হক কথা - Hok Kotha

  • Home
  • হক কথা - Hok Kotha

হক কথা - Hok Kotha মুখোশ উন্মোচন

সবার কাছে ভিডিওটা দেখার এবং চ্যানেলটা সাবস্ক্রাইব করার অনুরোধ রইলো৷ https://youtu.be/A-JwGdqe9TE
26/10/2019

সবার কাছে ভিডিওটা দেখার এবং চ্যানেলটা সাবস্ক্রাইব করার অনুরোধ রইলো৷

https://youtu.be/A-JwGdqe9TE

Torture Cell (টর্চারসেল) Short-Film Concept, Videography, Director- Masum Mahbub Video Edit & Color: Bappy Akhond Cast: Bappy, Nahin, Ismail, Akbar, Rimel, E...

26/10/2019

চারদিকে যদি দেখেন চোখ মেলে, তো দেখবেন নিজের দুশ্চরিত্র ঢাকার তালে অনেক নারী গায়ে বোরকা হিজাব লাগিয়ে চলে। ভদ্র সেজে বের হয়ে অভদ্রের কর্ম করে আবার ভদ্র ভাব ধরে এরা ঘরে যায় ফিরে।


আমরা জানি- নামাজি চোর হয়না, চোররা নামাজি সাজে। তেমনি কিছু অসভ্য প্রকৃতির মেয়ে অপকর্মের খেয়ালে গোপন চালে চলে ইসলামী লেবাস গায়ে মেলে অসৎ কর্ম করে বেড়ায় ভদ্র(?) হিজাবি সেজে।


এরা আদৌ না জানে ইসলামী নিয়ম নীতি, ইসলামের রীতি সংস্কৃতি, না তো মানে ইসলামের বিধি বিধান এবং মূলনীতি। যে পর্দা হিজাব করা উচিত তাদের নিজের আত্মরক্ষার্থে, ইসলাম মানার স্বার্থে, সে পর্দা হিজাব করে তারা নিজের পাপী মুখ লুকানোর অর্থে, আর এভাবে ধর্মের নামে অধর্মের কর্ম ছড়িয়ে করে চলছে এরা ইসলামের ক্ষতি।


যে পর্দা হিজাব ছিল নিজের সৌন্দর্য গোপন করার উদ্দেশ্যে, সেটা এখন বিপরীত হয়ে উল্টো তালে ভাসছে। পর্দার অর্থ কখনোই ছিলনা নিজেকে আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তোলা, কিন্তু এখন এরা বাহারি বোরকা বাহারি হিজাব পর্দার সাথে স্পর্ধা দেখিয়ে করছে ইসলামের অপমান অবহেলা।


কর্ম হয় নিয়ত অনুসারে। যা হবে তোর আত্মরক্ষা তা কেন তোর দুর্বলতা! নিজেকে না বাঁচিয়ে তুই কেন নিজেকেই ডুবাস? পরকাল আছে, আল্লাহ আছে কিভাবে তুই ভুলে যাস। ব্যর্থতা, হতাশা আর স্বেচ্ছাচারিতার এই গোলকধাঁধাকে লাথি মেরে, সময় আছে ফিরে আয় ঘরে। পাপ পঙ্কিলতামুক্ত নির্মল জীবন কর, আল্লাহর কাছে আত্বসমর্পন করে।


লেখা- Maasum H Billaah

 #ডার্ক_রেস্টুরেন্টের_নামে_সেক্স_রেস্টুরেন্ট!চট্টগ্রামে ডার্ক রেস্টুরেন্ট নামে কিছু জায়গা আছে, যেখানে স্কুল কলেজের বাচ্চ...
26/10/2019

#ডার্ক_রেস্টুরেন্টের_নামে_সেক্স_রেস্টুরেন্ট!

চট্টগ্রামে ডার্ক রেস্টুরেন্ট নামে কিছু জায়গা আছে, যেখানে স্কুল কলেজের বাচ্চা ছেলে-মেয়েরা গিয়ে সেক্স করে। কিস বা হাগ না, ডাইরেক্ট সেক্স। যারা করে তাদের বেশিরভাগ ভার্সিটি লেভেলেও যায়নি, স্কুল-কলেজের ছাত্রী। এরা হিজাব পড়ে ঢুকে, সেক্স করে বেরোয়।

কিছুদিন আগে আমি এটা জেনে অবাক হই। ৪ দিন আগে প্রথমবারের মত কিছু রেস্টুরেন্টে নিজের চোখে প্রমাণ দেখে আসি। অনেক স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের সরাসরি সেক্স করা অবস্থায় পাই। বয়স্ক লোকের সাথে সেক্স করতে দেখে মহসিন কলেজের একটা মেয়ের বাসায় কল করে তার আম্মুকে সাবধান করে দেই। পরে এই ঘটনা বন্ধ করার জন্যে উচ্চপদস্থ একজন পুলিশের সাথেও যোগাযোগ করি।

গতকাল যা ঘটেছিল, কোন প্ল্যান ছাড়াই। বের হয়েছিলাম, নিউ মার্কেট যাবো। হঠাৎ ছোট্ট একটা মেয়েকে হিজাব নিকাব পড়া অবস্থায় সেই ডার্ক রেস্টুরেন্টের সামনে দেখি। আমার সাথে থাকা বন্ধুটি বলে, এই মেয়ে সেক্স করতে আসছে। আমি বিশ্বাসই করি নাই।

আমি বলিঃ এত ছোট একটা মেয়ে! হিজাব-নিকাব পড়া, এগুলা করবে না। কিন্ত একটু পর যখন দেখি মেয়েটা আসলেই একটা ছেলের সাথে সেখানে যাচ্ছে আমার বন্ধুটি হঠাৎ রাগ সামলাতে না পেরে বাধা দিতে যায়। ২টা রেস্টুরেন্টের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জোড়া ছাত্র-ছাত্রীকে সেক্স করা অবস্থায় পাই আমরা। সম্পূর্ন বিবস্ত্র, পাশে বোরকা-হিজাব। নীচে পড়ে আছে কনডম। অন্ধকার জায়গায় চারিদিক ঘেরা দিয়ে ছোট ছোট স্পেসে ওপেন সেক্সের ব্যবসা চলছে। এগুলা আবাসিক হোটেল না, রেস্টুরেন্টের নামে তরুণ প্রজন্মকে সহজে সেক্সে উৎসাহিত করার কৌশল। অথচ, এই সমাজেই আপনাদের ছোট বোনরাও থাকে। কোচিং ফাঁকি দিয়ে প্রেম না, ডাইরেক্ট সেক্স করতে চলে আসে!

এরপরেই আমরা বাধার সম্মুখীন হই। নীচে মানুষ জমে গেছে, বোরকা পড়া মেয়েরা পালাচ্ছে। পুলিশকে ডেকে ঘটনা জানাই। পুলিশ মাত্র ১ জন। হঠাৎ কিছু বুঝার আগেই ডার্ক রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা ৪/৫ জন এক হয়ে মারতে শুরু করে আমাদের। আমাদের চোর, চাঁদাবাজ বলে মারতেছে, সাধারণ মানুষ কিছু বাধা দিলেও পেটে, বুকে প্রচন্ড ঘুষি খাই। আমার বন্ধুটি দোকানে ঢুকে যায়। সাথে সাথে কলাপসিবল গেট আটকে দেয় অন্যরা। এরমধ্যে ডার্ক রেস্টুরেন্টকে শেল্টার দেয়া কিছু সন্ত্রাসী এক হয়ে গণধোলাইয়ের আয়োজন করে ফেলছিল। আমি একা হয়ে যাই।

বারবার পুলিশের সামনেই আমাকে ছিনিয়ে নিয়ে মারার চেষ্টা করে তারা। এরপর থানার ওসি চলে আসে এবং আল্লাহর রহমতে অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যাই। আমাকে পুলিশের গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আশেপাশে বহু সাধারণ মানুষ ছিল, কেউ কিছু বলেনি। হয়তো সন্ত্রাসীদের ভয়েই। এভাবেই তো চলছে দেশ..

থানায় নেয়ার পর শুরু হয় অন্য রাজনীতি। আমাকে চিনে যায় অনেকে। কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছিস বলে গালাগালি শুরু হয়। খবর পেয়ে বিভিন্ন গ্রুপ চলে আসে৷ তাদের অনেকদিনের ক্ষোভ আমার উপর। মানুষের ঘৃণ্য রুপ দেখে বাকরুদ্ধ হই, সেসব প্রকাশ করারও রুচি নাই। নির্দোষ জেনেও সবাই একসাথে গালি দিচ্ছে। “কোটা আন্দোলন করিস, তোকে তো থানায় না এনে পিটিয়ে মেরে ফেলা উচিত ছিল।” আমি একা আর সবাই মিলে আমাকে ফাঁসানোর অনেক চেষ্টা করে৷

IIUC ছাত্রলীগের নাম বেচা গুন্ডাগুলা এই সুযোগ কেন ছাড়বে? তারা তাদের পেইজে অপপ্রচার চালায়, “ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করার সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মুনতাসির গ্রেফতার!”

