Unity Of Muslim Ummah

  • Home
  • Unity Of Muslim Ummah

Unity Of Muslim Ummah Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Unity Of Muslim Ummah, Media, .

11/04/2024
28/03/2024

🕌আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে কতিপয় ভ্রান্ত আক্বীদা🕌

ভূমিকা :

আল্লাহ মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য (যারিয়াত ৫৬)। আর ইবাদত কবুল হওয়ার অন্যতম দু’টি শর্ত হ’ল- (১) যাবতীয় ইবাদত শুধুমাত্র তাঁর জন্যই নিবেদিত হ’তে হবে। যেমন- ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ-যাকাত, নযর-নিয়ায, যবেহ, কুরবানী, ভয়-ভীতি, সাহায্য, চাওয়া-পাওয়া ইত্যাদি। (২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অনুকরণ, অনুসরণ করতে হবে এবং তিনি যেভাবে ইবাদত করতে বলেছেন সেভাবেই তা সম্পাদন করতে হবে। উপরোক্ত শর্ত দু’টির সাথে আক্বীদা-বিশ্বাস বিশুদ্ধ হওয়া অতীব যরূরী। অত্র প্রবন্ধে আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কিত কয়েকটি ভ্রান্ত আক্বীদা আলোচনা করা হ’ল-

অনেকের বিশ্বাস আছে যে, (১) আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। অথচ মহান আল্লাহ বলছেন, তিনি আরশের উপর সমাসীন। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে ৭টি আয়াত বর্ণিত হয়েছে।[1] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)ও বলেছেন যে, আল্লাহ আসমানে আছেন। ছাহাবী (রাঃ) এবং তাবেঈগণ সকলেই বলেছেন আল্লাহ আসমানে আছেন। তাছাড়া সকল ইমামই বলেছেন, আল্লাহ আসমানে আছেন। এরপরেও যদি বলা হয়, আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান তাহ’লে কি ঈমান থাকবে এবং আমল কবুল হবে?

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান- একথা ঠিক নয়, বরং পবিত্র কুরআন বলছে, আল্লাহ আরশে সমাসীন। এ মর্মে বর্ণিত দলীলগুলো নিম্নরূপ-

(১) আল্লাহ বলেন, إِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِيْ سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ. ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (আ‘রাফ ৭/৫৪)।

(২) ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (ইউনুস ১০/৩)।

(৩) ‘আল্লাহই ঊর্ধ্বদেশে আকাশমন্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত- তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হ’লেন’ (রা‘দ ১৩/২)।

(৪) ‘দয়াময় (আল্লাহ) আরশে সমাসীন’ (ত্ব-হা ২০/৫)।

(৫) ‘তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনিই রহমান, তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ’ (ফুরক্বান ২৫/৫৯)।

(৬) ‘আল্লাহ তিনি, যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (সাজদাহ ৩২/৪)।

(৭) ‘তিনিই ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন’ (হাদীদ ৫৭/৪)।

উল্লেখিত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা আরশে সমাসীন আছেন। কিভাবে সমাসীন আছেন, একথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন,الاستواء معلوم والكيف مجهول والإيمان به واجب والسؤال عنه بدعة. ‘ইসতেওয়া বা সমাসীন হওয়া বোধগম্য, এর প্রকৃতি অজ্ঞাত, এর প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব এবং এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদ‘আত’।[2]

আল্লাহ তা‘আলা আসমানের উপর আছেন। এ মর্মে মহান আল্লাহ বলেন,

أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَّخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُوْرُ، أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُّرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُوْنَ كَيْفَ نَذِيْرِ-

‘তোমরা কি (এ বিষয়ে) নিরাপদ হয়ে গেছ যে, যিনি আকাশের উপর রয়েছেন তিনি তোমাদের সহ ভূমিকে ধসিয়ে দিবেন না? আর তখন ওটা আকস্মিকভাবে থরথর করে কাঁপতে থাকবে। অথবা তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ যে, আকাশের উপর যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী বঞ্ঝাবায়ু প্রেরণ করবেন না? তখন তোমরা জানতে পারবে কিরূপ ছিল আমার সতর্কবাণী’? (মুলক ৬৭/ ১৬-১৭)।

২. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিছু সৃষ্টিকে উপরে উঠিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, بَل رَّفَعَهُ اللهُ إِلَيْهِ ‘বরং আল্লাহ তাকে (ঈসাকে) নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন’ (নিসা ৪/১৫৮)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, إِذْ قَالَ اللهُ يَا عِيْسَى إِنِّيْ مُتَوَفِّيْكَ وَرَافِعُكَ إِلَيَّ. ‘স্মরণ কর, যখন আল্লাহ বললেন, হে ঈসা! আমি তোমার কাল পূর্ণ করছি এবং আমার নিকট তোমাকে তুলে নিচ্ছি’ (আলে ইমরান ৩/৫৫)।

৩. আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপরে আছেন, এর প্রমাণে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ-

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا قَضَى اللهُ الْخَلْقَ كَتَبَ فِيْ كِتَابِهِ، فَهُوَ عِنْدَهُ فَوْقَ الْعَرْشِ : إِنَّ رَحْمَتِيْ غَلَبَتْ غَضَبِيْ-

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন আল্লাহ মাখলূক সৃষ্টির ইচ্ছা পোষণ করলেন, তখন তাঁর কাছে আরশের উপর রক্ষিত এক কিতাবে লিপিবদ্ধ করেন- অবশ্যই আমার করুণা আমার ক্রোধের উপর জয়লাভ করেছে’।[3]

৪. আমরা দো‘আ করার সময় দু’হাত উত্তোলন করে আল্লাহর নিকট চাই। এতে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ আরশের উপর আছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللهَ حَيِيٌّ كَرِيْمٌ يَسْتَحْيِيْ إِذَا رَفَعَ الرَّجُلُ إِلَيْهِ يَدَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صِفْرًا خَائِبَتَيْنِ-

সালমান ফারেসী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ লজ্জাশীল ও মহানুভব। যখন কোন ব্যক্তি তাঁর নিকট দু’হাত উত্তোলন করে দো‘আ করে, তখন তাকে শূন্য হাতে ব্যর্থ মনোরথ করে ফেরত দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন’।[4]

৫. প্রত্যেক রাতে আল্লাহ তা‘আলার দুনিয়ার আসমানে নেমে আসা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, তিনি আরশের উপর সমাসীন। এর প্রমাণ রাসূল (ছাঃ)-এর নিম্নোক্ত হাদীছ :

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِيْنَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ يَقُوْلُ : مَنْ يَّدْعُوْنِيْ فَأَسْتَجِيْبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِيْ فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِيْ فَأَغْفِرَ لَهُ-

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আছ যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দিব? কে আছ যে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি তাকে তা দান করব। কে আছ যে আমার কাছে ক্ষমা চাবে আর আমি তাকে ক্ষমা করে দিব’।[5]

