Aronno Siya

Aronno Siya Two souls with but a single thought, Two hearts that beat as one.��

Aronno�Siya

01/01/2025

𝐇𝐚𝐩𝐩𝐲 𝐍𝐞𝐰 𝐘𝐞𝐚𝐫 💝

চীনে ১৯২ মিটার গভীরতায় একটি বিশাল ভূগর্ভস্থ বন আবিষ্কৃত হয়েছে যার নাম সিঙ্কহোল! এটি লেই কাউন্টিতে অবস্থিত! এই কাউন্টিট...
27/12/2024

চীনে ১৯২ মিটার গভীরতায় একটি বিশাল ভূগর্ভস্থ বন আবিষ্কৃত হয়েছে যার নাম সিঙ্কহোল! এটি লেই কাউন্টিতে অবস্থিত! এই কাউন্টিটি এই সিঙ্কহোলের জন্যই পরিচিত। সিঙ্কহোলটিকে তিয়ানকেংও বলা হয়, যার অর্থ চীনা ভাষায় "স্বর্গীয় গর্ত"।
এটি সম্ভাবত 2022 সালের মে মাসে আবিষ্কার হয়!
এই গর্তে বেড়ে ওঠা প্রাচীন গাছগুলি প্রায় ৪০ মিটার লম্বা। ধারনা করা হচ্ছে যে সেখানে বিজ্ঞানের অজানা প্রজাতিও থাকতে পারে।

🙂
24/12/2024

🙂

22/12/2024

যে তোমার চোখের মণি তার কাছে তুমি কয়লার খনি😊🩶

21/12/2024

পৃথিবীতে মানসিক শান্তির চেয়ে বড় কিছু নেই,
হোক একাকীত্বে কিংবা কোলাহলে ☺️

20/12/2024

কারো মায়ায় আসক্ত না হওয়া ভালো
কারণ মায়া জিনিস টা অনেক খারাপ 🥲🩶

এক মাস হয়নি জন্মানোর তাতেই ফেসবুক পেজ খুলে বসে আছে বাহহহ!🫠 (This is Business🙂)
18/12/2024

এক মাস হয়নি জন্মানোর তাতেই ফেসবুক পেজ খুলে বসে আছে বাহহহ!🫠 (This is Business🙂)

⛔ঘেউলের সংসার(৪র্থ এবং শেষ পর্ব)তারা দুজন মেতে আছে পৈশাচিক কাণ্ডে। আমি ধীরে ধীরে সেই ঘর থেকে বের হয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম।...
11/12/2024

⛔ঘেউলের সংসার
(৪র্থ এবং শেষ পর্ব)

তারা দুজন মেতে আছে পৈশাচিক কাণ্ডে। আমি ধীরে ধীরে সেই ঘর থেকে বের হয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম। বাইরে থেকে বাবা আর মায়ের উল্লাসের শব্দ কানে ভেসে আসছে। জুঁইয়ের করুণ পরিণতির কথা ভাবতেই আমার কান্না পেতে লাগলো। তখনই সেই অদৃশ্য নারী কন্ঠস্বরটা উদয় হলো আমার পেছন থেকে আবার, 'ভয় নেই খোকা, দুঃখ করো না। সাহস রাখো। ভয়ানক সেই রাত এসে হাজির হয়েছে তোমার জীবনে। বাঁচা-মরার রাত। এটাকে মোকাবেলা করতে হবে তোমাকেই।'

আমি কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বললাম, 'আমার যে কী ভয় লাগছিল! আমি ভেবেছিলাম তুমি আর ফিরে আসবে না!'

'এটা কী হয় খোকা! এতগুলো বছর ধরে অতৃপ্ত থেকে অপেক্ষা করে গেছি এই রাতটার। আজ রাতেই উপযুক্ত সময় তোমার বাবা-মা রুপি শয়তান ঘেউল দুটোকে চিরদিনের জন্য ধ্বংস করে দেয়ার। এরপর তোমাকে আর কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তুমিই হবে তোমার নিয়ন্ত্রক!'

আমি গলা সামান্য খাটো করে জিজ্ঞেস করলাম, '
তুমি যে বলেছিলে আমি কথা বলতে পারি এটা জানলেই তারা আমাকে খুন করে ফেলবে! কিন্তু কেন করবে ওরা এটা? আমার সাহায্য ছাড়া ওরা ঘেউলের জগতে ফিরে যেতে পারবে না! তবে তারা আমাকে হত্যা করবে কেন?

'এটা ঠিক খোকা! মানুষের আহ্বানে তারা এই জগতে এসেছিল। এবং মানুষের যে কিনা অর্ধেক মানুষ এবং অর্ধেক ঘেউল তার মাধ্যমেই এই জগৎ থেকে বিদায় নিতে পারবে তারা। কিন্তু তাদেরকে তাদের জগতে ফিরে যেতে তোমার মুখ থেকে উচ্চারিত মন্ত্রই যথেষ্ট নয়। এর জন্য দরকার তাদের নিজের সন্তান অর্থাৎ তোমার রক্ত! হ্যা, ওরাও এই রাতটার জন্যই অপেক্ষা করছিল। এখন শেষ বারের মতো কোনো একটা মানব সন্তানের মাংস আর রক্ত খাচ্ছে। তোমার রক্ত বা মাংস তারা খেতে পারবে না এর জন্য। মেয়েটাকে খাওয়া শেষে তোমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে উচ্চারণ করাবে সেই বিতাড়িত করার মন্ত্র। যা তাদের দুজনের কাছে সংরক্ষণ করা আছে। তারপর তোমাকে সেই মোমবাতি গুলোর মাঝে রেখে হত্যা করবে। তোমার রক্তের স্পর্শই এই জগৎ থেকে তাদের মুক্তি দেবে। এই জগৎ থেকে বিলীন হয়ে যাবে তোমরা তিনজনে। তবে তুমি যদি তাদের কথামতো মন্ত্রগুলো উচ্চারণ না করো তাহলে তোমাকে ওরা কিছুই করতে পারবে না। হয়তো কিছুটা বেশি অত্যাচার করবে তোমার উপর। তুমি যতক্ষণ পর্যন্ত মন্ত্র উচ্চারণ না করছো তোমার জীবন তাদের কাছে মূল্যবান। তুমি বেঁচে থাকবে।

'কিন্তু তাতে কী লাভ? হয়তো আমি বেঁচে থাকবো কিন্তু আমার বাবা-মা অর্থ্যাৎ দুজন ঘেউল তারাও তো এই জগতে আটকে থাকবে, তারা আটকে থাকলে তাদের ক্ষুধার তাড়নায় মারা যাবে আরও শত শত মানুষ। আমার আরও অনেক আগেই ওদের জানানো উচিত ছিল আমি কথা বলতে পারি। তাহলে এতদিনে ওরা থাকতো অন্য জগতে। হয়তো আমি মারা যেতাম। কিন্তু বেঁচে যেত অনেক নিরপরাধ মানুষ!' বললাম আমি বিনয়ের সাথে।

'বাহ, খোকা! এই দুজন পিশাচের মাঝে থেকেও তোমার বয়সের তুলনায় তোমার মনুষ্যত্ববোধ সুন্দর বিস্তীত। কিন্তু ভেবে দেখ এত সহজেই এদেরকে মুক্তি পেতে দেবে তুমি? এরা এই জগতে অন্যায় ভাবে প্রবেশ করে কত নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে ক্ষুধার তাড়নায়! জুঁই এবং অন্য কাজের মেয়েগুলোর কথা ভাবো। বাইরে থেকেও প্রায়ই মানুষকে বোকা বানিয়ে সন্ধ্যার পর এই বাড়িতে নিয়ে আসতো তারা। তুমি তখন ঘরে বন্ধি থাকতে। মনে পড়ে বাইরে থেকে ভেসে আসা তোমার বাবা-মায়ের পৈশাচিক হাসির কথা! হাড় চিবানোর শব্দ। ওরা যদি আমার শরীর আর তোমার বাবার শরীর দখল করে না নিত তবে আজ আমি আর একজন তোমার মতোই বিনয়ী, মানবিক চিন্তাশীল পুরুষ হতো তোমার বাবা-মা। এর আগেও কত নিষ্পাপ মানুষকে হত্যা করে এই পর্যন্ত টিকে আছে তারা।

সব কিছু থেকে বঞ্চিত করেছে তারা তোমাকে। আমাদের শরীর দখল করে তারা করে গেছে পৈশাচিক সব কাজ। তোমার কী মনে পড়ে না তোমার সঙ্গে কী নিষ্ঠুর ব্যবহার করে গেছে তারা! তোমার বাবা-মা যতটা না ওই ঘেউল দুটো তার চেয়ে বেশি আমি! আমি তোমাকে ভালোবাসি খোকা। তুমি কেন তোমার এত সুন্দর জীবনটাকেশয়তান ঘেউল দুটোর জন্য উৎসর্গ করবে!'

দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি। এবং বুঝতে পারলাম বাবা আর মায়ের প্রতি কতটা রেগে রয়েছি আমি। আমার সঙ্গে করা বাবার সমস্ত নিষ্ঠুরতা গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো। জুঁই সহ, সেই মেয়েটার খণ্ডিত লাশ, বীভৎসতা সব! এই অদৃশ্য নারী কণ্ঠস্বরের প্রতি কেন আমার এত টান, বিশ্বাস আর ভালোবাসা তাও অনুমান করতে পারছি। সেই আমার প্রকৃত মা। আমার একমাত্র শুভাকাঙ্খী এই জগতে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, 'কী করতে হবে তাহলে আমার এখন? এই বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনো পথ নেই! আর বের হলেও এই দুজনকে আমি ধ্বংস করবো কী করে! আমি বেঁচে গেলেও তারা যে তাদের হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করবে না! আর এই বাড়ির বাইরে যেতে যে তুমিই আমাকে নিষেধ করেছিলে, কারণ এই বাড়ির বাইরে তুমি আমার সাথে যেতে পারবে না!'

'পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে খোকা। তোমার জন্য এই ঘরের চাইতে বাইরের জগৎটাই বেশি নিরাপদ। আজ রাতে তুমি ধ্বংস করবে তোমার মা-বাবা রুপি এই দুজন ঘেউলকে। নিশ্চিন্ন করে দেবে ঘেউল এবং মানুষ দুই দুনিয়া থেকে তাদের! এরপরেই তো তোমার মুক্তি!'

'কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব?' বিস্মিত হলাম আমি।

'শোনো তাহলে।'

অদৃশ্য নারী কণ্ঠস্বরটা এমন কিছু কথা বলল আমাকে শিউরে উঠলাম আমি। এটা কী আধো সম্ভব! আমি কী সময় মতো কাজটা করতে পারবো! কাজটা করতে পারলে তবেই পৃথিবী থেকে ধ্বংস হয়ে যাবে এই দুটি অপশক্তি এবং আমিও বেঁচে থাকবো। কাজটা করতে না পারলেও আফসোস করার কিছু থাকবে না নিজের জন্য। হয়তো আমি মারা যাব তবে আমার মৃত্যুর সাথে এই পৃথিবী থেকে উধাও হয়ে যাবে দুজন অভিশপ্ত পিশাচও তাদের জগতে। বন্ধ হবে নিরপরাধ মানুষ হত্যা। কিন্তু খারাপ লাগবে শুধু অদৃশ্য এই নারীটির জন্য। যে কিনা মৃত্যুর পর দীর্ঘ দিন আমার সঙ্গে থেকে গেছে আমাকে বাঁচানোর জন্য। আমার প্রকৃত মা। তার প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়ে যাবে। ঘেউল গুলোও পাবে না তাদের কর্মের শাস্তি। না কাজটা ঠিক ভাবে করতেই হবে আমাকে। হঠাৎ অদৃশ্য কণ্ঠস্বরটার অস্তিত্ব উধাও হয়ে গেল ঘরটা থেকে।

তখনই দরজার সামনে উপস্থিতি টের পেলাম দুজনের। বাবা আর মা এসে দাঁড়িয়েছেন। রক্তে গোসল হয়ে গেছে দুজনেই। আমার সামনে এসে একটা কাগজ আমার দিকে বাড়িয়ে দিল। এরপর হাটুগেড়ে বসে পড়লো দুজনেই আমার সামনে। মাথা নত করে একসঙ্গে দুজনে বলে উঠল, 'আশীর্বাদ করুণ প্রভু! দীর্ঘদিন এই জঘন্য মানুষের দুনিয়ায় পার করেছি আমরা। জন্ম দিয়েছি আপনাকে। বিতাড়িত করুন আমাদের এই জগৎ থেকে এই অপবিত্র রাতে। চলুন আমাদের সাথে ওই ঘরে। উচ্চারণ করুন সেই মন্ত্র!' এই বলেই তারা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে শব্দ করে হাসতে লাগলো। উন্মাদ হয়ে গেছে যেন দুজনে। আমার শরীর গুলিয়ে উঠছে। নিজেকে শান্ত রাখতে পারছি না উত্তেজনায়। অদ্ভুত কাগজটা মেলে ধরলাম চোখের সামনে। এক অদ্ভুত ভাষায় কিছু একটা লেখা রয়েছে ওটায়। কিন্তু লেখাটা আমি পড়তে পারছি এবং আশ্চর্য্য লেখাটায় কী বলা হয়েছে তাও আমি বুঝতে পারছি। এ যেন আমার খুব চেনা কোনো একটা ভাষা। পরিকল্পনা মতো তারা যা বলবে তাই করতে হবে আমাকে।

ধীরে ধীরে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে বাবা আর মায়ের ঘরে গিয়ে হাজির হলাম। তারাও এসেছে আমার পিছু পিছু। জুঁইয়ের শরীরের অবশিষ্ট হাড়গোড় আর রক্তে ভিজে আছে পুরো ঘর। গা গুলিয়ে বমি আসতে চাইলো আমার। কথামতো মোমবাতি গুলোর মাঝখানে বসে পড়লাম। মা আমার সামনে আর বাবা পেছনে বসলেন। দুজনের চোখ-মুখই আনন্দে আর উত্তেজনায় উজ্জ্বল হয়ে আছে। আবার কেমন একটা বিষাদও ভর করলো ওদের মুখে। আমিও কাঁপছি। ঠোঁট যেন আঠার মতো লেগে আছে। সেই প্রতীক্ষিত সময় এসে গেছে। অদৃশ্য নারী কণ্ঠস্বরের পরিকল্পনাটা মনে করতে লাগলাম।

মানুষের পক্ষে ঘেউলকে হত্যা করা অসম্ভব। একটা ঘেউলকে হত্যা করতে পারে কেবল আরেকটা ঘেউল। দুজন মানুষের শরীর দখল করলেও মানুষের রক্ত আর মাংস ভক্ষণের মাধ্যমে আমার সামনে পেছনে বসে থাকা দুজনের শরীরই এখন ঘেউলের শরীরে রূপান্তরিত হয়েছে। তারাই কেবল এখন একে অপরকে হত্যা করতে পারবে। কাজটা ঘটবে কিভাবে, তাইতো! আমার হাতে যে মন্ত্রটি রয়েছে তা যদি উল্টো করে পড়ি এবং স্পর্শ করি আমার সামনে বসে থাকা মায়ের গলা তখন সাথে সাথেই শরীর থেকে ঘেউলটার আত্মা বেরিয়ে যাবে, সেখানে আশ্রয় নেবে মুহূর্তেই অদৃশ্য কণ্ঠস্বরের সেই নারীটি। হ্যা তখন সে নিয়ন্ত্রণ করবে ঘেউলটির শরীর, এরপর হত্যা করবে অপর ঘেউল অর্থাৎ বাবাকে। এরপর নিজেকে। এভাবেই ঘেউলদের সৃষ্ট ফাঁদে জড়িয়ে তারা দুজনই চিরো জীবনের জন্য ধ্বংস হয়ে যাবে। বেঁচে থাকবো আমি!

বাবা আর মা দুজনেই উৎসুক হয়ে অপেক্ষা করছেন মুহূর্তটির জন্য। আমি কাগজটা তুলে নিয়ে দেরি না করে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে উচ্চারণ করলাম উল্টো মন্ত্রটি। মায়ের চোখদুটো বড় বড় হয়ে গেল। গগনবিদারী চিৎকার বেরিয়ে এলো সেই কণ্ঠ থেকে। বাবার প্রতিক্রিয়া পেছনে ঘুরে দেখার সময় পেলাম না। শুধু ক্রোধে ভরা একটা গোঙানি কানে এলো। সময় দিলাম না তাদের। সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে চেপে ধরলাম মায়ের গলা। নিস্তেজ হয়ে গেল তার শরীর। বাবা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। স্তব্ধ হয়ে গেছে আমার এই কাজ দেখে। তারা ভাবতেও পারেনি এমনটা ঘটতে পারে। আমি লাফিয়ে ঘরের এক কোণে চলে গেলাম। তার ঠিক পরের মুহূর্তেই মায়ের নিস্তেজ শরীরে প্রাণ ফিরে এলো। কিন্তু তার দৃষ্টিতে আমার দিকে কোনো ক্রোধ নেই। সমস্ত ক্রোধ বর্ষণ করছেন তিনি বাবার দিকে। বুঝলাম কাজ হয়ে গেছে। অদৃশ্য সেই কণ্ঠস্বরের নারীটি ভর করেছে তার ভেতর। আমাকে হত্যার দায়িত্বটা মাকেই দিয়েছিলেন বাবা। মা তার কোমরের কাছ থেকে ধারালো ছুরিটা বের করলেন। বাবা বুঝে উঠার আগেই ছুটে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন বাবার উপরে।

বাবা প্রতিরক্ষা করার সুযোগ পেলেন না নিজের। ছুরিটা তার গলায় গেঁথে গেল। ছুরির এক টানে তার গলনালি ছিড়ে বাইরে বেরিয়ে এলো। ছিটকে বের হতে লাগলো রক্ত। ক্ষোভের সঙ্গেই চিৎকার করলেন মা। এরপর ঘুরলেন আমার দিকে। ভয়ে আমি থরথর করে কাঁপছি। মায়ের রক্ত মাখা মুখে মায়াবী হাসি ফুটে উঠল। ছুরিটা ফেলে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলেন আমাকে। ফুঁপিয়ে উঠে বললেন, 'এই দিনটা! এটার জন্য অপেক্ষা করে গেছি কতদিন আমি! অবশেষে! আমার খোকা!' আমিও শক্ত করে চেপে ধরলাম তাকে। মনে হলো আমার জীবনের সবচেয়ে কাছের মানুষটাকে পেয়ে গেছি আমি। বললাম, 'মা!'

হঠাৎই আলগা করে দিলেন তিনি আমাকে। কাঁদো কণ্ঠে বললেন, 'এবার আমার পালা খোকা। যত দ্রুত সম্ভব আমাকে মরতে হবে না হলে নারী ঘেউলটা যাকে তুমি মা ডাকো সে আবার দখল নিতে চাইবে শরীরটা। হ্যা, তোমাকে আগে বলিনি , এই দুটো ঘেউলের সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যাব আমিও। কিন্তু তুমি এখন থেকে মুক্ত। এই বাড়ির বাইরে যাবে তুমি। মানুষের জগৎটা যে কত সুন্দর দেখতে পাবে, নিজের উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে চলো। একটা আশ্রয় তুমি পেয়ে যাবে। আর ভুলে থাকার চেষ্টা করো নিজের শৈশবের এসব স্মৃতি।'

এক মুহূর্তে আমার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। কান্নায় ভেঙে পড়লাম। এক মুহূর্তের জন্য মাকে পেয়ে আবার এত দ্রুত হারাতে হবে মানতেই পারছি না। মা শেষবারের মতো আমাকে জড়িয়ে ধরলেন, 'খোকা তুমি মানুষ এবং ঘেউল দুটোর মিশ্রনে সৃষ্টি। তুমি যেমন মানুষ পুত্র, তেমন ঘেউল পুত্রও। নিজের মানুষ ব্যক্তিত্বকে শক্তিশালী করো, মানবিক হয়ো। কারণ একটা বয়স যখন পার করবে তুমি তোমার ভেতর দুটো স্বত্তার সৃষ্টি হবে। ঘেউলদের পৈশাচিকতা, রক্ত তৃষ্ণা, ক্ষমতা তোমার ভেতর থেকে জেগে উঠবে। ওটাকে কিছুতেই আটকানো যাবে না। ঘেউলের পুত্র করে তুলো না নিজেকে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করো!'

আমি অসহায় ভাবে দাড়িয়ে রইলাম। মা ছুরিটা তুলে নিয়ে নিশ্চিত করলেন নিজের মৃত্যু। তার সেই মৃত্যু চিৎকারে কেঁপে উঠল আমার সমস্ত হৃদয়,মন,শরীর!

📌 সমাপ্ত

©

⛔ঘেউলের সংসার(৩য় পর্ব)মাঝরাতে একটা মেয়েলি কণ্ঠের চিৎকারে ঘুম ভেঙে গেল আমার। জুঁইয়ের কণ্ঠ! পুরো ঘর অন্ধকার। ধড়ফড় করে বিছা...
09/12/2024

⛔ঘেউলের সংসার
(৩য় পর্ব)

মাঝরাতে একটা মেয়েলি কণ্ঠের চিৎকারে ঘুম ভেঙে গেল আমার। জুঁইয়ের কণ্ঠ! পুরো ঘর অন্ধকার। ধড়ফড় করে বিছানা থেকে নীচে নেমে দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। । দরজাটা খোলা। সামান্য ধাক্কা দিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলাম। বুকটা কাঁপছে ধুরু ধুরু করে। ওর কিছু হয়নিতো! সেই রাতের মতো পুরো ঘরে মোম বাতির আলোয় ভরে আছে। জায়গায় জায়গায় নকশা করে মোমবাতি রাখা। মেয়েলি কণ্ঠটার গোঙানি কানে এলো সামনের ঘরটা থেকে। বাবা-মার ঘর ওটা। ভয়ে ভয়ে তাদের ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম। ঘরের ভেতরে ঢুকে দৃশ্যটা দেখে আমার পুরো শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগলো। মনে হচ্ছে পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। জুঁইয়ের লাশ পড়ে আছে মেঝেতে, তাকে ঘিরে আছে মোমবাতির সারি। সেগুলোকে ঘিরে বসে আছে বাবা আর মা। মেয়েটার বীভৎস লাশের মুখটা হা হয়ে আছে আতঙ্কে, তার করুণ চোখ দুটো তাকিয়ে আছে আমার দিকে। মেঝে ভরে আছে রক্তে। আমার ভেতরটা কেমন শূন্য শূন্য মনে হচ্ছে। বাবা-মা এক মনে মোমবাতি গুলোর দিকে তাকিয়ে ছিল। ধীরে ধীরে মুখ তুলে দুজনের চোখ দুটো আমার মুখের দিকে স্থির করলো। শিহরণ জাগানো সেই পৈশাচিক দৃষ্টি। ওই মুখ মানুষের সমস্ত মায়া মমতা বিসর্জন দেয়া মুখ।

তাদের সেই দৃষ্টি, মোমের কম্পিত ঝাপসা আলো, ঘর জুড়ে ছায়ার নৃত্য, রক্তাক্ত মেঝে আর লাশ আমার মাথা গুলিয়ে উঠল। আমি ধীরে ধীরে পিছাতে লাগলাম। মায়ের মুখটা কিছুটা কোমল হয়ে এলো হঠাৎ। 'কথা বলতে যান তুমি। কিছু একটা বলো খোকা? '

এই প্রথম ক্রোধ অনুভব করলাম আমি নিজের মাঝে। চেঁচিয়ে বললাম, 'মেয়েটা আমাকে তোমাদের চাইতে বেশি ভালোবাসতো। কত যত্ন করতো। আমিও ওকে ভালোবাসতাম। তোমরা কেন এমনটা করলে!'

বাবার ক্রুদ্ধ ফ্যাকাশে মুখে পৈশাচিক হাসি ফুটলো, 'ভালোবাসা! তোমাকে যত ছোট ভেবেছিলাম অতো ছোট তুমি নও দেখছি! আমরা যা করেছি তা তোমার এবং আমাদের সবার জন্যই মঙ্গল। মেয়েটা ৩য় পক্ষ। আমাদের মাঝে ৩য় পক্ষ বলে কেউ বা কিছু থাকতে পারে না! জানি একটা নারী যার কিনা শরীর নেই সে ৩য় পক্ষ হয়ে এতদিন তোমাকে পথভ্রষ্ট করে রেখেছিল। আমাদের সম্পর্কে তোমাকে ভুল বুঝিয়েছে। ও তোমার ক্ষতি ছাড়া ভালো আর কিছুই চায় না। আমরাই তোমার প্রকৃত বন্ধু। ও আমাদের সম্পর্কে যা বলেছে তার সবই মিথ্যা! আমরা তোমার কোনো ক্ষতি করবো না! এসো খোকা যোগ দাও আমাদের সঙ্গে। '

ক্রোধের সাথেই জবাব দিলাম, 'তাতো দেখতেই পাচ্ছি! তোমরা কতো ভালো কাজ করছো! তিনিই আমাকে এতদিন রক্ষা করেছেন, এখনো করবেন! তোমাদের চাইতে অদৃশ্য সেই কন্ঠটাই আমার বেশি কাছের লোক, শুভাকাঙ্ক্ষী।'

'হাহাহা! খোকা! ভুলে যাও ওকে তুমি। এতবছর আমাদের ভুলেই বোকাটা তোমার সাথে থাকতে পেরেছে। আমরা আন্দাজও করতে পারিনি ওর আত্মা এই বাড়ি থেকে এখনো মুক্তি পায়নি। তবে এখন ওর অবস্থা যা করেছি দুনিয়ার কোনো শক্তিই ওকে আর তোমার কাছে আনতে পারবে না। তুমি আমাদের কথামতো চলো এতেই তোমার মঙ্গল। আমরা ছাড়া তোমার আর আপন কেউ নেই।'

ভয় আর আতঙ্কে আমার মন সংকুচিত হয়ে এলো। আমি একা! কত একা! সেই অদৃশ্য নারীর কন্ঠস্বরটা আমায় বলেছিল যদি কোনোদিন ভয়ানক বিপদে আমি পড়ি এবং সাহায্য করার মতো কেউ না থাকে আমার পাশে, তখন যাতে বাবা-মার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা না করি। কারণ তাদের শক্তির কাছে আমি কিছুই না। তবে একটা সময়ে আমার ক্ষমতা তাদের থেকে বেশি হবে। সেই সময়ের অপেক্ষা করতে হবে আমাকে। তাই কন্ঠটা আমি কিছুটা নমনীয় করে মায়ের কাছে গিয়ে বসে পড়লাম। মুখটা মায়াময় করে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, 'আমি কে মা? তোমরা কারা? অদৃশ্য কন্ঠস্বরটাই বা কে?'

