Siêu Thị Tiện ích

  • Home
  • Siêu Thị Tiện ích

Siêu Thị Tiện ích কলম হোক নতুন আলোর উৎস...

বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় একটি নব ধারার নাম উর্বশী। বাংলা ভাষা, বাঙ্গালি জাতি এবং বাংলাদেশ-এর পরিচয় বাহক হয়ে কাজ করে আমাদের কাগজ।
চলছে কেবলি মেঘ কেটে পথ খুঁজে...
সম্পাদক: মেহেদী হাসান তানভীর

12/11/2023

🌵🌵BỘ LỌC THUỐC BẢN NÂNG CẤP THEO CÔNG NGHỆ NHẬT BẢN
- Công nghệ đầu lọc thế hệ mới tiên tiến của Nhật Bản lọc 98.8 % khi sử dụng
- Tránh mảng bám trên r.ăng, tránh sạm men, ố vàng, dùng lâu hơi thở bớt nồng mùi
- Không làm mất hương vị nguyên bản của điếu
- Vỉ 5 chiếc có thể tái sử dụng nhiều lần

11/09/2023

TÚI RÁC THÂN THIỆN MÔI TRƯỜNG - MUA 6 TẶNG 1 SIÊU ƯU ĐÃI😍😍😍
♻️ TÚI RÁC THÔNG MINH 4.0
😱TÚI ĐỰNG RÁC THÂN THIỆN MÔI TRƯỜNG🌈
💥CHẤT LƯỢNG - AN TOÀN - TIỆN LỢI💥
--------------------------------
TÚI ĐỰNG RÁC THÔNG MINH SIÊU TIỆN LỢI
✅ Chất lượng siêu bền, chịu tải chịu nhiệt cực kì tốt lên tới 300 độ C
✅ Ngăn mùi cực kì tốt tạo không gian thoáng mát, thoải mái
✅ Thiết kế dây rút siêu tiện lợi, vất rác không làm bẩn tay
✅ Chất liệu polyethylene có khả năng tự phân huỷ cao, thân thiện môi trường
---
Kích thước 45*50 cm
Với 1 cuộn có 100 túi dùng trong vòng 4 tháng😍
😱ƯU ĐÃI KHỦNG MUA 6 TẶNG 1❗❗❗
_______________________
GIao hàng toàn quốc.
Nhận hàng được kiểm tra hàng thoải mái.🥰

08/09/2023

🍀Hãy thay chiếc túi đựng rác nhà bạn đang dùng ngay bằng chiếc túi sinh học này vì những ưu điểm sau.
- Túi bằng chất liệu sinh học không gây mùi khó chịu
- Túi có dây rút thắt lại dễ dàng xử lý khi đổ rác mà không phải chạm trực tiếp.
- Có tinh dầu lá ngải khử mùi hôi từ rác thải.
- Chất liệu dễ phân hủy bảo vệ môi trường.
Đặc biêt 1 cuộn gồm 100c Mua Từ 4 Cuận Giá Chưa đầy 1 Cuộn
NHận Hàng Kiểm Tra hàng Rồi Thanh Toán

Sạch Sẽ - Thơm Lâu - Không lo ố vàngcòn chần chừ gì mà k mua ngay tai đây ạ
21/07/2023

Sạch Sẽ - Thơm Lâu - Không lo ố vàng
còn chần chừ gì mà k mua ngay tai đây ạ

📺Biến Áp Chuyển Điện Ác Quy Lên 220V🌈An Toàn - Tiên Lợi - Dùng Mọi Thiết Bị💥Ưu đãi 45% Miễn Ship-----------✈Lỗi 1 đổi 1 ...
22/06/2023

📺Biến Áp Chuyển Điện Ác Quy Lên 220V
🌈An Toàn - Tiên Lợi - Dùng Mọi Thiết Bị
💥Ưu đãi 45% Miễn Ship
-----------
✈Lỗi 1 đổi 1 trong 15 ngày đầu
✈Bảo hành 24 tháng ( có kèm phiếu bảo hành)
✈Được kiểm hàng trước khi thanh toán.
Liên Hệ: 0352446993

17/05/2023

😚 Ngủ Ngon Hơn Với Gối Mát Xa Cổ Vai Gáy Chỉ 1 đôi
2 ĐÔI MIỄN SHIP
-Gối SPA dệt kim 3D
Bảo vệ đốt sống cổ ,giúp ngủ ngon chăm sóc sức khoẻ gia đình
Kích thước: 47*74cm; cao 7cm
Chất liệu: vải bông dệt kim cao cấp, lưới thoáng khí siêu mềm mại
Xúc cảm mềm nhẹ , thoáng khí , hút ẩm tốt, kháng khuẩn, chống bọ hiệu quả
Có thể giặt được
CÔNG DỤNG CỦA GỐI
- Giảm đau nhức, cứng vùng cổ- vai- gáy với những người thường xuyên phải cúi nhiều, người cao tuổi, người bị thoái hóa đốt sống cổ. Đặc biệt với những người thích nằm nghiêng
- Phòng và hỗ trợ bệnh thoái hóa đốt sống cổ
- Hỗ trợ ngủ nhanh, giúp dễ đi vào giấc ngủ hơn. Chống ngáy ngủ
-ship cod toàn quốc chỉ với 30k ạ, kiểm tra hàng thoải mái trước khi nhận
2 bộ miễn ship
Liên Hệ. 0352.446.993

17/04/2023

Máy Cạo Râu Mini Mới Nhất Năm 2023
Ngày Hôm Nay Mua Hàng Miễn Ship Mua 2 tặng Quà Đặc Biệt
- Mua 1 máy = 139k Miễn Ship
- Mua 2 máy Tặng Quà Đặc Biệt + miễn ship
🔥 Chất Liệu được nhập khẩu từ Đức
🔥 Cạo nhanh 5 giây, cho bạn trải nghiệm cạo nhanh nhất, nhẹ nhàng nhất, thuận tiện nhất và tốt nhất
🔥 Cổng sạc USB-Type-c, thời gian sạc siêu nhanh, cạo chính xác và không đau, chống nước IPX7 và có thể rửa được ❤️
------------------------
🚗 GIAO HÀNG TOÀN QUỐC - KIỂM TRA HÀNG mới thanh toán
📨 Để lại số điện thoại để được chốt đơn & tư vấn

06/01/2018

বেবিলোন তোমার শূন্য কেন আজ
জানতে ইচ্ছে করে
সূর্য কিরণ হঠাৎ নিভে যায়
দমকা আঁধার নামে
ছোঁয়াচে তার প্রেমের আকার
মরীচিকা পূর্ণ্য রাতে
আমি আজ গাইব গান
শুনবে বসে নিঃসঙ্গ ভগবান।
সময়ের স্রোতে পচন ধরা
ক্ষত -বিক্ষত তোমার শরীর
বাজবে কি আজ নব বীণা
জাগবে কি হৃদয় খুলে তার বদ্ধ দ্বার।
সমস্ত পৃথিবী হারিয়েছে তারে
হারিয়েছে সন্ধ্যার রঙে
আমার আত্মা লালিত আছে
পৃথিবীর অর্ধেক ছায়ায় মিশে।
আমি শীতল, আমি অতল, আমি নিথর
আমি ঘুমিয়ে আছি অনন্তর
আমি মানুষ নই, আমি ম্বনন্তর
আমায় কেনো ভালোবাসতে চাও?
আমার সত্তা আছে লুকিয়ে সবুজ সমুদ্রের নিচে
উড়ে যাওয়া গাংচিলের ডানা আমি, খুঁজো না আর মিছে
অনেক যুগ কাটিয়েছি আমি রক্তিম আভার কাছে
বিকেলে এসে গান গেয়েছি সন্ধ্যা নদীর পাশে।
আমি স্থির নই, আমি অস্থির ভীষণ
তীরে এসে শব্দ ডুবে যায়, খড় স্রোতের মতন
শতাব্দীর ক্রন্দন আমি, জানবে তুমি আমায়
প্রেমের অযোগ্য শিশু আমি, হাসবে তুমি লয়ে আমায়।
তবুও আমি শীতের রাতে গল্প শুনাবো তোমায়
তোমার আমার রচিব বাসর শ্মশানের বিছানায়
জোয়ারের মতো আলো এসে দাঁড়াবে দিক সীমানার কাছে
আমায় মিশিয়ে দেবে তোমার ঐ স্নিগ্ধ বুকের মাঝে।

04/01/2018

মহাকালের গর্ভে হাত দিয়ে খুঁজেছি সভ্যতার আত্মকথা
স্তরে স্তরে জমে থাকা ইতিহাস পড়েছি নির্ঘুম চোখে
হেঁটেছি অন্ধকার নগরীর দীর্ঘ পথ
হাজার সহস্র শব্দের মিলন দেখেছি
মুগ্ধ হয়ে শুনেছি বারংবার মোজার্টের সুর
আততায়ী হয়ে হানা দিয়েছি স্বর্গের উদ্যানে,
বেমালুম ভুলে গেছি কাল
ঈশ্বর, তাই বুঝি আপনি নারাজ?
তাই বলছি,
আমি হত্যা করবো শব্দকে
আমি হত্যা করবো ছন্দকে
আমি হত্যা করবো কবিতাকে।
ঈশ্বরকে নামিয়ে আনবো এই পথে
দেখাবো কত পদক্ষেপ আর আক্ষেপ এই কালো পিচে পাথরে,
দেখাবো পার্কে বসে থাকা পতিতার আঁচল
ক্ষত-বিক্ষত শরীরের ভাঁজ।
ঈশ্বর, আপনাকে নিয়ে যাব পথশিশুর ঝুপরিতে
দেখাবো কত সুখে আছে তারা অনাহারে,
ঈশ্বর, আসুন নেমে মানবপুরীতে,
কীসের নেশায় মত্ত তারা তাই দেখাবো
আরও দেখাবো কীভাবে জন্ম নেয় কবিতা।
হে ঈশ্বর, আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন?
আসুন আপনি, আমি আপনার অপেক্ষায়!
আপনার আগমনের মধ্য দিয়েই আমার কলম থামবে,
আপনার বিলম্ব আমায় লিখতে বাধ্য করছে।
আমি লিখবো।
আমি লিখতে থাকবো।
প্রতি মূহুর্তেই হবে শুক্রাণু -ডিম্বাণুর মিলন
ক্ষণে ক্ষণে জন্ম নিবে কবিতা।
ঈশ্বর কী দিয়ে করবেন কবিতার জন্ম নিয়ন্ত্রণ?
ঈশ্বর ও কবিতা | মেহেদী হাসান তানভীর