৬. মু‘আবিয়া বিন আল-হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

كَانَتْ لِيْ جَارِيَةٌ تَرْعَى غَنَمًا لِىْ قِبَلَ أُحُدٍ وَالْجَوَّانِيَّةِ فَاطَّلَعْتُ ذَاتَ يَوْمٍ فَإِذَا الذِّئْبُ قَدْ ذَهَبَ بِشَاةٍ مِنْ غَنَمِهَا وَأَنَا رَجُلٌ مِنْ بَنِىْ آدَمَ آسَفُ كَمَا يَأْسَفُوْنَ لَكِنِّىْ صَكَكْتُهَا صَكَّةً فَأَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَظَّمَ ذَلِكَ عَلَيَّ. قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلاَ أُعْتِقُهَا؟ قَالَ ائْتِنِيْ بِهَا فَأَتَيْتُهُ بِهَا. فَقَالَ لَهَا : أَيْنَ اللهُ؟ قَالَتْ فِي السَّمَاءِ. قَالَ مَنْ أَنَا؟ قَالَتْ أَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ. قَالَ أَعْتِقْهَا فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ-

‘আমার একজন দাসী ছিল। ওহুদ ও জাওয়ানিয়্যাহ (ওহুদের নিকটবর্তী একটি স্থান) নামক স্থানে সে আমার ছাগল চরাত। একদিন দেখি, নেকড়ে আমাদের একটি ছাগল ধরে নিয়ে গেছে। আমি একজন আদম সন্তান (সাধারণ মানুষ)। তারা যেভাবে ক্রদ্ধ হয় আমিও সেভাবে ক্রদ্ধ হই। কিন্তু আমি তাকে এক থাপ্পড় মারি। অতঃপর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট আসলে একে আমি সাংঘাতিক (অন্যায়) কাজ বলে গণ্য করি। তাই আমি বলি যে, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি কি তাকে আযাদ করব না? তিনি বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে আস। আমি তাকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসলাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ কোথায়? সে বলল, আসমানে। তিনি (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কে? তখন সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)। তখন নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তাকে মুক্তি দিয়ে দাও, কারণ সে একজন ঈমানদার নারী’।[6]

৭. বিদায় হজ্জের ভাষণে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ছাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, তোমরা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে, তখন কি বলবে? ঐ সময় উপস্থিত ছাহাবীগণ বলেছিলেন, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, আপনি আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন। একথা শুনার পর আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাঁর হাতের আঙ্গুল আসমানের দিকে উত্তোলন করে বলেছিলেন, হে আল্লাহ! তাদের কথার উপর সাক্ষি থাক’।[7]

৮. আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন,

كَانَتْ زَيْنَبُ تَفْخَرُ عَلَى أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَقُوْلُ: زَوَّجَكُنَّ أَهَالِيْكُنَّ وَزَوَّجَنِي اللهُ تَعَالَى مِنْ فَوْقِ سَبْعِ سَمَاوَاتٍ.

‘যয়নব (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ)-এর অন্যান্য স্ত্রীগণের উপর গর্ব করে বলতেন যে, তাঁদের বিয়ে তাঁদের পরিবার দিয়েছে, আর আমার বিয়ে আল্লাহ সপ্ত আসমানের উপর থেকে সম্পাদন করেছেন’।[8]

৯. ইসরা ও মি‘রাজ-এর ঘটনায় আমরা লক্ষ্য করি যে, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-কে যখন একের পর এক সপ্ত আসমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল নবী-রাসূলগণের এবং আল্লাহর সান্নিধ্যের জন্য সপ্ত আসমানের উপর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর যখন আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছালাত নিয়ে মূসা (আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন, তখন মূসা (আঃ) রাসূল (ছাঃ)-কে বলেছিলেন, তোমার উম্মত ৫০ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করতে সক্ষম হবে না। যাও আল্লাহর নিকট ছালাত কমিয়ে নাও। এরপর কমাতে কমাতে পাঁচ ওয়াক্ত হয়। এরপর মূসা (আঃ) আরও কমাতে বলেছিলেন, কিন্তু রাসূল (ছাঃ) লজ্জাবোধ করেছিলেন।[9] এ সময় আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ছালাত কমানোর জন্য সপ্ত আকাশের উপর উঠতেন। আবার ফিরে আসতেন মূসা (আঃ)-এর নিকট ষষ্ঠ আসমানে। এ দ্বারা বুঝা যায় যে, আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপরে আছেন।

১০. ফেরাঊন নিজেকে আল্লাহ দাবী করেছিল। সে কাফের হওয়া সত্ত্বেও তার বিশ্বাস ছিল যে, আল্লাহ আরশের উপর আছেন। ফেরাঊন বলল, ‘হে হামান! তুমি আমার জন্য এক সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরী কর, যাতে আমি অবলম্বন পাই আসমানে আরোহণের, যেন আমি দেখতে পাই মূসা (আঃ)-এর মা‘বূদকে (মুমিন ৪০/৩৭-৩৮)।

সালাফে ছালেহীন থেকে আমরা যা পাই তা হচ্ছে, আল্লাহ আসমানের উপর আরশে অবস্থান করছেন। আবুবকর (রাঃ) থেকে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যখন আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর ওফাত হয়, আবু বকর (রাঃ) এসে তাঁর (ছাঃ) কপালে চুমু খেয়ে বলেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আপনি জীবনে ও মরণে উত্তম ছিলেন। এরপর আবু বকর (রাঃ) বলেন, হে মানব জাতি! তোমাদের মধ্যে যারা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর ইবাদত করতে, তারা জেনে রাখ যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) মৃত্যুবরণ করেছেন। আর তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহর ইবাদত কর তারা জেনে রাখ যে, আল্লাহ আকাশের উপর (আরশে)। তিনি চিরঞ্জীব।[10]

ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, من قال لا أعرف ربي في السماء أم في الأرض فقد كفر لأن الله تعالى يقول الرحمن على العرش استوى وعرشه فوق سبع سموات. ‘যে বলবে যে, আল্লাহ আসমানে আছেন, না যমীনে তা আমি জানি না, সে কুফরী করবে। কেননা আল্লাহ বলেন, রহমান আরশে সমাসীন। আর তার আরশ সপ্ত আকাশের উপর।[11]

ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, الله في السماء وعلمه في كل مكان لا يخلو منه مكان- ‘আল্লাহ আকাশের উপর এবং তাঁর জ্ঞানের পরিধি সর্বব্যাপী বিস্তৃত। কোন স্থানই তাঁর জ্ঞানের আওতার বহির্ভূত নয়’।[12]

ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেন,

القول في السنة التي أنا عليها ورأيت أصحابنا عليها أهل الحديث الذين رأيتهم وأخذت عنهم مثل سفيان ومالك وغيرهما الاقرار بشهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله وأن الله تعالى على عرشه في سمائه يقرب من خلقه كيف شاء وأن الله تعالى ينزل إلى سماء الدنيا كيف شاء-

‘সুন্নাহ সম্পর্কে আমার ও আমি যেসকল আহলেহাদীছ বিদ্বানকে দেখেছি এবং তাদের নিকট থেকে গ্রহণ করেছি যেমন সুফিয়ান, মালেক ও অন্যান্যরা, তাদের মত হল এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া কোন (হক্ব) উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আললাহর রাসূল। আর আল্লাহ আকাশের উপর তাঁর আরশে সমাসীন। তিনি যেমন ইচ্ছা তাঁর সৃষ্টির নিকটবর্তী হন এবং যেমন ইচ্ছা তেমন নীচের আকাশে অবতরণ করেন’।[13]

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর পুত্র আব্দুল্লাহ বলেন,

قيل لأبي ربنا تبارك وتعالى فوق السماء السابعة على عرشه بائن من خلقه وقدرته وعلمه بكل مكان قال نعم لا يخلو شيء من علمه.

