01/02/2024
লালবাগের কেল্লা (কিলা আওরঙ্গবাদ) ঢাকার দক্ষিণ - পশ্চিমাঞ্চলে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি অসমাপ্ত মুঘল দুর্গ।
ঢাকা শহরের ৪০০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী মুঘল আমলের লালবাগ কেল্লা। পুরান ঢাকার লালবাগে অবস্থিত এ দুর্গে পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে অনেকেই আসেন। লালবাগ দুর্গ মনে করিয়ে দেয় মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় ছেলে মুহাম্মদ আজমের কথা। তিনি ঢাকার সুবেদারের বাসস্থান হিসেবে ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দে এ দুর্গের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন। তবে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই মারাঠা বিদ্রোহ দমনের জন্য সম্রাট আওরঙ্গজেব তাঁকে দিল্লি পাঠিয়েছিলেন। ফলে দুর্গের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। ১৬৮০ সালে বাংলার সুবেদার নবাব শায়েস্তা খাঁ ঢাকায় এসে আবার এর নির্মাণকাজ শুরু করেন। কিন্তু তাঁর মেয়ে পরী বিবির মৃত্যু হওয়ায় দুর্গটিকে অপয়া মনে করে ১৬৮৪ সালে তিনিও দুর্গের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।
১৬৮৮ সালে শায়েস্তা খাঁ অবসর নিয়ে আগ্রা চলে যাওয়ার সময় দুর্গের মালিকানা উত্তরাধিকারীদের দান করে যান। তিনি ঢাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর নানা কারণে এ দুর্গের গুরুত্ব কমতে থাকে। ১৮৪৪ সালে ঢাকা কমিটি নামে একটি আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান দুর্গের উন্নয়ন-কাজ শুরু করে। এ সময়ই দুর্গটি ‘লালবাগ দুর্গ’ নামে পরিচিতি লাভ করে। পরে ১৯১০ সালে লালবাগ দুর্গের প্রাচীর সংরক্ষিত স্থাপত্য হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে আনা হয়। নির্মাণের ৩০০ বছর পর সংস্কার করা হয় লালবাগ দুর্গ। সবুজ ঘাস আর ফুলে ফুলে সাজানো এ স্থাপনা পর্যটকদের বিমোহিত করে। মুঘল আমলের দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য লালবাগ কেল্লার মসজিদ, দরবার হল (দেওয়ান-ই-আম) ও পরি বিবি (শায়েস্তা খাঁর মেয়ে)-র মাজার বাঙালি সভ্যতারই বাহন।
লালবাগ কেল্লা দেখতে শুধু এ শহরের বাসিন্দাই নয়, দূরদূরান্ত থেকেও ছুটে আসেন অনেকে। পুরান ঢাকার সরু রাস্তা ধরে কেল্লায় পৌঁছাতেই ক্লান্ত হতে হয় পর্যটকদের। তবে কেল্লার ভেতরে ঢুকে প্রাচীন স্থাপনা আর রংবেরঙের ফুল দেখে সেই ক্লান্তি হয় মুহূর্তেই বিলীন।