24/06/2024
ভার্সিটিতে চান্স পাইয়া এলাকায় ঢাক ঢোল বাজাইছো, গর্বে পা মাটিতে পড়ে নাই, যারে পাইছো মোটিভেশান ঝারছো, তোমার বাপে এলাকার দোকানে অহংকার দেখাইছে। পোলা ভার্সিটি পড়ে দেইখা দোকানদার চায়ের কাপটা তিনবার মুইছা দিছে, পরাটা আরেকটু কড়া কইরা ভাইজা দিছে।
তোমার মায়ের পাশের বাড়ির ভাবীর কাছে পোলার ভার্সিটি জয়ের গাল-গল্পের কারণে, ঐ বাড়ির পোলা-মাইয়া পাঁচটা বেতের বাড়ি বেশি খাইছে। তোমার পা ধোয়া পানি খাওয়ার কথা শোনা লাগছে মায়ের কাছে।
তো, গ্রামবাসী তোমার বিরাট ভার্সিটিতে পড়ার বদৌলতে একটা বিরাট চাকরির আশা করতেই পারে৷ তাদের মধ্যে এই আশা তো তুমি দিছো, তোমার বাপের ঢাক ঢোল পেটানোই দিছে।
এখন চাকরির কথা জিজ্ঞেস করলে, তোমার ইগোতে লাগতেছে। আমারও লাগতেছে ভাই। তো, বড় চাকরি হইলে বিশাল ক্ষমতা এই জিনিস চাষা-ভূষার মাথায় কে ঢুকাইছে? তিন বেলা ভাতের স্ট্রাগল করে যে সব লোক, তাদের মধ্যে বিসিএস ক্যাডার মানেই জগতের বাদশা- এ ধারনা কে দিছে? ভার্সিটিতে পড়লেই চাকরি আর চাকরি- অক্ষরজ্ঞানহীন লোকগুলা এই থিউরি জানার জন্য শহরে এসেছিল?
গ্রামের লোকজন খারাপ। তো, দুইদিনের শহরে থাকা হে মহান গাঁইয়া, তুমি ও তোমার বাপ-চাচা ভালো হইলে, বাকি গ্রামবাসীরাও ভালো হইতো। এ কথা কও না ক্যান?
এখন, গ্রামের লোকদের একতরফা দোষ দিয়া নগরকেন্দ্রিক, এককেন্দ্রিক, স্বার্থান্ধ শহুরে ফালতু জীবনকে গ্লোরিফাই করে সাইডে চাপার ধান্ধাটা খুব বাজে লাগলো। খুব বাজে।
গ্রামে অনেক ঝামেলা আছে সত্য। অনেক বিড়ম্বনা আছে। পরের পিছে আঙুল দেয়া বহু লোক গ্রামে থাকে।
কিন্তু, এসব ঝামেলার কোন কিছুই শহুরে জীবনকে এত ব্যাপকভাবে গ্লোরিফাই করতে যথেষ্ট নয়। গ্রামের জীবনকে তাচ্ছিল্য করার জন্য যথোপযুক্ত নয়।
লেখা-Mustafa Al Hossain Akil