‘আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করা হ’ল যে, আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি থেকে দূরে সপ্তম আকাশের উপরে তাঁর আরশে সমাসীন। তাঁর ক্ষমতা ও জ্ঞানের পরিধি সর্বত্র বিস্তৃত। এর উত্তরে তিনি (ইমাম আহমাদ) বলেন, হ্যাঁ! তিনি (আল্লাহ) আরশের উপর সমাসীন এবং তাঁর জ্ঞানের বহির্ভূত কিছুই নেই।[14]

[চলবে]

হাফেয আব্দুল মতীন

এম.এ (অধ্যয়নরত), মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।

[1]. ইমাম ইবনু তায়মিয়া, মাজমূউ ফাতাওয়া ৩/১৩৫।

[2]. শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া, আর-রিসালা আত-তাদাম্মুরিয়্যাহ, পৃঃ ২০।

[3]. বুখারী হা/৩১৯৪ ‘সৃষ্টির সূচনা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১; মিশকাত হা/২৩৬৪ ‘দো‘আ’ অধ্যায়, ‘আল্লাহর রহমতের প্রশস্ততা’ অনুচ্ছেদ।

[4]. তিরমিযী হা/৩৫৫৬, ইবনু মাজাহ হা/৩৮৬৫, হাদীছ ছহীহ।

[5]. বুখারী হা/১১৪৫; মুসলিম হা/৭৫৮; আবুদাঊদ হা/১৩১৫; ইবনু মাজাহ হা/১৩৬৬; মিশকাত হা/১২২৩ ‘ছালাত’ অধ্যায়, ‘তাহাজ্জুদের প্রতি উৎসাহিতকরণ’ অনুচ্ছেদ।

[6]. ছহীহ মুসলিম হা/৫৩৭ ‘মসজিদ সমূহ ও ছালাতের স্থানসমূহ’ অনুচ্ছেদ।

[7]. ছহীহ মুসলিম হা/১২১৮ ‘হজ্জ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৯।

[8]. বুখারী হা/৭৪২০ ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২০।

[9]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ; মিশকাত হা/৫৮৬২।

[10]. বুখারী, আত-তারীখ, ১ম খন্ড, পৃঃ ২০২; ইবনুল ক্বাইয়িম, ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃঃ ৮৩-৮৪; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃঃ ৪৭০।

[11]. ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃঃ ৯৯।

[12]. ঐ, পৃঃ ১০১।

[13]. ঐ, পৃঃ ১২২।

[14]. ঐ, পৃঃ ১৫২-১৫৩।

ইমাম মুয়াজ্জিন খাদেমকেহাদিয়া দিনসমাজের প্রতিটি মানুষ চায়  নিজ নিজ মহল্লার ইমাম সাহেব খতীব সাহেব মুয়াজ্জিন সাহেব সহ খাদ...
24/03/2024

ইমাম মুয়াজ্জিন খাদেমকে
হাদিয়া দিন
সমাজের প্রতিটি মানুষ চায় নিজ নিজ মহল্লার ইমাম সাহেব খতীব সাহেব মুয়াজ্জিন সাহেব সহ খাদেমগন স্বচ্চলতা সুন্দর্যতার সহিত চলুক।
আপনার এলাকার
মসজিদের ইমাম সাহেব, মুয়াজ্জিন সাহেব খাদেম সাহেবকে, অথবা মাদ্রাসার শিক্ষককে বা আপনার বন্ধু/পরিচিত হাফেজ আলেমকে ঈদ উপলক্ষে হাদিয়া দিন।
এটা অত্যন্ত মহৎ কাজ। তারা অনেকেই নিতে চাইবেনা। জোর করে দিয়ে দিবেন।এটা আপনার জন্য অনেক উপকারী আমল হবে।
ইনশাআল্লাহ।🙂কপি পোষ্ট🤭

24/03/2024

❒︎❒︎🌺🦋

➪•"যে ব্যক্তি কোনো সিয়াম পালনকারীকে ইফতার করাবে, তার জন্য সিয়াম পালনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব থাকবে। কিন্তু এর ফলে সিয়াম পালনকারীর সাওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না।
[তিরমিযী, হাদীস-৮০৭]

22/03/2024

একদিন রোজা রাখলে...,,,🌸
জাহান্নাম থেকে৭০ বছর এর দূরত্ব তৈরি হয...,,🌸
সুবাহানআল্লাহ....🌺
📖(মুসলিম ২৭৬৯)📓

21/03/2024

ছোটবেলায় ভাই-বোন, বন্ধুবান্ধব,শতবার রাগ করলেও কিছুক্ষণ পর আবার মিলে যায়!!😊

কিন্তু বড় হয়ে একবার রাগ করলে দেখা হয় জানাযায়;🥲collect

21/03/2024

যারা রমজান মাস কে তিন ভাগে ভাগ করেছে
তাদের রহমত আজ থেকে শেষ!🤣

আলী হাসান উসামা (হাফি:) আলোচনার তারিখ ঘোষণা দিয়েছেন ০৯ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার ।বিষয় :  'হাদিসশাস্ত্রের আলোকে উমর রা. কত রা...
20/03/2024

আলী হাসান উসামা (হাফি:) আলোচনার তারিখ ঘোষণা দিয়েছেন ০৯ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার ।

বিষয় : 'হাদিসশাস্ত্রের আলোকে
উমর রা. কত রাকআত তারাবিহের আদেশ করেছিলেন? ৮ নাকি ২০?'

