এগুলোর অভাব ফিল করছে। আমি তখন উপলব্ধি করি, আমাকে এগুলো বেশি বেশি শেখাতে হবে।

- ডাক্তার হাইফা ইউনিস
- ইরাকি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ডাক্তার।
- তিনি সৌদি আরবে গিয়ে কুরআন মুখস্ত করেন এবং ইসলামিক স্টাডিজে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন।
- অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন আলেমা। মুসলিম মহিলা স্কলার।

07/04/2023

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যখন অপরাধীদের আগুনে নিক্ষেপ করবেন তিনি বলবেন- "ইখসাউ ফিইহা ওয়ালা তুকাল্লিমুন- اخۡسَـُٔوۡا فِیۡهَا وَ لَا تُکَلِّمُوۡنِ - ‘তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক, আমার সঙ্গে কোন কথা বল না।’ (২৩:১০৮)

তাদের আল্লাহর সাথে কথা বলার আর সুযোগ থাকবে না। কুরআনে দেখবেন অধিকাংশ সময় আগুনের অধিবাসীরা আল্লাহর সাথে কথা বলে না। তারা কথা বলে জাহান্নামের রক্ষকদের সাথে।

তারা জাহান্নামের ফেরেশতা মালেককে বলবে, ও মালেক! আপনার রবকে বলুন আমাদের শাস্তি শুধু এক দিনের জন্য কমিয়ে দিতে। এমনকি শাস্তি কমিয়ে দেওয়ার কথাও তারা সরাসরি আল্লাহকে বলতে পারবে না। কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এমনকি তাঁকে ডাকার ক্ষমতাও তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিবেন।

এই দুনিয়াতে সবার চান্স্ আছে তাঁর নিকট সরাসরি কিছু চাওয়ার। যদি আপনি এখন এই দুনিয়াতে এ সুযোগ মিস করেন, তাঁর কাছে চাওয়ার এই সুযোগ, তবে পরকালে তাঁর নিকট চাওয়ার সুযোগ থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন।

(তাই তাঁর নিকট বেশি বেশি মাফ চান, নিজের ভাষাতেই কাকুতি-মিনতি করে মাফ চান। জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত চান এবং জান্নাত চান। "আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকাল জান্নাতা ওয়া আউজুবিকা মিনান নার।" অর্থাৎ ও আল্লাহ আমি আপনার কাছে জান্নাত চাই আর জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই।)

কারণ, এই জগতে তারা আল্লাহর কাছে সরাসরি চায় নি। পরের জগতে তাদেরকে আর সুযোগ দেওয়া হবে না। তাদের বলে দেওয়া হবে 'আমার সঙ্গে কোন কথা বল না।’ দোজখের অধিবাসীরা তখন শুধু আগুনের ফেরেশতা মালেককে বলতে পারবে। কিন্তু, উনি তাদের পক্ষ হয়ে আল্লাহর কাছে এমনিতেই কিছু চাইবেন না।

তাই, আমি বলতে চাচ্ছি, কুরআন আসলেই এসেছে একটি করুণা হিসেবে। বিষয়টা এতোই ভয়াবহ যে কারো পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব নয়।

সেদিন আসার পূর্বে এখন আপনার হাতে সময় আছে। যারা ইতোমধ্যে মারা গেছে চিরকালের জন্য তাদের সে সুযোগ চলে গেছে। কিন্তু, আমাদের হাতে এখনো সময় আছে।

তাই, কুরআন মানবতার জন্যে একটি মার্সি, একটি করুণা। এজন্য আল্লাহ বলেছেন- "আর রাহমান, আল্লামাল কুরআন।" পরম করুনাময়, যিনি কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। কুরআন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে একটি দয়া হিসেবে আমাদের কাছে এসেছে। এটি মানুষকে বার মনে করিয়ে দেয় যে, মারা যাওয়ার পূর্বে তোমার হাতে এখনো সুযোগ আছে। মৃত্যুর পরে আর কোনো সুযোগ নেই।

- ড. আকরাম নদভী
© NAKInBangla

সূরাতুল বুরুজে আমরা সবাই আসহাবুল উখদূদের বিখ্যাত ঘটনা পড়েছি। এটি প্রাক ইসলামি যুগের একটি ঘটনা। যেখানে একদল ঈমানদারদের নি...
05/04/2023

