12/08/2022
🎗️আসল ঘটনাটা সবার জানা উচিত🎗️
সংবাদ সম্মেলন
সময়ঃ ১০ আগস্ট, রাত ৯ ঘটিকা
স্থানঃ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম
বিষয়ঃ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মানববন্ধন করে আমাকে ব্যক্তিগত এবং
পারিবারিকভাবে সম্মানহানীর প্রতিবাদস্বরূপ জবাবী সম্মেলন
আসসালামু আলাইকুম | আমি ডা. আনোয়ার,মেডিকেল
অফিসার,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম |
৭ আগস্ট দিবাগত রাত ৩ঘটিকায় ইমার্জেন্সি তে একটা ডেলিভারির
রোগী দেখে ২য় তলায় এসে সিস্টারকে প্রয়োজনীয় করণীয় বলে
RMO রুমে বসে ঐ রোগীর জন্য চিকিৎসারপত্র লিখছিলাম |
এমতাবস্থায় একজন ব্যক্তি সম্ভবত আশরাফ নামের কেউ একজন
রোগী নিয়ে ইমার্জেন্সিতে ওয়ার্ডবয়কে জিজ্ঞেস করেন আপনি কি
ডাক্তার, উত্তরে ওয়ার্ডবয় বলেন আমি ডাক্তার নই, ডাক্তার উপরে
আছেন| উনারা এটুকুই শুনেই রোগীকে নিয়ে উপরে আসেন, ইমার্জেন্সি
রেজিস্ট্রার খাতায় নাম ঠিকানা কিছুই এন্ট্রি না করেই, ওয়ার্ডবয় নিচে
বসতে বললেও না বসেই উপরে এসে RMO রুমে আমাদের চেয়ারের
পিছনে বেডে বসে পড়েন রোগী, আর সেই লোক দাঁড়ানো | আমি
কিছুক্ষণ পরে লেখা শেষ করে যখন পিছনে তাকাবো তখন দেখি
উনাদের। জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কারা এখানে কেনো?? এটেন্ডেন্ট
বললেন উনি রোগী, আমি উত্তরে বললাম তাহলে নিচে যান, নিচে
দেখতে হবে। তখন আবারও সেই এটেডেন্ট বললেন উনি একজন
টিচার| তখন বলেছিলাম টিচার হয়েছে তো কি হয়েছে – নিচেই
আমাদের সব জিনিসপত্র, সেখানেই দেখতে হবে, উনি বুক চেপে ধরে
এসেছেন, মানে ইসিজি, অক্সিজেন এগুলোই উনার আগে ব্যবস্থা করতে
হবে।আর এগুলো সবকিছুই নিচেই থাকে। কিন্তু উনারা একগুঁয়েমিভাবে সেখানেই (২য় তলায়ই) দেখার
জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করেন, আমি আপত্তি করায় আমাকে বেয়াদব
বলে সম্বোধন করেন এবং চাকরি কিভাবে করি তা দেখে নিবেন
বলেন| তখন ডেলিভারির সাথে আসা রোগীর এটেন্ডেন্ট উনাদেরকে
বলেন আপনারা কার সাথে এরকম ব্যবহার করছেন, ওর বাড়ী
বালাটারি, সে আমিনুলের ছোট ভাই | তারপরেও উনারা ফকিরনীর
বাচ্চা বলে গালিগালাজ শুরু করেন। তখন আমিও উঠে উচ্চবাচ্য
শুরু করি। এক পর্যায়ে ডেলিভারি রোগীর সেই এটেন্ডেন্ট আমাকে
রোগীটা দেখতে বলেন। তখন আমি এবং আমাদের স্যাকমো নিচে গিয়ে
ইমার্জেন্সি রুমে বসলাম উনাকে দেখবো বলে | কিন্তু তখনও উনারা
ইতোমধ্যে ৪/৫ জন হয়ে গেছিলো, উপরেই গালিগালাজ উচ্চবাচ্য
করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর নিচে নেমে এসে কেউ বলে
দেখাই, কেউ বলে না এই ডাক্তারকে দেখাবে না, অহংকারী,
কলঙ্ক| চাকুরী খেয়ে দিব ইত্যাদি ইত্যাদি বলে চলে যায় | অথচ মানববন্ধনে মিথ্যাচার করেছিল যে,আমরা নাকি হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছি।!!!
