14/02/2025
শবে বরাত কিভাবে অতিবাহিত করবেন?
-মোহাম্মদ নজমুল হুদা খান
শবে বরাত এক ফযীলতপূর্ণ রাত। এ রাতের ফযীলত কেউ কেউ অস্বীকার করে থাকেন। কে কী বললো সেদিকে না তাকিয়ে আসুন আমরা এ রাত ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাই। শরীয়তসম্মত যে কোনো ইবাদত যে কোনো রাতে করতে কোনো অসুবিধা নেই। এ রাত কিভাবে কাটানো যায় এর একটি দিক-নির্দেশনা এখানে তুলে ধরা হলো। এটি কোনো আবশ্যকীয় বিষয় নয়। নিজের পক্ষে যতটুকু পালন করা সম্ভব আমরা তা করার চেষ্টা করি। সম্ভব হলে আরো বেশি করি। প্রতিদান দেওয়ার মালিক তো আল্লাহ।
#কিভাবে রাতটি কাটাতে পারেন
* মাগরিবের নামাযের পর প্রথমে ৬ রাকাআত আউয়াবীনের নামায পড়ুন (২ রাকাআত ২ রাকাআত করে)।
* এরপর সূরা ওয়াকিয়া তিলাওয়াত করুন।
* বেশি বেশি ইস্তিগফার করুন (কমপক্ষে ১০০ বার)।
* বেশি বেশি দরুদ শরীফ পড়ুন (কমপক্ষে ২০০ বার)।
* ইশার নামাযের পর সূরা মূলক তিলাওয়াত করুন।
* যারা দালালাইলুল খায়রাত শরীফ পড়েন আগামীকালের নির্ধারিত অংশ প্রথমে পড়ুন। সম্ভব হলে খতমও করতে পারেন। যারা অন্যান্য ওযীফা পড়েন সে ওযীফাগুলোও পড়ুন।
* সম্ভব হলে মাতা-পিতা ও আত্মীয় স্বজনের যিয়ারত করুন। তাঁদের মাগফিরাতের জন্য দুআ করুন।
* রাতের বেশির ভাগ সময় নামায ও কুরআন শরীফ তিলাওয়াতে কাটান।
* বেশি বেশি নফল নামায পড়ুন। এর কোনো নির্ধারিত রাকাআত সংখ্যা নেই। দুই রাকআত দুই রাকআত করে যত রাকআত ইচ্ছা পড়ুন। যে কোনো সূরা দিয়ে পড়ুন।নফল নামাযের সিজদায় নিম্নের দুআটি পড়তে পারেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সিজদায় এ দুআ পড়েছেন মর্মে বর্ণনা আছে। দুআটি হলো:
أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَأَعُوذُ بِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
* দীর্ঘ নামায পড়তে চাইলে সালাতুত তাসবীহ পড়তে পারেন। সালাতুত তাসবীহ এর নিয়ম হলো-
চার রাকাআত নামাযের নিয়ত করবেন।
তাকবীরে তাহরীমার পর ছানা (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা...) পাঠ করবেন।
তারপর নিচের তাসবীহ ১৫ বার পাঠ করবেন-
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ ولا إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَرْ
তারপর আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহসহ সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন।
তারপর এর সাথে অন্য যে কোনো সূরা মিলিয়ে পড়বেন।
এরপর রূকূতে যাওয়ার আগে ১০ বার উপরের তাসবীহ পাঠ করবেন।
তারপর রূকূতে গিয়ে রূকূর তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম) পড়ার পর ১০ বার ঐ তাসবীহ পাঠ করবেন।
রূকূ থেকে দাঁড়িয়ে ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ পড়ার পর ১০ বার ঐ তাসবীহ পাঠ করবেন।
তারপর সিজদায় গিয়ে সিজদাহ’র তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা) পড়ার পর ঐ তাসবীহ ১০ বার পাঠ করবেন।
তারপর দুই সিজদার মাঝখানের বৈঠকের তাসবীহ পাঠ করে ঐ তাসবীহ ১০ বার পাঠ করবেন।
তারপর দ্বিতীয় সিজদায় গিয়ে সিজদাহ’র তাসবীহ পাঠ করে ঐ তাসবীহ ১০ বার পাঠ করবেন।
এভাবে চার রাকাআত নামায পড়বেন। এতে প্রতি রাকআতে ৭৫ বার করে চার রাকাআতে মোট ৩০০ বার উপরোক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হয়।
* নিজ গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে হয়ে বার বার তাওবা করুন। তাওবা-ইস্তিগফারের বাক্যগুলো বেশি বেশি পড়ুন। সায়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করুন।
* আল্লাহর নিকট কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিজের জন্য, পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন, আত্মীয় স্বজনসহ গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য ক্ষমা ও নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করুন।
* শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামায পড়ুন।
* পরের দিন (১৫ শা’বান) রোযা রাখুন।