28/10/2022
একটি জবা ফুলের গল্প
রোজ বিকেল হলে দোয়েল একগুচ্ছ জবাফুল কানের উপরে গুঁজে দিয়ে কপালে একটা কাজলের টিপ পরে নিজেকে খুব যত্ন নিয়ে সাজায়। তারপর আয়নায় নিজেকে মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতে হারিয়ে যায় কল্পনার রাজ্যে। সেই রাজ্যে দোয়েল হলো রাণী। সে স্বপ্ন দেখে জবা ফুল দিয়ে সাজানো উড়ন্ত রথে চড়ে কেনো এক রাজা আসবে তাকে নিতে। সে তখন লাল টুকটুকে বৌ সাজবে। আয়নার দিকে তাকিয়ে দোয়েল ভাবে, ইস্ যদি ভালা কইরা খোঁপাডা বাইন্দা তাতে ফুলগুলা গুঁজতে পারতাম তাইলে না জানি আমাকে আরও কত সুন্দর লাগত। বলেই লাজুক হাসি হেসে দুহাতে মুখ লুকায় দোয়েল।
ভেতর ঘর থেকে দোয়েলের মায়ের (মিনতি) ডাক পড়ে।
- দুঅেল অ দুঅেল, দুলুরে সইন্দা হইলত কাপড়ডি ঘরে আন।
দোয়েল ওড়নার আঁচলে আয়নাটা মুছে বাঁশে গাঁথা লোহাতে আয়নাটা ঝুলিয়ে বাইরে কাপড় তুলতে যায়।
দরিদ্র কৃষকের মেয়ে দোয়েলের কাজ হলো রোজ সকালে ঠাকুরের ফুল তোলা, মায়ের সাথে গোবরের ঘুঁটে দেয়া, প্রতিদিন বিকেলে নিজেকে জবাফুল দিয়ে সাজানো আর সব শুকনো কাপড় ঘরে এনে তা ভাঁজ করে রাখা।
দোয়েল কাপড় তুলতে তুলতে পশ্চিম দিকের সারি করে লাগানো গাছগুলোর দিকে তাকায়। ও জানে এই গাছের আড়াল থেকে কেউ একজন প্রতিদিন দোয়েলকে দেখে। দোয়েলের মাঝেমধ্যেই অচেনা সেই মানুষটা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে করে খুব।
সপ্তাহখানিক ধরে সকালে ঠাকুরের ফুল তোলার সময় দোয়েল লক্ষ করে, কে যেন সকালে তুলসি তলায় একটা করে লাল গোলাপ রেখে যায়।তবে আজ প্রথমবার সেই গোলাপটার সাথে একটা টিপের পাতাও রাখা ছিল সেখানে।
দোয়েল গোলাপটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছিল আর কী যেন ভাবছিল।
তখন মেয়ের হাতে হঠাৎ এই লাল গোলাপ দেখে ভয় পেয়ে যায় দোয়েলের মা।
চেচিয়ে বলে, ওলো অলক্ষ্মী এই গুলাপ তর কাছে ক্যামনে আইল?
দোয়েল অসহায়ের মতো জানতে চায় - ক্যান মা?
- এই লাল গুলাপ খালি ঐ অপদেবতার রাজবাড়িতেই পাওয়া যায়। আমরার গেরামে এমুন গুলাপ আর কুনুখানে নাই।কই পাইলি তুই এই গুলাপ? এই অপদেবতার নজর এহন তর উপ্রে পড়ছেরে দুঅেল।তর এহন কি অইব।
দোয়েল তার মায়ের কথার বা দুশ্চিন্তার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারে না। শুধু ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে আছে। তবে মনে মনে তার যে অদৃশ্য একটা টান অনুভব হচ্ছে সেই অপরিচিত মানুষটার প্রতি তা দোয়েল কিছুটা অনুমান করতে পারে।
আজ বিকেলে কাপড় তুলতে এসে দোয়েল আঁড়চোখে তাকিয়ে ছিল গাছগুলোর দিকে হঠাৎ মনে হলো কেউ একজন সেখান দিয়ে দ্রুত হেঁটে চলে গেল। দোয়েলের বুকটা কেমন ধুকপুক করে উঠল। স্পষ্ট না দেখলেও সে বুঝেছে অপরিচিত সেই মানুষটা একজন সুদর্শন পুরুষ।
আস্তে আস্তে অপরিচিত সেই পুরুষের প্রতি দোয়েলের টান বাড়তেই থাকে। পনেরো বছরের সদ্য কৈশোরে পা দেয়া দোয়েল তার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা খুঁজে পায় না।
