27/11/2020
বাংলাদেশে বিদ্যুতের হোলসেলার হচ্ছে পিডিবি। ট্রান্সপোর্টেসনের দায়িত্ব হচ্ছে পিজিসিবির। খুচরা বিক্রেতা হচ্ছেঃ NESCO, DESCO, DPDC, WZPDC, BREB, PDB..। উৎপাদক হিসেবে আছেঃ PDB, RPCL, NWPGCL, APSCL, EGCB, BCFCL এর মত সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি প্রাইভেট মালিকানাধীন Summit, United, Lanka bangla, Desh Energy, Orion, S Alam Etc কোম্পানীও বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকে পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের অনুমোদন দেয় পিডিবি। তবে সরকারি-বেসরকারি সব পাওয়ার প্লান্ট; তাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ- জাতীয় গ্রিডকে সরবরাহ করে। জাতীয় গ্রিড নিয়ন্ত্রণ করে পিজিসিবি। দৈনিক জাতীয় চাহিদার ভিত্তিতে- কোন পাওয়ার প্লান্ট, কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে; সেই স্বীদ্ধান্ত দেয় লোড ডেসপাচ সেন্টার। লোড ডেসপাচ সেন্টার পরিচালনা করে পিজিসিবি। উন্নত বিশ্বে লোড ডেসপাচ সেন্টার স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকে।
প্রায় ১৫০টি পাওয়ার প্লান্ট বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত আছে। চাহিদা অনুযায়ী তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। Step-Down ট্রান্সফরমার দ্বারা দেশের বিভিন্ন গ্রিড উপকেন্দ্রের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ৬টি বিতরন সংস্থাকে সরবরাহ করে পিজিসিবি। বিনিময়ে বিতরন সংস্থা থেকে প্রতি ইউনিটের জন্য হুইলিং চার্জ পায় পিজিসিবি।
Small, Medium & Big Consumer দের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিতরণ সংস্থাগুলো। বাসাবাড়িতে ২৩০ভোল্টে বিদ্যুৎ দেয়া হয়, অপরদিকে শিল্পকারখানাকে ১১/৩৩/১৩২/২৩০কেভি ভোল্টেজে বিদ্যুৎ দিতে হয়৷ যেহেতু ১৩২/২৩০কেভি লাইন রয়েছে পিজিসিবির। তাই বড় শিল্পকারখানাগুলো সরাসরি পিজিসিবি থেকেই লাইন পেয়ে থাকে। কিন্তু বিদ্যুতের বিল দেয় পিডিবিকে।
দেশের সবগুলো পাওয়ার স্টেশন বিদ্যুৎ দেয় পিজিসিবির নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রিডে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণ করে লোড ডেসপাচ সেন্টার। পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানীগুলোকে উৎপাদিত বিদ্যুতের জন্য বিল দেয় পিডিবি। ৬টি বিতরন সংস্থাকে বিদ্যুৎ পৌছে দেয় পিজিসিবি। বিনিময়ে তারা প্রতি ইউনিটের জন্য প্রায় ০.২৮টাকা করে চার্জ নেয়, বিতরণ সংস্থাগুলো থেকে। বিতরণ সংস্থাগুলো পিজিসিবির নিয়ন্ত্রাধীন গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ গ্রহণ করলেও, গ্রহণকৃত বিদ্যুতের জন্য বিল দিতে হয় পিডিবিকে। অর্থ্যাৎ দেশের বিদ্যুৎ ক্রয়-বিক্রয়ের একমাত্র প্রতিষ্ঠান পিডিবি। পিডিবি থেকে ক্রয়কৃত বিদ্যুৎ, জনগনের নিকট বিক্রি করে আয় করে বিতরণ সংস্থা।
নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সেবা নিশ্চিত করার জন্য শিল্পগ্রাহকদের ক্যাপ্টিভ পাওয়ার প্লান্ট এবং বিতরণ সংস্থাকে Distributed Power Plant থেকে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর অনুমতি প্রদান করেছে সরকার। ফলে ছোট-বড় শিল্পকারখানাগুলো নিজেদের চাহিদা মেটানোর জন্য নিজেস্ব পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের অনুমতি পায়। যাকে বলা হয় ক্যাপ্টিভ পাওয়ার প্লান্ট। ক্যাপ্টিভ পাওয়ার প্লান্ট দিয়ে নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে, আয় করার সুযোগ রয়েছে।
অপরদিকে গ্রামীন অঞ্চলে লো-ভোল্টেজের সমস্যা প্রকট ছিল। তাই সরকার পল্লী বিদ্যুতকে স্থানীয় কিছু ছোট ছোট পাওয়ার প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের অনুমতি প্রদান করে। এই সকল SIPP (Small Independent Power Plant) সরাসরি পল্লীবিদ্যুৎ অথবা বিতরন সংস্থার উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। গ্রিডের সাথে এই সকল পাওয়ার প্লান্ট যুক্ত না। এই সকল পাওয়ার প্লান্টের বিল স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অথবা বিতরণ সংস্থা আদায় করে। গ্রীডকে কোন হুইলিং চার্জ দিতে হয় না। পিডিবির নিকট ক্রয়-বিক্রয় করতে হয় না।
©School of Engineers