https://www.facebook.com/100797314673313/

NL Trisha

Home
Bangladesh
Barishal
NL Trisha

🍂﷽Assalamualaikum﷽🍂

24/01/2025

গল্পঃকালো মেয়েটি।

19/12/2024

সাত মাসের প্রে'গ'ন্যা'ন্ট অবস্থায় জ স্বামীর সাথে শা'রী'রি'ক সম্পর্কে রাজি হইনি বলে আমার স্বামী (ইমন) আমাকে ধা'ক্কা মে 'রে বললো "তোমার তো সব চলে আরোহী। আমি কিছু বললেই যত বাহানা।স্বামীর চা'হি'দা মে'টা'তে না পারলে বিয়ে করার কি প্রয়োজন ছিল??" " এভাবে বলছো কেন ইমন?? সব আমাকে চালাতে (বাকিটুকু কমেন্টে) 👉

19/12/2024

#প্রণয়ের_তুষ্টি🍁
#পর্ব_০৩
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে প্রণয় দেখতে পায় তুষ্টি এখনো সেখানে বসে আছে।
প্রণয় তুষ্টির কাছে গিয়ে ওর হাত দুটো ধরে দাঁড় করায়।
" কিছুইত শুরু করলাম না। তাহলে তুই এভাবে বসে আছিস কেন? "
তুষ্টি কোন কথা বলেনা।
" টেক রেস্ট বেবি। সামনে অনেক রাস্তা চলা বাকি আছে। "
তুষ্টি নিজেকে প্রণয়ের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সোফায় শুয়ে পরে।
তুষ্টি চোখ বন্ধ করে নিতে তার চোখে ঘুম নেমে আসে।
প্রণয় কিছু সময় তুষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকে।
এর পরে সে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
ভালোবাসা ভীষণ কঠিন। এক বার ভালোবাসলে তাকে ভোলা যায়না। কিন্তু যদি একবার তাকে ঘৃণা করা হয় সেটা আর সহজে ভালোবাসায় পরিণত হয়না।
,
,
,
,
চৌধুরী বাড়িতে সব কিছু আছে। যদি জিজ্ঞেস করা হয় কি আছে তবে বলতে হবে কি নেই তাই বলো।
প্রণয়ের জন্য যেমন আছে একটা প্রাইভেট লাইব্রেরি তেমনই একটা প্রাইভেট বারও আছে।
অর্থাৎ প্রণয়ের জন্য সেখানে সমস্ত রকম নেশা করার দ্রব্য রাখা আছে।
প্রণয় সেখানে এসে অনেক বেশি ড্রিংকস করে ফেলে।
কষ্ট ভুলতে মানুষ নাকি নানান ধরণের নেশার দ্রব্য সেবন করে।
প্রণয়ের ক্ষেত্রেও সেটা বিষয়।
,
,
প্রণয় গ্লাস টেবিলের উপর মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে,
বেশ অনেকটা সময় হয়ে গেছে।
মেহেনাজ চৌধুরী ছেলেকে খুঁজতে খুঁজতে এই রুমে চলে আসে,
প্রণয়কে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে তিনি দৌড়ে আসেন,
" প্রণয় বাবা কি হয়েছে তোর?"
" কিছু না মা। "
" এভাবে শুয়ে আছিস কেন?"
" কিছু হয়নি মা। শুধু শুধু চিন্তা করছো। "
" নতুন বউ রেখে এখানে এসে বসে আছিস। আমার পেটেইত তুই হয়েছিস তাহলে আমি কিভাবে বিশ্বাস করে নেই তোর কিছু হয়নি। "
" মা কেন এত চিন্তা করো। "
" রুমে যা। "
" ইচ্ছে হচ্ছে না। "
" প্রণয়। "
" যাচ্ছি মা। "
প্রণয় উঠে নিজের রুমে চলে যায়।
,
,
,
তুষ্টি নিরিবিলি ঘুমিয়ে আছে সোফায়।
প্রণয় তার দিকে তাকিয়ে আছে,
কি নিষ্পাপ ওই মুখ খানা।
প্রণয়ের চোখ বেয়ে ঝর্ণার মত পানি গড়িয়ে পরছে।
এ পানি বাঁধ ভেঙেছে।
চোখের সামনে নিজের জীবনের সব থেকে করুন দৃশ্য ভেসে আসে প্রণয়ের।
বৃষ্টি ভেজা সেই সন্ধ্যা জীবনের সব থেকে কষ্টের সন্ধ্যা ছিল প্রণয়ের কাছে।
প্রণয় উঠে গিয়ে তুষ্টির হাত ধরে তাকে শোয়া থেকে উঠে দাঁড় করায়।
তুষ্টি চোখ খুলে প্রণয়ের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,
"কেন করেছিলি? আমার জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার কোন অধিকার তোর নেই তুষ্টি। "
" কিছু করিনি আমি। "
" করেছিস। আমার জীবনের সব কষ্টের মোড় তুই ঘুরিয়েছিস। আমিত ভালোই ছিলাম কেন এসেছিলি আমার জীবনে। "
প্রণয়ের চিৎকারে তুষ্টি গুটিশুটি হয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে বার বার।
প্রণয় তুষ্টির হাত ধরে ওকে বিছনায় ছুড়ে ফেলে।
তুষ্টি জানে এই কষ্ট তার নিত্য দিনের সঙ্গী হতে যাচ্ছে।
প্রণয়ের করা সমস্ত অত্যাচার তাকে এখন মাথা পেতেই মেনে নিতো হবে।
প্রণয় তুষ্টির অনেক কাছে চলে আসে,
" ২ টা বছরে তোর হাতটা পর্যন্ত ধরতে চাইনি আমি। জানিস কেন?"
তুষ্টি নিশ্চুপ হয়ে আছে।
" কথা বলছিস না কেন? এখন তোর সব কথা কোথায় গেল?"
" যায়নি কোথাও। তুমিত চাইছো নিজের স্বামীর অধিকার খাটাতে তাইনা? তাই করো। যা ইচ্ছে তাই করো। "
প্রণয়ের এবার প্রচন্ড রাগ উঠে যায় মাথায়।
" একেত চুরি চারি তার উপর গলা বাজি। "
" চুরি আমি করিনি? কোন অন্যায়ও আমি করিনি। তোমার শাস্তি তুমি দেও। তবে জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আমি বলব আমি কোন ভুল করিনি। "
প্রণয়ের রাগটা এবার বাধ ভেঙে যায়।
তুষ্টির ঠোঁট দুটো ঝাপটে ধরে প্রণয়।
কামড়ে দিতে শুরু করে।
যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রণয়ের মুখে রক্তের স্বাদ অনুভব করে ততক্ষণ পর্যন্ত তুষ্টির ঠোঁট ছাড়েনি প্রণয়।
প্রণয় নিজের মুখটা উঠিয়ে দেখে তুষ্টির ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে।
প্রণয় এটা দেখে আর কিছু করতে পারল না।
তুষ্টির থেকে দুরে চলে আসে,
তুষ্টি সেখানেই শুয়ে কান্না করতে থাকে।
বেশ কিছুক্ষণ পর তুষ্টি নিজের শোয়া থেকে উঠে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ায় ।
প্রণয়ের ঘৃণা গুলো তার শরীরের উপর ছাপা হয়ে থাকছে।
কতইনা সুন্দর তাইনা।
ভালোবাসা বুঝি এমন হয়।
তুষ্টির নিয়তির উপর তার ভীষণ রাগ হচ্ছে।
এই নিয়তি এমন কেন। শখের মানুষ টাকে খুন সহজেই দিয়ে দিল।। এর পর সহজেই নিয়ে নিল। এর পর এভাবে ফেরত দিল। যা না যাচ্ছে সহ্য করা না যাচ্ছে ফেলে দেওয়া।
,
,
,
,
,
,
বিকালের দিকে প্রেমা মেকাপ আর্টিস্ট নিয়ে তুষ্টি আর প্রণয়ের রুমে আসে,
" ভাবি কেমন আছো?"
" ভালো এসো। "
" মা পাঠালো সেজে নেও রাতেত অনুষ্ঠান আছে। "
" তুমি সাজবে না?"
" আমার জন্য আলাদা মানুষ আছে তুমি সেজে নেও। কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে বইলো। "
প্রেমা রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
তুষ্টিকে মেকাপ আর্টিস্ট গুলো সাজানো শুরু করে।
,
,
,
চৌধুরী বাড়িটা আজ নতুন বউ এর মত করে সেজেছে।
কি সুন্দর অপূর্ব দেখাচ্ছে।
সব আলোর ভেতর অন্ধকার শুধুমাত্র প্রণশ আর তুষ্টির মনটা।
,
,
প্রণয় সারা দিনে তুষ্টির সামনে আসেনি ৃ।তবে অনুষ্ঠানে সে সুন্দর করেই উপস্থিত হয়েছে।
সব মেহমান চলে এসেছে বিয়ে বাড়িতে।
সবার মধ্যে প্রণয় কথা বলছে সবার সাথে। সব গেস্ট হ্যান্ডেল করছে। এর মাঝেই প্রেমা তুষ্টিকে নিয়ে উপস্থিত হয়।
একটা গোলাপি রঙা শাড়ি পরানো হয়েছে তাকে।
কি সুন্দর দেখাচ্ছে মেয়েটাকে।
প্রণয় ঠিক এভাবেই তুষ্টিকে একদিন দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু অফসোস সেই দিন হলে হয়ত এই মুহুর্তে প্রণয়ের ভালোবাসা সব উজার হয়ে যেত তুষ্টির জন্য।
কিন্তু এখন তুষ্টিকে দেখে সেই ভালোলাগা কাজ করলেও ভালোবাসা গুলো কেমন বদলে গেছে।
চাইলেও হৃদয় ভেদ করে বাহিরে প্রকাশ হতে পারছেনা৷
,
,
তুষ্টিকে স্টেজে বসানো হয়। পাশে প্রণয়ও এসে বসে।
গেস্ট এসে দু'জনকে উপহার দিচ্ছে। চারপাশ দিয়ে ছবি তোলা হচ্ছে।
তবে তুষ্টির চোখ দুটো শুধুমাত্র তার মা বাবা বোনদের খুঁজছে।
কিছুক্ষণ পর তুষ্টির পুরো পরিবার উপস্থিত হয় সেখানে।
তুষ্টি দৌড়ে মা বোনদের কাছে চলে যায়।
মাকে জড়িয়ে ধরে তুষ্টি,
" মা কেমন আছো?"
" ভালো আছি মা তুই কেমন আছিস?"
" ভালো। "
" কাদছিস কেন বোকা মেয়ে?"
" মা আমি বাড়িতে গিয়ে থাকতে পারিনা?"
" পাগল মেয়ে বিয়ের পরে কেউ শ্বশুড় বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি থাকে?"
" থাকেনা?"
"নারে পাগল থাকেনা। "
" আমি কিছু দিন যাইনা মা তোমার সাথে। আবার চলে আসব। "
জুই বেগম মেয়ের চোখের পানি মুছিয়ে দিলেন,
" মা রে আমি জানি একটু কষ্ট হবে কিন্তু মানিয়ে নিতে হবে। "
" মা আমি...... "
তুষ্টির পুরো কথা শেষ হবার আগেই পেছন থেকে প্রণয় এসে বলে,
" কি কথা হচ্ছে এখানে?"
তুষ্টি প্রণয়ের কথা শুনে চুপ হয়ে যায়।
প্রণয় তুষ্টির কোমড়ে হাত দিয়ে নিজের কাছে টেনে বলে,
" জানি পারিবারকে ভালোবাসো। তাই বলে নতুন বউ হয়ে চোখের পানি ফেলবে?"
তুষ্টি ভয়ে চুপচাপ হয়ে আছে।
প্রণয় তুষ্টির শাড়ির ভাজে হাত দিয়ে এত জোরে চেপে ধরে যে সেখানে প্রণয়ের আঙ্গুল ছাপ হয়ে যায়।
" আহ। "
" কি হয়েছে বউ সমস্যা কোথাও। "
তুষ্টি শুধু প্রণয়ের দিকে তাকিয়ে দেখছে,
লোকটা কেমন পাগলদের মত রূপ দেখাচ্ছে।