সূরাতুল বুরুজে আমরা সবাই আসহাবুল উখদূদের বিখ্যাত ঘটনা পড়েছি। এটি প্রাক ইসলামি যুগের একটি ঘটনা। যেখানে একদল ঈমানদারদের নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। আগুনের বিশাল চুল্লি তৈরী করে তাদের ওখানে নিক্ষেপ করা হতো। নৃশংস নির্যাতন।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এই ঘটনাটিকে কুরআনে উল্লেখ করে একে জীবন্ত করে রাখেন। এরপর আল্লাহ বলেন- اِنَّ الَّذِیۡنَ فَتَنُوا الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ ثُمَّ لَمۡ یَتُوۡبُوۡا فَلَهُمۡ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَ لَهُمۡ عَذَابُ الۡحَرِیۡقِ - "যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের প্রতি যুলম পীড়ন চালায় অতঃপর তাওবা করে না, তাদের জন্য আছে জাহান্নামের শাস্তি, আর আছে আগুনে দগ্ধ হওয়ার যন্ত্রণা।" (৮৫:১০)

হাসান আল বসরী এই আয়াতের উপর মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন- কি অসাধারণ একটি আয়াত! এই মানুষগুলো আল্লাহর ওলীদের উপর নির্যাতন চালিয়েছিল। ধার্মিক মানুষদের হত্যা করেছিল। তবু আল্লাহ তাদের জন্য বাঁচার একটি পথ খোলা রেখেছিলেন এবং বলেন- যদি তারা তাওবা করে তবে তাদের মাফ করে দেওয়া হবে।

ওই মানুষগুলো আমাদের কল্পনায় সবচেয়ে জঘন্যতম পাপ করেছিল। ঈমানদারদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল। শুধু আল্লাহর উপর ঈমান আনার কারণে হত্যাকান্ড চালাতো। আল্লাহ তাদের উদ্দ্যেশ্যে বলেন- সুম্মা লাম ইয়াতুবু। যদি তোমরা তাওবা না করো, তবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

হাসান আল বসরী বলেন- এমনকি আল্লাহ এমন ধরণের অপরাধীদের জন্যেও একটি পথ খোলা রেখেছেন। তাহলে আমাদের ব্যাপারে কি বলবেন!

একটি হাদিসের কথা আমরা জানি। যেখানে একটি উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে- এক লোক মরুভূমিতে উট হারিয়ে ফেলার কারণে তার জীবনহানির আশঙ্কা হয়। এরপর সে তার উট ফিরে পেলে যেরকম খুশি হয় আল্লাহ কোনো মানুষের তওবায় তার চেয়েও অধিক খুশি হোন।

ইবনে জাওযী মন্তব্য করেন- কুরআন সুন্নার কোথাও অন্য কোনো আমলে আল্লাহর এ ধরণের খুশি হওয়ার কথা জানা যায় না। তওবাকারীর তওবায় আল্লাহ যতটা খুশি হোন।

আল্লাহকে খুশি করার এক নম্বর উপায় হলো- যখন আপনি আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করেন। তওবার অর্থ এটাই। তাওবা মানে ফিরে আসা।

- ইয়াসির কাদি
© NAKInBangla

আব্বু প্র‌তি‌দিন সুরা ওয়া‌কিয়াহ্ তিলওয়াত কর‌তেন। এই সুরা যি‌নি দি‌নে একবার তিলওয়াত কর‌বেন, তার রি‌জি‌কের দায়িত্ব আল্লাহ্...
05/04/2023

আব্বু প্র‌তি‌দিন সুরা ওয়া‌কিয়াহ্ তিলওয়াত কর‌তেন। এই সুরা যি‌নি দি‌নে একবার তিলওয়াত কর‌বেন, তার রি‌জি‌কের দায়িত্ব আল্লাহ্ নি‌য়ে নে‌বেন। আব্বু সরকা‌রি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ছি‌লেন। স্বাভা‌বিক হি‌সাবে তার কখ‌নো অভূক্ত থাকার কথা নয়। কিন্তু তি‌নি পদ, পদবী নয়, ভরসা রাখ‌তেন আল্লাহর ওপর। স‌ত্যিই তি‌নি একবার ক‌ঠিন প‌রি‌স্থি‌তি‌তে পড়‌লেন!

২০০০ সা‌লের দি‌কে শিক্ষা‌বো‌র্ডের কা‌জে ঢাকায় আস‌ছি‌লেন। সদরঘা‌টে নে‌মে তার প‌কেটমার হ‌য়ে যায়। খুচ‌রো যে ক`‌টি টাকা ছিল তাই দি‌য়ে পল্ট‌নে, হো‌টেল চিটাগাং এ এ‌সে উঠ‌লেন (অ‌ধিকাংশ আত্মী‌য়ের বাসা ঢাকায় হ‌লেও আব্ব‌ু পর্দা ও প্রাই‌ভে‌সির জন‌্য কখ‌নো তা‌দের বাসায় উ‌ঠ‌তেন না, এ‌মনি‌তে গি‌য়ে দেখা ক‌রে আত্মীয়তা রক্ষা কর‌তেন)। তো হো‌টে‌লে ওঠার পর আব্বু সব প‌কেট, ব্রিফ‌কেস খুঁজেও আর কো‌নো টাকা পে‌লেন না। এ‌কেবা‌রে শূন‌্য হাত। দুপু‌রে তি‌নি আ‌রেকবার ভা‌লো ক‌রে খুঁজে দেখ‌লেন, পাঁচটা টাকা পাওয়া গে‌লেও একটি পাউ‌রু‌টি কি‌নে খা‌বেন! কিন্তু পে‌লেন না।

