Myth না Mystery - মিথ না মিস্ট্রি

  • Home
  • Myth না Mystery - মিথ না মিস্ট্রি

Myth না Mystery - মিথ না মিস্ট্রি HISTORY • MYTHOLOGY • MYSTERY

Lets know our Ancient World 😍
(12)

"ভুতুড়ে নাপিত" 😈- ১৯৪২ সালে মিসিসিপি শহরে হঠাত একটা কিংবদন্তী খুব প্রচলিত হয়ে ওঠে। কিংবদন্তীটি ছিল এক "ভুতুড়ে নাপিত" কে...
15/07/2023

"ভুতুড়ে নাপিত" 😈

- ১৯৪২ সালে মিসিসিপি শহরে হঠাত একটা কিংবদন্তী খুব প্রচলিত হয়ে ওঠে। কিংবদন্তীটি ছিল এক "ভুতুড়ে নাপিত" কে নিয়ে। বলা হত ওই সময়ে সেই শহরের অধিকাংশ মানুষদেরই দাবী ছিল মাঝরাতে এক অদ্ভুত মানুষ কাঁচি হাতে দরজা ভেঙে তাদের ঘরে ঢুকে পড়ত এবং সবার চুল কেটে চলে যেত ঝড়ের বেগে।

এই কিংবদন্তি এত প্রচলিত হয় যে সেই ভুতুড়ে নাপিতের নাম দেওয়া হয়েছিল "দ্য ফ্যান্টম বার্বার"

** আপনার ঘরে যদি এরকম কেউ ঢুকে পড়ে মাঝরাতে, কি করবেন তাহলে!! কমেন্টে জানান 😑

"ডোরেমন কার্টুনের নোবিতা কি বাস্তবে ছিল??"- সারা বিশ্বে ডোরেমন কার্টুনটির ফ্যান অসংখ্য। ডোরেমনের পাশাপাশি তারা নোবিতারও ...
28/06/2023

"ডোরেমন কার্টুনের নোবিতা কি বাস্তবে ছিল??"

- সারা বিশ্বে ডোরেমন কার্টুনটির ফ্যান অসংখ্য। ডোরেমনের পাশাপাশি তারা নোবিতারও ফ্যান। তবে বহু মানুষের মতে ডোরেমন কার্টুনটিতে যে নোবিতা নামের ছেলেটিকে দেখানো হয়, সেটি কোন কাল্পনিক চরিত্র নয়। বরং একটি সত্যি চরিত্র, এবং অবশ্যই এক খুবই ট্র‍্যাজিক এক চরিত্র। আসুন আজ আমরা জেনে নিই।

- জাপানে বাস করত নয় বছরের এক বালক, তার নাম ছিল নোবিতা হিরোশি। বাকি অন্য বাচ্চাদের মত নোবিতাও ছিল খুবই হাসিখুশি ও সুস্থ একটি বাচ্চা ছেলে। কিন্তু কে জানত তার ভাগ্যে এমন চরিম পরিনতি লেখা আছে। নয় বছর বয়সে তার স্ক্রিৎজোফেনিয়া রোগ ধরা পড়ে। এই রোগের বৈশিষ্ট হল এই রোগে ভুক্ত রোগীরা এমন কিছু জিনিস বা ব্যক্তিকে দেখতে শুরু করে যার কোন অস্তিত্বই নেই। কিন্তু এই বাস্তবটা রোগীরা মানতে পারেনা। তাই তাদের জীবন নরকসম হয়ে যায়।

নোবিতা হিরোশির জীবনেও এমনই কিছু ঘটেছিল। রোগের কারনে সে বন্ধুহীন জীবন কাটাতো। সেই সময়েই সে ডোরেমনকে ফিল করতে ও দেখতে শুরু করে। ডোরেমন ছিল এমন একজন যে তার সব আব্দার পুরন করত ও তার সাথে গল্পও করত। কিন্তু ডোরেমনকে আর কেউই দেখতে পেত না। তাই স্কুলের সবাই নোবিতাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করত মজা ওড়াতো। নোবিতা একারনে আরো একাকী হয়ে পড়েছিল। তার একমাত্র সঙ্গী ছিল তার বেস্ট ফ্রেন্ড ডোরেমন। কিন্তু কেউই তাকে বুঝত না, ইভেন তার বাবা মাও তার কথা বিশ্বাস করত না। তাই তারা নোবিতাকে নিয়ে মানসিক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিল। ডাক্তার সব শুনে নোবিতাকে বোঝালো যে সবটাই তার মনের ভ্রম, তার অসুখ। ডোরেমন বলে কেউ নেই। কিন্তু ততদিনে নোবিতার জীবনের সবকিছু হয়ে উঠেছে ডোরেমন। তাকে অস্বীকার করা তার কাছে ছিল অসম্ভব। ডোরেমন এর অস্তিত্ব নেই- এই কথাটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি নোবিতা।

এইভাবে সাত বছর কেটে যায়। যখন নোবিতার ষোলো বছর বয়স তখন তার বাবা মা তাকে আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। বিরক্ত ডাক্তার এবার বেশ রুঢ় ও কড়া ভাবেই নোবিতাকে বলে যে ডোরেমন আসলে পুরোই কল্পনা, এরকম কেউ নেই। ডাক্তার ও তার বাবা মায়ের এরকম নিষ্ঠুর কথা নোবিতা এবার আর মেনে নিতে পারেনা।

অবশেষে একদিন রাতে নিঃসঙ্গ, একাকী, ডিপ্রেসড নোবিতা তার বাবার বন্দুক থেকে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

- কান্নায় চোখ ভিজে গেল তো?

- খুবই দুঃখের কাহিনী তাই না?

- বিশ্বাস করুন এই কাহিনীর ১% ও সত্য নয়। যদিও ফেসবুকে এই ধরনের স্যাড স্টোরিই ম্যাক্সিমাম মানুষ বিশ্বাস করে নেয় তাও বলছি এটা জাস্ট একটা গল্প, একটা গুজব। হঠাত করেই কয়েক বছর আগে ইন্টারনেটে এটা ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং মানুষ মুড়িমুড়কির মত গিলতে থাকে এই গল্পটা। বহু মানুষ হয়ত আজো বিশ্বাস করে।

এই লেখাটার দ্বারা এটাই বোঝাতে চাইলাম যে ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া সব গল্পই এভাবে অন্ধের মত বিশ্বাস করে নেবেন না। অবশ্যই খোজ খবর নিন আগে তারপর বিশ্বাস করুন।

ধব্যবাদ। আপনাদের মতামত জানাবেন কমেন্টে 🙏

"কিছু অদ্ভুত ও বিরলতম মানসিক অসুখের গল্প" 🧠১) মিসোফোনিয়া হচ্ছে মানুষের মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা এক অদ্ভুত মনস্তাত্ত্বিক অসু...
22/06/2023

"কিছু অদ্ভুত ও বিরলতম মানসিক অসুখের গল্প" 🧠

১) মিসোফোনিয়া হচ্ছে মানুষের মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা এক অদ্ভুত মনস্তাত্ত্বিক অসুখ। এই অসুখে মানুষ তার চারপাশের রোজকারের জীবনে ঘটা কিছু স্বাভাবিক শব্দ বা আওয়াজ শুনে প্রচন্ড পরিমানে বিরক্ত হয়ে যায় বা সহ্য করতে পারেনা। এই যেমন কিছু চেবানোর আওয়াজ বা জিভ দিয়ে কিছু চেটে খাওয়ার আওয়াজ। দেখা গেছে এই অসুখ বাচ্চাবেলাতেই মনের ভিতর বাসা বাধে, যখন খাওয়ার টেবিলে কেউ খাওয়ার সময় এরকম আওয়াজ করে সাধারণত তখনই বাচ্চাদের মনে এই অসুখ জন্ম নেয়। এই বিরক্তির অসুখ মানুষের মনে প্রবল রাগের সঞ্চার করে, যা সারাজীবন তাকে বয়ে বেড়াতে হয়।

২) এবার যে মানসিক অসুখ নিয়ে বলব, সেটা সারা বিশ্বে যেমন প্রচন্ড বিরল তেমনই প্রবল সাইকোলজিকাল। এই অসুখের নাম "সিউডোসাইসিস"। এটাকে নরম্যাল ভাষায় 'মিথ্যে প্রেগন্যান্সি' ও বলা হয়। এই অসুখে একজন মহিলার মধ্যে প্রেগন্যান্সির সময়কালীন যাবতীয় সিম্পটমস দেখা যায়, যেমন শারীরিক দুর্বলতা, স্তনের আকার বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি ইত্যাদি। কিন্তু সেই মহিলা আসলে প্রেগন্যান্ট নন। আসলে ইনেক সময় মহিলাটি নিজে বা ডাক্তাররাও প্রথম নজরে ধরতে পারেন না এই অসুখটা। এই অসুখ ধরার একমাত্র উপায় "ফেটাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা"। এই রোগে আক্রান্ত মহিলার শরীরে একজন প্রেগন্যান্ট মহিলার মত সব সিম্পটমসই থাকবে কিন্তু ফেটাস থাকবে না। এমনকি তলপেটও স্ফিত হয়ে যায় সত্যি প্রেগন্যান্ট মহিলাদের মতই। মেডিকাল এক্সপার্টদের মতে এই অসুখে তলপেটে গ্যাস, ফ্যাট ও মূত্র জমে সেটিকে এরকম স্ফিত করে।