চলবে।

17/12/2024

#আয়ুর_প্রহর
#পর্ব_০৭
#তুশিতা_নুর_তৃষ্ণা
____
ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো,
“দরজা খুলো”!

আয়ুশের গলার আওয়াজ চিনতে পেরে দরজা খুললো প্রহর।দুদিনেই এই রাগচটা গলার আওয়াজ তার বেশ চেনা হয়ে গিয়েছে।দরজা খুলতেই আয়ুশ ভিতরে প্রবেশ করলো।প্রহরকে বললো,
–“এক গ্লাস পানি দাও তো প্রহর!”

আয়ুশের কথা শুনে প্রহর তড়িৎ গতিতে গ্লাসভর্তি পানি নিয়ে আয়ুশের সামনে ধরলো।আয়ুশ একটা চেয়ারে বসে তিন নিঃশ্বাসে পুরোটা পানি শেষ করলো।

আয়ুশের পানি খাওয়া শেষ হলে প্রহরের চোখ পড়লো আয়ুশের হাতে থাকা ব্যাগের দিকে।আয়ুশ সেটা লক্ষ্য করতেই বললো,
–“কি আছে দেখবে?”

আয়ুশের প্রশ্ন শুনে প্রহর এতোক্ষণে বুঝতে পারলো আয়ুশ তাকে তুমি করে বলছে।আয়ুশ প্রহরের আশ্চর্যান্বিত চক্ষুর দিকে তাকিয়ে তা বুঝতে পেরে প্রহরকে বললো,

–“আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই প্রহর!তুমি আমার ছোট হবে,তাই তোমাকে তুমি বলেই ডাকছি!”

আয়ুশের কথা বুঝতে পেরে প্রহর মাথা নাড়ালো। কিন্তু তাও ওর মনে খুশি যেন উথালপাথাল করছে।আয়ুশ ওকে তুমি করে ডেকেছে ভাবতেই ভালো লাগছে। আচ্ছা! শুধুমাত্র কারো মুখ থেকে তুমি ডাক শুনলেই কি এত্তো ভালো লাগে!নাকি প্রহরেরই এমন হচ্ছে শুধু!কি জানি!প্রহর শুধু জানে এই মানুষটার মুখ থেকে তুমি ডাক শুনে তার ভাল্লাগছে!

কিন্তু তার ভাবনাটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না।আয়ুশ তাকে আবার ডাকলো,বললো,
–“ব্যাগে কি আছে দেখবে নাকি প্রহর?”

প্রহর কৌতুহলী হয়ে হ্যাঁ বলা মাত্রই আয়ুশ ব্যাগটা খুলল।সে ব্যাগের ভিতর থেকে বের করলো,
১ কেজি আলু,১ কেজি টমেটো,১ কেজি কালো বেগুন,১ কেজি করে রসুন,পেঁয়াজ,আদা,৫ কেজির মতো চাল,৩ কেজি ডাল,চারটা ছোট ছোট পাত্রে মরিচ গুঁড়ো হলুদ গুঁড়ো,জিরা গুঁড়ো,ধনিয়া গুঁড়ো,২ কেজি লবণ,৫ কেজি সয়াবিন তেল,দুই কেজি সরিষার তেল।সাথে দু হালি ডিম ছিল।
আয়ুশ তা খুব সন্তর্পণে ব্যাগ থেকে নামালো।

একসাথে এতগুলো বাজার দেখে প্রহর বুঝতে পারলো,সত্যি সত্যিই তার সংসার শুরু হতে যাচ্ছে।এখন থেকে তাকেও পাক্কা গৃহিণী হতে হবে।

সবকিছু খুলে রাখার পর আয়ুশ সব একে একে কিচেনে নিয়ে গেল।প্রহর ও তার সাথে হাত মিলিয়ে সব ঠিকঠাক জায়গায় রাখতে সাহায্য করলো।

সব গুছিয়ে রাখার পর প্রহর আয়ুশ কে বললো,
–“একটা কথা জিজ্ঞেস করি?”
–“করো”!
–“আপনি সারারাত কোথায় ছিলেন?”

আয়ুশ প্রহরের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।আয়ুশের চাহনি দেখে প্রহর ভাবলো আয়ুশ হয়তো তাকে আবার কথা শুনাবে। কিন্তু তার কিছুই হলো না।আয়ুশ ভ্রু কুঁচকে রেখেই বললো,
–“বাব্বাহ,এখনি পাকা গিন্নিগিরি শুরু করা দিয়েছো।বাকি দিন তো পরে আছে।”

প্রহর থতমত খেয়ে বললো,“না মানে,একটা মানুষ সারারাত বাড়ি ফেরেনি, চিন্তা হওয়ারই কথা।আমারও খুব চিন্তা হচ্ছিল”!

আয়ুশ প্রহরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো,তারপর বললো,
“জানো,কতো বছর পরে আমার জন্য কেউ চিন্তা করলো।তুমি সবসময় এরকমই চিন্তা করো আমার জন্য!কেমন?”