আলোচনাটি কোন পেইজে এবং কোন সময়ে হবে। এইটা ঈদুল ফিতারের পরে ঠিক করা হবে ইনশাআল্লাহ।
ভালো কিছু হতে যাচ্ছে অপেক্ষা করুন ।

__________________
ব্রাদার রাহুল হোসেন- রুহুল আমিন (হাফি:)
তারিখ : ২০ মার্চ ২০২৪
সময় : দুপুর ১২:৫০ (ভারত)

20/03/2024

ভূমিকা :

ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হ’ল ছালাত। সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরণকে হৃদয়ে জাগ্রত রাখার প্রক্রিয়া হিসাবে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ফরয করেছেন। ছালাত এমন একটি ইবাদত, কালেমায়ে শাহাদতের পরেই যার স্থান। কেউ মুসলমান হ’লে তাকে প্রথমেই ছালাতে অভ্যস্ত হওয়া আবশ্যক। ছাহাবীগণের মধ্যে কেউ ছালাতে না আসলে তাকে কাফের মনে করা হ’ত। ছালাত ত্যাগ করা কাফের ও মুনাফিকদের কাজ। ছালাত ত্যাগকারীরা পরকালে ফেরাউন, হামান, কারূনের মত কাফেরদের সাথে জাহান্নামে অবস্থান করবে।

ফরয এই ইবাদতটি নিয়ে বর্তমানে বহু মানুষের মধ্যে অবহেলা দেখা যায়। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় অনেকের হয়, কিন্তু ছালাত আদায়ের সময় তাদের হয় না। খোশগল্প করার সময় জোটে, কিন্তু মসজিদে গিয়ে আল্লাহর সাথে মুনাজাত করার সময় হয় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানোর সুযোগ হয় কিন্তু মুছাল্লায় দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে নিজের আবেদন-নিবেদন পেশ করার সময় হয় না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যস্ততায় ছালাত ক্বাযা করা তো অনেকের কাছে স্বাভাবিক বিষয় মনে হয়। অথচ ছালাতে অবহেলা, অলসতা ও তা পরিত্যাগের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। নিম্নে ছালাত পরিত্যাগকারীর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হ’ল।-

ছালাত পরিত্যাগ করা কুফরী :

ছালাত পরিত্যাগ করা কুফরী কাজ। ছালাত ত্যাগ করাকে রাসূল (ছাঃ) কুফরী বলেছেন। যেমন হাদীছে এসেছে,

عَنْ جَابِرٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: بَيْنَ الْعَبْدِ، وَبَيْنَ الْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ- জাবের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘বান্দা ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য ছালাত ছেড়ে দেওয়া’।[1] অন্য বর্ণনায় আছে, মানুষ ও শিরক-কুফরের মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত। কোন বর্ণনায় আছে, ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত।[2] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন,بَيْنَ الْعَبْدِ، وَبَيْنَ الْكُفْرِ وَالْإِيمَانِ الصَّلَاةُ فَإِذَا تَرَكَهَا فَقَدْ أَشْرَكَ، ‘বান্দা, কুফর ও ঈমানের মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত। যখন সে ছালাত পরিত্যাগ করল, তখন সে শিরক করে ফেলল’।[3]

عَنْ بُرَيْدَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ الْعَهْدَ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمِ الصَّلَاةُ، فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ-

বুরায়দাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মধ্যে যে পার্থক্য তা হ’ল ছালাত। অতএব যে ব্যক্তি ছালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল’।[4]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَقِيقٍ العُقَيْلِيِّ، قَالَ: كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَرَوْنَ شَيْئًا مِنَ الأَعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلَاةِ-

তাবেঈ আব্দুল্লাহ ইবনু শাকীক আল-উকায়লী বলেন, ‘ছাহাবায়ে কেরাম ছালাত ব্যতীত অন্য কোন আমল ছেড়ে দেওয়াকে কুফরী মনে করতেন না’।[5]

عَنْ شَدَّادِ بْنِ مَعْقِلٍ قَالَ: أَوَّلُ مَا تَفْقِدُوْنَ مِنْ دِيْنِكُمُ الْأَمَانَةَ، وَآخِرُ مَا تَفْقِدُوْنَ مِنْهُ الصَّلَاةَ-

শাদ্দাদ ইবনু মা‘কেল হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সর্বপ্রথম তোমরা তোমাদের দ্বীনের যা হারাবে তাহ’লে আমানত এবং সর্বশেষ দ্বীনের যা হারাবে তা হ’ল ছালাত’।[6] ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন, ‘ইসলাম থেকে চলে যাওয়া সর্বশেষ বস্ত্ত যেহেতু ছালাত সেহেতু যে বস্ত্তর শেষ চলে যায় সে বস্ত্ত সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যায়। এজন্য আপনাদের উচিৎ দ্বীনের সর্বশেষ অংশ ছালাতকে যথাযথভাবে আঁকড়ে ধরা, আল্লাহ আপনাদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন (ইমাম আহমাদ, কিতাবুছ ছালাত)।

জাবের বিন আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হ’ল-مَا كَانَ يُفَرِّقُ بَيْنَ الْكُفْرِ وَالْإِيمَانِ عِنْدَكُمْ مِنَ الْأَعْمَالِ فِيْ عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: الصَّلَاةُ، ‘রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে আমলসমূহের মধ্যে কোন আমলটি আপনাদের নিকট ঈমান এবং কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী হিসাবে বিবেচিত হ’ত? তিনি বললেন, ছালাত’।[7]

উল্লেখ্য যে, কুফরী করা ও কাফের হয়ে যাওয়া এক বিষয় নয়। এক্ষণে কেউ যদি ছালাতকে অস্বীকার করে বা একেবারে ছেড়ে দেয় তাহ’লে সে কাফের হয়ে যাবে। কিন্তু কেউ যদি অলসতাবশত ছালাত ত্যাগ করে এবং মাঝে-মধ্যে আদায় করে তাহ’লে সে কাফের হবে না বরং কবীরা গুনাহগার হবে। তওবা না করলে তাকে জাহান্নামে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।[8]

ছালাত ত্যাগ করা হত্যাযোগ্য অপরাধ :

ছালাতকে অবজ্ঞা করে তা ত্যাগ করা হত্যাযোগ্য অপরাধ। কেউ ইচ্ছা করে ছালাত পরিত্যাগ করলে তাকে ছালাত আদায়ের নির্দেশ দিতে হবে। সে এই বিধান অস্বীকার করলে সরকার তাকে শাস্তি দিবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ إِنَّ اللهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ- ‘তোমরা মুশরিকদের যেখানে পাও হত্যা কর, পাকড়াও কর, অবরোধ কর এবং ওদের সন্ধানে প্রত্যেক ঘাঁটিতে ওঁৎ পেতে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, ছালাত আদায় করে ও যাকাত দেয়, তাহ’লে ওদের রাস্তা ছেড়ে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (তওবা ৯/৫)। এর তাফসীরে বলা হয়েছে, তারা ছালাত আদায় করলে জান ও মালের নিরাপত্তা লাভ করবে। আর তা পরিহার বা অস্বীকার করলে তা হত্যাযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، فَإِذَا شَهِدُوا أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، وَاسْتَقْبَلُوا قِبْلَتَنَا، وَأَكَلُوا ذَبِيحَتَنَا، وَصَلَّوْا صَلَاتَنَا، فَقَدْ حَرُمَتْ عَلَيْنَا دِمَاؤُهُمْ، وَأَمْوَالُهُمْ، إِلَّا بِحَقِّهَا لَهُمْ مَا لِلْمُسْلِمِينَ وَعَلَيْهِمْ مَا عَلَيْهِمْ-

আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমাকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা এই কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন হক উপাস্য নেই, আর মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। আর যখন তারা সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল, আমাদের কিবলার দিকে মুখ করবে, আমাদের যবেহকৃত পশু আহার করবে এবং আমাদের ন্যায় ছালাত আদায় করবে, তখন আমাদের জন্য তাদের রক্ত ও সম্পদ হারাম হবে। তবে এই কালেমার কোন হক (শরী‘আতসম্মত কারণ) পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা। মুসলমানদের যে অধিকার রয়েছে তাদের জন্যও তা থাকবে। আর মুসলমানদের উপর যে দায়িত্ব বর্তায়, তা তাদের উপরও বর্তাবে’।[9] অত্র হাদীছে ছালাত আদায়কে নিরাপত্তার মাপকাঠি বলা হয়েছে।