মা কোনো উত্তর দিলেন না। বাবা মুচকি হেসে বললেন, 'সেসব তুমি জানতে পারবে খোকা! তবে তার আগে জেনে নাও,তুমি আমাকে, তোমার মাকে যতটা খারাপ ভাবছ আমরা ততটা খারাপ না। আমরা কেবল মানুষ হত্যা করে খাই এই যা। যার যার খাবার, সে সে খাবে। এই নিয়মটা মেনেই জগৎ চলে। বিড়াল ইঁদুর খায়, ইঁদুর শস্য, শস্য পানি খায়। মানুষও তো খাবার হিসেবে কত প্রাণ হত্যা করে। হাতে রক্ত মাখায়। আমাদের খাবারও মানুষের মাংস আর রক্ত!'

'তোমরা মানুষ নও?'

'না খোকা! তবে শোনো আমাদের কথা। আমাদের জগতে আমরা ঘেউল নামে পরিচিত। এই মানুষের জগতে আমাদের বলা হয় পিশাচ। কারণ আমরা মানুষের তাজা রক্ত আর মাংস খাই। আমরা এবং আমাদের রক্ত, পূর্বপুরুষ, পরবর্তী প্রজন্ম যে জগতে বাস করে সেখানে আমরা সকলেই ক্ষমতাবান। সেখানে আমরা আমাদের ক্ষুধার মাংস ও তৃষ্ণার রক্ত জোগাড় করতে এক ধরনের প্রাণী পালন করি। গুল নাম ওগুলোর। সেগুলো বিরাট আকার, কথা বলতে পারে না, লম্বা শরীর, দু পা, দুই হাত, বিশাল স্তন, মাথার উপর চুল। বুঝতেই পারছ প্রাণীগুলো দেখতে কেমন? হ্যাঁ, মানুষের মতোই। তবে ওরা এই জগতের মানুষের মতো বুদ্ধিমান কিংবা তীব্র অনুভূতি সম্পন্ন প্রাণ নয়। আকারেও বিশাল বড়।

আমাদের জগতে প্রায়ই মানুষ সম্পর্কে নানান কথা শুনতাম আমরা। আমাদের জগতের বেশ কিছু অভিশপ্ত ঘেউল মানুষের পৃথিবীতে চলে আসতো। তাদের সঙ্গে নিয়ে আসতো তাদের ক্ষমতা। কিন্তু কিছুতেই মানুষের বুদ্ধি আর উচ্চারিত কিছু শব্দের কাছে নিজেরা জিততে পারতো না। ধ্বংস হয়ে যেত। আমরা আলোচনা করতাম মানুষরা দেখতে অনেকটা গুলের মতো , শুধু আকারে ছোট আর বুদ্ধিমান। তাদের মাংস আর রক্ত নাকি গুলের চাইতে হাজার গুণ ভালো। হ্যা , এখন বলতেই পারি কথাটা সত্য! তবে আমি আর তোমার মা ঘেউলের জগৎ ছেড়ে এই জগতে এসেছি অদ্ভুত ভাবেই। আমরা প্রায় শুনতাম কিছু কিছু মানুষ নাকি ঘেউলদের উপাসনা করে। এত বুদ্ধিমান, শক্তিশালী প্রাণী মানুষ! ঘেউলের উপাসনা করে আমাদের বিশ্বাস হতো না। তারা নাকি দিন রাত সাধনা করে আমাদেরকে আহ্বান করতে থাকে তাদের জগতে।

কিন্তু একদিন আমি আমার থাকার ঘরের পেছনে অদ্ভুত একটা গর্ত দেখতে পাই। নতুন সৃষ্ট। চার কোণা খাঁজকাটা গর্তটা দেখে মনে হলো হঠাৎ মাটি ফুঁড়ে সৃষ্টি হয়েছে এটি। গর্তটায় উকি দিয়েও ওটার তল দেখতে পেলাম না। নাকে এলো এক অদ্ভুত সুঘ্রাণ। পুরো শরীর আমার গুলিয়ে উঠল নেশায়। সুস্বাদু কিছু একটা ওটার ভেতর অপেক্ষা করছে যেন আমার জন্য। ঝাঁপিয়ে পড়লাম গর্তটার ভেতর। কী করে জানবো আমার জগৎ থেকে এই একটা সিদ্ধান্তই আমাকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে! প্রায় অনেকক্ষণ ধরে নিচে নামতে শুরু করলাম। এরপর এসে পড়লাম বিশাল একটা ঘরে। আমার সামনে গুলের মতো দেখতে কিন্তু আকারে ছোট অনেক গুলো প্রাণী। বুঝলাম ওরাই মানুষ। ওরাই আমাকে আহ্বান করে নিয়ে এসেছে।

নিজের চোখের সামনে দুটো মানুষের মাথা-কাটা শরীর দেখতে পেলাম। আমার কাছে উৎসর্গ করেছে তারা। ভুল করলাম আমি। জিহ্বায় পানি চলে এলো ওগুলো দেখে। ঝাঁপিয়ে পড়লাম লাশ দুটোর উপরে। ওগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে খাবার মাধ্যমে গ্রহণ করলাম তাদের উৎসর্গ। বন্ধ হয়ে গেল আমার জগতে ফেরার পথ। তবে গুলের তুলনায় মানুষ অসাধারণ খেতে। আটকে গেলাম এই জগতের মায়ায়।

যারা আমার কাছে মানুষের রক্ত আর শরীর উৎসর্গ করতো তাদের নানান ইচ্ছা পূরণ করতে লাগলাম। এই জগতে মানুষের তুলনায় অলৌকিক ক্ষমতা ঘেউলদের অনেক বেশি। কিন্তু আমার কথা ছড়িয়ে পড়তেই মানুষের একটা দল বিদ্রোহ করলো। তাদের স্বজাতি হত্যা কিছুতেই তারা মেনে নেবে না। ভাবতে পারো খোকা, এই ছোট্ট মানুষের দলের সাথে আমি সর্বশক্তি নিয়েও পেরে উঠিনি। বিশেষ করে এরা যখন বিশেষ কিছু শব্দ উচ্চারণ করতো তখন আমার সমস্ত শক্তি বিলুপ্ত হয়ে যেত। আমাকে বন্ধি করার ক্ষমতাও তাদের আছে। আমি পালিয়ে বেড়াতে লাগলাম। মানুষের রক্ত এবং মাংস দরকার ছিল আমার বেঁচে থাকার জন্য। এই জগতে থাকা অন্য কোনো প্রাণীরই রক্ত বা মাংসের গন্ধ সহ্য করতে পারতাম না। নানান কিছুর রূপ নিয়ে, ছল করে মানুষকে পথভ্রষ্ট করে নিজের শিকারে পরিণত করতে লাগলাম।

কিন্তু যেখানেই আমি যাই সেখানেই ঘেউলদের নিয়ে সতর্ক একটা গোষ্ঠীকে দেখতে পাই। তারা আমার উপস্থিতি টের পেয়েই তাদের তন্ত্র-মন্ত্র আর সাধনা বল দিয়ে ধ্বংস করার জন্য ছুটে ছুটে খোঁজ করে আমার। তাদের সম্মিলিত শক্তির তুলনায় নিজেকে এক নগন্য প্রাণ মনে হয়। কত বছর লুকিয়ে লুকিয়ে পার করে দিয়েছি এই জগতে। একটা সময় পর অনুধাবন করলাম আমাদের থাকা উচিত আমাদের দুনিয়ায়, আর মানুষের তাদের দুনিয়ায়। দুই দুনিয়ার মিশ্রন ভয়ানক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। কিন্তু কী করে ফিরে যাব জানা ছিল না আমার।

তখনই দেখা হয় একটা মেয়ে ঘেউল এর সাথে। তোমার মা! সেও আমার মতো করেই এই জগতে চলে এসেছিল। এবং তান্ত্রিকদের ভয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। সে আমাকে জানায় কেবল একটাই উপায় আছে আমাদের জগতে ফিরে যাওয়ার। একটা মানুষ সন্তানই তন্ত্র বলে আমাদেরকে আবার আমাদের জগতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু সন্তানটা আমাদের নিজেদের হতে হবে। কিন্তু আমরা ঘেউল। আমরা দুজন কী করে মানুষের সন্তানের জন্ম দেব! তখনই একমাত্র পথটা খুলে গেল আমাদের সামনের। আমাদের সমস্ত পৈশাচিক শক্তি বিসর্জন দিতে হবে। এর মাধ্যমে মানুষের ভেতর থেকে একজন নারী ও একজন পুরুষের আত্মা দখল করতে পারবো আমরা। মিলিত হবো দুজনে মানুষের শরীর থেকে। মেয়েটার গর্ভ থেকে যে সন্তানটা জন্ম গ্রহন করবে সেই আমাদের আবার ঘেউলদের জগতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রায় দীর্ঘদিন অনেক জায়গায় ঘুরে, অনেক মানুষ শিকার করে টিকে থাকতে হয়েছে আমাদের। কিন্তু দখল করতে পারিনি কারো শরীর। এরপর এক রাতে একটা গাড়ির পিছু নিয়ে এই বাড়িতে আশ্রয় নেই আমরা। প্রাণ কেরে নেই বাড়িতে থাকা একমাত্র দম্পতি দুজনের। এরপর থেকে এই যে দেখছ আমি আর তোমার মা রয়েছি এই দুটো চেহারার শরীর নিয়ে। বাস করতে থাকি মানুষের মতো। জন্ম দেই তোমায়। অপেক্ষা করতে থাকি তোমার বড় হওয়ার আমাদের মুক্তির জন্য। তুমি বড় হলে কিন্তু কথা বলতে পেরেও এতদিন অভিনয় করে গেছ। আমাদের ফেরা হয়নি তাই আর আমাদের দুনিয়ায়! এতদিনে বেঁচে থাকার জন্য আমরা দুজন যত জন মানুষকে হত্যা করেছি এর দায় তোমার উপর পড়ে খোকা! যোগ দাও আমাদের সাথে। মুক্ত করো আমাদের! শান্তিতে থাকতে দাও এই দুনিয়ায় মানুষদের! তুমি এই ঘেউলের সংসারের একমাত্র পুত্র। '

