Deany Talks

Deany Talks Let's Talk about our Dean

02/03/2025

রোজা অবস্থায় ব্রাশ করা যাবে?

রোযা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা মাকরূহ। আর পেস্ট বা মাজন গলার ভেতর চলে গেলে রোযাই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই রোযা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করা যাবে না। টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে ব্রাশ করতে হলে সাহরীর সময় শেষ হওয়ার আগেই করে নিবে। (ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/১৪১; জাওয়াহিরুল ফিকহ ৩/৫১৮ সুত্র-মাসিক আলকাউসার শাবান-রমযান ১৪৩৬)

02/03/2025

الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ ۙ

দয়াময়, পরম দয়ালু, পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

----- (সুরা ফাতিহা, ৩)

রামাদ্বান মাসকে স্বাগতম জানাবেন কিভাবে?শায়খ মুহাম্মাদ আমীন শানক্বীতীকে প্রশ্ন করা হল,রামাদ্বান মাসকে স্বাগতম জানানোর বিষ...
01/03/2025

রামাদ্বান মাসকে স্বাগতম জানাবেন কিভাবে?

শায়খ মুহাম্মাদ আমীন শানক্বীতীকে প্রশ্ন করা হল,
রামাদ্বান মাসকে স্বাগতম জানানোর বিষয়ে আমাকে কিছু নসীহত করুন।

তিনি বললেন,
নেককর্মের মওসূমকে স্বাগতম জানাতে হয় ‘বেশী বেশী ইস্তেগফার’ দ্বারা।
কেননা গুনাহের কারণেই বান্দা ইবাদতের তাওফীক থেকে বঞ্চিত হয়।

যে ব্যক্তির অন্তর ‘ইস্তেগফার’কে আঁকড়ে থাকবে,তার অন্তর পরিশুদ্ধ হবে।
সে যদি দুর্বল হয় শক্তিশালী হবে, অসুস্থ হলে আরোগ্য লাভ করবে, বিপদগ্রস্থ হলে নিরাপত্তা লাভ করবে, দিশেহারা থাকলে হেদায়াত লাভ করবে,
সংকীর্ণ অবস্থায় থাকলে প্রশস্থতা লাভ করবে।

কেননা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তিরোধানের পর ‘ইস্তেগফার’ হচ্ছে আমাদের নিরাপত্তা লাভের গ্যরান্টি।

ইমাম ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন,

যে ব্যক্তি ‘সর্বদা ইস্তেগফার’ দ্বারা নিজেকে বৈশিষ্টমণ্ডিত করতে পারবে, আল্লাহ তার রিযিক সহজ করে দিবেন,
তার সকল কাজকে সাবলিল করে দিবেন,
তার সকল বিষয়কে সংরক্ষণ করবেন।

ওমার বিন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

আকাশ থেকে যদি বজ্রপাতও হয়,
তবু ইস্তেগফারপাঠকারী আক্রান্ত হবেনা।

আসুন সবাই পাঠ করি,

ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﻫُﻮَ ﺍﻟْﺤَﻲَّ ﺍﻟْﻘَﻴُّﻮﻡَ ﻭَﺃَﺗُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻴْﻪِ

'আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলাইহি।'

অর্থাৎ - আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব। তিনি নিখিল সৃষ্টির পরিচালক। আমি তার কাছেই ফিরে যাব।

বিশিষ্ট সাহাবি জায়েদ (রা.) বর্ণনা করেন,
নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন,
যে ব্যক্তি এ দোয়াটি পাঠ করবে,
তার ( জীবনের ) সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।
[ সুনান আবু দাউদঃ ১৫১৯,জামে আত তিরমিযীঃ ৩৫৭৭ ]

তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অতঃপর তাঁর কাছে ফিরে আস। নিশ্চয়ই আমার রব অতি দয়ালু ও অধিক মমতাময়।—সূরা হু...
01/03/2025

তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অতঃপর তাঁর কাছে ফিরে আস। নিশ্চয়ই আমার রব অতি দয়ালু ও অধিক মমতাময়।—সূরা হুদ : ৯০

রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের সকলের উচিত অতীতের সকল পাপ, অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘন এর জন্য আল্লাহর কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং ভবিষ্যতে না করার দৃড় পরিকল্পনা করা এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।

তাওবার শর্ত:
১. তাওবাহ্ একমাত্র আল্লাহর জন্য হতে হবে এবং আল্লাহর কাছে করতে হবে
২. গুনাহের কাজ করার জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে
৩. যে গুনাহ হতে তাওবাহ্ করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে
৪. ভবিষ্যতে এই গুনাহ আর না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে
৫. নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাওবাহ্ করতে হবে (মৃত্যু ও সূর্য পশ্চিম দিকে উঠার পূর্বে)
৬. মানুষের অধিকার তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে (যদি মানুষের অধিকার সম্পর্কিত হয়)

সালাতুত তাওবা:
আবুবকর (রা.)-র বর্ণনায় এসেছে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, কেউ যদি কখনো কোন গুনাহ করে ফেলে, অতঃপর (প্রয়োজনে গোসল শেষে) উত্তমরূপে ওযূ করে দুই রাকআত সালাত আদায় করে তার পাপের জন্য তাওবাহ করে তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। অতঃপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেন,
“তারা- যখন কোন অশ্লীল কাজ করে বসে কিংবা (এর দ্বারা) নিজেদের উপর নিজেরা যুলুম করে ফেলে (সাথে সাথেই) তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের গুনাহের জন্যে (আল্লাহর) ক্ষমা প্রার্থনা করে। (আসলে) আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কে আছে যে (তাদের) গুনাহ মাফ করে দিতে পারে? এরা জেনে বুঝে কখনো নিজেদের গুনাহের ওপর অটল থাকে না।” (সূরা ৩; আলে-ইমরান ১৩৫; আবু দাউদ: ১৫২১)

এই সালাতের প্রথম রাকআতে সূরা কাফিরূন এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ইখলাস পড়া উচিত। (ফিক্বহুস্ সুন্নাহ-১/৪৫৫-৪৫৮ পৃ.) অতঃপর খালেস দিলে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করবে। ইনশা আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন।

01/03/2025

ফজরের নামাজ শেষে কেবলা সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা শেয়ার করছি।

ধরুন কেউ পূর্ব দিকে ফিরে নামাজ আদায় করছে। এখন নামাজের ভিতর কোন ভুল করার কারণে সে সাহু সিজদা করল। বলুন তো তার এই সাহু সিজদার কোন মূল্য আছে? তার তো কেবলাই ঠিক নেই। তার সাহু সিজদা দিয়ে কি হবে, তার নামাজ শুরু থেকেই বাতিল।

এবার রাজনীতিতে আসেন। যেই দলের কেবলা পশ্চিমা বিশ্ব, ইউরোপ- আমেরিকা, সেই দল গে ইস্যুতে সাহু সিজদাহ দিয়ে কি ফায়দা। তার তো কেবলাই ঠিক নাই। আগে কেবলা ঠিক করেন, তারপর সাহু সিজদার আমল কবুল হবে।

কেবলা ঠিক করতে না পারলে এদেশের আপামর তৌহিদি জনতার কাছে সাহু সিজদাহ দিতে দিতেই আপনাদের রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে।
— ইফতেখার সিফাত (হাফি.)

তারাবির সালাতের পূর্বে অবশ্যই ভিডিওটি দেখে যাব ইনশাআল্লাহhttps://youtu.be/FjSqSuzm0ug?si=KID5-AteMaeQST4Z
01/03/2025

তারাবির সালাতের পূর্বে অবশ্যই ভিডিওটি দেখে যাব ইনশাআল্লাহ

https://youtu.be/FjSqSuzm0ug?si=KID5-AteMaeQST4Z

Share your videos with friends, family, and the world

28/02/2025

রামাদানের আগমুহূর্তের প্রস্তুতি

রামাদানের আর মাত্র ১ দিন বাকি। প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দারুণ কিছু পরামর্শ দিই আপনাদের।

