স্নায়ুবিক - Snayubik

  • Home
  • স্নায়ুবিক - Snayubik

স্নায়ুবিক - Snayubik This Magazine publishes articles on-
1. World's mishmash
2. Antiquity & Culture
3. Fiction
4. Psycho

বড় বিচিত্র এই ভূবন। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই বৈচিত্রের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। সেই ইতিহাসের ঝুলি থেকে পাওয়া সংস্কৃতি ও সভ্যতার কথা বারবার উঠে এসেছে সাহিত্যে। যেগুলো পড়ে জন্ম নিয়েছে আধুনিক মানসিকতা। সেই মানসিকতার সুশৃঙ্খল চর্চার উদ্দেশ্যে গড়ে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুশিক্ষিত মানুষের ক্রমাগত বিজ্ঞান চর্চার ফলস্বরূপ প্রযুক্তি পৌঁছে গেছে সর্বত্র। স্নায়ু থেকে জন্ম নেয়া এসব উপাখ্যানের কিছুকিছু তুলে ধরতেই আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস "স্নায়ুবিক বিনোদন"।

Skill Development Training Opportunity at MY OUTSOURCING LTD !!!!Only Graduate/4 years Diploma complete are eligible for...
10/02/2022

Skill Development Training Opportunity at MY OUTSOURCING LTD !!!!
Only Graduate/4 years Diploma complete are eligible for this Training Opportunity.

* Attractive and value adding 2.5 months SEIP Professional Customer Service Training Program with Professional Certificate. You will be paid Taka 150/day as daily conveyance allowance after completing the training course.

* 8 Days Session on Professional Business Communication Course in English provided by internationally reputed training provider WSDA, New Zealand with certificate which is also FREE.

* Job Placement opportunity after successfully completing the training course.

For Registraion click : https://goo.gl/forms/HJ90unCZaLEx1E8i2
Currently Enrollment is going on for -

* Professional Customer Service (Basic Computing , Office Application ,CV writing ,Interview Technique ,Effective Communication Skill, Sales Skill and Psychometric, Overview of BPO and Contact Center, Geographical Overview etc.)

MY OUTSOURCING LIMITED
Address: House # 35 (5th Floor), Road # 7, Block # G, Banani, Dhaka 1213
CALL FOR MORE INFO: +88-01763097390
E-Mail : [email protected]

Only Graduate/Masters/4 years Diploma complete are eligible for this Training Opportunity. *** Attractive and value adding 2.5 months SEIP Professional Customer Service Training Program with Professional Certificate. You will be paid Taka 150/day as daily conveyance allowance after completing the tr...

31/01/2022

লাশের তদন্তের নাম 'ময়নাতদন্ত' কেন?

কারো অস্বাভাবিক মৃ*ত্যু কিংবা পুলিশ কোনো মৃ*ত্যুর বিষয়ে সন্দিহান হলে তখন মৃ*তদেহের পোস্ট*মর্টেম করা হয়। ইংরেজিতে একে অটোপসিও (Autopsy) বলা হয়, যাকে বাংলায় আমরা বলি 'ময়না তদন্ত'।
মূলত পোস্ট*মর্টেম একটি খু*নের অজানা কারণকে উদঘাটন করে। কী ভাবে বা কী কারণে খু*ন হয়েছে সেটা জানার জন্যই মূলত পোস্ট*মর্টেম বা ময়না তদন্ত করা হয়ে থাকে।

এই পোস্ট*মর্টেমের ইতিহাস কিন্তু অনেক পুরোনো৷ খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দে প্রথম কোনো মৃ*তদেহের পোস্ট*মর্টেম করা হয় বলে জানা যায়। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৪ সালে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের মৃ*ত্যুর পর তার মৃ*তদেহের পোস্ট*মর্টেম হয়েছিল। তখন এর রিপোর্টে বলা হয়েছিল জুলিয়াস সিজারকে ২৩ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।

ওই সময় এখনকার মতো উন্নত পদ্ধতি জানা ছিল না মানুষের। আর এ কারণে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলত না। ময়নাতদন্তে আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ শুরু হয় সপ্তদশ শতকে। এবার আসল কথায় আসি। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি পোস্ট*মর্টেম শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ 'ময়না' তদন্ত হলো কেন?

হ্যাঁ, এখানেই হচ্ছে রহস্য। ময়না পাখি মিসমিসে কালো এবং তার ঠোঁট হলুদ। এই পাখি প্রায় তিন থেকে ১২/১৩ রকম ভাবে ডাকতে পারে। আর অন্ধকারে ময়না পাখিকে চোখে দেখা যায় না। অন্ধকারে এরা নিজেকে লুকিয়ে রাখে।

তবে শুধু অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই এর ডাক শুনে বুঝতে পারেন যে, অন্ধকারে যে পাখি ডাকছে সেটি ময়না। এই অদেখা ময়না পাখিকে যেমন অন্ধকারে শুধু কণ্ঠস্বর শুনে তার পরিচয় বোঝা যায়, তেমনই পোস্ট*মর্টেমের মাধ্যমে অন্ধকারে থাকা মৃত্যুর কারণকে আলোতে নিয়ে আসা যায়। সামান্য সূত্র থেকে আবিষ্কার হয় বড় বা জটিল রহস্যের সমাধান। ধরা যায় আসল অপরাধীকে। উদঘাটিত হয় মৃ*ত্যুর কারণ। আর তাই পোস্টমর্টেমের বাংলা হয়েছে ময়নাতদন্ত।

আবার অনেকের মতে আরবি মুয়ানা থেকে এসেছে ময়না, যার অর্থ 'অনুসন্ধান করা'!

© Earki

এক ঝটকায় প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। আবার সঞ্জীবনী-স্পর্শে প্রাণ দিতেও তার জুড়ি নেই। এ হেন প্রাণঘাতী এক সাপের বিষ থেকে তৈরি ...
29/07/2021