দীর্ঘ কাহিনীটা শুনতে শুনতে চমকে উঠছিলাম বার বার। মাও মাথা ঝাঁকালো, মানে বাবা যা বলল সব সত্যি। আমি বললাম, ' যে নারী কন্ঠটা এতদিন আমার সঙ্গে কথা বলতো সে কে?'

'তোমার মা যেই শরীরটা দখল করে আছে সেই শরীরের পূর্বের মালিক। এখন প্রেতাত্মা। বোকাটা বিশ্বাস করে তুমি আমাদের নয়, ওর সন্তান! তাই এতদিনেও তোমাকে ছেড়ে যায়নি!' বিদ্রুপের সুরে বললেন বাবা।

কেমন এক অজানা অচেনা অনুভূতিতে মনটা কাঁপছে আমার। সেই নারীকণ্ঠটার অনুভব খুব করে আরেকবার পেতে ইচ্ছা করছে! যে আমাকে এই পরিস্থিতিতে একটু সাহস দেবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, 'তোমাদের মুক্ত করতে আমাকে কী করতে হবে?'

'সেসব পরে। আগে শেষবারের মতো একবার এই মেয়েটার শরীরের মাংস আর রক্ত চেখে দেখ। বিশ্বাস করো এমন স্বাদ তুমি দুনিয়ার আর কিছুতেই খুঁজে পাবে না! তুমি মানব সন্তান হলেও তোমার অর্ধেকটা পিশাচ! এটা তোমার পেটে হজম হবে। হাহাহা!'

আমার প্রচণ্ড ঘৃণা আর রাগ জন্মালো লোকটার উপর। মায়ের মুখটাও এবার লাশটার উপর স্থির হয়ে গেল। হঠাৎ আমার মনে পড়লো কথাটা, অদৃশ্য কণ্ঠস্বরের সতর্ক বার্তা। আমি কথা বলতে পারি জানতে পারলে বাবা-মা আমাকে খুন করে ফেলবে। তাদের যখন তাদের জগতে ফিরে যেতে আমাকে দিয়ে কথা বলানোর এতই দরকার ছিল তখন তারা আমাকে খুন করবে কেন! আমার মাধ্যমে তারা কী করে ফেরত যাবে তাদের দুনিয়ায়! আমাকে খুন করে! শিউরে উঠলাম আমি!

বাবা-মা দুজনেই বুভুক্ষুর মতো ঝাঁপিয়ে পড়লো জুঁইয়ের লাশের উপর। আমি ধীরে পিছাতে লাগলাম দরজার দিকে। প্রচণ্ড দিশেহারা আর উত্তেজনা বোধ করছি আতঙ্কে। হঠাৎ আমার শরীর শিউরে উঠল একটা চিরচেনা স্বত্তার অস্তিত্বের উপস্থিত অনুভব করে।

আমরা তিন জন ছাড়াও ঘরে আরেকজন প্রবেশ করেছে বুঝতে পারলাম। অদৃশ্য কেউ! আমার ঘাড়ে আলতো স্পর্শ পেলাম। সেই সাথে সেই চিরচেনা নারীর অদৃশ্য কন্ঠ স্বরটা কানে এলো, 'ভয় নেই খোকা! আমি এসে গেছি!

📌চলবে

🔳(পরের খন্ডে সমাপ্ত)

©

09/12/2024
⛔ঘেউলের সংসার (২য় পর্ব)তার ঠিক এক মাস পর আমাদের বাড়িতে আরেকটা কাজের মেয়ে এলো। মেয়েটার বয়সও আগের মেয়েগুলোর সমান। নাম জুঁই...
07/12/2024

⛔ঘেউলের সংসার
(২য় পর্ব)

তার ঠিক এক মাস পর আমাদের বাড়িতে আরেকটা কাজের মেয়ে এলো। মেয়েটার বয়সও আগের মেয়েগুলোর সমান। নাম জুঁই। মা মেয়েটাকে বুঝিয়ে দিলেন তারা বাড়িতে না থাকলে কিভাবে আমার খেয়াল রাখতে হবে। আমি যে কথা বলতে পারি না এটা শুনে মেয়েটার মুখে মায়া ভর করলো দেখলাম। মেয়েটা বেশ হাসি-খুশি , আমাকে ভাইয়া বলে ডাকতে লাগলো। দিনের বেশির ভাগ সময় বাবা-মা বাড়ির বাইরে থাকতেন। ফিরতেন রাতে। মেয়েটা সারাদিন আমার সঙ্গে কথা বলে যায় । কথাগুলো আমার এত ভালো লাগে! ইচ্ছা করে তার সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলি। কিন্তু অদৃশ্য কন্ঠস্বরটার সতর্কবাণী আমাকে বাধা দেয়। কিছুতেই কাউকে জানানো যাবে না যে আমি বোবা নই! একই ঘরে আমরা ঘুমাই।

একরাতে জুঁই নীচে বিছানা করে ঘুমিয়ে আছে। আমি অপলক দৃষ্টিতে তার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। এমন সময় ঘরের দরজা ঠেলে ঢুকল কেউ। বাবা! আমি জড়সড় হয়ে উঠে বসলাম। বাবার মুখে মুচকি হাসি লেগে রয়েছে। এমনটা এর আগে আমি দেখিনি। তিনি আমার কাছে এসে বসলেন। আলতো করে ডান হাতটা ধরে বললেন, 'ভয় পেও না খোকা! কেমন আছ তুমি?'

আমি ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তার মুখের দিকে চেয়ে রইলাম, এমনটা তিনি কখনো করেন না। দরজার দিকে তাকাতে দেখলাম মাও সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তার মুখে চিরো চেনা সেই মায়াবী হাসি। তারা কী চায় এত রাতে! বাবা আমার মাথায় আলতো করে হাত বোলালেন, 'খোকা, তোমাকে এতদিন এই পৃথিবীর সৌন্দর্য্য আর বীভৎসতা থেকে আমরা বাঁচিয়ে রেখেছি। ৯ বছর পূর্ণ হলো তোমার বয়স আজ রাতে, অথচ এই বাড়ির বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে তুমি কিছুই জানো না। আমাদের ইচ্ছা তোমাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেব এখন থেকে আমরা। শীঘ্রই আমরা এই বাড়ি বদল করে নতুন বাড়িতে উঠব। সেখানে দেখবে আমরা তোমার কেমন ভালো বাবা আর মা হই! তুমি স্কুলে যাবে, তোমার বন্ধু হবে, সবার সাথে মিশবে তুমি। তুমি কী আমাদের সাথে যেতে রাজি আছ?'

আনন্দে আমার চোখ-মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বাবা এত সুন্দর করে কথা বলছে আমার সাথে! ইচ্ছা করছে চেঁচিয়ে বলি, 'আমি যাব বাবা!' কিন্তু সেই অদৃশ্য নারী কন্ঠস্বরটা আমার কানের কাছে এসে বলল, ' না করে দাও খোকা, এই বাড়ি থেকে তুমি বের হলে ওরা তোমাকে মেরে ফেলবে। কেউ তোমাকে সাহায্য করতে পারবে না!' মুহূর্তে মুখ আমার শুকিয়ে গেল। আমি ডানে-বামে মাথা ঘুরিয়ে জানালাম আমি অন্য কোথাও যাব না। বাবার মুখের হাসি মুহূর্তেই উবে গেল। সেখানে স্থান নিল চিরচেনা ক্রুদ্ধ রুপ, রাগে কাঁপছেন তিনি। মায়ের দিকে ঘুরে চেঁচিয়ে বললেন, 'আমি তোমায় আগেই বলেছিলাম ও এখনো এই বাড়ি ছেড়ে যায়নি! তোমার ছেলের সাথেই আছে ও। ওকে নানান বদ মতলব দিয়ে যাচ্ছে এতদিন ধরে। ওই ওকে শিখিয়ে দিচ্ছে বাড়ি ছেড়ে না যেতে। ও কী করে এখনো এই বাড়িতে থেকে গেল! বোকা মেয়ে!'

