27/07/2021
মোঃ রিদয় যখন শিশু শ্রেণিতে পড়ালেখা করছিল তখন তার মাত্র চার বছর বয়স। রিদয়ের জ্ঞান বুদ্ধি তখন একটি সাধারণ ছেলের চেয়ে তুলনামূলক কম ছিলো। সে অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মত পড়ালেখায় ভাল ছিলো না, হঠাৎ একদিন ম্যাডাম তার মাকে ডেকে এনেছে এবং তাকে তার মায়ের সামনে একটি অংক করতে বলে কিন্তু রিদয় ভয় পেয়ে করতে পারল না। রিদয় কিছু সময় অচল হয়ে গেল। সে অনেক সময় দারিয়ে থাকল ম্যাডাম তাকে তার মায়ের সামনে অনেক লজ্জা দিল এবং তার মাকেও অনেক কথা শুনাল আর বলে দিলো রিদয়ের স্কুলে রাখবে না। কিছু দিন রিদয় স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত থাকে পরে তার মায়ের অনেক অনুরধের পরে একটি সুযোগ দেওয়া হয়। স্কুলে রিদয়কে নিয়ে ছাত্র-ছাত্রিরা হাসি-ঠাট্রা করে। রিদয় বাড়ি ফিরে প্রচুর কান্না করতে ছিলো তখন তার মা তাকে বলে, আমি জানি তুমি অনেক মেধাবী চাইলেই তুমি পড়ালেখায় ভাল হতে পাড়। কিন্তু তোমার ভিতরে লজ্জা ভয় এমন কি বিভিন্ন জড়তা কাজ করে যেটা তোমাকে আজ সবার কাছে নিচু করেছে। আমি জানি তুমি পারবে, তোমার ভিতরে যে প্রতিভা লুকিয়ে আছে সেটা সবাইকে দেখিয়ে দাও। এই পৃথিবীতে কেউ জ্ঞানী হয়ে জন্মায় না সবাই এসে জ্ঞানী হয়ে উঠে। আমার দোয়া তোমার সাথেই আছে তুমি এগিয়ে যাও বাবা,,,!
দীর্ঘ চার বছর পরে রিদয় স্কুলের মেধাবীদের তালিকায় ১ম স্থান অধিকার করে এবং মেধাবী তালিকার বৃত্তি অর্জন করে। সে তার মায়ের মুখে একটা মধুর হাসি উপহার দেয়। একদিন যেই মানুষটাকে সবাই হাসির পাত্র বানিয়েছে আজ সেই মানুষটা স্কুলের নাম উজ্জ্বল করেছে। ছেলেটির এই সফলতার পিছনে ছিলো তার একটা বড় শক্তি সেটা হলো তার মায়ের একটু অনুপ্রেরণা, হাজার শক্তিশালী মায়ের দোয়া। যা পারে একটা সন্তানের জীবন বদলে দিতে, সেরা মানুষ বানিয়ে দিতে। আজকে আমরা ছেলে-মেয়ের একটু উৎসাহিত করার বদলে বলে থাকি তোমার দিয়ে কিছু হবে না, তুমি এটা করতে পারবে না, তুমি একটা অপদার্থ ইত্যাদি। একটি কাজ একবার দুই বার করতে না পারলে আমরা বকা দিয়ে থাকি আর এর জন্যই আমাদের মধ্য থেকে হাজারও এডিসন, মাইকেল জর্ডান, কাজী নজরুল ইসলাম হারিয়ে যাচ্ছে। কেন আমরা কি পারি না তাদের একটু অনুপ্রেরণা দিতে, পারিনা একটু সাহস দিতে, যে তুমি চেষ্টা করো তুমি পারবে।
কবি বলেছেন পারিও না এ কথাটি বলিও না আর, একবার না পরিলে দেখো শত বার। তাই আমরা সব সময় চেষ্টা করবো আমাদের সন্তানদের মনে সাহস যোগাতে যেন তারা কোন কাজে ভয় না পেয়ে জয় করতে পারে। নিজের সন্তানের উপরে বিশ্বাস রাখুন, ভালবাসুন, কারোর কথায় নিজের সন্তানকে কখন ভুল বুঝবেন না ।
(মনে রাখবেন আপনার একটি কথায় আপনার ছেলে-মেয়ে একটি অন্যরকম কিছু করতে পারে, হতে পারে দেশের সেরা মানুষের একজন)