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা কিছু মালামাল বণ্টন সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে জনৈক উঁচু গাল, ফোলা কপাল এবং গর্তে ঢোকা চোখ বিশিষ্ট ঘন শ্মশ্রুমন্ডিত মাথা নেড়া উরুর উপর কাপড় পরা ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলল, يَا رَسُوْلَ الله! اتَّقِ اللهَ، قَالَ: وَيْلَكَ، أَوَ لَسْتُ أَحَقَّ أَهْلِ الْأَرْضِ أَنْ يَّتَّقِيَ اللهَ؟ قَالَ: ثُمَّ وَلَّى الرَّجُلُ، قَالَ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيْدِ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! أَلَا أَضْرِبُ عُنُقَهُ؟ قَالَ: لَا، لَعَلَّهُ أَنْ يَّكُوْنَ يُصَلِّيْ، ‘হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করুন। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি ধ্বংস হয়ে যাও! আমি কি দুনিয়ার সর্বাপেক্ষা আল্লাহ ভীরু ব্যক্তি নই? বর্ণনাকারী বলেন, যখন লোকটি রওয়ানা হ’ল তখন খালেদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি তার গর্দান কেটে ফেলব না? রাসূল (ছাঃ) বললেন, না, হয়তো বা সে ছালাত আদায় করে’।[10]

আল্লাহ ও রাসূলের যিম্মা থেকে মুক্তি :

কেউ ইচ্ছা করে ছালাত ত্যাগ করলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর যিম্মা থেকে সে বের হয়ে যায়। যেমন মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন আমল শিখিয়ে দেন, যা করলে আমি জান্নাত প্রবেশ করতে পারব। তিনি বললেন,لاَ تُشْرِكْ بِاللهِ شيئاً وَإِنْ عُذِّبْتَ وَحُرِّقْتَ وَأَطِعْ وَالِدَيْكَ وَإِنَّ أخرجاك مِنْ مَالِكٍ وَمِنْ كُلِّ شَيٍّء هُوَ لَكَ وَلاَ تَتْرُكِ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّدًا فَإِنَّهُ مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ، ‘তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না; যদিও তোমাকে সে ব্যাপারে শাস্তি দেওয়া হয় এবং পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। তোমার মাতা-পিতার আনুগত্য কর; যদিও তারা তোমাকে তোমার ধন-সম্পদ এবং সমস্ত কিছু থেকে দূর করতে চায়। আর স্বেচ্ছায় ছালাত ত্যাগ করো না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ছালাত ত্যাগ করে তার উপর থেকে আল্লাহর দায়িত্ব উঠে যায়’।[11]

অন্যত্র তিনি বলেন,لاَ تَتْرُكِ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّداً فَإِنَّهُ مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّداً فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ وَرَسُولِهِ- ‘ইচ্ছাকৃতভাবে কখনো ছালাত ছেড়ে দিবে না। কেননা যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ছালাত ছেড়ে দেয়, তার থেকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের যিম্মাদারী মুক্ত হয়ে যায়’।[12]

ছালাত ত্যাগকারীর ইসলামে কোন অংশ নেই :

ছালাত ত্যাগ করা এমন ভয়াবহ পাপ যে, কেউ তা করলে সে ইসলাম থেকে অনেক দূরে চলে যায়। যেমন আছারে এসেছে,

عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ مِنْ اللَّيْلَةِ الَّتِي طُعِنَ فِيهَا فَأَيْقَظَ عُمَرَ لِصَلَاةِ الصُّبْحِ فَقَالَ عُمَرُ نَعَمْ وَلَا حَظَّ فِي الْإِسْلَامِ لِمَنْ تَرَكَ الصَّلَاةَ فَصَلَّى عُمَرُ وَجُرْحُهُ يَثْعَبُ دَمًا-

মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রহঃ) হ’তে বর্ণিত, যে রাত্রে ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-কে ছুরিকাঘাত করা হয়, সেই রাত্রে তিনি ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর নিকট প্রবেশ করলেন। ওমর (রাঃ)-কে ফজরের ছালাতের জন্য জাগানো হ’ল। ওমর (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, আমি এই অবস্থায়ও ছালাত আদায় করব। কারণ যে ব্যক্তি ছালাত ছেড়ে দেয়, ইসলামে তার কোন অংশ নেই। অতঃপর ওমর (রাঃ) ছালাত পড়লেন অথচ তার জখম হ’তে তখনও রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল।[13] অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন,إِنَّهُ لَا حَظَّ فِي الْإِسْلَامِ لِمَنْ أَضَاعَ الصَّلَاةَ، ‘যে ব্যক্তি ছালাত বিনষ্ট করে ইসলামে তার কোন অংশ নেই’।[14]

ছালাত ত্যাগ করা মুশরিকদের কাজ :

ছালাত পরিত্যাগ করা মূলতঃ মুশরিকদের কাজ। এজন্য মুসলমান ব্যক্তি কখনো ছালাত পরিত্যাগ করতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَاتَّقُوهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، ‘আর তোমরা তাঁকে ভয় কর ও ছালাত কায়েম কর এবং তোমরা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’ (রূম ৩০/৩১)। ইবনু বাত্তা (রহঃ) এর ব্যাখ্যায় বলেন,فَجَعَلَ اللهُ مَنْ تَرَكَ الصَّلَاةَ مُشْرِكًا خَارِجًا مِنَ الْإِيمَانِ، لِأَنَّ هَذَا الْخَطَّابَ لِلْمُؤْمِنِينَ تَحْذِيرٌ لَهُمْ أَنْ يَتْرُكُوا الصَّلَاةَ، فَيَخْرُجُوا مِنَ الْإِيمَانِ، وَيَكُونُوا كَالْمُشْرِكِينَ. ‘আল্লাহ ছালাত পরিত্যাগ- কারীকে মুশরিক এবং ঈমান থেকে খারিজ হিসাবে গণ্য করেছেন। কারণ এই সম্বোধনের মাধ্যমে মুমিনদেরকে সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তারা ছালাত পরিত্যাগ না করে। আর তারা এটা করলে ঈমান থেকে খারিজ হয়ে যাবে এবং মুশরিকদের মত হয়ে যাবে’।[15] ইবনু বাত্তা (রহঃ) আরো বলেন,فَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ الْإِيمَانِ وَبَيْنَ الصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ، فَمَنْ لَمْ يُؤْمِنْ لَمْ تَنْفَعْهُ الصَّلَاةُ، وَمَنْ لَمْ يُصَلِّ لَمْ يَنْفَعْهُ الْإِيمَانُ، ‘ঈমান, ছালাত ও যাকাতের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয়নি। যার ঈমান নেই তার ছালাত কোন কাজে আসবে না। যে ছালাত আদায় করে না তার ঈমান কোন উপকারে আসবে না’।[16]