আমি ভয়ে কুঁচকে গেলাম। মা অসহায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। বাবা আমাকে উঁচু করে তুলে ঘরের এক দিকে ছুড়ে মারলেন। আমি উউউ করে গুঙিয়ে উঠলাম। একটা হাত আমার শরীরের নীচে চাপা পড়ে মচকে গেল আর মাথাটা মেঝেতে ঠুকে রক্ত ঝরতে লাগলো। প্রচণ্ড যন্ত্রনায় চারপাশে শুধু অন্ধকার দেখলাম। এরপর আর কিছু মনে নেই।

যখন চোখ খুললাম তখন আমার হাত ব্যান্ডেজ করে বাধা, হাতটা আড়াআড়িভাবে সেটে আছে বুকের সাথে। মচকে গেছে। মাথায়ও ব্যান্ডেজ বাধা। একটু নড়তে গিয়েই ব্যাথায় গুঙিয়ে উঠলাম। কাজের মেয়েটিকে দেখলাম আমার পাশে বসে আছে। কাঁদো কাঁদো মুখ। চোখ মেলেছি দেখেই আমার কপালে মুখে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বলল, 'কিছু হয় নাই ভাইয়া সব ঠিক হয়ে যাবে, বাবার কথা সব সময় শুনে চলবে!' আমি আবার চোখ বন্ধ করে ফেললাম।

পুরোপুরি সেরে উঠতে আমার মাস খানিক সময় লাগলো। এতদিনে একটুও খারাপ লাগা কাজ করেনি শুধু জুঁই এর জন্য। সে এক মুহূর্ত আমাকে ছেড়ে কোথাও যায় না। যাওয়ার জায়গাও অবশ্য নেই! তবুও বাড়িটা বেশ বড়। সারাদিন নিজের সম্পর্কে গল্প করে যায় সে। সে তার বাবা-মা কে অনেক ছোটবেলায় হারায় । এরপর অন্যের বাড়িতে বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে শৈশব কাটে। কৈশোরে পা পড়তেই এক লোক ওকে চাকরি খুঁজে দেয়ার কথা বলে। কাউকে না জানিয়েই সে লোকটার সাথে এই শহরে চলে আসে। লোকটার কাছ থেকে আমার বাবা-মা ওকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে এরপর। এখানে সে আনন্দেই আছে। পুরো বাড়িতে ওকে যা ইচ্ছা করার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে, যা খুশি সে রান্না করতে পারবে, যা ইচ্ছা খেতে পারবে।
প্রায়ই নতুন পোশাক পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায়। শুধু একটাই শর্ত এই বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে না। জুঁইয়ের তেমন ইচ্ছা আছে বলেও মনে হয় না। ওর বয়স কত হবে! ১৩-১৪!

আমি নিজের বাবা-মাকে বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই ভয় করে চলি। অদৃশ্য সেই কণ্ঠস্বরের কথাগুলো বিশ্বাস করে বাবা-মাকে ভয় করার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমি লুকিয়ে অনেকবার তাদের দুজনের কথা শুনেছি। প্রথম প্রথম তাদের কথার অর্থ না বুঝলেও যখন বুঝতে শুরু করেছি তখন শিউরে উঠতাম। মায়ের কোমল চেহারার পেছনে যে এক পিশাচি আছে তা আমার বিশ্বাস হয়ে যায়। আর বাবার চেহারাটাই আমার কাছে আতঙ্কের আরেক রুপ ছিল।

মাঝেমধ্যে সন্ধ্যা বেলায় বাবা বাড়িতে ঢুকেন হাঁপাতে হাঁপাতে। উত্তেজনায় তার শরীর কেঁপে কেঁপে উঠে। চোখ-মুখ উজ্জ্বল। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে আর জুঁইকে টেনে এনে। আমাদের শোবার ঘরের ভেতর রেখে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন। আমরা দুজনেই প্রতিবাদহীন ভাবে চুপিসারে বসে থাকি।

ঘরের সব আলো তখন বন্ধ হয়ে যায়। দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালে শোনা যায় বাবা আর মায়ের চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ। একবার মনে হয় তারা ঝগড়া করছেন, আবার মনে হয় দুজনেই আনন্দে চিৎকার করে হাসাহাসি করছে, হঠাৎ মনে হয় কোনো একজনের গোঙানির শব্দ কানে আসছে, ওরা যেন কিছু খাচ্ছে। হাড় চিবানোর শব্দ। ভয়ে ভয়ে আমি জুঁইয়ের পাশে গিয়ে বসি। শক্ত করে ওর শরীর চেপে বসে থাকি। অন্ধকারে ওর মুখ দেখা যায় না। সেও আমার মতো ভয় পাচ্ছে কিনা বুঝতে পারি না। এরপর এক সময় দুজনেই ঘুমিয়ে যাই।

দিন, সপ্তাহ, মাস যত কাটতে থাকে তত জুঁইয়ের চঞ্চলতা কমতে থাকে। তাকে কেমন উদাস দেখায়। কম কথা বলে। আমি অনুমান করতাম বন্ধি জীবন আর তার ভালো লাগছে না। তার জন্য আমার খুব মায়া হতো। এর আগে যতগুলো মেয়ে এই বাসায় থাকতো সবাইকেই আমি পছন্দ করতাম। তাদের হঠাৎ চলে যাওয়ায় কষ্ট পেয়েছিলাম। এবং শেষে তাদের কী পরিণতি হয়েছে জানতে পেরে বড় একটা মানসিক ধাক্কা পেয়েছি। জুঁইয়ের সাথেও তাই ঘটবে!কেন যেন মনে হচ্ছে এই মেয়েটাকে হারালে আমি আমার নিঃসঙ্গ জীবনে আর কোনো বন্ধু পাবো না।

অদৃশ্য সেই নারী কণ্ঠস্বরটা একরাতে আমাকে বলল, মেয়েটার প্রতি এতটা মায়া অনুভব করো না। বিপদ হবে। যা ঘটে তা ঘটতে দাও।

আমি বিরক্ত হলাম। মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে, তার কথা শুনতে, তার সঙ্গে বসে থাকতে, তার স্পর্শ আমাকে এতটা আনন্দ দেয়। আমি তার ক্ষতি কী করে হতে দেই!

আমি সারাবাড়ি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি এই বাড়ি থেকে মেয়েটির পালিয়ে যাওয়ার কোনো পথ আছে কিনা! কিন্তু কোনো ফাক রাখেননি বাবা-মা।

একদিন। বাড়িতে বাবা-মা কেউ নেই। আমাদের শোবার ঘরের সাথে লাগোয়া যে বাথরুম আছে জুঁইকে ইশারা করে ওখানে নিয়ে গেলাম। দরজাটা বন্ধ করতেই চমকে উঠে সে আমার দিকে তাকালো। ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে রয়েছে। আমি তার হাত চেপে ধরে বললাম, 'চিৎকার দিও না, আমি বোবা নই! কথা বলতে পারি!'

এক মুহূর্তে শিউরে উঠে পিছিয়ে গেল মেয়েটা। যেন জোরে কেউ তাকে ধাক্কা দিয়েছে । বিস্ময়ে হা হয়ে গেল তার মুখ। ঠোঁট কাঁপছে। আমি তাকে বললাম , 'তুমি পালিয়ে যাও জুঁই, আমার বাবা-মা তোমাকে এখানে এনেছে হত্যা করার জন্য।' এরপর বলতে শুরু করলাম কেন আমি বোবার মতো সেজে থাকি। আর বাড়িতে রাখা আগের কাজের মেয়েগুলোর কী পরিণতি হয়েছে।

জুঁই কোনো কথাই বলল না। শুধু হা করে আমার দিকে চেয়ে রইলো। নিজেকে যেন সে বিশ্বাস করতে পারছে না। আমি নিজেও কাঁপতে লাগলাম। আমার এই ৯ বছরের জীবনে এই প্রথম কোনো মানুষের সঙ্গে কথা বললাম আমি। নিজের কন্ঠই নিজের কাছে অপরিচিত লাগলো। মেয়েটা আমার দিকে একটু এগিয়ে এলো, আলতো করে আমার চিবুক স্পর্শ করেই উল্টো ঘুরে বাথরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে গেল। কাঁদছে সে! আমি বুঝতে পারছি না আমি কী ঠিক কিছু করলাম নাকি ভুল! অদৃশ্য নারীটা কথা বলতে কেন আমায় বাধা দিল না এখন।

সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আর আমার সঙ্গে দেখা করলো না। সন্ধ্যার পর সে যখন দেখা করতে এলো তখন সে একা নয়। বাবা-মাও তার সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঢুকলো। তাদের দুজনের দৃষ্টিতেই রাগ ঝরছে। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে জুঁই। বাবা শক্ত করে আমার হাত চেপে ধরে বলল, ' তুই এতদিন কথা বলতে পারতিস! শুধু শুধু আমাদের সঙ্গে নাটক করেছিস! তোর জন্য আমাদের কত কষ্ট করতে হয়েছে, কত সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে জানিস! ' মাও রাগের স্বরে বললেন, 'আমরা তোমাকে জন্ম দিয়েছি, বড় করেছি এভাবে ছল করে ধোকা দেয়া তোমার উচিত হয়নি! তুমি কথা বলতে পারও এটা কিনা আমাদের শুনতে হলো কাজের মেয়েটার মুখ থেকে!'