এক ঝটকায় প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। আবার সঞ্জীবনী-স্পর্শে প্রাণ দিতেও তার জুড়ি নেই। এ হেন প্রাণঘাতী এক সাপের বিষ থেকে তৈরি হচ্ছে নিমেষে রক্তপাত ঠেকানোর মহৌষধি-– ডাক্তারি পরিভাষায় সুপার গ্লু। যা কিনা অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি কমিয়ে অপারেশন থিয়েটারে বিপ্লব এনে দেবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ল‌্যানসেড স্নেক, বৈজ্ঞানিক নাম বোথ্রপস এট্রকস। এক ছোবলে মৃত্যু প্রায় অবশ্যম্ভাবী। অথচ এই ভয়ঙ্কর সরীসৃপের বিষকে ব‌্যবহার করেই তৈরি করা হয়েছে এক জৈব আঠা, ক্ষতস্থান জুড়ে রক্তপাত বন্ধ করতে যা সময় নেয় নামমাত্র। স্রেফ ৩৪ সেকেন্ডে তা ইঁদুরের কাটা লেজ জুড়ে দিয়েছে। লিভারের দু’টো অংশ জুড়তে সময় নিয়েছে সাকুল্যে ৪৫ সেকেন্ড, মানে এক মিনিটেরও কম!
তবে শুধু ক্ষতস্থানে বা কেটে যাওয়া অংশে আঠা দিলেই হবে না, ক্ষতস্থানে জোরালো আলোও ফেলতে হবে। আলোর সঙ্গে মিশে কাজ করবে এই সুপার গ্লু, মশারির মতো জালিকা বানিয়ে রক্তপাতও বন্ধ করবে। বর্তমানে অপারেশনের সময় সার্জনরা যে জৈব আঠা ব‌্যবহার করেন, তা রক্তপাত ঠেকাতে পাঁচ থেকে ছ’মিনিট সময় নেয়। আর এই সুপার গ্লু সে কাজই করবে ৩৪ থেকে ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে।
এহেন মহৌষধির সন্ধান পেয়ে চিকিৎসকমহল স্বাভাবিক ভাবেই আশাবাদী। উপরন্তু বর্তমানে চালু বিভিন্ন গ্লু নিয়ে অন‌্য সমস‌্যাও রয়েছে। এগুলি মূলত পলিইথিলিন গ্লাইকল এবং সায়ানো এক্রিলেটসের মতো কৃত্রিম রাসায়নিক দিয়ে তৈরি। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক, তাই বেশি প্রয়োগের উপায় নেই। অনেক সময় প্রয়োগস্থানে প্রবল জ্বালা-যন্ত্রণাও হয়। আবার প্রাকৃতিক অন্যান্য আঠার কার্যকারিতা নিয়ে বিবিধ প্রশ্ন রয়েছে। বেশি রক্তপাত ঠেকানোর ক্ষমতা তাদের নেই।
এমতাবস্থায় নিরাপদ ও কার্যকরী একটি জৈব আঠার সন্ধানে ল্যাবরেটরিতে দিন-রাত এক করছিলেন বিজ্ঞানীরা। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল মিলেছে, ল‌্যানসেড সাপের বিষের মধে‌্য হদিশ মিলেছে ব‌্যাকট্রোসোবিন বা রেপটিলেজ এনজাইমের, যে উৎসেচকটি রক্ত জমাট বাধার আসল কারিগর।
এই সুপার গ্লু প্রাথমিক চিকিৎসাতেও গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তঁাদের অনুমান, পথ দুর্ঘটনায় জখম ব‌্যক্তির রক্তপাত ঠেকাতেও এই আঠা বড় ভূমিকা নিতে পারে। পিজি হসপিটালের সার্জারির অধ‌্যাপক ডাঃ দীপ্তেন্দ্র সরকারের প্রতিক্রিয়া, “সার্জারির ক্ষেত্রে রক্তপাত বন্ধ করাটা খুব বড় চ‌্যালেঞ্জ। এই সুপার গ্লু সে ক্ষেত্রে আমাদের কাজ অনেক সহজ করে দিতে পারে। তবে দীর্ঘ হিউম‌্যান ট্রায়াল প্রয়োজন। প্রার্থনা করি, প্রাত্যহিক জীবনে এই সর্পবিষের আঠা আশীর্বাদ হয়ে উঠুক।”

বিস্তারিত:

01/06/2021
21/02/2021

মানসিক রোগ নিয়ে সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও ভুল ধারণা কম নেই। মানসিক রোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। একা একা কথা বলা, হঠাৎ হাসা- কান্না করা, শান্ত স্বভাবের মানুষ হঠাৎ ক্ষেপে ভাংচুর করা, অস্বভাবিক ধার্মিক আচার এসব মানসিক রোগের কিছু লক্ষণ।এছাড়াও একই চিন্তা বারবার আসা (যেমন: বারবার মনে আসা দরজা সঠিক ভাবে লাগানো হয়নি ও বারবার চেক করতে করতে অনেক সময় চলে যাওয়া ইত্যাদি),হতাশা,উদ্বিগ্নতা,ঘুম না আসা,যৌন আচারে সমস্যা এসব মানসিক রোগের লক্ষণ হতে পারে। বাংলাদেশে অত্যন্ত স্বল্প খরচে মানসিক রোগের চিকিৎসা হয় যাতে অনেকে সম্পূর্ণ সুস্থ / কার্যক্ষম হয়ে ওঠেন। আপনার পাশে জানা কোনো এমন রোগী থাকলে চিকিৎসার পরামর্শ দিন,অন্যকে এসব তথ্য জানান। নিজেদের ও ভবিষ্যত প্রজন্মের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করুন....

ডা: ইমদাদুল মাগফুর

14/09/2020

১৯৪৭-৪৮ সালে ঈসরাঈল রাষ্ট্রের জম্ম হওয়ার পর থেকেই তারা থার্ড টেম্পল নির্মানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে এবং রেড হফার বা লাল বাছুরের অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে। কারন, ১০ম এবং শেষ রেড-হফারের কোরবানীর পরই তাদের কাংখিত মাসীহা টেম্পল মাউন্টে আসবে এবং দুনিয়াতে রাজত্ব করবে । তাই রেড হফার বা লাল বাছুরটি এতই গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু কি এই থার্ড টেম্পল ? এটা বুঝতে হলে আল আক্বসা মসজিদের ইতিহাস জানতে হবে।

হিব্রু বাইবেল অনুসারে জেরুজালেমে প্রথম ইহুদী উপাসনালয় (টেম্পল) নির্মান করেন হযরত সুলাইমান (আঃ)।
প্রায় সাড়ে চারশ বছর পর ৫৮৭ খ্রিষ্টপূর্বে Neo-Babylonian Empire এর রাজা দ্বিতীয় নেবুচাদনেজ্জার (Nebuchadnezzar II) প্রথম টেম্পল বা সুলাইমান টেম্পল ধ্বংস করে।

এরপর ৩৪৯ খ্রিষ্টপূর্বে ইজরা (Ezra ) এবং নেহেমিয়াহর (Nehemiah) নেতৃত্বে দ্বিতীয় টেম্পল নির্মিত হয় যা টিকেছিল ৪২০ বছর। ৭০ খ্রিষ্টপূর্বে রোমানরা (খ্রিষ্টানরা) দ্বিতীয় টেম্পল ধ্বংস করে । এরপর এটা খৃষ্টান আর মুসলমানদের মাঝে হাত বদল হতে থাকে । ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত জেরুজালেম কখনো ইসরাঈলের হাতে আসেনি। টেম্পল নির্মানেরতো প্রশ্নই উঠেনা। গত বছরই যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ঈসরাঈলের রাজধানী ঘোষণা করে থার্ড টেম্পল নির্মানের পথকে আরো প্রশস্ত করে ।