১. অতীতের সব গুনাহ থেকে ইস্তিগফার ও তাওবা করে নেব।

২. শারীরিক পরিচ্ছন্নতা অর্জন করে নেব। নখ, অবাঞ্ছিত পশম ও লোম প্রভৃতি পরিষ্কার করে ফেলব।

৩. প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হব যে, রমজানে অন্তত কোনো কবিরা গুনাহ করব না। অবশ্য এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আসা একেবারেই কমিয়ে দিতে হবে।

৪. ফেসবুক-ইউটিউব ব্যবহার খুবই সীমিত করে ফেলার নিয়ত করব।

৫. প্রতিজ্ঞা করব, এই মাসে ফরজ নামাজগুলো জামাতেই আদায় করব। এক ওয়াক্ত নামাজও একাকী পড়ব না।

৬. রমজান মাসে নিয়মিত মিসওয়াক করার নিয়ত করব। যেহেতু দিনের বেলায় টুথপেস্ট ব্যবহার করা যাবে না, তাই এর পরিবর্তে মিসওয়াক যেন মিস না হয়।

৭. নিয়ত করব, দৈনিক অন্তত এক ঘন্টা যেন কুরআন তিলাওয়াত করা হয়। কখনো মিস দেবো না।

৮. দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করব যে, এই মাসে এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট করব না। অবসর থাকলে যিকির, ইস্তিগফার ও দরুদ যেন মুখে লেগে থাকে সর্বদা।

আমলের নিয়তে ইনশাআল্লাহ বলতে ভুলবেন না। - মানযিল ইন্সটিটিউট

27/02/2025

না বুঝে তারাবি পড়ি আমরা অনেকেই। হয়ত বেশিরভাগ মানুষই। অথচ জানতেই পারি আল্লাহ কি বাণী পাঠালেন আমাদের জন্য এই মাসে মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের মাধ্যমে। তাই আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস শায়খ আহমাদুল্লাহ কর্তৃক রচিত - "তারাবির সালাতে কুরআনের বার্তা" বইয়ের অডিও সিরিজ।

ছোট এই প্লে লিস্টে ২৭ টি ভিডিওর মাধ্যমে ২৭ তারাবির হিসেবে পুরা কুরআনের দৈনিক তিলওয়াতকৃত অংশের মূলবিষয় গুলো তুলে ধরা হয়েছে।

আমরা সকলেই চেষ্টা করি তারাবিতে যাবার আগে সেই দিনের ভিডিও দেখে নেয়ার ইনশাআল্লাহ।

প্লেলিস্ট লিংক https://youtube.com/playlist?list=PLcNdIlxwlyu7lEyAjsCnwpIu214kV652N&si=CYvv8riyOapgTBEo

শেয়ার করে ছড়িয়ে দেই ইনশাআল্লাহ।
জাজাকুমুল্লহি খইরন।

27/02/2025

কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীসের আলোকে রোযার গুরুত্ব ও ফযীলত

হাদীস শরীফে বর্ণিত রোযার কিছু ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য এখানে উল্লেখ করা হলো :

১. রোযার প্রতিদান আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজেই দিবেন এবং বিনা হিসাবে দিবেন

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকীর সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, কিন্তু রোযা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫১ (১৬৪); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৯৭১৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৮৯৮৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৬৩৮

২. আল্লাহ তাআলা রোযাদারকে কেয়ামতের দিন পানি পান করাবেন

হযরত আবু মুসা রা. হতে বর্ণিত,
আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজের উপর অবধারিত করে নিয়েছেন, যে ব্যক্তি তার সন্তুষ্টির জণ্য গ্রীষ্মকালে (রোযার কারণে) পিপাসার্ত থেকেছে, তিনি তাকে তৃষ্ণার দিন (কিয়ামতের দিন) পানি পান করাবেন।-মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৩৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫০৯৫

৩. রোযা হল জান্নাত লাভের পথ

হযরত হুযায়ফা রা. বলেন, আমি আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার বুকের সাথে মিলিয়ে নিলাম, তারপর তিনি বললেন, যে ব্যক্তি লাইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলে মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় একদিন রোযা রাখবে, পরে তার মৃত্যু হয় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো দান-সদকা করে তারপর তার মৃত্যু হয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩৩২৪; মুসনাদে বাযযার, হা.২৮৫৪