পরদিন সকালে ফুল তুলতে বের হয়ে দোয়েল দেখে আজ আর তুলসী তলায় তার জন্য কোনো ফুল বা অন্যকিছু রাখা নেই। খুব মন খারাপ হয় দোয়েলের। দোয়েল মনে মনে ভাবে কাল সে যে করেই হোক দেখবে সেই অপরিচিত মানুষটাকে। সারা রাত ঘুম আসে না দেয়েলের। এপাশ-ওপাশ করছে বারবার।
নিয়তি চোখ বন্ধ করেই বলে, কীরে দুলু ঘুমাস না ক্যান? তর লরা-লরিতে তো আমিও শান্তিতে ঘুমাইতে পারতাছি না। ভোরে উঠতে অইব সারাদিন মাডে কাম আছে। বাড়ি ফিরতে পারুম না।
দোয়েল ঘুমের ভান ধরে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে। স্বপ্নে সে দেখে পশ্চিমের গাছের সারিগুলো পিছনে ফেলে জবা ফুলে সাজানো রথে করে এক রাজা এসেছে তাকে নিয়ে যেতে।স্বপ্নে অপরিচিত সেই মানুষটার সাথে রাজাকে মিলিয়ে একটা সুন্দর পুরুষ আদল তৈরি করে দোয়েল।যার কাছে সে নিজেকে সঁপে দিবে মনে প্রাণে।
ভোরে ঘুম থেকে উঠে মায়ের সাথে এটা-ওটা করে দেয় দোয়েল। গামছায় দুপুরের খাবার বেঁধে মাঠে কাজে চলে যায় নিয়তি আর বিষু।
মেয়েকে বলে যায় যেন সাবধানে থাকে।বাড়ির বাইরে যেন না যায়।অপরিচিত কেউ আসলেও কথা না বলে।
আজ তিনদিন হলো দোয়েলদের উঠোনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা জবার গাছগুলোর ফুল আর কেউ তুলে না। গোবরগুলোও গর্তে পড়ে পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে। উঠোনেও আর কাপড় মেলে দেয়া হয় না। আজ তিনদিন হলো দোয়েল তার বাড়ি থেকে নিখোঁজ। পঞ্চায়েত ডেকে, পাশের গায়ের হাবিলদার এসে খুঁজেও কেউই দোয়েলকে খুঁজে বের করতে পারেনি।
হঠাৎ দোয়েলের মায়ের মনে পড়ে সেই লাল গোলাপের কথা।
"অপদেবতা" বলে চিৎকার করে উঠে মিনতি।
মাটিতে আছড়ে পড়ে বলে, রাজবাড়ির অপদেবতা লইয়া গেছে গো আমার দুঅেলেরে। আমার দুলুরে আমারে আইন্না দেও তুমরা।
মিনতির কান্নায় যেন আকাশ ফাটে।
অবশেষে সবাই প্রস্তুত হলো রাজবাড়িতে যাবার জন্য।
ঘন জঙ্গলের জন্য দিনের বেলাতেও সে বাড়িতে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না।এতই ভয়ংকর সে বাড়ি, প্রায়ই এখান থেকে মেয়েদের বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গেল বছর কয়েকজন ওঝা এসে তন্ত্র মন্ত্র পড়ে দুটো কঙ্কাল আর কয়েকখানা মানুষের হাড়ও বের করেছিল। গ্রামের সবাই বিশ্বাস করে অপদেবতারা সুন্দর মেয়েদের এখানে ধরে এনে বন্দী করে ভোগ করে।
মিনতির কথায় হাতে মশাল নিয়ে, একগোছা তাবিজ নিয়ে সেই রাজবাড়িতে যায় সবাই।সেই রাজবাড়ির সামনে যেতেই মশালের আলোতে তাদের চোখে পড়ে ছেঁড়া নুপুর আর কয়েক গোছা লম্বা চুল। দেয়ালের কাঁটাওয়ালা গাছে ঝুলানো নানা রঙের ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো। ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ভাঙা চুড়ি, কানের দুল,ছেঁড়া অন্তর্বাস, ভাঙা নখ, চুলের কাঁটা,গোছা চুল। এসব দেখে সেখানে থাকা সবার গা যেন শিউরে ওঠে। যত বাড়ির ভেতরে যায় ততই রক্তের আঁশটে গন্ধে সবার গা গুলিয়ে আসে। হঠাৎ তাদের চোখে পড়ে খুব পরিচিত গোলাপি একটা শাড়ি।এই শাড়িটাই নিখোঁজ হবার দিন পরেছিল দোয়েল। মশাল সামনে ধরে আরও একটু এগিয়ে যায় সবাই।