25/06/2017

ঈদ মোবারক

26/03/2017

রাতটা তখন মাত্র শুরু
ঝিঝি পোকারা ঘুমাতে গিয়েছে
একটা দুইটা করে জোনাকি আসে
আলো দেয়, নিভে যায়, আবার আলো দেয়।

বাতাসে তখন ক্লান্তির গন্ধ ছিল
ফেলে আসা নূপুর আর ফিরে আসেনি
নদীর যৌবন বিলন হয়েছে কালে
অন্ধকার তখনো পথ হারায় নি।

বিধুর রশ্মি অভিশাপ আঁকে পূজারীর কপালে
নাট্য সজ্জা মাতাল করে বুদ্ধিজীবীর স্নায়ু
পিঁপড়ার ঘরে প্রবেশ করে মহাযুগের জল
আর কত পুড়লে পূর্ণ হবে, ক্ষতস্থল।

কুয়াশার নৃত্য শুকিয়ে গেছে
দক্ষিণ হাওয়া নতুন গান ধরেছে
পথের ধূলো পথ ছেড়েছে,
অপেক্ষা, তবু যদি যাই কাছে।
পথ হারায় নি | মেহেদী হাসান তানভীর

08/03/2017

একটা একটা করে আলো ঝড়ে পড়ছে
কুড়িয়ে নিয়েছে অন্য কেউ
জ্বলে উঠা শেষ আশাটাও ভেসে গেছে
উপছে দিয়েছে অন্য ঢেউ।

মন প্রজাপতির শেষ চিঠি পড়ছি
অন্ধকার আসার আগেই শেষ করতে হবে
সুরের অন্তরে শূন্যতার সুর বেঁধেছি
প্রজাপতির নীল পাপড়ি ছুঁতে হবে।

আমি যুদ্ধে যাচ্ছি
আমি যুদ্ধে আছি
আমি যুদ্ধে।

প্রেম রাঙা চোখের গভীর থেকে প্রেম উবে যায়
বেরিয়ে আসে গভীর ঘৃণা, অগভীর ভালবাসা
মনের প্রতি পাতায় পাতায় খুঁজে যাই
হারিয়ে যাওয়া পুরনো অভিশাপ।
যুদ্ধে আছি || মেহেদী হাসান তানভীর

06/12/2016

তোমার চোখের ছায়ার পাশে আঁকা আমার কবিতা
গল্প ছেড়ে উপন্যাসে আকাশপটে লেখা থাকে আমার উৎসাহ-আশা
বহুদূর পেরিয়ে শব্দ সাজাই বাতাসকে করে আপন
তুমি আসো আমার চোখের মাঝে, করো পূর্ণতার স্নান।
সবুজ ঘাসে শিশির ছোঁয়া আলতো আবেশ মাখা
শুভ্র পালক স্পর্শে হিয়া রঙে রঙে আঁকা
প্রতি চরণ একটু একটু এগিয়ে চলা আমার কথা
প্রতিমা রূপে সামনে দেখি দেবী তোমার বিস্তৃত মায়া।
জাদুর বাক্সে উল্লাস জমে তোমার ঝরা বরষা
অন্ধকারের হৃদপিণ্ড জুড়ে জাগে রজনীগন্ধা
দূরতম তারা থেকেও জ্বলে সূবর্ণ শিখা
রাঙা সুরের মেঘ খুঁজে পায় নতুন স্বরের ভাষা।
মায়া | মেহেদী হাসান তানভীর

29/11/2016

পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে যে দূরে গিয়েছে ভ্রমে
আমি সেই চাঁদের ছায়া বুকে চেপে ছুটছি
যদি অন্যকোন অমৃত উৎসের ছোঁয়া মেলে
আমি যেন পিছ পা না হই,
বিধাতার মতে আমি কালে কালে হারিয়েছি পথ
আমার দৃষ্টি নিভে যায়নি এখনো, দূরে দেখি সোনালি রথ
চলে যাওয়া সন্ন্যাসী মেঘের গন্ধে আমার আকাশ তারা হীন
আমি তবু হাতরে ফিরি আমার সুখ অমলিন।

অনেক ক্রোশ পরে আমার ইন্দ্রিয় শুনতে পায় সেই সুর
যেখানে লুকিয়ে কাঁদে তোর এক পা থেকে ঝড়ে পড়া নূপুর
শিশিরে আলতো আবেশ হয়তো শুকিয়ে যাবে মাঝ প্রহরে
তবুও আমি অনিদ্রা পুষি আমার দুই চোখের হৃদপিণ্ডে,
আমার ছায়া পথের গল্পগুচ্ছ মহাকাশকে করে আরো ভারি
মহাকাশের প্রতি অধ্যায় থেকে মুছে যায় তোমার ধ্বনি
তুমি তখনো লুকিয়ে আছো আমার মনমোহিনী
কবে ঘড়ির কাটায় ফিরবে আমার আপন কুললক্ষ্মী।
কুললক্ষ্মী | মেহেদী হাসান তানভীর

20/10/2016

হয়তোবা কোন এক শরৎ শেষে
শুভ্র কাশফুল হয়ে হাসছো তুমি আমার বিরহ ঘিরে,
সাদা মেঘের নাও ভাসিয়ে
আমার আঙিনায় নোঙর ফেলে,
অপেক্ষা আঁকছ তুমি তোমার চোখে
হাত বাড়িয়ে আমার পথে।

আমি তখন বন্দী তারায়
আকাশ আমার ঋণ ঘুচায়
পুরনো কবিতা ছন্দ হারায়
দ্বন্দ্ব সাজায় মনের খাঁচায়,
হারাব না আর আমি
তোমার হারানো মন্ত্রে
দেখে যাব দূরের ছবি
মৃত স্বপ্নগুলো নিয়ে কাঁধে।

বেলকুনির ওই দেয়াল জুড়ে
আমার কবিতা নৃত্য করে
তোমার হাতে শেষ নিশ্বাস চেয়ে
আমি ছুঁয়ে আসি বিমুখ প্রান্তর হয়ে,
কৃষ্ণপক্ষীয় অন্তঃকোণে দূর্গ আমার স্বর্গ ভূমি
চোখের পাশে রশ্মিরাগ তুমি
শুভ্র কাঁচে থাক আমার শব্দঋণ
ডায়েরী ছিঁড়ে হোক কবিতা দীনতাহীন।
শব্দঋণ | মেহেদী হাসান তানভীর

05/05/2016

ফিল্টার
মেহেদী হাসান তানভীর
----------------------------------
ক্ষুধার্ত প্রেমিকের কবিতা লেখা আছে
প্রেমিকার অন্তর্বাসের সুতোয় সুতোয়
প্রেমিকার হৃদয় তাদের নাগালের বাইরে
অন্তর্বাসে এসেই প্রেম ফিল্টার হয়ে যায়।
পড়ে থাকে যন্ত্রণা স্মৃতির ধূসর খামে
প্রাগৈতিহাসিক ব্যাকরণ মাথায় নাটকের মঞ্চ তৈরি করে
দ্বিতীয় জন্মের লোভ ভর করে অস্তিত্বে
লু হাওয়ায় পাঁজর উৎসাহিত হয় আত্মনাশে।
Click on--->

01/01/2016

"প" এর প্রেম পত্র:
প্রানের প্রিয়া,
পত্রের প্রথমে পদ্মা পলাশ পুষ্পের পংকুক্তির পরাগ পারা প্রেম। পত্রের প্রথম পড়ে পাহাড় পরিমান প্রেরণা পেতে পারো। পৃথিবীতো পড়ন্ত পথের পাথেয় প্রিয়া । পত্রটি পড়ে পাগল প্রেমিকের পানে পত্র পাঠাবে। প্রেমের পরীক্ষায় প্রথম পন্থা প্রেমের প্রকাশ প্রিয়া। প্রচন্ড পরিশ্রমে প্রেমেরপথ পারাবার পারব। প্রেমের পথে পাহাড় পরিমান পাথর পুতলেও, পায়ের পাতায় পুতে পুতে পেতে পারি প্রেমের পৃথিবী প্রিয়া। প্রেমের পৃথিবীতে প্রেমিককে পাগল পরিচিতি পায়ানো, পরম পাপ প্রিয়া। পত্রটি প্রিয় পাতায় পড়ে প্রশান্তি পেলেই পরম পরিতিপ্তি পাবো।
পরিশেষে
প্রিয়ার প্রিয়তম

26/12/2015

বল্টু :- জানেন Sir আমি না A B C D মুখস্থ
পারি।


Sir- তাহলে একবার বলে দেখাও।

বল্টু :- A B C D E F G H I J K L M N O
P Q R S T U V W X Y Z.


Sir: এভাবে না, একটা করে শব্দ সহ বল।


বল্টু : - ঠিক বুঝলাম না,একটা উদাহরণ
দিতে
পারেন?


Sir: যেমন A-তে apple


বল্টু :- →→→→

A- apple

B- বড় apple

C- চিকুন apple

d- ডোরাকাটা apple

E- আদখাওয়া apple

F- ফাপা apple

G- গোল apple

H- হাজার apple

I- ইরাকের apple

J- জঙ্গলি apple

K- কোটি apple

M- মাঝারি apple

N- নানা apple

O- অস্থির apple

P- পাগলা apple

Q- কিছু apple

R- রোগীর apple

S- সুন্দর apple

T- টক apple

U- উরাধুরা apple

V- ভাঙ্গা apple



একি sir আপনি পরে গেলেন কেন????
আমি তো এখনও w,x,y,z বলি নাই.....!!!

