Bangalinews

Bangalinews Bangalinews is one of the popular and authentic online newspapers in Bangladesh. Bangalinews is one of the Popular & authentic online newspaper in Bangladesh.

শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজদ্যুতিময় বুলবুলআজ ১৬ জুলাই ২০২৪, রোজ মঙ্গলবার, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্য...
16/07/2024

শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ
দ্যুতিময় বুলবুল

আজ ১৬ জুলাই ২০২৪, রোজ মঙ্গলবার, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭তম কারাবন্দি দিবস। বাংলাদেশে ১/১১-এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জরুরি অবস্থা চলাকালে মিথ্যা-বানোয়াট, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায়, ২০০৭ সালের এই দিন তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে ধানমন্ডি ৫ নম্বর সড়কের পারিবারিক বাসভবন সুধাসদন থেকে গ্রেপ্তার করে। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রায় ১১ মাস কারাবন্দি রাখার পর, প্রচণ্ড বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ও প্রবল গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনাকে জামিনে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো শেখ হাসিনার কারাবন্দির দিনটি ‘শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস’ হিসাবে পালন করে। দিনটি উপলক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগ সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা মামলায় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ধানমণ্ডির বাসভবন সুধাসদন থেকে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন খুব ভোরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সহস্রাধিক সদস্য শেখ হাসিনার বাসভবন ঘেরাও করার পর, তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে।

তৎকালীন রিমোট কন্ট্রোল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী, আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জামিন আবেদন আইনবহির্ভূতভাবে নামঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।

তারপর শেখ হাসিনাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ সময় শেখ হাসিনা আদালতের গেটে দাঁড়িয়ে প্রায় ৩৬ মিনিট এক আবেগঘন অগ্নিঝরা বক্তব্য দেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ জানান।

গ্রেপ্তারের পূর্ব মুহূর্তে শেখ হাসিনা একটি চিঠির মাধ্যমে জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীদেরকে গণতন্ত্র রক্ষায় মনোবল না হারিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারপর অনৈতিক ও অস্বাভাবিকভাবে আইনের অপব্যবহার করে জামিন না দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে দীর্ঘদিন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ সাবজেলে বন্দি করে রাখা হয়।

শেখ হাসিনাকে কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য, আওয়ামী লীগ সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো সরকারের নানা ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি এবং জেল জুলুমের তোয়াক্কা না করে, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সহ নানা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামে। এ সময় শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগরী আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে এবং রিমোট কন্ট্রোল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে জমা দেয়।

আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী জনগণের তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভ এবং শেখ হাসিনার অনড়, অটল, আপসহীন ও দৃঢ় মনোবল এবং অপরিসীম সাহস ও অকুতভয় মানসিকতা, জনগণের ক্রমাগত প্রতিরোধ আন্দোলন এবং শেখ হাসিনার প্রতি দেশবাসীর অবিচল আস্থা এবং তার মুক্তির জন্য জীবনপণ লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় রিমোট কন্ট্রোল তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

ফলে দেশি-বিদেশি নানামুখী ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর, শেখ হাসিনা তাঁর প্রিয় দল ও জনগণের মধ্যে ফিরে আসেন। শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এ দেশে গণতন্ত্রের পথ উন্মুক্ত হয়। ফলে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণ পুনরায় ২০০৮ সালের ডিসেম্বর অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যম শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে। তারপর গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময় এবং উন্নয়নের রোল মডেল।

নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে অনেক আগেই। ২০১৫ সালের ১ জুলাই এ ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। মধ্যম আয়ের প্রথম ধাপকে নিম্ন মধ্যম আয় বলা হয়, যেখানে মাথাপিছু আয়ের বন্ধনী ১,০৮৬ থেকে ৪,২৫৫ ডলার। মাথাপিছু আয় ৪,২৫৫ থেকে ১৩,২০৫ ডলারের মধ্যে থাকলে তাকে মধ্যম আয়ের দেশ বলা হয়। আর মাথাপিছু আয় ১৩,২০৫ ডলারের ওপরে হলে উচ্চ আয়ের দেশ বলা হয়।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অর্জন করেছে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ থেকে আজ বাংলাদেশ অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধির দেশে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে। ২০৩৭ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ পাঁচ বছরের প্রস্তুতিমূলক সময় পার করছে। ২০৩১ সালের মধ্যে জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুপাত ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশে উন্নীত করতে চায় বাংলাদেশ। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া বাংলাদেশের লক্ষ্য।

এখন বাংলাদেশের সামনে দুটো লক্ষ্য। একটি হলো- উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া, যার জন্য দরকার কমপক্ষে প্রায় ৪ হাজার ২৫৫ ডলার মাথাপিছু আয় করা। তারপর উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়া, যার জন্য দরকার হবে অন্তত ১৩,২০৫ ডলার মাথাপিছু আয় অর্জন করা। বর্তমানের ২ হাজার ৮০০ ডলারের আয় নিয়ে ৫-৬ ভাগের মাথাপিছু আয়ের প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে বাংলাদেশ ৭ থেকে ৯ বছরের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ে পৌঁছাতে পারবে, যা ঘটবে ২০৩১ সালের পর।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নিন্ম-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশের প্রায় ৪৫ বছর লেগেছে। স্বাধীনতার সাড়ে পাঁচ দশক পরে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার পথে রয়েছে বাংলাদেশ। দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনায় বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিন্ম-মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছার পর নয় বছর পূর্ণ হয়েছে। আগামী আট বছরের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয় এবং ১৮ বছরের মাথায় উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হতে চায় বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৭৪ গুণ বেড়েছে। মাথাপিছু আয় অনেক বেড়েছে, গড় আয়ুও বেশ বেড়েছে। প্রায় ১৭ কোটি জনগোষ্ঠীর এই দেশে নিজস্ব অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে বাংলাদেশ।

২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত, ধনীক শ্রেণির সংখ্যা হবে ৩ কোটি ৪০ লাখ। ২০৪০ সালের মধ্যে আনুমানিক মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ৫ হাজার ৮৮০ মার্কিন ডলার।

এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় পিতার ন্যায় আপসহীন মনোভাব নিয়েই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ১৯৮১ সাল থেকে গত ৪৩ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা লড়াই করে যাচ্ছেন। জনগণের রাজনীতি ও অর্থনীতিসহ সার্বিক মুক্তির জন্য শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে হয়েছে অনেক জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন। অসংখ্যবার মৃত্যুর ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে।

কিন্তু জনগণের সমর্থন ও ভালোবাসায় দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে নির্ভীক ও নির্লোভ শেখ হাসিনা নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন। সকল বাধা-বিপত্তি জয় করে আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের দরবারে স্বমহিমায় উজ্জ্বল বাঙালির প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন-অগ্রগতির প্রেরণা ও প্রতীক, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

দ্যুতিময় বুলবুল: লেখক, সাংবাদিক, গবেষক।
https://bangalinews.com/%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%96-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a6%bf-%e0%a6%a6%e0%a6%bf/

আজ জয়া আহসানের জন্মদিনদ্যুতিময় বুলবুলআজ ১ জুলাই ২০২৪, রোজ সোমবার, জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের জন্মদিন। দুই বাংলায় অনেক...
01/07/2024

আজ জয়া আহসানের জন্মদিন
দ্যুতিময় বুলবুল
আজ ১ জুলাই ২০২৪, রোজ সোমবার, জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের জন্মদিন। দুই বাংলায় অনেক দর্শকনন্দিত সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। বাংলা ছবির প্রযোজক, পরিচালক এবং দর্শকদের কাছে জয়া আহসান জনপ্রিয়তার শীর্ষে। একের পর এক সফল ও দর্শকনন্দিত সিনেমায় অভিনয় করে জয়া আহসান নিজেকেই নিজে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন।
ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক জগতে অবাধ বিচরণ জয়া আহসানের। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিনয় না শিখলেও, পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান ও ছবি আঁকা শিখেছেন তিনি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীতে ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন এবং শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
তবে অভিনেত্রী হিসেবেই ছোট পর্দায় জয়া আহসানের প্রথম আবির্ভাব। ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে একজন মডেল হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করার পর, জয়া আহসান বহু টেলিভিশন নাটক এবং সিরিয়ালে কাজ করেছেন। তিনি শহিদুল হক খানের লেখা পাঁচমি নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশনে তাঁর অভিনয় জীবনের সূচনা করেন।
জয়া আহসান মডেলিং দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করলেও, পরে মডেলিং ছেড়ে দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যান। তিনি কিছু দিন সাংবাদিকতা ও শিশুদের স্কুলে শিক্ষকতা করেন। এরপর ফের তিনি মডেলিংয়ে ফিরে যান। তারপর তিনি গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘সংশয়’ ছবিতে কাজ করেন। তিনি কারুশিল্প এবং চিত্রকলার অনুশীলন করেন। তিনি টেলিড্রামা পঞ্চমীতে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম টেলিভিশনে হাজির হন।
নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও জনপ্রিয়তা লাভ করেন জয়া। ২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ব্যাচেলর’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে জয়া আহসানের বাংলা সিনেমায় অভিষেক হয়। এরপর নুরুল আলম আতিক পরিচালিত ‘ডুবসাঁতার’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।
প্রথম দু’টি ছবিতেই জয়া সফল অভিনয় করেন। তবে ২০১১ সালে তানিম নূর পরিচালিত ‘ফিরে এসো বেহুলা’এবং নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু পরিচালিত ‘গেরিলা’ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। তাঁকে ‘গেরিলা’ছবি এনে দেয় ব্যাপক সাফল্য। এ সিনেমার জন্য জয়া ২০১২ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জুরিদের বিচারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
গেরিলা ছবির পর কলকাতার নির্মাতা-প্রযোজকদেরও নজরে আসেন জয়া আহসান। সেই সুবাদে ঢালিউডেও তাঁর ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ২০১২ সালে তরুণ নির্মাতা রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ সিনেমায় কলকাতার ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তের সঙ্গে অভিনয় করে কলকাতায়ও আলোচিত হন জয়া।
জয়া আহসান অভিনীত ছবি দুই বাংলায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাঁর জনপ্রিয় ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফিরে এসো বেহুলা, ভালোবাসার শহর, বিসর্জন, আবর্ত, খাঁচা, দেবী, বিজয়া, ‘ঈগলের চোখ, রাজকাহিনী, প্রেম কাহিনি, পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী, পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি ২, এক যে ছিলো রাজা, বিনি সুতোয়, জিরো ডিগ্রী, একটি বাঙালি ভূতের গল্প, বৃষ্টি তোমাকে দিলাম, অর্ধাঙ্গিনী, দেবী, পুত্র, ক্রিসক্রস, দশম অবতার, ফেরেস্তে, পুতুল নাচের ইতিকথা, বিউটি সার্কাস প্রভূতি।
জয়া আহসান দুই বাংলার ছবিতে এখনো সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন। বলিউডের সিনেমাতেও নাম লেখিয়েছেন তিনি। অসাধারণ অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ এ পর্যন্ত পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দুবার বাচসাস পুরস্কার, সাতবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, তিনবার ভারতের ফিল্মফেয়ার এবং একবার টেলি সিনে পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। এ ছাড়া অসংখ্যবার সেরা অভিনয়ে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
জয়া আহসান ৬৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস জিতেছেন, জি সিনে অ্যাওয়ার্ডস এবং বিএফজেএ অ্যাওয়ার্ডস জিতেছেন। একই বছর, অভিনয়ে কৃতিত্বের জন্য জয়াকে এবিপি আনন্দ সেরা বাঙালির সম্মানে ভূষিত করা হয়। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন থেকে 'দশভুজা বাঙালি ২০১৯' পুরস্কার জিতেছেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, জয়া আহসানের বলিউডে অভিষেক ঘটে কাদাক সিং ছবিতে, অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর একটি থ্রিলার ফিল্ম Zee5 এ মুক্তি পায়। হিন্দুস্তান টাইমস চলচ্চিত্রে জয়ার অভিনয়কে "OTT অন অসামান্য: ব্রেকআউট পারফরম্যান্স" হিসেবে অভিহিত করে।
জয় আহসান শুধু নায়িকা নন, একজন গায়িকাও। তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন। তিনি একজন কারিগর এবং ভিজ্যুয়াল-শিল্পী।
নারী ও শিশুদের সাহায্য করার জন্য তাঁকে ইউএসএআইডি (ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে, জয়া আহসানকে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। তাঁর একটি প্রোডাকশন হাউসও রয়েছে।
জয়া আহসান ১৯৭২ সালে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম এএস মাসউদ। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধ। তাঁর মায়ের নাম রেহানা মাসউদ। পেশায় শিক্ষক। জয়ার একটি ছোট বোন ও একটি ভাই আছে।
অসংখ্য ভক্ত হৃদয়ে ঝড়তোলা ৫২ বছর বয়সী জয়া আহসান একটি সংগীত স্কুলও পরিচালনা করেন। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে জয়া ছিলেন টেলিভিশন মডেল ও অভিনেতা ফয়সাল আহসানের সহধর্মিনী। ১৯৯৮ সালের ১৪ মে তাঁরা বিয়ে করেছিলেন। এই দম্পতিকে একই টেলিভিশন বিজ্ঞাপনেও দেখা গেছে। তাঁরা একসঙ্গে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি চালাতেন। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১১ সালে ফয়সালের সঙ্গে জয়ার বিচ্ছেদ ঘটে। তারপর ২০১২ সালে জয়া আহসান ফয়সালকে তালাক দেন। সূত্র: ইন্টারনেট।
দ্যুতিময় বুলবুল: লেখক, সাংবাদিক, গবেষক।
https://bangalinews.com/%e0%a6%86%e0%a6%9c-%e0%a6%9c%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8/