পে‌টে প্রচণ্ড ক্ষুধা নি‌য়ে আব্বু আল্লাহর সাহায্যের জন‌্য অ‌পেক্ষা কর‌ছি‌লেন। ঘণ্টাখা‌নেক পর তার ক‌ক্ষের দরজায় কেউ একজন নক কর‌লেন। খু‌লে দেখ‌লেন, তার একজন ছাত্র সাম‌নে দাঁ‌ড়ি‌য়ে। তি‌নি আব্বু‌কে বল‌লেন, `এ‌দিক দি‌য়েই যা‌চ্ছিলাম স‌্যার, ম‌নে পড়‌লো মাসখা‌নেক আ‌গে আপ‌নি টে‌লি‌ফো‌নে ব‌লে‌ছি‌লেন এই মা‌সে ঢাকায় আস‌তে পা‌রেন। তাই ম‌নে হ‌লো যে আপ‌নি ঢাকায় এ‌লে তো এই হো‌টে‌লে ও‌ঠেন, দে‌খি তো জিজ্ঞাসা ক‌রে যে আপ‌নি এখা‌নে আ‌ছেন কি না!`

সেই ২০০০ সাল, তখন এরকম হা‌তে হা‌তে ফোন কিংবা স্মার্ট উপা‌য়ে আ‌র্থিক লেন‌দে‌নের কো‌নো সু‌যোগ ছিল না। দূ‌রের শহ‌রে একা আব্বু শূন‌্য হা‌তে এবং বিশ্বাস ভরা হৃদ‌য়ে অ‌পেক্ষা কর‌ছি‌লেন। তি‌নি তো সূরা ওয়া‌কিয়াহ তিলওয়াত ক‌রেই বের হ‌য়ে‌ছেন, আল্লাহ্ তা‌কে নিশ্চয়ই অভূক্ত রাখ‌বেন না! আল্লাহ্ তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করে‌ছেন। অভূক্ত রা‌খেন‌নি তা‌কে। আব্বু ক‌বে কোনদিন কো‌নো এক ছাত্র‌কে ব‌লে‌ছি‌লেন তার ঢাকায় আসার কথা। সেই ছাত্র গু‌নে গু‌নে উপ‌স্থিত হ‌লেন আব্বুর সব‌চে‌য়ে প্র‌য়োজনীয় সম‌য়ে। আব্বু‌কে তার ছাত্ররা প্রচণ্ড শ্রদ্ধা কর‌তেন, ভা‌লোবাস‌তেন। তি‌নি আব্বুর জন‌্য কি‌ছু করার সু‌যোগ পে‌য়ে বারবার আল্লাহ‌কে ধন‌্যবাদ দি‌চ্ছি‌লেন। আল্লাহ‌কে ধন‌্যবাদ দি‌চ্ছি‌লেন আব্বুও।তিঁনি তাঁর নিদ‌র্শন কতভা‌বে পৌঁ‌ছে দেন, কেবল বিশ্বাসীরাই তা উপ‌লব্ধি কর‌তে পা‌রেন!

~ সংগৃহীত

ইফতার সেরে মাগরিব সালাতের জন্য বের হতেই চোখ পড়লো মাথার ওপরে থাকা অর্ধ-গোলাকার চাঁদটার দিকে৷ কী এক অজানা ব্যথায় ভেতরটা যে...
04/04/2023

ইফতার সেরে মাগরিব সালাতের জন্য বের হতেই চোখ পড়লো মাথার ওপরে থাকা অর্ধ-গোলাকার চাঁদটার দিকে৷ কী এক অজানা ব্যথায় ভেতরটা যেন হুঁহুঁ করে উঠলো! কতো দ্রুত নিজের পূর্ণতার দিকে ধেঁয়ে যাচ্ছে এই চাঁদ আর কতো দ্রুত আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে রামাদান!