29/10/2015

One of the biggest underground band show of
comilla going to held on 30 October 2015.
Show will held 3.30pm.
To enjoy the show please collect the ticket(50
tk) before the show.
Tickets available@CoU campus
For contact-01811271923

08/10/2015

সামনের মাসে তোমায় একটা নৌকা কিনে দেব।
:)

02/10/2015

সংস্কৃত সাহিত্য : সনাতন ধর্মের প্রাণভোমরা
(দ্বিতীয় পর্ব)
--- অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
সংস্কৃত ভাষায় রচিত আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ
ধর্মগ্রন্থ মনুসংহিতা। যদিও বেদই হিন্দুদের
প্রধান ধর্মগ্রন্থ বলে বিবেচিত হয়ে আছে,
কিন্তু বেদে ধর্মের ভিত্তিতে জীবনযাপন বা
উপাসনা করার পদ্ধতি বিস্তৃতভাবে
নির্দেশিত হয়নি । হিন্দুদের ধর্মভিত্তিক
আইন ও সামাজিক রীতি নীতি পরিচালিত হয়
আর-একটি গ্রন্থ “মনুসংহিতা” বা মনুস্মৃতির
উপর ভিত্তি করে । এই গ্রন্থকে সনাতন
ধর্মাবলম্বীদের কাছে আইনের সমতুল, ধর্মীয়
নির্দেশের আইন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের
অবশ্য পালনীয় কর্তব্যসমূহ, আচার-আচরণ,
ধর্মীয় ও সামাজিক ক্রিয়াকলাপের
বিধিবিধানই মনুসংহিতার উপজীব্য। কথিত
আছে, এই গ্রন্থটি প্রথম স্বায়ম্ভূব মনু রচনা
করেছিলেন। আদি সংহিতায় এক লক্ষ শ্লোক
ছিল, এখন অবশ্য মাত্র ২৬৯৪টা শ্লোক পাওয়া
যায়। পুরাণ অনুসারে মনু ব্রহ্মার দেহ থেকে
তৈরি হয়েছেন। অর্থাৎ পৃথিবীতে ব্রহ্মার
একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন মনু। তবে এই
পর্যন্ত চোদ্দোজন মনু ব্রহ্মার ইচ্ছায় জন্ম
নিয়েছেন বলে জানা যায় -- এদের সবাই
ধর্মশাস্ত্র রচনা করেছেন (অবশ্য প্রাচীন
যুগে ধর্মশাস্ত্র বা ধর্মীয় নিদান ছাড়া
কিছুই রচনা হত না)। প্রায় চার হাজার যুগে
ব্রহ্মার একদিন। চার হাজার বছরে এক কল্প
হয়। এইভাবে এক দিনে বা এক কল্পে ১৪ জন
মনু জন্মগ্রহণ করেন। এক-এক মনুর অধিকারে
থাকা সময়কে ‘মন্বন্তর’ বলে। এরকম এক
মন্বন্তরে সপ্তর্ষিগণ, দেবগণ, ইন্দ্র ও মনু-
পুত্ররা জন্মগ্রহণ করেন। দেবতাদের হিসাবে
৮ লক্ষ ৫২ বৎসরে এক মন্বন্তর, আর মানুষের
হিসাবে ৩০ কোটি ৬৭ লক্ষ ২০ হাজার বৎসরে
এক মন্বন্তর। মন্বন্তর শেষ হলে মনু, দেবতা,
সপ্তর্ষিগণ, ইন্দ্র, মনুর পুত্ররা বিলুপ্ত হন।
স্বায়ম্ভুব মনু ব্রহ্মার কাছ থেকে স্মৃতিশাস্ত্র
পাঠ করা শিখে তা তার শিষ্যদের তা পাঠ
করান। পরবর্তীতে ভৃগু নামে একজন মনুর
আদেশে এই ধর্মশাস্ত্র ঋষিদের কাছে
ব্যাখা করেন -- যা এখন “মনুসংহিতা” নামে
পরিচিত। বলা হয় বেদ এর পরে মনুসংহিতা
সৃষ্টি হয়েছে। মূলত স্বায়ম্ভুব মনুর বর্ণিত
শ্লোকগুলিই বাকি মনুরা (স্বায়ম্ভুব,
স্বরোচিষ, উত্তম, তামস, রৈবত, চাক্ষুস,
বৈবস্বত বা সত্যব্রত, সাবর্ণি, দক্ষসাবর্ণি,
ব্রহ্মসাবর্ণি, ধর্মসাবর্ণি, রুদ্রসাবর্ণি,
দেবতাসাবর্ণি ও ইন্দ্রসাবর্ণি। মৎস্যপুরাণ
মতে ১৪ জন মনুর ভিন্নতর নাম পাওয়া যায়। এই
১৪ জন মনুর নাম হল স্বায়ম্ভূব, স্বরোচিষ,
উত্তম, তামস, রৈবত, চাক্ষুষ, বৈবস্বত বা
সত্যব্রত, সাবর্ণি, রোচ্য, ভৌত্যাঃ,
মেরুসাবর্ণি, ঋভু, ঋতুধামা, বিষ্কক্সেন)
সম্পাদনা ও টীকা বা ব্যাখ্যা যোগ করেছেন
এবং কিছু কিছু আইন ও আচরণ পদ্ধতির
প্রবর্তন করেছেন। এখনও মনুসংহিতার আইন ও
আচরণবিধি পুরোপুরিভাবে না হলেও
অনেকটাই হিন্দু ধর্ম ও সমাজে পালন করা হয়।
বর্তমান হিন্দু সমাজে মূর্তি/প্রতিমা পুজো,
উপাসনার পদ্ধতি, ব্রতাচারণ, বিবাহের
নিয়মাবলি, শ্রাদ্ধবিধি, খাদ্যাখাদ্য বিধি,
বর্ণাশ্রম বিধি, সম্পত্তি বণ্টন তথা ধর্মীয়
আঙ্গিকে জীবনধারণের সব পদ্ধতিই
‘মনুসংহিতা’ বা ‘মনুস্মৃতি’-তে যে বারোটি
অধ্যায়ে (প্রথম অধ্যায় – সৃষ্টিরহস্য-বিজ্ঞান
প্রকরণ, দ্বিতীয় অধ্যায় – ধর্মানুষ্ঠান প্রকরণ,
তৃতীয় অধ্যায় – ধর্মসংস্কার প্রকরণ, চতুর্থ
অধ্যায় – ব্রহ্মচর্য্য-গার্হস্থ্যাশ্রমধর্ম প্রকরণ,
পঞ্চম অধ্যায় – অশৌচবিধি-বিধান প্রকরণ,
ষষ্ঠ অধ্যায় – বানপ্রস্থ প্রকরণ, সপ্তম অধ্যায়
– রাজ্য-নিয়ন্ত্রণ প্রকরণ, অষ্টম অধ্যায় –
রাষ্ট্রনীতি প্রকরণ, নবম অধ্যায় – ব্যবহারিক-
ধর্ম প্রকরণ, দশম অধ্যায় – সামাজিক-নীতি
প্রকরণ, একাদশ অধ্যায় – প্রায়শ্চিত্ত-সি
দ্ধান্ত প্রকরণ, দ্বাদশ অধ্যায় – মোক্ষধর্ম
প্রকরণ।) ২৬৮৪ টি শ্লোক বর্ণিত আছে, তার
উপর ভিত্তি করে পালিত হয়। তাই বলা হয়
সনাতন ধর্মের লিখিত সংবিধান ‘মনুসংহিতা’
। মানুষের জীবনের এমন কোনো কিছু নেই, যা
এই শাস্ত্রে আলোচিত হয়নি। একজন সনাতন
ধর্মাবলম্বী তথা হিন্দু জন্ম থেকে মৃত্যুপর্যন্ত
কী কী করবে বা কী কী করবে না -- সবই এই
গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে। হিন্দুদের
জীবনবিধান “মনুসংহিতা” বা “মনুস্মৃতি” । বেদ
হিন্দুদের আদি গ্রন্থ এবং এই গ্রন্থের
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেই ‘মনুসংহিতা’ বা
‘মনুস্মৃতি’ রচিত হয়েছে । বেদ নয়, সনাতন
ধর্মাবলম্বীদের জীবন মনুসংহিতাতেই
লেপটে আছে। জীবনযাপনের নিয়মাবলি
বেদে নির্দেশিত না-থাকলেও ‘মনুসংহিতা’
বা ‘মনুস্মৃতি’-তে পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটেছে ।
যদিও সনাতন ধর্মের কোনো-কোনো শাখা
যেমন মতুয়া সম্প্রদায়, সত্য ধর্ম ইত্যাদি
মনুসংহিতা বা মনুস্মৃতির নিয়মকানুন গ্রাহ্য
করে না। কিন্তু হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মৌলিক
আচরণবিধি পালিত হয় মনুসংহিতার উপর
ভিত্তি করে।
মনুসংহিতা মানেই ব্রাহ্মণ্যবাদ, ব্রাহ্মণ্যবাদ
মানেই মনুসংহিতা – ব্রাহ্মণগোষ্ঠীর
আধিপত্যের চরমতম প্রকট এই মনুসংহিতাতেই।
বারোটি অধ্যায়ে এ গ্রন্থটির পাতায় পাতায়
ধর্মীয় বিধানের নাম দিয়ে সংস্কৃত অক্ষরে
অক্ষরে যে শ্লোকগুলি উৎকীর্ণ রয়েছে,
অধিকাংশ শ্লোকের ভাবার্থকে যদি মনুষ্য
সমাজে পালনীয় নীতি হিসাবে বিবেচনা
করতে হয়, তাহলে মানুষের সমাজে কোনো
মানবিক বোধ আদৌ রয়েছে বা অবশিষ্ট
থাকতে পারে বলে বিশ্বাস করাটাই
অবিশ্বাস্য মনে হয়। অনেকে মনে করেন,
মনুসংহিতা একটি অন্যতম মানবতাবিরোধী
ধর্মগ্রন্থ, যা আমাদের এই আধুনিক সমাজে ও
প্রচলিত। ধর্মগ্রন্থ আবার মানবতাবিরোধী হয়
কীভাবে ? বস্তুত মনুসংহিতায় ব্রাহ্মণ এবং
ক্ষত্রিয়দের সর্বশক্তিমান বানিয়েছে এবং
অন্ত্যজ শ্রেণি তথা শূদ্রদের ঘৃণ্য করা
হয়েছে। তদুপরি নারীদের পদদলিত করা
হয়েছে বহু ক্ষেত্রে। সেই কারণ মনুসংহিতা
বারবার সমালোচিত হয়েছে, হচ্ছে এবং
ভবিষ্যতেও হবে।বেদের কর্মে ভিত্তিকে
বর্ণভেদ মনুসংহিতায় এসে ঘৃণায় পর্যবসিত হল
-- (১) সর্বসাস্য তু সর্গস্য গুপ্ত্যর্থং স
মহাদ্যুতিঃ।/মুখবাহুরুপজ্জানাং পৃথক্
কর্মান্যকল্পয়ৎ।। (মনুসংহিতা – ১ : ৮৭) অর্থাৎ
এই সকল সৃষ্টির অর্থাৎ ত্রিভুবনের রক্ষার
জন্য মহাতেজ যুক্ত প্রজাপতি ব্রহ্মা নিজের
মুখ, বাহু, উরু এবং পাদ এই -- চারটি অঙ্গ
থেকে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র
এদের পৃথক পৃথক কার্যের ব্যাবস্থা করে
দিলেন। এখানে থেকে বোঝা যাচ্ছে
ব্রহ্মার মুখ থেকে ব্রাহ্মণ আর পাদ থেকে
শূদ্র তৈরি হয়েছে অর্থাৎ শূদ্রকে সব থেকে
নিচু করে রাখা হয়েছে।(২) অধ্যাপনমধ্যয়নং
যজনং যাজনং তথা।/দানং প্রতিগ্রহঞ্চৈব
ব্রাহ্মণানামকল্পয়ৎ ।। (মনুসংহিতা – ১ : ৮৮)
অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের জন্য তিনি সৃষ্টি করলেন
অধ্যাপনা, অধ্যয়ন, যজন, যাজন, দান ও