এদিকে জেরুজালেমের একটি গরুর খামারে রেড-হফারের (লাল বাছুর) জম্ম হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ।

তা হলে জেরুজালেমে ইহুদীদের থার্ড টেম্পল নির্মানে আর দেরি কেন? রেড-হফার ও তৈরি! সমস্যা হচ্ছে থার্ড-টেম্পল নির্মান করতে হবে প্রথম এবং দ্বিতীয় টেম্পলের যায়গায়, যার উপর এখন দাঁড়িয়ে আছে বায়তুল মুকদ্দাস । বিষয়টা নিশ্চয় টের পেয়েছেন? আল-আক্বসা মসজীদ ভাংতে হবে! ধারণা করা হচ্ছে ইহুদীরা আল-আক্বসা মসজীদের নিচে মাটির অনেক গভীরে খুড়ে বায়তুল মুকাদ্দাসের ভিত্তি দূর্বল করে ফেলেছে। ইহুদীরা সরাসরি আক্রমণে আল-আকসা মসজীদ ভাংতে যাবেনা। বলা হচ্ছে ঐ এলাকায় কৃত্তিম ভুমিকম্প ঘটিয়ে আল-আকসা মসজীদ ধ্বসে দেয়া হবে। ঠিক কোন ফন্দি তারা আঁটছে বলা মুশকিল। তবে এ নিয়ে তারা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। নির্দেশেনা অনুযায়ী "টেম্পল মাউন্ট ইনস্টিটিউট" থার্ড-টেম্পলের যাবতীয় আসবাব, তৈজস-পত্র, রাবাঈ (ইমাম) এর গাউন, এমন কি খুবই বিরল ধুপ পর্যন্ত তৈরি করে রেখেছে। টেম্পল মাউন্ট ইনস্টিটিউটের মতে নির্মান কাজ শুরু হবার ৬ মাসের মধ্যেই টেম্পল-মাউন্ট অফারিং (কোরবানীর) জন্য তৈরি হয়ে যাবে।

এরপর কি? এরপরই আসল ঘটনা শুরু। টেম্পল মাউন্ট তৈরীকে ঘিরে ঐ হাদিসে বর্ণিত মালহামা (মহাযুদ্ধ , তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ) শুরু হতে পারে মুসলমান এবং খৃষ্টানদের একাংশের (রাশিয়া?) সাথে ইহুদী এবং খৃষ্টানদের অন্য অংশের (যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ) ।

ঈসরাঈল বাদে আশে-পাশের গোটা এলাকা অলরেডী যুদ্ধে পূড়ছে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলু সিরিয়ায় ঘাঁটি গেড়েছে মূলত ঐ মহাযুদ্ধকে ঘিরেই। যুদ্ধের শেষ দিকেই আগমন ঘটবে ইমাম মাহদীর যাকে ইহুদীরা এবং খৃষ্টানরা মনে করবে এন্টি-ক্রাইষ্ট এবং অপেক্ষা করবে মাসীহা'র । এ সময়ই আসবে প্রকৃত দাজ্জাল , ইহুদীদের মাসীহা, যার জন্যই থার্ড টেম্পল নির্মান করে রেড হফার কোরবানি দিয়ে ওরা অপেক্ষা করবে ।

28/08/2020

বাংলার আসল বাঘ🐅🐅🐅

কলকাতার বাবুরা বলেছেন,"ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় করার কোন দরকার নেই। ফার্মগেট আছে,ধানমণ্ডি আছে পাশে একটা কৃষি কলেজ করে দাও। "

এই ধরনের কায়েমী স্বার্থবাদী আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ব্রিটিশ লর্ডের কাছে গিয়ে শেরে বাংলা ফজলুল হক বোঝালেন ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। এবার ব্রিটিশরা কিছুটা নমনীয় হল --- কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হল একটু দেরীতে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন শেরে বাংলা ফজলুল হক ।

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ১৯১৬ সালে মুসলিম লীগ এর সভাপতি নির্বাচিত হন । পরের বছর ১৯১৭ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এর সাধারণ সম্পাদক হন । তিনিই ইতিহাসের একমাত্র ব্যক্তি যিনি একই সময়ে মুসলিম লীগ এর প্রেসিডেন্ট এবং কংগ্রেস এর জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন । ১৯১৮ -১৯ সালে জওহরলাল নেহেরু ছিলেন ফজলুল হকের ব্যক্তিগত সচিব ।

১৯৩৭ এর নির্বাচনে শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচনে জিতলে তিনি জমিদারি প্রথা চিরতরে উচ্ছেদ করবেন।
তিনি যাতে নির্বাচিত হতে না পারেন তার জন্য সারা বাংলাদেশ আর কলকাতার জমিদাররা একত্র হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। লাভ হয়নি --- কৃষকরা তাদের নেতাকে ভোট দিয়েছেন।

মুসলিম লীগ এর লাহোর অধিবেশনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বক্তব্য দিচ্ছেন । হঠাৎ করে একটা গুঞ্জন শুরু হলো, দেখা গেল জিন্নাহর বক্তব্যের দিকে কারও মনযোগ নাই । জিন্নাহ ভাবলেন, ঘটনা কী ? এবার দেখলেন, এক কোণার দরজা দিয়ে ফজলুল হক সভামঞ্চে প্রবেশ করছেন, সবার আকর্ষণ এখন তার দিকে । জিন্নাহ তখন বললেন --- When the tiger arrives, the lamb must give away. এই সম্মেলনেই তিনি উত্থাপন করেছিলেন ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব ।

১৯৪০ সালের ২২-২৪ শে মার্চ লাহোরের ইকবাল পার্কে মুসলিম লীগের কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এই কনফারেন্সে বাংলার বাঘ আবুল কাশেম ফজলুল হক ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি তার প্রস্তাবে বলেন, হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার বাস্তবতায় হিন্দু মুসলিম একসাথে বসবাস অসম্ভব। সমাধান হচ্ছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র এবং পূর্বাঞ্চলে বাংলা ও আসাম নিয়ে আরেকটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে।

পাঞ্জাবের মওলানা জাফর আলী খান, সীমান্ত প্রদেশের সর্দার আওরঙ্গজেব, সিন্ধের স্যার আব্দুল্লাহ হারুন, বেলুচিস্তানের কাজী ঈসা ফজলুল হকের প্রস্তাব সমর্থন করেন। কনফারেন্সে এই প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়।

লাহোর প্রস্তাব উত্থাপনের সময়ে হিন্দুপ্রধান প্রদেশগুলোতে মুসলিম নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকার কারণে ফজলুল হক খুবই উদ্বিগ্ন এবং কিছুটা উত্তেজিত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে একবার বলেন, ‘ আমি আগে মুসলিম, পরে বাঙালী (muslim first, bengali afterwards)’। বক্তৃতার এক পর্যায়ে এসে বলেন, ‘কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলোতে যদি আর কোনো মুসলিম নির্যাতিত হয় তাহলে আমি বাংলার হিন্দুদের উপর তার প্রতিশোধ নেব।’