আজ বিশ্ব বাবা দিবসদ্যুতিময় বুলবুলআজ বিশ্ব বাবা দিবস। প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রোববার এই দিবসটি পালিত হয়। আজ ১৩ জুন রোববার এ...
13/06/2024

আজ বিশ্ব বাবা দিবস
দ্যুতিময় বুলবুল
আজ বিশ্ব বাবা দিবস। প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রোববার এই দিবসটি পালিত হয়। আজ ১৩ জুন রোববার এই বাবা দিবস পালিত হচ্ছে। প্রতি বছর বিশ্বের ১১১ দেশে জুনের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস পালিত হয়। তবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ সেপ্টেম্বরের প্রথম রোববার বাবা দিবস পালন করে।

বাবার মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেই পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সমর্থন, সম্মান এবং প্রশংসার জন্য এই বিশ্ব বাবা দিবস পালিত হয়।

বাবা তাঁর সন্তানের কল্যাণ এবং তাদের মঙ্গলময় ভবিষ্যতের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। সেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই আজ দেশে দেশে বাবা দিবস পালিত হচ্ছে। ইউরোপের রোমান ক্যাথলিক দেশগুলোতে, পিতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মধ্যযুগ থেকে ১৯ মার্চ সেন্ট জোসেফ দিবস পালিত হয।

তবে বাবা দিবস পালন শুরু হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এই দিবসটি পালনের জন্য প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯০৮ সালে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টে এক গির্জায় ৫ জুলাই প্রথম বাবা দিবস পালন করা হয়। তবে কেউ কেউ বলেন, ওয়াশিংটনের ভ্যাংকুভারে প্রথম বাবা দিবস পালিত হয়।

জানা যায়, বাবা দিবসের প্রবক্তা মার্কিন নারী সোনার স্মার্ট ডোড। যখন তাঁর বয়স ১৬, তখন তাঁর মা ষষ্ঠ সন্তান জন্মের সময় মারা যান। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পরিবারে সোনার স্মার্ট ছিলেন একমাত্র কন্যা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর, পূর্ব ওয়াশিংটনের এক গ্রামের ফার্মে সোনার স্মার্টের বাবা নবজাতকসহ ছয়টি সন্তান মানুষ করার দায়িত্ব নেন। সোনার স্মার্ট বড় হওয়ার পর বুঝতে পারেন, ছয়টি সন্তানকে একা মানুষ করতে গিয়ে, কী ভীষণ পরিশ্রমই না করেছেন তাঁর বাবা উইলিয়াম।

উইলিয়াম তার মেয়ের চোখে ছিলেন একজন সৎ, সাহসী, সংগ্রামী এবং নিঃস্বার্থ প্রেমময় বাবা। তিনি সন্তানদের মানুষ করার জন্য নিজের জীবনের সব সুখ-শান্তি, আরাম-আয়েশ বিসর্জন দিয়েছিলেন।

সোনার স্মার্ট বড় হয়ে জন ব্রোস ডোডকে বিয়ে করেন। তাদের সন্তান জ্যাক ডোডের জন্মের কিছু দিন পর সোনারের স্বামী জন মারা যান। এ অবস্থায় সোনার তাঁর বাবার কাছে চলে আসেন। এরপর বাবা ও মেয়ে পুরো জীবন একসঙ্গে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি ও ভালোবাসা এবং আদর, স্নেহ ও মায়া, মমতায় বাকি জীবন কাটিয়ে দেন।

বাবার প্রতি সম্মান জানাতে ‘বিশ্ব বাবা দিবস’ ঘোষণার বিষয়টি সোনার স্মার্ট ডোডের চিন্তায় আসে ১৯০৯ সালে। ওই বছর ‘মা দিবস’ উদযাপনের জন্য চার্চে যান সোনার স্মার্ট ডোড। ওই অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁর মনে হয়, মা দিবসের মতো বাবাদের জন্যও একটি দিবস করা প্রয়োজন, যেদিন মায়েদের মতো বাবাদেরও বিশ্বব্যাপী সন্তানরা সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাবে।

সেই চিন্তুা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের স্পোকেন মিনিস্ট্রিয়াল অ্যাসোসিয়েশনের কাছে সোনার স্মার্ট ডোড তাঁর পিতার জন্মদিন ৫ জুনকে ‘বিশ্ব বাবা দিবস’ঘোষণা করার জন্য প্রস্তাব পাঠান। একইসঙ্গে সোনার স্মার্ট ডোড ১৯১০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যে বাবা দিবস পালন করেন। প্রথম বাবা দিবসটি পালিত হয় ১৯১০ সালের ১৯ জুন।