প্রতিগ্রহ ইত্যাদি। শূদ্রাং শয়নমারোপ্য
ব্রাহ্মণো যাত্যধোগতিম্।/
জনয়িত্বা সুতং তস্যাং ব্রাহ্মণ্যাদেব
হীয়তে।। (মনুসংহিতা – ৩ : ১৭) অর্থাৎ সবর্ণা
স্ত্রী বিবাহ না করে শূদ্রা নারীকে প্রথমে
বিবাহ করে নিজ শয্যায় গ্রহণ করলে ব্রাহ্মণ
অধোগতি (নরক) প্রাপ্ত হন; আবার সেই
স্ত্রীতে সন্তানোৎপাদন করলে তিনি
ব্রাহ্মণত্ব থেকে ভ্রষ্ট হয়ে পড়েন (অর্থাৎ
সমান জাতীয়া নারী বিবাহ না করে দৈবাৎ
শূদ্রা বিবাহ করলেও তাতে সন্তান উৎপাদন
করা ব্রাহ্মণের উচিত নয়)। ব্যভিচারের
দণ্ডের ক্ষেত্রেও বৈষম্যবাদী বর্ণপ্রথা
দেখুন --
শূদ্রো গুপ্তমগুপ্তং বা দ্বৈজাতং বর্ণমাবসন্।/
অগুপ্তমঙ্গসর্বস্বৈর্গুপ্তং সর্বেণ হীয়তে।।
(মনুসংহিতা – ৮ : ৩৭৪) অর্থাৎ কোনো
দ্বিজাতি নারী (অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও
বৈশ্য নারী) স্বামীর দ্বারা রক্ষিত হোক বা
না-ই হোক, কোনো শূদ্র যদি তার সঙ্গে
যৌনক্রিয়ায় উপগত হয়, তাহলে অরক্ষিতা
নারীর সঙ্গে সঙ্গমের শাস্তিস্বরূপ তার
সর্বস্বহরণ এবং লিঙ্গচ্ছেদনরূপ দণ্ড হবে, আর
যদি স্বামীর দ্বারা রক্ষিতা নারীর সঙ্গে
যৌনমিলন করে, তাহলে ওই শূদ্রের সর্বস্বহরণ
এবং মারণদণ্ড হবে। উচ্চবর্ণীয়দের ক্ষেত্রে
একই অপরাধের জন্য বিবিধ বিধানের
মাধ্যমে মনুশাস্ত্রে বর্ণক্রমানুসারে বিভিন্ন
মাত্রার কিছু অর্থদণ্ডের বিধান রাখা
হয়েছে মাত্র। বৈষম্যের শুরু সৃষ্টির আদিতেই।
আজও সেই বৈষম্যের খেসারত গুণতে হচ্ছে
হিন্দুদের।
শুধু ব্রাহ্মণ-শূদ্রের বৈষম্য নয়, মনু তার
বিধানে মানুষকেও ভাগ করেছেন দু-ভাগে।
পুরুষ ও নারী। মনুকে পুরুষকে বসিয়েছেন প্রভুর
আসনে এবং নারীকে করেছেন দাসী।তাই
আজও পুরুষরা বিয়ে করতে যাওয়ার আগে
মাকে বলে যায় – মা তোমার জন্য দাসী
আনতে যাচ্ছি। (১) বিশীলঃ কামবৃত্তো বা
গুণৈর্বা পরিবর্জিতঃ ।/ উপচর্যঃ স্ত্রিয়া
সাধ্ব্যা সততং দেববৎ পতিঃ।।(মনুসংহিতা –
৫ : ১৫৪) অর্থাৎ স্বামী দুশ্চরিত্র, কামুক বা
গুণহীন হলেও তিনি সাধ্বী স্ত্রী কর্তৃক
সর্বদা দেবতার ন্যায় সেব্য। পতির সব দোষই
নীরবে সহ্য করবে পত্নী, কিন্তু পত্নীর
কোনো দোষ করা যাবে না। পতির
পরস্ত্রীতে আসক্ত হওয়াটা কোনো দোষের
নয়। মনু তার অপর এক বিধানে বলেছেন পতির
মৃত্যুর পর পত্নীর পুনরায় বিয়ে করা যাবে না।
কিন্তু পত্নীর মৃত্যু হলে দাহ ও অন্ত্যেষ্টি
ক্রিয়া শেষে পুরুষ পুনরায় বিয়ে করতে
পারবে। পুরুষ তার অতিক্রিয়া নিবৃত্ত করার
জন্য পুনরায় বিয়ে করতে পারবে। কিন্তু যে
মেয়ের স্বামী বিবাহের রাতে কিংবা
বিবাহের দু-তিন মাসের মধ্যে মারা যায়।
সেই মেয়েকে সারাজীবন বিধবা সেজে
থাকতে হবে। (২) কামন্তু ক্ষপয়েদ্দেহং
পুষ্পমূলফলৈঃ শুভৈঃ।/ন তু নামাপি গৃহ্ণীয়াৎ
পত্যৌ প্রেতে পরস্য তু।। (মনুসংহিতা – ৫ :
১৫৭) অর্থাৎ পতির মৃত্যুর পর পত্নী ফলমূলের
স্বল্পাহার দ্বারা দেহ ক্ষয় করবে, তবু পর
পুরুষের নাম করবে না। (৩) ভার্যায়ৈ
পূর্বমারিণ্যৈ দত্ত্বাগ্নীনন্ত্যকর্মণি।/
পুনর্দারক্রিয়াং কুর্যাৎ পুনরাধানমেব চ।।
(মনুসংহিতা – ৫ : ১৬৮) অর্থাৎ পত্নীর মৃত্যুর
হলে দাহ ও অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া শেষে পুরুষ
আবার বিয়ে করবে। বিয়ে ছাড়া নারীর
মুক্তি নাই। কাঙ্খিত স্বর্গ প্রাপ্তির
উদ্দেশ্যে নারীদের অবশ্যই বিয়ে করতে হবে।
নারীরা চিরকুমারী থাকতে পারবে না।
কিন্তু পুরুষেরা চিরকুমার হয়ে থাকতে
পারবেন। মনু নারী জাতিকে পুরুষের হাতের
প্রাণশূন্য পুতুল ভেবেই হয়তো নীচের
বিধানটি প্রবর্তন করেছেন। মনু বিধান
দিলেন – বন্ধ্যাষ্টমেঽধিবেদ্যাব্দে দশমে তু
মৃতপ্রজা।/ একাদশে স্ত্রীজননী
সদ্যস্ত্বপ্রিয়বাদিনী।।(মনুসংহিতা – ৯ : ৮১)
অর্থাৎ নিঃসন্তান স্ত্রীকে বিয়ের আট বছর
পর ত্যাগ করা যায়, মৃত সন্তানের
জন্মদানকারী স্ত্রীকে ত্যাগ করা যায় দশ
বছর পরে, যে স্ত্রী শুধুমাত্র কন্যা সন্তান
জন্ম দেয় তাকে ত্যাগ করা যায় এগারো বছর
পরে, ঝগড়াপরায়ণ স্ত্রীকে ত্যাগ করতে
বিলম্ব করা যাবে না। বালয়া বা যুবত্যা বা
বৃদ্ধয়া বাপি যোষিতা।/ ন স্বাতন্ত্র্যেণ
কর্তব্যং কিঞ্চিৎ কার্যং গৃহেষ্বপি।।
(মনুসংহিতা – ৫ : ১৪৭) অর্থাৎ বালিকা
কিংবা যুবতী অথবা প্রাপ্তবয়স্কা নারীরা
স্বাধীনভাবে কোনো কিছু করতে পারবে না।
এমনকি নিজের ঘরেও নয়। না না, ভগবান মনু
নারীদের শুধুই কোণঠাসা করেছেন তা কিন্তু
বলা যায় না। মনু বরঞ্চ মনুসংহিতায় নারীকে
“রাবড়ি” কায়দায় নির্দেশ দিয়েছেন। রাবড়ি
– রাবড়ি বানানো হয় নীচে তাপ এবং উপরে
বাতাস দিয়ে। মনু নারীকে যেমন দাসী এবং
বন্দিনীতে পরিণত করেছেন, তেমনি নারীকে
সম্রাজ্ঞী এবং মহীয়সী হিসাবে দেখতেও
নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন – “মৈথুন
ব্যতিরেকেন” “নগ্নাং স্ত্রিয়ং ন পশ্যেৎ”।
অন্যক্ষেত্রে মনুর মতে নারীর মুখ সর্বদাই
শুচি, কখনো কলুষিত হয় না (মনুসংহিতা – ৫ :
১৩০)। নারীকে কেউ উপভোগ করলেও নারীর
উপর স্বত্ব জন্মায় না, আসল প্রভুর অধিকার
বজায় থাকে (মনুসংহিতা – ৮ : ১৪৯)।
নারীকে ভাগ করে নেওয়া যায় না
(মনুসংহিতা – ৯ : ২১৯)। সন্তান উৎপাদনের
কারণে নারীগণ গৃহের আলো। মহোপকারিণী
এবং পুজোর যোগ্য। গৃহে শ্রী (লক্ষ্মী) এবং
স্ত্রীর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই
(মনুসংহিতা – ৯ : ২৬)। মনু বলেছেন –
যেখানে নারীদের পুজো হয়, দেবতারা
সেখানে আনন্দ পান (যত্র নার্য্যন্তু পূজ্যন্তে
রমন্তে তত্র দেবতাঃ)।যেখানে তাঁরা পান
না সেখানে সমস্ত ক্রিয়াকর্ম বিফলে যায়।
যেখানে নারীরা সুখী, সেখানে পরিবারের
সমৃ্দ্ধি থাকে। যেখানে নারীগণ অবহেলিতা,
সেখানে সবকিছু ধ্বংস হয়। অতএব যাঁরা
সমৃদ্ধি চান তাঁরা যেন নারী পান-ভোজনাদি
দিয়ে পুজো করেন (মনুসংহিতা – ৩ : ৬০)।
মনুসংহিতায় মায়ের স্থান কোথায় দেখুন –
একজন আচার্য হলেন ১০ জন উপাধ্যায়ের
সমান, একজন পিতা হলেন ১০০ জন আচার্যের
সমান এবং একজন মাতা হলেন ১০০০ জন
পিতার সমান (মনুসংহিতা – ২ : ১৪৫)।মনুর
চোখে নারী কখনো ভগবান, কখনো শয়তান।
কেন এই দ্বিমুখী নারীভাবনা ? তাত্ত্বিক
হীরেন্দ্রনাথ দত্তের মতে – পরবর্তীকালে
কোনো নারীদ্বেষী সমাজসংস্কারক এইসব
অবমাননাকর শ্লোক রচনা করে মনুসংহিতার
মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে দিয়েছে (মনুর অনুবাদ
পূরণ ৩১)। ড. প্রতাপচন্দ্র চন্দ্র মনে করেন –
বিপরীত কথা থাকলেই তাকে প্রক্ষিপ্ত বলা
উচিত বলে আমি মনে করি না। মনু এক অর্থে
ছিলেন সমাজের দর্পণ। সমাজে বহু বিপরীত
ব্যাপার দেখা যায়। দর্পণে সেসব
বিপরীতভাবেই প্রতিফলিত হয়।মনুর ভূমিকা
প্রতিবেদক বা রিপোর্টারের মতো, তাই
ভালো ও মন্দ দুই দিকই তিনি তুলে ধরেছেন।
একজন ব্রাহ্মণ পূর্বজন্মে পুণ্যবান ছিল বলেই
এখন ব্রাহ্মণরূপে জন্মলাভ করেছে এবং
একজন অস্পৃশ্য পূর্বজন্মে পাপী জীবনযাপন
করেছে বলেই এখন অস্পৃশ্য হয়ে জন্মেছে।
অস্পৃশ্যকে নিজের মুক্তির জন্যে অবশ্যই
দাসের মতো ব্রাহ্মণের পুজো ও সেবা করতে
হবে। যারা হিন্দু বর্ণাশ্রমকে মেনে নিয়েছে
তারা ব্রাহ্মণ্যবাদী সমাজে স্থান পেয়েছে।
পক্ষান্তরে যারা তা মানেনি তাদেরকে
নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে।
নারী নরকের দ্বার হয়েছেন। অসাম্যের
দেবতা মনুর সংকলিত সংস্কৃত ভাষার
মনুসংহিতাই এই বৈষম্য এবং অস্পশ্য-সংস্কৃত
ির ধারক ও বাহক। আজও বহমান, ফল্গুনদীর
ধারার মতো, অভিশাপের মতো। (চলবে)

