20/09/2024
🔲 খাবার কেমন হয়েছে?
🔲 আল্লাহর রহমতে ভাল🥹
ক্বিয়ামতের একটি আলামত হ’ল হত্যাকান্ড বৃদ্ধি পাওয়া। হত্যাযজ্ঞ এত বেড়ে যাবে যে, পিতা ছেলেকে, ছেলে তার পিতাকে, চাচাকে ও প্রতিবেশীকে হত্যা করবে। এমনকি হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি জানবে না হত্যাকান্ডের কারণ কি?
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ঐ সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, মানুষের নিকট এমন এক সময় আসবে, যখন হত্যাকারী জানবে না যে, কি অপরাধে সে হত্যা করেছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানবে না যে, কি অপরাধে সে নিহত হয়েছে। [সহীহ মুসলিমঃ ৭০৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসের মানঃ সহিহ]
তিনি আরো বলেনঃ ‘ক্বিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ইল্ম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বা হত্যাকান্ড ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। হারজ অর্থ খুনখারাবী। তোমাদের সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে’।[বুখারী হা/১০৩৬; মুসলিম হা/১৫৭; মিশকাত হা/৫৪১০]
অন্যত্র তিনি বলেনঃ ‘ক্বিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে হারজ হবে। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! ‘হারজ’ কী? তিনি বলেন, ব্যাপক গণহত্যা। কতক মুসলমান বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা এখন এই এক বছরে এত মুশরিককে হত্যা করেছি। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তা মুশরিকদের হত্যা করা নয়, বরং তোমরা পরস্পরকে হত্যা করবে। এমনকি কোন ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে, চাচাকে, চাচাতো ভাইকে এবং নিকটাত্মীয়কে পর্যন্ত হত্যা করবে। তারা বলল, সুবহানাল্লাহ! হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তখন কি আমাদের বিবেক-বুদ্ধি লোপ পাবে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, না। তবে সে সময়ের অধিকাংশ লোকের জ্ঞান লোপ পাবে। তাদের কেউ কেউ মনে করবে সে একটি বিষয়ের উপর আছে অথচ সে থাকবে অন্য বিষয়ের উপর। এরপর তিনি বললেন, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন তাঁর শপথ! আমি আশঙ্কা করছি যে, সে অবস্থা আমাকে পেয়ে বসবে। আর তোমরা অবশ্যই উক্ত বিষয়গুলো থেকে নিজেদের রক্ষা করবে। (আবু মূসা আশ‘আরী বলেন,) হয়তো এ যুগ তোমাদেরকে ও আমাকে পেত, তাহ’লে তা থেকে আমার ও তোমাদের বের হয়ে আসা মুশকিল হয়ে যেত, যেমন নবী করীম (ছাঃ) আমাদের জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, আমরা ঐ অনাচারে যত সহজে জড়িয়ে পড়ব তা থেকে বের হয়ে আসা ততোধিক দুষ্কর হবে’।[হাকেম হা/৮৫৮৭; আহমাদ হা/১৯৬৫৩; বাযযার হা/২৬২৪; ছহীহাহ হা/১৬৮২]
তিনি আরো বলেনঃ কোন ব্যক্তি তার প্রতিবেশী, তার ভাই এবং তার পিতাকে হত্যা না করা পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না’।[আল-আদাবুল মুফরাদ হা/১১৮; ছহীহাহ হা/৩১৮৫]।
বর্তমানে দুনিয়াবী স্বার্থে নিরপরাধ মানুষকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হচ্ছে, তেমনি গুম করে হত্যা করা হচ্ছে। অনেক নিহত ব্যক্তির পরিবার জানতেই পারে না যে, কি কারণে তার পিতা, স্বামী বা ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরনের কাজ ক্বিয়ামতের অন্যতম আলামত। যে ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) বহু পূর্বেই সতর্ক করে গেছেন।
চুরি করলেও যেখানে হত্যা করা যায় না, সেখানে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হল মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে। আমরা দেশের নানা জায়গার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরদ্ধে কথা বলি। সেই জঘন্য ঘটনা এবার দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের কথিত শিক্ষার্থীরা ঘটাল। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
পরিবারের সবাইকে হারিয়ে একাই বেঁচেছিলেন তোফাজ্জল হোসেন, কিন্তু এই বাঁচাকে কি জীবন বলে? কতটা নির্মম ছিলো ওর জীবনটা। বাবা-মা-ভাই কেউ বেঁচে নেই, ভিষণ ভালোবাসার একটা মানুষ ছিলো, তারও অন্যকারো সাথে বিয়ে গেছে। এতোটুকু জীবনে এতো অপূর্ণতা, বাবা-মা-ভাই এবং ভালোবাসার মানুষকে হারানোর বেদনায় ছেলেটা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলো, হওয়ারই কথা। ও যেনো একটা জিন্দালা*শ হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় বেঁচে ছিলো এতোদিন। ওর সেই অপেক্ষা শেষ হয়েছে, চোর সন্দেহে কয়েকটা অমানুষ ও'কে পিটিয়ে মে*রে ফেলেছে। সব হারানো একটা ছেলে ঢাবির হল থেকে কি'বা চুরি করতো ভাই? একমুঠো ভাত? একটা রুটি?
এই অরাজকতার সাথে জড়িতদের পরিচয় যেটাই হোক, তাদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই।