Tales of Upama

  • Home
  • Tales of Upama

Tales of Upama যাচ্ছেতাই.........

01/07/2023

ঘটনা ১ঃ
২০১৪-র কথা৷ আমার নানাভাইয়ের তখনও ক্যান্সার ধরা পড়ে নাই৷ বিশাল টিউমার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি৷ আম্মু নানাভাইয়ের দেখাশোনা করার জন্য হাসপাতালে৷ বাসায় আমি, অনন্যা একাই থাকি বলা যায়। ভাত-তরকারী কিছু রাঁধতে পারি না, খাবার ঠিকঠাক মতো গরম করা হইসে কিনা সেটাই বুঝতে পারি না৷ আমাদের তখন যোগাযোগ করার মতো ফোনও ছিল না৷ কয়েকদিন পর পর আমার খালা বা কাজিনরা হসপিটালে খাবার নিয়ে যাওয়ার সময় বা ফেরার সময় খাবার দিয়ে যায়৷ ঐটা ঠিকমতো গরম করে রাখতে পারি না। কোনোদিন তো অসাবধানতায় খাবার নষ্ট করে ফেলি! প্রতিদিন ফ্রিজে রাখা বাসী ভাত খেতে খেতে আমরা ভীষণ বিরক্ত,হতাশ এবং দুঃখী৷ কিন্তু এতগুলা খাবার ফেলে দেওয়ার জন্য নির্দয়তাও দেখাতে পারি না।
ঠিক ৫/৭ দিন অমন ভাত খাওয়ার পর যেদিন আমরা দুইবোন আনাড়ি হাতে ভাত চড়ালাম, ঐ নরম হয়ে যাওয়া গরম ভাত খেয়ে আমরা প্রথমবারের মতো ভাতের স্বাদ এবং মর্ম বুঝলাম। আমরা প্রথমবারের মতো জানলাম গরম ভাত খেতে কেমন লাগে৷

ঘটনা দুইঃ
গরমে ঘেমে নেয়ে অত্যন্ত বিরক্ত তিন বন্ধু মিলে একটা বাড়ির রঙ নিয়ে সমালোচনা করছিলাম। ক্যাটকেটে গোলাপী, নীল, আরও কয়েকরকম রঙ ছিল বাড়িটার। আমরা গল্প করছিলাম পুরো বাড়িটা একই রঙ করলে এমন কি ক্ষতি হতো? আমাদেরই সাথে হাস্যরসে লিপ্ত থাকা একজন বন্ধু বলে ওঠে- "তাই তো। করলে একই রঙ করতো। এত অগোছালোভাবে কেন রঙ করবে?" আমি সাথে সাথে চুপসে গেলাম। কারণ আমার সেই বন্ধুটি রঙের পার্থক্য বোঝে না৷ পৃথিবীর কোনো রঙ সম্পর্কে ওর ধারণা নেই। অন্ধ মানুষের সামনে রঙ বিষয়ক আলাপ করায় ভেতরে ভেতরে আমি অত্যন্ত অপরাধবোধ করলাম। সৃষ্টিকর্তার প্রতি অভিমান আমার মুহুর্তেই কেটে গেল৷ কৃষ্ণচূড়া-সোনালুর মরসুমে তার মন উদ্বেলিত হয়ে উঠবে না ভেবে আমি বহুদিন দুঃখ পেয়েছি৷