৩) একটা বিরল নিউরোলজিকাল অসুখ হল "উইটজ্যলশ্চাট"। এই অসুখের নিজস্ব আলাদা এক পরিচিতি আছে। এই অসুখে আক্রান্ত মানুষ অপ্রয়োজনীয় জায়গায় অপ্রয়োজনীয় সিচুয়েশনেও ভুলভাল বা অত্যন্ত বাজে জোক্স বা বেকার কাহিনী শোনাতে চায় সবসময়। আর যেকোন সিরিয়াস কথা নিয়েও মজার গল্প জুড়ে দেয় যা মোটেই তার আশেপাশে থাকা মানুষদের পছন্দ হয়না। একটু চিন্তা করুন, দেখবেন আপনার জীবনেও এরকম অসুখে আক্রান্ত দু-একজন তো থাকবেই।

৪) একটা খুবই বাজে মানসিক অসুখ হয় যার নাম "সুপেরিওর ক্যানাল ডিহাইসেন্স"। এই অসুখে মানুষের কানের অভ্যন্তরীণ অংশ আফেক্টেড হয়, যার ফলে মানুষ তার শরীরের আভ্যন্তরীনে ঘটা সব আওয়াজ শুনতে পায়। পরীক্ষায় দেখা গেছে এই রোগে আক্রান্ত মানুষ তার চোখের কোঠরে থাকা চোখের মণির নড়াচড়ার শব্দ অব্দি শুনতে পায়। এই শব্দ অনেকটা কাঠের উপর শিরিশ কাগজ ঘষার শব্দের মতই লাগে।

৫) "এলিয়েন হ্যান্ড সিনড্রোম" একটা বিরলতম নিউরোলজিকাল অসুখ, যে অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির যে কোন এক হাত ব্যক্তিটির ইচ্ছেমত পরিচালিত না হয়ে নিজের ইচ্ছেয় চলে। অর্থাৎ এই অসুখ হলে মানুষের ব্রেন তার এক হাতকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে না আর, উল্টে তার ব্রেন অনেক সময় টেরও পায় না যে তার সেই হাত কি কি করছে।

৬) এবার কোন মানসিক অসুখ নয়, একটা অদ্ভুত ঘটনার গল্প বলব, যা অবশ্যই মানসিক অসুখের সাথে রিলেটেড কিন্তু প্রচন্ড অবিশ্বাস্য। এক জার্মান মহিলা ছিলেন যিনি পরিচিত ছিল 'বি.টি' নামে, তার ২০ বছর বয়সে এক ভয়ংকর এক্সিডেন্ট হয়, যার ফলে তিনি অন্ধ হয়ে যান। কিন্তু এর পরেই ওনার "ডিসসোসিয়াটিভ আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার" নামক মানসিক অসুখ হয়। এই অসুখের অর্থ হল এক মানুষের মনে মাল্টিপল ব্যক্তিত্ব বাসা বাধে৷ সেই মহিলার মধ্যে প্রায় ১০ জনেরও বেশি ব্যক্তিত্ব দেখা গেছিল। এবার যেটা অবিশ্বাস্য সেটা হল, এই এতগুলো ব্যক্তিত্বর মধ্যে একটা ব্যক্তিত্ব ছিল এক নাবালক ছেলের, এবং সেই ছেলেটি রীতিমতো চোখে দেখতে পেত, অর্থাৎ অন্ধ ছিল না।

৭) টেট্রিস সিনড্রোম হল এমন এক মানসিক অসুখ যা সাধারণত গেমারদের হয়। অর্থাৎ যারা একটা গেম সারাদিন ধরে একটানা খেলে যায়, তারা অন্য সময়গুলিতে সেই গেমটা নিয়েই নানান স্বপ্ন দেখতে থাকে, বা বিজ্ঞানের ভাষায় তারা চেতন বা অবচেতন মনে সারাক্ষনই হ্যালুসিনেট করে গেমটা নিয়ে। এই জেনারেশনের অধিকাংশই এই অসুখে আক্রান্ত, মেডিকেল এক্সপার্টদের মতে।

৮) নিউ ইয়র্ক এর প্রখ্যাত হেলথ সাইকোলজিস্ট জেনিফার হে'এর মতে, বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষই ডাক্তারের কাছে যেতে বা যেকোন টেস্ট করাতে প্রচন্ড ভয় পায়, তাদের এই ভয়ের জন্যে তারা ডাক্তারখানায় না যাওয়ার প্রচুর অজুহাত বানায়। এটা বিরল কোন টেন্ডেসী নয়, এটা খুবই কমন এক মানসিক অসুখ যার নাম "হোয়াইট কোট সিন্ড্রোম"। এই অসুখে আক্রান্ত মানুষের ডাক্তারখানায় এলেই ব্লাড প্রেসার বাড়তে থাকে, ঘাম হতে থাকে প্রচুর ৷ তবে এই অসুখের চিকিৎসা সম্ভব। আর চিকিৎসা করানোও উচিত, কারন সাইকোলজিস্টদের মতে গোটা বিশ্বে প্রায় ২০% মানুষ এই মানসিক অসুখে ভুগছে এখনো।

৯) "মিন ওয়ার্ল্ড সিন্ড্রোম" হল মানবজাতির আরেকটি কমন মানসিক অসুখ। এই অসুখে মানুষ মিডিয়া দ্বারা প্রচারিত হিংসামূলক খবর বা কনটেন্ট দেখে এতই আতংকিত হয়ে পড়ে যে তাদের দৈনন্দিন জীবন নষ্ট হয়ে যায়৷ এরা সবসময়ই মনে করে এই বিশ্ব খুব ভয়ংকর এক জায়গা এবং বিশ্বে ভাল কিছুই নেই আর। মানে এরা চাইলেও সমাজের ভাল বা উন্নত দিকগুলো দেখতে পায় না আর।

১০) একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে আমাদের গোটা মানবজাতির ৬৮% লোক আক্রান্ত এক অদ্ভুত ও কমন মানসিক অসুখ "ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিন্ড্রোম" এ। এই অসুখে মানুষের মনে একটি বিচিত্র সেনসরি হ্যালুসিনেশন কাজ করে, তারা সবসময় মনে করে তাদের ফোন ভাইব্রেট করছে বা রিং হচ্ছে বোধহয়।

**** আজ এ অব্দিই থাকুক। কেমন লেগেছে কমেন্টে জানিও অবশ্যই। আমি তোমাদের ফিডব্যাকের অপেক্ষায় থাকলাম। ❤🙏

"আর দেড় ঘন্টার অক্সিজেন বাকি"- ইতিমধ্যে হয়ত সমগ্র বিশ্ব জেনে গেছে সমুদ্রের গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া হতভাগ...
22/06/2023

"আর দেড় ঘন্টার অক্সিজেন বাকি"

- ইতিমধ্যে হয়ত সমগ্র বিশ্ব জেনে গেছে সমুদ্রের গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া হতভাগ্য সাবমেরিন "টাইটানের" মিসিং এর খবরটা। রোববার বিশ্বের ৫ জন ধনকুবের যাত্রীকে নিয়ে সাবমেরিন টাইটান যাত্রা শুরু করে। উদ্দেশ্য ছিল টাইটানিক পরিদর্শন। বাদ সাধে আটলান্টিকের প্রতিকূল আবহাওয়া ও যাত্রীদের দুর্ভাগ্য। রোববার থেকে চার দিন কেটে গেছে। এখনো সেই সাবমেরিনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই প্রসঙ্গে সারা বিশ্বের মিডিয়া ঘন্টায় ঘন্টায় নতুন আপডেট জানাচ্ছেন। আসুন জেনে নি এই মূহুর্তের আপডেট কি এবং জেনে নিই আসলে কি ঘটনাটা কি....

** মাত্র কয়েক ঘণ্টার অক্সিজেন মজুত রয়েছে। প্রায় ফুরিয়ে গিয়েছে খাবার ও পানীয় জলও। টাইটানিকের (Titanic) ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া ডুবোজাহাজের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক বলেই মত উদ্ধারকারীদের। একাধিক দেশের নৌসেনা, যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে রোবটকেও। উদ্ধারকাজের দ্বিতীয় দিনে আরও বেশি পরিমাণে জাহাজ কাজে লাগানো হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। তবে এখনও সাবমেরিনে প্রাণের স্পন্দন রয়েছে বলেই উদ্ধারকারীদের অনুমান।

গত রবিবার থেকেই টাইটান নামে ওই সাবমেরিনটির (Titan Submarine) কোনও খোঁজ মিলছে না। ৯৬ ঘণ্টার মতো অক্সিজেনের ভাণ্ডার নিয়ে জলের তলায় ডুব দিয়েছিল সাবমেরিনটি। তারপরে টানা তিনদিন ধরে ব্যাপক তল্লাশি সত্ত্বেও এখনও উদ্ধারকারীরা বুঝতেই পারেননি, জলের তলায় ঠিক কোন জায়গায় সাবমেরিন আটকে রয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক খানি সময় কেটে গিয়েছে জলের তলায়। ফলে উদ্ধারকারীদের অনুমান, মজুত থাকা অক্সিজেন, খাবার, পানীয় জল- সব কিছুই ফুরিয়ে আসছে সাবমেরিনে। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজে গতি আনতে বুধবার থেকে আরও বেশি সংখ্যক জাহাজ নামানো হয়েছে। জলের তলায় পাঠানো হয়েছে বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন রোবটও। মঙ্গলবারই উদ্ধারকারীরা দাবি করেছিলেন, প্রতি আধঘণ্টা অন্তর নিখোঁজ সাবমেরিন থেকে আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। সেই আওয়াজ অনুসরণ করে সাবমেরিনের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। এহেন পরিস্থিতিতে আশঙ্কা, বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদই অক্সিজেনের পরিমাণ একেবারে শেষ হয়ে যাবে।

