27/05/2022
মামলা vs ই-অরেনজ এর সমাধান
আমরা খুব শক্তিশালী। আমরা সবকিছু পারি। তাহলে আমরা ই-অরেনজ এর সমস্যা সমাধান করতে কেনো পারছি নাহ। একদিনে যেমন একটা সমস্যা তৈরি হয় নাহ ঠিক তেমনি সমাধান ও হয়তো একদিনে হয় নাহ। তবে না বুঝে সমস্যা তৈরি করা যেমন ভুল তেমনি বুঝে শুনে সমাধান না করে আরো সমস্যা তৈরি করা আরো বড় ধরনের ভুল।
প্রশ্ন করুন নিজকে; আপনি, আমি নিজ সিদ্ধান্তে ই-অরেনজ এ পণ্য অডার করেছেন যার হয়তো ভেলিভারি পাননি। তাহলে নিজ সিদ্ধান্তে এখন করণীয় কী সেটা ঠিক করা উচিত। কারো কথায় অথবা আহ্বানে সাড়া দিয়ে কী উদ্দেশ্যে কী করছেন; আপনি কী জানেন বা বুঝতে পারছেন।
সাধু সাবধান, আপনি আমি কী চাই? আমরা সকলেই চাই ই-অরেনজ চালু হোক ব্যবসায় করুক নাকি চাই বন্ধ থাকুক।
সহজ কথা, আমরা কী চাই?
যদি আমরা মামলা করতে চাই। প্রায় ৫০টি মামলা করা হয়েছে। এতগুলো মামলার পর আমরা কিভাবে আশা করি যে ই-অরেনজ নিয়ে আমান-বীথি অথবা সোনিয়া-সোহেল কেউ কাজ করবে? ই-অরেনজ যে অফিসিয়াল কার্যক্রম ছিল দিন দিন তা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদের গুদামঘর, কাস্টমার কেয়ার অফিস, প্রধান অফিস; সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দায়িত্ব প্রাপ্ত মালিক ও অন্যান্যদের নিয়ে কথা বলা বা সুযোগ বা পুরো ব্যাপারটা বোঝার আগেই কাল্পনিক ১১০০ কোটি টাকার মামলা দিয়ে এখন পর্যন্ত কী পেলাম? কতো সময় দিলাম অন্যদের, এদের কে দিলাম নাহ।
এক বছর হতে চললো বিভিন্ন ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ ও পেজ এর এডমিন বা মডারেটর, কী সমাধান করলেন? কিছুদিন পর পর গ্রাহকদের তথ্য নিয়ে মামলা করতে সহায়তার নামে কী করছেন? এটা কী সমাধান? নাকি ই-অরেনজ কে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। ইদানিং আবার শুরু হয়েছে। ধরুন আমরা মামলা করবো। যার যারটা সে করেন। মামলা করার নামে কোনো ব্যবসা হচ্ছে কিনা।
একটু চিন্তা করেন, মামলা করে ই-অরেনজ ফিরে আসার সকল সুযোগ শেষ হয়ে যাবে ও যাচ্ছে। আমাদের মামলা করার প্রবণতা কি কি করতে পারে-
* মামলার সংখ্যা বাড়াবে
* স্বাভাবিক ভাবেই দোষী ও নির্দোষ সকলের জেল হাজতে থাকতে হবে
* যারা আটকে আছেন, এতে করে আমাদের সুবিধা কি হচ্ছে। যদি তারা অর্থ পাচার না করে থাকেন, তাদের কি ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েছি আমরা?
* গেটওয়েতে যে টাকা আটকে আছে তার কোনো সুরাহা হচ্ছে নাহ
* অন্যান্যদের অর্থ ফেরত পাবার কোনই সুরাহা হচ্ছে নাহ
* ই-অরেনজ ফিরে আসার সম্ভাবনা দিন দিন কমে যাচ্ছে। যতো মামলা হবে ফিরে আসার সুযোগ ততোই কমতে থাকবে
সকল গ্রাহক একটি মামলা করা ও কাউকে উৎসাহ দেবার আগে ভেবে দেখুন এই একটি কারণে ই-অরেনজ আবার কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। মামলা না করে ই-অরেনজ কে চালু করার জন্য কী করা যায় সেইটা হতে পারে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই মুহূর্তে। তাকিয়ে দেখুন ইভ্যালি এর জন্য আমরা কী করছি? তাহলে কেনো নয় ই-অরেনজ এর জন্য। কেউ এটা ভেবেন নাহ আমি মামলা বিরোধী বরং আমি সমাধান এর পক্ষে যেটা কিনা সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে।
ই-অরেনজ এর সমাধান হবে যদি প্রতিষ্ঠানকে চালু করা যায়। কিন্তু কিভাবে??? একটু জেনে নেই-
১। ই-অরেনজ এর বর্তমান মালিক কে?
উত্তর - চুক্তিপত্র ও ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী বীথি আক্তার হচ্ছেন ই-অরেনজ এর বর্তমান মালিক। আমান উল্লাহ হচ্ছেন তার প্রধান সহযোগী ও ব্যবসায়িক পার্টনার। এপ্রিল ২০২১ থেকে বীথি এই প্রতিষ্ঠানের মালিক।
২। গেটওয়েতে আটকে থাকা অর্থের ব্যাপারে কে বা কার সাহায্য দরকার গ্রাহকদের ফেরত দিতে?
