29/04/2021
টুকটাক অসুখ-বিসুখে সহজ-ঘরোয়া টোটকা; শিশুর সুস্থতায় সব মায়েরই যা জানা দরকার!
মনে পড়ে সেই দিনগুলো, টুকটাক কিছু হলেই যখন তোমার দিদা-ঠাম্মা ছুটতেন রান্নাঘরে। কিছু না কিছু ওষধি বেরোতোই বেরোতো তাঁর হেঁসেল থেকে। আর সেটা খেলেই কেল্লাফতে!
আমাদের সব্বার জীবনেই এমনটা ঘটেছে, কিন্তু আজও সেই টোটকাগুলো যেন রহস্যই থেকে গিয়েছে! ওষুধপত্তরও কখনও সখনও হার মেনেছে, কিন্তু দমে যায়নি দিদা-ঠাম্মার টোটকা। এখন মা হয়েছো তুমি, কোলের শিশুর জন্য তোমারও কখনও সখনও প্রয়োজন হবে বাঙালিয়ানার মজ্জায় মজ্জায় মিশে থাকা চিরাচরিত সেই টোটকাগুলো। আজকের প্রতিবেদনে সেগুলো নিয়েই আলোচনা করব আমরা। রান্নাঘরেই যার হদিস পাবে তুমি, টুকটাক অসুখ-বিসুখে স্বস্তি পাবে তোমার সন্তান!
দেখে নিনি ১১ টি টোটকা
#1. জ্বর হলে পেঁয়াজ (Onion for fever)
বাঙালি হোন বা না হোন, পেঁয়াজের উপকারিতার কথা জনে জনে জানা! হয় রান্নায় নয় নানা ঘরোয়া টোটকায়, বাঙালি ঘরে পেঁয়াজ থাকবেই থাকবে। আপনার শিশুর যদি জ্বরজারি হয়, তা হলে দেখবেন দিদা-ঠাম্মারা এগিয়ে এসে কাঁপা কাঁপা গলায় বলছেন, ‘নাতির পায়ের তালুতে খানিক পেঁয়াজ ঘষে দে-রে, জ্বর কমে যাবে এখনই’। আপনি এই যুগের মা মানছি, ওষুধপত্তরেই আপনার ভরসা বেশি, তা-ও জানি। তা সত্ত্বেও বলছি, পেঁয়াজ ব্যবহারে কোনও ক্ষতি কিন্তু নেই। এতে আপনার শিশুর জ্বর তো কমবেই, হাতে-পায়ে ব্যথা থাকলে তা-ও পালাবে!
#2. কলিক পেন-এ হিং (Asafetida for colic pain)
কলিক পেন সারানোর অন্য়তম ঘরোয়া টোটকা হল হিং। এক টেবিল-চামচ গরম জলে অল্প হিং-গুঁড়ো মিশিয়ে বাচ্চাকে দিতে পারেন। হিং-এর স্বাদ বা গন্ধ আপনার শিশুর ভালো না লাগলে কিছুটা হিং হাতে নিয়ে ওর পেটে মালিশও করতে পারেন। এতে কলিক পেন তো পালাবে বটেই, সেই সঙ্গে আপনার শিশু রেহাই পাবে কোষ্ঠকাঠিন্য়ের সমস্যা থেকেও। তা-ও বলব, যদি হিং-এর জলটা খাওয়াতে পারেন, সেটাই অনেক বেশি কার্যকরী হবে।
#3. সর্দি-কাশিতে কর্পূর (Camphor for chest congestion)
শিশুর সর্দি-কাশিতে বাজার চলতি কোনও ভেপার রাব কিনে ঘরে মজুত করার কোনও প্রয়োজনই নেই, যতক্ষণ টোটকাগুলো জানা থাকবে আপনার। ঋতুবদলে বুকে কফ জমা, সর্দি-কাশি, তার থেকে জ্বর জারি হতেই পারে আপনার শিশুর। নারকেল তেলে কিছুটা কর্পূর গরম করে নিন। গলা ধরা, বুকের কফ দূর হয়ে যাবে সহজেই। কর্পূর আর নারকেল তেলের মিশ্রণ শিশুর শরীর গরম লাগে, সর্দি-কাশি আবার হওয়া থেকে প্রতিরোধো করে। তা বাদে নারকেল তেলেও আরাম পায় আপনার শিশু, যার জন্য রাতভর নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে ও।
#4. সদ্যোজাতর গ্যাস আর কলিক পেন-এর সমস্যায় সরষের তেল (Mustard oil massage for gas and colic pain in infants)
কলিক পেন থেকে শিশু যদি খিটখিটে, কাঁদুনি হয়ে ওঠে, তা হলে ওকে আরাম দিতে পারে কেবল সরষের তেল! শিশুর পেটে হালকা গরম সরষের তেল মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, শিশুর হজম ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে তারও দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। সরষের তেল মালিশে আরাম পায় শিশু, রাতভর ওর ঘুমও হয় ভালো। সদ্যোজাত শিশুর গ্যাস-এর সমস্যা সমাধানে জাদুর মতো কাজ করে এই টোটকা!
#5. সংক্রমণে হলুদ-দুধ (Haldi doodh for infections)
খুদে হোক কিংবা বড়, সংক্রমণের সাথে লড়াই করতে হলুদ দেওয়া দুধের চেয়ে ভালো কিছুই হয় না। গরম দুধে এক চিমটে হলুদ সংক্রমণ, ইনফেকশন এড়াতে
মোক্ষম ওষধি। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে এতে। হলুদে আসলে জীবাণুনাশক উপাদান থাকে, পরবর্তীতে শরীরে যাতে আর কোনও জীবাণু বাসা না বাঁধতে পারে, সেটাই নিশ্চিত করে হলুদ মেশানো দুধ।
চলমান
সূত্র -বেবিডেস্টিনেশন