ঘৃণ্য অনেক খেলা চলে সেখানে। দ্রুত তারা থানায় চলে আসে। আমার জন্যে যারা গিয়েছিল তাদেরকে মেরে তাড়িয়ে দেয় ছাত্রলীগের পোলাপান। চট্টগ্রামের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অনেকের মোবাইল চেক করে, গালি দিয়ে থানার সামনে থেকে সরিয়ে দেয় আমার ক্যাম্পাসের কথিত ছাত্রলীগ নেতারা। কিন্ত কেন?
তারা নাকি আমাকে বাঁচাতে আসছে! আমি যেখানে কোন অপরাধই করি নাই, সেখানে তারা কিভাবে বাঁচাবে আর ১ জন চাঁদাবাজকে বাঁচাতে আসার কি কারণ থাকতে পারে, যার বিরুদ্ধে একটু আগেই তারা পোস্ট দিছে! যদিও সেই পোস্ট পরে ডিলেট করে দেয়।

- মুনতাসির মাহমুদ (চট্টগ্রাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা)

এই হলো অবস্থা! কয়েকদিন আগেও রাজধানীতে একটি সামাজিক সংস্থার জরিপে উঠে আসে প্রায় ৬৬% স্কুলপড়ুয়া মেয়ে স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই নিজ সতীত্ব বিকিয়ে দেয়!

আল্লাহ সবার ভাই-বোনদের হেফাজত করুন। নিজ নিজ ভাই-বোনকে পরিবার থেকেই ইসলামের শিক্ষায়, তাক্বওয়ার শিক্ষায় সমৃদ্ধ করার তাওফিক দিন।
©
ওমর ফারুক

26/10/2019

বৈচিত্র্যপূর্ণ শাসনব্যবস্থায় আমাদের চার যুগ :
------------------------------------------------------

গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে পার হয়েছে। বিচিত্র শাসন ব্যবস্থার দেশ বাংলাদেশ। এখানে প্রায় সব ধরনের শাসনব্যবস্থাই কায়েম হয়েছে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। সামরিক শাসন চলেছে। আবার গণতন্ত্রের আড়ালে সামরিক শাসনের বীজও বপন করা হয়েছে। একদলীয় শাসনব্যবস্থাও মানুষ দেখেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশ পরিচালনা করেছে, আবার তত্ত্বাবধায়ক শাসনের নৈপথ্যে সামরিক শক্তিও কাজ করেছে। এখন গণতান্ত্রিক স্বৈরাচারও দেখছে বাংলাদেশ। সামরিক স্বৈরাচারের চেয়ে গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার যে কত ভয়ানক গত প্রায় এক যুগ ধরে এদেশের জনগণ তা খুব ভালভাবেই উপলব্ধি করছে। অবশ্য গত ৬ বছর ধরে দেশে এখনো যে শাসন চলছে তাকে 'গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার' বললে দৃশ্যমান সত্যকে অবজ্ঞাই করা হবে; এটাকে নিঃসন্দেহে ‘ফ্যাসিষ্ট শাসিত সরকার' বলা যায়। সত্যিই বৈচিত্র্য শাসন ব্যবস্থার এক অসাধারণ নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। আবার কোনো প্রকার সরকার ছাড়াও দু'বার বাংলাদেশ চলেছে। ১৯৭৫ সালের ৩’নভেম্বর থেকে ৬’নভেম্বর এবং ১৯৯০ সালের ৩’ডিসেম্বর থেকে ৬’ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এদেশে কোন সরকারই ছিল না।

শাকিলা ফারজানা

এই দেশের মানুষ কি আর জীবিত বেগম জিয়া কে দেখতে পাবে?
25/10/2019

এই দেশের মানুষ কি আর জীবিত বেগম জিয়া কে দেখতে পাবে?

চিকিৎসা হচ্ছে না, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে চান স্বজনরাজামিনে মুক্তি পেলে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া...
25/10/2019

চিকিৎসা হচ্ছে না, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে চান স্বজনরা

জামিনে মুক্তি পেলে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে চাইছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেন। পরে বেগম খালেদা জিয়ার মেজ বোন বেগম সেলিমা ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার জামিন পেলে তাকে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশ নিতে চাই। এখানে তার চিকিৎসা হচ্ছে না।’

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়ার স্বজনরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক তারা খালেদা জিয়ার পাশে থাকেন।

স্বজনদের মধ্যে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার মেঝ বোন বেগম সেলিমা ইসলাম, তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়েদা রহমানের বড় বোন শামীম আরা বিন্দু, খালেদা জিয়ার ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, খালেদা জিয়ার ভাইয়ের ছেলে অভিক ইস্কান্দার, খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ ইস্কান্দারের ছেলে অতনু ইস্কান্দারসহ ৬ জন।

25/10/2019

রাজা-রাণীর গল্পগুলো আমাদের খুব প্রিয়। ছোটোবেলায় শোনা রূপকথাগুলো মূলতঃ রাজা-রাণীরই কিচ্ছা। এসব কাহিনী শুরুই হয়: 'একদেশে ছিল এক রাজা' দিয়ে। এইসব রাজা-রাণীদের ক্ষমতা, জৌলুস এবং অদ্ভুত সখের কোনো শেষ নেই।
যা হোক, আজ বলি একদেশের মহাক্ষমতাধর তেমন এক শাসকের গল্প। তিনি রাজা নাকি রাণী ছিলেন, সেটা বড় কথা নয়। তার হুকুমে বাঘে-মোষে পানি পান করতো একঘাটে।
রাজ্যে কারো রা' ছিলনা। টু-শব্দটি করার সাহস ছিলো না কারুর।
তো তিনি দেখলেন কোনো ব্যাপারেই প্রজাদের কারো কোনো অভিযোগ নেই। তার সখ হলো প্রজাদের এই ধৈর্যের সীমা কতদূর সেটা পরীক্ষা করে দেখার।
তিনি হুকুম করলেন, এখন থেকে সব শহরের প্রবেশপথে ব্যারিকেড বসাও। একসঙ্গে একজনের বেশি লোক যেন বেরুতে এবং ঢুকতে না পারে। সবাই এক-এক করে যাবে আসবে। যথারীতি রোডব্লক বসলো কিন্তু কেউই প্রতিবাদ করলো না নতুন এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।
এরপর হুকুম হোলো, যাওয়া আসার পথে প্রত্যেককে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। সবাই মাথা নীচু করে এ আদেশও মেনে নিলো। কেউ কোনো অভিযোগ করলো না।
অতপর রাজাদেশ হলো, শহরে ঢুকতে এবং শহর থেকে বেরুতে প্রত্যেকের দেহতল্লাশি করতে হবে। প্রজারা হাসিমুখে মেনে নিল সে নির্দেশও।
প্রজাদের আনুগত্য ও ধৈর্য্য দেখে শাসক নিজেই এবার অধৈর্য্য হয়ে আদেশ দিলেন, পরিচয়পত্র প্রদর্শন ও দেহতল্লাশির পর কোনো প্রজা শহরে ঢোকার বা শহর থেকে বেরুবার অনুমতি পেলো কিনা তা প্রদর্শনের জন্য প্রত্যেক গেটে একজন করে প্রহরী থাকবে। সেই প্রহরী কারো গালে চড় মারলেই বুঝা যাবে যে, সেই প্রজাটি আসা কিংবা যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছে। অর্থাৎ প্রহরীর চড়পত্রই বিবেচিত হবে ছাড়পত্র হিসেবে। কেউ এর প্রতিবাদ করলে তাকে বেঁধে রাজদরবারে নিতে হবে।
সবাই চড় খেয়ে শহরে আসা-যাওয়া করতে লাগলো। কিন্তু একদিন বেঁকে বসলো এক প্রজা। বললো, এভাবে আর চলেনা। এর একটা বিহিত করতেই হয়।
শান্ত্রিসেপাই রে রে করে তেড়ে এলো। তাকে বেঁধে নিয়ে গেল শাসকের দরবারে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, তুমি শাহী ফরমানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছো?
প্রজা কুর্ণিশ করে বললো, মহামহিমের ফরমানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করিনি আমি। গেটে একজন মাত্র প্রহরী চড় মারার দায়িত্বে থাকে। এতে চড় খাবার জন্য আমাদেরকে রোজ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। সময়ের এই অপচয় রোধে আমি একাজে দু'জন প্রহরী নিয়োগের দাবি করছি।
শাসক তাকে সাবাসি দিয়ে বললেন: তোমার দাবি খুবই ন্যায়সঙ্গত। এখন থেকে প্রতি গেটে দু'জন করে চড়মারা প্রহরী থাকবে। আর প্রবল সাহসের সঙ্গে এই ন্যায্য দাবি জানানোর পুরষ্কার হিসেবে তুমি আগামী মৃগয়ায় আমার সফরসঙ্গী হবে।🙌

মারুফ কামাল খান

25/10/2019

খালেদা জিয়া ভীষণ অসুস্থ, অবস্থা শোচনীয়: রিজভী

আমানবিক, অবৈধ সরকার জামিন না দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ‘জীবননাশের ষড়যন্ত্র’ করছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে শোচনীয়। তিনি ভীষণ অসুস্থ। রাতে মোটেই ঘুমোতে পারছেন না। হাঁটাচলা করতে পারছেন না। শরীরের ওজন কমে যাচ্ছে।’

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতা নিয়ে সরকার নির্দয় আচরণ করছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘তাঁর উন্নতমানের সুচিকিৎসার অধিকারটুকু কেড়ে নেয়া হয়েছে। গত ১৪ দিনে কোনও চিকিৎসক তাঁর কাছে যাননি। বিএসএমএমইউ-এর ভিসি সাহেব গত সপ্তাহে রিমাটোলজিস্টদের দিয়ে যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছেন অদ্যাবধি সেই মেডিকেল বোর্ড বেগম জিয়া কিংবা তাঁর কোনও স্বজনকে চিকিৎসার কোনও রিপোর্ট দেননি।’

তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড ব্যথা-বেদনায় দেশনেত্রী রাতে মোটেই ঘুমাতে পারছেন না। আগের তুলনায় বর্তমানে শারীরিক অবস্থা খুবই শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। দুই মাস আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দাঁতের এক্স-রে করা হলেও এখনও পর্যন্ত সেই রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। যেহেতু বেগম জিয়ার ব্লাড সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত তাই তাঁর দাঁতের সমস্যার কারণে চোখসহ শরীরের অন্যান্য সমস্যাও প্রকট হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। এছাড়াও বারবার ইনস্যুলিন পরিবর্তন এবং ইনস্যুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পরেও কোনও অবস্থাতেই তাঁর সুগার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কোনও কোনও সময় এটি ২৩-২৪ মিলিমোল পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে খাবারের পরিমাণ অনেক কমিয়ে দেয়াতে শরীরের ওজন অনেকখানি হ্রাস পেয়েছে। তিনি হাঁটতে পারেন না, হাত নাড়াতে পারেন না। যথাযথ চিকিৎসার বিষয়ে আমরা বারবার দাবি করা সত্ত্বেও দেশনেত্রীকে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি বিশিষ্ট দেশের কোনও বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।’

রিজভী বলেন, ‘গোটা দেশবাসী আজ দেশনেত্রীর সুস্থ জীবন প্রত্যাশা করছে। কিন্তু সরকারের নির্মম আচরণে মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। কারাগারে নেয়ার সময় সুস্থ বেগম জিয়াকে এখন হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। দেশবাসী দেশনেত্রীর জীবনের পরিণতি নিয়ে এখনও অজানা আতঙ্ক ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। সরকার দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে গভীর মাস্টারপ্ল্যানে ব্যস্ত। এই মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে- গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তুপের ওপর জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস ও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করা। কারণ বেগম জিয়া গণতন্ত্রের এক জাগ্রত অনির্বান সত্তা। তাই দেশনেত্রীকে নিয়ে বর্তমান মিডনাইট নির্বাচনের সরকার এক সর্বনাশা পথে হাঁটছে বলেই গণতন্ত্রের প্রতীক খালেদা জিয়াকে রোগে-শোকে-ব্যথা-বেদনায় জর্জরিত রেখেও কারাগারে আটকিয়ে রেখেছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘বর্তমান মিডনাইট ভোটের সরকার মানবতাবোধশূন্য এবং বেআইনি কাজে এতো অভ্যস্ত যে, তারা বেগম জিয়ার বিপজ্জনক অসুস্থতাও ভ্রুক্ষেপ করছে না। সরকারের অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ প্রমাণ করে- দেশনেত্রীর প্রাণনাশ করতে তারা গোপনে মহাপরিকল্পনা আঁটছে। আইন-আদালত বর্তমানে শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় আছে বলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনও শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় বিদ্যমান।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে তার কিছু নমুনা দেখছেন। রহস্যে ঘেরা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ছিচকে দুর্নীতিবাজদের শত শত কোটি টাকা, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের নেতা ও আসল হোতাদের ধরা হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আসলে এ অভিযানের মুখোশে তাদের তৈরি কোনও বিষবৃক্ষকে আড়াল করা হচ্ছে কি না এ প্রশ্ন আজ জনগণের মুখে। আওয়ামী লীগের পুরোনো দস্তাবেজ ঘাটলেও দেখা যাবে দুর্নীতি ও গণতন্ত্রহীনতা সমানভাবে অস্তিত্বমান ছিল।’

25/10/2019

মহানুভব শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া এবং হিংসুটে প্রতিপক্ষ :...................................................................................

১/ বাংলাদেশে এখন কি কারো মনে আছে কেন আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, গণতন্ত্র বাংলাদেশের মানুষের রক্তে মিশে আছে উল্লেখ করে বলেছিলেন ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী বাকশাল প্রতিষ্ঠার সময় সকল বেসরকারি পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দেয়া এবং আওয়ামী লীগসহ সবগুলো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা দেশের মানুষের মনঃপূত হয়নি। তিনি সংবিধানের পণ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন এবং পত্রপত্রিকা উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন। শুধু তা নয় বাংলাদেশে অনুপস্থিত অবস্থায় ১৯৮১ এর ১৬’ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত শেখ মুজিবুর রহমানের জৈষ্ঠ্য কন্যা শেখ হাসিনা ওয়াজেদকে নিজে উদ্যোগ নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭’মে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন।

২/ শহীদ জিয়ার নির্দেশে ফেরত পাওয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে শেখ হাসিনা তার পরিবার নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। “জিয়া সরকারী আমলা ও ভারতে নিযুক্ত তৎকালীন হাইকমিশনার আবুল এহসানকে নির্দেশ দেন হাসিনাকে দেশে ফেরার জন্য অনুরোধ করতে। হাইকমিশনার তার (হাসিনা) সঙ্গে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন ফিরে আসলে তাকে হত্যা করা হবে। তখন জিয়া ফিরতি বার্তায় বলেন তিনি (জিয়া) যে নিরাপত্তা পান তাকেও তাই দেওয়া হবে”। ২৭’ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ তথ্যমন্ত্রী শামসুল হুদা চৌধুরী জানান, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে শেখ হাসিনা দেশে ফিরতে পারবেন। এ থেকে স্পষ্টভাবেই বোঝা যায়, নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ মিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল শেখ হাসিনাকে আগে জব্দ করা বাংলাদেশী পাসপোর্ট ইস্যু করতে। শহীদ জিয়া আরো সিদ্ধান্ত নেন, শেখ হাসিনা ফিরে এলে ঢাকায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত তার পিতার বাড়ি সমস্ত জিনিষপত্রসহ তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তিনি এ-ও বুঝতে পারেন, শেখ হাসিনা ততদিনে দেশে তার নিরাপত্তা সম্পর্কে আশ্বস্ত হয়েছেন। তবে জিয়ার জীবদ্দশায় ঐ বাড়ী ফিরিয়ে দেওয়া যায় নি। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার দুই সপ্তাহ পর জিয়া নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ১২’জুন ১৯৮১ হাসিনা তা ফিরে পান এবং আসবাবপত্র ও স্থায়ী দ্রব্যসামগ্রী, টাকা-পয়সা, অলংকারাদি, আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদিসহ অস্থাবর সম্পদের প্রাপ্তি স্বীকার করে কাগজপত্র সাক্ষর করেন।

৩/ শেখ হাসিনা নয়া দিল্লি থেকে ঢাকা রওনার আগে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রয়োজন হলে ভারতের কাছ থেকে সাহায্য নেবেন। ২৯’মে ১৯৮১ সিলেটে মাদ্রাসা ময়দানে এক জনসভায় তিনি পুনরায় বলেন, বাকশাল ও দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়নের জন্য তিনি তার জীবন উৎসর্গ করবেন। শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য জিয়ার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কোনো প্রমাণ ব্যতিরেকেই শেখ হাসিনা শহীদ জিয়াকে তার পিতার হত্যাকারী হিসেবে প্রচার প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যান এবং তার দলীয় মানুষজনকেও ঐভাবে নির্দেশনা প্রদান করেন, যা এখনো অব্যাহত আছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে হাসিনার অবিরাম কুৎসা রটনা এবং আদালতে রুজু করা মামলাগুলো সবই সাজানো। এর কারণগুলোকে দুই পর্যায়ে ফেলা যায়। শহীদ জিয়াউর রহমান জীবিত এবং ক্ষমতাসীন থাকলে শেখ হাসিনার গদি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। দিল্লি থেকে ঢাকায় নেমে সেজন্যেই তিনি 'খুনী' ইত্যাদি অপবাদ প্রচার করে জিয়ার ব্যক্তিত্বে ঘুণ ধরানোর চেষ্টা শুরু করেন। সে চেষ্টা সফল হবার কোন সম্ভাবনা ছিল না। দেশী-বিদেশী সামরিক ষড়যন্ত্রে প্রেসিডেন্ট জিয়া খুন হওয়ায় হাসিনা আশার আলো দেখতে শুরু করেন। কিন্তু জিয়ার গৃহবধূ বিধবা স্ত্রী খালেদা যে এমন প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়াবেন সেটা শেখ হাসিনা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা শুরু করেন সেই কারণে। এক-এগারো'র ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই খালেদা জিয়া ও তাঁর সন্তানদের বিরুদ্ধে দূর্নীতির মামলাগুলোর সাজানোর কারণ সম্বন্ধে খুব বেশী লোকের সন্দেহ ছিল না। বিরোধীদের বিরুদ্ধে দূর্নীতির কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে তার আড়ালে নিজেরা পর্বত-প্রমাণ দূর্নীতি করার পরিকল্পনা সম্ভবত আগেই থেকেই তৈরি হয়েছিল- তা এখন জনগনের কাছে সত্য বলেই প্রতিভাত হচ্ছে।

৪/ ১৫ আগষ্টের ঘটনাবলির পেছনে শহীদ জিয়ার ষড়যন্ত্র আছে- এমন অভিযোগ প্রতিনিয়ত শেখ হাসিনা ও তার বংশবদরা করেই যাচ্ছে। এই অভিযোগ কতোটা অনুমাননির্ভর এবং কতটা যৌক্তিক, এ নিয়ে বিরোধীদের মুখরোচক আলোচনা থাকলেও এবিষয়ে তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এটা ঠিক যে পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের ফলে জিয়া সেনাপ্রধান হতে পেরেছিলেন। শেখ মুজিব নিহত না হলে জিয়ার উত্থান হতো না, এটা প্রায় নিশ্চিতভাবে বলা চলে। কিন্তু এটা ঠিক যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে সফিউল্লাহ নন, জিয়াই হতেন সেনাপ্রধান। একজন পেশাদার সেনা কর্মকর্তা হিসেবে তিনি তাঁর বাহিনীর চূড়ায় আরোহণের স্বপ্ন দেখতেই পারেন। একটা নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়ার ভূরি ভূরি উদাহরণ আছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এধরনের কোনো পরিকল্পনা করেছিলেন কি না, তা এখনো কেউই যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।