30/09/2015

. চাইলে দিয়ে
দিব কলিজার হাফ বন্ধুর বেলাতে সব দোষ
মাফ মাস্তিতে ফুর্তিতে গলা ছেড়ে গাই
বন্ধুরা থাকলে জিতবে সবাই || ফেইসবুক
হোয়াটস এপ ভাইবার স্কাইপ ফ্র্যেন্ডের
পোস্ট মানে বারবার লাইক || দুষ্টামি
বাঁদরামি ছাড়বেনা পিছু এক একটা দিন
হবে নতুন কিছু, হরদম হৈ চৈ কি যে মজা
ভাই নতুনের জোশ আর কিছুতেই নাই ||
বন্ধুরা থাকলে জিতবে সবাই || . .

26/09/2015

সংস্কৃত সাহিত্য : সনাতন ধর্মের প্রাণভোমরা
(প্রথম পর্ব)
--- অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ইসলাম ধর্ম যেমন কোরান কেন্দ্রিক, খ্রিস্টধর্ম যেমন বাইবেল কেন্দ্রিক,
বৌদ্ধধর্ম যেমন ত্রিপিটক কেন্দ্রিক –
হিন্দুধর্ম কিন্তু তেমনভাবে বেদ কেন্দ্রিক
নয়। যদিও বলা হয় হিন্দুধর্মের প্রধান
ধর্মগ্রন্থ বেদ। তা সত্ত্বেও বলা যায়
হিন্দুধর্ম শুধুমাত্র বেদাশ্রিত নয়। হিন্দুধর্ম
সমৃদ্ধ হয়েছে সংস্কৃত সাহিত্যের বিপুল
ভাণ্ডারের আনুকূল্যে। সেই কারণে হিন্দুধর্ম
না-বলে সনাতন ধর্ম বলাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে
হয়। হিন্দুধর্ম কোনো একটি নির্দিষ্ট
ধর্মগ্রন্থকে ঘিরে গড়ে ওঠেনি।হিন্দুধর্ম
একটি সংকলিত ধারণামাত্র, যা কেউ বুঝি,
অনেকেই বুঝি না।যে অঞ্চলের মানুষের
কাছে যে নির্দেশ গ্রহণযোগ্য বলে মনে
হয়েছে সেটা গ্রহণ করেছে, যার যেটা
খারাপ লেগেছে সেটা বর্জন করেছে। সেই
কারণে কাশ্মীরের হিন্দুধর্ম আর বাংলার
হিন্দুধর্ম এক নয়, গুজরাটের হিন্দুধর্মের সঙ্গে
অন্ধ্রপ্রদেশের হিন্দুধর্মে অনেক অমিল,
কেরলের হিন্দধর্ম আরা মহারাষ্ট্রের
হিন্দুধর্মের বৈসাদৃশ্য প্রচুর। কারণ
হিন্দুধর্মের কোনো প্রবক্তা নেই, হিন্দুধর্মের
স্রষ্টা নেই, একক প্রচারক নেই। ব্যাপক
পরিসরে বলা যায় হিন্দুধর্মের কোনো বিশেষ
একটি ধর্মগ্রন্থই নেই। সংকীর্ণ পরিসরে
অনেকেই বলতে ভালোবাসেন হিন্দুধর্মের
ধর্মগ্রন্থ বেদ, বৃহত্তর তথা সামগ্রিক পরিসরে
যদি ভাবা যায় হিন্দুধর্মের একত্রে
ধর্মগ্রন্থগুলি হল – ঋগবেগ, সামবেদ, যজুর্বেদ,
অথর্ববেদ, মনুসংহিতা, অসংখ্য উপনিষদ,
স্মৃতিশাস্ত্র ইত্যাদি।
বস্তুত বিপুল সংস্কৃত ভাণ্ডারের সমস্ত
নির্দেশাবলি-গল্প-কাহিনিই সনাতন ধর্মের
নিয়ন্ত্রক, এগুলিকে আমি ধর্মসাহিত্য বলতে
পছন্দ করি। বিশ্লেষণ করে দেখতে পারি।
বেদ থেকেই শুরু করতে হবে। কারণ বেদই
সনাতন ধর্মের প্রধান ও প্রাচীন সংস্কৃত
গ্রন্থ। ঐতিহাসিকরা বৈদিক সাহিত্য কখনও
লিখিত রূপের উপর জোর দেয়নি। বেদ মানেই
শ্রুতি। তার লিখিত রূপ অনেক পরের সময়ের
কথা। ফলে কাশ্মীরে এক রকম, বাংলায় আর-
এক, তামিলনাড়ুতে অন্য রকম রামায়ণ-
মহাভারত পাওয়া গেলেও বেদ নিয়ে সেই
সমস্যা হয়নি। তার লিখিত রূপভেদ নেই, তাই
দরকার হয়নি কোনও ‘ক্রিটিকাল এডিশন’। এই
কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটিতে বসে
উনিশ শতকে উইলসন তাই অনুবাদ করেন
ঋগবেদ। কোনো পাঠান্তর বা পাঠভেদের
বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না তাঁকে। আজও পুনের
ভাণ্ডারকর রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ঋগবেদের
সবচেয়ে প্রাচীন পাণ্ডুলিপিটি গাছের
ছালের উপর ১৪৬৪ সালে লেখা। এটি
ইউনেস্কোর ‘মেমরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-
এর অন্তর্ভুক্ত। আফগানিস্তানের বোখাজকই
শিলালিপির সঙ্গে ঋগবেদের ইন্দো-ইরানীয়
ভাষার মিলের কথাও বলা হয়েছে বারবার।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের
প্রধান রমেশ ভরদ্বাজের মতে, ‘‘বাল গঙ্গাধর
তিলক, জার্মান পণ্ডিত ফেলিক্স জ্যাকোবি
মনে করতেন, ঋগবেদ খ্রিস্টের জন্মের আট
হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল।’’ কিন্তু
ঋগবেদকে যিনি বিশ্বের দরবারে প্রথম
পরিচিত করেন, সেই ম্যাক্সমুলারও তিলকের
মতো এত দূর পিছিয়ে যাননি। তিনি খ্রিস্টের
জন্মের দেড় হাজার বছর আগের কথা
ভেবেছিলেন। আর আর্যভাষাটি যে শুধুই
ভারতীয় ভাষা নয়, সে কথাও ইতিহাসের
দরবারে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত। শেল্ডন
পোলক পরিষ্কার লিখে দিয়েছেন, সংস্কৃত
নামক কসমোপলিটান ভাষাটি আফগানিস্তান
থেকে জাভা সর্বত্র চলত। রোমিলা থাপারও
ইন্দো-ইরানীয় ভাষাগোষ্ঠীর সঙ্গে
ঋগবেদের ‘মিত্রাবরুণ’ গোছের দেবতার
অনেক মিল পেয়েছেন। সংস্কৃত ভাষা
সমীহের ভাষা, সংস্কৃত ভাষা সনাতন ধর্মের
ভাষা, সংস্কৃত ভাষা ব্রাহ্মণের ভাষা,
সংস্কৃত ভাষা মন্ত্রের ভাষা, সংস্কৃত ভাষা
শাস্ত্রের ভাষা, সংস্কৃত ভাষা
অভিসম্পাতের ভাষা এবং সংস্কৃত ভাষা
আশীর্বাদেরও ভাষা।
সংস্কৃত ভাষা কীভাবে সনাতন ধর্মের সঙ্গে
সম্পৃক্ত হয়ে আছে আমি তারই ব্যবচ্ছেদ করার
চেষ্টা করব -- বেদের ইতিহাস নিয়ে
আলোচনা করা আমার উদ্দেশ্য নয়। তবে এটা
ঠিক, বেদ ছাড়া ভারতীয় মনের ঐতিহাসিক
বিকাশের জ্ঞান সম্পূর্ণ হয় না। ভারতের
প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যে বেদ পরতে পরতে
জড়িয়ে আছে। হাজার হাজার সাহিত্য লেখা
হয়েছে, যা ধর্মসাহিত্যের মর্যাদা পেয়েছে
অনেক ক্ষেত্রে এবং সেইসব সাহিত্যের
উপাদানের বীজ সবই বেদে প্রতীয়মান।
ঋগবেদের কাল থেকে বেদাঙ্গ রচনার
অন্তিম পর্ব পর্যন্ত যে সুবিশাল সাহিত্য
কেবল ভারতীয় সংস্কৃতির নয়, বিশ্বসংস্কৃতির
ক্ষেত্রে এক গৌরবোজ্জ্বল যুগের সূচনা
করেছিল বৈদিক সাহিত্য।যাজ্ঞবল্ক্যের
মতে প্রত্যক্ষ বা অনুমানাদির সাহায্যে যে
জ্ঞান লাভ করা যায় না, সেই অতীন্দ্রিয়
জ্ঞান যার দ্বারা লাভ করা যায়, তাইই বেদ।
বেদ হল প্রাচীন ভারতে রচিত একাধিক