সাবমেরিনের এই বিপর্যয়ের পরেই প্রশ্ন উঠছে এই অভিযানের আয়োজক সংস্থার ভূমিকা নিয়ে। বিপুল অর্থের বিনিময়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওশানগেট নামে একটি সংস্থা। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়ে উত্তর আটলান্টিকের (Atlantic Ocean) প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই বিপজ্জনক থাকে। জলের তলায় ব্যাপক কুয়াশার কারণে প্রায় কিছুই দেখা যায় না। সব জেনেও কেন এই সময়ে টাইটানিক দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

রিসেন্ট আপডেট- ২২শে জুন বিকেল ৩.৩৮ এর আপডেট অনুযায়ী - বলা হয়েছিল সাবমেরিনটিতে ৯৬ ঘন্টার অক্সিজেন মজুত আছে। কিন্তু এই মূহুর্তের খবর হল আর মাত্র দেড় ঘন্টা মত বাকি আছে এই ৯৬ ঘন্টার ডেডলাইন শেষ হতে। প্রচুর তদন্তকারী ভেসেল ও এক অত্যাধুনিক ফরাসী ডাইভ-ইন রোবোট এখনো তন্নতন্ন করে তল্লাশী চালাচ্ছে উত্তর আটলান্টিকের গভীরে।

সমুদ্রের কাছে আমরা সবাই খুবই অসহায়। সেই হতভাগ্য মানুষগুলির জন্যে প্রার্থনা ছাড়া আর কিছুই করার নেই আমাদের। আশা খুবই ক্ষীন তবুই চাই মানুষগুলো অন্তত বেঁচে ফিরে আসুক তাদের পরিবারের কাছে।

ঈশ্বর সহায় হও....🙏

20/06/2023

পাঠকবন্ধুরা একটু জানাবেন...
পেজের লেখাগুলো কি আপনাদের টাইমলাইনে আসছে ঠিকঠাক??

🙏

"" জগন্নাথ দেবের প্রাচীন পুরাণ কাহিনী ""- আজ রথযাত্রা। সমস্ত বন্ধুদের জানাই রথযাত্রার অনেক শুভেচ্ছা। আজ সমস্ত দেশবাসীর ক...
20/06/2023

"" জগন্নাথ দেবের প্রাচীন পুরাণ কাহিনী ""

- আজ রথযাত্রা। সমস্ত বন্ধুদের জানাই রথযাত্রার অনেক শুভেচ্ছা। আজ সমস্ত দেশবাসীর কাছে এক পরম পুন্যতিথি। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে আজ লাখো লাখো ভক্তের সমাগম।

এই রথযাত্রা উৎসবটি প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট সময়ে উদযাপিত হয়ে থাকে। রথযাত্রার নানা কাহিনী প্রচলিত রয়েছে, যেগুলোর সাথে জড়িয়ে আছে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের নাম। প্রথমেই জানিয়ে রাখি জগন্নাথ এবং বিষ্ণু, শ্রীকৃষ্ণেরই দুই রূপ। বলরাম বা বলভদ্র, শ্রীকৃষ্ণ বা জগন্নাথ এবং সুভদ্রাদেবী এই তিনজন একে অপরের ভাইবোন। পুরাণে এমনটা বর্ণিত যে, তাদের তিন ভাইবোনের ঘনিষ্ঠ এবং স্নেহপরায়ণ সম্পর্কের জন্যই তাঁরা পূজনীয়। রথযাত্রাও তাদেরকে কেন্দ্র করেই।

তবে রথযাত্রার পুরাণ নিয়ে অন্যকোনো দিন আলোচনা হবে। আজ আমরা জেনে নেব স্বয়ং জগন্নাথ দেবের পুরাণ কাহিনী। কিভাবে নির্মাণ হয়েছিল পুরীর জগন্নাথ মন্দির আর কিভাবেই বা জগন্নাথ দেবের বিগ্রহ সেই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল!! আজ আমরা সেই পুরাণ কাহিনী নিয়েই কথা বলব:-

স্কন্দপুরাণ থেকে জানা যায়, প্রাচীন ভারতের মালব রাজ্যের অবন্তী নগরের রাজা ছিলেন ইন্দ্রদ্যুম্ন। তিনি প্রবল বিষ্ণুভক্ত ছিলেন। সেই সময় ইন্দ্রদ্যুম্নকে সমগ্র মালব রাজ্যের শ্রেষ্ঠ রাজা আখ্যা দেওয়া হত কারন তার মত ধীর, স্থিরমতি,ধার্মিক, প্রিয়ভাষী ও প্রজাবৎসল রাজা আর কেউ ছিল না। রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের আমলে অবন্তী নগরও সুখ সম্পদে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু এহেন অবস্থাতেও রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের মনে সুখ ছিল না। তিনি জগতের সমস্ত সুখ আহ্লাদের প্রতি মোহহীন ছিলেন। তার একমাত্র আকাঙ্ক্ষা ছিল মাধব অর্থাৎ শ্রীবিষ্ণুর দর্শন লাভ করা। তিনি এই আশায় সমুদ্রের পূর্ব দিকে এক তীর্থক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করেন যার নাম ছিল শ্রীক্ষেত্র (বর্তমানে যার নাম পুরী বা নীলাচল)। কিন্তু সেই তীর্থের মন্দিরে বিগ্রহ ছিল না কোনো।

শ্রী বিষ্ণুর দর্শন লাভের আশায় ইন্দ্রদ্যুম্ন এক বিশাল যজ্ঞের আয়োজন করেন। সেখানে হঠাত এসে উপস্থিত হন এক দিব্যকান্তি পন্ডিত। তিনি রাজার মনের ইচ্ছের কথা জানতে পেরে তাকে বলেন- ""হে রাজন , আমি শিশুকাল হতে বহু তীর্থ দর্শন করেছি। এই পৃথিবীর পূর্ব ভাগে পুরুষোত্তম ধাম নামে এক উত্তম ক্ষেত্র আছে। সেখানে নীল নামে এক পর্বত আছে যা এক সমৃদ্ধ বন দ্বারা পরিবেষ্টিত । তার মধ্যভাগে কল্পবৃক্ষ রূপ অক্ষয়বট আছে , প্রাজ্ঞেরা বলেন তার ছায়াতলে ব্রহ্ম হত্যা জনিত পাপ ক্ষয় হয়। তার পশ্চিমে রৌহিণ নামে এক কুন্ড আছে। তার সম্মুখে ভগবান বাসুদেবের নীলকান্তমণিময় এক অদ্ভুত চমৎকার বিগ্রহ অধিষ্ঠিত, যার নাম নীলমাধব। শোনা যায় , সেই বিগ্রহ দর্শনমাত্র কেউ যদি সেই কুণ্ডের জল স্পর্শ করে , তবে তিনি তৎক্ষণাৎ মুক্তি লাভ করেন।"" একথা বলেই সেই জ্ঞানী পুরুষ হঠাত অন্তর্ধান হয়ে যান।

এদিকে একথা শোনামাত্র চঞ্চল হয়ে ওঠেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন। তিনি তৎক্ষনাৎ ডেকে পাঠান তার পুরোহিতের ভাই পন্ডিত বিদ্যাপতিকে। এবং তাকে বলেন তুমি এক্ষুনি পূর্ব দিকে যাও, এবং খুঁজে বার করো সেই নীলমাধবের মন্দির। আমি তোমার আগমনের প্রতীক্ষায় থাকব। যেভাবে হোক সেই বিগ্রহ নিয়ে এসো, আমার শ্রীক্ষেত্রে আমি ধুমধাম করে তা প্রতিষ্ঠা করব। বিদ্যাপতি রাজার আদেশ মাথায় নিয়ে মাধবকে স্মরন করে লোকজন সহ পূর্বদিকে যাত্রা শুরু করেন।