৫/ ইংল্যান্ডের জাতীয় কবি শেকসপিয়ারের ‘হ্যামলেট' নাটকের এক জায়গায় আছে, কল্পনা প্রবল হয় দূর্বল শরীরে। শেখ হাসিনা সম্বন্ধে প্রায়ই মনে হয়, বাবা-মার শোকস্মৃতি মনে হলেই তার কল্পনা প্রবল হয়, তখন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জিয়াউর রহমানের পরিবারের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ ম্যানুফ্যাকচার করতে শুরু করেন। শহীদ জিয়ার সাথে শেখ হাসিনার তুলনা করার প্রশ্নই ওঠে না। বস্তুত দুজনের নাম এক দমে উচ্চারিত হওয়াও উচিত নয়। কিন্তু যে অন্ধ রৌদ্রস্নাত দিন দেখেনি ঘুরঘুট্টি অমানিশার বিভীষিকা সে বুঝবে কি করে? শহীদ জিয়ার চিন্তা ও আদর্শের কথা চিন্তা করলেই বুঝতে পারি শেখ হাসিনা দেশটাকে সর্বনাশের দিকে কতোখানি নিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনা আধুনিক চাণক্যের ইশারায় নিজের দেশকে পরের হাতে তুলে দেবার মতলবে দেশে হিংসা-বিদ্বেষ ও ভেদাভেদ সৃষ্টি করে চলেছেন, জাতীয় ঐক্য অসম্ভব করে তুলেছেন। গভীর এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র করে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিলো। কিন্তু অনেক দুঃখ ভুগে ভুগে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে শহীদ জিয়ার আদর্শ ক্রমেই বেশী ভাস্বর হয়ে উঠছে। বিচার করার সময় যখন আসবে ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় সেদিন সারা বিশ্বের জানা হয়ে যাবে।

শাকিলা ফারজানা

25/10/2019

ধর্মগুলোর উৎপত্তি মূলত মানবজাতির কল্যাণে। কিন্তু পরবর্তিকালে ধর্মগুলো এমন সব মানুষের হাতে পড়েছে যারা ধর্মকে ব্যবহার করেছে ক্ষমতার সিঁড়ি হিসাবে। ফলে ধর্মকে ব্যবহার করেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অধর্মের কাজগুলো হয়েছে।

উপমহাদেশের কোন ধর্মীয় হানাহানিই রাজনীতি নিরপেক্ষ ছিল না। সবগুলো হানাহানিতে বারুদের কাজ করেছে রাজনীতি, ক্ষমতায় যাবার লোভ। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ধর্মীয় হানাহানিকেও রাজনীতি নিরপেক্ষভাবে বিচার করার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশের ক্ষমতায় এখণ এমন একটি দল আছে যারা যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চায়।এজন্য তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ধর্মীয় সম্প্রিতীকে মাটিতে লুটিয়ে দেবার চেষ্টা করেছে। প্রয়োজনে যদি দেশের প্রতিটা বিরুদ্ধ মতের মানুষকে হত্যা করতে হয় তবু তারা ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে যাবে। হত্যাই এদের সাফল্যের মূল ভিত্তি। সুতরাং রামুর সহিংসতা বলেন আর দুর্গার প্রতিমা ভাংগা বলেন কিংবা হোসনি দালানের বোমা হামলার কথাই বলেন না কেনো এই সরকারের থিংকট্যাংক কাউকে রিমাণ্ডে নিলেই বের হবে আসল তথ্য।

একটি দল যখন বিদেশী গোয়েন্দাবাহিনীর প্রেসক্রিপশনে চলে তখণ সেই দলটা আর দল থাকে না। তাদের স্বাধীণ কোন চিন্তা থাকে না। তারা হয়ে যায় একটা গেমের মত। যেখানে প্রোগ্রামারের ইচ্ছার বাইরে কিছু করার সুযোগ থাকে না। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা সেই বিদেশী গোয়েন্দা বাহিনীরই কাজ ছিল। পাবলিক সেন্টিমেন্ট দলের পক্ষে নিয়ে আসার জন্য, বর্তমানের ধ্বসে যাওয়া গণভিত্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সেই গোয়েন্দা বিভাগ ২১ আগস্টের চেয়ে বড় ধরনের আত্মঘাতি হামলার পরিকল্পনা করে চলেছে। সেই ঘটনার পূর্ব ঘটনা হিসেবেই এই সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তাদের নির্দেশনায় ঘটানো হচ্ছে। যেভাবে ২১ আগস্টের আগেও বেশ কিছু সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছিলো। আপনারা নিশ্চিত থাকেন যদি সরকার একটা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় তাহলে ২১ আগস্টের চেয়ে বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটিয়ে, কয়েকটি বৃদ্ধ নেতাকে বলির পাঠা বানিয়ে, পাবলিক সেন্টিমেন্ট নিজেদের দিকে নিয়ে আসার একটা শেষ চেষ্টা করবে। এই বিদেশী হত্যা, প্রতিমা ভাংগা, হোসনী দালানে হামলা কোনটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়- সবগুলোই সেই মহা হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য ঘটানো হচ্ছে।

সুতরাং আপনার চিন্তাকে একটু শানিত করেন। কোন দিকে যাচ্ছে আপনার চিন্তা সেটা ভাবেন। আপনি সরকার নির্দেশিত পন্থায় ভাবছেন নাকি স্বাধীন ভাবে ভাবতে পারছেন সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশী গোয়েন্দা বাহিনীকে আপনার চিন্তা জগত নিয়ন্ত্রণ করতে দিয়েন না। স্বাধীণ ভাবে ভাবেন। ঘটনাগুলার মোটিভ বোঝার চেষ্টা করেন। তারপর সেই বিষয়গুলা পাবলিকের সাথে শেয়ার করেন। আমরা এখনো গণমাধ্যম দ্বারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত জাতি নই। আমরা এখনো এই সব আলু কচু মার্কা গণমাধ্যমের ভুয়া এজেন্ডা সেটিংকে বাতিল করে দিয়ে নিজেদের মত করে ঘটনার ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। সুতরাং এত তাড়াতাড়ি হতাশ হবার কিছু নাই। নিজের সিমীত সামর্থ্যকে কাজে লাগান।

মানুষকে সচেতন রাখাই এই মুহূর্তের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কাজ

দিপ্র হাসান
(২৫.১০.২০১৫)

বীর প্রতীক তারামন বিবি মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব খেতাব পেয়েছিলেন ১৯৭৩ সালে। কিন্তু তিনি তখন তা জানতে পারেননি যে দেশ তাকে বীরত...
25/10/2019

বীর প্রতীক তারামন বিবি মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব খেতাব পেয়েছিলেন ১৯৭৩ সালে। কিন্তু তিনি তখন তা জানতে পারেননি যে দেশ তাকে বীরত্বের খেতাব দিয়েছে। সেটা তিনি জানতে পারেন যখন ১৯৯৫ সালে গবেষক বিমল কান্তি দে তাঁকে খুঁজে বের করেন। সেই সময় তারামন বিবি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকছিলেন।

এই অবহেলিত বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় ১​​৯৯৫ এর ১৯শে ডিসেম্বরে পদক ঝুলিয়ে দিয়ে তাকে রাষ্ট্রীয় সন্মানে ভূষিত করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সেইসময় তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাও হয়।

তারামন বিবির পদক রাখা ছিলো মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। উনারা চিঠি দিয়ে একটা সত্যায়িত ছবি দিয়ে তারামন বিবিকে পদকটা নিয়ে যেতে বলেছিলো। সম্মিলিত নারী সমাজ দাবী করে যে এই পদক সরকার প্রধানের হাত দিয়েই দেয়া উচিত। সন্মিলিত নারী সমাজের দাবীকে সন্মান জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়া তারামন বিবিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এনে তাঁর গলায় পদক পরিয়ে দেন।

এর আগে ১৯৯২ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পরপরই মুক্তিযুদ্ধ্বে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণের জন্যে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ অনুষ্ঠান করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজে পদক দিয়েছেন।

সেই বেগম খালেদা জিয়া আজ বন্দী। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়ে তিনি এক নির্জন কারাগারে প্রবীণ বয়সে কাল কাটাচ্ছেন। এমনকি তার বয়স বিবেচনায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পরও তাঁকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়নি।

25/10/2019

১৯৭১ , জেড ফোর্সের মুক্তিযুদ্ধ : জিয়া-শাফায়াত-মইন-আমিনুলদের যুদ্ধ দিনের গল্প জানুন ছবি আর বর্ননায়

জেড ফোর্স
মুক্তিযুদ্ধের বিখ্যাত ১ম নিয়মিত পদাতিক ব্রিগেড
ব্রিগেড কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের নামের আদ্যাক্ষর জেড দিয়ে যেটি নামাংকিত.........