সোনার স্মার্ট ডোডের প্রস্তাবটি মিনিস্ট্রিয়াল অ্যাসোসিয়েশনে প্রশংসিত হয়। তারা দেশব্যাপী বাবা দিবস উদযাপনেও রাজি হয়। তবে ৫ জুনকে মিনিস্ট্রিয়াল অ্যাসোসিয়েশন বাবা দিবস ঘোষণা করতে রাজি হয়নি। জুন মাসের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস ঘোষণা করা হয়। ১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করার জন্য একটা বিল উত্থাপন করা হয়।

১৯২৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৯তম প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বাবা দিবস পালনের জন্য ছুটির দিনের জন্য ওই বিলে পূর্ণ সমর্থন দেন। তারপর ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬তম প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস ঘোষণা করেন জুন মাসের তৃতীয় রোববার ।

১৯৭২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাবা দিবসকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণা করে, ৩৭তম প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে বাবা দিবস স্বীকৃতি দিয়ে আইনে স্বাক্ষর করেন। এরপর ১৯৭২ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট নিক্সন প্রতিবছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন। মায়ের পাশাপাশি বাবাও যে সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল - এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালন করা হয়।

উল্লেখ্য, শিখরা ২৯ ডিসেম্বর, গুরু গোবিন্দ সিং- এর জন্মদিনে ফাদার'স ডে উদযাপন করে । বাবা দিবস ছাড়াও, ১৯ নভেম্বর পুরুষ এবং ছেলে উভয়ের সম্মানে অনেক দেশে ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’ পালিত হয়।
https://bangalinews.com/%e0%a6%86%e0%a6%9c-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%b8/

বাবা শাশ্বত প্রেমের চিরন্তন প্রতীকদ্যুতিময় বুলবুলবাবা, আব্বা, বাপি, ফাদার, ড্যাড, ড্যাডি ইত্যাদি নানা নামে বিশ্বের বিভিন...
13/06/2024

বাবা শাশ্বত প্রেমের চিরন্তন প্রতীক
দ্যুতিময় বুলবুল

বাবা, আব্বা, বাপি, ফাদার, ড্যাড, ড্যাডি ইত্যাদি নানা নামে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় সন্তানরা পিতাকে সম্বোধন করেন। বাবা শব্দের প্রতিশব্দ হলো - জনক, জন্মদাতা ইত্যাদি। ভাষা, সংস্কৃতি ও দেশ ভেদে বাবা ডাক বদলে গেলেও-কখনো বদলায় না বাবা ও সন্তানের রক্তের টান, প্রাণের সম্পর্ক, জন্মের বন্ধন। বাবা শব্দটি উচ্চারণ করলেই এক অকল্পনীয় আবেগ ও অনুভূতিতে শরীরের শিরা, উপশিরা ও ধমনীতে রক্তে শিহরণ জাগে। সন্তানের দু’চোখ বেয়ে আনন্দ-বেদনার অশ্রু ঝরে।

আমাদের বাংলা ভাষায় বাবা দুটি বর্ণের একটি ছোট্ট প্রেমময় শব্দ। এই শব্দটি পরম নির্ভরতা, স্নেহ, মায়া, মমতা, সাহস ও শক্তির আধার। জন্মের পর থেকে সন্তানকে অপরিসীম আদর-যত্নে আগলে রাখেন বাবা। তাই বাবা মানেই অনন্ত ভালোবাসা, অফুরন্ত শ্রদ্ধা, অশেষ ভক্তি। বাবাকে নিয়ে নোবেল বিজয়ী কথাসাহিত্যিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ লিখেছেন, ‘নিজের অস্তিত্বে বাবার অবয়ব ফুটে উঠতে থাকে বলেই মানুষ ক্রমেই বড় হতে থাকে।’

বাবা সন্তানের আশা ভরসার সবচে’ নির্ভার আশ্রয়। সত্য ও বিশুদ্ধ ভালোবাসার ঠিকানা। সুখ-দুঃখের পরম মিত্র, পথ প্রদর্শক ও ধ্রুবতারা। শাশ্বত প্রেমের চিরন্তন প্রতীক। সবচে’বড় ও সর্বাধিক বিশ্বস্ত বন্ধু, স্বজন, প্রিয়জন, চির আপন। সন্তানের গর্ব, আদর্শ, ছায়া, কায়া, প্রাণের মানুষ। বাবা হলেন সবচে’ ধৈর্যশীল, সদয় ও প্রেমময় ব্যক্তিত্ব। তিনি সন্তানের মধ্যে নিজের আশা, ভরসা ও প্রত্যাশার স্বপ্ন বোনেন। চিন্তা-চেতনায় মননশীল ও সৃজনশীল ভাবনার চাষ করেন। তিনি সন্তানের হৃদয়ে চিরকালের মহানায়ক। অতুলনীয়, অনুকরণীয়, অসাধারণ মহামানব।

বাবা নিঃস্বার্থ সংগ্রামী, সর্বস্ব ত্যাগী, আমৃত্যু জীবনযোদ্ধা। সন্তানের সুখের জন্য, শান্তির জন্য, মঙ্গলের জন্য, নিজের সব কিছু বিসর্জন দেন তিনি। সন্তানের যত চাহিদা, যত আবদার, সব প্রয়োজন মিটাতে রাতদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। বাবা সন্তানের কাছে বটবৃক্ষ, অমল-ধবল কাশবনের শীতল পরশ। নির্ভরতার চক্রব্যূহ, নিরাপত্তার লক্ষণরেখা। আদর-শাসন ও বিবেকের কাণ্ডারী। বাবা সন্তানের চেতনা, প্রেরণা এবং নীতি ও আদর্শের আলোকবর্তিকা।

বাবার কল্যাণেই সন্তানের পৃথিবীর রূপ, রস, রঙ, গন্ধ উপভোগ ও আলোর দর্শন। সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত অপ্রতিদ্বন্দ্বী সত্ত্বা বাবা। হাজারো দুঃখ-কষ্ট হাসিমুখে বরণ করেন তিনি। তাঁর ভালোবাসার গভীরতা ও বিশালতা সীমাহীন, অপার-অসীম, গভীর-গহীন। সন্তানের প্রতি বাবার প্রেম অপরিমেয়, অকৃত্রিম, স্বার্থহীন। বাবার ঋণ কখনো শোধ হয় না। কারণ, সাগরের জল সেচে কখনও শেষ করা যায় না।