যে ফজলুল হক তিন বছর আগে সোহরাওয়ার্দী, নাজিমউদ্দিনকে রেখে শ্যামাপ্রসাদের সাথে কোয়ালিশন সরকার গঠন করেছেন সেই ফজলুল হকের মুখে এমন বক্তব্য তখনকার ভারতে ব্যাপক আলোড়ন সৃাষ্ট করেছিল।

বর্তমানে যে পাকিস্তান রাষ্ট্র তার ভিত্তি হচ্ছে লাহোর প্রস্তাব। তাই ২৩ শে মার্চ কে পাকিস্তানে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

কিন্তু লাহোর প্রস্তাব পাশ হওয়ার কয়েকদিন পরে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ চালাকির আশ্রয় নেন। তিনি বলেন, প্রস্তাবটি টাইপ করার সময়ে ভুল করে muslim majority states লেখা হয়েছে; আসলে হবে state । জিন্নাহর ধারণা ছিল, দেন-দরবার করে দুই পাশে দুইটা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তাই স্টেটস এর জায়গায় স্টেট লিখে একটা মুসলিম মেজরিটি রাষ্ট্র করতে হবে।

জিন্নাহর এই ধূর্ততার কারণে ফজলুল হক তার সাথে পাকিস্তান আন্দোলনে সম্পৃক্ত হননি। তরুণ শেখ মুজিব যখন জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তখন অভিজ্ঞ ফজলুল হক পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছেন। 'তিঁনি অনুমান করতে পেরেছিলেন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলে কী কী দুর্দশা হবে বাংলার মানুষের। তাই তিঁনি পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনী তে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন.......
"
বাংলার মাটিও তাকে ভালোবেসে ফেলেছিল। যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেছি, তখনই বাধা পেয়েছি। একদিন আমার মনে আছে একটা সভা করছিলাম আমার নিজের ইউনিয়নে, হক সাহেব কেন লীগ ত্যাগ করলেন, কেন পাকিস্তান চাননা এখন? কেন তিনি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সাথে মিলে মন্ত্রীসভা গঠন করেছেন? এই সমস্ত আলোচনা করছিলাম, হঠাৎ একজন বৃদ্ধ লোক যিনি আমার দাদার খুব ভক্ত, আমাদের বাড়িতে সকল সময়েই আসতেন, আমাদের বংশের সকলকে খুব শ্রদ্ধা করতেন- দাঁড়িয়ে বললেন,”যাহা কিছু বলার বলেন, হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছুই বলবেন না। তিনি যদি পাকিস্তান না চান, আমরাও চাই না। জিন্নাহ কে? তার নামও তো শুনি নাই। আমাদের গরিবের বন্ধু হক সাহেব।” এ কথার পর আমি অন্যভাবে বক্তৃতা দিতে শুরু করলাম। সোজাসুজিভাবে আর হক সাহেবকে দোষ দিতে চেষ্টা করলাম না। কেন পাকিস্তান আমাদের প্রতিষ্ঠা করতেই হবে তাই বুঝালাম। শুধু এইটুকু না, যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে কালো পতাকা দেখাতে গিয়েছি, তখনই জনসাধারণ আমাদের মারপিট করেছে। অনেক সময় ছাত্রদের নিয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি, মার খেয়ে।"

বঙ্গবন্ধু ' র বাবা বলেছেন , " বাবা তুমি যাই করো শেরে বাংলার বিরুদ্ধে কিছু বলো না। শেরে বাংলা এমনি এমনি শেরে বাংলা হয়নি। "

ফজলুল হক জানতেন মাঝখানে ভারতকে রেখে পশ্চিম আর পূর্বে জোড়া দিয়ে এক পাকিস্তান করলে তা কখনো টিকবে না। ‘ জিন্নাহ আমার লাহোর প্রস্তাবের খৎনা করে ফেলেছে -বলে ফজলুল হক পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় থাকেননি।

১৯৪৬ এ এসে জিন্নাহ সোহরাওয়ার্দীর দুই বাংলা একত্র করে স্বাধীন যুক্তবাংলার দাবী মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের বিরোধিতার কারণে শেষ পর্যন্ত বাংলাও ভাগ করতে হল।

ফজলুল হক বলেছিলেন, একটি পাকিস্তান কখনও টিকবে না। বাংলা এবং আসামকে নিয়ে পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র করতে হবে।

১৯৭১ সালে এসে দেখা গেল, ফজলুল হকের আশঙ্কা এবং ভবিষ্যতবাণী সঠিক। ১৯৭১ এর মত এমন কিছু যে ঘটবে শেরে বাংলা ফজলুল হক তা আঁচ করতে পেরেছিলেন ১৯৪০ সালেই। তাই তিনি ১৯৪০ সালেই বাংলা আর আসাম নিয়ে পৃথক রাষ্ট্র করতে চেয়েছিলেন। অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা হলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক।

১৯৭১ এর যুদ্ধ হল ফজলুল হকের লাহোর প্রস্তাবের বাস্তবায়ন। লাহোর প্রস্তাব ফজলুল হক যেভাবে উত্থাপন করে ছিলেন সেভাবে মানলে একাত্তরে এই দেশে রক্তগঙ্গা বইত না।

পেশাজীবনে 'কলকাতা হাইকোর্টের নামকরা আইনজীবী ছিলেন। একদিন তাঁর জুনিয়র হাতে একগাদা পত্রিকা নিয়ে এসে বললেন, " স্যার , দেখুন , কলকাতার পত্রিকাগুলো পাতার পর পাতা লিখে আপনার দুর্নাম ছড়িয়ে যাচ্ছে --- আপনি কিছু বলছেন না । " তিঁনি বললেন, " ওরা আমার বিরুদ্ধে লিখছে তার মানে হল আমি আসলেই পুর্ব বাংলার মুসলমান কৃষকদের জন্য কিছু করছি। যেদিন ওরা আমার প্রশংসা করবে সেদিন মনে করবে বাংলার কৃষক বিপদে আছে। "

মুহাম্মদ ওয়াজেদ আলী বরিশাল বারের নামকরা উকিল । একবার ওয়াজেদ আলী র প্রতিপক্ষ মামলার ইস্যু জটিল হওয়ার কারণে কলকাতা থেকে তরুণ উকিল ফজলুল হককে নিয়ে আসে ওয়াজেদ আলীকে মোকাবেলা করার জন্য । ফজলুল হক ওই সময়ে কেবলমাত্র ফজলুল হক , শেরে বাংলা তখনও হননি । তিনি মামলা লড়তে এসেছেন , কিন্তু বিপক্ষের উকিল কে সেই খবর জানতেন না ।