কিন্তু স্বয়ং বিষ্ণু কি এত সহজে দেখা দেন!!নীলমাধবকে খুজতে খুজতে ক্লান্ত হয়ে সব লোকজন আস্তে আস্তে হাল ছেড়ে ফিরে গেল। কিন্তু হতাশ হননি একমাত্র বিদ্যাপতি। তিনি পূর্বের সব অঞ্চলগুলিতে খোঁজ করতে করতে অবশেষে এক জঙ্গলে পথ হারান। এরপর এই কাহিনীতে প্রেমের ছোঁয়া লাগে। জঙ্গলে দিকভ্রান্ত ও পরিশ্রান্ত বিদ্যাপতিকে উদ্ধার করলেন সেই অঞ্চলে রাজত্ব করা শবর প্রজাতির রাজা বিশ্ববসুর কন্যা ললিতা। ললিতার সেবায় সুস্থ হয়ে ওঠেন বিদ্যাপতি। এরপর আস্তে আস্তে দুজনের ভাব গড়ে ওঠে যা প্রেমে পরিনত হয় একসময়। ললিতা বিদ্যাপতির সাথে তার পিতা শবররাজ বিশ্ববসুর সাথে পরিচয় করান। বিশ্ববসুর কাছ থেকেই বিদ্যাপতি জানতে পারেন শবররা বহু যুগ ধরেই তাদের আরাধ্য নীলমাধবের পুজো করে আসছে। এরপর দিন গড়াতে থাকে। ললিতা ও বিদ্যাপতির বিবাহ হয়। বিয়ের পরে বিদ্যাপতি দেখে তার শ্বশুর বিশ্ববসু রোজ সকালে স্নান করে একা কোথাও বেড়িয়ে যান। বিদ্যাপতি বুঝতে পারে বিশ্ববসু নীলমাধবের পুজো দিতে যান রোজ। তিনি শবররাজাকে একদিন বলেন তাকেও সাথে করে নিয়ে যেতে। কিন্তু বিশ্ববসু রাজী হয়না। এদিকে বিদ্যাপতিও নাছোড়বান্দা, রাজাকে কথা দিয়ে এসেছেন নীলমাধবের খোঁজ আনবেন। অনেক জোরাজুরির পর একদিন অবশেষে শবররাজা রাজী হয় তার জামাই বিদ্যাপতিকে নীলমাধবের মন্দিরে নিয়ে যাওয়ার জন্যে।

মন্দিরে এসে নীলমাধবকে দেখে ভক্তিতে মাথা নীচু হয়ে যায় বিদ্যাপতির। সাথে সাথেই নিষ্ঠাভরে পুজো করা শুরু করেন তিনি নীলমাধবের। ঠিক তখনই আকাশ থেকে দৈববানী ভেসে আসে- "এতদিন আমি দীন-দুঃখীর পূজো নিয়েছি, এবার আমি মহা-উপাচারে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের পূজো নিতে চাই।’’

পরম আনন্দে মন ভরে যায় বিদ্যাপতির। নীলমাধব যখন স্বয়ং রাজা ইন্দ্রদুম্ন্যের পূজো নিতে চান, তখন কি আর দেরি করা যায়? চটজলদি খবর পাঠানো হলো রাজা ইন্দ্র্যদ্যুম্নের কাছে। রাজা বিস্ময়ে মহানন্দে সব ব্যবস্থা করে হাজির হলেন জঙ্গলের মাঝে নীলমাধবকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু জঙ্গলে পৌঁছনো মাত্রই আর কোনো খোঁজ পাওয়া গেলো না নীলমাধবের। নীলমাধবের এহেন আকস্মিক অন্তর্ধানের ঘটনায় রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন একবারে ভেঙে পড়লেন। তিনি শয্যাশায়ী হয়ে পড়লেন। তিনি ভাবলেন প্রভু মাধবের দর্শনই যখন পেলাম না এ জীবন রেখে কি লাভ আর। এইসময় দেবর্ষি নারদ রাজার সামনে প্রকট হলেন ও বললেন- " হে রাজন তুমি নিশ্চিন্ত থাকো। প্রভু মাধব দারুব্রহ্ম রুপে তোমার পুজো নেবেন ও তোমায় দেখা দেবেন"। এই কথা শুনে রাজা একটু স্বাভাবিক হলেন। এরপর একদিন রাজার স্বপ্নে এলেন শ্রী বিষ্ণু, তিনি রাজাকে বললেন- "তুমি আমার পরম ভক্ত আর দেবতা কি ভক্তকে ছাড়া থাকতে পারে। তাই আমি সমুদ্রে দারুব্রহ্ম রুপে ভাসতে ভাসতে তোমার নিকট আসছি, তুমি শ্রীক্ষেত্রে এক দিব্যমন্দির প্রতিষ্ঠা করো"।

রাজা একথা শুনে তাড়াতাড়ি সমুদ্রতীরে যান ও দেখেন সত্যিই দারুব্রহ্ম নামক কাঠ ভেসে এসছে। রাজা তখন হাতি দিয়ে সেই কাঠ ওঠানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সেই কাঠ একচুলও নড়ানো যায়না। দুঃখী মনে ফিরে আসেন রাজা। সেই রাতে ভগবান আবার তাকে স্বপ্ন দিয়ে বলেন- " শবররাজ বিশ্ববসু পারবেন এই দারুব্রহ্ম তুলতে। তুমি শবররাজাকে নিয়ে এবং একটি স্বর্ণরথ নিয়ে আসো"। যথারীতি রাজা এক সোনার রথ ও শবররাজাকে নিয়ে সমুদ্রতীরে আবার এলেন। এবার রাজা, বিশ্ববসু ও বিদ্যাপতি তিনজন মিলে সেই দারুব্রহ্ম সোনার রথে চাপিয়ে সংকীর্তন করতে করতে গুন্ডিচ্চা মন্দিরের দিকে যাত্রা শুরু করলেন। সেখানে তিনি এক দিব্যমন্দির বানান। এবার নারদমুনির আদেশ মত তিনি সেই দারুব্রহ্ম দিয়ে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি বানানোর জন্যে কাঠ কাটার লোকদের ডেকে পাঠান। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে কুড়াল, ছেনি বা হাতুড়ি কোনটাই কাঠটিকে কাটতে পারেনা। উল্টে সেগুলি ভেঙ্গে যায়। রাজা আবার চিন্তায় পড়ে যায়।

সেই সময় মন্দিরে এক সাধারন মানুষ আসে। আসলে তিনি ছিলেন দেবতা বিশ্বকর্মা। বিষ্ণুর আদেশে তিনি মনুষ্য রুপে এসেছিলেন। তো তারপর বিশ্বকর্মা এসে রাজাকে বলে যে তার নাম অনন্ত মহারানা। এবং সে একজন মূর্তি কারিগর। এবং সে রাজাকে এও বলে যে সে এই কাঠ দিয়ে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি বানাতে পারবে। তবে তার একটি বিশাল ঘর ও ২১ দিন সময় লাগবে। তবে শর্ত একটাই এই ২১ দিন তাকে বিরক্ত করা যাবেনা ও সেই ঘরে কেউ প্রবেশ করতে পারবেনা। রাজা মেনে নেয় তার কথা।

এইভাবে ১৪ দিন কেটে যায়। সেই ঘরটি থেকে কোন শব্দ না পেয়ে রাণীর মনে কৌতুহল জাগে। থাকতে না পেরে তিনি দরজা খুলে ঘরে ঢুকে পড়েন। কিন্তু ভিতরে ঢুকে তিনি যা দেখলেন তা দেখে তিনি ভিরমি খেয়ে পড়ে গেলেন। তিনি দেখলেন ঘরে কারিগর উধাও এবং সাথে তিনটি অর্ধসমাপ্ত মূর্তি বানানো রয়েছে। রাজার কাছে খবর যায়। রাজা এসে দেখলেন হ্যা সত্যিই মূর্তি তিনটি অসমাপ্ত। মূর্তিগুলোর গোল গোল চোখ, না আছে হাত না আছে পা, সাথে গায়ের রং হলুদ। এই ঘটনার পর রাজা রানী দুজনেই অনুশোচনা আর শোকে বিহবল হয়ে পড়লেন। তারা ভাবলেন, শর্ত খণ্ডনের ফলেই বুঝি এত বড় শাস্তি পেলেন তারা। সেই রাতেই ভগবান বিষ্ণুর স্বপ্ন পেলেন রাজা। ভগবান তাকে বললেন- "আমার আদেশেই দেবশিল্পী মূর্তি বানাচ্ছিলেন, তবে কাজে বিঘ্ন ঘটায় আমার রুপ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তবে তাতে অসুবিধে নেই। আমি এই রুপেই তোমার পুজা নিতে চাই ও পূজিত হতে চাই। তবে শবররাজা বিশ্ববসু আমার পরম ভক্ত। বহু বছর ধরে আমার পুজো করছেন তিনি। তাই বংশ পরম্পরা ধরে বিশ্ববসুই আমার পুজো করবে এবং বিদ্যাপতি ও ললিতার সন্তান ও তাদের বংশধররা আমার ভোগ রান্না করবে।"

এভাবেই জগন্নাথ দেবের আবির্ভাব হয় শ্রীক্ষেত্র বা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। যুগে যুগে জগন্নাথদেবের মূর্তির রূপ নিয়ে মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন জাগে। কেন হস্তপদবিহীন দেহ তাঁর, কেন এমন অদ্ভুত তাঁর অবতার? এই প্রসঙ্গে স্বয়ং দেবতার কিছু বিশ্লেষণ দেখা যায়। কঠোপনিষদে বলা হয়েছে, “না আত্মানং রথিনংবিদ্ধি শরীরং রথমেবতু”। অর্থাৎ, এই দেহই রথ আর আত্মা দেহরূপ রথের রথী। ঈশ্বর থাকেন অন্তরে। তার কোনো রূপ নেই। তিনি সর্বত্র বিরাজমান। বেদ বলছে, “অবাঙমানসগোচর”। অর্থাৎ, মানুষ বাক্য এবং মনের অতীত। মানুষ তাই তাকে মানবভাবে সাজায়। এ বিষয়ে কৃষ্ণ যজুর্বেদিয় শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের তৃতীয় অধ্যায়ে বলা হয়েছে-

‘‘অপাণিপাদো জাবানো গ্রহীতা
পশ্যত্যচক্ষুঃ স শৃণোত্যকর্নঃ ।
স বেত্তি বেদ্যং ন চ তস্যাস্তি বেত্তা
তমাহুরগ্র্যং পুরুষং মহান্তম্’’ ।।