প্রহর মাথা কাত করে ”আচ্ছা” বললো। কিন্তু সে এখনো ভেবে যাচ্ছে,আয়ুশ রাতে কোথায় ছিল।

একটু বাদেই আয়ুশ তার কাপড় চোপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে গেল।আয়ুশ ঢোকার ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই ওয়াশরুমের দরজা খোলার আওয়াজ হলো।প্রহর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে কি যেন ভাবছিল।আওয়াজ হতেই সে মাথা উঁচু করে ওয়াশরুমের দিকে তাকাতেই দেখলো আয়ুশ ওয়াশরুমের দরজায় উঁকি দিচ্ছে।প্রহর কিছু জিজ্ঞেস করতেই যাবে তখনি আয়ুশ বলে উঠলো,

“চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই ম্যাডাম।আমি একটা কাজে গিয়েছিলাম।আমার কোনো মেয়েবন্ধু নেই।”
বলেই দরজা বন্ধ করে দিল।আয়ুশের কথা শুনে প্রহর খানিকটা থতমত খেলো।লোকটা কিভাবে বুঝলো,আমি এই কথাটাই ভাবছি।
পরক্ষণেই নিজের ভাবনার জন্য নিজেকে ধিক্কার দিতে গিয়েই প্রহর ভাবলো,এমন কিছু ভাবাটাও অমুলক নয়!

এদিকে আয়ুশ একবারে গোসল দিয়ে তবেই বের হলো।

ওদিকে প্রহর ততক্ষণে তাদের কিনে আনা স্টোভে ভাত বসিয়ে দিয়েছে।একসময় অনেকদিন মেসে থেকেছিল প্রহর।মেসে থাকাকালীন সময়ে বুয়া না রেখে তারা কয়েকজন রুমমেট মিলে নিজেদের মধ্যেই কাজ ভাগাভাগি করে নিতো।ওইসময়ই প্রহরের অনেক কাজ শিখা হয়ে গিয়েছে।

আয়ুশ গোসল শেষে রুমে এসে দেখলো প্রহর নেই। প্রহরকে খুঁজতে খুঁজতে রান্নাঘরের দিকে গিয়ে দেখলো প্রহর রান্নাঘরেই আছে।প্রহর স্টোভে ভাত বসিয়েছে দেখে আয়ুশ প্রহরকে হালকা করে ধমক দিয়ে বললো,
–“তোমায় রান্নাঘরে এসে রাঁধুনী সাজতে কে বলেছে শুনি!”

–“কেউ বলেনি আমায়।সকাল থেকে পেটে কিছু পড়েনি।আপনিও হয়তো কিছু খাননি।তো খেতে হবে না?”
–“তো এইজন্য রান্না করতে হবে?বাইরে থেকে এনে খেতে পারতাম।”

আয়ুশের কথা শুনে প্রহর বললো,
–“বাহিরের খাবার প্রতিদিন খেলে পেট খারাপ হবে।আমি বাবা পেট খারাপ নিয়ে বসে থাকতে পারবো না।বারবার ওয়াশরুমে আসা যাওয়া করতে পারবো না।তবে আপনার যদি বাইরের খাবার খেয়ে বারবার ওয়াশরুম ভ্রমণে যেতে ইচ্ছে হয়,আপনি বাইরের খাবার খেতে পারেন।”

প্রহরের কথা শুনে আয়ুশ ভ্রু নাচাতে নাচাতে বললো,
–“তোমার এই ওয়াশরুম ভ্রমণে আমি একা যাবো কেন?গেলে তোমাকেও সাথে নিয়ে যাবো।”

–“হুহ ,আপনার সাথে ওই খাইচ্চইরা ওয়াশরুম ভ্রমণে যেতে আমার বয়েই গেছে”! মুখ ভেঙচিয়ে বললো প্রহর।

প্রহরের কথা শুনে আয়ুশ কপাল কুঁচকে বললো,
–“হোয়াট!রাবিশ ওম্যান!এখন এইমাত্র কি ল্যাংগুয়েজ ইউজ করলে তুমি?হোয়াট ইজ খাইচ্চইরা?”

আয়ুশের প্রথম কথা শুনে মন খারাপ করলে শেষোক্ত কথাটা শুনে প্রহর হেসে ফেললো।আয়ুশ প্রহরের হাসি দেখে আবার বললো,
–“রাবিশ!কোনো হাসির কথা বলেছি আমি?”
–“এই মিস্টার !আপনি এতো রাবিশ রাবিশ করেন কেন? অবশ্য তাতে আমার ভালোই লাগে।রাবরি পায়েসের মতো লাগে।”

প্রহর এভাবে কথা বলছে দেখে আয়ুশ অবাক হয়ে গেল।সে তো মেয়েটাকে শান্ত ভেবেছিল। কিন্তু এখন তো হিতে বিপরীত বেরোচ্ছে।তবে মেয়েটা এইভাবে নিজের আনন্দ খুঁজে নিচ্ছে,হাসছে তা দেখতে মন্দ লাগছে না আয়ুশের।

আয়ুশ প্রহর কে রান্নাঘর থেকে সরে যেতে বললে,প্রহর মানা করে দিল।বললো, রান্নাবান্না মেয়েদের কাজ। কিন্তু আয়ুশ ও ছাড় দেয়ার পাত্র নয়।সে খুব ভালো রান্নাবান্না পারে‌।কোনো কাজই ছোট নয়,এই শিক্ষাটা সে ছোটকালেই পেয়েছিল। এইজন্যই সব শিখে রেখেছে সে।তাই প্রহর কে বলছে রান্নাঘর থেকে চলে যেতে। কিন্তু প্রহর যেতেই চাইছে না।তাই আয়ুশ প্রহরের পিছনে দাঁড়িয়ে রইলো।

হঠাৎ কিছু একটা ভেবে আয়ুশ প্রহরকে জিজ্ঞেস করল,“হেই,তোমার বয়স কত ?”

প্রহর স্টোভের দিক থেকে মাথা ঘুরিয়ে পিছনে তাকিয়ে বললো,
–“বয়স জানতে চাইছেন হঠাৎ?বিয়ের সময় দেখেননি?”
–“না!তখন এতোকিছু খেয়াল করিনি।এখন বলো,তোমার বয়স কত?”

প্রহর মুখ ফিরিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“মেয়েদের বয়স জিজ্ঞেস করতে নেই!জানেন না?”
–“জানি, কিন্তু তুমি তোমারটা বলো।”
–“আমিও তো মেয়েই।আমি কেন বলবো?”
–“আমি কি একবারো বলেছি প্রহর,যে তুমি ছেলে?বয়সটা তো বলো!অন্য কেউ তো জিজ্ঞেস করছে না আর।আমিই তো জানতে চাচ্ছি!”

প্রহর অন্যদিকে তাকিয়েই আয়ুশ কে বললো,
–“আপনাকে বলবো কেন?আপনি কে?”
প্রহরের কথা শুনে আয়ুশ প্রহরের কাঁধ ধরে নিজের দিকে প্রহরকে ঘুরিয়ে একটা আঙুল দিয়ে প্রহরের নাকের ডগা আলতো করে ছুঁয়ে বললো,
–“আমাকে বলবে,কারণ আমি তোমার স্বামী।”

আয়ুশের কথা শুনে প্রহর খানিকটা লাজুক হয়ে বললো,
–“আমার বয়স ১৮ বছর”!

মুহুর্তেই আয়ুশের কন্ঠস্বর পাল্টে গেল।সে প্রহরকে ধমক দিয়ে বলে উঠলো,
–“বাচ্চা মেয়ে!এতটুকু বয়সে এসেছে রান্নাবান্না করতে।যাও পড়তে বসো গিয়ে। এক্ষুনি যাও।”

প্রহর আয়ুশের সামনে একটু এগিয়ে বললো,
–“আমাকে আপনার কোন দিক দিয়ে বাচ্চা মনে হয়।চলনে নাকি বলনে? বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু।আর আমি শিশুর খাতা পেরিয়ে এসেছি।এখন আমি....!
–“কি তুমি!”
–“কিছুনা !এখন আপনি যাবেন নাকি আমি চামচ গরম করে আপনার পিঠে লাগাবো!”

“আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছি”।বলেই রুমে চলে গেল আয়ুশ।অন্য কেউ হলে এতোক্ষণে তার মেজাজ তুঙ্গে উঠে যেতো। কিন্তু আশ্চর্য এই মেয়েটার সাথে তার রুড ব্যাবহার করতে মন চাচ্ছে না।এইযে এখন প্রহর তাকে রান্নাঘর থেকে ফিরিয়ে দিলো,তার মোটেও খারাপ লাগছে না।মেয়েটার সামনে পরাজয় স্বীকার করতে তার কেমন যেন ভালোই লাগছে।

এই সে লাজকন্যা,এই ভীতু,এই উড়নচণ্ডী,এই আবার পাক্কা গিন্নি,এক মেয়ের কত রুপ!একেবারে পাঁচমিশালী মেয়েটা! ভাবতে ভাবতে মুচকি হাসতে লাগলো আয়ুশ।পরক্ষণে তার সম্ভিত ফিরতেই অবাক হলো আয়ুশ। আশ্চর্য!এই মেয়েটার কথা এতো ভাবছে কেন সে?