ছালাত ত্যাগ করা অজ্ঞদের বৈশিষ্ট্য:

যারা ছালাত আদায় করে না তাদেরকে অজ্ঞদের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ اتَّخَذُوهَا هُزُوًا وَلَعِبًا ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَا يَعْقِلُونَ، ‘আর যখন তোমরা ছালাতের জন্য (আযানের মাধ্যমে) আহবান করে থাকো, তখন তারা একে উপহাস ও খেলা বলে মনে করে। কারণ ওরা একেবারেই নির্বোধ সম্প্রদায়’ (মায়েদাহ ৫/৫৮)। সুদ্দী (রহঃ) বলেন,كَانَ رَجُلٌ مِنَ النَّصَارَى بِالْمَدِينَةِ إِذَا سَمِعَ الْمُنَادِيْ يُنَادِي: أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ قَالَ: حُرِّقَ الْكَاذِبُ، فَدَخَلَتْ خَادِمَةٌ لَيْلَةً مِنَ اللَّيَالِي بِنَارٍ وَهُوَ نَائِمٌ، وَأَهْلُهُ نِيَامٌ، فَسَقَطَتْ شَرَارَةٌ فَأَحْرَقَتِ الْبَيْتَ، فَاحْتَرَقَ هُوَ وَأَهْلُهُ، ‘মদীনায় এক নাছারা ছিল যে মুওয়াযযিনের আযানের সময় আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল! বলতে শুনত, তখন সে বলত, মিথ্যাবাদী আগুনে পুড়ুক! এক রাতে সে পরিবারসহ ঘুমিয়ে ছিল। এমন সময় তার দাসী সে ঘরে আগুন নিয়ে প্রবেশ করে। আগুনের একটি টুকরো ঘরে পড়ে যায় এবং আগুন ধরে যায়। এতে তার বাড়ি পুড়ে যায় এবং সে পরিবারসহ পুড়ে মারা যায়’।[17] ছালাত ও আযানকে নিয়ে কটূক্তি করার কারণে আল্লাহ তা‘আলা সপরিবারে তাকে ধ্বংস করে দেন। যখন আযান শেষে মুসলমানেরা ছালাতে দাঁড়াত তখন ইহূদীরা হাঁসি-তামাশা করত। যার ফলশ্রুতিতে আল্লাহ উপরোক্ত আয়াত নাযিল করে বলেন, এরাই নির্বোধ সম্প্রদায়।[18]

ছালাত ত্যাগ করা যুদ্ধের মুখোমুখি হওয়ার সমতুল্য অপরাধ :

কোন এলাকায় যদি আযানের ধ্বনি শোনা যেত তাহ’লে সে এলাকায় রাসূল (ছাঃ) বা ছাহাবায়ে কেরাম অভিযান পরিচালনা করতেন না। বরং মনে করা হ’ত এরা ছালাত আদায়কারী। আর আযান শোনা না গেলে সে এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হ’ত। যেমন আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন আমাদেরকে নিয়ে কোন গোত্রের বিরুদ্ধে জিহাদে যেতেন, তখন ভোর পর্যন্ত আক্রমণ করতেন না। আর ভোর হ’লে আযানের আওয়াযের অপেক্ষায় থাকতেন। যদি আযান শুনতে পেতেন, তখন আক্রমণ করা হ’তে বিরত থাকতেন। আর আযান না শুনলে আক্রমণ করতেন।[19]

ছালাত পরিত্যাগে আমীর বা নেতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার অনুমতি :

ছালাত এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যে, রাষ্ট্র বা নেতারা যতদিন ছালাত কায়েম রাখবে ততদিন তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করা জনগণের জন্য হারাম। যদিও তারা অন্যান্য ক্ষেত্রে নিন্দনীয় হয়।

আওফ ইবনু মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,خِيَارُ أَئِمَّتِكُمُ الَّذِينَ تُحِبُّونَهُمْ وَيُحِبُّونَكُمْ، وَيُصَلُّونَ عَلَيْكُمْ وَتُصَلُّونَ عَلَيْهِمْ، وَشِرَارُ أَئِمَّتِكُمُ الَّذِينَ تُبْغِضُونَهُمْ وَيُبْغِضُونَكُمْ، وَتَلْعَنُونَهُمْ وَيَلْعَنُونَكُمْ، قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَفَلَا نُنَابِذُهُمْ بِالسَّيْفِ؟ فَقَالَ: لَا، مَا أَقَامُوا فِيكُمُ الصَّلَاةَ، وَإِذَا رَأَيْتُمْ مِنْ وُلَاتِكُمْ شَيْئًا تَكْرَهُونَهُ، فَاكْرَهُوا عَمَلَهُ، وَلَا تَنْزِعُوْا يَدًا مِنْ طَاعَةٍ- ‘তোমাদের সর্বোত্তম নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ভালবাস এবং তারাও তোমাদেরকে ভালবাসে। তারা তোমাদের জন্য দো‘আ করে, তোমরাও তাদের জন্য দো‘আ কর। পক্ষান্তরে তোমাদের নিকৃষ্ট নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ঘৃণা কর এবং তারাও তোমাদেরকে ঘৃণা করে। তোমরা তাদেরকে অভিশাপ দাও এবং তারাও তোমাদেরকে অভিশাপ দেয়। বলা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি তাদেরকে তরবারি দ্বারা প্রতিহত করব না? তখন তিনি বললেন, না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমাদের মধ্যে ছালাত কায়েম রাখবে। আর যখন তোমাদের শাসকদের মধ্যে কোনরূপ অপসন্দনীয় কাজ দেখবে, তখন তোমরা তাদের সে কাজকে ঘৃণা করবে, কিন্তু (তাদের) আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নেবে না’।[20]

রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, سَتَكُونُ أُمَرَاءُ فَتَعْرِفُونَ وَتُنْكِرُونَ، فَمَنْ عَرَفَ بَرِئَ، وَمَنْ أَنْكَرَ سَلِمَ، وَلَكِنْ مَنْ رَضِيَ وَتَابَعَ قَالُوا: أَفَلَا نُقَاتِلُهُمْ؟ قَالَ: لَا، مَا صَلَّوْا ‘অচিরেই এমন কতক আমীরের উদ্ভব ঘটবে তোমরা তাদের চিনতে পারবে এবং অপসন্দ করবে। যে ব্যক্তি তাদের স্বরূপ চিনল সে মুক্তি পেল এবং যে ব্যক্তি তাদের অপসন্দ করল নিরাপদ হ’ল। কিন্তু যে ব্যক্তি তাদের পসন্দ করল এবং অনুসরণ করল (সে ক্ষতিগ্রস্ত হ’ল)। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? রাসূল (ছাঃ) বললেন, না, যতক্ষণ তারা ছালাত আদায় করবে’[21]।

ছালাত ত্যাগ করা অন্যান্য আমল বিনষ্টের কারণ :