অর্থাৎ, তার লৌকিক হস্ত নাই, অথচ তিনি সকল দ্রব্য গ্রহণ করেন। তার পদ নাই, অথচ সর্বত্রই চলেন। তার চোখ নাই, অথচ সবই দেখেন। কান নাই, কিন্তু সবই শোনেন। তাকে জানা কঠিন, তিনি জগতের আদিপুরুষ। এই জগন্নাথ দেবই বিশ্বাত্মা, তার রূপ নেই, আকার নেই। উপনিষদের এই বর্ণনার প্রতীক রূপই হলো পুরীর জগন্নাথদেব। তার পুরো বিগ্রহ তৈরি করা সম্ভব হয়নি, কারণ তার রূপ তৈরিতে মানুষ অক্ষম। শুধু প্রতীককে দেখানো হয়েছে মাত্র।

**** এই ছিল জগন্নাথ দেবের অলৌকিক পুরাণ কাহিনী ও ইতিহাস। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। যদি ভালো লাগে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

জয় জগন্নাথ....🙏🙏

বিঃদ্রঃ- বিদ্যাপতি/ললিতা/শবররাজ এই কাহিনীগুলি স্কন্দপুরাণে পাওয়া যায়নি। এগুলি উড়িষ্যার প্রাচীন লোকগাথাতে পাওয়া গেছে। এই পুরো লেখাটি স্কন্দপুরাণ ও প্রাচীন লোকগাথাকে মিশ্রণ করেই লেখা হয়েছে।

"প্রাচীন মিশরের অদ্ভুতুড়ে আইন কানুন ও তদন্ত পদ্ধতি"- বিশ্বের প্রতিটি দেশেই চুরি-ডাকাতি কিংবা খুনের মতো অপরাধ কম-বেশি হয়...
15/06/2023

"প্রাচীন মিশরের অদ্ভুতুড়ে আইন কানুন ও তদন্ত পদ্ধতি"

- বিশ্বের প্রতিটি দেশেই চুরি-ডাকাতি কিংবা খুনের মতো অপরাধ কম-বেশি হয়ে থাকে। এসব অঘটন প্রতিরোধ কিংবা সঠিক অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য রয়েছে তদন্তকারী সংস্থা কিংবা স্থানীয় প্রতিনিধি, রয়েছে প্রশাসনিক নানা নিয়ম-কানুন। এ ধরনের অপরাধ এখন যেমন হয়, হাজার বছর আগেও তেমন হতো। প্রাচীনকালে ডিএনএ টেস্ট বলে কিছু ছিল না। এখনকার গোয়েন্দারা অত্যাধুনিক অনেক যন্ত্রপাতির সাহায্য নিতে পারেন, যার মাধ্যমে পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য এবং সূত্র।

অতীতে এই ব্যাপারগুলো এতটা সহজ ছিল না। তাই কোনো অঘটন ঘটলে প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করা ছিল অনেক দুরুহ একটি কাজ। তাছাড়া তখন অপরাধের জন্য শাস্তির ধরনও ছিল ভিন্ন। প্রাচীন মিশরের কথাই ধরা যাক। অপরাধীদেরকে ধরার জন্য তারা বেশ কিছু পন্থা উদ্ভাবন করেছিল যা এখনকার মানুষের কাছে অদ্ভুত মনে হতে পারে। সেই পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে আজ আমরা জানবো:-

** দুর্নীতির প্রশ্রয়, আইনগত দিক থেকে ধনী কিংবা ক্ষমতাবান লোকদের বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং স্বজনপ্রিয়তার (নেপোটিজম) ব্যাপারগুলো প্রাচীন মিশরেও ছিল। তারপরও সাধারণ মানুষের অভিযোগগুলো বেশ গুরুত্ব সহকারে আদালতে বিবেচনা করা হতো। তখন অধিকাংশ মিশরীয়ই ছিল গরীব এবং সেই কারণে ছোটখাট চুরিও তাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার ছিল। একটি সাধারন অভিযোগপত্র থেকে ব্যাপারটা বুঝতে পারা যায়:- ""নখু-এম-মাউতের কর্মীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছি আমি। তারা আমার ঘরে ঢুকে দুটি বড় রুটি, তিনটি কেক এবং পাত্রে রাখা সমস্ত ভুট্টা চুরি করে। এছাড়া একটি তেলের বয়াম থেকে তেল মাটিতে ফেলে দেয়, বিয়ারের একটি বোতল ভেঙে ফেলে। তখন আমি আমার বাবার রুমে ছিলাম, তাই বুঝতে পারিনি। শেমু মৌসুমের তৃতীয় মাসে, ১২তম দিনে ঘটলো এই ঘটনা। এখন মহান রা আমেন হটেপের শাসনামল এবং আমি মনে করি তিনি এর বিচার করবেন। হে আমার রাজা, চুরি করা যা-ই হোক না কেন, তা আমাকে ফেরত দেওয়া হোক।""

এ ধরনের অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করা হতো। তবে অপরাধ সংঘটিত হবার আগেই যাতে তা প্রতিরোধ করা যায় সেজন্য বেশ কিছু উপায় বের করেছিল মিশরীয়রা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন সমাধি কিংবা ব্যস্ত বাজারগুলোতে সর্বদা প্রহরী নিযুক্ত থাকতো যাতে কেউ আইন অমান্য করতে না পারে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, তাদের সাথে থাকতো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বানরও! এই বানরেরা কাউকে চুরি করতে দেখলেই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তো এবং তার পা টেনে ধরে মাটিতে ফেলে দিতো। যতক্ষণ না পুলিশ আসতো, ততক্ষণ পর্যন্ত বেচারা চোরের উপর চলতো প্রশিক্ষিত বানরের আক্রমণ।

- রাজা তৃতীয় রামসেস আততায়ীর হাতে মারা যান। তার হত্যাকারীদের বদলে প্রত্যক্ষদর্শীদের আদালতে ডাকা হয়। রাজার সব সহকারী এবং চাকর-বাকরদেরকেও আদালতে হাজির করা হয়েছিলো। কেন তারা হত্যার খবর সাথে সাথে পুলিশকে জানায়নি, এটাই ছিল তাদের অপরাধ। তখনকার আইনানুসারে, এই ব্যর্থতা খুবই গুরুতর অপরাধ হিসেবে দেখা হতো। পরবর্তীতে মিশরের আদালত তাদের সবার কান কেটে ফেলার নির্দেশে দেয়। ৩৮ জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল সেই হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করার অপরাধে, যদিও রাজার এক স্ত্রী ছিলেন এই হত্যা ষড়যন্ত্রের মূল হোতা।

কথিত আছে, একবার কুখ্যাত একটি ডাকাত দল মমি লুট করার ষড়যন্ত্র করছিল। সেই দলেরই এক সদস্য ষড়যন্ত্রের কথা পুলিশকে জানিয়ে দেয়! পরবর্তীতে সে স্বীকার করে, শাস্তির ভয়েই এ কাজ করেছিলো সে।

কেউ সাক্ষী কিংবা অপরাধী কোনো তথ্য দিতে রাজি না হলে পুলিশ কিন্তু ভদ্রভাবে বসে থাকতো না। পুলিশ যতক্ষণ না পর্যন্ত কথা আদায় করে নিতে পারে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে প্রহার করতো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দড়ি দিয়ে বেঁধে একাধিক রড দিয়ে নির্মমভাবে মারার প্রচলন ছিল। অনেক সময় মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে যেত এসব সন্দেহভাজন।

শুরুতে অবশ্য বলা হতো, কীভাবে তাদেরকে নির্যাতন করা হবে। এভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে তথ্য বের করার চেষ্টা করা হতো। তখনকার দিনে কোনো ধর্মীয় পুস্তক ছুঁয়ে সাক্ষীদের শপথ করানোর প্রচলন ছিলো না। বরং তাদের বিচারকের সামনে বলতে হতো মিথ্যা বললে কী ভয়ংকর শাস্তি তারা মাথা পেতে নেবে।

এছাড়াও অনেক সন্দেহভাজন ব্যক্তির পুত্র-কন্যা, স্ত্রী কিংবা দাস-দাসীদের ধরে নিয়ে যাওয়া ছিল সাধারণ ব্যাপার। কারণ তারা মনে করতো এসব লোকজন অপরাধীদের আড়াল করতে চাইবে। এসব পদ্ধতি বর্তমানে বেশ বর্বর মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে মিশরীয়রা বুঝতে পেরেছিলো, জোর করে আদায় করা স্বীকারোক্তিগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

যে কারণে তারা অপরাধের পটভূমি সূক্ষ্মভাবে খতিয়ে দেখতো, যাতে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সাক্ষী শুধু তাদের মনমতো কিছু বানিয়ে বলছে না। একাধিক সাক্ষী থাকলে তাদেরকে আলাদা রুমে নিয়ে গিয়ে জেরা করা হতো এবং সবার জবানবন্দী মিলিয়ে দেখা হতো। কারণ সবার জবানবন্দী মিলে গেলে মোটামুটি ধরে নেয়া যায় যে, সব সাক্ষী সঠিক কথা বলছে।