জীবনে যতই বাধা-বিপত্তি আসুক, দুঃখ আসুক, সব পরিস্থিতিতেই পরম মমতায় সন্তানকে আগলে রাখেন বাবা। বাবার তুলনা বাবা নিজেই। বাবার আর্দশ সন্তানকে ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে শেখায়। বাবা সন্তানের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও আদর্শ পথ প্রদর্শক। পৃথিবীতে একমাত্র বাবাই নিজের চেয়ে সন্তানের সাফল্য বেশি কামনা করেন। বাবা সন্তানকে ততটাই সফল করতে চান, যতটা তিনি হতে চেয়েছিলেন। বাবা তার ছেলের কাছে প্রথম হিরো এবং মেয়ের কাছে প্রথম ভালোবাসা।

তাই সব ধর্মেই বাবার সন্তুষ্টির কথা বলা হয়েছে। পবিত্র কোরানে মহান আল্লাহ বলেছেন, “তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন, তাঁকে ছাড়া অন্য করো ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। তাঁদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হন, তবে তাঁদেরকে ‘উহ্’ শব্দটিও বলো না, তাঁদেরকে ধমক দিও না এবং তাঁদের সঙ্গে আদবের সঙ্গে কথা বলিও। তাঁদের সামনে করুণভাবে বিনয়ের সঙ্গে নত থাকবে। আর এইরূপ দোয়া করতে থাকবে, হে আমার পরওয়ারদেগার, তাঁদের উভয়ের প্রতি দয়া করুন যেইরূপ তাঁরা আমাকে লালন-পালন করেছেন শৈশবকালে।” (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত-২৩, ২৪)

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত। আর সে বেহেশত অর্জন করার পূর্বশর্ত হচ্ছে তাঁদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, নরম ভাষায় কথা বলা, সম্মানের চোখে দেখা।” রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, “আল্লাহর সন্তুষ্টি পিতার সন্তুষ্টিতে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি পিতার অসন্তুষ্টিতে।” (তিরমিযি, হাদিস নং-১৮৯৯)

অন্যদিকে সনাতন ধর্মশাস্ত্রে বলা হয়েছে, “পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম পিতাহী পরমং তপঃ। পিতরী প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতা। অর্থাৎ ‘পিতাই ধর্ম, পিতাই স্বর্গ, পিতাই পরম তপস্যা। পিতাকে খুশি করলে সকল দেবতা খুশি হন।”

বাবা ছাড়া সন্তানের বাঁচার লড়াইটা বড় কঠিন। তাই বাবাকে সুখে-দুঃখে সব সময় মনে পড়ে। তাঁর পরশ ও সঙ্গ লাভের প্রত্যাশা জাগে। যার বাবা নেই, তার মাথার উপরে ছাতাও নেই, ছাদও নেই। সে সবচে’ নিরাপত্তাহীন অসহায় সন্তান।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী মজুমদারের ‘কাটে না সময় যখন’ গানে বাবার জন্য নিরাপত্তাহীন ও অসহায় সন্তানের বাবার আশ্রয়ের আকুতিই ফুটে উঠেছে, ‘কাটে না সময় যখন আর কিছুতে/ বন্ধুর টেলিফোনে মন বসে না/ জানালার গ্রিলটাতে ঠেকাই মাথা/ মনে হয় বাবার মতো কেউ বলে না/ আয় খুকু আয়, আয় খুকু আয়...।’

দ্যুতিময় বুলবুল: লেখক, সাংবাদিক, গবেষক।
https://bangalinews.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%a4-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9a%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%a8/

ভারতে লোকসভা নির্বাচন ২০২৪মোদী ম্যাজিক শেষ! দ্যুতিময় বুলবুলএবার ২০২৪ সালের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের আগে-ভারতের প্রধানমন...
11/06/2024

ভারতে লোকসভা নির্বাচন ২০২৪
মোদী ম্যাজিক শেষ!
দ্যুতিময় বুলবুল
এবার ২০২৪ সালের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের আগে-ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, "আব কি বার, ৪০০ পার", মানে এবার চার শতাধিক আসনে জিতবে তাঁর দল, ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি। গতবার ২০১৯ সালের সপ্তদশ লোকসভায় বিজেপির আসন ছিল ৩০৩টি। নির্বাচনের আগে মোদী ও তাঁর প্রধান সেনাপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, এবার বিজেপির আসন সংখ্যা ৩০৩ থেকে বেড়ে ৩৭০ পেরিয়ে যাবে।

কিন্তু গত ৪ জুন মঙ্গলবার, ভোটের ফলাফলে দেখা গেল, চার শতাধিক আসন কিংবা ৩৭০ আসন পার করা তো দূরের কথা, ৫৪৩ আসনের লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২টি আসনও পায়নি বিজেপি। তারা গতবারের ৩০৩টি আসন থেকে ৬৩টি হারিয়ে, এবার পেয়েছে ২৪০টি আসন। ফলে নরেন্দ্র মোদীকে গত ৯ জুন সরকার গঠন করতে আরো অন্তত ৩২টি আসনের জন্য এনডিএ জোটের শরিকদের মুখাপেক্ষী হতে হয়েছে। যদিও এনডিএ গতবারের ৩৫২টি আসন থেকে এবার ৫৯টি আসন হারিয়ে, ২৯৩ আসনে নেমে এসেছে।

তবে জোট সঙ্গীদের সমর্থন পেলেও, এই নতুন মোদী সরকারের ভবিষ্যত অনিশ্চিত বলে অনেকে মনে করছেন। তারা বলছেন, মোদীর বিজেপি আবার ক্ষমতায় এসেছে সত্য। কিন্তু তারপরও তাদের এবারের জয়কে ‘হারের চেয়েও বেশি গ্লানিময়’ মনে হচ্ছে।

