08/03/2024
রাতের বেলা ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছিলাম তখন খালাতো বোনটা হঠাৎ আমাকে বললো,,,,,,
--- ভাইয়া আমাকে প্রপোজ করো,,।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম কিসের প্রপোজ,,? জবাবে সে বললো,,,,
--- আজকে আমার বান্ধবী বলেছে যাকে ভালোবাসতে হয় তাকে নাকি প্রপোজ করতে হয়,,।আমার বান্ধবীকেও তার ভালোবাসার মানুষ প্রপোজ করেছে আজ,,।এখন তুমি আমাকে প্রপোজ করো কারন তুমি সেদিন বলেছিলে আমাকে ভালোবাসো,,।এই নাও গোলাপ এটা দিয়ে এখন আমাকে প্রপোজ করবা,,,।
আমি একবার আব্বু আর একবার আম্মুর চেহারার দিকে তাকাচ্ছি,,।শরমের কারনে কিছু বলতেও পারছি না,,,।আব্বু বললো প্রপোজ করতে তাই কোনো উপায় না পেয়ে প্রপোজ করলাম,,।তারপর কোনো মতে কেটে পরলাম তাদের সামনে থেকে,,,।
আসলে খালাতো বোনটা ছোট বেলা থেকেই আমাদের সাথে থাকে,,।ওর বয়স বেড়েছে ঠিকই কিন্তু বয়সের তুলনায় মেধা বিকাশ ঘটেনি,,। একদম বাচ্চাদের মতো,,,।সেদিন ওকে বোন হিসেবে বলেছিলাম ভালোবাসি কিন্তু আজকে ও আমাকে এভাবে সবার সামনে বাশ দিবে চিন্তা করিনি,,,।
তার পরের দিন বাসায় আব্বু আম্মুর সাথে বসে টিভি দেখছিলাম তখন জান্নাত এসে বললো,,,,,,,,,
--- ভাইয়া আমার বান্ধবীর ভালোবাসার মানুষ আজকে তাকে বউ বলে ডেকেছে,,।এখন থেকে তুমিও আমাকে বউ বলেই ডাকবা,,,।
ওর কথা শুনে কাশি উঠে গেলো,,।আব্বু আম্মু দুইজনই জোরে হেসে দিলো,,।তখন জান্নাত আমাকে বললো,,,,,,
--- ভাইয়া একবার বউ বলে ডাকো তো,,,।
আমি অসহায়ের মতো আব্বু আম্মুর দিকে তাকালাম,,।এভাবে তাদের সামনে বাশটা না দিলেও পারতো,,।বাশ যখন খেয়েই গেছি তাই জান্নাতকে শান্তনা দেয়ার জন্য বললাম,,,,,
--- ও গো বউ আমার তুমি কেমন আছো গো,,,?
আব্বু আম্মু মনে হচ্ছে এখন হাসতে হাসতে নিচে গড়াগড়ি খাবে,,।তাদের হাসি দেখে মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো তাই রাগ করে বাসা থেকেই বের হয়ে গেলাম,,,।
দুই দিন ধরে আব্বু আম্মুর সাথে আর খাবার খেতে বসি না কারন কখন আবার জান্নাত এসে উল্টা পাল্টা বাশ দেয়া শুরু করে দেয় তার ঠিক নেই,,।আজকে ভার্সিটি শেষ করে বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন আমার আদরের ডাইনি খালাতো বোনটা আসলো,,।আমি যেই ভার্সিটিতে পড়ি ও সেই ভার্সিটির কলেজেই পড়ে,,।সবার সামনে এসে আমাকে সবচেয়ে সুন্দর বাশটাই দিয়ে বললো,,,,,
--- ভাইয়া আমার বান্ধবীর ভালোবাসার মানুষ আজকে ওকে ঘুরতে নিয়ে গেছে,,ফুসকা আইসক্রিম খাইয়েছে,,,।তুমি তো আমার ভালোবাসার মানুষ,,।এখন তুমি
আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবা,,ফুসকা আইসক্রিম খাওয়াবা,,,।
শেষ পর্যন্ত বন্ধুদের সামনেও বাশ ভরে দিলো এই ছেমরি,,।চুপচাপ ওর হাতটা ধরে ঘুরতে নিয়ে গেলাম,,যা যা খেতে চাইলো সব খাওয়ালাম,,,।
এখন আর আর বাসাতেই থাকি না তেমন একটা কারন কখন জান্নাত এসে আমাকে বাশ লাগিয়ে দেয় তার কোনো গ্যারান্টি নেই,,।আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম জান্নাত এখনো ঘুম থেকে উঠেনি,,।ডাইনিং টেবিলে আব্বু আম্মুকে দেখে আমিও বসলাম,,।জান্নাত ঘুম থেকে উঠার আগে নাস্তা করে কেটে পরতে হবে,,।নাস্তা খাচ্ছি তখন পিছন থেকে আমার বউটা থুক্কু বোনটা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,,,,,,,
--- ভাইয়া একটা সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য,,,।
আবার কি করবে কে জানে,,?সারপ্রাইজ দিবে নাকি বাশ দিবে বুঝতে পারছি না,,।ভয়ে ভয়ে বললাম কিসের সারপ্রাইজ,,?আর সাথে সাথেই জান্নাত আমার ঘাড়ের পিছে হাত দিয়ে টান মেরে ওর ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট মিশিয়ে দিলো,,,। আব্বু আম্মু চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে,,,।কিছুক্ষন পর জান্নাত আমাকে ছেড়ে দিলো,,।দুইজনই হাপাচ্ছি,,,।হাপাতে হাপাতে বললো,,,,,,
--- আজকে আমার বান্ধবী তার ভালোবাসার মানুষকে এভাবে সারপ্রাইজ দিয়েছে,,।তুমি তো আমার ভালোবাসার মানুষ তাই আমিও তোমাকে এভাবে সারপ্রাইজ দিলাম,,,।
ওই দিনের পর থেকে সাত দিন ধরে আব্বু আম্মুর সামনেই যাই না,,।জীবনে সবচেয়ে মারাত্মক সারপ্রাইজ পেয়েছিলাম সেদিন,,।এমন সারপ্রাইজ যেনো কেউ বাপের জনমেও না পায়,,,।
নিজের রুমে বসে একটু মোবাইল চালাচ্ছিলাম তখন আম্মু আমার রুমে আসলো,,।আম্মু একা না তার সাথে ডাইনি খালাতো বোনটাও এসেছে,,,।তাদের দেখে আমি ভাগার চিন্তা ভাবনা করছি,,।কিভাবে এখান থেকে পালানো যায়,,? তখনই জান্নাত আমাকে বললো,,,,,,,,,
--- ভাইয়া আজকে আমার বান্ধবী ওর ভালোবাসার মানুষকে বলেছে ওরা নাকি বেবি নিবে,,।এখন তুমিও আমাকে একটা বেবি এনে দাও,,কিউট একটা বেবি,,,।
ওর কথা শুনে আম্মুর সামনে আর এক মিনিটও থাকিনি,,দৌড় দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছি,,,। আর জীবনেও আমি আব্বু আম্মুর সামনে জান্নাতের সাথে কথা বলবো না,,,।
"
সমাপ্ত ---
রম্যগল্প : ালাতো_বোন