অমর বীরত্ব বিচ্ছুরিত আর আত্নত্যাগ মহিম যেই ফোর্সটির যুদ্ধনামচায় কালের অমোচনীয় কালিতে লেখা রয়েছে কামালপুর বিওপি ,বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট আর নকশী অভিযানের মত বিখ্যাত সব যুদ্ধের রোমাঞ্চগাথা.......

১৯৭১ রৌমারি মুক্তাঞ্চলের স্মৃতির দেরাজে যেই ফোর্সটি ঘুমিয়ে আছে......

চিলমারী, ছাতক , কোদালকাটি , বকশীগজ্ঞ , গোয়াইনঘাট , টেংরাটিলা , বড়লেখার সময় তটে ছাপচিহ্ন রেখে গেছে যে বাহিনীটির স্বাধীনতা ক্ষুধার্ত যোদ্ধারা.........

আসুন সেই যুদ্ধ নামচার পাতা ওল্টাই , স্মৃতির দেরাজ খুলে জাগিয়ে তুলি সেইসব ফেলে আসা দিনকে , জমে থাকা ধুলো সরিয়ে দেই যুদ্ধ ময়দানের সময় তটে............

১ম সপ্তাহ , জুন , ১৯৭১............
কলকাতায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত হলো :
নিয়মিত পদাতিক একটি ব্রিগেড তৈরি করা হবে প্রতিরোধ যুদ্ধকে জোরদার করার জন্য.........
উদ্দেশ্য – হিট অ্যান্ড রান গেরিলা ট্যাকটিকসের বদলে সুসংহত নিয়মিত বাহিনীর মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সরাসরি যুদ্ধে মোকাবেলা করা........
আর সে লক্ষ্যেই মেজর জিয়াউর রহমান এর উপর ন্যস্ত করা হয় ব্রিগেডটির অধিনায়কত্ব......

জুন ১০ তারিখে বৃহত্তর চট্রগ্রামের ১নং সেক্টরের অধিনায়কত্ব ক্যাপ্টেন রফিকের হাতে দিয়ে জিয়া চলে আসেন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তি ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের পাদদেশে ঘন গহীন জংগলে তেলঢালায়.......
চারদিকে ছোট ছোট পাহাড়ে ঘেরা সাপ , বাঘ আর বুনো শুয়োরের আস্তানা শ্বাপদ সংকুল এই জংগলটিতেই স্থাপিত হয়েছিলো জেড ফোর্সের হেডকোয়ার্টার....

জিয়ার সংগে ছিলেন ক্যাপ্টেন অলি আহমেদ এবং ক্যাপ্টেন সাদেক।
জিয়া আগে ভাগে চলে আসলেও রেখে এসেছিলেন তার ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের অনেক সৈনিককে......
কিছুদিনের মধ্যে মেজর এ জে এম আমিনুল হক চট্রগ্রামের রামগড় থেকে ৮ম বেঙ্গলের বাকি সব সৈন্যকে নিয়ে হাজির হন তেলঢালায়......
কাছাকাছি সময়ে জুন ২৫ এর আগেই ক্যাপ্টেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বর্তমানে ভোলা বিএনপির রাজনীতিবিদ) বনগাঁ থেকে ১ম বেঙ্গলকে নিয়ে যোগ দেন তেলঢালায়......
তবে তার আগে জুন ১৭ তারিখে মেজর শাফায়াত জামিল তার ৩য় বেঙ্গলের ১১০০ সৈন্য নিয়ে তেলঢালায় জেড ফোর্স হেড কোয়াটারে যোগ দেন ভারতের পশ্চিম দিনাজপুরের রায়গঞ্জ জংশন থেকে।

১৩ ই জুন কলকাতায় ৮ নং থিয়েটার রোর্ডে কর্নেল ওসমানীর সাথে দেখা করেন মেজর মইনুল হোসেন এবং ওসমানিকে অভিমত জানান যে সরাসরি সেট পিস যুদ্ধে যাওয়ার মত ট্রেইন্ড যোদ্ধা এবং পর্যাপ্ত যুদ্ধ উপকরণ এখন বেঙ্গল রেজিমেন্ট গুলোর কারো নেই.........
ওসমানি তার সংগে একমত হননি এবং জেড ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।
ওসমানির নির্দেশ মোতাবেক মেজর মইন কলকাতা থেকে আসামের গৌহাটি হয়ে তেলঢালায় এসে যোগ দেন জেড ফোর্সে...

২০ জুন আনুষ্ঠানিক নিয়োগ সম্পন্ন হয় ব্রিগেড অধিনায়কত্বেরঃ
ব্রিগেড কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমান.........

১ম, ৩য় এবং ৮ম ই বেঙ্গল – এই ৩ টি রেজিমেন্টকে ইন্টেগ্রেট করেই গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের বিখ্যাত প্রথম ব্রিগেড জেড ফোর্স...........

জেড ফোর্স অরগানোগ্রাম , ১৯৭১ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ

২৫ শে জুনের মধ্যে জেড ফোর্স বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর ১ম পদাতিক ব্রিগেড হিসেবে সুসংগঠিত হয়।
৭ ই জুলাই প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করে ১ম নিয়মিত পদাতিক বেংগল ব্রিগেডটিকে , সেপ্টেম্বরের শুরুতে যেটির নামকরন হয়"জেড ফোর্স"............

জুনের ২৫ তারিখ থেকেই শুরু হলো জেড ফোর্সের যুদ্ধ প্রশিক্ষন.....
জুলাই ২৮ তারিখ পর্যন্ত সেটি চলতে থাকে দুর্গম প্রতিকুল এক পরিবেশে যেমনটা জানা যায় ৩য় বেংগল সিও মেজর শাফায়াত জামিলের কাছ থেকে:

২৮ শে জুলাই পর্যন্ত তেলঢালায় সর্বাত্নক যুদ্ধের ট্রেনিং চলতে থাকে। প্রায় সারাদিন ট্রেনিং চলে। রাতে প্রচন্ড মশার কামড় আর শুয়োর , সাপ ইত্যাদির উৎপাতে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলো আমাদের। বাংলাদেশের ভেতরে ঢোকার জন্য মনে মনে সবাই অস্থির হয়ে উঠছিলাম.......
১/ পাতা ৫৮

এ প্রসংগে ১ম বেংগল সিও মেজর মইন যেটি বলেছেন :

আমরা ছিলাম এক গহিন জংগলে যেখানে খাবার এবং রসদ সরবরাহ ছিলো অত্যন্ত দুরূহ। আমাদের অব্স্থান থেকে সবচাইতে নিকটবর্তী শহর ছিলো 'তুরা' যার দুরত্ব ছিলো প্রায় ৩০ কিলোমিটার।নিকটবর্তী গ্রামান্চ্ঞল ছিলো আমাদের খাদ্যক্রয়ের স্থান।অন্যান্য রসদপত্র ও সামগ্রী তুরা শহর থেকে সংগ্রহ করা হতো। এই অন্চ্ঞলে ভারতীয় 101 Communication Zone কমান্ড করতেন মেজর জেনারেল গুলবত সিং গিল................... সমস্ত বাধা বিপত্তির মধ্যেও গারো পাহাড়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আমরা প্রশিক্ষন পূর্ন উদ্যমে চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
২/পাতা ১৬৭

প্রসংগত জানাতে হয় : তেলঢালার দুর্গম পরিবেশে যে প্রতিকুলতা আর অসহনীয়তা মোকাবেলা করতে হয়েছে জেড ফোর্সকে তার কানাকড়িও সইতে হয়নি ত্রিপুরার মেলাঘরে অবস্থানরত খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং ক্যাম্পটিকে...........
এমনকি অধিকাংশ সেক্টর কমান্ডারদের হেড কোয়ার্টার ছিলো সীমান্তবর্তি শহর গুলোতে.........

গুগল ম্যাপসে গিয়েই দেখে আসতে পারেন গারো পাহাড়টিকে :
ডানদিকের স্যাটেলাইট অপশনটিতে ক্লিক করুন
জায়গাটি এখনো আগের মতই দুর্গম রয়ে গেছে

যাইহোক , এবার যুদ্ধের গল্পে ফিরি.........

২৮ শে জুলাই ট্রেনিং শেষ হওয়ার পর জিয়া সিদ্ধান্ত নিলেন ৩ টি বিপদজনক অপারেশনের যার প্রতিটি ছিলো স্ট্রাটেজিকালী সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ন ৩ টি পজিশনে.........
যে যুদ্ধ গুলোর প্রতিটিতে ডাই হার্ড স্ট্যামিনা আর ডু অর ডাই আত্নপ্রতিজ্ঞার পরিচয় দিতে হয়েছিলো জেড ফোর্স যোদ্ধাদের..........

১ম টি ছিলো কামালপুর যুদ্ধ...........................