সামনে কিছু একটা দেখে তাদের চোখ ভয়ে শিউরে উঠে, পঁচা গন্ধে বমি ভাব হয় সবার। সবাই দেখে সামনে পড়ে আছে একটা মেয়ের পঁচা গলা বিবস্ত্র নিথর দেহ। কোথাও কোথাও কাটা যায়গায় পচন ধরে ফুলে উঠেছে দেহটা। তাদের আহট পেয়ে লাশের গা থেকে তিন-চারটে মিনি ইঁদুর এদিক ওদিক দৌঁড়ে পালাল। লাশটার ডান হাতে একটা কচলানো পঁচা জবা ফুলের ডাটা। বাঁ হাতে লাল তাগা বাঁধা আর মশালের আগুনে অনামিকায় চকচক করছে একটা গোলাপি পাথরের আংটি।
বিষু (দোয়েলের বাবা) আংটিটার দিকে তাকিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে যায়। মাত্র কিছুদিন আগেই ঠিক এমন একটা আংটি সে এনে দিয়েছিল দোয়েলকে। মেয়েটার মুখটা খুব চেনা লাগছে তার।
"মাইয়াডা আরেকটু শুকনা হইলে দেখতে ঠিক আমার দুঅেলের মতই লাগত" খুব শান্ত গলায় বলল বিষু।
পেছন থেকে সবাই তখন একসাথে চেঁচিয়ে বলল অপদেবতা ধরছে গো দুঅেলেরে অপদেবতা ধরছে। তাদের কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল বিষু।হুঁশ ফিরতেই বিভৎস এক চিৎকারে দোয়েলের উপর লুটিয়ে পড়ে সে। বিষুর চোখের সামনে ভাসে দোয়েলের প্রথম হাসি।আতুর ঘরের কান্না মাখা মুখ,হাঁটি হাঁটি পায়ের শৈশব, দোয়েলের মেয়ে বেলা। কতবার চেয়ারম্যানের সাথে জমিজমা নিয়ে রাগারাগি করে এসে, সে রাগ ঝেড়েছে বিষু দোয়েলের উপর। অকারণে কত বকেছে নিষ্পাপ মেয়েটাকে। দোয়েলকে একদিন লাল শাড়ি পরিয়ে গয়না গায়ে দিয়ে শ্বশুর বাড়ি পাঠাবে বলে সেই কবে থেকে একটু একটু করে কানাকড়ি জমানো শুরু করেছে বিষু।এখন এখানে আদরের সেই মেয়েটার পঁচা-গলা শরীরটা পড়ে আছে বিবস্ত্র হয়ে। হাজারো পিঁপড়ে দলবেঁধে এসে তাকে ঘিরে আছে রসগোল্লার মতো। তারমাঝেই একসারি এক নাকের নালী দিয়ে ঢুকছে অন্য নালী দিয়ে বেরুচ্ছে আরেক সারি। অথচ কত যত্ন আর আদরে বেড়ে উঠেছিল এই শরীরটা।
কেউ একজন এসে কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়ে গেল দোয়েলের ফুলে উঠা শরীরটা।
হঠাৎ বিষুর হাতে পিচ্ছিল একটা কিছু এসে লাগে।
বিষু পিচ্ছিল সেই পদার্থটা হাতে তুলে নেয়।
অবাক হয়ে বিষু সেটা চোখের সামনে ঝুলিয়ে ধরে থাকে। তার মনে হতে থাকে একবার তাদের গাঁয়ে যখন প্রথম সরকারি হাসপাতাল হয় তখন এরকমই একটা কিছু দেখিয়ে ডাক্তার বাবু তাদের শিখিয়েছিল কীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা যায়। লজ্জা পেয়ে মিনতি তখন আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে হাসছিল খানিকক্ষণ সময়। মানুষের ভিড়ে মিনতির সে হাসিটা শুধু বিষুই আবিষ্কার করতে পেরেছিল।জনমানবহীন এই ভুতুড়ে বাড়িতে এটা কে বা কারা ফেলে রেখে গেল বিষুর মোটা মাথায় কিছু ঢোকে না এসব। সে ভাবে, অপদেবতারাও কী জন্মনিয়ন্ত্রণ করে!তার ভাবনারা কুল হারায়। বিষু আবার লুটিয়ে পড়ে দোয়েলের উপর।
রাত গভীর হয়।মাঝ উঠোনে বসে থাকে মিনতি তখনও দোয়েলের অপেক্ষায়। পাশের বাড়ির ছেলে রুবেল হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল,
- কাকী, বিষু কাকা জানি কই দৌড় দিল, তারে পাওয়া যাইতাছে না। বাবা-জেঠা আর গেরামের বাকিরাও গেছে তারে খুঁজতে।
- আর আমার দুঅেল! তারে পাইচসরে রুবেল?