হযরত আবু উমামা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আগমন করে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন, যার দ্বারা আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি বলেন, তুমি রোযা রাখ, কেননা এর সমতুল্য কিছু নেই। আমি পুনরায় তার নিকট এসে একই কথা বললাম। তিনি বললেন, তুমি রোযা রাখ।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২১৪৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ১৮৯৩; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৬; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৫৩০

৪. রোযাদারগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে ‘রাইয়ান’ নামক বিশেষ দরজা দিয়ে

হযরত সাহল ইবনে সা’দ রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
জান্নাতে একটি দরজা আছে, যার নাম রাইয়ান। কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে কেবল রোযাদার ব্যক্তিরাই প্রবেশ করবে। অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে- কোথায় সেই সৌভাগ্যবান রোযাদারগণ? তখন তারা উঠে দাড়াবে। তারা ব্যতীত কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অতঃপর রোযাদারগণ যখন প্রবেশ করবে, তখন তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে কেউ ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৯৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫২; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২৮১৮

৫. রোযা জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল ও দুর্গ

হযরত জাবির রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আমাদের মহান রব ইরশাদ করেছেন- রোযা হল ঢাল। বান্দা এর দ্বারা নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবে। রোযা আমার জন্য আর আমিই এর পুরস্কার দিব।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৬৬৯; শুয়াবুল ঈমান বাইহাকী, হাদীস : ৩৫৭০

৬. রোযা কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
রোযা ও কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, হে রব! আমি তাকে খাদ্য ও যৌন সম্ভোগ থেকে বিরত রেখেছি। অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি, (অর্থাৎ না ঘুমিয়ে সে তেলাওয়াত করেছে) অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর তাদের উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৬২৬; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ২০৮০; বাইহাকী শুয়াবুল ঈমান, হাদীস : ১৯৯৪

৭. রোযাদারের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমযান মাসের রোযা রাখবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।- সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩৮, ২০১৪; সহীহ মুসলিম ৭৬০(১৬৫); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭১৭০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৮৯৬৮

৮. রোযা গুনাহের কাফফারা

হযরত হুযায়ফা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
মানুষের জন্য তার পরিবার, ধন-সম্পদ, তার আত্মা, সন্তান-সন্ততি ও প্রতিবেশী ফিতনা স্বরূপ। তার কাফফারা হল নামায, রোযা, দান-সদকাহ, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫২৫, ১৮৬৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৮৯২-২৬, মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩২৮০, সুনানে তিরমিযী, হা. ২২৫৮

৯. রোযাদারের মুখের গন্ধ মিশকের চেয়েও সুগন্ধিযুক্ত

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
সেই সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন, রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক সুগন্ধিময়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯০৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫১ (১৬৩); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭১৭৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৫২৩; সুনানে ইবনে মাজাহ- ১৬৩৮

১০. রোযাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
রোযাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে, যখন সে আনন্দিত হবে। এক. যখন সে ইফতার করে তখন ইফতারের কারণে আনন্দ পায়। দুই. যখন সে তার রবের সাথে মিলিত হবে তখন তার রোযার কারণে আনন্দিত হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যখন সে আল্লাহর সাথে মিলিত হবে, আর তিনি তাকে পুরস্কার দিবেন, তখন সে আনন্দিত হবে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯০৪, ১৮৯৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫১ (১৬৩, ১৬৪, ১৬৫); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৯৪২৯, ৭১৭৪; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৭৬৬

১১. রোযাদার পরকালে সিদ্দীকীন ও শহীদগণের দলভুক্ত থাকবে

হযরত আমর ইবনে মুররা আলজুহানী রা. হতে বর্ণিত,
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি একথার সাক্ষ্য দিই যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই এবং অবশ্যই আপনি আল্লাহর রাসূল, আর আমি যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করি, যাকাত প্রদান করি, রমযান মাসের সিয়াম ও কিয়াম (তারাবীহসহ অন্যান্য নফল) আদায় করি তাহলে আমি কাদের দলভুক্ত হব? তিনি বললেন, সিদ্দীকীন ও শহীদগণের দলভুক্ত হবে।-মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ২৫, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২২১২, সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৯