আর অন্যদিকে প্রহর ভাবছে,

“লোকটা এমন কেন?সবসময় হাসিমুখে থাকলে কি এমন হয়।একবার কি সুন্দর করে হেসে কথা বলে,কি মিষ্টি করে কথা বলে।পরক্ষণেই রুপ পাল্টিয়ে ধমক দিয়ে ফেলে। বহুরূপী একটা!না না! বহুরূপী শব্দটা তো কমন।উনি আমার রুপপল্টিবাজ একটা”!

১ ঘন্টা পর প্রহরের রান্নাবান্না শেষ হলো।আয়ুশ যা এনেছে তা দিয়েই হালকা পাতলা কিছু রান্না করেছে।
ধোয়া উঠা গরম ভাত,ডিম দিয়ে আলুভাজি,ফুলকপি,বেগুন আর টমেটো দিয়ে সবজি,পেঁয়াজ-মরিচ আর মশলা দিয়ে ডিম ভাজা,ডালের তরতরি।মোদ্দাকথা আয়ুশের আনা বাজার দিয়ে যা যা পারে,সব রেঁধেছে প্রহর।
খুব যত্ন দিয়ে রেঁধেছে সে।

দু'জনে একসাথেই খেতে বসলো।অবশ্য প্রহর ভেবেছিল আয়ুশকে খাওয়া শেষ হওয়ার পর নিজে খাবে। কিন্তু আয়ুশই বলেছে একসাথে খেয়ে ফেলতে।
খাওয়া শেষে আয়ুশ প্রহরের রান্নার প্রশংসা করলো।ভালোই রেঁধেছে মেয়েটা।একটু প্রশংসা করলে ক্ষতি কি!

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দুপুরে কি রান্না করবে চিন্তা করছিল তারা। তক্ষুণি বাসার কলিংবেল বাজলো।কে যেন এসেছে।আয়ুশ প্রহর দু জনে একসাথেই উঠতে গিয়েছিল। কিন্তু আয়ুশ প্রহরকে ইশারায় বসতে বলে নিজেই উঠে গেল।
“বাড়িওয়ালা এসেছিল।দুপুরে আর রাতে উনাদের বাসায় খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে গেলো।ভালোই হয়েছে,দুইবেলার রান্নাবান্নার ঝামেলা চুকে গেল” দরজা লাগিয়ে ভিতরে আসতে আসতে বলতে লাগলো আয়ুশ!

আয়ুশের কথা শুনে প্রহর দাঁড়িয়ে বললো,
–“হঠাৎ!তাও দুইবেলা দাওয়াত দিলেন কেন?”
–“উনার মেয়েকে আজ পাকা দেখা দেখতে আসবে। সব ঠিকঠাক থাকলে পরশু এংগেজমেন্ট।তাই বললেন আর কি!উনার কোনো ছেলে নেই। ফ্রি থাকলে আগামীকাল আমাকে যেতে বললেন।”

“ওহ আচ্ছা” বলে প্রহর ফের সোফায় বসে পড়লো।
আয়ুশ বললো,
“তো দুপুর হতে তো বাকি আছে।আমরা যোহরের পর যাবো।আমি ঘুমাবো একটু। কিন্তু তুমি এতোক্ষণ কি করবে ?ঘুমাবে”
–“দিনের বেলা আমার ঘুম পায় না।কখনোই ঘুমাতে পারি না।যা ঘুম হবে রাতে।”

আয়ুশ প্রহরের দিকে খানিকটা ঝুঁকে বললো,
–“কিন্তু তুমি তো সারারাত ঘুমাওনি!”
প্রহর চমকে উঠে বলল,
–“আপনি কি করে বুঝলেন?”
–“চোখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে ”!
–“ও আচ্ছা!”
–“হ্যাঁ!এখন একটু ঘুমিয়ে নাও!”
প্রহর ভাসা ভাসা চোখে বলল,
–“আমি সত্যিই দিনের বেলায় ঘুমোতে পারি না।”
প্রহরের কথা শুনে আয়ুশ বললো,“সামনে থেকে দিনেই ঘুমানোর অভ্যাস....”
তারপর..
হঠাৎ করেই বাক্যালাপে আটকে গেল আয়ুশ!ছিহ!কি অধঃপতন হয়েছে তার।কি বলতে যাচ্ছিলো সে!😩

(আসসালামু আলাইকুম।আমি অসুস্থ!অনেক কষ্ট করে আজকের পর্বটা লিখেছি।গুছিয়ে উঠতে সময় লেগেছে।যতটুকু পেরেছি লিখেছি,সাজিয়েছি।দয়া করে কেউ মন খারাপ করবেন না।আমি একটু ভালো লাগলেই রেগুলার গল্প দিবো ইন শা আল্লাহ।এখন ও দেয়ার চেষ্টা করবো।সবাই রেসপন্স করবেন।আজকের পর্ব নিয়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করতে ভুলবেন না)

17/12/2024

ভালোবাসি তোমায়
(২)

রুমের বাইরে পা বাড়াতে দেখলাম
চাচ্চু, আন্টি সোফায় বসে আছে। আন্টি আমাকে দেখে বলল,

- রুম্পা এটা কি নন্দিনী?

মা বলল,
- হ্যা ও নন্দিনী।

- অনেক বড় হয়ে গেছে দেখছি ।

তাদের সাথে একটু কথা বলে রুমের দিকে পা বাড়াবো ঠিক তখনই একটা কন্ঠ শুনে দাঁড়িয়ে গেলাম।

- আঙ্কেল আন্টি কেমন আছেন?

পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম, ২৫-২৬ বছরের একটি ছেলে। হাসিমুখে বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। কি স্নিগ্ধ সেই হাসি!

ওনার হাঁসির দিকে তাকিয়ে একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেলাম।ঘোর কাটলো তার কথায়,

- হেই মিস ,ইউ আর নন্দিনী রাইট?

-জী।

- আই এম আহিয়াদ।ইউর কাজিন ।আই থিঙ্ক তুমি আমার নাম শুনেছ আগে ।

-হ্যাঁ ।

উনি আর কিছু না বলে বাবা মা আর প্রিয়ন্তীর সাথে গল্প করতে বসে গেছেন।

আমি রুমে আবার ঘুমিয়ে গেলাম।সারাদিন এমন বর্ষনমুখর পরিবেশে কাঁথা মুড়িয়ে না ঘুমালে যেন দিনটাকে ফিল করা যায় না ।
রাতে আর ঘুম ভাঙলো আমার। মা অলরেডি চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছে।

- কিরে এখনো ঘুমাচ্ছিস? উঠবি না বাড়িতে গেস্ট আছে তো, তারা কি ভাববে বলতো?

-কিছু ভাববে না ।
তারা তো তাদের ফ্ল্যাটে, এখানে আমি ঘুমালে কেউ দেখবে না।

- তারা আজ আমাদের সাথে ডিনার করবে ।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং এ আয় ।

-আমার খাবারটা এখানে দিও তাহলেই হবে।

- বেশি কথা না বলে ডাইনিং নিয়ে আয়। সবার সাথে বসবি ,খাবি
আর ওদের সাথে গল্প ও করতে পারবি। প্রিয়ন্তী তো সারা সন্ধ্যা থেকেই ওদের সাথে গল্প করছে। তুইও আয়।

ডাইনিং এ গিয়ে দেখি সবাই টেবিলে বসে আছে ,
প্রথমে বাবা ,তারপর চাচ্চু,তারপর আন্টি,তার পাশে আহিয়াদ ভাইয়া তারপর মা সাথে প্রিয়ন্তি আর তারপর একটা চেয়ার ফাঁকা ছিল ।সেখানে বসে পড়লাম ।
টেবিলটা ছিল গোলাকৃতির ।

আহিয়াদ ভাইয়া আমার সামনাসামনি থাকায় ,কেমন একটা আনইজি ফিল করছিলাম ।
আমি চুপচাপ খেয়ে উঠে গেলাম।
মাঝেমধ্যে চাচ্চু আর আন্টি এক দুই বার প্রশ্ন করেছিল তার উত্তর দিয়েছি আর কারো সাথে কথা হয়নি।

আমার রুমের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছি ,

কি সুন্দর পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে । অনেকক্ষন চাঁদ এর দিকে তাকিয়ে আছি।
বরাবরই প্রতিদিন ডিনারের পর ব্যালকানিতে সময় কাটানো আমার অভ্যাস।
হঠাৎ মনে হল পাশের বেলকনি থেকে কেউ একজন বলল,

- এই যে মিস নন্দিনী, চন্দ্র বিলাস করছো ?