রুবেল কী বলবে বুঝতে পারে না।
মিনতি রুবেলের হাফপ্যান্টের নিচে অংশ মুঠোয় ধরে ঝাকিয়ে আবার বলে, কীরে কস না ক্যান? পাইলি দুঅেলেরে?
রুবেল কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, সবাই কইতাছে দুঅেল দিদিরে নাকি অপদেবতায় ঐ রাজবাড়িতে নিয়া মারছে। রনিদা, বদ্দা আর ভানু কাকায় দুঅেল দিদির লাশ নিয়া আইতাছে।
বলে রুবেলও এক দৌড়ে মিলিয়ে গেল আঁধারের সাথে।
মিনতির হা-হুতাশ বাড়ে। দম নিতে পারে না, কাঁদতেও পারে না আর।
তিন জোড়া পা এসে তখন কাপড়ে মুড়ানো কী যেন একটা নামিয়ে রেখেছে মাঝ উঠোনে। নিয়তির ঠিক সামনে।নিয়তি মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। সেই তিনজনের মুখ দেখবার ইচ্ছার কোনো লক্ষ্মণ দেখা গেল না নিয়তির মাঝে। সারা উঠোন পঁচা গন্ধে ভরে গেছে। দাঁড়িয়ে থাকা তিনজন মানুষ বলাবলি করছে, বাজারে যেতে হবে।শুকনো কাঠ, নতুন কাপড়, মধু,চন্দন, ধূপকাঠি ইত্যাদি কিনতে হবে একজন পুরোহিত ডাকতে হবে।এসব বলাবলি করতে করতে এই তিন জোড়া পা-ও রুবেলের মতো আঁধারে মিশে গেল।
মুয়াজ্জিন তার দারাজ কন্ঠে আজান ধরল। আকাশে হালকা আলোর আভা। চারদিক একদম নির্জন হয়ে আছে। কোথাও কেউ নেই এমন কী কাকপক্ষীও।
হঠাৎই মুয়াজ্জিনের আজানের সাথে সুর মিলিয়ে কারা যেন চেঁচামেচি করতে করতে এগিয়ে আসছে এদিকে।
বিষুকে টেনে হিঁচড়ে ধরে নিয়ে আসছে বলিষ্ঠ শরীরের দু'জন যুবক। পেছন থেকে রুবেলের বাপ,বিন্তির মা-বাবা আরও অনেকে দৌড়ে আসছে আর বলছে, কি সব্বনাশ হলো গো! দুঅেলের বাপ যে অপদেবতার আছরে পাগল হইয়েছে।কী গো দুঅেলের মা কী অভিশাপ লাগল তোমার সংসারে।
উঠোনে দাঁড়িয়ে কেউ আর মিনতিকে খুঁজে পায় না। মিনতি দরজা বন্ধ করে বসে আছে ঘরে। অনেক ডাকাডাকিতেও সে দরজা আর খোলে না। অবশেষে দরজা ভাঙা হলো। ঘুনে ধরা দরজাটা কয়েকটা লাথি-ধাক্কাতেই পড়ে গেল। কেরোসিন বাতির আলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটা দেহ উপর থেকে ঝুলছে ঘরের মাঝ পাল্লার সাথে।
ভোরের আলো ফুটল। সবদিক ফর্সা হয়ে এলো। দূরদূরান্তের গ্রাম থেকেও মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছে দোয়েলদের বাড়ি। কেচ্ছার মতো সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে গেল গত রাতের বিবরণ। ছড়িয়ে গেল কী করে অপদেবতার রোষে পড়ে গোটা একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল এক রাতেই।
সবাই এসে দেখে যাচ্ছে উঠোনে কী শান্তিতে মা-মেয়ে লাশ হয়ে ঘুমাচ্ছে। বারান্দার দক্ষিণ পাল্লার সাথে একটা পাগলকে বেঁধে রাখা হয়েছে। পাগলটা খিলখিলিয়ে হাসছে। ঢিল ছুড়ছে মানুষের ভিড়ে, থুথু ছিটাচ্ছে।
উঠোনের কোণের জবা গাছটা ফুলে ফুলে ভরে আছে। গাছের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত শুধু ফুল আর ফুল। সে ফুলের কোনো গন্ধ নেই, অনুভূতি নেই কিছু হারানোর কষ্ট নেই।
অদেখা অপদেবতার আড়ালে জীবন্ত সে পিশাচগুলোর খবর কেউ পেল না। কেউ দেখলো না মানুষের মুখোশের আড়ালে তাদের আসল রূপটা। হয়তো এই ভিড়ের মাঝেই এখন দাঁড়িয়ে ওরা। দুঃখ পাওয়ার ভান ধরে খুঁজছে অন্য আরেক দোয়েলকে।
সমাপ্ত