১২. রোযাদারের দুআ কবুল হয়

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ইফতারের সময় রোযাদার যখন দুআ করে, তখন তার দুআ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (অর্থাৎ তার দুআ কবুল হয়)।-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৭৫৩

১৩. রোযা হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দেয়

হযরত ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সবরের মাসের (রমযান মাস) রোযা এবং প্রতি মাসের তিন দিনের (আইয়্যামে বীয) রোযা অন্তরের হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দেয়। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৫৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩০৭০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৬৫২৩

১৪. আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম

হযরত আবু উমামা রা. বর্ণনা করেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে কোনো আমলের আদেশ করুন। তিনি বললেন, তুমি রোযা রাখ, কেননা এর সমতুল্য কিছু নেই। আমি পুনরায় বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে কোনো নেক আমলের কথা বলুন, তিনি বললেন, তুমি রোযা রাখ, কেননা এর কোনো সমতুল্য কিছু নেই।-সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ১৮৯৩; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২১৪০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৫; সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস : ২৫৩৩

রমযান হল খালেস ইবাদতের মৌসুম। তাই এ মাসের সময়গুলো যতটা শুধু আল্লাহর সাথে কাটানো যায় ততটা ভালো। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে হাদীস অনুযায়ী আমল করার ও উক্ত ফযীলত লাভ করার তাওফীক দান করুন। আমীন। ইয়া রাববাল আলামীন।

27/02/2025

রমজানের রোজা রাখার আদেশ

রমযনের রোযা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। ঈমান, নামায ও যাকাতের পরই রোযার স্থান। রোযার আরবি শব্দ সওম, যার আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। পরিভাষায় সওম বলা হয়-প্রত্যেক সজ্ঞান, বালেগ মুসলমান নর-নারীর সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযার নিয়তে পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও রোযাভঙ্গকারী সকল কাজ থেকে বিরত থাকা। সুতরাং রমযান মাসের চাঁদ উদিত হলেই প্রত্যেক সুস্থ, মুকীম প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং হায়েয-নেফাসমুক্ত প্রাপ্তবয়স্কা নারীর উপর পূর্ণ রমযান রোযা রাখা ফরয। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

"হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার।" -সূরা বাকারা (২) : ১৮৩

অন্য আয়াতে ইরশাদ করেছেন-

"সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোযা রাখে।" - সূরা বাকারা (২) : ১৮৫

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

"যখন তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোযা রাখবে আর যখন (শাওয়ালের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোযা বন্ধ করবে। আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশ দিন রোযা রাখবে।" -সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯০৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১০৮০ (১৭-১৮)

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস এবং এ বিষয়ক অন্যান্য দলীলের আলোকে প্রমাণিত যে, রমযান মাসের রোযা রাখা ফরয, ইসলামের আবশ্যক বিধানরূপে রোযা পালন করা ও বিশ্বাস করাও ফরয।

তাছাড়া কোনো শরয়ী ওযর ছাড়া কোন মুসলমান যদি রমযান মাসের একটি রোযাও ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাগ করে তাহলে সে বড় পাপী ও জঘন্য অপরাধীরূপে গণ্য হবে। দ্বীনের মৌলিক বিধান লঙ্ঘনকারী ও ঈমান-ইসলামের ভিত্তি বিনষ্টকারী হিসেবে পরিগণিত হবে। হাদীস শরীফে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ত্যাগকারী ও ভঙ্গকারীর জন্য কঠিন শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে।