ধর্মগ্রন্থের একটি সমষ্টি। বৈদিক সংস্কৃত
ভাষায় রচিত বেদ সংস্কৃত সাহিত্যের
প্রাচীনতম নিদর্শন এবং প্রাচীনতম হিন্দু
ধর্মগ্রন্থ। বেদকে "অপৌরুষেয়" ("মানুষের
দ্বারা রচিত নয়") মনে করা হয়।হিন্দুরা
বিশ্বাস করেন, বেদ প্রত্যক্ষভাবে ঈশ্বর
কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে। তাই বেদের অপর
নাম "শ্রুতি" ("যা শোনা হয়েছে")। অন্য
ধর্মগ্রন্থগুলিকে বলা হয় "স্মৃতি" ("যা মনে
রাখা হয়েছে")। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, বেদ
ব্রহ্ম (সর্বোচ্চ উপাস্য ঈশ্বর) কর্তৃক
প্রকাশিত। বৈদিক ধর্মগ্রন্থ বা শ্রুতি
সংহিতা নামে পরিচিত চারটি প্রধান
সংকলনকে কেন্দ্র করে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
বেদের প্রতিটি পদ মন্ত্র নামে পরিচিত।
কোনো কোনো বৈদিক মন্ত্র আধুনিক কালে
প্রার্থনা সভা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা অন্যান্য
অনুষ্ঠানে পাঠ করা হয়ে থাকে।
ভারতীয় দর্শনের বিভিন্ন শাখা ও বিভিন্ন
হিন্দু সম্প্রদায় বেদ সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মত
পোষণ করে। ভারতীয় দর্শনের বিভিন্ন শাখা
বেদকে তাদের প্রধান ধর্মমত (আস্তিক)
হিসাবে গ্রহণ করেছে। অন্যান্য শাখা,
বিশেষত বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্ম বেদকে তাদের
প্রধান ধর্মগ্রন্থ হিসাবে গ্রহণ করে না
(নাস্তিক)। অধিকন্তু বৌদ্ধধর্ম, জৈনধর্ম,
শিখধর্ম, ও ব্রাহ্মধর্ম, এবং দক্ষিণ ভারতের
অনেক অব্রাহ্মণ হিন্দুরা বেদের কর্তৃত্ব
স্বীকার করে না। ইয়েঙ্গার ইত্যাদি কোনো
কোনো দক্ষিণ ভারতীয় ব্রাহ্মণ তামিল দিব্য
প্রবন্ধম্ বা আলোয়ারদের রচনাকে বেদের
সমতুল্য জ্ঞান করেন।
বেদের বিধিসম্মত ভাগ চারটি। বেদের
চারটি অংশ মন্ত্র বা সংহিতা, ব্রাহ্মণ,
আরণ্যক ও উপনিষদ্। মন্ত্রাংশ প্রধানত পদ্যে
রচিত, কেবল যজুঃসংহিতার কিছু অংশ গদ্যে
রচিত। এটাই বেদের প্রধান অংশ। এতে আছে
দেবস্তুতি, প্রার্থনা ইত্যাদি। ঋক্ মন্ত্রের
দ্বারা যজ্ঞে দেবতাদের আহ্বান করা হয়,
যজুর্মন্ত্রের দ্বারা তাঁদের উদ্দেশে আহুতি
প্রদান করা হয় এবং সামমন্ত্রের দ্বারা
তাঁদের স্তুতি করা হয়। ব্রাহ্মণ মূলত
বেদমন্ত্রের ব্যাখ্যা। এটি গদ্যে রচিত এবং
প্রধানত কর্মাশ্রয়ী। আরণ্যক কর্ম-জ্ঞান
উভয়াশ্রয়ী এবং উপনিষদ্ বা বেদান্ত
সম্পূর্ণরূপে জ্ঞানাশ্রয়ী। বেদের বিষয়বস্তু
সাধারণভাবে দুই ভাগে বিভক্ত কর্মকাণ্ড ও
জ্ঞানকাণ্ড। কর্মকাণ্ডে আছে বিভিন্ন
দেবদেবী ও যাগযজ্ঞের বর্ণনা এবং
জ্ঞানকাণ্ডে আছে ব্রহ্মের কথা। কোন্
দেবতার যজ্ঞ কখন কীভাবে করণীয়, কোন্
দেবতার কাছে কী কাম্য, কোন যজ্ঞের কী
ফল ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের আলোচ্য বিষয়। আর
ব্রহ্মের স্বরূপ কী, জগতের সৃষ্টি কীভাবে,
ব্রহ্মের সঙ্গে জীবের সম্পর্ক কী এসব
আলোচিত হয়েছে জ্ঞানকাণ্ডে।
জ্ঞানকাণ্ডই বেদের সারাংশ। এখানে বলা
হয়েছে যে, ব্রহ্ম বা ঈশ্বর এক, তিনি সর্বত্র
বিরাজমান, তাঁরই বিভিন্ন শক্তির প্রকাশ
বিভিন্ন দেবতা। জ্ঞানকাণ্ডের এই তত্ত্বের
ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে ভারতীয়
দর্শনচিন্তার চরম রূপ উপনিষদের বিকাশ
ঘটেছে।
এসব ছাড়া বেদে অনেক সামাজিক
বিধিবিধান, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা,
শিল্প, কৃষি, চিকিৎসা ইত্যাদির কথাও আছে।
এমনকি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের
কথাও আছে। বেদের এই সামাজিক বিধান
অনুযায়ী সনাতন হিন্দু সমাজ ও হিন্দুধর্ম রূপ
লাভ করেছে। হিন্দুদের বিবাহ, অন্তেষ্টি
ক্রিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে এখনও বৈদিক
রীতিনীতি যথাসম্ভব অনুসরণ করা হয়। ঋগ্বেদ
থেকে তৎকালীন নারীশিক্ষা তথা সমাজের
একটি পরিপূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়। অথর্ববেদ
থেকে পাওয়া যায় তৎকালীন
চিকিৎসাবিদ্যার একটি বিস্তারিত বিবরণ।
এসব কারণে বেদকে শুধু ধর্মগ্রন্থ হিসেবেই
নয়, প্রাচীন ভারতের রাজনীতি, অর্থনীতি,
সমাজ, সাহিত্য ও ইতিহাসের একটি দলিল
হিসেবেও গণ্য করা হয়।
অনেকের মতে বেদ অপৌরুষেয়। অর্থাৎ ঈশ্বর
দ্বারা প্রেরিত। এহেন বেদ যখন ঈশ্বর
প্রেরিত, এহেন বেদ যখন সনাতন
ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ – তবে কেন
বেদের উল্লিখিত দেবতারা “দেবতা”
হিসাবে পুজো পায় না ? বেদের দেবতা
কারা? দেবতা কে ? দেবতা কী ? সনাতন
ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদে যে দেবতাদের
উল্লেখ আছে, সেগুলি হিন্দুসমাজে বহুল
প্রচলিত এবং প্রচারিত দেবদেবীদের মতো
নয়। অবশ্য বেদের সূত্রেই ভারতীয় হিন্দু বা
সনাতন ধর্মের দেবদেবীদের আবির্ভাব।
আদিবেদ হিসাবে স্বীকৃত ঋগবেদে কতগুলি
দেবদেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। ঋগবেদে
“দেবতা” শব্দ ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
অল্প কয়েকটি সূক্ত ছাড়া প্রায় ৯০ ভাগ
মন্ত্রে দেবতা বিষয়ক ভাবনাই মুখ্য। এই
মন্ত্রগুলিকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। (১)
স্তুতি এবং (২) প্রার্থনা। স্তুতি বিষয়ক
মন্ত্রে দেবতার নাম, রূপ ও কর্মের উল্লেখ
করে দেবতার স্তব করা হয়েছে। অপরদিকে
প্রার্থনা বিষয়ক মন্ত্রে দেবতার কাছে
প্রার্থনা করা হয়েছে ধন, আয়ু, শক্তি, পুত্র
প্রভৃতি।
যাস্কাচার্য তাঁর “নিরুক্ত” গ্রন্থে ‘দেব’ এবং
‘দেবতা’ দুটি শব্দের একই অর্থ করেছেন।
তিনি ‘দেব’ শব্দের তিনটি তিনটি অর্থ এবং