বিজেপির এবারের নির্বাচনের ফলাফলে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ও দৃষ্টান্তমূলক সুস্পষ্ট বিপর্যয় হলো স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রাপ্ত ভোটের বিস্ময়কর হ্রাস। যে ব্যবধানে মোদী উত্তরপ্রদেশের বারাণসী আসনটি জিতেছেন, তা দলের ও তাঁর নিজের অস্বস্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারাণসী থেকে এবার মোদীর জয়ের ব্যবধান ছিল ১ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ ভোট। শতাংশের হিসাবে যা ১৩.৪৯ শতাংশ। গত দু’বারের নির্বাচনের চেয়ে এই ব্যবধান বিশাল। অর্থাৎ, আগের চেয়ে অনেক কম ভোট পেয়েছেন মোদী। এবার গতবারের চেয়ে তাঁর প্রায় তিন লাখ ভোট ব্যবধান কমেছে।

২০১৪ সালে প্রথমবার বারাণসী থেকে ৫.৮১ লাখ ভোট পেয়েছিলেন মোদী। সেবার আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ৩.৭ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে সেই বারাণসীতেই দ্বিতীয়বার ভোটে মোদীর ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পায়। তিনি দ্বিতীয়বার ৬.৭৪ লাখ ভোট পেয়েছিলেন। ব্যবধান ছিল ৪.৭৯ লাখ। সেবার তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সমাজবাদী পার্টির শালিনী যাদব।

এবার মোদীর ভোটের সংখ্যা উর্ধ্বমুখী নয়, নিম্নমুখী হয়েছে। বারাণসীতে মোদীর তৃতীয় দফা ভোটে, এবার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের অজয় রাই শুধু মোদীর সঙ্গে ভোটের ব্যবধানই কমাননি, গণনা শুরুর পর প্রাথমিক ‘ট্রেন্ডে’ একবার তাঁকে পেছনেও ফেলেছিলেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এই লোকসভা নির্বাচনে বারাণসী থেকে মোদীর বিপরীতে দাঁড়ানো কংগ্রেস প্রার্থী অজয় রাই পেয়েছেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭ ভোট। আর নরেন্দ্র মোদী পেয়েছেন ৬ লাখ ১২ হাজার ৯৭০টি ভোট। ফলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস প্রার্থী অজয়কে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ ভোটে হারিয়েছেন। এটাই মোদীর সর্বনিম্ন জয়-ব্যবধান।

তবে গতবারের প্রার্থী শালিনীর চেয়ে মোদীর বিরুদ্ধে ২ লাখ ৮৪ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী অজয়।

শুধু তাই নয়, মোদী এবার যে ভোট পেয়েছেন-তা ভারতের সব প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কম ভোটের ব্যবধানে জেতার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এর আগে কেবল একজন প্রধানমন্ত্রী তাঁর চেয়ে কম ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। তিনি হলেন চন্দ্র শেখর, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল দেড় লাখেরও কম। শতাংশের বিচারে তা মাত্র ১২.৭৮ শতাংশ।

ভোট ব্যবধানের তালিকায় এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে উপরে রয়েছেন নেহেরু-গান্ধী পরিবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। ১৯৮৪ সালে তিনি ৭২.১৮ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৯৮৪ এবং ১৯৮৯ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে, সর্বাধিক ভোটের অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দু’বার রেকর্ড বা নজির সৃষ্টি করেছেন।

সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া প্রধানমন্ত্রীদের এই তালিকায় তিন নম্বরে আছেন নরেন্দ্র মোদী। ২০১৯ সালে তাঁর জয়ের ব্যবধান শতাংশের বিচারে ৪৫.২২ শতাংশ। আর এবার নরেন্দ্র মোদীর চেয়ে তাঁর দলের ১১২ জন এবং অন্য দলের প্রার্থী ১১২ জন সহ মোট ২২৪ জন প্রার্থী বেশি ব্যবধানে জিতেছেন।

গত ১০ বছরের দাপুটে রাজনীতি ও ভারত শাসনের পরও, ‘মোদী ম্যাজিক’ ব্যর্থ হলো-এবার ২০২৪ সালের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে। ফিকে হলো বিজেপির গেরুয়া রঙ। এবার ম্লান বিজেপির এনডিএ জোটও। কারণ, জোটেরও ৫৯টি আসন কমে গেছে। তাই জয়ের পরও পরাজয়ের স্বাদ পাচ্ছেন ক্ষমতাসীনরা।

ক্ষমতাসীন দল বিজেপি তথা এনডিএ জোটের এই পরাজয়ের কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে-একদিকে, অপ্রত্যাশিতভাবে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের পুনর্জাগরণ। অন্যদিকে, নরেন্দ্র মোদীর প্রশাসনিক নীতি, ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, রাষ্ট্রে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, বিরোধীদের ওপর সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কৃষক অসন্তোষ সহ নানা সমস্যা এবং দলে ও জোটে সমন্বয়হীনতা। ফলে যুক্তিসঙ্গত অনেক কারণেই মোদীর জনসমর্থন কমে গেছে। তাই এখন পরিবর্তন চায় ভারতের সাধারণ মানুষ, চায় নতুন মুখ- বলছেন বিশ্লেষকরা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবারের নির্বাচনে ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর টানা তিন মেয়াদে নিরঙ্কুশ জয়ের রেকর্ড ভাঙার পাশাপাশি, রাজীর গান্ধীর ৪১৩ আসন জয়ের রেকর্ড অতিক্রম করে ইতিহাসে ‘ডাবল রেকর্ড’ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।

স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ১৯৫২, ১৯৫৭ ও ১৯৬২ সালের নির্বাচনে জিতে টানা তিন মেয়াদে ১৬ বছর দেশ শাসন করেছেন। নেহেরুর নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিটি জয়ই ছিল নিরঙ্কুশ। কারো সহায়তা ছাড়াই তিনি সরকার গড়েছিলেন।

কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর নেহেরুকে অতিক্রম করার স্বপ্নপূরণ হয় নি। ২০১৪ সালের ষোড়শ ও ২০১৯ সালের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটের সহায়তায় বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা পেলেও, এবারের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে জোটকে নিয়েও তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে নি। ফলে টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে মোদী নেহেরুর রেকর্ড ছুঁলেও, তাঁকে অতিক্রম করতে পারেন নি। হ্যাটট্রিকের এই নির্বাচনেও মোদীকে জোট শরিকদের সাহায্য নিতে হয়েছে, সরকার গঠনের জন্য।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯৮৪ সালের লোকসভা ভোটে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের জেতা ৪১৩ আসন টপকে নতুন রেকর্ড গড়তে চেয়েছিলেন। এজন্যই তিনি “আব কি বার, চারশ পার” স্লোগান তুলেছিলেন। এই ইচ্ছাও পূরণ হয় নি মোদীর। ভবিষ্যতেও কোনো সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। বরং এই জয় ‘অসম্মানের ও পরাজয়তুল্য’ বলে গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে মোদীর কোনো লক্ষ্য পূরণ হয়নি। নির্বাচনে জিতেও তাঁর সবচেয়ে বড় হার হয়েছে। ফলে ‘কর্তব্য পথে’ শপথ গ্রহণের অভিলাষ ছাড়তে হয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের ফল প্রকাশের আগে ভাবা হয়েছিল, নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের হ্যাটট্রিক উদযাপন করা হবে জনতার দরবারে। সে কারণে তাঁরই আমলে নতুনভাবে তৈরি কর্তব্য পথে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান করার প্রস্তাব বিবেচিত হচ্ছিল। কিন্তু মোদীর কথিত অপ্রতিরোধ্য জয়রথ অপ্রত্যাশিতভাবে মুখ থুবড়ে পড়ার কারণে সেই পরিকল্পনা ভণ্ডুল হয়ে গেছে।

এত দিন দূরবিন দিয়েও দেখতে না পাওয়া অথবা পাত্তা না দেওয়া মাঝারি, ছোট ও আণুবিক্ষণিক জোট সঙ্গীদের অবনত শিরে হাত পেতে শর্ত সাপেক্ষে সমর্থন নিয়ে এবং তাদের কাঁধে ভর করে যত দূর যাওয়া যায়—এই প্রত্যাশায় তৃতীয়বার সরকার গঠন করেছেন নরেন্দ্র মোদী। বলা যায়-কিছুটা আতঙ্ক, ভয় ও অশনি সংকেত নিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন করে যাত্রা শুরু করলেন।

গত ৯ জুন রোববার সন্ধ্যায় রাজধানী নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন ‘রাইসিনা হিলস’ এ টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। শপথ বাক্য পাঠ করেছেন তাঁর নতুন এনডিএ জোট সরকারের মন্ত্রিসভার ৭২ জন সদস্যও। তাঁদের শপথ পড়ান ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
দ্যুতিময় বুলবুল: লেখক, সাংবাদিক, গবেষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।
https://bangalinews.com/%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%a6%e0%a7%80-%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b7/

ভারতে লোকসভা নির্বাচন ২০২৪এবার মোদী ম্যাজিক ব্যর্থ, বিরোধীদের অগ্রগতি জোট সরকারের পথে ভারতদ্যুতিময় বুলবুল ভারতে এবার ২০২...
05/06/2024

ভারতে লোকসভা নির্বাচন ২০২৪
এবার মোদী ম্যাজিক ব্যর্থ, বিরোধীদের অগ্রগতি
জোট সরকারের পথে ভারত
দ্যুতিময় বুলবুল
ভারতে এবার ২০২৪ সালের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে, মোদী ম্যাজিকে কাজ হলো না। ধর্মের ধ্বজাও উড়লো না। এমনকি, তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে মোদীর ৪৫ ঘণ্টার ধ্যানও রক্ষা করতে পারলো না বিজেপিকে! বুথ ফেরত জনমত জরিপ তো মিলল-ই না। ‘৪০০’ কিংবা ’৩৭০‘ পার করা দূরে থাক, দুই দফায় টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে বিজেপি।

সরকার গড়ার জন্য যেখানে লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৭২টি আসন দরকার, সেখানে বিজেপি পেয়েছে ২৪০টি। ম্যাজিক সংখ্যার চেয়ে ৩২টি কম। মূলত, ৫৪৫ আসনের (২টি মনোনীত আসন-সহ) লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭৩টি আসন।

মাত্র সাড়ে ১১ মাস আগে গড়া বিরোধী জোট (যাকে প্রচারপর্বের আগাগোড়া কটাক্ষ করে এসেছেন মোদী-সহ বিজেপি নেতারা) আটকে দিলো ‘পদ্মে’র নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার পথ।

অন্যদিকে, এবারের ভোটে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি আসন। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, শিবসেনা (উদ্ভব) ৯টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) ৮টি, শিবসেনা (এসএইচএস) ৭টি ও লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) ৫টি আসন পেয়েছে।

এছাড়া সিপিআই (এম) ৪টি, কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট) ৪টি, ওয়াইএসআরসিপি ৪টি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ৪টি আসন পেয়েছে। আম আদমি পার্টি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) ৩টি করে আসন পেয়েছে।

কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট–লেনিনিস্ট) (লিবারেশন)–সিপিআই (এমএল) (এল), জনতা দল-জেডি (এস), জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (জেকেএন), রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), জনসেনা পার্টি (জেএনপি) ও ভিসিকে ২টি করে আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দল ১টি করে আসন পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন ৭ জন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ জানাচ্ছে, ঘোষিত ফল অনুযায়ী বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স–এনডিএ জোটের মোট আসন সংখ্যা ২৯৩টি। আর অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের মোট আসনসংখ্যা ২৩৩টি। ফলে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইান্ডয়া জোটের চেয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিপি জোট ৬০টি আসন বেশি পেয়েছে। মূলত, বিজেপি এবং কংগ্রেস ছাড়া অন্যরা আসন পেয়েছে ২০৪টি।

এর আগে ২০১৯ সালের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে, বিজেপি ৩০৩টি আসন পেয়েছিল। সেবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ পেয়েছিল ৩৫২টি আসন। আর কংগ্রেস পেয়েছিল ৫২টি আসন এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন তৎকালীন ইউপিএ জোট পেয়েছিল ৯৪টি আসন।

এবারের ভোটের ফল বলছে, নরেন্দ্র মোদী জোটের সমর্থনে সরকার গঠন করতে পারলেও, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মানুষের ঢালাও সমর্থন কমেছে। গত দু‘বার বিজেপির পক্ষে কাজ করেছিল মোদী ম্যাজিক এবং হিন্দু সাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী হাওয়া! এবার সেই ম্যাজিক অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। তাই এক ধাক্কায় বিজেপির আসন ৩০৩ থেকে ২৪০ এ নেমে এসেছে।