হযরত আবু উমামা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,

"আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম আমার নিকট দুই ব্যক্তি আগমন করল। তারা আমার বাহুদ্বয় ধরে আমাকে এক দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে এল। তারপর আমাকে বলল, আপনি পাহাড়ের উপর উঠুন। আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারব না। তারা বলল, আমরা আপনাকে সহজ করে দিব। আমি উপরে উঠলাম। যখন পাহাড়ের সমতলে পৌঁছালাম, হঠাৎ ভয়ঙ্কর আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি বললাম, এ সব কিসের আওয়াজ? তারা বলল, এটা জাহান্নামীদের আর্তনাদ। তারপর তারা আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলল। হঠাৎ কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদেরকে তাদের পায়ের মাংসপেশী দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এবং তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, যারা ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলে।" -সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ১৯৮৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৭৪৪৮; সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস : ৩২৮৬; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস-১৬০৯; তবারানী, হাদীস : ৭৬৬৬

রমযান মাসের একদিন রোযা না রাখলে মানুষ শুধু গুনাহগারই হয় না, ঐ রোযার পরিবর্তে আজীবন রোযা রাখলেও রমযানের এক রোযার যে মর্যাদা ও কল্যাণ, যে অনন্ত রহমত ও খায়ের-বরকত তা কখনো লাভ করতে পারবে না এবং কোনোভাবেই এর যথার্থ ক্ষতিপূরণ আদায় হবে না।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন,

"যে ব্যক্তি অসুস্থতা ও সফর ব্যতীত ইচ্ছাকৃতভাবে রমযানের একটি রোযাও ভঙ্গ করে, সে আজীবন রোযা রাখলেও ঐ রোযার হক আদায় হবে না।" -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯৮৯৩; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস : ৭৪৭৬; সহীহ বুখারী ৪/১৬০

হযরত আলী রা. বলেন-

"যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে রমযান মাসের একটি রোযা ভঙ্গ করবে, সে আজীবন সেই রোযার (ক্ষতিপূরণ) আদায় করতে পারবে না।" - মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯৮৭৮

"নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন কওমের অবস্থা ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।"---- সূরা ...
26/02/2025

"নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন কওমের অবস্থা ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।"

---- সূরা রা'দ, আয়াত ১১

25/02/2025

"যে আল্লাহকে নিজের জন্য যথেষ্ট মনে করে, মানুষ তার মুখাপেক্ষী হয়ে যায়"

— সাইদ ইবনুল মুসায়িব (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২/১৭৪

25/02/2025

বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যস্ত থেকে আমাদের রমজানের প্রস্তুতিতে যেন কমতি না হয়।

দিনদিন যেন আমাদের থেকে রমজানের প্রস্তুতির কথা কমে যাচ্ছে। গতবছরও রমজানের আগে যেভাবে আলোচনা হয়েছিল, এবার তেমন সাড়াশব্দই পাচ্ছি না যেন!

-তানজিল আরেফিন আদনান হাফি.

24/02/2025

আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রোযা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, আমি তাকে দিনের বেলায় পানাহার ও প্রবৃত্তির চাহিদা মেটানো থেকে বিরত রেখেছি; সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি; সুতরাং আমার সুপারিশ কবুল করুন। তখন দুজনের সুপারিশই গ্রহণ করা হবে।

― মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৬২৬; মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৮১

23/02/2025

🟢 ১৫ টি কারণে রোজা ভাঙে না (অথচ অনেকে মনে করে, এসব কারণে রোজা ভেঙে যায়)

১) অনিচ্ছাকৃত বমি (মুখ ভরে হলেও) রোজা ভাঙবে না। তেমনি, বমি কণ্ঠনালীতে এসে নিজে নিজে ভেতরে ঢুকে গেলেও রোজা ভাঙবে না। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তির বমি এসে গেছে তার উপর কাজা নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করেছে, তাকে কাজা আদায় করতে হবে।’’ [ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ৭২০; হাদিসটি সহিহ]

২) শরীর থেকে রক্ত বের হলে, শিঙ্গা লাগালে বা কাউকে রক্ত দিলে রোজা ভাঙবে না।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমতাবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন (হিজামা করিয়েছেন), যখন তিনি রোজাদার। [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ১৯৩৯]

আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, রোজা অবস্থায় হিজামা তথা শিঙ্গা লাগানোকে কি আপনারা মাকরুহ মনে করতেন? তিনি বলেন, ‘না। তবে এর ফলে দুর্বল হয়ে পড়লে তা মাকরুহ হবে।’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ১৯৪০]