ছালাত পরিত্যাগ করা এমন অপরাধ যে, এ কারণে তার অন্যান্য সৎ আমল বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেমন বুরায়দা আল-আসলামী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে এক যুদ্ধে যোগদান করেছিলাম। তিনি বলেন,بَكِّرُوا بِالصَّلاَةِ فِي الْيَوْمِ الْغَيْمِ فَإِنَّهُ مَنْ فَاتَتْهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ حَبِطَ عَمَلُه، ‘তোমরা মেঘাচ্ছন্ন দিনে তাড়াতাড়ি (প্রথম ওয়াক্তে) ছালাত আদায় করবে। কারণ যার আছরের ছালাত ছুটে যায় তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়’।[22] অন্য হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ فَاتَتْهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ فَكَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ- ‘যে ব্যক্তির আছরের ছালাত কাযা হ’ল তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ সবই যেন ধ্বংস হয়ে গেল’।[23] কোন কোন বর্ণনায় আছর ছালাতের কথা উল্লেখ নেই। বরং বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে ছালাত পরিত্যাগ করে অবশ্যই তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়’।[24]

ছালাত ত্যাগে রিযিক থেকে বঞ্চিত :

ছালাত এমন একটি ইবাদত যার মাধ্যমে রিযিক বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তা‘আলা যে সকল স্থানে তাঁর ইবাদত করার নির্দেশ দিয়েছেন তার পরপরই প্রায় সব জায়গাতে রিযিকের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। যেমন কুরআনে এসেছে,وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى- ‘আর তুমি তোমার পরিবারকে ছালাতের আদেশ দাও এবং তুমি এর উপর অবিচল থাক। আমরা তোমার নিকট রূযী চাই না। আমরাই তোমাকে রূযী দিয়ে থাকি। আর (জান্নাতের) শুভ পরিণাম তো কেবল মুত্তাক্বীদের জন্যই’ (ত্বোয়াহা ২০/১৩২)। আল্লাহর বাণী, ‘আমরা তোমার নিকট রূযী চাই না। আমরাই তোমাকে রূযী দিয়ে থাকি’-এর ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন,إِذَا أَقَمْتَ الصَّلَاةَ أَتَاكَ الرِّزْقُ مِنْ حَيْثُ لَا تَحْتَسِبُ، ‘তুমি যখন ছালাত আদায় করবে তোমার নিকট এমন জায়গা থেকে রিযিক আসবে যা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,وَمَنْ يَتَّقِ اللهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لا يَحْتَسِب، ‘বস্ত্ততঃ যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য উপায় বের করে দেন। আর তিনি তাকে তার ধারণাতীত উৎস থেকে রিযিক প্রদান করে থাকেন’ (তালাক ৬৫/২-৩)। তিনি আরো বলেন,وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالإنْسَ إِلا لِيَعْبُدُونِ، مَا أُرِيدُ مِنْهُمْ مِنْ رِزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَنْ يُطْعِمُونِ، إِنَّ اللهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ، ‘আমি জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছি কেবল এজন্য যে, তারা আমার ইবাদত করবে। আমি তাদের নিকট থেকে কোন রিযিক চাই না এবং চাই না যে তারা আমাকে আহার যোগাবে। নিশ্চয় আল্লাহ হ’লেন সবচেয়ে বড় রিযিকদাতা ও প্রবল শক্তির অধিকারী’ (যারিয়াত ৫১/৫৬-৫৭)।

ফেরাউন, হামান, ক্বারূন ও উবাই বিন খালফের সাথে হাশর :

যারা ছালাত ত্যাগ করবে তাদের হাশর হবে বড় বড় কাফেরদের সাথে। আর পরকালে বড় কাফেরদের অবস্থা হবে ভয়াবহ। যাদের মধ্যে রয়েছে ফেরাউন, হামান, ক্বারূন, উবাই ইবনু খালফ ও তাদের দোসরেরা। এ মর্মে হাদীছে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ ذَكَرَ الصَّلَاةَ يَوْمًا فَقَالَ: مَنْ حَافَظَ عَلَيْهَا، كَانَتْ لَهُ نُورًا، وَبُرْهَانًا، وَنَجَاةً مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ لَمْ يُحَافِظْ عَلَيْهَا، لَمْ تَكُنْ لَهُ نُورًا، وَلَا نَجَاةً، وَلَا بُرْهَانًا، وَكَانَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ قَارُونَ وَفِرْعَوْنَ وَهَامَانَ، وَأُبَيِّ بْنِ خَلَفٍ-

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদিন ছালাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি তা (ছালাত) হেফাযত করবে, ক্বিয়ামত দিবসে তা তার জন্য নূর, দলীল-প্রমাণ ও জাহান্নাম হ’তে মুক্তি (এর উপায়) হবে। আর যে ব্যক্তি তা (ছালাত) হেফাযত করবে না, ক্বিয়ামত দিবসে তা তার জন্য নূর, দলীল-প্রমাণ ও জাহান্নাম হ’তে মুক্তি (এর উপায়) হবে না। আর ঐ ব্যক্তি ক্বিয়ামত দিবসে ক্বারূন, ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনু খালফ-এর সাথে থাকবে’।[25]

বারযাখে ভয়াবহ শাস্তি :

যে ব্যক্তি ছালাত আদায় না করে ঘুমিয়ে থাকে বরং উদাসীন থাকে তার জন্য কবরে এবং জাহান্নামে ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنَّهُ أَتَانِى اللَّيْلَةَ آتِيَانِ، وَإِنَّهُمَا ابْتَعَثَانِى، وَإِنَّهُمَا قَالاَ لِى انْطَلِقْ. وَإِنِّى انْطَلَقْتُ مَعَهُمَا، وَإِنَّا أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ، وَإِذَا آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ بِصَخْرَةٍ، وَإِذَا هُوَ يَهْوِى بِالصَّخْرَةِ لِرَأْسِهِ، فَيَثْلَغُ رَأْسَهُ فَيَتَهَدْهَدُ الْحَجَرُ هَا هُنَا، فَيَتْبَعُ الْحَجَرَ فَيَأْخُذُهُ، فَلاَ يَرْجِعُ إِلَيْهِ حَتَّى يَصِحَّ رَأْسُهُ كَمَا كَانَ، ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ، فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ الْمَرَّةَ الأُولَى. قَالَ قُلْتُ لَهُمَا سُبْحَانَ اللهِ مَا هَذَانِ،... فَإِنَّهُ الرَّجُلُ يَأْخُذُ الْقُرْآنَ فَيَرْفُضُهُ وَيَنَامُ عَنِ الصَّلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ، ‘গত রাতে আমার কাছে দু’জন আগন্তুক আসল। তারা আমাকে জাগালো আর বলল, চলুন। আমি তাদের সাথে চললাম। আমরা এক ব্যক্তির কাছে আসলাম, দেখলাম সে শুয়ে আছে এবং তার কাছে এক ব্যক্তি পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে পাথর দিয়ে তার মাথায় আঘাত করছে। ফলে তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। একটু পর তার মাথা ভালো হয়ে যাচ্ছে। আবার সে পাথরটি নিয়ে তার মাথায় আঘাত করছে। তার মাথা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে আবার আঘাত করছে। এভাবেই চলছে। আমি তাদের বললাম, সুবহানাল্লাহ! এ দু’ব্যক্তি কে?... তারা আমাকে বলল, যার মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে সে হ’ল এমন ব্যক্তি যে কুরআন শিখেছে কিন্তু তা প্রত্যাখান করেছে এবং ফরয ছালাত থেকে নিদ্রায় রাত কাটিয়েছে’।[26]