কোর্টে এসে দেখলেন বিপক্ষে তার বাবা ওয়াজেদ আলী দাঁড়িয়েছেন । ফজলুল হক স্বাভাবিকভাবে যুক্তিতর্ক শুরু করলেন ।

এক পর্যায়ে ওয়াজেদ আলী আদালতকে উদ্দেশ করে বললেন , “ ইনি যা বলছেন তা আইনসংগত না । আইনটা হল আসলে এরকম এরকম ....... ইনি নতুন উকিল তো আইন কানুন ভালো বোঝেন না । “

উত্তরে ফজলুল হক বললেন , “ তিনি পুরাতন অভিজ্ঞ উকিল হলে কী হবে ? তিনি হচ্ছেন কৃষকের ছেলে উকিল ( প্রকৃতপক্ষে তার দাদা আকরাম আলী ছিলেন ফারসি ভাষার পন্ডিত ) , তিনি আইনের কী আর বোঝেন ? আমি হচ্ছি উকিলের ছেলে উকিল , যুক্তি আমারটাই ঠিক । “

খ্যাতির সাথে ৪০ বছর ধরে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি করেছেন । আইন পাশ করার আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিজিক্স কেমেস্ট্রি আর ম্যাথমেটিক্সে ট্রিপল অনার্স করেছেন । মাস্টার্স করেছেন ম্যাথমেটিক্স এ । ছোটবেলায় একবার পড়ে বইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলার গল্প রূপকথার মত এদেশের সবার মুখে মুখে ।

বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের বাজেট অধিবেশনে একজন এম পি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক কে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দিতে লাগলেন । ঐ এম পি শেরে বাংলার বিরুদ্ধে গানও লিখে এনেছেন এবং সংসদের বাজেট বক্তুতা করতে গিয়ে সেই গানটি হেলেদুলে কর্কশ কণ্ঠে গাইতে শুরু করলেন । এরকম পরিস্থিতিতে যে কারও পক্ষে মাথা ঠাণ্ডা রাখা মুশকিল ।

শেরে বাংলা ঐ এমপি র বক্তব্যের মধ্যেই বলে উঠলেন -- "Mr Speaker, I can jolly well face the music, but I cannot face a monkey."

এবার ঘটলো মারাত্মক বিপত্তি । তার মত নেতার কাছ থেকে এরকম মন্তব্য কেউ আশা করেনি । এদিকে , ঐ এম পি স্পিকারের কাছে দাবী জানালেন -- এই মুহূর্তে ক্ষমা চাইতে হবে এবং এই অসংসদীয় বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে । স্পিকার পড়লেন আরেক বিপদে -- তিনি কীভাবে এত বড় একজন নেতাকে এই আদেশ দেবেন ।

শেরে বাংলা ছিলেন ঠাণ্ডা মাথার বুদ্ধিমান মানুষ । তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন --- " Mr. Speaker, I never mentioned any honourable member of this House. But if any honourable member thinks that the cap fits him, I withdraw my remark."

'জ্ঞানতাপস প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক তাঁর জীবনী লিখতে চান জেনে বলেছিলেন, " রাজ্জাক, সত্যি বলো, তোমার মতলবটা আসলে কী ? " প্রফেসর রাজ্জাক বললেন, " আমার এই বিষয়টা খুব ভালো লাগে ---- আপনি যখন ইংরেজদের সাথে চলেন তখন মনে হয় আপনি জাত ইংরেজ। যখন বরিশালে আসেন মনে হয় আপনি বহুবছর ধরে নিজেই কৃষিকাজ করেন। আবার যখন কলকাতায় শ্যামাপ্রসাদ বাবুকে ভাই বলে ডাক দেন তখন আপনাকে আসলেই হিন্দু মনে হয়। আবার যখন ঢাকার নবাব বাড়িতে ঘুড়ি উড়ান তখন মনে হয় আপনিও নবাব পরিবারের একজন । নিজেকে কেউ আপনার মত এত পাল্টাতে পারে না। আপনি যাই বলেন, সত্য হোক -- মিথ্যা হোক, মানুষ বিনা দ্বিধায় তা বিশ্বাস করে। "

মহাত্মা গান্ধী র নাতি রাজমোহন গান্ধী তার বইতে লিখেছেন -- তিন নেতার মাজারে তিনজন নেতা শায়িত আছেন যার মধ্যে দুজন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন । একজনকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে দেওয়া হয়নি, অথচ তিনিই ছিলেন সত্যিকারের বাঘ ।

কিন্তু এটা তার জীবনের কোনো অপূর্ণতা নয়, একমাত্র রাষ্ট্রপতি হওয়া ছাড়া সম্ভাব্য সব ধরনের পদে তিনি অধিষ্ঠিত ছিলেন জীবনের কোনো না কোনো সময়ে । তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী, পূর্ব বাংলার তৃতীয় মুখ্য মন্ত্রী; পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব - পাকিস্তানের গভর্নর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ।

সর্বভারতীয় রাজনীতি ছেড়ে শুধু পূর্ববাংলার রাজনীতি কেন করছেন এই প্রশ্নের উত্তরে ফজলুল হক বলেছিলেন -- এরোপ্লেন এ উঠলে নিচের জিনিস ছোট আর ঝাপসা দেখাতে পারে, তাই আমি মাটিতেই থাকছি । রাজনীতির এরাপ্লেন এ না চড়লেও সৌদি বাদশাহ সউদ ফজলুল হকের সাথে একটা মিটিং করার জন্য নিজের ব্যক্তিগত বিমান পাঠিয়েছিলেন ফজলুল হককে নিয়ে যাওয়ার জন্য ।

অসীম সাহসী এই মানুষটি আমাদেরকে সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে প্রতিবাদ করার কথা বলেছেন। বাঙালী জাতিকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন অনেক আগেই । তিনি বলেছেন, যে জাতি তার বাচ্চাদের বিড়ালের ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ায়, তারা সিংহের সাথে লড়াই করা কিভাবে শিখবে ?

আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছিলেন ফজলুল হকের শিক্ষক। আবুল মনসুর আহমদের সাথে আলাপচারিতায় ফজলুল হক সম্পর্কে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মন্তব্য :

"ফযলুল হক মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত খাঁটি বাঙ্গালী।সেই সঙ্গে ফযলুল হক মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত খাঁটি মুসলমান।খাঁটি বাঙ্গালীত্বের সাথে খাটি মুসলমানত্বের এমন অপূর্ব সমন্বয় আমি আর দেখি নাই। ফযলুল হক আমার ছাত্র বলে বলছিনা, সত্য বলেই বলছি।খাঁটি বাঙ্গালীত্ব ও খাটি মুসলমানত্বের সমন্বয়ই ভবিষ্যৎ বাঙ্গালীর জাতীয়তা।"

রেফারেন্স: আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর।(পৃষ্ঠা ১৩৫-৩৬)

পহেলা বৈশাখের সরকারি ছুটি, বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠা এই ফজলুল হকের অবদান । কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে ফজলুল হক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন কারণ কৃষক--শ্রমিক সংখ্যাগরিষ্ঠ এই উপমহাদেশে মাত্র একজন ব্যক্তি কৃষকদের জন্য রাজনীতি করেছেন । তিঁনি হলেন -- শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ।

১৯৪৮ সালে ঢাকায় এসেছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বললে ছাত্ররা তীব্র প্রতিবাদ করে। জিন্নাহ ছাত্রদের সাথে বৈঠকও করেন। কিন্তু ছাত্ররা ছিল নাছোড়বান্দা। জিন্নাহর ধারণা হলো, ফজলুল হক ছাত্রদেরকে উসকানি দিচ্ছেন। ফজলুল হকের বুদ্ধিতে ছাত্ররা উর্দুর বিরোধিতা করছে। জিন্নাহ এবার ফজলুল হকের সাথে দেখা করতে চাইলেন। কিন্তু ফজলুল হক দেখা করতে রাজি হলেন না। ফজলুল হক জিন্নাহকে ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করতেন।

জিন্নাহর পীড়াপিড়িতে শেষ পর্যন্ত রাজি হলেন ফজলুল হক। বন্ধ দরজার আড়ালে কথা হয়েছিল দুই মহান নেতার। কিন্তু ইংরেজিতে কী ধরনের বাক্য বিনিময় হয়েছিল তাদের মধ্যে পরবর্তীতে তা লিখেছেন ফজলুল হকের একান্ত সহকারী আজিজুল হক শাহজাহান --

জিন্নাহ : পাকিস্তান তো তুমি কোনোদিন চাওনি। সব সময়ে বিরোধিতা করে এসেছো।

হক : প্রস্তাবটি তো আমিই করেছিলাম। পরে ওটার খতনা করা হয়েছে। আমি এটা চাইনি।

জিন্নাহ: পাকিস্তানের এই অংশ বেঁচে থাক তা তুমি চাও না। তাই ভারতের কংগ্রেসের টাকা এনে ছাত্রদের মাথা খারাপ করে দিয়েছ। তারা আমাকে হেস্তনেস্ত করছে।

হক: আমি এখানে কোনো রাজনীতি করি না। হাইকোর্টে শুধু মামলা নিয়ে চিন্তা করি। আইন আদালত নিয়ে থাকি ।

জিন্নাহ : জানো, তুমি কার সাথে কথা বলছো ?

হক: আমি আমার এক পুরোনো বন্ধুর সাথে কথা বলছি।

জিন্নাহ: নো নো, ইউ আর টকিং উইথ দ্য গভর্নর জেনারেল অব পাকিস্তান ।

হক: একজন কনস্টিটিউশনাল গভর্নর জেনারেলের ক্ষমতা আমি জানি।

জিন্নাহ: জানো, তোমাকে আমি কী করতে পারি ?

হক: (ডান হাতের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে) তুমি আমার এ্যাই করতে পারো। মিস্টার জিন্নাহ, ভুলে যাওয়া উচিত নয় এটা বাংলাদেশ এবং তুমি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে কথা বলছ।

(আজিজুল হক শাহজাহানের কলাম,অমরাবতী প্রকাশনী,ঢাকা;পৃষ্ঠা ৪৬-৪৭)

22/08/2020

★★★★★★

একদা বাদশাহ হারুনুর রশীদের কাছে এক লোক একটি চাতক পাখি বিক্রি করার জন্য নিয়ে এলো। তিনি দাম জিজ্ঞেস করলে সে বাজারমূল্যের চেয়েও অনেক বেশি দাম চাইলো। বাদশাহ জানতে চাইলেন, পাখিটির এত দাম কেন?
লোকটি বললো, মার্জনা করবেন জাঁহাপনা! দেখতে সাধারণ হলেও এটি আসলে একটি বিশেষ ধরণের পাখি। এর বিশেষত্ব হলো- আমি যখন শিকারে যাই, তখন এই চাতক পাখিটিকেও সঙ্গে করে নিয়ে যাই। আমার পাতানো ফাঁদের সাথে এই পাখিটিকেও বেঁধে রাখি। এই পাখিটি তখন অত্যাশ্চর্য এক আওয়াজে অন্য পাখিদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। তার এই আওয়াজ শুনেই ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা এসে জড়ো হয়। তখন আমি একসাথে সব পাখিকে শিকার করি। বলা যায় এই পাখিটিই আমার শিকারের প্রধান ফাঁদ।
বাদশাহ তার কথা শুনে পাখিটিকে শিকারীর চাহিদা অনুযায়ী চড়া দামেই কিনলেন এবং সাথে সাথে জবাই করে ফেললেন। শিকারী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, জাঁহাপনা! আপনি অনেক দামে কেনা পাখিটি এভাবে জবাই করে দিলেন?
তখন বাদশাহ হারুনুর রশীদ তাকে একটা মহামূল্যবান কথা বললেন, যা ইতিহাসে আজও অমর হয়ে আছে।

তিনি বললেন,
"যে অন্যজাতির দালালি করার জন্য তার স্বজাতির সাথে অনায়াসে এমন গাদ্দারি করতে পারে, তার এই পরিণতিই হওয়া উচিত।"
©অদম্য ডিসিয়ান

11/08/2020

'মাইন্ডফুলনেস'
বড় ভারিক্কি এক বিদঘুটে শব্দ এটি। আপনি যদি মেডিকেল শিক্ষা সংশ্লিষ্ট না হয়ে থাকেন তাহলে হেডিং দেখে উল্টো পথে হাটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না। কি এই মাইন্ডফুলনেস? মাইন্ড ফুল হয়ে আছে এমন কিছু কি? খুব জটিল কঠিন মেডিকেলিয় কিছু কি? না একদম না। ইংরেজীতে বলতে গেলে 'Being aware of ones present state in non judgemental way'. বাংলায় সহজে বলতে গেলে নিজের বর্তমান অবস্থান, পরিপ্রেক্ষিত ও চারিপাশ সম্পর্কে কোনোরূপ ধারণা বা মতামত প্রকাশ ছাড়াই সচেতন হওয়া। কি কঠিন হয়ে গেলো? ডা বোস বলতেন, যে ব্যক্তি বলে বাংলায় বিজ্ঞান বোঝা সম্ভব না; সে হয় বাংলা জানেনা, নাহয় বিজ্ঞান বোঝেনা। তাই সহজ উদাহরণে চলুন বুঝে নেই।