কন্ঠটা অপরিচিত নয় ,কণ্ঠ শুনেই বুঝেছি আহিয়াদ ভাইয়া।

পাশেই বেলকনিতে তাকাতেই দেখলাম, উনি বেতের সোফায় বসে ফোন স্ক্রল করছে ।ফোনের দিকে তাকিয়েই বললেন ,

-মিস নন্দিনী কি কথা বলতে পারে না ,নাকি বলতে জানে না।

বললাম ,

-অবশ্যই পারে।

এবার উনি উঠে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

- আমি ভাবলাম হয়তো পারো না । Because আসার পর থেকে তোমার সাথে তেমন কথাও হয়নি আর তুমিও শুনলাম সন্ধ্যা থেকে ঘুমিয়েছিলে।

- আমি টায়ার্ড ছিলাম ,তাই ঘুমিয়েছি ।আর পরিচিত লোক ছাড়া আমি অন্য কারো সাথে ফ্রিলি কথা বলতে পারি না ।

উনি ঠোঁটে হাসি রেখেই বললেন,

- কথা বললেই পরিচিত ও হওয়া যায় আর ফ্রি ও হওয়া যায়। এনিওয়ে ,গুড নাইট ।

-গুড নাইট।

উনার সাথে কথা বলার পর রুমে এসে ফোনের ডাটা অন করতেই ফেসবুকে নোটিফিকেশন আসলো ,
আহিয়াদ সিজাদ নামের একটা আইডি থেকে, প্রোফাইল পিকচার দেখেই বুঝলাম আহিয়াদ ভাইয়ার আইডি ।
সেই হাসিমাখা মুখটার ছবি।

মনে মনে ভাবলাম,

উনি আমার আইডি চিনলো কিভাবে? অত কিছু না ভেবে আমি ফোন রেখে আমার এসাইনমেন্ট করতে লাগলাম।

চলবে,....

17/12/2024

#মেহেরজান
লেখনীতে- #সোহা
পর্ব ২

ব্যবসার সুবাদে মাহমুদ খান রাজশাহী থাকেন।বড় ভাই মাহবুব খান আর ছোট ভাই মাহতাব খান ঢাকায় থাকেন।সেখানেই তাদের ব্যবসা।কিন্তু আজ সবার ছোট বোন মালিহাসহ মাহমুদ খানদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন।ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা বলার জন্য।কারণ এখন মেহরান যেহেতু এসে গেছে সেই ব্যবসার হাল ধরবে।রাউশিকেও এবার নিজেদের সাথে নেওয়ার কথা ভাবেন।আয়াশ যখন দেশে ফিরলে তখনের ব্যাপার তখন দেখা যাবে।তবে রাউশির আগমনী বার্তা আর তার সাথে ঘটা কাহিনীটা শুনতেই সকলের রক্ত গরম হয়ে ওঠে।মাহবুব খানের ছোট ছেলে উজান আর মাহতাব খানের বড় ছেলে তানজিম তো ক্ষেপে গিয়েছিলো।বড় ভাই মেহরানের ধমকে চুপ করে আছে এখন ছেলে দুটো।খান বাড়ির সবাই রেগে আগুন।মাহবুব খান,মাহতাব খান এবং তাদের ছোট বোন মালিহা খান কখনো ভাবতে পারেননি ভাইয়ের বাসায় এসে আজ এমন কথা শুনতে হবে।মাহমুদ খান বারবার স্ত্রীকেই বকে যাচ্ছেন আর চেঁচাচ্ছেন।মাহমুদ খানের মতে তার স্ত্রীর জন্যই তার একমাত্র আদরের মেয়েকে আজ এত অপমানিত হতে হলো।যেখানে কিনা ছোট থেকে তিনি মেয়েকে উচ্চৈঃস্বরে একটা কথাও পর্যন্ত বলেন নি সেখানে তার স্বামী কিনা আজ দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে বাড়িতে ফিরেছে কাউকে কিছু না জানিয়ে।মাহমুদ খানের বড় ভাই মাহবুব খানও রেগে আছেন।তবে তিনি নিজেকে যথাসম্ভব সংযত রেখেছেন।কিন্তু মাহমুদ খান স্ত্রীর ওপর রাগ ঝেড়ে যাচ্ছেন সেই অনেক্ষণ হলো।

"তোমার জন্যই আজ এমনটা হলো।আমি মেয়েটাকে কখনো তোমার ভাই পো’র সাথে বিয়ে দিতে চাই নি।অথচ তোমারই যতসব জেদ।এখন দেখলে তো তোমার আদরের ভাই পো কি কুকাজ করলো?ওই ছেলেটাকে আমি ছেড়ে দেবো না।জেলের ভাত খাইয়ে তারপর ছাড়বো।"কথাগুলো রূপা বেগমকে চেঁচিয়ে বলে মাহমুদ।রূপা খানিক দূরে মাহবুব খানের স্ত্রী উর্মিলা বেগমের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন,মুখে শাড়ির আঁচল ঢেকে।অন্যপাশ হতে মাহতাবের স্ত্রী রুকসানা বেগম স্বান্তনা দিচ্ছেন।রূপার চোখদুটো জ্বলে চিকচিক করছে।

মাহবুব খান বিরক্ত হয়ে বলেন,
"আহ শান্ত হও মাহমুদ।রূপাকে দোষ দিচ্ছো কেন?"

তৎপর মালিহা খান বলে ওঠেন,
"রূপাকে সেদিন আমরাও বারণ করেছিলাম এমনটা না করতে।তবুও আমাদের কারোর কথা শুনেনি।"

রূপা মাথা নিচু করে অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে আছে।তিনবছর আগে সবাই নিষেধ করেছিলো এই রাউশির বিয়ে নিয়ে।তখন রাউশি সবে ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে।তবে রূপা ভাইয়ের কথা রাখতে বাড়ির সকলকে বোঝান।কেউ রাজি ছিলো না কিন্তু মাহবুব খান রূপাকে নিজের বোনের মতো দেখতেন।তাই তো তিনি রাজি হয়ে যান।মাহবুব খানের রাজি হওয়াতে সকলেরই না চাইতেও রাজি হতে হয়।তবে আদরের সেই ছোট মেয়েটির এমন দিন দেখতে হবে কখনো ভাবেননি মাহবুব খান।
মাহমুদ রাগে ফুঁসছেন।শান্ত রাখতে পারছেন না নিজেকে।মাহবুব খান রূপাকে বলেন,
"রূপা তোমার ভাইয়ের ছেলে এমনটা মোটেও ঠিক করে নি।ডিভোর্সের ব্যাপারটা আমি আগামীকালই দেখছি।আর তুমিও ওই পরিবারের সাথে কোনো যোগাযোগ আর রাখতে পারবে না।"

রূপা মাথা তুলে তাকায়।মাহমুদ খান বড় ভাইয়ের এই কথা শুনে বলে,
"ভাইজান এমনিতেই ছেড়ে দেব ওদের।আমার মেয়েকে ওরা এভাবে এভাবে তিনটে বছর আটকে রেখেছে।তাদের গুণধর ছেলে বিদেশে থেকেও বাড়িতে দু তিন বারের বেশি আসতে দেয় নি।আবার এখন ওই কুলাঙ্গার আরেকটা বিয়ে করে এনেছে। এরপরও আমি ওদের ছেড়ে দেবো?"

মাহতাব খানও এবার মেজো ভাইয়ের কথায় সায় দিয়ে বলেন,
"হ্যা তাইতো।ওদের উচিত শিক্ষা দেওয়া উচিত।"

রূপার খারাপ লাগছে।যত যাই হোক রায়হান তার বড় ভাই।তবে মেয়ের সাথে যা হয়েছে এটা ঠিক নয়।তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।মেয়েটার কালো মুখ,বিষণ্ণ চোখ দেখেই স্পষ্ট মেয়েটা কত কষ্ট পেয়েছে।এদিকে তার ভাই রায়হান তো এমন নয়।আগে যদি জানতো আয়াশ রাউশিকে পছন্দ করে না তবে বিয়ের ব্যাপারটা কখনোই ভাবতো না রূপা।মাহতাবের কথা শুনে এবার পাশে বসা মেহরান বলে,
"শান্ত হন চাচা আপনারা।আমি ব্যাপারটা দেখবো।আপাতত রাউশির খেয়াল রাখা জরুরি।"

মাহবুব খান ছেলের দিকে একপলক তাকিয়ে উঠে দাঁড়ান।স্ত্রীর কাছে গিয়ে বলেন,
"রাউশির খেয়াল রাখবে।মেয়েটা মানসিক যন্ত্রণায় ভুগবে।এটা আমরা কেউ দেখতে পারবো না।রূপা মেয়ের কাছে যাও।"

মেহরান মাথা নিচু করে কিছু ভাবছে।

নিজের রুমে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে রাউশি।তার পাশেই বিছানার ওপর বসে আছে মালিহা খানের ছেলে নাহিন, ছোট মেয়ে মাইশা আর মাহতাব খানের বড় মেয়ে মাইশার সমবয়সী তানিয়া আর পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য তাজবির।বাচ্চাটার বয়স এখনও এগারো।তানিয়া ডাকে রাউশিকে,
"এই রাউশি আপু আর কেঁদো না প্লিজ।তুমি কাঁদলে আমাদের খারাপ লাগে তো।ভালোই হয়েছে ওই শয়তানটাকে আমরা কেউই পছন্দ করতাম না। আগামীকাল তোমাদের ডিভোর্স এর সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বড় বাবা।"

পাশ থেকে ছোট্ট তাজবির বলে,
"হ্যা রাউশিপু ওঠো না।দেখো আজ আমরা সবাই এসেছি।তুমি কোথায় আমাদের সাথে মজা করবে। তা না করে তুমি পড়ে পড়ে কাঁদছো?"