ঘটনা তিনঃ
গরুর মাংস, শুটকি, ইলিশসহ মানুষ যা কিছু খুব আগ্রহ নিয়ে খায়, তার কোনোটার প্রতিই আমার কোনোরূপ আগ্রহ ছিল না৷ পরিবারের সবাই একসাথে খেতে বসা নিয়ে আমি কখনোই সিনসিয়ার ছিলাম না৷ আমি বাসার ঐ অগোছালো মেয়েটা যার জন্য সবাই অপেক্ষা করতে করতে খেয়ে নেয়৷ যাকে ডাকতে ডাকতে ঘুম ভাঙে না৷ ফল কেটে সামনে না দিলে যে খায় না৷ আমি ঐ মেয়েটা যে কখনো মায়ের মাথা টিপে দেয় না, বাবার জন্য যে ভাত বেড়ে আনে না। এরপর আমি ভাগ্যের ফেরে বহুদূর চলে গেলাম, যেমনটা আমি চেয়েছিলাম।
লকডাউনে টানা ৯ মাস বাসায় বন্দী থেকে আমি প্রায় পাগল হয়ে গেলাম৷ প্রতিদিনই ঝামেলা করতে করতে বিরক্ত হয়ে আমি ক্যাম্পাসে চলে গেলাম। হল বন্ধ৷ একটা বাসা নিয়ে থাকি৷ টিউশন করায়ে বাসা ভাড়া দিই৷ ঘুম থেকে উঠে আগে বাসা ক্লিন করি, আমার নোংরা থাকতে ভাল্লাগে না। ঘষে ঘষে ফ্লোর মুছি। দিনে চৌদ্দবার ঝাড়ু দিই কারণ ফ্লোরে চুল দেখলেই আমার মেজাজ খারাপ হয়৷ তারপর রান্না করি। দুপুরে খেয়েই বের হয়ে যাই। সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার সময় বাজারে যাই। বাসায় এসে আবার রান্না করি। সারাজীবনে আমি কোনোদিন এত কাজ করি নাই। আমি চোখ কচলাতে কচলাতে সব কাজ হয়ে গেছে৷ এর আগে আমি কোনোদিন বাথরুম পরিষ্কার করি নাই৷ প্রতিদিন রান্না করা দূরে থাক, আমি কোনোদিন বাসায় রান্নাই করি নাই৷ বরং পায়ের ওপর ঠ্যাং তুলে বলসি- লবণটা কম হইসে৷ এই রুটিন আর ভালো লাগতেসিল না। বাসা ছেড়ে দিয়ে যখন বাসায় ফিরলাম, আমি প্রথমবারের মতো রিয়েলাইজ করলাম বাসায় আমাকে কোনো কাজ করানো ছাড়া ফ্রিতে তিনবেলা ভাত খাইতে দেয়, তিনবেলা লাত্থি দিলেও ঐটা হজম করে নেওয়া উচিত৷ এরপর আমি অনেক সহনশীল হয়ে গেলাম৷

আমি এরপর জানলাম আমার মা অসাধারণ ডাল রান্না করে৷ গরুর মাংস বেশ উপাদেয় খাদ্য৷ আমি বুঝতে শিখলাম একা খাওয়ার মাঝে কোনো আনন্দ নেই৷ আমি জানলাম যেখানে কেউ ঘুম ভাঙার জন্য ডাকাডাকি করে না, যেখানে কেউ কখনো খাওয়ার জন্য বকাঝকা করে না; ওটাকে একাকীত্ব বলে। আমি আরও যা কিছু শিখলাম.... মন খারাপ হলে যেখানে বাবাকে ডেকে বলা যায় না, "আমাকে একটু ধরে রাখো৷ আমার ভাল লাগছে না", ওটা স্বর্গ হলেও ঐ স্বর্গ আমি স্বেচ্ছায় ত্যাগ করতে পারি। আমি নিজের এথিক্স থেকে বের হওয়ার মানুষ না, কিন্তু আমি একদিন বুঝে গেলাম যা মেনে নিলে বাবা-মা একটু খুশি হয়, তা মেনে নেওয়ার ভালো৷ গতকাল রাতে আমার ভীষণ মন খারাপ ছিল। বাসায় গেস্ট আসায় আমি অন্যরুমে ঘুমাচ্ছিলাম৷ সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে৷ আমার কয়েলের ধোঁয়ায় সমস্যা হয় তাই কয়েক জ্বালাই নি৷ রাত বারোটায় আমার বাবা শোয়া থেকে উঠে কোত্থেকে একটা মশারি নিয়ে আসলো৷ আমি বললাম, আমি এখন এটা কিভাবে টাঙাব? আমার বাবা উত্তর দিল- "বাবা থাকতে তোর কোনো চিন্তা নাই বাবা"। আমি কেঁদে ফেললাম। বহুদিন পর আমি কেঁদে ফেললাম। কয়েকবছর আগেও আমি আলাদা করে এইসব নোটিস করতে পারতাম না৷
যে জিনিসগুলা আমরা না চাইতেই পেয়ে বড় হই, আমরা মনে করি আমরা ঐসব পেতে বাধ্য। কখনো রুটিনের বদল ঘটলেই আমরা বুঝতে পারি, প্রত্যেকটা জিনিসের জন্য আমাদের আনন্দিত হওয়া উচিত, শুকরিয়া আদায় করা উচিত৷ এই যে দু'চোখ ভরে পৃথিবীর রূপ দেখতে পারছি, নিজের পায়ে ভর করে হাঁটতে পারছি, এখনও এক বেলার জন্যও আমাদের খাবার বন্ধ হয় নি এইগুলো খুব সাধারণ বিষয় না৷ প্রত্যেকটা মুহুর্তের জন্য আমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে এবং আমাদের জীবন সংশ্লিষ্ট মানুষের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।