উত্তর - চুক্তিপত্র ও ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী বীথি আক্তার হচ্ছেন ই-অরেনজ এর বর্তমান মালিক। আমান উল্লাহ হচ্ছেন ই-অরেনজ এর বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। সুতরাং সার্ভার আই ডি ও পাসওয়ার্ড রয়েছে আমান সাহেব এর কাছে। আমান ও বীথি এই দুই জনকেই এগিয়ে আসতে হবে।
৩। ই-অরেনজ এর ব্যবসায়িক কার্যক্রম কে চালাবে যাতে করে বাকি গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া যায়?
উত্তর - চুক্তিপত্র ও ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী বীথি আক্তার হচ্ছেন ই-অরেনজ এর বর্তমান মালিক। আমান উল্লাহ হচ্ছেন তার প্রধান সহযোগী ও ব্যবসায়িক পার্টনার। আমান উল্লাহ হচ্ছেন ই-অরেনজ এর বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বীথি ও আমান এই দুই জনকেই এগিয়ে আসতে হবে পরিচালনা করার জন্য। চুক্তিপত্র ও লাইসেন্স তাই বলে
কি বুঝতে পারলাম-
আমাদের প্রথম লড়াই হচ্ছে বীথি ও আমানকে আইনের আওতায় এনে ই-অরেনজ কে চালু করতে পারা। আইনগত ও ডকুমেনট অনুযায়ী এটাই স্বাভাবিক এবং হবার কথা। আমান পারবে কিনা, করবে কিনা সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করতে চাই নাহ। আমান বীথি কেও বের করতে হবে কাজও করতে হবে। আমাদের সকলের এটা মাথায় আনতে হবে আমান বীথি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান মালিকানায় আছে, আমাদের যতো অডার বাকী আছে সব অডার বীথি আমানের আমলের, সন্দেহ করে পুরাতন মালিক ও পরিবারকে গালাগালি করতে পারবো, মামলা দিতে পারবো কিন্তু সঠিক সমাধান কী হবে? খেয়াল করুন আমান বীথি কে আনলো, প্রতিষ্ঠানের কেনা বেচা হলো, প্রতিষ্ঠানের সমপদ ও দায় সহ দায়িত্ব নিলো, এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত ভেলিভারি করলো, এরপর নাজমুল এর কেলেঙ্কারি ও চাকুরিচ্যুতি, আমান এর যোগদান, অডিট করার নামে ডেলিভারি বনধ করা, অফিস পরিবর্তন চেষ্টা, সোহেল কে ফাসানো যে উনার কাছে সব....
আমরা কল্পনা করে মামলা করলাম, বীথি বর্তমান মালিক ব্যতিত অন্য সবাই জেল হাজতে। ই-অরেনজ সমাধান কে করবে। আমরা কী ও কিভাবে চাই তা ঠিক করে বলছি নাহ। মামলা আমরা করেছি এখন অর্থ আমাদের আটকে আছে, আমাদের কী কেই সমাধান আনতে হবে। আমানের লোক, সোহেলের লোক, নাজমুলের লোক মাঠে ঘুরছে, দয়া করে আপনার টা আপনি ভালো বুঝবেন কি করা উচিত।
অনেক কথার শেষে আরেকটি কথা বলি, আমরা কি সোনিয়া মালিক থাকাকালীন ভালো কিছুই পাইনি? কমসময়ে ও সময়মতো ভেলিভারি, কিছু একটা ভালো কি ছিল নাহ। আমরা তাকে কি ফিরিয়ে দিলাম? তিনি বিক্রয় করে ফেললেন, আমরা অবাক হয়েছি, কষ্ট পেয়েছি কিন্তু কেনো?... আমরা এখনো আমান বীথি কে মানতে পারছি নাহ, তাই বলে কি সোনিয়া খারাপ? আমান বীথি এর নিষ্ক্রিয় থাকাটা কি সন্দেহজনক নয়? ওদের ভুলের জন্য আমরা কি সোনিয়া কে দোষারোপ করা উচিত? সোহেল একটি সমস্যা কিন্তু ই-অরেনজ এর সমাধান নয়। আমান -বীথির নিষ্ক্রিয়তা কে সোহেল এর উপর, সোহেল কে দিয়ে সোনিয়া, সোনিয়া কে দিয়ে মাশুক কে বিচার করা কি ঠিক হবে? সোনিয়া কে যদি আমরা সমাধান মনে করতাম তাহলে এইভাবে মেরে ফেলতে পারতাম নাহ। আমরা ভুলে যাই ভালো টা। মনে রাখি কেবল নিজের কষ্টটা। একটি বার কেউ কি একটা পোসট করেছি, সোনিয়া আপা ফিরে আসুক।
আমরা ই-অরেনজ এর সমাধান চাই, ই-অরেনজ কে চালু করাই হলো সমাধান। মামলা করতে থাকলে সমাধান এর কোনো পথ থাকবে নাহ। এখন ভেবে দেখুন ই-অরেনজ চালু করবেন নাকি বনধ রাখবেন। সবই আমাদের হাতে।