একবার এক লোক কবর লুটের কথা স্বীকার করলো। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, সেই সময়ে কবরে মৃতদেহের সাথে মৃত ব্যক্তির ব্যবহার করা মূল্যবান জিনিসপত্র দিয়ে দেয়ার প্রচলন ছিল। মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো, মৃত ব্যক্তি এসব জিনিসপত্র ব্যবহার করবে। রাজারা মারা গেলে সেবা করার জন্য তাদের দাস-দাসীদেরকেও জীবন্ত কবর দেয়া হতো। যা-ই হোক, স্বীকারোক্তি পাওয়ার পর সেই লোককে চোখ বেঁধে উপত্যকায় নিয়ে যাওয়া হলো, যেখানে সারি বেঁধে রয়েছে অনেকগুলো কবর। এরপর তাকে খুঁজে বের করতে বলা হলো কোন কবর লুট করেছিলো তার দল। এভাবে সাক্ষীর বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা হতো।

পরকীয়া কেসে মিশরের প্রাচীন আদালত ছিল অত্যন্ত কঠোর। যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ আনতে পারতো। প্রাচীন মিশরে ব্যাভিচারের শাস্তি ছিল ভয়ানক এবং স্বাভাবিকভাবেই নারীরাই ছিল এর প্রধান শিকার। স্বামীর সাথে প্রতারণা করলে নারীদের নাক কেটে ফেলা হতো এবং অনেক ক্ষেত্রে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হতো। তবে নারীদের মতো ব্যাভিচারী পুরুষদের শাস্তি এত কঠোর ছিল না। ডিভোর্স এর সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর কিংবা বেশি হলে বেতের বাড়ি এতটুকুই ছিল তাদের শাস্তি। তবে এই গুরুতর ব্যাপারটির উপর কিন্তু প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ছিল সামান্যই। অনেক সময় জনতাই অভিযুক্ত নারী কিংবা পুরুষের বিচারের ভার নিজ হাতে তুলে নিত।

একবারের মতো অপরাধীর খাতায় যার নাম উঠে যেতো, সেই দুর্নাম কিন্তু ঘুচতো না কখনো। এমনকি পুরোপুরি নির্দোষ প্রমাণিত হলেও সমাজ তাদেরকে পুরোপুরি ভিন্ন চোখে দেখতো। একবার এক লোককে তার অপরাধ স্বীকার করানোর জন্য নির্মমভাবে মারা হচ্ছিলো, কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও স্বীকারোক্তি আদায় করা গেলো না। শেষমেষ পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলো ঠিকই, কিন্তু রেকর্ড বইয়ে তার নামের পাশে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তকমার কোনো পরিবর্তন হলো না। এভাবেই সবকিছু চলতো তখন। মনে করা হতো, যখন একবার যেহেতু কেউ সন্দেহের তালিকায় এসে গেছে, তার মানে এর পেছনে অবশ্যই তার কোনো দোষ আছে। ‘যা রটে, তা কিছু ঘটে। আর যা ঘটে, তার কিছু না কিছু রটে’ – প্রাচীন মিশরীয়দের কাছে ব্যাপারটা অনেকটা এরকম আর কী। তার কর্মকান্ড সব পুলিশের নজরে থাকতো।

এতক্ষণ ধরে যে পদ্ধতিগুলোর কথা বলা হলো, ১০০০ খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত মিশরীয়রা এভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করতো। সেই পদ্ধতিগুলোর কিছু দিক নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থাকলেও সেই সময়ের কথা বিবেচনা করলে খুব একটা অদ্ভুত মনে হবে না ব্যাপারগুলো। কিন্তু এরপর তারা যা করেছিল সেটা ছিল অত্যন্ত হাস্যকর একটি ব্যাপার। মিশরীয় শাসনামলের শেষদিকে ক্ষমতায় আসে আমুনের যাজকেরা। বলতে গেলে, পুরো বিচারব্যবস্থা তারা তুলে দেয় আমুনের এক মূর্তির কাছে!

যখনই কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসতো তখনই সেই মূর্তিটিকে জিজ্ঞাসা করা হতো আসলেই সেই ব্যক্তি দোষী কিনা। মূর্তিটি যদি একটু সামনে আগাতো এর অর্থ হচ্ছে ‘হ্যাঁ’ এবং একটু পিছনে গেলে তার অর্থ হচ্ছে ‘না’। অবধারিতভাবেই মূর্তিটি নিজে থেকে এসব কিছুই করতো না, কিছু লোক আড়ালে থেকে মূর্তিটি নিয়ন্ত্রণ করে দেবতার ভূমিকা পালন করতো। অনেক ক্ষেত্রে কোনো তদন্তই করা হতো না, ইচ্ছামতো সেই মূর্তির সাহায্যে কাউকে দোষী কিংবা নির্দোষ সাব্যস্ত করা হতো। এভাবে মিশরীয়দের বিচার ব্যবস্থা ধীরে ধীরে প্রহসনে পরিণত হয়েছিল।

*** বন্ধুরা কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন। আমাদের প্রাচীন ইতিহাস চর্চার ব্যাপারটি আপনাদের ভাল লাগলে পোস্টগুলি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ ❤🙏

"মাউন্ট মিহারা আগ্নেয়গিরির ভয়ানক অভিশাপ"•• সময়টা তখন ১৯৩৩ সাল। জাপানের এক স্কুল গার্ল কিয়েকো মাতসুমোতো ১৯ বছর বয়সে প্রেম...
14/06/2023

"মাউন্ট মিহারা আগ্নেয়গিরির ভয়ানক অভিশাপ"

•• সময়টা তখন ১৯৩৩ সাল। জাপানের এক স্কুল গার্ল কিয়েকো মাতসুমোতো ১৯ বছর বয়সে প্রেমে পড়ে তারই এক স্কুলমেট বান্ধবী মাসাকো তমিতার। লেসবিয়ান রিলেশনশিপ তখন কেউ মেনেও নিত না বা সমাজে কেউ স্বীকৃতিও দিত না।
কিন্তু কিয়েকো আর মাসাকো একে অপরকে প্রচন্ড ভালবাসত, বিশেষত কিয়েকো। মাসাতোকে ছাড়া নিজেকে কিছুতেই কল্পনাও করতে পারত না কিয়েকো। একদিকে মাসাতোর থেকে বিরহের যন্ত্রনা আরেকদিকে তাদের রিলেশন নিয়ে সমাজের ক্রমাগত ব্যঙ্গবিদ্রূপ এর ফলে কিয়েকো অদ্ভুত মানসিক ফ্রাস্ট্রেশন এ ভুগতে শুরু করে। অবশেষে সে সিদ্ধান্ত নেয় এই জীবন রাখবে না আর।

১৯৩৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী, কিয়েকো আর মাসাকো জাপানের ইজু ওসিমা দ্বীপের মাউন্ট মিহারার ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি দেখতে যাওয়ার জন্যে সেখানে ঘুরতে যায়। সেই ফুটন্ত আগ্নেয়গিরির রক্তাভ লাভা যার উষ্ণতা ছিল ১২০০°C, সেখানে ১৯ বছরের কিশোরী কিয়েকো মাতসুমোতো হঠাত ঝাপিয়ে পড়ে। নিজের ভালবাসা মাসাকোকে শেষ বারের মত দেখে এভাবেই নিজের জীবন দিয়ে দেয় কিয়েকো।

এর পরেই শুরু হয় মৃত্যুর আসল খেলা। ভালবাসা না পাওয়ার ফলে মাউন্ট মিহারার ফুটন্ত লাভাতে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করা গোটা জাপানে একটা ভয়ংকর ট্রেন্ডে পরিনত হয় কিয়েকোর সুইসাইডের ফলে। অনেক লেজেন্ডসদের মতে, কিয়েকোর অভিশাপ ছিল সেই আগ্নেয়গিরিতে, যা প্রচুর ভালবাসায় ব্যর্থ মানুষদের টেনে আনত। সমীক্ষা অনুযায়ী কিয়েকোর ট্র‍্যাজিক সুইসাইডের পরের কয়েক বছরের মধ্যে প্রায় ৯৪৪ জন মানুষ কিয়েকোর মত একই রকম ভাবে সুইসাইড করে মাউন্ট মিহারার আগ্নেয়গিরিতে ঝাপিয়ে।
যার মধ্যে ৮০৪ জন পুরুষ ও ১৪০ জন নারী ছিল।

এই ট্রেন্ড আস্তে আস্তে কমে যায় ঠিকই। ১৯৩৫ আর ১৯৩৬ এই দুই বছরে প্রায় আরো ৩৫০ জন মানুষ সুইসাইড করে ওখানে। তারপর এই সুইসাইডের হার অনেক কমে যায়,

এই অভিশপ্ত আগ্নেয়গিরি নিয়ে সব চেয়ে আশ্চর্যজনক তথ্য ছিল- এই সুইসাইড গুলো দেখতে মাঝে মধ্যেই নাকি বেশ কিছু মানুষ ভীড়ও জমাতেন জাস্ট কিভাবে মানুষরা ঝাপ দিচ্ছে আগ্নেয়গিরিতে আর লাল লাভায় গলে মিলিয়ে যাচ্ছে এটা দেখার জন্যে। ভাবতে পারছেন? 😱

এই ছিল অভিশপ্ত আগ্নেয়গিরি মাউন্ট মিহারার গল্প। যদি ভাল লাগে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন।
আর পেজটা একটু সাপোর্ট করুন পোস্টগুলি শেয়ার করে 🙏❤