চারটি ব্যুৎপত্তি দেখিয়েছেন – (১) ‘দা’ ধাতু
থেকে। (২) ণিজন্ত ‘দীপ’ ধাতু থেকে।(৩)
ণিজন্ত ‘দ্যুৎ’ ধাতু থেকে। (৪) ‘দিব’ শব্দ
থেকে। অর্থাৎ দেব বা দেবতা তাঁরাই যাঁরা
(ক) ঐশ্বর্য দান করেন এবং আমাদের ঈপ্সিত
বস্তুগুলি দান করেন। (খ) তেজোময় বলে যাঁরা
পদার্থগুলিকে প্রকাশিত করে। (গ) যাঁরা
সাধারণত দ্যুলোকে অবস্থান করেন। বস্তুত
শৌনকাচার্যের ‘বৃহদ্দেবতা’ এবং
যাস্কাচার্যের ‘নিরুক্ত’ গ্রন্থের
দেবতাকাণ্ডে দেবতাতত্ত্ব সম্বন্ধে বিস্তৃত
আলোচনা আছে। ঋগবেদের সূক্তগুলিতে
ধর্মীয় চিন্তাধারায় অনুসরণ করলে
দেবতাতত্ত্বের সম্বন্ধে এক বিবর্তন লক্ষ
করা যায়। বহুদেবতাবাদ থেকে
অতিদেবতাবাদের মধ্য দিয়ে একদেবতাবাদ
বা একেশ্বরবাদে উত্তরণ ঘটেছে বৈদিক
দেবতাতত্ত্বে। বেদের দেবতাতত্ত্বের
প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিটি দেবতাই
বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি থেকে কল্পিত
হয়েছেন। প্রাকৃতিক রূপেরই প্রতিরূপ।
অনেক ক্ষেত্রে দেবতা হিসাবে বিষয়বস্তুকে
বোঝানো হয়েছে। এই অর্থে প্রস্তরখণ্ড, ধনুক,
ব্যাঙ ইত্যাদি দেবতা প্রতিপন্ন হয়। বস্তুত
ঋকবেদের দেবতা অর্থে বুঝি পৃথিবী বা
অন্তরিক্ষ বা দ্যুলোকের এমন সব প্রাকৃতিক
বিষয়, যাঁদের মধ্যে শক্তির প্রকাশ দেখে
ঋষিরা তাঁদের উপর দেবত্ব আরোপ করেছেন।
সেই কারণে নানা মুনির নানা মতও আছে।
যেমন – কোনো কোনো পণ্ডিতের মতে ইন্দ্র
হল ঝড়ের দেবতা। কেউ বলেছেন প্রাচীন
সূর্যদেবতা। কারও মতে বরুণ স্বর্গের দেবতা,
কেউ বলছেন চন্দ্রদেবতা, কেউ-বা বলেন
জলের দেবতা ইত্যাদি। ঋকবেদে কতকগুলি
আদিত্যের নাম আছে, রুদ্র ও বসু শব্দ দুটি
বহুবচনে ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু ১২ জন
আদিত্য, ১১ জন রুদ্র, ৮ জন বসু এমন উল্লেখও
নেই। ঋকবেদে নীচে উল্লিখিত দেবতাদের
নাম পাওয়া যায় – (১) মিত্র, বরুণ, অর্যমা, ভগ,
দক্ষ, অংশ, মার্তণ্ড, সূর্য, সবিতা এবং ইন্দ্র ।
এঁদের ঋকবেদে কোথাও না-কোথাও আদিত্য
বলা হয়েছে। এঁদের মধ্যে আবার অর্যমা, ভগ,
দক্ষ, অংশ, মার্তণ্ড -- এঁদের কোনো প্রাধান্য
নেই।(২) মিত্র, সূর্য, বরুণ, সবিতা, ইন্দ্রের খুব
প্রাধান্য। এ ছাড়া অগ্নি, বায়ু, মরুৎগণ,
বিষ্ণু,পর্জন্য, পূষা, ত্বষ্ঠা, অশ্বিনী ২ জন,
সোম -- এরাও প্রাধান্য পেয়েছেন। (৩)
বৃহস্পতি, ব্রহ্মণস্পতি ও যমেরও কিছু গৌরব
আছে। (৪) কোনো কোনো অংশে ত্রিত,
আপ্তা, অধিব্রধ ও অজএকপাদেরও নাম
পাওয়া যায় । (৫) বিশ্বকর্মা, হিরণ্যগর্ভ,
স্কম্ভ, প্রজাপতি, পুরুষ, ব্রহ্মা -- এই কয়টি নাম
দ্বারা সৃষ্টিকর্তাকে বোঝায়। (৬) ক-জন
দেবীও আছেন। অদিতি ও ঊষা প্রধানা। (৭)
সরস্বতী, ইলা, ভারতী, মহী, হোত্রা, বরুত্রী,
ধীষণা, অরণ্যানী, অগ্নায়ী, বরুণানী,
অশ্বিনী, রোদসী, রাকা, সিনিবালী, গুঙ্গু,
শ্রদ্ধা ও শ্রী -- এঁরা দেবী পদভিষিক্তা। তা
ছাড়া পরিচিত সব নদীরাও দেবীর মর্যাদা
পেয়েছেন ।
পুরাণে আছে, পরমেশ্বরের ইচ্ছায় ও তার
লীলা প্রকাশের বাসনায় দেবতাদের সৃষ্টি
হয়েছে। পরমেশ্বর মহাবিষ্ণুই লীলার জন্য
তিন ভাগে ভাগ হয়েছেন -- ব্রহ্মা , বিষ্ণু
এবং মহেশ্বর । বিষ্ণু পুরাণে আছে –
পরব্রহ্মের প্রথম অংশ ব্রহ্মা সৃষ্টিকর্তা রূপে
সকল কিছু সৃষ্টি করে তৃতীয় বারে দেবতাদের
সৃষ্টি করলেন । দেবতারা জ্যোতিষ্মান,
দীপ্তিমন্ত । দেবতাদের প্রধানত স্বর্গবাসী
হিসাবেই দেখানো হয়েছে, অবশ্য
পৃথিবীতেও তাদের অবস্থান আছে। দেবতারা
অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। মানুষ যা
করতে পারে না দেবতারা তা করতে পারেন,
অথবা দেবতারা যা করতে পারেন মানুষ তা
পারে না – এরকম গোছের কিছু একটা।
সাধারণভাবে মরুৎ ঝড়ের দেবতা বাদে
দেবতাদের সংখ্যা হল তেত্রিশ । কিন্তু
যাস্ক প্রভৃতি নিরুক্তকারদের মতে বৈদিক
দেবতা মাত্র তিনজন -- অগ্নি , ইন্দ্র এবং
সূর্য। তবে পুরাণে তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর
কথা বলা হয়েছে। বোঝাই যায়, বেদে
উল্লেখিত ৩৩ টি দেবতায় কাজ মিটছিল না।
পুরাণের যুগে এসে তৎকালীন শাসকদের
তত্ত্বাবধানে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা ৩৬ টি পুরাণে
৩৩ কোটি দেবতাদের গল্প-কাহিনি বর্ণিত
হল, যা উপকথা এবং রূপকথার মতোই
মনোরঞ্জন করে। পুরাণের পাতায় পাতায়
বর্ণিত হয়েছে ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং শাসকের
বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে তার পরিণতি কী হয় !
বেদের দেবতাদের জন্ম আছে, পূর্বাপর-সম্বন্
ধ আছে । এক দেবতা থেকে আর-এক দেবতার
জন্ম আছে। অনেক বিষয়ে মানুষের সঙ্গে
দেবতাদের মিল দেখা যায়, তাই হিন্দুধর্মের
দেবতাদের মধ্যে মানুষেরই প্রতিরূপ পাওয়া
যায় । সেই কারণে পুরাণের দেবতারা
মানুষের মতো দোষেগুণে (ষড়রিপু = কাম,
ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য ) গড়ে
উঠেছে।
আবার অনেক দেবতা মানুষ থেকেও
জন্মেছেন । তাই আহার-বিহার, যানবাহন বসন-
ভূষণ প্রভৃতি ব্যাপারে অনেক দেবতা মানুষের
কাছাকাছি । মহাভারতের ক্ষেত্রেও যে
বাস্তবতা কিছু রয়েছে তা অনস্বীকার্য।
কিন্তু ঘটনা, চরিত্র ও সময় সম্ভবত ঋগবেদের
পরবর্তী কোনো সময়ে। ঋগবেদের অনেক
দেবতার নামই এখানে দেখা যায়। তবে
কৃষ্ণসহ বেশ কিছু নতুন চরিত্র বা ভগবানের
উদ্ভব হয়, যেগুলি আসলে ঋগবেদের কিছু
দেবতার ভিন্নরূপ বই কিছু নয়। কুন্তিপুত্র
পাণ্ডবেরা পাঁচ ভাই হলেও তাদের জন্ম
পাঁচজন অন্য পুরুষের (যাঁদের দেবতা বলা
হয়েছে) ঔরসে। যুধিষ্ঠির ধর্মের পুত্র, ভীম