জুলাইয়ের ৩য় সপ্তাহে ১ম বেংগল ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেজর মইনুল হোসেন কে জিয়াউর রহমান জানালেন কামালপুর বিওপি তে হিট করতে হবে। মেজর মইন রাজী ছিলেননা। তার মতে কামালপুরের মত যথেষ্ট শক্তিশালী পাকিস্তানী ঘাটিতে সেটপিস যুদ্ধের মাধ্যমে আক্রমন করার সক্ষমতা জেড ফোর্সের নেই বা তার ব্যাটালিয়নের নেই।মেজর মইনের প্ল্যান ছিলো হিট অ্যান্ড রান গেরিলা পদ্ধতিতে পাকিস্তান ফোর্সকে দুর্বল এবং নাজেহাল করা।
কিন্তু জিয়া সিদ্ধান্ত পাল্টালেননা। এর মূল কারন হাইকমান্ডের নির্দেশ এবং ঘাঁটিটির স্ট্রাটেজিক গুরুত্ব।

মূলত জামালপুর , টাংগাইল এবং ঢাকার সংযোগ সড়কটির উপর ছিলো কামালপুর বিওপি.........
তাই ঢাকা অভিমুখে অগ্রসর হতে হলে কামালপুর বিওপি অবশ্যই দখল করতে হবে। কামালপুর বর্ডার আউটপোস্টটির অবস্থান দেখে নিতে পারেন এখানে : ইমেজ

এটি এতই শক্তিশালী ঘাঁটি যে এই ঘাঁটিতে সর্বমোট ৪ বার নিয়মিত বাহিনী পর্যায়ে সরাসরি সেটপিস যুদ্ধ হয়েছে.....
৩১ জুলাই/২২ অক্টোবর/১৪ নভেম্বর/২৪ নভেম্বর - ৪ডিসেম্বর
হিট অ্যান্ড রান হয়েছে মোট ২০ বার !
প্রথম গেরিলা হিট টি হয়েছিলো ১২ জুন ।
এখানেই ১৪ নভেম্বরের যুদ্ধে মর্টার শেলের আঘাতে পা হারিয়েছেন মেজর তাহের বীরউত্তম........
পুরো মুক্তিযুদ্ধে কামালপুর অভিযানে সর্বমোট ১৯৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন , আহত হয়েছেন অসংখ্য , অন্যদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর আইয়ুব সহ ২২০ জন সেনা নিহত হয়েছেন

বীরউত্তম থেকে বীর প্রতীক মিলিয়ে সর্বমোট ২৯ জন মুক্তিযোদ্ধা সাহসীকতা পদক পেয়েছেন কেবল কামালপুর যুদ্ধের জন্যই , মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এমন উদাহরন আর একটিও নেই..............

এতকিছুর পরও ডিসেম্বরের ৪ তারিখের আগে কামালপুর দখলে আসেনি!
সুতরাং ৩১ শে জুলাই জিয়ার নির্দেশে ১ম যে সেটপিস হিটটি হয়েছিলো রীতিমত "বাঘের ডেরায়" সেটি ছিলো অজানা ভয় , দুঃসাহসিকতা আর রোমান্চ্ঞ মিশ্রিত তা বলার অপেক্ষা রাখেনা.........

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওয়ার ম্যাপে বৃহত্তর টাংগাইল এবং ময়মনসিংহের দায়িত্বে ছিল মেজর জেনারেল জামশেদের ৩৬ অ্যাডহক ডিভিশন। ১৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলাকাটিতে ২ টি রাস্তা ছিলো ঢাকার দিকে মুক্তিবাহিনীর অগ্রসর হওয়ার। একটি হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ হয়ে , অন্যটি কামালপুর-জামালপুর দিয়ে।এটি আটকানোর দায়িত্বে ছিলো ব্রিগেডিয়ার কাদিরের পাক আর্মির ৯৩ ব্রিগেড- যার দুটি রেজিমেন্ট যথাক্রমে : ৩৩ পান্জ্ঞাব এবং ৩১ বালুচ।

৩৩ পান্জ্ঞাব অবস্থান নিয়েছিলো হালুয়াঘাটে আর ৩১ বালুচ অবস্থান নিয়েছিলো কামালপুর, নকশী আর বারোমারিতে। কামালপুরে ৩১ বালুচের সাথে ছিলো ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্স আর আর ১ প্লাটুন রাজাকার। কামালপুর বিওপির সিও ছিলো ক্যাপটেন আহসান মালিক। প্রচুর শক্তিশালী অস্ত্র আর গোলাবারুদের পাশাপাশি ৮১ মি.মি. ৩ টি মর্টার ছিলো কামালপুর বিওপিতে।
৩/ পাতা ১৮১-১৮২

অন্যদিকে মেজর মইনের ১ম বেংগল ব্যাটালিয়নে সৈন্য ছিলো সর্বসাকুল্যে ৮৫০ জন। ৩১ জুলাই রাত ৩ টায় এই যুদ্ধ শুরু হয়। জেড ফোর্সের ১ম সম্মুখ সমর কামালপুর অপারেশনে জিয়াউর রহমান নিজে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধ সমন্বয় করার জন্য।
রাত ৩:০০ এর দিকে জিয়া এবং মেজর মইন ১ম বেংগল ব্যাটালিয়ন নিয়ে পাকিস্তান আর্মির ঘাঁটি থেকে প্রায় ১১০০-১২০০ গজ দুরে অবস্থান নেন।
সেদিনরাতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো।
পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক :

১. ক্যাপটেন মাহবুব শত্রু ঘাঁটির পেছনে অবস্থান নিলেন তার কোম্পানিসহ
২.ক্যাপ্টেন হাফিজ ও ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন ৬০০ গজ ইনসাইড এনিমি লাইন অগ্রসর হয়ে পাটক্ষেতে অবস্থান নিলেন
৩.মেজর মইন তার ওয়ারলেস অপারেটর এবং ফ্লা: লে: লিয়াকত সহ পাটক্ষেতে অবস্থান নিলেন
৪.টিলায় মেজর জিয়া হাল্কা কামান ও হেভী মেশিনগান সহ অবস্থান নিলেন
৫. কাট অফ পার্টি হিসেবে একটি বাহিনী কামালপুর-বকশীগন্জ্ঞ সড়কে মাইন পুতে রেখে কামালপুর-শ্রীবর্দি জংশন এবং উঠানীপাড়ায় অবস্থান নেন যাতে বকশীগন্জ্ঞ থেকে হঠাৎ কোন পাকিস্তানী রিইনফোর্সমেন্ট ৩১ জুলাই রাতে কামালপুরে আসতে না পারে।

জিয়ার অবস্থান থেকে কামানের গোলা বর্ষনের মাধ্যমেই যুদ্ধ শুরু হয়। রাত সাড়ে ৩ টায় ক্যাপটেন সালাউদ্দিন মমতাজ তার ২ প্লাটুন সৈন্য নিয়ে শত্রুঘাঁটিতে ঢুকে পড়েন। সেখানে তিনি বিওপির একদম কাছে গিয়ে মেগা ফোনে পাকিস্তানীদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন :
আভি তক ওয়াক্ত হ্যায় , শালালোক সারেন্ডার করো , নেহিত জিন্দা নেহী ছোড়েঙ্গা

সালাউদ্দিন মমতাজের অসীম সাহসে আর তার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমনে পাকিস্তানীদের ১ম ডিফেন্স কর্ডন শেল প্রুফ বাংকারে ঢুকে পড়ে।
এ সময় সালাউদ্দিন মমতাজ আরও সাহসী হয়ে উঠে ২০-২৫ জনকে নিয়ে বিওপির কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকে পড়েন। দাড়িয়ে দাড়িয়েই তিনি কমান্ড করছিলেন। তার সহযোদ্ধারা তাকে নিরাপদ পজিশন নিতে বলেও লাভ হয়নি। হঠাৎ ই মেশিন গানের গুলি এসে ঢোকে তার মাথায়। মর্টারের গোলাও এসে পড়ে পাশে।
লুটিয়ে পড়েন এই "বীরউত্তম"...............
স্বাধীনতার সোনালী রোদের স্পর্শ তার পাওয়া হলোনা আর........
এক পর্যায়ে সেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের পরিবর্তে হাতাহাতি আর বেয়নেট দিয়ে যুদ্ধ হয় বাংকারের ভেতরে।

শহীদ বীরউত্তম ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ

সালাউদ্দিন মমতাজ নিহত হবার খবর জানতে পেরে মেজর মইন ওয়ারলেসে ক্যাপ্টেন মাহবুবকে কমান্ড করেন পেছন থেকে আক্রমনের জন্য। কিন্তু ক্যাপ্টেন মাহবুবের সাড়া না পেয়ে তিনি ঝোপ ঝাড় গাছের আড়াল থেকে খোলা জায়গায় চলে আসেন যাতে ওয়ারলেস ভালোভাবে কাজ করতে পারে। দুর্ভাগ্য- সাথে সাথেই একঝাক মেশিনগানের গুলি এসে তার ওয়ারলেস অপারেটর শহীদ হন।এ সময় তার ওয়ারলেস সেটটিও অকেজো হয়ে যায়। মেজর মইন হতভম্ব হয়ে এসময় চিৎকার করে নির্দেশ দিতে থাকেন। খুব দ্রুত ভোরের আলো ফুটে ওঠে। এসময় তারা দেখতে পান চারদিকে হতাহতের ছড়াছড়ি। ক্যাপটেন হাফিজ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে আছেন। লে: মান্নানও আহত হয়েছিলেন।জিয়া এসময় উদ্ধারকাজে যোগ দেন। গোলাগুলি চলা অবস্থাতেই জিয়া , মইন , লিয়াকতরা মিলে হাফিজ , মান্নান সহ অন্য আহত যোদ্ধাদের উদ্ধার করে পিছু হটেন।

অন্যদিকে ২ টি ১২০ মি. মি. মর্টার আর বেশকিছু সেনা সহ বকশীগন্জ্ঞ থেকে কামালপুরের দিকে আসতে থাকা ৩ টি লরী উড়ে যায় কাট অফ পার্টির পুতে রাখা মাইনে। তাদের অ্যামবুশে ১০ জন পাকসেনা নিহত এবং ১০-১১ জন আহত হয়। ১ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন , ২/৩ জন আহত হন।

এ যুদ্ধে মোট ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন আর আহত হন ৫৭ জন যা মোটামুটি ১ম বেংগলের এক দশমাংশ........
কামালপুরের সেই যুদ্ধ ৩১ বালুচ রেজিমেন্টের জন্য ছিলো নাইটমেয়ার।
তারা ধারনাই করতে পারেনি যে নাতিদীর্ঘ প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদেরকে নিয়ে জেড ফোর্স এত শক্ত কামড় দিতে পারে।

ক্যাপ্টেন হাফিজউদ্দিন আহমেদ স্বাধীনতার দলিল পত্রের ১০ম খন্ডে জানিয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন পাকিস্তানী সেনা নিহত হয়েছিলো সে যুদ্ধে

শাফায়াত এবং মইন দুজনেই বলেছেন - টানা ৩ দিন পাকিস্তান আর্মির হেলিকপ্টার ঢাকা থেকে কামালপুর আসা যাওয়া করেছে কেবল পাকিস্তান আর্মির লাশ আর আহতদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

যুদ্ধের পর জেনারেল মানেকশ হেলিকপ্টারে করে জেড ফোর্স হেড কোয়ার্টারে আসেন আর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন :
" জেড ফোর্স শোড আপ রিয়াল টাইগার ক্যারেক্টার ! "
এমনকি এটাও বলেন যে তার ধারনাতেও ছিলোনা যে জেড ফোর্স এমন অপারেশনের সাহস রাখে.......