"" হিমালয়ের কঙ্কাল হ্রদের ভয়ংকর রহস্য ""- ১৯৪২ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তখন। ভারতেও এই যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে পুরো...
12/06/2023

"" হিমালয়ের কঙ্কাল হ্রদের ভয়ংকর রহস্য ""

- ১৯৪২ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তখন। ভারতেও এই যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। ব্রিটিশ ভারতে তখন ইংরেজরা সদাসতর্ক জাপানি আগ্রাসনের হুমকিতে। সেরকমই এক সময়ে হিমালয়ের পার্বত্য এলাকাতে প্রায় ষোল হাজার ফুট উচ্চতায় রোজকার মতো টহলে বেরিয়েছেন মাধওয়াল নামে এক বনরক্ষী। শীত শেষ হয়ে এসেছে তখন। চারিপাশটা খুবই মনোরম। তুষার গলে পথঘাট আবার হয়ে উঠছে চলাচলের জন্যে উপযুক্ত। সুতরাং বেশ ফুরফুরে মন নিয়েই চলছেন তিনি।

মাধওয়ালের পথে পড়ে হিমালয়ের রূপকুণ্ড হ্রদ। এই রুপকুন্ড হ্রদের জল বছরের বেশিরভাগ সময়েই হিমালয়ের ঠাণ্ডায় জমে থাকে। বাকি সময় বরফ গলে স্বচ্ছ টলটলে এই হ্রদ তার সমস্ত সৌন্দর্য নিয়ে আবির্ভূত হয়। কাজের চাপে ব্যস্ত থাকার দরুন চলার পথে এই সৌন্দর্য খুব একটা দেখা হয় না মাধওয়ালের। কিন্তু আজ কী এক অজানা কারণে তার দৃষ্টি গিয়ে পড়ল রূপকুণ্ডের দিকে। কিছু অজানা আশংকায় মাধওয়াল হ্রদের একদম সামনে গিয়ে ভালো করে দেখার চেষ্টা করলো। দৃশ্যটা ভাল করে বুঝতে পেরে সাথে সাথেই তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। জলের নিচে ওগুলো কী দেখা যাচ্ছে?

ওগুলো কি কোন প্রানীর হাড়গোড়ের সমষ্টি ???

আতংকিত মাধওয়াল সাথে সাথেই ছুটতে ছুটতে এসে বড়কর্তাদের খবর দিলেন। শুরু হল তদন্ত আর উদ্ধারকাজ। কিন্তু তুষার গলার অপেক্ষা করতে হয়েছিল তাদের। কিছু দিন পরে যখন সমস্ত তুষার গলে গেল তখন প্রায় শ’খানেক কঙ্কাল আবিষ্কার হলো হ্রদের তলদেশে। এবং আশ্চর্যজনক ভাবে সবই মানুষের কঙ্কাল। এই খবর ছড়িয়ে পড়ল আগুনের মত। এর পরেই সুন্দর রূপকুণ্ডের নাম হয়ে গেল "হিমালয়ের কঙ্কাল হ্রদ।"

- রূপকুণ্ড (Roopkund) হল হিমালয়ের একটি ছোট্ট হ্রদ। সাগরসমতল থেকে ১৬,৫০০ ফুট উঁচুতে এর অবস্থান।ভৌগোলিকভাবে রূপকুণ্ড পড়েছে ভারতের উত্তরখণ্ড প্রদেশে, তিব্বতের সীমান্ত এর মাত্র পঁয়ত্রিশ মাইল উত্তরে। মাত্র ১৩০ ফুট চওড়া আর ১০ ফুট গভীর রূপকুণ্ড জনমানবহীন এক অঞ্চলে অবস্থিত। সবথেকে কাছের জনবসতির নাম ওয়ান (Wan)। তা-ও প্রায় পাঁচ দিনের রাস্তা। রূপকুণ্ডের পার্শ্ববর্তী এলাকা কুখ্যাত যখন তখন ওঠা ঝড়ের জন্যে। বছরের বেশিরভাগ সময় তুষারে জমে থাকা পথঘাটও পর্যটকদের বিপদের কারণ। ফলে বহু বছর জনমানুষের আনাগোনা এখানে ছিল না বললেই চলে।

এখন প্রশ্ন হল, এই কঙ্কালগুলো কাদের? আর কোথা থেকেই বা এলো এসব কঙ্কাল?? সেইসময় পরিস্থিতি এমন ছিল যে তৎকালীন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা সবকিছুতেই জাপানিদের ছায়া দেখতে পাচ্ছিলেন। কাজেই প্রাথমিকভাবে তারা মনে করলেন হিমালয় পার হয়ে ব্রিটিশ এলাকায় অতর্কিতে হামলা চালাতে আসা কোনো জাপানি সেনাদল হতে পারে এরা। তবে খুব শীঘ্রই বোঝা গেল- এসব কঙ্কাল এখানে পড়ে আছে কম করে হলেও শ’খানেক বছর। কাজেই জাপানি কোনো সেনাদল এরা হতেই পারে না।

দেশ বিভাগের পর ১৯৫৬ সালে ভারতের কলকাতার নৃতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (Anthropological Survey of India) রূপকুণ্ডে জরিপ পরিচালনার উদ্যোগ নেয়। প্রথম জরিপ বানচাল হয়ে যায় তুষারঝড়ে। দুই মাস পর দ্বিতীয় অভিযানে হ্রদ থেকে বেশ কিছু নমুনা নিয়ে আসা হলো কলকাতায়। কার্বন ডেটিং করে কঙ্কালগুলোর বয়স বের করা হয়। এই পদ্ধতিতে দেখা যায়, এসমস্ত কঙ্কাল ৫০০-৮০০ বছরের পুরনো। উল্লেখ্য, কার্বন ডেটিং তখনও খুব উন্নত ছিল না। এবং কিছু ক্ষেত্রে এর ফলাফল পরবর্তীতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

রূপকুণ্ড নিয়ে ভারতীয় বিজ্ঞানী এবং ওয়াকিবহাল মহলেও বেশ আগ্রহ ছিল। অনেকে ধারণা প্রকাশ করলেন, এরা হয়তো কোনো ধর্মীয় আচার পালনের মানসে নিজেদের একসাথে উৎসর্গ করেছে। কারো কারো মত ছিল, এগুলো ত্রয়োদশ শতাব্দীতে দিল্লির সুলতানের পাঠানো তিব্বতে অভিযান চালাতে যাওয়া সেনাদের দেহাবশেষ। এই তত্ত্বের বিরোধিতা করে আরেকদল দাবি করলেন, এরা সেনাসদস্য না, বরং এরা সাধারণ বণিক যারা তিব্বতে যাচ্ছিলেন। অন্যান্য মতের মধ্যে ছিল, রূপকুণ্ড একসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের কবর দেয়ার স্থান ছিল অথবা কোনো মহামারীতে মৃত্যুবরণকারীদের দেহ এখানে ফেলে দেয়া হয়েছিল।

প্রাচীন কাহিনী যখন তখন এর সাথে জড়িত পুরাণকাহিনীও নিশ্চই আসবে। পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী লোকজনের মুখে বংশপরম্পরায় রূপকুণ্ড নিয়ে একটি পুরানের গল্প চালু আছে। যেমন- হিমালয় এলাকার একটি পবিত্র পর্বতচূড়া হচ্ছে নন্দদেবী। এই নন্দদেবীর দেবীরূপ হল পার্বতী, হিন্দু ধর্মে যাকে শিবের স্ত্রী বলে মনে করা হয়। এবার এই নন্দদেবী/পার্বতীর উদ্দেশ্যে প্রতি বার বছর অন্তর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় তীর্থযাত্রা। হাজার বছরের পুরনো এই ঐতিহ্য তীর্থযাত্রীদের নিয়ে যায় সম্ভবত যেকোনো তীর্থের সবথেকে বিপদজনক পথে। আঁকাবাঁকা সরু পাহাড়ি পথ, বরফঢাকা রাস্তা, ঝড়ঝঞ্ঝা সব অতিক্রম করে পায়ে হেঁটে তীর্থযাত্রীরা পৌঁছান নন্দদেবীর একদম কাছে, হোমকুণ্ডে। এই লম্বা যাত্রার একপর্যায়ে পাহাড়ি পথ ধরে তাদের পার হতে হয় রূপকুণ্ড। এই সরু পথ উঠে গেছে পাহাড়ের গা বেয়ে, হ্রদের ঠিক উপর বরাবর। একটু এদিক ওদিক হলেই পা ফসকে পড়তে হবে হ্রদের বরফশীতল জলেতে।

আঞ্চলিক উপকথা বলে, একবার পার্বতী বহু দূরের এক রাজ্যে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেখানকার রাজা-রানি তার সাথে দুর্ব্যবহার করলে দেবী রাগান্বিত হন। তার অভিশাপে রাজ্যে নেমে আসে খরা, দুর্ভিক্ষসহ নানা দুর্যোগ। অনন্যোপায় রাজা শাপমোচনের জন্য দেবীর উদ্দেশ্যে তীর্থযাত্রার আয়োজন করেন। কিন্তু বিলাস-ব্যসনে অভ্যস্ত রাজকীয় শরীর কি কঠিন এই ভ্রমণ সইবে? রাজা তাই সাথে নেন জাঁকজমকের সকল আয়োজন। তার মনোরঞ্জনের জন্য নর্তকীদেরও স্থান হয় সেই দলে।