স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভোট উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। নিজের বারাণসী কেন্দ্র থেকে মোদী জয় পেলেও, গতবারের তুলনায় তাঁর জয়ের ব্যবধান কমেছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ। এক পর্যায়ে পিছিয়েও পড়েছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ ভোটে জিতেছেন মোদী।

নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের তকমা হারিয়ে বিজেপিকে এখন সরকার গঠনের জন্য এনডিএ জোট শরিকদের সমর্থন নিতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সরকার চালাতে শরিক দলগুলোর ওপরে অনেকটাই নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। সে ক্ষেত্রে এনডিএ শরীকরা বিজেপির ওপর নানাভাবে চাপ বৃদ্ধি করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকদের মধ্যে প্রধান দু’টি দল অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি এবং বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি–ইউ) পার্টি এখন বিজেপির ভাগ্য নির্ধারক। অতীতে এই দুই নেতা একাধিক বার মোদী সরকারের এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে গেছেন। আবার ফিরেও এসেছেন। ফলে মোদী তৃতীয় দফায় চন্দ্রবাবু ও নীতীশকে নিয়ে সরকার গঠন করলেও, স্বস্তিতে থাকতে পারবেন কিনা-তাতে সন্দেহ রয়েছে।

এছাড়াও এনডিএ শরীক মহারাষ্ট্রের শিবসেনার সিন্ধে গোষ্ঠী, বিহারে লোক জনশক্তি পার্টি এবং উত্তর প্রদেশের রাষ্ট্রীয় লোক দলের সমর্থন লাগবে। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নতুন ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে বিজেপিকে। সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায়, এ ধরনের সমস্যায় তারা গত দু’বার পড়েনি। সামনে ভারতের রাজনীতিতে বিজেপির জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

এবার ২০২৪ সালে ভারতের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ১০ বছর পর, আবার একদলীয় শাসনের অবসান ঘটতে চলেছে। সেই সঙ্গে এই অষ্টাদশ লোকসভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ফিরতে চলেছে বিরোধী দলনেতার পদও।

২০১৪ ও ২০১৯ সালে মোদী ঝড়ে আসমুদ্রহিমাচল লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল। উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রবল হাওয়ায় ভেসেছিল ভারতের অধিকাংশ রাজ্য। এবারের ভোটে সেই মোদী ঝড়ের তীব্রতা ছিল না। এমনকি, হিন্দি–বলয়েও রাম মন্দিরের হিন্দুত্ববাদী হাওয়া লাগে নি। তারপরও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতেই ভারতের শাসন ভার থাকছে।

২০১৪ এবং ২০১৯-এর মতো এবার সংসদের নিম্নকক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায়, পদ্মশিবির হতাশ। কারণ, জোটসঙ্গীদের মধ্যে বেশি আসন পাওয়া দলগুলো বিরোধী শিবিরে ভিড়লে চিত্র ভিন্ন হতে পারে। বিশেষ করে চন্দ্রবাবু নাইডু এবং নীতীশ বিগড়ে গেলে বিজেপি বিপদে পড়বে। এই দুই নেতা অতীতে একাধিক বার এনডিএ ত্যাগ করেছেন। আবার প্রত্যাবর্তনও করেছেন।

শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেস জোট নাইডু ও নীতীশ সহ এনডিএ জোটের অনেকের সঙ্গে কথা বলছে, বিজেপিকে ছেড়ে তাদের জোটে যোগ দেওয়ার জন্য।

তবে এটা স্মরণযোগ্য যে, ভারতের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পর মোদীই হতে চলেছেন দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি পর পর টানা তিনবার লোকসভা নির্বাচনে জিতে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন। তবে জওহরলাল নেহেরুর মতো পর পর তিনবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতার চেয়ারে বসার রেকর্ড গড়তে পারেন নি মোদী।

অন্যদিকে, এই লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করতে না পেরে টানা তিনবার বিরোধী দলের আসনে বসতে যাচ্ছে কংগ্রেস। তবে গত দুইবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আসন পেয়ে কংগ্রেস লোকসভায় এবং জাতীয় রাজনীতিতে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিরোধী দলনেতার পদের জন্য লোকসভায় ৫৫টি আসনে জেতা প্রয়োজন। কিন্তু ২০১৪ সালের ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে ৪৪টি আসন এবং ২০১৯ সালের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে ৫২টি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। ফলে সংসদীয় বিধি অনুযায়ী, গত দুই লোকসভায় বিরোধীদলের মর্যাদাও পায় নি তারা।

তবে এবার বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস মুখোমুখি লড়াই করেছে। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট গতবার যেখানে পেয়েছিল মাত্র ৯৪ আসন, সেখানে এবার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩১ আসন। এনডিএ জোটের চেয়ে ৬৫টি আসন কম হলেও, বিরোধী জোট আগের চেয়ে অনেক ভালো করেছে।

ভোটের প্রচারে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া তীব্র বেকারত্ব, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও সংবিধান–গণতন্ত্র রক্ষার ওপর জোর দিয়েছিল। দেখা যাচ্ছে, সেই প্রচার কাজে লেগেছে। এনডিএ জোটের ধর্মের ব্রক্ষ্মাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। ফলে এনডিএ এবং ইন্ডিয়া’র মধ্যে জোর লড়াই হয়েছে।

ভারতে এ বারের ২০২৪ সালের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন গত ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছিল। সাত দফার ভোট শেষ হয় গত ১ জুন। গতকাল ৪ জুন মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগণনা শুরু হয়। প্রথমে পোস্টাল ব্যালট, তারপর ‘ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন’ তথা ইভিএম-এ পড়া ভোটের গণনা শুরু হয়। রাতে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে।
দ্যুতিময় বুলবুল: লেখক, সাংবাদিক, গবেষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।
https://bangalinews.com/%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%a6%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be/

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Bangalinews posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Bangalinews:

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share

Our Story

BANGALINEWS is an Online News Portal of Bangladesh. Being one of the largest and most widely read Bangla language website in the world across all segments and categories. BANGALINEWS started its journey from 2017. Nowadays we are one of the most popular news portals in online. We achieve most popularity for our activity, positive news & honesty in a very short time. We focus on all important news. We also have Diligent, Neutral and Professional journalism.