ছালাত বিনষ্ট করা পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য :

ছালাত ইসলামের প্রধান রুকন। এজন্য ছালাত ত্যাগকারী কবীরা গুনাহগার এবং অস্বীকারকারী কাফের। আল্লাহ তা‘আলা ছালাত বিনষ্টককারী পূর্ববর্তী এক সম্প্রদায়ের কথা আলোচনা করে আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا- ‘তাদের পরে এলো তাদের (অপদার্থ) উত্তরসূরীরা। তারা ছালাত বিনষ্ট করল ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করল। ফলে তারা অচিরেই জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে’ (মারিয়াম ১৯/৫৯)। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে (সূরা মারিয়ামের ৫৯ আয়াত পাঠ করার পর) বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন,يَكُونُ خَلْفٌ مِنْ بَعْدِ سِتِّينَ سَنَةً أَضَاعُوا الصَّلاَةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا ثُمَّ يَكُونُ خَلْفٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يَعْدُو تَرَاقِيَهُمْ وَيَقْرَأُ الْقُرْآنَ ثَلاَثَةٌ مُؤْمِنٌ وَمُنَافِقٌ وَفَاجِرٌ، ‘ষাট বছর পর কিছু (অপদার্থ) পরবর্তীগণ আসবে, তারা ছালাত নষ্ট করবে ও প্রবৃত্তিপরায়ণ হবে। সুতরাং তারা অচিরেই অমঙ্গল প্রত্যক্ষ করবে। অতঃপর এক জাতি আসবে, যারা কুরআন পাঠ করবে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী পার হবে না। (হৃদয়ে জায়গা পাবে না।) কুরআন তিন ব্যক্তি পাঠ করে- মুমিন, মুনাফিক ও ফাজের (পাপী)।[27]

ছালাত ত্যাগ করা জাহান্নামে যাওয়ার বড় কারণ :

যে সকল পাপের কারণে মানুষ জাহান্নামে যাবে তন্মধ্যে ছালাত ত্যাগ করা অন্যতম। যার স্বীকিৃতি স্বয়ং জাহান্নামীরাই দিয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতী ও জাহান্নামীদের কথোপকথন তুলে ধরে বলেন, مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ، قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ، ‘কোন্ বস্ত্ত তোমাদেরকে ‘সাক্বারে’ (জাহান্নামে) প্রবেশ করাল? তারা বলবে, আমরা মুছল্লীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না’ (মুদ্দাছি্ছর ৭৪-৪২-৪৩)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন,يُعَذِّبُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْإِيمَانِ، ثُمَّ يُخْرِجُهُمْ بِشَفَاعَةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حَتَّى لَا يَبْقَى فِي النَّارِ إِلَّا مَنْ ذَكَرَهُمُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرٍ قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ ‘আল্লাহ তা‘আলা কোন কোন ঈমানের অধিকারীদের শাস্তি দিবেন। অতঃপর মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর শাফা‘আতে তাদের বের করে আনবেন। জাহান্নামে কেবল তারাই থেকে যাবে যাদের কথা আল্লাহ তা‘আলা আয়াতে আলোচনা করেছেন- ‘কোন্ বস্ত্ত তোমাদেরকে ‘সাক্বারে’ প্রবেশ করাল? তারা বলবে, আমরা মুছল্লীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না’।[28]

[ক্রমশঃ]

[1]. আবুদাঊদ হা/৪৬৭৮; মিশকাত হা/৫৬৯, সনদ ছহীহ।

[2]. ছহীহুত তারগীব হা/৫৬৩।

[3]. ছহীহুত তারগীব হা/৫৬৬।

[4]. তিরমিযী হা/২৬২১; মিশকাত হা/৫৭৪; ছহীহুত তারগীব হা/৫৬৪।

[5]. তিরমিযী হা/২৬২২; মিশকাত হা/৫৭৯; ছহীহুত তারগীব হা/৫৬৫।

[6]. তাবারানী কাবীর হা/৯৭৫৪; ছহীহাহ হা/১৭৩৯।

[7]. ইবনু বাত্ত্বা, আল-ইবানাতুল কুবরা হা/৮৭৬; মারওয়াযী, তা‘যীমু কাদরিছ ছালাত হা/৮৯৩।

[8]. আলবানী, হুকমু তারিকিছ ছালাত ১/১০, ৫১; উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১২/৫৫-৫৬; ছহীহাহ হা/৩০৫৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।

[9]. বুখারী হা/৩৯২; নাসাঈ হা/৩৯৬৭; আহমাদ হা/১৩৭৮।

[10]. বুখারী হা/৪৩৫১; মুসলিম হা/১০৬৪।

[11]. তাবারানী আওসাত্ব হা/৭৯৫৬; ছহীহুত তারগীব হা/৫৬৯।

[12]. আহমাদ হা/২৭৪০৪; ছহীহুত তারগীব হা/৫৭৩।

[13]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/১৬৭৩; ইবনুল খাল্লাল, আস-সুনাহ হা/১৩৮৮,; মারওয়াযী, তা‘যীমু কাদরিস ছালাত হা/৯২৯, সনদ ছহীহ, জামে‘উল ঊছূল হা/৫২২৫।

[14]. দারাকুৎনী হা/১৭৫০; মুয়াত্ত্বা হা/১০১; ইরওয়া হা/২০৯।

[15]. আল-ইবানাতুল কুবরা ২/৭৯২।

[16]. আল-ইবানাতুল কুবরা ২/৭৯২।

[17]. তাফসীর ইবনে কাছীর ৩/১২৮।

[18]. তাফসীরুল খাযেন ২/৫৭।

[19]. বুখারী হা/৬১০; মুসলিম হা/১৩৬৫।

[20]. মুসলিম হা/১৮৫৫; মিশকাত হা/৩৬৭০।

[21]. মুসলিম হা/১৮৫৪; মিশকাত হা/৩৬৭১।

[22]. বুখারী হা/৫৯৪; মিশকাত হা/৫৯৫।

[23]. মুসলিম হা/৬২৬; মিশকাত হা/৫৯৪।

[24]. হায়ছামী, মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১৬৩৯।

[25]. দারেমী হা/২৭২১; আহমাদ হা/৬৫৭৬; ইবনু হিববান হা/১৪৬৭, সনদ ছহীহ।

[26]. বুখারী হা/৭০৪৭; মিশকাত হা/৪৬২১।

[27]. হাকেম হা/৩৪১৬; আহমাদ হা/১১৩৫৮; ছহীহাহ হা/৩০৩৪।

[28]. মুদ্দাসসির ৭৪-৪২-৪৩; শরহ মুশকিলুল আছার হা/৫৫৫৬, মুসনাদে আবী হানীফা হা/১২

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Unity Of Muslim Ummah posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share