বায়ুর, অর্জুন ইন্দ্রের এবং নকুল ও সহদেব যমজ
দেবতা অশ্বীনিকুমারদ্বয়ের পুত্র। সমস্যা হল
ধর্ম নামে কোনো দেবতাকে আমরা ঋগবেদে
পাই না। বাকিদের অবশ্য পাওয়া যায়।
এখানে এই “ধর্ম” সম্ভবত বরুণ। ঋগবেদে আমরা
দেখতে পাই ধর্মসংস্কারের ফলে ইন্দ্র যখন
প্রধান দেবতা হিসেবে প্রাধান্য পেতে শুরু
করে তখন বরুণকে হেয় করা হয়। কিন্তু
প্রথমদিককার ঋকগুলিতে বরুণ প্রধান দেবতা
থেকেই যায়। কারণ সেগুলির পরিবর্তন সম্ভব
ছিল না হয়তো। সম্ভবত ধর্মসংস্কারের জন্য
প্রাচীন দেবতাকে যেহেতু “বরুণ” রূপে
উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি, তাই তাকে নতুন
নামে নতুন রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং
ধর্মদেবতাকে সকল দেবতার ঊর্ধ্বে স্থান
দেওয়া হয়েছে। ঋগবেদে বরুণের সঙ্গে আরও
একজন দেবতাকে আমরা দেখতে পাই -- সে
হল মিত্র। ইন্দ্রের পূর্বে বরুণ এবং মিত্র এই
দুই দেবতাকে ঋগবেদে বেশ উঁচু স্থান দেওয়া
হয়।
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায় দেবতা
বিষয়ে লিখেছেন – “আমরা আকাশ ও
সূর্য্যদেবতাদিগের কথা বলিয়াছি, এক্ষণে
বায়ু-দেবতাদিগের কথা বলিব। বেশী বলিবার
প্রয়োজন নাই। বায়ু দেবতা,-প্রথম বায়ু বা
বাত, দ্বিতীয় মরুদ্গণ। বায়ুর বিশেষ পরিচয়
কিছুই দিবার নাই। সূর্য্যের ন্যায় বায়ু
আমাদিগের কাছে নিত্য পরিচিত। ইনি
পৌরাণিক দেবতার মধ্যে স্থান পাইয়াছেন।
পুরাণেতিহাসে ইন্দ্রাদির ন্যায় ইনি একজন
দিক্পাল মধ্যে গণ্য। এবং বায়ু বা পবন নাম
ধারণ করিয়াছেন। সুতরাং ইঁহাকে প্রচলিত
দেবতাদের মধ্যে ধরিতে হয়। মরুদ্গণ সেরূপ
নহেন। ইঁহারা এক্ষণে অপ্রচলিত। বায়ু সাধারণ
বাতাস, মরুদ্গণ ঝড়। নামটা কোথাও একবচন
নাই ; সর্ব্বত্রই বহুবচন। কথিত আছে যে, মরুদ্গণ
ত্রিগুণিত ষষ্টিসংখ্যক, একশত আশী। এ দেশে
ঝড়ের যে দৌরাত্ম্য, তাহাতে এক লক্ষ আশী
হাজার বলিলেও অত্যুক্তি হইত না।
ইঁহাদিগকে কখন কখন রুদ্র বলা হইয়া থাকে।
রুদ্ ধাতু চীৎকারার্থে রুদ্ ধাতু হইতে রোদন
হইয়াছে। রুদ্ ধাতুর পর সেই “র” প্রত্যয় করিয়া
রুদ্র শব্দ হইয়াছে। ঝড় বড় শব্দ করে, এই জন্য
মরুদ্গণকে রুদ্র বলা হইয়াছে সন্দেহ নাই।
কোথাও বা মরুদ্গণকে রুদ্রের সন্ততি বলা
হইয়াছে। তার পর অগ্নিদেবতা। অগ্নিও
আমাদের নিকট এত সুপরিচিত যে, তাঁহারও
কোন পরিচয় দিবার প্রয়োজন নাই। কিছু
পরিচয় দেওয়াই হইয়াছে। ঋগ্বেদে আর একটি
দেবতা আছেন, তাহাকে কখন বৃহস্পতি কখন
ব্রহ্মণস্পতি বলা হইয়া থাকে। কেহ কেহ
বলেন, ইনি অগ্নি, কেহ কেহ বলেন, ইনি
ব্রহ্মণ্যদেব। সে যাহাই হউক। ব্রহ্মণস্পতির
সঙ্গে আমাদের আর বড় সম্বন্ধ নাই। বৃহস্পতি
এক্ষণে দেবগুরু অথবা আকাশের একটি তারা।
অতএব তাঁহার সম্বন্ধে বড় বিশেষ বলিবার
প্রয়োজন নাই। সোমকে এক্ষণে চন্দ্র বলি,
কিন্তু ঋগ্বেদে তিনি চন্দ্র নহেন। ঋগ্বেদে
তিনি সোমরসের দেবতা। অশ্বীদ্বয়
পুরাণেতিহাসে অশ্বিনীকুমার বলিয়া
বিখ্যাত। কথিত আছে যে, তাঁহারা সূর্য্যের
ঔরসে অশ্বিনীর গর্ভে জন্মগ্রহণ
করিয়াছিলেন। এই জন্য তাঁহাদিগের
পৌরাণিক নাম অশ্বিনীকুমার। এমন বিবেচনা
করিবার অনেক কারণ আছে যে, তাঁহারা
শেষরাত্রির দেবতা ; ঊষার পূর্ব্বগামী
দেবতা। আর একটি দেবতা ত্বষ্টা।
পুরাণেতিহাসে বিশ্বকর্ম্মা যাহা, ঋগ্বেদে
ত্বষ্টা তাহাই। অর্থাৎ দেবতাদিগের
কারিগর। যমও ঋগ্বেদে আছেন কিন্তু যমও
আমাদিগের নিকট বিশেষ পরিচিত।
যমদেবতার একটি গূঢ় তাৎপর্য্য আছে, তাহা
সময়ান্তরে বুঝাইবার প্রয়োজন হইবে। ত্রিত
আপ্ত্য অজ একপাদ প্রভৃতি দুই একটি ক্ষুদ্র
দেবতা আছেন, কখন কখন বেদে তাঁহাদিগের
নামোল্লেখ দেখা যায়। কিন্তু তাঁহাদের
সম্বন্ধে এমন কিছুই কথা নাই যে, তাঁহাদের
কোন পরিচয় দিবার প্রয়োজন করে। বৈদিক
দেবীদিগের মধ্যে অদিতি পৃথিবী এবং ঊষা
এই তিনেরই কিঞ্চিৎ প্রাধান্য আছে।
অদিতি ও পৃথিবীর কিঞ্চিৎ পরিচয় দিয়াছি।
ঊষার পরিচয় দিবার প্রয়োজন নাই, কেন না,
যাহার ঘুম একটু সকালে ভাঙ্গিয়াছে সেই
তাহাকে চিনে। সরস্বতীও একটি বৈদিক
দেবী। তিনি কখন নদী কখন বাগ্দেবী। গঙ্গা-
সিন্ধু প্রভৃতি ঋগ্বেদে স্তুত হইয়াছেন। ফলতঃ
ক্ষুদ্র বৈদিক দেবীদিগের সবিস্তার বর্ণনে
কালহরণ করিয়া পাঠকদিগকে আর কষ্ট দিবার
প্রয়োজন নাই। আমরা এইখানে বৈদিক
দেবতাদিগের ব্যক্তিগত পরিচয় সমাপ্ত
করিলাম। কিন্তু আমরা বৈদিক দেবতাতত্ত্ব
সমাপ্ত করিলাম না। আমরা এখন বৈদিক
দেবতাতত্ত্বের স্থূল মর্ম্ম বুঝিবার চেষ্টা
করিব। তার পর বৈদিক ঈশ্বরতত্ত্বে প্রবৃত্ত
হইবার চেষ্টা করি।”
আক্ষেপের কথা একটাই – বেশির ভাগ হিন্দু
এই গ্রন্থ পাঠ করা তো দূরের কথা, চোখেও
দেখেনি। সাধারণ মানুষদের কথা ছাড়ুন,
যাদের বেদ পাঠ না করলে ব্রহ্মজ্ঞানই হয়
না, সেই ব্রাহ্মণদের একটা বড়ো অংশই বেদ
ছুঁয়েও দেখেন না। তা সত্ত্বেও বেদ ব্যতীত
সনাতনী বা হিন্দুদের অস্তিত্ব কোথায় !
হিন্দুত্ববাদের দণ্ডমুণ্ডকর্তা এল কে
আডবাণী যখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন
তখন অক্সফোর্ডে নীরদবাবুর (নীরদ সি
চৌধুরী) বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
‘আত্মঘাতী বাঙালি’-র দুর্মুখ রচনাকার তাঁকে
জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘আপনি ঋগবেদ
পড়েছেন ?’’ উত্তর : ‘না’। হতাশ নীরদবাবু : ‘‘তা
হলে আর হিন্দুধর্ম নিয়ে আপনার সঙ্গে কী
কথা বলব ?’’ (চলবে)

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Siêu Thị Tiện ích posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share