16/07/2023
✒️ ইবনুল জাওযী (রহ.)
মৃত্যুর সময়টা খুব যন্ত্রণাদায়ক, প্রচণ্ড কষ্টের। একদিকে ভালোবাসার সব জিনিস, প্রিয় মানুষ ছেড়ে যাওয়ার ব্যথা, অন্যদিকে মৃত্যুর বিভীষিকা সম্পদের মায়া। শয়তান তাই এই সুযোগটার পূর্ণ ‘সদ্ব্যবহার’ করে।
সে কানপড়া দিতে শুরু করে: ‘কী অবস্থা তোমার! কেন মারা যাচ্ছ ? খুব কষ্ট লাগছে ? তোমার স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে কোথাকার কোন মাটির নিচে জায়গা হবে তোমার!’
এগুলো বলে বলে সে মানুষকে তার প্রভুর প্রতি বিদ্বেষী করার টোপ ফেলে। আল্লাহর নির্ধারিত নিয়তির প্রতি ঘৃণা জাগাতে চায়। তাকে দিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলায়। কিংবা উইল করার সময় দেখা যায় তাকে দিয়ে অন্যায় পক্ষপাত করাচ্ছে। বংশধরদের একজনের চেয়ে অন্যকে হিস্সার চেয়েবেশি দিয়ে দিচ্ছে। এরকম আরও বহু বেইনসাফি কাজ করায়। এজন্য শয়তানের এই টোপ এড়ানোর উপায়, নিজেদের শুদ্ধ করার পন্থা জানা খুব খুব জরুরি।
আবূ আল-ইউস্ (রাদ্বি.) বলেছেন নবিজি (সা.) একটা দু‘আ প্রায়ই করতেন:
أعوذ بك أن يتخبطنى الشيطان عند املوت
আ‘ঊয্বুবিকা আন য়াতাখাব্বাত়নীশ-শাইত়ানু ‘ইনদাল-মাওত।' অর্থাৎ (আল্লাহ) আপনার কাছে আমি মৃত্যুর সময় শয়তানের ধোঁকা থেকে আশ্রয় চাই।'
অন্তিম সেই সময়ে শয়তান তার অনুচরদের বলে, “এই মরণের সময় যদি ওকে ভুল পথে নিতে না পারো, তা হলে আর জীবনেও পারবে না।”
কঠিন এই পরীক্ষায় উতরানোর উপায় হচ্ছে সুস্থ অবস্থায় আল্লাহর ব্যাপারে সচেতন থাকুন। তা হলে কঠিন সময়ে আল্লাহ ‘নিজে’ আপনাকে হেফাজত করবেন। আপনার চিন্তা চেতনায় যদি সব সময় আল্লাহকে স্থান দেন, তা হলে তিনি আপনার অঙ্গপ্রতঙ্গকে আজে বাজে কাজে জড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা করবেন। এই প্রসঙ্গেই নবিজি (সা.) বলেছেন, 'আল্লাহকে স্মরণ রাখো। তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন। আল্লাহকে স্মরণ রাখো, তোমার সামনে তাঁকে খুঁজে পাবে। ভালো সময়ে যদি তাঁকে চেনো, তা হলে তোমার কষ্টের সময়েও তিনি তোমাকে চিনবেন।' (আত-তিরমিযী ২৫১৬)
'মনের ওপর লাগাম' বই থেকে