আমি যেন কাঠ হয়ে গেলাম! যাকে কিনা আমি বাঁচাতে চেয়েছি সেই কিনা আমাকে ধোকা দিল! ফুঁপিয়ে উঠল জুঁই, 'আমাকে মাফ করে দিও ভাই। তোমার বাবা বলেছিল তুমি কথা বলতে পারো নাকি সত্যিই বোবা, এটা যদি আমি তাকে জানাতে পারি তাহলেই আমাকে মুক্তি দেবে এই বাড়ি থেকে। এই বাড়ি আর আমার ভালো লাগছে না!'

আমার চোখ ফেটে শুধু পানি গড়িয়ে পড়লো। একজন অদৃশ্য নারী যে আমার সঙ্গে সঙ্গে থেকে আমাকে এতদিন রক্ষা করে এসেছে তাকে আমি অনুভব করতে পারতাম। কিন্তু নারীটির কোনো উপস্থিতি এই মুহূর্তে আশেপাশে অনুভব না করে ঘাবড়ে গেলাম। অসহায় মনে হলো নিজেকে।

বাবা ধাক্কা দিয়ে আমাকে মেঝেতে ফেলে দিলেন। বললেন, 'কথা বলো খোকা! না হলে আমাদের আসল রূপ দেখবে এবার।' আমি চুপ করে একবার বাবার আরেকবার মায়ের দিকে তাকালাম। তাদের কারও চেহারাতেই আমার জন্য মায়া নেই। বাবা এক মুহূর্তে নিজের পকেট থেকে একটা ধারালো ছুরি বের করলেন। ছুটে গিয়ে চেপে ধরলেন ওটা জুঁইয়ের গলায়। 'কথা বল খোকা, নইলে ওর গলা কেটে এখানেই ফেলে রেখে যাব!'

দিশেহারা বোধ করলাম আমি। চেঁচিয়ে বললাম, 'মেরো না ওকে, থামো!'

মায়ের মুখ হা হয়ে গেল। তিনি ছুটে এলেন আমার কাছে, জড়িয়ে ধরলেন আমাকে, 'এইদিনের জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম আমরা খোকা! অবশেষে এই অভিশপ্ত মানুষের দুনিয়া থেকে মুক্তি পাবো আমরা!'

খিলখিল করে হেসে উঠলেন বাবা। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলেন জুঁইকে সামনে থেকে। 'আজ রাতেই তোমার মাধ্যমে আমি আর তোমার মা ফিরে যাব আমাদের দুনিয়ায়! অপেক্ষা করো তুমি!'

তাদের দুনিয়া মানে! তারা কারা!

মা আমাকে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে চলে গেলেন। বাবার মুখ ভরে আছে পৈশাচিক হাসিতে। জুঁই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। বাবা ওকে তুলে টানতে টানতে ঘরের বাইরে নিয়ে গেলেন। বন্ধ দরজার ভেতরে পুরো ঘরে আমি শুধু একা। এতটা অসহায় বোধ আমি আমার জীবনে আর করিনি কোনোদিন!

📌 চলবে

(আরো দুটি পর্ব রয়েছে)

©

⛔ঘেউলের সংসার (১ম পর্ব )যখন সবে বুঝতে শিখেছি তখনই দেখতাম প্রায় প্রতি ৬-৭ মাস পর পর আমাদের বাড়িতে নতুন কাজের মেয়ে রাখা হত...
05/12/2024

⛔ঘেউলের সংসার (১ম পর্ব )

যখন সবে বুঝতে শিখেছি তখনই দেখতাম প্রায় প্রতি ৬-৭ মাস পর পর আমাদের বাড়িতে নতুন কাজের মেয়ে রাখা হতো। আগের মেয়েগুলো যে কোথায় যেত তা আমার বোধগম্য হয়নি দীর্ঘদিন। কিন্তু একটা রাত আমার কাছে সব কিছু পরিস্কার করে দেয়। এক রক্তাক্ত হিংস্র জগতের সঙ্গে পরিচয় ঘটে আমার। তখন বয়স আমার ৯। একরাতে মেয়েলি একটা চিৎকারের শব্দে আমার ঘুম ভেঙে গেল। ফ্যান এবং ডিমলাইট বন্ধ দেখে বুঝলাম বিদ্যুৎ নেই। অন্ধকার হাতড়ে নীচে নেমে দরজার কাছে গেলাম। দরজাটা বাইরে থেকে আটকানো। কাজের মেয়েটা আমার সঙ্গে এক ঘরে মেঝেতে ঘুমায়। অন্ধকারে বোঝা যাচ্ছে না সে ঘরে আছে কিনা।

শরীরটা কেমন কেঁপে উঠল। বাবা আর মায়ের মৃদু কথা বলার শব্দ ভেসে আসছে দূর থেকে। যেন তারা কিছু একটা কথা নিয়ে হাসি-তামাশা করছে। সাথে সাথে মেয়েলি একটা কণ্ঠের গোঙানিও কানে এলো আমার। যেন প্রচণ্ড কষ্ট নিয়ে শব্দটা বের হয়ে আসছে তার গলা দিয়ে। আমি জোরে দরজা ধাক্কাতে লাগলাম। বাবা আর মায়ের কণ্ঠ মিলিয়ে গেল সাথে সাথেই। তাদের পায়ের আওয়াজ পেলাম, ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে এদিকে। দরজার সামনে এসেই আবার দুজনে ফিসফিস করতে লাগলো। তর্ক করছে কিছু একটা নিয়ে। বুঝতে পারলাম মা আপত্তি করছে দরজা খুলতে আর বলছে, ওর বয়স এখনো হয়নি এসব দেখার। বাবা বলছেন, এখন থেকেই এসব দেখে মানিয়ে নেয়া উচিত। না হলে বড় হয়ে আপত্তি করবে।

বেশ কিছুক্ষণ তর্ক-বিতর্ক করার পর দরজাটা খোলার শব্দ পেলাম। ভয়ে ভয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম আমি। পুরো ঘর মোমের কম্পিত আলোতে ভরে আছে। মেঝের জায়গায় জায়গায় মোম জ্বালিয়ে রাখা এক বিশেষ নকশায়। আমি অবাক হয়ে বাবা আর মার মুখের দিকে তাকালাম। বাবা উল্টো দিকের ঘরের ভেতর চলে গেলেন কোনো কথা না বলেই। বাবা কখনই আমার সাথে তেমন একটা কথা বলতেন না। ওই ঘরটাও মোমবাতির আলোয় ভরে আছে। মা আমার মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে বাবার পিছু নিলেন। আমি কয়েক মুহূর্ত স্তব্ধভাবে দাঁড়িয়ে থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম ঘরটার দিকে। ঘরে ঢুকেই আমি একটা প্রচণ্ড মানসিক ধাক্কা খেলাম। এই প্রথম খেয়াল করলাম বাবা আর মায়ের হাতে, কাপড়ে আর মুখে রক্ত লেগে রয়েছে।

মেঝেতে চিৎ হয়ে পড়ে আছে আমাদের বাড়ির কাজের মেয়েটা। সে যে বেঁচে নেই এটা তার গলার নিচ থেকে তৈরি হওয়া রক্তের স্রোতই সাক্ষী দিচ্ছে। মেঝের অর্ধেকের বেশি ভিজে আছে তার রক্তে । মেয়েটা চোখ দুটো বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আতঙ্কে হা হয়ে আছে মুখটা। লাশ! আতঙ্কে পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো আমার।

আমি মা আর বাবার দিকে বিস্ময় নিয়ে তাকালাম। বাবা আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে প্রায় টেনে নিয়ে ফেলে দিল মেয়েটার শরীরের উপর। গলা ফেটে বেরিয়ে আসা চিৎকারটা নিজের শরীর আর মনের সমস্ত শক্তি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করলাম। বাবা ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বললেন, 'মুখটা ওর গলার কাছে নাও খোকা, চেখে দেখ ওর রক্ত কেমন লাগে?' আমি করুণ মুখে মায়ের দিকে তাকালাম। মায়ের চোখ দুটো কিছু একটার লোভে জ্বলজ্বল করছে। আমার দিকে তার খেয়াল নেই। বাবা আমার মাথা চেপে ধরলেন মেয়েটার গলার কাছে। আমি ছটফট করতে লাগলাম। কিন্তু এরমধ্যে আমার মুখে ঢুকে গেছে সামান্য রক্ত। পেট গুলিয়ে বমি চলে এলো মুখে।