মাইশাও বলে,
"হ্যা রাউশি আপু তুমি কান্না করো না।তোমাকে কাঁদতে দেখলে আমাদের খারাপ লাগে।"

আপেলে এক কামড় দিয়ে নাহিন বলে,
"ঢং করা বাদ দিয়ে উঠে পর রাউ।কালকেই চলে যাব আমরা।ঢাকা গেলে আয়াশ মায়াশ সব ভুলে যাবি।"

রাউশি এবার সত্যি সত্যিই গা থেকে লেপ সড়িয়ে উঠে পড়ে।চোখদুটো লাল,ফুলে গেছে।শীর্ণ দেহে উঠে দাঁড়ায়।তানিয়া রাউশির কাছে এসে বলে,
"কেঁদো না রাউশিপু। এবার আমরা সবাই একসাথেই থাকবো।আগামীকাল দুপুরেই এই শহর ছেড়ে চলে যাব।"

কথাটা শুনে তড়িৎ বেগে তানিয়ার দিকে তাকায় রাউশি।বলে,
"কেন?"

"জানিনা আমি।বড় বাবা ঠিক করেছেন।"

মন সায় না দিকেও কম্পমান আওয়াজে শুধায় 'ওহ'।রাউশির মামা রায়হানদের বাড়ি রাজশাহীতেই।ছোট বেলায় যখন এখানে এসেছিলো তারা রায়হানদের সাথে ওঠাবসা বেশি হতো।প্রতিদিনই রায়হানদের বাড়িতে আসা যাওয়া চলতো তাদের।কিশোরী জীবনে পা রাখতেই মামাতো ভাই আয়াশের প্রতি একটা অনুভুতি সৃষ্টি হয়।কৈশর জীবনের আবেগ বলা চলে।তবে তাদের যে বিয়ে হয়ে যাবে এটা কস্মিনকালেও ভাবে নি রাউশি।খুশি ছিলো সে তবে আয়াশের গম্ভীর মুখ দেখে তখন না বুঝলেও বিয়ের পর যখন বিদেশ চলে যায় তখন বুঝেছে।তার সংসার না টিকে থাকার সম্ভাবনা খুব বেশি।যেটা তিনবছর পরই হলো।তবুও রাউশি এই তিনবছর রায়হানদের বাড়িতেই থেকে কাটিয়েছে।সেখান থেকে ভার্সিটি যাওয়া আসা করতো।তবে পরিশেষটা যে এভাবে হবে তারও জানা ছিলো না।কষ্ট পায়নি রাউশি, কারণ সে জানে আয়াশ তাকে কখনো পছন্দ করতো না।তবুও আবেগাপ্লুত হয়েই কান্না করেছে।রাউশি ঠিক করে সুন্দর একটি জীবন গঠনের কথা।প্রথম অধ্যায় শেষ করে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করার কঠোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় সে মনে মনে।তবে এই নতুন জীবন শুরু করার আগে তাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ সাড়তে হবে।তখনই রুমে প্রবেশ করেন মালিহা খান।রাউশির কাছে এসে জড়িয়ে ধরেন একবার।তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন,
"রাউশি মা তুই একদম ভেঙ্গে পড়বিনা।আমরা সবাই আছি তোর সাথে বুঝলি।"

রাউশি মাথা নাড়ায়।

এক রাত পেরিয়ে পরদিন রাউশি বাড়ি থেকে লুকিয়ে বের হয়।আজ বিকেলের দিকেই রওনা দিবে তারা ঢাকা উদ্দেশ্যে। তবে এখন তার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করতে হবে।বাড়ি থেকে একটু দূরে গিয়ে সিএনজির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।তখনই একটি কালো গাড়ি সেখানে এসে থামে।গাড়ির কাঁচ নামতেই ভুত দেখার মতো চমকে ওঠে রাউশি।মেহরান বসে আছে ড্রাইভিং সিটে।কিন্তু মেহরান জানলো কিভাবে সে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে?সে তো বোরখা,হিজাব খুব ভালোভাবে জড়িয়ে তাকে যাতে কেউ না চিনতে পারে সেভাবেই বাড়ির পেছনর গেইট দিয়ে বেরিয়েছে।তার ভাবনার মাঝে মেহরান রুক্ষ গম্ভীর স্বরে বলে,
"পালিয়ে বেড়ানোর স্বভাব আছে দেখছি?"

রাউশি কি উত্তর দেবে বুঝতে পারছে না।এখন যদি তার বেড়িয়ে যাওয়ার কথাটা বাড়ির সবাইকে বলে দেয় তার বাবা কিছু না বললেও বাড়ির বাকিরা নিশ্চয় বকা দেবে।রাউশি মিনমিন করে বলে,
"একটা জরুরী কাজে বেরিয়েছিলাম।"

মেহরান রাউশির দিকে তীক্ষ্ণ চাহনী রেখে শুধায়,
"কি কাজ?"

রাউশি আমতা আমতা করতে থাকে।
মেহরান গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে বলে,
"উঠে এসো।"

রাউশি তৎক্ষনাৎ বলে,
"না না ভাইয়া আমি একাই যেতে পারবো।"

মেহরান চোখ রাঙায়।তার চোখ রাঙানি দেখে ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে রাউশির।এই লোকটাকে সে ছোট বেলায় ভয় পেতো।এখনও কেমন বাঘের মতো লাগে তার কাছে মেহরানকে।অগত্যা বাধ্য হয়ে গাড়িতে উঠে রাউশি।মুখ গোমড়া করে বসে থাকে।অবশ্য কেউ লক্ষ করবেনা সেটা।কারণ রাউশির মুখ ঢাকা।

"কোথায় যাবে?"
আবারও সেই গম্ভীর আওয়াজে রাউশি রুষ্ট হয়।কথায় কি ঝাঁঝ না মেশালে এই লোকের শান্তি হয় না?সেই মুখ গোমড়া করে উত্তর দেয়,
"মামার বাসায়।"
বলেই মুখে হাত দেয়।মুখ ফসকে বলে ফেলেছে।ভ্রুকুটি হয় মেহরানের।এই সময়ে রাউশি সেখানে গিয়ে কি করবে?

"কিসের জন্য?"

রাউশি আবারও আমতা আমতা করতে থাকে।মেহরান রাউশির মামা বাড়ি চেনে না।ঠিকানা জানতে চাইলে রাউশি এবার খুশি খুশি ঠিকানা বলে দেয়।বাসার সামনে নামতেই মেহরানও তার পিছু পিছু নামে।রাউশির কিছু বলারও নেই।ভয় পায় সে লোকটাকে।এখন যদি যেতে নিষেধ করে পরে না আবার বাড়ির সবাইকে বলে দেয়।বাড়ির কলিংবেল অনবরত বাজাতে থাকে রাউশি।কিছুক্ষণ পর আয়াশই দরজা খুলে দেয়।রাউশিকে দরজার সামনে দেখে অবাক হয়।রাউশির পেছনে মেহরানকে দেখে এই অবাকত্ব আরও গভীর হয়।রায়হান আর আমেনা বেরিয়ে আসেন ঘর থেকে কে এসেছে দেখতে।রাউশি কিছু না বলে হুট করেই আয়াশের গালে পরপর বড়সড় দুটো চড় বসিয়ে দেয়।এতে চমকে যায় আমেনা তবে রায়হান সাহেব চুপ।আয়াশের নব্য স্ত্রী অনিমাও এটা দেখে হতবম্ভ হয়।পেছনে দাঁড়ানো মেহরানও যেন অবাক হয়।কিন্তু তার ঠোঁটের কোণে ক্ষীণ হাসির রেখা দেখা যায়।আয়াশ গালে হাত দিয়ে অগ্নিঝড়া গলায় বলে,
" আমার বাড়িতে এসে আমায় মারছিস তুই?তোর এতো সাহস হলো কিভাবে?"