ধরুন বসে আছেন তীব্র যানজটে। মিটিং আসন্ন আপনার। বারবার পা নাড়ছেন আর ট্রাফিক কে একবার আর নিজেকে একবার গাল দিচ্ছেন। বুকের ভেতর বুঝলেন কেমন ধরফর করছে; গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এ দেরি হলে আর রক্ষা নেই। মাথাটাও ভার হয়ে আসছে। হঠাৎ চোখ পড়লো এক ফুল বিক্রেতার দিকে; বাহ কি চমৎকার গোলাপ এক গোছা,সামনে আসতেই ফুলের গন্ধও নাকে লাগলো; মুহূর্তেই লক্ষ্য করলেন মাথার ভার ভাব আর বুক ধরফর কমে গেছে! এদিকে জ্যামও ছেড়ে দিয়েছে; হাফ ছেড়ে বাচা গেলো।

মাইন্ডফুলনেসে শেখানো হয় নিজের ৫ ইন্দ্রিয় দিয়ে বর্তমান সময়ে অবস্থান করতে; অতীত বা ভবিষ্যত চিন্তা না করে বর্তমানে থাকতে। খুব টেনশন লাগছে কাল কি হবে? নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকছেনা? বুক ভরে ৪ সেকেন্ড শ্বাস নিন, ৪ সেকেন্ড ধরে রাখুন,৪ সেকেন্ডে ছেড়ে দিন। এবার চারপাশটা দেখুনতো কোথায় আছেন; ৫ টি ভিন্ন রঙের বস্তু খুজুনতো, মুখে একটা কিছু নিয়ে কেমন স্বাদ পান বুঝুনতো,চারপাশটা স্পর্শ করে ৩ ধরণের বস্তু স্পর্শ করুন না,চোখ বন্ধ করে চারপাশের গন্ধটা অনুভব করুন তো........

কি কেমন লাগছে? সব দুশ্চিন্তা গেলো কই? দুশ্চিন্তার কারণ কিন্তু রয়ে গেলো কিন্তু আপনি ভালোবোধ করছেন, প্রফুল্লভাবে তা মোকাবেলা করতে শিখছেন। এভাবে সকালে প্রতিদিন সোজা হয়ে বসে আগে শ্বাসের ব্যায়াম করে নেবেন; তারপর চোখ বন্ধ করে খেয়াল করবেন শ্বাস আসছে আর চলে যাচ্ছে; মন এদিক সেদিক চলে যাবে যেতে দিন; অমনোযোগী হওয়ায় নিজেকে না দুষে নিজের ওই ভাবনাকে চিন্তা নাম দিয়ে আবার ফিরে আসুন.....৫ মিনিট ১০...১৫ মিনিট আস্তে আস্তে মনের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ আনুন।শুধু দুশ্চিন্তাই না, হতাশামুক্ত প্রফুল্ল হোক আপনার জীবন....

03/07/2020

#ম্যাজিস্ট্রেট বনাম #নির্বাহী_কর্মকর্তা (বিসিএস প্রশাসন)