ধাক্কা দিয়ে এবার আমাকে ঘরের এক কোণে পাঠিয়ে দিলেন বাবা। পরমুহূর্তেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন মৃত মেয়েটির শরীরের উপর, মাও যেন এই মুহূর্তটার অপেক্ষা করছিলেন। তিনিও বাবার সঙ্গে যুক্ত হলেন ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঘরের দেয়ালের সাথে প্রায় মিশে গিয়ে দৃশ্যটা দেখলাম আমি। মেয়েটার পেট কামড়ে ছিড়ে নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলল মা। বাবা মেয়েটার গলা, স্তন, বুক কামড়ে ছিড়তে লাগলো। নরম অংশ গুলো মুখে নিয়ে চিবোচ্ছে। গলার সব শক্তি দিয়ে চিৎকার করতে ইচ্ছা হলো আমার আবার, চেঁচিয়ে বলতে ইচ্ছা করল থামো এবার। কিন্তু কথা বলার উপর গুরুতর নিষেধ আছে আমার উপর। কারণ তারা জানেন আমি বোবা। আমার বাবা-মা যদি জানতে পারেন আমি বোবা নই, কথা বলতে পারি তাহলে সাথে সাথেই খুন করে ফেলবে আমাকে।অচেনা একটা নারী কণ্ঠ এই সাবধান বাণীই আমাকে দিচ্ছে অনেক বছর ধরে। তাই তাদের কাছে আমি একজন বোবা।

আর সামলাতে পারলাম না নিজেকে। মেয়েটার শরীর খণ্ড থেকে খণ্ডতর হচ্ছে। বাবা আর মা তার রক্তে ভিজে চুপসে উঠছে। এক দৌড়ে ঘরটা থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম। দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে বিছানায় উঠে মাথার উপর বালিশ চাপা দিয়ে কাঁদতে লাগলাম। কখন ঘুমিয়ে গিয়েছি জানি না। পরদিন ঘুম ভাঙতেই দেখলাম অনেক সকাল হয়ে গেছে। ভয়ে ভয়ে দরজা খুলে বাইরে বের হলাম। পুরো বাড়ি খুঁজে না পেলাম বাবা আর মাকে না পেলাম কাজের মেয়েটির কোনো চিহ্ন।
এক মুহূর্তে আমার কাছে পরিস্কার হয়ে গেল আমাদের বাড়িতে থাকা পূর্বের মেয়েগুলোর পরিণতি।

সব সময়ের মতো আমি যাতে বাড়ি থেকে বের হতে না পারি এরজন্য বাড়ির গেট বাইরে থেকে বন্ধ। জানলার কাছে এসে দাঁড়ালাম। কয়েকটা গাছ আর বাড়ি ঘেরা উঁচু দেয়াল ছাড়া কিছুই চোখে পড়ছে না। সেইসব চিন্তা আবার আমার মাথায় খেলা করছে। কে আমি? আমার বাবা-মা এমন অদ্ভুত কেন? তারা নরখাদক! কেন তারা আমাকে বাইরের দুনিয়ায় নিয়ে যায় না! শৈশব থেকে নয় বছর বয়স পর্যন্ত এই বাড়ির বাইরে আমি যাইনি।

আমার বোবা সাজার পেছনের কাহিনীটা বলা যায়। শৈশবের সামান্য স্মৃতি আমার মনে পড়ে, মা আমাকে বারবার নানান শব্দ উচ্চারণ করে সেগুলো তার সাথে উচ্চারণ করতে বলতো। শব্দগুলোর অর্থ আমি বুঝতে পারতাম, উচ্চারণ করতেও পারতাম। কিন্তু যখনই মুখ নাড়িয়ে শব্দটি উচ্চারণ করতে যাই তখনই এক অদৃশ্য হাত আমার মুখ চেপে ধরে। কোনো শব্দই আমি করতে পারি না। বাবা আমাকে রীতিমতো শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করা শুরু করতো কথা বলার জন্য। কিন্তু আমি কেঁদে ফেললেও মুখ দিয়ে একটা টু শব্দ বের করতে পারতাম না।

আবার যখন বাবা-মা সামনে থাকে না তখন আমি আরামে শব্দ উচ্চারণ করতে পারতাম। তারা আমার কাছে আসতেই অদৃশ্য হাতটা আমার মুখ চেপে ধরতো। মনে পড়ে বাবা কতটা কঠোর স্বরে চিৎকার করে আমাকে শব্দ উচ্চারণ করতে বলতো। ভয়ে আমি কাঁপতাম। কিন্তু কিচ্ছু উচ্চারণ করতে পারতাম না। একসময় তারা ধরেই নিল আমি বোবা।

ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা আমাকে এক রুমে রেখে আলাদা ঘরে ঘুমায়। একরাতে একা শুয়ে আছি। হঠাৎ ঘরে কোনো একজনের উপস্থিতি অনুভব করলাম। একটা নারীর কন্ঠস্বর কথা বলে উঠল হঠাৎ। এটা মায়ের গলা নয় চিনতে পেরে শিউরে উঠলাম। কন্ঠটা শুধু আমাকে জানালো, সেই আমাকে কথা বলতে বাধা দিয়ে এসেছে। সে আমার ভালোর জন্যই এমনটা করছে। কারণ যেদিন আমি কথা বলা শুরু করবো সেদিনই আমার বাবা-মা আমাকে খুন করে ফেলবে। আমি লাফিয়ে উঠে টর্চ জ্বালালাম। কিন্তু ঘরে কাউকেই দেখলাম না।

এরপর থেকে প্রায়ই অদৃশ্য কণ্ঠস্বরটা হঠাৎ উদয় হয়ে আমার পিছন দিক থেকে, আমার বাবা-মা সম্পর্কে নানা ভাবে আমাকে সতর্ক করে দিতে লাগলো। তারা যে কোনো একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে আমাকে বড় করছে তা বোঝাতে লাগলো। মাকে আমি ভালোবাসি। অদৃশ্য কন্ঠস্বর যাই বলুক আমি জানি তিনি আমার কোনো ক্ষতি করবেন না। বাবার ভয়েই কথা বলতে পারলেও এখন বোবার মতো অভিনয় করে যেতে হয় আমাকে।

বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে আমি যতটুকু জেনেছি তা আমাদের বাড়িতে আসা কাজের মেয়েগুলোর কাছ থেকেই। মা সামান্যই বলতেন। মায়ের ঘরের তাকে থাকা বেশ কিছু বই পড়েও জেনেছি অনেক কিছু। তারা যদিও জানে না যে আমি পড়তে জানি। সেই অদৃশ্য নারী কণ্ঠস্বরটাই আমার শিক্ষক এই বিষয়ে।

জানলায় দাড়িয়ে থাকতে আর ভালো লাগছে না।কাজের মেয়েটিও নেই। প্রচুর ক্ষুধা লাগছে। মা কখন আসবে বুঝতে পারছি না। বাবা-মা প্রায়ই সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকেন। খাবার টেবিলের সামনে চলে এলাম। একটা বড় থালা বোল দিয়ে ঢাকা রয়েছে দেখে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। মা নিশ্চই খাবার রেখে গেছেন। প্লেটের উপর থেকে বোলটা সরাতেই আমার গলা ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইলো চিৎকারটা। কিন্তু সেই অদৃশ্য সত্তাটা চেপে ধরলো আমার মুখ। আমি ছিটকে মেঝেতে পড়ে গেলাম। প্লেটে শোভা পাচ্ছে কাজের মেয়েটির কাটা মাথা। চোখদুটো এখনো বিস্ফোরিত হয়ে তাকিয়ে আছে, মুখটা হা হয়ে আছে আতঙ্কে। আমার মুখ দিয়ে শুধু গগগগ শব্দ বের হতে লাগলো। চাপা কণ্ঠে মাটিতে মুখ গুজে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলাম।

মা কোথা থেকে বের হয়ে দৌড়ে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। উৎকণ্ঠা নিয়ে বলল, 'আমি বলেছিলাম তোমাকে খোকা কথা বলতে শিখেনি এখনও। শুধু শুধু ওকে দিয়ে এমন পরীক্ষা নিচ্ছ! বাইরে কোথাও গেলেও ও আমাদের কথা ও কাউকে বলবে না।'

মাথা উঁচু করতেই দেখলাম কিছুটা দূরে বাবার ক্রুদ্ধ দৃষ্টি, 'মানুষের বাচ্চা ও, এত সহজে বিশ্বাস করা যায় না!' এই বলেই কাটা মাথার প্লেটটা নিয়ে চলে গেলেন বাবা। আমি শক্ত করে মাকে জড়িয়ে ধরলাম। মা বলল, ' ভয় নেই খোকা। চলো তোমাকে কিছু রান্না করে দেই।' আমি তাকে জড়িয়ে ধরে টলতে টলতে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম। আরেকটা অদৃশ্য হাতও যেন আমার কাঁধ স্পর্শ করে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করলো, 'ভয় নেই কোনো, খোকা!

চলবে۔۔۔۔

📌চার পর্বের গল্প

©

Address

Barisal

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Aronno Siya posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share