আরেকটা চড় বসিয়ে দেয় রাউশি আয়াশের গালে।আর স্বাভাবিক গলায় দাম্ভিকের সাথে বলে,
"এভাবে।"
থেমে আবারও বলে,
"প্রথম দুটো হলো আমার জীবনের তিনটে বছর নষ্ট করার জন্য।আর শেষেরটা হলো রাউশি খানের সাথে উঁচু গলায় কথা বলার জন্য।আমার তো লজ্জা করছে তোর মতো একটা ছেলের প্রতি আমার অনুভুতি এসেছিলো।ছি।আমি কত ভুল ছিলাম।তোকে জেলে পাঠাতে পারতাম।তবে আমি সেটা করবো না।কারণ হলো রায়হান মামা।উনার কষ্ট আমার সহ্য হবে না।কিন্তু তোকে শুধু এই তিনটে চড় মেরেও আমার রাগ ক্ষান্ত হচ্ছে না।তবুও তোর নতুন জীবনের শুভেচ্ছা রইলো।দেখা যাক কেমন কাটাস সেই জীবন।"

রাউশির তুই তুকারি শুনে সবাই চমকে যায়।রাউশি সেসবে পাত্তা না দিয়ে রায়হান সাহেবের দিকে তাকিয়ে বিনম্র গলায় বলে,
"কাজটা তোমার কাছে খারাপ লাগলেও আমি মনে করছি আমি ভালো কাজ করেছি।ভালো থেকো মামা।আসি।"

রায়হান সাহেব মাথা নাড়ান শুধু।ঠোঁটে খুশির এক হাসি।রাউশি আর একটা সেকেন্ডও দাঁড়ায় না সেখানে।এমনকি রায়হান সাহেব আর আমেনা বেগমের সাথেও কথা বলে না।সে জানে আমেনা বেগম ছেলের এমন কাণ্ডের সাথে পরোক্ষভাবে জড়িতে।কিন্তু রায়হান সাহেব ক্রুটিপূর্ণ ছিলেন না।মেহরানও তার পিছু পিছু আসে।মেহরান ভাবে মেয়েটার আত্মসম্মানবোধ প্রখর।এমনকি মেহরান নিজেও বুঝতে পারে নি রাউশি এমন কাজ করবে।রাউশি গাড়িতে বসে পড়ে।নিকাবের আড়ালে প্রশান্তির হাসি।মেহরান নিজ সিটে এসে বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়।

রাউশি হুট করেই ভঅয় ডর ভুলে গিয়ে খোশমেজাজে বলে ফেলে,
"একটা ডিজে গান ছাড়ুন না ভাইয়া।"

মেহরান চোখ রাঙিয়ে তাকায় আবারও।রাউশি চুপসে যায়।'সরি' বলে ছোট করে।মেহরান জানালারা বাইরে তাকিয়ে হাসে।সত্যিই একটি গান ছেড়ে দেয় গাড়িতে।

চলবে..

17/12/2024

#প্রণয়ের_তুষ্টি🍁
#পর্ব_০২
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
গাড়ির একটা কোনায় নিজেকে গুটিয়ে বসে আছে তুষ্টি।
মাঝে মাঝে ফুপিয়ে উঠছে,
তুষ্টির ফুপানো দেখে প্রণয়ের হচ্ছে প্রচন্ড রাগ।
এই মুহুর্তে সব কিছু ভাঙচুর করে দিতে পারত তাহলে ভলো লাগত।
৫ ঘন্টার রাস্তা এখনো ২ ঘন্টাও হয়নি।
তুষ্টি কখনো আটকা জায়গায় থাকতে অভস্ত্য নয়। তার ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসওর্ডার আছে। কিন্তু এই গাড়িটা এসি গাড়ি যার জন্য সব জানালা বন্ধ গাড়ির।
অতিরিক্ত কান্নার কারণে এখন তুষ্টির বমি পাচ্ছে।
শরীর গুলিয়ে আসছে,
মাথা ভার হয়ে আসছে।
প্রণয়ের এসব কিছুই অজানা নয়৷ তবে সেত চায় তুষ্টির কষ্ট দেখতে।
তুষ্টির বেদনা তাকে বড্ড বেশি আনন্দ দিচ্ছে।
তুষ্টি পারছেনা একটা জায়গায় স্থির থাকতে।
" পা পারছি না। আর পারছিনা। গাড়ি থামান। প্লিজ গাড়ি থামান।"
ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দেয়।
তুষ্টি গাড়ির দরজা খুলে বাইরে এসেই মনে হচ্ছে ভেতর থেকে সবটা বেরিয়ে আসবে।
প্রণয় দু হাত বুকে গুঁজে তুষ্টির কষ্ট গুলো কোন ফানি সিনেমার মত উপভোগ করছে।
" প্রণয় পানি দেও প্লিজ। "
প্রণয় হাতে পানির বোতল তুষ্টির দিকে এগিয়ে দেয়,
তুষ্টি পানি খেয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে সমস্ত মেকাপ তুলে ফেলে।
"আমি এ গাড়িতে যেতে পারব না প্রণয়। দয়া করো আমাকে। "
" প্রণয় বলে কাকে ডাকছো? ভুলে যেও না তোমার স্বামী এবং বয়সে আমি বড়। প্রণয় বলে ডাকার অধিকার তুমি অনেক আগে হারিয়েছো মিসেস. প্রণয় তুষ্টি চৌধুরী। "
" তাহলে কি বলব তোমাকে?"
" স্যার বলে ডাকবে। সবার সামনে ওগো হ্যা গো বলে কাটিয়ে দেবে। একটা কথা আমার মা বা বাবা যদি একটুও জানতে পারে তুমি তুষ্টি আর আমি তোমার সাথে কি ব্যাবহার করছি তাহলে কিন্তু আমি সব ধ্বংস করে দেব। আর আমি যে সব করতে পারি তা নিশ্চিত আজ বুঝে গেছো। "
" আমি তোমাকে মিলাতে পারছিনা প্রণয়। আমার মনে হচ্ছে দুজন মানুষের শুধু চেহারাই এক আত্মা অন্য কারোর। "
" ঠিকি বলেছো। যে দিন তুষ্টি প্রণয়কে ধোকা দিয়েছিল সেদিন প্রণয় মরে গিয়ে নতুন প্রণয়ের জন্ম হলো। "
" আমাকে কষ্ট দিয়ে যদি এই প্রণয়ের দেহের আগুন মিটে যায় তবে তুষ্টি তাই করবে। সব কষ্ট সয়ে নিবে। কথা দিলাম মুখ বুজে থাকব। "
" গুড। "
প্রণয় কথাটা বলে গাড়িতে উঠে পরে।
তুষ্টিও তার ভারি লেহেঙ্গা নিয়ে গাড়িতে উঠে পরে।
চুপচাপ একটা কোনায় নিজেকে গুটিয়ে নেয় তুষ্টি।
চোখ বন্ধ করে নেয়।
পৌঁছাতে এখনো ৩-৪ ঘন্টা সময় লাগবে।
,
,
ঢাকা শহর। বাংলাদেশের রাজধানী।
রাজধানী হবার সুবাদে এখানে লেগে থাকে নানান মানুষের আনা গোনা শহ ভরপুর জ্যাম।
গ্রামের ফুরফুরে বাতাস থেকে এই শহর ঢ়েন একেবারেই আলাদা।
বাংলাদেশের আর পাঁচটা শহরে যেতে গিয়ে তুমি দেখবে শুধু সবুজের খেলা কিন্তু ঢাকা শহরে ঢুকতে শুধু রাস্তা আর বড় বড় ইমারত বিল্ডিং।
চারিদিকে সবুজের বিনিময়ে দেখা যায় আবাসিক এলাকা।
,
,
আলতাফ মাহামুদুর চৌধুরী এর বড় ছেলের বউ আসবে ঘরে। চৌধুরী বাড়ি আজ রঙ বেরঙের আলোয় সজ্জিত।
দেখে যেন মন ভরে যাচ্ছে।
নতুন বউ এর থেকে বেশি সাজুগুজু করেছে এই বাড়িটা।
বরন ডালা হাতে নিয়ে বসে আছে মিসেস চৌধুরী ( প্রণয়ের মা -- মেহেনাজ চৌধুরী) কখন ছেলেটা তার বউকে নিয়ে ফিরবে। তিনিত অনেক কিছু ভেবে রেখেছে।
৩ টা বছর ছেলেটাকে চোখের সামনে কোন মেয়ের জন্য কষ্ট পেতে দেখেছেন তিনি। সব ভুলে আজ জীবনের একটা নতুন শুরু করতে যাচ্ছে তার ছেলে এতেই তিনি খুব খুশি।
,
,
,
" তুষ্টি মির্যা।
মতিউর মির্যার ছোট মেয়েটা হলো তুষ্টি। তুষ্টির বড় দুটো বোন আছে। তাদের ভালো বিবাহ হয়েছে।
কেবল অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী এখনো শেষ করেনি পরিক্ষা সামনে পরিক্ষা দিতে হবে।
বাবা মতিউর মির্যা একজন স্কুল শিক্ষক। বড় দুই মেয়ের বিবাহের পর ছোট মেয়েকে নিয়ে তিনি স্বপ্ন দেখতেন অনেক বড় হবে মেয়ে। তাইত তুষ্টিকে এখনো বিয়ে দেননি। অবশ্য তুষ্টি মাত্র ২০ বছর বয়স। বিয়ের বয়স তার এখনো হয়নি বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু
কিছু দিন আগে মতিউর মির্যার একটা এক্সিডেন্ট হয়। যার কারণে তার পা দুটো প্যারালাইজড হয়ে গেছে।
এই মুহুর্তে তুষ্টির বড় দুটো বোন চায় তুষ্টির বিয়ে দিয়ে দিতে।
কিন্তু তুষ্টি চাইত আরও কিছু দুর পড়ালেখা করতে। এর মধ্যে চৌধুরী বাড়ি থেকে সম্মন্ধ নিয়ে আসে তুষ্টির বড় আপুর বর।
যার কথা শুনে তুষ্টির বাবাও আর বারণ দেয়না।
তুষ্টির ছিলনা এ বিয়েতে কোন মত। তাই বিয়ের আগে পাত্র কে পরিবারকে এসব দেখার ছিলনা তুষ্টির বিন্দুমাত্র ইচ্ছে। আর সে বিয়ের আগে এসব দেখেও নেই।
তবে প্রণয়ের ক্রোধের কারণ আমরা জানব ধিরে ধিরে জানব।
,
,
,
,
বিকালে রওনা হওয়া বিয়ের গাড়ি গুলো চৌধুরী বাড়িতে পৌঁছাতে প্রায় ভোর হয়ে যায়।
বরযাত্রী সব নেমেছে গাড়ি থেকে। তবে মেইন বর এবং বউ এর গাড়িটা এখনো আসেনি।
কিছুক্ষণ পর সদর দরজা দিয়ে চৌধুরী বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে সুকিয়ে যওয়া ফুলে সজ্জিত একটা গাড়ি।
মেহেনাজ চৌধুরী হাতের বরন ডালা এবং মিষ্টি নিয়ে নতুন বউ এর অপেক্ষা করছে।
প্রণয়, তুষ্টিকে নিয়ে বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে।
তবে তুষ্টিকে অনেক ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছে।
কারণ আসার আগে প্রণয় কোন পার্লার থেকে তুষ্টির মেকাপ করিয়ে এনেছে তাও একটা বিউটি পার্লারের মানুষকে ঘুম থেকে জাগিয়ে এসব করেছে প্রণয়।
,
,
মেহেনাজ চৌধুরী ঘরে বউ তুলে ছেলে আর বউকে তাদের রুমে পাঠিয়ে দেয়।
সারা রাত জার্নি করে সবাই ক্লান্ত।
তুষ্টিকে একটা নতুন শাড়ি দেয় তার শ্বাশুড়ি।
" মারে যা এই কাপড়টা পরে আয়। গোসল করে নে। তারপর একটু ঘুমাস। আজ বিকালেত আবার বাড়িতে অনুষ্ঠান। "
" ঠিক আছে। "
" মা বাবাকে ছাড়া কষ্ট লাগবে আমি জানি। যখন আমি তোর মত এ বাড়িতে নতুন আসি। আমিও এভাবে কান্না করে চোখ ফুলিশে নিলাম। কিন্তু জানিস কি মা আজ এত বছর পর তিন ছেলে মেয়ে আর স্বামী আমার সব হয়ে গেছে।। তোরও হবে সময়ের সাথে কষ্ট পাস না। "
তুষ্টি শ্বাশুড়ির কথায় মাথা নাড়ায়।
মেহেনাজ চৌধুরী সেখান থেকে চলে যায়।
তুষ্টি শ্বাশুড়ি এর কথা মত গোসল করে ভারি লেহেঙ্গা গয়না খুলে ফেলে।
তুষ্টি গোসল সেরে রুমে আসতে দেখতে পায় প্রণয় ঢুকেছে রুমে।
দু'জনের চোখাচোখি হওয়ায় তুষ্টি চোখ নামিয়ে নেয়।
প্রণয় এগিয়ে আসে তুষ্টির দিকে
" জামা খুলেছিস কেন?"
তুষ্টি অবাক হয়ে যায় প্রণয়ের কথা শুনে,
" মানে?"
" মানে কি জামা খুললি কেন? তোকে পার্মিশন দিয়েছি আমি জামা খুলতে?"
" আ আন্টি "
প্রণয় এক হাতে তুষ্টির গাল দু'টো চেপে ধরে,
" কি বললি আবার বল। "
" আ আমার ল লাগছে। "
" আগে বলল কি বললি। "
" আ আন্টি। "
প্রণয় তুষ্টির কথায় আরও জোরে তুষ্টির গাল চেপে ধরে,
" আন্টি নয় মা হবে মা। কি হবে আবার বল। "
" ম মা। ছা ছাড়ো। "
" একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ এর পর থেকে নিশ্বাস নিতে গেলেও আমার কাছে জিজ্ঞেস করবি। নিশ্বাস নিব আমি? বুঝতে পেরেছিস। "
" হ্যা। "
"গুড। "
প্রণয় তুষ্টির গাল ছেড়ে বাথরুমে চলে যায় নিজে।
তুষ্টি হাটু গেড়ে মাটিতে বসে পরে।
এ কেমন প্রণয় তার সামনে উপস্থিত হলো।
তবেকি সে দিন তুষ্টি সত্যি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছিল।