হাসপাতালে এরকম ঘটনা সিস্টার ডাক্তার সবার সাথেই মাঝেমধ্যেই ঘটে থাকে। কিছু উশৃংখল মানুষ এসে এটা
নাই কেনো, সেটা নাই কেন, এটা কিনতে হবে কেনো, অমুক তমুক বিভিন্ন ব্যাপার নিয়েই উশৃংখল আচরণ করে
থাকেন।তখন কথার প্রেক্ষিতে উচ্চবাচ্য হয়, এটা আমরা একদম স্বাভাবিক ভাবেই নিই।
তাই বলে উনারা এরকমভাবে শুরুতেই আমাকে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক ভাবে আক্রমণ করেও সোসাল
মিডিয়ায় মিথ্যাচার এবং প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছেন যে, অনুমতি নিয়ে প্রবেশ না করায় প্রথমেই আমি নাকি সম্বোধন
করেছি- এই বেয়াদব এখানে অনুমতি ছাড়া কেনো ঢুকেছেন? একজন সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মানুষ কিভাবে এই
মিথ্যাচার করতে পারেন? আর কিভাবেই বা একজন মানুষ সর্বোপরি একজন ডাক্তার আর একজন মানুষকে
এভাবে সম্বোধন করতে পারেন? এটা কি সুস্থ বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষ একবারও চিন্তা করে দেখলো না, চিন্তা না
করেই উনাদের মিথ্যা প্রচারণায় শামিল হয়ে মানববন্ধন করলেন? যেকেউ মুকুল বিদ্যুত সাহেবের এই লাইনটা
নিরপেক্ষ মনমগজ নিয়ে পড়লেই বুঝতে পারবেন এটা কত বড় মিথ্যাচার। কোন মানুষই আরেকজন মানুষকে
অনুমতি নিক বা না নিক এভাবে সম্বোধন করতে পারেন না,হয়তো চোখে মুখে বিরক্তির ভাব ফুটে উঠতে পারে। এই মুকুল বিদ্যুত সাহেবকে আমি দেখতেই পাই নি কোথাও, আর উনি RMO রুমে তো ঢুকেনই নাই। তাহলে কিভাবে উনি RMO রুমের ভেতরের কথাবার্তা এভাবে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে পুরোপুরি উল্টোভাবে আমার বিরুদ্ধে প্রচার করতে পারেন? হয়তো বাইরে ছিলেন অথবা পরে এসেছিলেন। অথচ উনি সোসাল মিডিয়ায় লিখেছেন উনি এবং একরামুল মেম্বার রোগীটাকে নিয়ে এসেছিলেন। অথচ RMO রুমে রোগী সহ আমি আরেকজনকে পেয়েছিলাম। এই মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এর আগেও এই একরামুল মেম্বার সাহেব আমার সিস্টার এবং অন্যান্য স্টাফদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছিল। উনি মাঝেমধ্যেই হাসপাতালে এসে এরকম আচরণ করেন বলে অভিযোগ পেয়েছি।
আমাকে একজন শিক্ষক, মানুষ গড়ার কারিগর কিভাবে বেয়াদব, ফকিরনীর বাচ্চা বলে গালিগালাজ করতে পারেন? তাহলে আমাদের কোমলমতি বাচ্চারা তাদের কাছে কি শিখবেন??? উনাদের এরকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, অশালীন গালিগালাজ এবং মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে একজন মানুষকে, একজন ডাক্তারকে, সর্বোপরি গণপ্রজাতন্ত্রের একজন সরকারি কর্মকর্তাকে এরকম মিথ্যা এবং অযৌক্তিক মানববন্ধন করে আমার পরিবারকে ছোট করা এবং আমার সম্মানহানী করবার চেষ্টা করায় সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক উনাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ডা. মোঃ আনোয়ার হোসেন
মেডিকেল অফিসার
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,
ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম।
©