শহীদ সালাউদ্দিন মমতাজ স্মরনে কামালপুরে স্বাধীনতা সৌধ

৩১ বালুচ রেজিমেন্টকে এমন একটি আতংক সর্বোচ্চ দুঃস্বপ্ন উপহার দেয়ার পরও এ যু্দ্ধে হেরে যাবার কারন মূলত ৪ টি :

[১]
২৮ জুলাই সন্ধ্যায় রেকী করার সময় ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ , লে: মান্নান , সুবেদার আবদুল হাই , সুবেদার হাশেম , নায়েক শফি ভুলে কামালপুর বিওপির অবজার্ভেশন পোস্টে ঢুকে পড়েন এবং ২ জন পাকিস্তানী সেনার সামনে পড়ে যান। ২ জনকেই মেরে ফেললেও সেটাই বিপদ বাড়িয়ে দেয়। ৩১ বালুচ সতর্ক হয়ে যায়। এর জের ধরে ২৯ জুলাই স্বয়ং লে: জে: নিয়াজী কামালপুরে আসেন।বলাই বাহুল্য এর ফলে তারা সেনাসংখ্যা এবং গোলাবারুদ প্রচুর বাড়িয়েছিলো যা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মেজর মইন তীব্রভাবে টের পান।
[২]
ভারতীয় সেনাবাহিনী যে ওয়ারলেস সেট গুলো দিয়েছিলো জেড ফোর্সকে সেগুলো নিম্নমানের এবং ত্রুটিপূর্ন ছিলো বলে মেজর মইন জেনারেল মানেকশ কে অভিযোগ করেছিলেন। মেজর মইনের মতে ক্যাপ্টেন মাহবুবকে সময় মত ওয়ারলেসে কমান্ড করতে পারলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হতো এবং শত্রুপক্ষের ক্যাসুয়ালটি আরো বেশী হতো। অতি দরকারের সময় ওয়ারলেস কাজ না করা ছিলো খাঁড়ার উপর মড়ার ঘা।
[৩]
যুদ্ধের সেই সময়টায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো এবং আগের কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় পাটক্ষেতে ১ ফুট পানি জমে গিয়েছিলো। এ ধরনের যুদ্ধে ক্রলিং এবং কুইক মুভের যে প্রয়োজন হয় তার বিপরীতে এই ব্যাপারটাকে "ক্রুশাল লুজিং ফ্যাক্টর" হিসেবে বিবেচনা করেছেন মেজর মইন।
[৪]
কামালপুর যুদ্ধে ঘোর অন্ধকার আর মুষলধারে বৃষ্টির কারনে যু্দ্ধ প্রায় মিনিট ৩০ দেরীতে শুরু হয়। কিন্তু এদিকে জেড ফোর্সের প্রিএইচ আওয়ার বোমা গুলোও বিস্ফোরিত হতে থাকে । ফলে নিজেদের বোমাতেও ১ম বেংগল ধরাশায়ী হয়েছিলো সে রাতে।

কামালপুর যু্দ্ধের আহত-শ্রান্ত যোদ্ধাদের নিয়ে ফিরে আসলেন জিয়া এবং মইন।সেদিন ৩১ শে জুলাইতেই জিয়া মেজর শাফায়াত জামিলকে ৩য় বেংগল সহ পাঠান জেড ফোর্সের ২য় অপারেশনে........

এটিই ছিলো বাহাদুরাবাদ ফেরীঘাটের যুদ্ধ......................

ফুল রেসোলিউশন ইমেজ
১৯৭১ , জুলাই ৩১ , দুপুরবেলা যাত্রা শুরু করেন ৩য় বেঙ্গলের সৈন্যরা। বাম থেকে ৪র্থ কমান্ডার শাফায়েত জামিল,৫ম লেঃ নুরুন্নবী, ৭ম সুবেদার হাফিজ এবং তার পেছনে ক্যাপ্টেন আনোয়ার। লক্ষ্য বাহাদুরাবাদ ফেরীঘাট।

কামালপুরের শাহ কামাল (রাঃ) এর মাজারের পাশ দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকেন শাফায়াত জামিল। এর পর ৩ টি ছোট বড় নদী আর কাদাপানিতে হেঁটে প্রায় ২৫ মাইল পেরিয়ে সবুজপুরে পৌছান। সেখান থেকে ১২ টি নৌকায় অপারেশন জোনে পৌছান।

ব্রহ্মপুত্র আর যমুনার সাথে যেখানে তিস্তা এসে মিশেছে তার বিপরীতে ব্রহ্মপুত্রের পুর্বপারে বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট যেখান থেকে চিলমারি বন্দর , কুড়িগ্রাম , উত্তরবঙ্গ আর ব্রহ্মপুত্রের ২ পাড়ে মুক্তিযোদ্ধা ঘাঁটিগুলোকে নিয়ন্ত্রন করা যায়।

১ লা আগস্ট ভোর রাত ৫টায় লেঃ নুরুন্নবির ডেল্টা কোম্পানি ১ম হিট করে। ডেল্টা কোম্পানিকে ব্যাকআপ দেয় লেঃ আনোয়ারের আলফা কোম্পানি। আক্রমনে ছিল মর্টার প্লাটুন আর স্বয়ং শাফায়াত জামিল তার ব্যাটালিয়ন হেডকোয়াটার নিয়ে অপারেশন ফ্রন্টে ছিলেন।

৩০ মিনিটের সেইযুদ্ধে ৩ টি বার্জ , ২ টি শান্টিং ইঞ্জিন ধ্বংস করা হল আর ২ টি বগিতে হেভী মেশিন গানের ব্রাশ ফায়ার করে বেশকিছু পাকসেনা আহত নিহত করা হল। এর ফলে বাহাদুরাবাদ ঘাট ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয় আর উত্তরবঙ্গের সাথে বাহাদুরাবাদ রেলরাউট ক্লোজ হয়ে যায়।
এই অপারেশনে জেতার পর ৩য় বেঙ্গল দেওয়ানগঞ্জ ষ্টেশন এবং সুগারমিল রেস্ট হাউজের পাকিস্তানি ঘাঁটিতে আক্রমণ করে সফল হন। পুরো অভিযানে সবুজপুরের মানুষ শাফায়াত জামিলের বাহিনীকে আপনজনের মত আতিথেয়তা দেয়। এর জের ধরে পরবর্তি সময়ে সবুজপুর গ্রামটিকে পাক বাহিনি প্রতিশোধ স্পৃহায় জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়, রক্তাক্ত ম্যাসাকার চালায়।

এরই মাঝে জেড ফোর্সের ৩য় অপারেশনে জিয়া আবার নিজে আবার সম্মুখ সমরে হাজির হন ৩ রা আগস্ট ভোর ৩ টা ৪৫ এ। অপারেশনটির দায়িত্ব ছিল ৮ম বেঙ্গলের উপর।

সেটি ছিলো নকশী বিওপির যুদ্ধ...........................

শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার এ যুদ্ধে পাকিস্তানিদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়।মুক্তিযোদ্ধারা রান অ্যান্ড ক্রল করে বিওপির ৫০ গজের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিলো। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনের তীব্রতায় পাকিস্তানী সেনারা বিওপি ছেড়ে পাশ্ববর্তী ক্ষেতে পালিয়েছিলো।এ যুদ্ধে হেরে যাবার মূল কারন পাকবাহিনীর প্রচণ্ড মর্টার আক্রমণ। পাকআর্মির পুতে রাখা মাইনও আরেকটি কারন। আক্রমণে ছিল ক্যাপ্টেন আমিন আহমেদের ব্রাভো কোম্পানি আর লেঃ মোদাসেরের ডেল্টা কোম্পানি।সুবেদার হাকিমের ইপিআর কোম্পানিটি ছিল কাট অফ পার্টি হিসেবে।ফায়ারিং কভার দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেজর আমিনুল হক।আর বিওপির পাশে শালবনে ফরোওয়ার্ড এরিয়া অ্যাসেম্বলী থেকে জিয়া ওয়ারলেস যোগাযোগের মাধ্যমে যুদ্ধ কোঅর্ডিনেট করছিলেন। সে যুদ্ধে মেশিনগানের গুলিতে ক্যাপ্টেন আমিন আহত হলে ব্রাভো কোম্পানি মনোবল হারায়। মোট ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা সে যুদ্ধে শহীদ হন।ক্যাপ্টেন আমিন আহমেদ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে থাকলে মেজর আমিনুল হক ২ জন এন্সিও আর জেসিওকে সংগে নিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করে হেভি মেশিনগানের ফায়ারিং এর ভেতর তাকে উদ্ধার করেন।

ফিরে আসি মেজর শাফায়াত জামিলের কাছে...............বাহাদুরাবাদ ঘাট আর দেওয়ানগঞ্জে যুদ্ধবিজয়ী ৩য় বেঙ্গল তেলঢালায় ফেরার পথে শাহ কামালের মাজারের পাশে একটি জিপ গাড়ীর পাশে মেজর জিয়াকে দুঃশ্চিন্তিত দেখতে পায়। ফিরতে দেরী দেখে জিয়া ধারনা করেছিলো ৩য় বেঙ্গল বাহাদুরাবাদ অপারেশনে হয়তো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। কিন্তু সাফায়াত জামিল দেওয়ানগঞ্জ অপারেশনের কথা জানিয়ে জিয়া কে বলেন এখন দেশের ভেতরে থেকে যুদ্ধ চালানো কোন ব্যাপারই না।
শুনে জিয়া হেসে ওঠেন , বলেনঃ
তাহলে তো একবার সবাইকে নিয়ে ভেতরে ঢুকতেই হয়

এখানেই শুরু হয় জেড ফোর্স আর রৌমারির গল্প......................

ফুল রেসোলিউশন ইমেজ
রৌমারি হাইস্কুলের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখছেন জেড ফোর্স অধিনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান

৬ ই আগস্ট ৩য় বেঙ্গলের লেঃ নুরুন্নবির ডেল্টা কোম্পানিকে রৌমারি মুক্তাঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়। এর আগে পাকিস্তানী বাহিনী ৪ ঠা আগস্ট চর কোদাল কাটি নামক রৌমারির নিকটবর্তি স্থান দখল করে নেয়। বাহাদুরাবাদ এবং দেওয়ানগঞ্জ অপারেশনে দুঃসাহসিক সাফল্যের জন্যই ডেল্টা কোম্পানিকে রৌমারি ডিফেন্সের দায়িত্ব দেন জিয়া সাফায়াত জামিলের সুপারিশ ক্রমে।

৮ ই আগস্ট ফোর্স কমান্ডার জিয়ার নির্দেশে লেঃ নুরুন্নবি রৌমারির স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে নগর কমিটি তৈরি করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের ১ম বেসামরিক প্রশাসন চালু করেন।

১১ ই আগস্ট মেজর জিয়া ভারতীয় মেজর জেনারেল গুলবত সিং গিলকে সংগে নিয়ে রৌমারি পরিদর্শনে আসেন তেলঢালা থেকে।

১৩ ই আগস্ট জিয়ার নির্দেশে লে: নুরুন্নবী রৌমারি হাইস্কুলে স্বাধীন বাংলাদেশের ১ম সেনানিবাস স্থাপন করেন। সেখানে সামরিক স্কুলও চালু করা হয় যেখান থেকে ১৮০০০-২০০০০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং নিয়েছে

ফুল রেসোলিউশন ইমেজ
অপারেশনে যাওয়ার আগে জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুতি তদারকি করছেন

সেসময় জিয়া আর শাফায়াত একসাথে ঘুরে বেড়াতেন রৌমারী মুক্তান্চ্ঞলের আনাচে কানাচে মাতৃভূমির স্বাদ নেয়ার জন্য। তাদের ভেতরে দাগ কেটেছিলো স্বাধীকার-স্বাধীনতাকামী এদেশের মানুষের সুকঠিন প্রতিরোধ সংকল্প , মেরে মরবো যুদ্ধ ক্ষুধা.......
তেমনই দুটো ঘটনা জানুন শাফায়াত জামিলের কাছ থেকে............

ফুল রেসোলিউশন ইমেজ
চিলমারী , সেপ্টেম্বর ১৯৭১ , মেজর জিয়া , মেজর সাফায়াত জামিল , লে: নুরুন্নবী

এই রৌমারি থেকেই জিয়ার নির্দেশে বকশীগন্জ্ঞ , ছালিয়া পাড়া , কোদালকাটি যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে।১৮ ই আগস্ট কোদালকাটি যুদ্ধে ৩৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। যুদ্ধে ব্যাপকভাবে মার খেয়ে পাকিস্তান আর্মি কোদালকাটির দখল ছেড়ে চিলমারীতে পালিয়ে যায়.......
কোদালকাটির সেই সম্মুখ সমরে জিয়া নিজে উপস্থিত ছিলেন
ফুল রেসোলিউশন ইমেজ
রৌমারী , সেপ্টেম্বর , ১৯৭১, দেওয়ানগন্জ্ঞে একটি পাকিস্তানী ঘাঁটিতে সফল অপারেশনের পর মুক্তিযোদ্ধারা ফিরে আসছে।

এ সময় জেড ফোর্সের মুক্তিযুদ্ধের উপর মার্কিন এনবিসি চ্যানেলের একটি দল রবার্ট রজার্সের নেতৃত্বে সারা বিশ্বে সাড়া জাগানো ২ টি প্রতিবেদন তৈরী করে:
A Country Made for Disaster এবং Dateline Bangladesh

ইউটিউবে মেজর জিয়ার একটি মুক্তিযু্দ্ধ চলাকালীন ইংরেজী সাক্ষাৎকার বহুল প্রচারিত। এটি সম্ভবত রবার্ট রজার্স জিয়ার যে সাক্ষাৎকার রৌমারিতে নিয়েছিলেন তারই খন্ডাংশ........চেক করে দেখতে পারেন

নুরুন্নবি সেখানে কাস্টমস অফিস , থানা , স্কুল এবং পোস্ট অফিসের কাজ শুরু করেছিলো। ১০ শয্যার ১ টি হাসপাতাল ও চালু করেছিলো।
চমকপ্রদ এই যে যুদ্ধ চলাকালীন সময়েই জিয়া রৌমারী থেকে ১ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তহবিলে জমা দিয়েছিলেন.......

২১ শে আগস্ট জিয়া ক্যাপটেন অলি আহমেদকে সংগে নিয়ে পুনরায় রৌমারি আসেন এবং দিনক্ষন আলোচনা করেন কখন স্বাধীন বাংলাদেশের ১ম বেসামরিক প্রশাসন উদ্বোধন করা যায়.........

২৮ শে আগস্ট সকাল ৮ টায় মেজর জিয়াউর রহমান মুক্ত বাংলাদেশের ১ম পোস্ট অফিস উদ্বোধন করেন।

ফুল রেসোলিউশন ইমেজ
রৌমারি হাইস্কুলের সামনে মেজর জিয়াউর রহমান , ভারতীয় ব্রিগেডিয়ার সাবিদ সিং , মেজর সাফায়াত জামিল এবং স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ

একে একে জিয়া থানা সদর , হাসপাতাল , স্কুল , আদালত , রাজস্ব ও অন্যান্য অফিস উদ্বোধন করেন।

সেদিন মেজর জিয়া সেখানে হাজার হাজার জনতার উদ্দেশ্য ভাষনে বলেন:
রৌমারির প্রতিটি নারী-পুরুষ আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে.........

জবাবে সমবেত জনতা গর্বভরা গর্জন আওয়াজে জিয়াকে অভিনন্দিত করেন :

জয় বাংলা , জয় জিয়া , জয় মুক্তিবাহিনী

আর এভাবেই মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে কালুর ঘাটের "আমি মেজর জিয়া বলছি" কিংবদন্তির পর আরো একবার ভাগ্যের বরমাল্য পেলেন মেজর জিয়াউর রহমান বীরউত্তম !

তথ্যসূত্র :

১. মুক্তির জন্য যুদ্ধ , কর্নেল শাফায়াত জামিল বীরবিক্রম
২. এক জেনারেলের নীরব স্বাক্ষী , মেঃ জেঃ মইনুল হোসেন বীরবীক্রম
৩. উইটনেস টু সারেন্ডার , মেজর সিদ্দিক সালিক
৪. বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি : মুক্তিযু্দ্ধে রৌমারি , অজয় রায়
৫. মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট
৬. মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা , গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ওয়েবসাইট

সংবাদপত্র সংযুক্তি :
তোমাদের এই ঋণ শোধ হবেনা / দৈনিক প্রথম আলো
১. ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ বীরউত্তম এর পরিবারের সাক্ষাতকার
২. লে: আবদুল মান্নান বীরবীক্রম এর সাক্ষাৎকার
৩. আবদুল হক বীরপ্রতীক এর সাক্ষাৎকার
৪. জালাল আহমেদ বীরপ্রতীক এর পরিবারের সাক্ষাতকার
৫. এম এ মান্নান বীরবীক্রম এর সাক্ষাৎকার
৬. শামসুজ্জামান বীর উত্তম এর পরিবারের সাক্ষাৎকার

১-৩: কামালপুর বিওপির যোদ্ধা
৪-৬: নকশী বিওপির যোদ্ধা

দৈনিক সমকাল / লেঃ কঃ নুরুন্নবী খান বীর বীক্রমের সাক্ষাৎকার
দৈনিক ভোরের কাগজ / ডিসেম্বর ৪ , ২০০৯
দৈনিক আমার দেশ / ডিসেম্বর ১৫ , ২০০৯
দৈনিক ইত্তেফাক / মার্চ ২৬ , ২০১১

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when হক কথা - Hok Kotha posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share