সুতরাং, রোজা অবস্থায় রক্ত দিতেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ দুটোই সেইম। এমনটিই বলেছেন বিশিষ্ট আলিমগণ।

৩) সুরমা, কাজল, সুগন্ধি ইত্যাদির দ্বারা রোজার কোন ক্ষতি হয় না। আনাস ইবনু মালিক (রা.) রোজাদার অবস্থায় সুরমা ব্যবহার করতেন। [ইমাম আবু দাউদের সুনান সূত্রে ফিকহুস সুনানি ওয়াল আসার: ১৩০৫; সনদ হাসান; ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, হাকিকাতুস সিয়াম, পৃষ্ঠা: ৪০-৪১]

ইমাম যুহরি (রাহ.) বলেন, রোজা অবস্থায় সুরমা লাগানোতে কোনো সমস্যা নেই। [ইমাম ইবনু আবি শাইবাহ, আল-মুসান্নাফ: ৯২৭৫; বর্ণনাটি সহিহ]

তেমনি, শরীর বা মাথায় তেল ব্যবহার করলেও রোজা ভাঙবে না। [ইমাম আবদুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ: ৪/৩১৩]

৪) মশা, মাছি, ধুলাবালি, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি অনিচ্ছাকৃতভাবে গলা বা পেটে ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে না। ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, ‘‘কারো গলায় মাছি ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে না।’’ [ইমাম ইবনু আবি শাইবাহ, আল মুসান্নাফ: ৬/৩৪৯; শায়খ ইবনু উসাইমিন, রমযান মাসের ৩০ আসর, পৃষ্ঠা: ১৫৩]

৫) ভুলে কিছু পানাহার করলে রোজা ভাঙবে না। হাদিসে এসেছে, ‘‘যে রোজাদার ভুলে খেয়ে ফেললো বা পান করে ফেললো, সে যেন তার রোজা পূর্ণ করে; কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ১৯৩৩]

৬) স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙে না।
কারণ স্বপ্নদোষ হওয়ার বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আল্লাহ কারও উপর তার সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না।’’ [সুরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬]

৭) রোজা অবস্থায় অজ্ঞান, বেহুঁশ বা অচেতন হলে রোজা ভাঙবে না। তাবিয়ি নাফে’ (রাহ.) বলেন, ‘(সাহাবি) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা.) একবার নফল রোজা অবস্থায় বেহুঁশ হয়ে যান। কিন্তু এ কারণে তিনি রোজা ভঙ্গ করেননি।’ [ইমাম বাইহাকি, আস-সুনানুল কুবরা: ৪/২৩৫]

৮) ইবনু উমার (রা.) বলেন, ‘‘রোজা অবস্থায় মিসওয়াক—কাঁচা বা পাকা ডাল দিয়ে—করলে রোজার কোনো সমস্যা হবে না।’’ এমনকি ইফতারের পূর্বে মিসওয়াক করলেও অসুবিধা নেই। [ইমাম ইবনু আবি শাইবাহ, আল মুসান্নাফ: ৯১৭৩; বর্ণনাটির সনদ সহিহ]

[রামাদানে দিনের বেলায় টুথপেস্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এর কিছু স্বাদ মুখে পাওয়া যায়, ফলে এটি মাকরুহ। তবে, কেউ গিলে না ফেললে রোজা ভাঙবে না]

৯) নাইট্রোগ্লিসারিন-জাতীয় ইনহেলারে রোজা ভাঙবে না, তবে ভেনটোলিন ইনহেলারে রোজা ভেঙে যাবে। কারণ এর কিছু অংশ খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে। [মাসিক আল কাউসার সূত্রে ‘রমযান মাসের উপহার’, মাওলানা হাবীবুর রহমান]

১০) নাকে ড্রপ, স্প্রে ব্যবহারের পর তা যদি গলার ভেতরে চলে যায়, তবে রোজা ভেঙে যাবে। অবশ্য গলায় না গেলে বা স্বাদ অনুভূত না হলে রোজা ভাঙবে না। [মাজাল্লাতু মাজমা‘ইল ফিকহিল ইসলামি: ২/৪৫৪; মাসিক আলকাউসার সূত্রে ‘রমযান মাসের উপহার’]