গুনে গুনে আজ দশটা রামাদান চলে গেলো, অথচ আমাদের অনেকের রামাদান এখনো শুরুই হয়নি৷ আমরা অনেকেই এখনো সালাতগুলোতে নিয়মিত হতে পারিনি। এখনো ভালোমতো শুরু করা যায়নি তারাবীহ। কিয়ামুল লাইলের সময়টুকুতে জাগতে পারার সৌভাগ্য এখনো হয়ে উঠেনি আমাদের অনেকেরই৷

আমাদের অনেকেই এখনো বুঁদ আছি সোশ্যাল মিডিয়ায়, সিনেমা আর নাটক দেখায়। খারাপ অভ্যাসগুলো ছেড়ে আসার যে তাগিদ নিয়ে রামাদান আসে— সেই তাগিদে সাড়া দেওয়ার ফুরসত এখনো পাইনি আমরা অনেকে। চোখ কচলাতে কচলাতে ঘুম থেকে উঠে দুমুঠো মুখে পুরে আবার বিছানা ধরার যে গতানুগতিক রামাদান আমাদের— সেই চক্রে পড়ে আছি এখনো৷ জীবনের কোথাও কোন বদল নেই, পরিবর্তন-পরিমার্জন নেই, নেই কোন ভাবোদয়৷

তবে— ভালোভাবে রামাদান শুরু করা হয়নি বলে কি আমাদের উচিত হাল ছেঁড়ে দেওয়া? একদম তা নয়৷ ভালোভাবে রামাদান শুরু করতে না পারাটা একটা ব্যর্থতা, তবে বড় ব্যর্থতা নয়৷ বড় ব্যর্থতা হবে— যদি আমরা পুরো রামাদান মাসটাকে অবহেলায়, অবমূল্যায়নে চলে যেতে দিই।

খালিদ ইবন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর ঘটনা তো জানিই আমরা৷ ইসলামের ইতিহাসের সেরা একজন বীর। যুদ্ধের কৌশলে যিনি ছিলেন অনন্য, অপ্রতিরোধ্য! ইসলামের জন্য তিনি লড়েছেন অনেক অনেক সম্মুখ সমরে— অপরাজেয় হিশেবে। রণকৌশলে আর যুদ্ধজয়ে নিপুণতার জন্যে তিনি ‘সাইফুল্লাহ’ তথা ‘আল্লাহর তরবারি’ উপাধি পেয়েছিলেন।

কিন্তু, এই মহান সাহাবি জীবনের শুরুর লগ্নে ছিলেন ইসলামের চরমতম শত্রু৷ মুসলমানদের জীবনকে যে ক’জন শত্রু অতিষ্ট করে তুলেছিলো, যে ক’জনকে ‘আমলে’ নিয়ে মুসলমানদের যুদ্ধজয়ের কৌশল সাজাতে হতো— খালিদ ইবন ওয়ালিদ তাদের একেবারে প্রথমসারির একজন। মুসলমানদের অনেক জান আর মালের ক্ষয়ক্ষতির নেপথ্য নায়ক তিনি৷

কিন্তু, তাঁর জীবনের শেষটা দেখুন! নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে ‘আল্লাহর তরবারি’ উপাধি লাভ করে তিনি দুনিয়া ছেঁড়েছেন।

তাঁর জীবনের শুরুটা সুখকর ছিলো না, কিন্তু শেষটা কতো অনিন্দ্য, অনবদ্য একবার ভাবুন!

খালিদ ইবন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর জীবন থেকে আমরা দীক্ষা নিই চলুন। কতো ম্লান আর জৌলুশহীনতায় আমাদের রামাদান শুরু হয়েছে তা আর এভাবে শেষ না হোক - সেটা।

© আরিফ আজাদ

31/03/2023

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

আল্লাহ্‌ তাআলা প্রতিদিন ইফতারের সময় বেশ সংখ্যক লোককে (জাহান্নাম থেকে) মুক্তি দেন। আর প্রতি রাতেই তা সংঘটিত হয়ে থাকে।

রেফারেন্সঃ
সুনানে ইবনে মাজাহ ১৬৪৩
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
© Muslims Day (Android App)

30/03/2023

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ

এক ব্যক্তি তার ভাইকে দেখার জন্য অন্য এক গ্রামে গেলো। আল্লাহ্‌ তা’য়ালা তার জন্য রাস্তায় একজন ফেরেশতা মোতায়েন করলেন। সে ব্যক্তি যখন ফেরেশতার কাছে পৌঁছলো, তখন ফেরেশতা জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছ? সে বললো, আমি এই গ্রামে আমার এক ভাইকে দেখার জন্য যাচ্ছি। ফেরেশতা বললেন, তার উপর তোমার কি কোন অনুগ্রহ আছে, যা তুমি আরো বৃদ্ধি করতে চাও? সে বললো, না। আমি তো শুধু মহীয়ান গরীয়ান আল্লাহ্‌র জন্য তাকে ভালবাসি। ফেরেশতা বললেন, আমি আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে তোমার কাছে এ পয়গাম নিয়ে এসেছি যে, আল্লাহ্ তোমাকেও ভালবাসেন, যেমন তুমি তোমার ভাইকে তাঁরই জন্য ভালবেসেছ।

রেফারেন্সঃ
সহিহ মুসলিম ৬৩১৬
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বালাদেশ

© Muslims Day (Android App)

Address

Barishal

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ইসলামের আলো posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share