01/07/2023

নারী যারে ভালোবাসে, তারে মাথার ওপরে সিংহাসন বানায়ে রাখে৷ প্রেমিকরে চাঁদ ভাবে, তার জন্য বকুল ফুলের মালা গাঁথে৷ নারীর অন্যসব এফোর্টের সাথে তুলনা দিলে গুড মর্নিং, গুড নাইট টেক্সট তো খুবই ছোট বিষয়! ভালোবাসার মানুষরে নারী অপেক্ষা করাইতে জানে না৷ পুরুষের স্বভাব চেইজ করা।
নারী যাকে সমস্ত হৃদয় ঢেলে ভালোবাসে, সে পুরুষ তাকে ভালোবাসে না! পৃথিবীতে হৃদয় নিয়ে এক অদ্ভুত খেলা চলমান। নইলে প্রিন্সেস ডায়ানার মতো নারী কখনো বলতো না- The whole world loved me except the man I loved 😅

15/02/2023

বসন্ত নেমে আসুক তাদেরও জীবনে, কোনো এক শীতে যারা ভালোবাসতে ভুলে গেছে; এক শীত সকালে আঘাত পেয়ে যাদের জীবনে বসন্ত আসা থেমে গেছিলো... বসন্ত আসুক সেইসব মানুষের কাছেও, সারাটিজীবন যারা কাটিয়েছে বাস্তবতায় সাথে যুদ্ধ করে। বসন্ত আসুক সদ্য মাকে হারিয়ে ফেলা যুবকের কাছে কিংবা এক যুগের সংসার ছেড়ে আসা মধ্যবয়সী নারীর জীবনে! বসন্ত আসুক তাদের জীবনে, প্রতিনিয়ত যারা আত্নহত্যার তারিখ পেছায়। বসন্ত আসুক আমাদের মায়েদের কাছে, সংসার নামক বেড়াজালে যারা সম্পূর্ণ জীবন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়েছে। বসন্ত আসুক আমাদের বাবাদের কাছেও, সন্তানের হাসিমুখের জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করে দিচ্ছে...

শেষতক অবহেলাকে ইস্তফা দিয়ে সবার দরজায় কড়া নাড়ুক বসন্ত। বাতাসে প্রেম না বইলেও সবাইকে শুভ বসন্ত! ❤️

02/02/2023

প্রেমিকাকে নীল শাড়ি পরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে বলে ইচ্ছাকৃতভাবে না আসা হিমুকে আমাকে কখনো ভালো লাগে নি। জেনেবুঝে ইচ্ছাকৃতভাবে বারবার কাউকে আঘাত করাকে মহাপুরুষ হবার পূর্বশর্ত ভাবা পুরুষের প্রতি আমার কোনো আকর্ষণ নেই।

01/02/2023

তোমারে পাইতে গিয়া পৃথিবী হারায়ে ফেললাম
তাও আমার আফসোস হইসিলো না
কারণ পৃথিবী না পাই, তোমারে তো পাইলাম।
তুমি কি পৃথিবী থিকা কম কিসু?
তোমার রাগ হইলো সাত নম্বর বিপদ সংকেত,
কান্না হইলো গিয়া জলোচ্ছ্বাস,
আর হাসি?
সে তো পৃথিবীর বুকে সোনালী ধান ক্ষেত।
এক পৃথিবী হারায়া তো আরেক পৃথিবীই পাইলাম;
যেখানটাই নদী আছে, পাহাড় আছে, জলপ্রপাতের খাদ আছে, প্রলয় আছে, প্রলয়ঙ্কারী ঝড় আছে।
আমি তো মহাখুশী
পৃথিবী না হয় হারাইলোই,
তোমারে তো পাইলাম;
এত কপাল ক'জনেরই বা হয়!
নতুন পৃথিবী জয়ের খুশিতে
আমার আশায় গেল বেলা।
একদিন পৃথিবীর বুকে ঝড়-
আমি তো চিন্তায় শ্যাষ!
মনে মনে জানতি পারলাম
নয় নম্বর বিপদ সংকেত চলে।
আর তো রক্ষে নাই!
সেই প্রলয়ে আমার তুমি নামক পৃথিবী গেল হারায়ে।
আমি আরও যা জানতে পারিসি তা হইলো-
যার জন্যি পৃথিবী ছাইড়ে দিবার পারি, সে আমার জন্যি এক বিঘত জমিও ছাড়বার পারে না!
আর যে পৃথিবী ছাইড়া আমার এক ফোটা আফসোস হইসিলো না, সেই পৃথিবী দেখি দুই হাত বাড়ায়ে আমার অপেক্ষায় বসে রইসে!
েমনের_কাব্য ২
৬/১১/২২
ফজিলাতুন্নেসা হল, জাবি।

15/07/2022

Stay Tuned! ❤️

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Tales of Upama posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share