১১) খাবার ঠিকঠাক আছে কীনা তা বোঝার জন্য ঘ্রাণ নিলে রোজা ভাঙবে না। ইবনু উসাইমিন (রাহ.) বলেন, ‘খাবারের স্বাদ গ্রহণ করলে রোজা ভাঙবে না, যদি গিলে ফেলা না হয়।’ [রমযান মাসের ৩০ আসর, পৃষ্ঠা: ১৫৫]

তবে, বাধ্য না হলে এমনটি করা মাকরুহ। ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ্ (রাহ.) বলেন, ‘প্রয়োজন ছাড়া খাবার চেখে দেখা মাকরুহ; তবে এতে রোজা ভঙ্গ হবে না।’ [ফাতাওয়া কুবরা: ৪/৪৭৪]

১২) রোজা অবস্থায় নখ বা চুল কাটতে কোনো সমস্যা নেই। মেয়েরা হাতে-পায়ে মেহেদী দিলেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। [শায়খ আহমাদ মুসা জিবরিলের রিসালাহ]

১৩) সহবাস ছাড়া স্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠ হলে রোজা ভাঙবে না। তবে বীর্যপাত হওয়া যাবে না।

আয়িশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজাদার অবস্থায় (স্ত্রীকে) চুমু খেতেন এবং তাদের সাথে (ঘনিষ্ঠ) মেলামেশা করতেন। তবে, নিজ আবেগ-উত্তেজনার উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিলো তোমাদের সবার চেয়ে বেশি।’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ১৯২৭]

22/02/2025

সালামের প্রসার

🟢 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর তোমরা পরস্পরকে না ভালোবাসা পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের এমন কিছু শিখিয়ে দিবো না যা করলে তোমরা পরস্পরকে ভালবাসবে? (তা হলো) তোমরা নিজেদের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটাও।” [মুসলিম ১/৭৪, নং ৫৪; আহমাদ, নং ১৪৩০; আর শব্দ তাঁরই। মুসলিমের শব্দ হচ্ছে, “লা তাদখুলূনা...” ‘তোমরা প্রবেশ করবে না...’।]

🟢 “তিনটি জিনিস যে ব্যক্তি একত্রিত করতে পারবে সে ঈমান একত্রিত করল,
১. নিজের ব্যাপারেও ইনসাফ করা,
২. জগতের সকলকে সালাম দেওয়া, আর
৩. অল্প সম্পদ থাকা সত্ত্বেও তা থেকে ব্যয় করা” [বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ১/৮২, নং ২৮; আম্মার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মাওকূফ ও মু‘আল্লাক হিসেবে।]

🟢 ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলো, ইসলামের কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ?

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তুমি খাবার খাওয়াবে এবং তোমার পরিচিত-অপরিচিত সকলকে সালাম দিবে।” [বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ)১/৫৫, নং ১২; মুসলিম ১/৬৫, নং ৩৯।]

22/02/2025

📖 সূরা নূহ, আয়াত ১০-১৩

فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوْا رَبَّكُمْ ؕ اِنَّهٗ كَانَ غَفَّارًاۙ۝۱۰ یُّرْسِلِ السَّمَآءَ عَلَیْكُمْ مِّدْرَارًاۙ۝۱۱ وَّ یُمْدِدْكُمْ بِاَمْوَالٍ وَّ بَنِیْنَ وَ یَجْعَلْ لَّكُمْ جَنّٰتٍ وَّ یَجْعَلْ لَّكُمْ اَنْهٰرًاؕ۝۱۲ مَا لَكُمْ لَا تَرْجُوْنَ لِلّٰهِ وَقَارًاۚ۝۱۳

আর বলেছি : তোমরা নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের উপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে উন্নতি দান করবেন, এবং তোমাদের জন্যে সৃষ্টি করবেন বাগান আর তোমাদের জন্যে নদ-নদীর ব্যবস্থা করবেন। তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর মহিমাকে বিলকুল ভয় পাও না?

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Deany Talks posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Deany Talks:

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share