চলবে?

( রেসপন্স করো নাইলে বাদ দিয়ে দেব লেখা।)

Address

Barishal
8522

Website

facebook.com

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when NL Trisha posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

যে নারী তার স্বামীর বদনাম অন্য পুরুষের কাছে করে তার সম্পর্কে বিশ্বনবী কি বলেন জানেন?? #reelsviralシ #fypシ゚viralシ2024fyp #fypシ゚viralシfypシ゚viralシalシ #videoviralシ #viralvideoシ #viralreelschallenge #trendingreelsvideo #fypシ #sadstory #tiktokviral

একজন স্ত্রীর অবহেলায় কি হয় জানেন?? #reelsviralシ #fypシ゚viralシ2024fyp #fypシ゚viralシfypシ゚viralシalシ #videoviralシ #viralvideoシ #viralreelschallenge #trendingreelsvideo #fypシ #sadstory #tiktokviral

গল্পঃকালো মেয়েটি।

মোরা বরিশাইল্লা😍😍 তারুণ্য উৎসব২০২৫. (ব্রজমোহন কলেজ বরিশাল)।

মানুষ কত সহজে ভুলে যায় 💔💔 #reelsviralシ #fypシ゚viralシ2024fyp #fypシ゚viralシfypシ゚viralシalシ #videoviralシ #viralvideoシ #viralreelschallenge #trendingreelsvideo #fypシ #sadstory #tiktokviral

যার জন্য সব কিছু ছেড়ে দিবেন,সে একদিন আপনাকে ছেড়ে দেবে💔🥲 #reelsviralシ #videoviralシ #viralvideoシ #sadstory #tiktokviral #fypシ゚viralシ2024fyp #fypシ゚viralシfypシ゚viralシalシ #viralreelschallenge #trendingreelsvideo #fypシ

খাবারে বিষ ঢেলে দিলে সেটা চিকিৎসা করা সম্ভব, কিন্তু কানে বিষ ঢেলে দিলে সেটা চিকিৎসা করা সম্ভব নয়💔🥲 #reelsviralシ #videoviralシ #viralvideoシ #tiktokviral #viralreelschallenge #trendingreelsvideo #fypシ #sadstory #fypシ゚viralシ2024fyp #fypシ゚viralシfypシ゚viralシalシ

একটা পুরুষ কখন কষ্ট পায় জানেন??🥲💔 #reelsviralシ #videoviralシ #viralvideoシ #tiktokviral

একটা বিবাহিত নারীর অতিরিক্ত জিদে কি হয় জানেন......??🥲💔 #reelsviralシ #videoviralシ #viralvideoシ #tiktokviral

এই সমাজ যাকে বউ পাগল বলে ইসলাম তাকে কি বলে জানেন??❤️🥰 #reelsviralシ #videoviralシ #viralvideoシ #tiktokviral

পুরো পৃথিবী যদি এক দিকে থাকে আর স্বামী তার স্ত্রীর হাতটা ধরে রাখে তবে একজন নারী সিংহের মতো বাঁচতে পারে❤️❤️ লেখাঃসংগৃহীত কন্ঠেঃতৃষা #reelsviralシ #videoviralシ #viralvideoシ #viralreelschallenge #trendingreelsvideo #fypシ #sadstory #tiktokviral

আপন মানুষ শিখিয়েছে,আপন মানুষ বলে কিছু হয়না🥲💔 #videoviralシ #reelsviralシ

NL Trisha

24/01/2025

19/12/2024

19/12/2024

17/12/2024

17/12/2024

17/12/2024

17/12/2024

Address

Website

Alerts

Videos

Shortcuts

Share

Category