দেবী রাজার কাণ্ডকারখানা দেখে আরো রেগে গেলেন। রূপকুণ্ডের সরু রাস্তা বেয়ে যাবার সময় নর্তকীদের ধাক্কা দিয়ে তিনি ফেলে দিলেন পাতালপুরীতে (মতান্তরে তাদের পরিণত করলেন পাথরে)। এরপর তার পাঠানো ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে রাজাসহ তার সফরসঙ্গীদের সলিল সমাধি হলো রূপকুণ্ডে। তাদের কঙ্কাল দেবী রেখে দিলেন ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সতর্ক সংকেত হিসেবে, কেউ যেন দেবীকে ক্রোধান্বিত না করে।

-- অনেক বছর ধরে রূপকুণ্ড পাশ্চাত্যের কাছে অচেনা ছিল। ১৯৭০ সালে উইলিয়াম স্যাক্স নামে নৃতত্ত্বের এক ছাত্র ভাগ্যগুণে কিছু ভারতীয় বই পড়তে গিয়ে রূপকুণ্ডের ব্যাপারে জানতে পারেন। মহা উৎসুক হয়ে এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে তিনি ওয়ানে এসে হাজির হন। স্থানীয় এক গাইড তাদের হ্রদের রাস্তা দেখিয়ে দেয়। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর ঝড় ঠেলে স্যাক্স রূপকুণ্ড দেখতে এসেছিলেন এবং স্থানীয়দের কাছে এই উপকথাও শুনেছিলেন। রূপকুণ্ড আর পার্বতীর এই উপকথার কাহিনী স্যাক্সকে করেছিল শিহরিত। নিজের থিসিসের বিষয় তাই তিনি নির্ধারণ করেন নন্দ দেবীর পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকগাথার বিশ্লেষণ। আশির দশকে পাশ্চাত্যের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে স্যাক্স নন্দ দেবীর তীর্থযাত্রা সম্পন্ন করেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে ১৯৯১ সালে লেখেন "মাউন্টেন গডেস" নামে এক পুস্তক। তার পরেই ইউরোপ ও আমেরিকা জানতে পারে এই স্কেলিটন লেকের অমীমাংসিত রহস্যের কথা।

স্যাক্স প্রথম রূপকুণ্ড ঘুরে যাবার পর থেকে এখানে পর্যটকদের আগমন বাড়তে থাকে। এর ফলে নষ্ট হচ্ছিল হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশ। কোনো পাহারা না থাকায় অনেক দুঃসাহসী পর্যটক জলে পড়ে থাকা কঙ্কাল নাড়াচাড়া করে দেখেন, ফলে অনেক হাড় স্থানচ্যুত হয়। কেউ কেউ এককাঠি আগ বাড়িয়ে নিজের মনে করে কিছু হাড়গোড় নিয়ে চলেও যান।

- রূপকুণ্ডের কঙ্কাল জনসমক্ষে আসার পর চালানো হয়েছে বেশ কিছু গবেষণা। এতে প্রমাণিত হয়েছে কঙ্কালগুলো পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের। ফলে সেনাদলের সদস্য তারা হতে পারে না। এদের বয়স ৩৫-৮০ বছরের মধ্যে, এবং তেমন কোনো রোগের সন্ধানও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে পাওয়া যায়নি। ফলে রূপকুণ্ড কবরখানা হিসেবে ব্যবহৃত হত এমন চিন্তাও নাকচ হয়ে গেল। এরা তিব্বতগামী বাণিজ্যদল ছিল এমন ধারণাতেও জল ঢেলে দেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানালেন, এই অঞ্চল দিয়ে তিব্বত আর ভারতের মধ্যে কোনোকালে কোনো বাণিজ্যপথের খবর পাওয়া যায়নি। তাছাড়া বাণিজ্যদল হলে এদের সাথে মালপত্র থাকার কথা? সেই চিহ্ন কই? হ্রদ থেকে কেবল পাওয়া গিয়েছিল চামড়ার জুতা আর নিত্য ব্যবহার্য কিছু জিনিস।

২০০৪ সালে ভারতীয় এবং পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিকেরা রূপকুণ্ডের কঙ্কালগুলো নিয়ে বড় আকারে পরীক্ষা নিরিক্ষা চালালেন। বেশ কিছু মাথার খুলি পরীক্ষা করে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এমন কিছু ক্ষত দেখেন যা শিলার আঘাতে সৃষ্টি হতে পারে। ফলে তাদের তত্ত্ব ছিল এই হতভাগ্য মানুষগুলি সম্ভবত ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছে।

ততদিনে কার্বন ডেটিং আরো আধুনিক হয়েছে। ফলে নতুন করে বয়স নির্ধারণ করতে নমুনা পাঠানো হয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। টম হিঘাম নামে একজন বিশেষজ্ঞ এই পরীক্ষা করেন। তার রায় ছিল- এই কঙ্কালগুলোর সবই নবম শতকের, যারা একসাথে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছে। ফলে কোনো একটি ঘটনাই সবার মৃত্যুর জন্য দায়ী হতে পারে বলে মত দেন তিনি।

সব ফলাফল একত্রিত করে বিজ্ঞানীদের এই দল অবতারণা করলেন তাদের তত্ত্বের। তারা জানালেন, সম্ভবত ৮০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে নন্দদেবীর তীর্থে যাচ্ছিলেন একদল মানুষ। রূপকুণ্ডের উপরের পাহাড়ি পথ পার হতে তাদের সহায়তা করছিলেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এমন সময় শুরু হয় তুষারঝড় আর শিলাবৃষ্টি। এতে দলের সবাই মারা পড়ল।। তাদের দেহ চাপা পড়ে যায় বরফে। এরপর কয়েক বছর ধরে তুষারধ্বস তাদের মরদেহ টেনে নিয়ে যায় রূপকুণ্ডের তলে।

- এত অব্দি সব ঠিকই ছিল। অর্থাৎ ২০০৪ সালের গবেষণার পর রূপকুণ্ডের রহস্য মীমাংসিতই বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু নতুন এক গবেষণা এই রহস্যকে আরো ঘনীভূত করে তুলল। বছরখানেক আগে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির বিজ্ঞানীরা রূপকুণ্ডের কঙ্কালগুলোর জিনগত বিশ্লেষণ করেন। তাদের অন্যতম ছিলেন ভারতের বীরবল-সাহনি ইন্সটিউটের ডক্টর নিরাজ রাই এবং হার্ভার্ডের ডেভিড রেইখ। তারা ৩৮টি কঙ্কালের ডিএনএ পরীক্ষা করে ২৩ জনকে পুরুষ এবং ১৫ জনকে মহিলা হিসেবে সনাক্ত করেন। ডক্টর রাই এবং ডেভিড আরো দেখতে পান যে, ২৩টি কঙ্কাল দক্ষিণ এশিয়ান বংশগতির চিহ্ন বহন করছে। এরা সপ্তম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে মারা গিয়েছিল। ফলে আগে যেমন বলা হয়েছিল সবাই একসাথে কয়েক ঘণ্টার মাঝে মৃত্যুবরণ করেছে, ডিএনএ-র ফলাফল তার সাথে দ্বিমত পোষন করল। ওনারা আরো লক্ষ্য করেন যে এদের প্রায় এক হাজার বছর পর আরো কিছু মৃতদেহ এই কঙ্কালের দলে যুক্ত হয়। এদের একদল আবার ছিল পূর্ব এশিয়ার এবং খুবই আশ্চর্যজনকভাবে অপরদল ছিল পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার।

রহস্য জট পাকিয়ে গেল এখানেই। এশিয়ান যারা তারা হয়তো তীর্থযাত্রী হতে পারে। কিন্তু ভূমধ্যসাগরের লোক এখানে কী করছিল? যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে তখন হিমালয় এলাকার সাথে ভূমধ্যসাগরীয় জনবসতির যোগাযোগের কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই। তাহলে এরা কী করছিল এখানে? কীভাবেই বা মৃত্যু হলো এতগুলো লোকের? তাদের কঙ্কাল কেনই বা ঠাঁই করে নিল বরফগলা হ্রদের জলের নিচে?

বলাই বাহুল্য এই রহস্য কোনদিনই আর সমাধান হয়নি। আজো কেউ জানতে পারেনি হিমালয়ের হ্রদে ওই কঙ্কালগুলো এক্সাক্টলি কাদের আর কিভাবেই বা এলো ওখানে।

এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি এসব প্রশ্নের। এখনো রূপকুণ্ড নিয়ে নানা বৈজ্ঞানিক আর অবৈজ্ঞানিক তত্ত্ব চলছে। এর ফাঁকে ব্যবসা করে নিচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানিও, যারা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে আগ্রহী পর্যটকদের নিরাপদে ঘুরিয়ে আনবে কঙ্কাল হ্রদ।

- তো বন্ধুরা এই ছিল আজকের রহস্য প্রতিবেদন। আপনাদের কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন 🙏❤

তথ্যসূত্র-
-Harney, É., Nayak, A., Patterson, N. et al.Ancient DNA from the skeletons of Roopkund Lake reveals Mediterranean migrants in India. Nat Commun 10, 3670 (2019).
-Andrews, R. G. (2019). The Mystery of the Himalayas’ Skeleton Lake Just Got Weirder.

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Myth না Mystery - মিথ না মিস্ট্রি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Myth না Mystery - মিথ না মিস্ট্রি:

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share