ম্যাজিস্ট্রেট নামে বিসিএসে কোন ক্যাডার নেই। বিসিএস (প্রশাসন)-এ যারা নিয়োগ পান, তারা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার হিসেবে জয়েন করেন। প্রশাসনিক কাজই তাদের মূল কাজ এবং তাদের পদবী হল সহকারী কমিশনার (প্রশাসন), ম্যাজিস্ট্রেট নয়। তবে CrPC এর ধারা ১০(৫) অনুযায়ী সরকার চাইলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরকে সীমিত আকারে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন। তাদেরকে তখন বলা হয় “নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট” (not magistrate)। Section 10(5) হুবহু – “The Government may, if it thinks expedient or necessary, appoint any persons employed in the Bangladesh Civil Service (Administration) to be an Executive Magistrate and confer the powers of an Executive Magistrate on any such member.” Executive Magistrate মূল পদ নয় বরং Delegated duty. প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য (এ ধারায় লেখা হয়েছে The Government may… ) আইনে Shall এবং May শব্দ দুটির মাঝে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। যখন “may” শব্দটি ব্যবহৃত হয়, তখন সেই কাজটি ঐচ্ছিক হিসেবে গণ্য হয়। “Shall” ব্যবহৃত হলে কাজটি করা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।
সুতরাং প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে সরকার বাধ্য নয়।Executive Magistrate সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড যোগ্য অপরাধের বিচার করতে পারেন। এই বিচারের শর্ত হল উক্ত অপরাধমূলক কাজ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সংঘটিত বা উদঘাটিত হতে হবে + অভিযুক্ত কর্তৃক তার কৃত অপরাধ লিখিতভাবে স্বীকার করতে হবে। তা না হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে কোন দণ্ড দিতে পারবেন না, সেক্ষেত্রে তিনি অভিযুক্তকে পুলিশের মাধ্যমে আদালতে চালান করবেন। (ধারা-৬, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, ২০০৯)। প্রশাসনিক কর্মাকর্তা কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ইতিমধ্যে হাইকোর্ট বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করেছে। বর্তমানে এই রায়ের বিরুদ্ধে অ্যাপিলেট বিভাগে আপিল পেন্ডিং রয়েছে।
অ্যাপিলেট ডিভিশন হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় বহাল রাখলে পার্লামেন্ট ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন সংশোধন করতে বাধ্য হবে। এরপর নির্বাহী অফিসার কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না এবং এ স্থলে জুডিশিয়াল অফিসার কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। তবে যতদিন এ রায় না হচ্ছে, তততিন নির্বাহী অফিসার কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত চলতে বাঁধা নেই।তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মূল কাজ হল- লাইসেন্স প্রদান, লাইসেন্স বাতিলকরণ, প্রসিকিউশন অনুমোদন বা প্রত্যাহারকরণ ইত্যাদি যেসব কাজের প্রকৃতি প্রশাসনিক বা নির্বাহী ধরণের তা সম্পাদন করা। (ধারা-৪(২)(খ)) শুধুমাত্র “ম্যাজিস্ট্রেট” বলতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বুঝায়।CrPC এর ধারা 4A(a) তে বলা হয়েছে, “without any qualifying word, to a Magistrate, shall be construed as a reference to a Judicial Magistrate.” অর্থাৎ কেউ যদি বলেন, “আমি ম্যাজিস্ট্রেট।”
এর অর্থ হল উনি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। কোন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিজেকে শুধুমাত্র “ম্যাজিস্ট্রেট” হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন না। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মূল কাজ বিচার করা। আরো বিস্তর আলোচনা করতে গেলে বলতে হয় সরকারের বিভাগ তিনটি- ১) আইন বিভাগ- বাংলাদেশে এই বিভাগ MP (সংসদ সদস্য) -দের নিয়ে গঠিত। তাদের কাজ হল আইন তৈরী করা। ২) নির্বাহী বা শাসন বিভাগ – রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সকল মন্ত্রী, সচিব, বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ও অন্যান্যভাবে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে শাসন বা নির্বাহী বিভাগ গঠিত। আইন অনুযায়ী শাসন কাজ চালনা করাই হল শাসন বিভাগের কাজ। তাছাড়া শাসন বিভাগ বিচার বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায় বাস্তবায়ন করে থাকে। ৩) বিচার বিভাগ- সুপ্রিম কোর্ট (হাইকোর্ট ডিভিশন ও অ্যাপিলেট ডিভিশন) এবং নিম্ন আদালত ও বিভিন্ন ট্রাইবুনালের সমন্বয়ে বিচার বিভাগ গঠিত।আইন বিভাগ যে আইন প্রনয়ন করে, সে আইন অনুযায়ী বিচার করাই হল বিচার বিভাগের মূল কাজ।
যারা বিচার করেন তাদেরকে বিচারপতি (সুপ্রিম কোর্টের বিচারক) , জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট (প্রতি জেলায় নিম্ন আদালতের বা ট্রাইবুনালের বিচারক) বলা হয়। বিচার বিভাগ হল সংবিধানের অভিভাবক। সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে আইন বিভাগ কোন আইন তৈরী করলে কিংবা অন্য কোন আইনের সাথে বিরোধপূর্ণ আইন তৈরী করলে কিংবা নির্বাহী বিভাগ উল্টাপাল্টা কাজ করলে বিচার বিভাগ জুডিশিয়াল রিভিউ কিংবা রিট এখতিয়ার প্রয়োগের মাধ্যমে আইন বিভাগ কর্তৃক প্রণীত কোন আইন বা নির্বাহী বিভাগ কর্তৃক কৃত যেকোন কাজকে বাতিল ও অকার্যকর ঘোষণা করে আদেশ দিতে পারেন। আইনের ব্যাখ্যা দেবার দায়িত্বও বিচার বিভাগের হাতে ন্যস্ত।শাসন বিভাগের বিভিন্ন উপবিভাগের মধ্যে অন্যতম হল প্রশাসন (Public Administration)।
বিসিএসের মাধ্যমে যেসব মেধাবী ও সৌভাগ্যবান ব্যক্তিরা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে জয়েন করেন, তাদের পদবি হল- সহকারী কমিশনার (প্রশাসন)। ম্যাজিস্ট্রেট নয়। পুলিশের ASP পদমর্যাদার ব্যক্তিদেরকে কিংবা Board examination ও বিভিন্ন পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি কলেজের শিক্ষকদেরকেও (বিসিএস- শিক্ষা ক্যাডার) সরকার ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন। যাকে স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বলে। তবে তারা কিন্তু নিজেদেরকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন না। যখন বলা হচ্ছে,”অমুক ভাই একজন ম্যাজিস্ট্রেট।” তার অর্থ – অমুক ভাই হলেন বিচার বিভাগে নিযুক্ত একজন বিচারক।যার বেতন স্কেল শুরুতে ৬ষ্ঠ গ্রেড (ব্যাসিক ৩০,৯৩৫ টাকা)। আর যিনি বিসিএসের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (প্রশাসন) হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন, তার বেতন স্কেল শুরুতে ৯ম গ্রেড (ব্যাসিক ২২,০০০ টাকা)।
কোন সহকারী কমিশনার (প্রশাসন)-কে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচয় দিতে হলে অবশ্যই অবশ্যই এবং অবশ্যই বলতে হবে তিনি “নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা Executive Magistrate”। শুধুমাত্র ” ম্যাজিস্ট্রেট” বলা যাবে না। প্রশাসনের কোন সহকারী কমিশনার যখন ভূমি অফিসের দায়িত্ব পালন করেন, তখন তাকে বলা হয় Assistant Commissioner of Land (প্রচলিত AC Land)।এরপর সহকারী কমিশনারগণ প্রমোশন পেতে পেতে উপজেলা নির্বাহি অফিসার (UNO) হন। UNO, DC উনাদেরও কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আছে, অথচ লোকে তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেট বলে না৷বরং সদ্য জয়েন করা সহকারী কমিশনার (প্রশাসন)-কে ম্যাজিস্ট্রেট বলে ভুল করেন), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ADC), জেলা প্রশাসক (DC), অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার, মন্ত্রণালয়ের সচিব ইত্যাদি পদ অর্জন করেন। বলা বাহুল্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ নির্বাহী অফিসার হলেন সচিব এবং মন্ত্রণালয়ের প্রধান হলেন মন্ত্রী। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত সচিব হয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক হয়ে UNO এবং সহকারী কমিশনারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়।
প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ নিঃসন্দেহে সরকারের অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। আবার, একটি জেলার সর্বোচ্চ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট। জেলা প্রশাসকের উপরে সরকার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেসির দায়িত্ব অর্পণ করে। কখনো কি শুনেছেন কোন জেলা প্রশাসক নিজেকে জেলা প্রশাসক হিসেবে পরিচয় না দিয়ে শুধু ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়েছেন? অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যেসব রায় দেন, তাদের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের (জেলা প্রশাসক) কাছে।জেলা প্রশাসকের রায়ের বিরুদ্ধে এরপর আপিল করতে হয় জেলা ও দায়রা জজের নিকটে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রমোশন পেয়ে এক সময়ে জেলা ও দায়রা জজ হন। একটি জেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা যেমন জেলা প্রশাসক, তেমনি একটি জেলার সর্বোচ্চ জুডিশিয়াল অফিসার হলেন জেলা ও দায়রা জজ।
উপরের আপিল সংক্রান্ত বিষয় থেকে পরিষ্কার জেলা ও দায়রা জজের পদমর্যাদা জেলা প্রশাসকের থেকে উপরে। জেলা ও দায়রা জজের পদমর্যাদা প্রশাসনের সচিব সমমানের। যাহোক, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে অবশ্যই আইন ব্যাকগ্রাউন্ডের হতে হবে। এরপর বিসিএসের মত করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (BJS) পরীক্ষা দিতে হবে।সহকারী কমিশনার (প্রশাসন) যেকোন সাবজেক্টে পড়ে হওয়া যায়, তবে ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে অবশ্যই আইনের ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক। ম্যাজিস্ট্রেট (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) এবং সহকারী কমিশনার (প্রশাসন) (এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট) সংক্রান্ত ধারণা পরিষ্কার হয়েছে আশা করি। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরকে ছোট করে দেখার অভিপ্রায়ে এই লেখাটি লিখিনি, বরং প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা দূর করতে সচেষ্ট হয়েছি। বিচার বিভাগ এবং শাসন বিভাগ সরকারের অবিচ্ছেদ্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং তাদের কাজের ক্ষেত্র আলাদা। বিসিএস প্রশাসন নিঃসন্দেহে চমৎকার প্রেস্টিজিয়াস একটি চয়েস। বিসিএস প্রশাসনে সদ্য সুপারিশ প্রাপ্ত বা নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তির পদবীকে সহকারী কমিশনার (প্রশাসন) বলুন, ম্যাজিস্ট্রেট নয়।–

(Collected)

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when স্নায়ুবিক - Snayubik posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share