Monir Ahamed

Monir Ahamed Hi! I am Monir Ahamed. Living in England. I like to make videos of travels, weekend breaks, beautif

আমি যখন ৫ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই, ক্লাস ১ এ, আমার সঙ্গে পরিচয় হয় এক সহপাঠী পুলকের। পুলক ছি...
10/10/2024

আমি যখন ৫ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই, ক্লাস ১ এ, আমার সঙ্গে পরিচয় হয় এক সহপাঠী পুলকের। পুলক ছিল আমাদের শিক্ষিকা, যাকে আমরা সবাই "আপা" বলে ডাকতাম, তার ছেলে। স্কুলের ঠিক পাশেই একজন আইসক্রিমওয়ালা বসত, যার রঙিন আইসক্রিমগুলো দেখলেই মনটা আনন্দে ভরে যেত।

একদিন ক্লাসের ফাঁকে পুলক তার মাকে বলল, "আম্মু, আমি ওকে (আমাকে) একটা আইসক্রিম কিনে দিতে চাই।" মুচকি হেসে তার মা বললেন, "হ্যাঁ, কিনে দিও।" সেই ছোট্ট কথাটি আমার ছোট্ট মনে বিশাল একটি আশা তৈরি করে দিল। মনে মনে ভাবলাম, কবে পুলক আমাকে আইসক্রিম কিনে দেবে!

আমি সেই স্কুলে পুরো ৫ বছর কাটালাম। প্রতিবার যখন আইসক্রিমওয়ালাকে দেখতাম, পুলকের কথা মনে পড়ত। ভাবতাম, আজই হয়তো সেই দিন, যেদিন পুলক আমাকে সেই প্রতীক্ষিত আইসক্রিমটা কিনে দেবে। কিন্তু সেই দিন কখনো এল না। আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম, বছর পার হলো, নতুন ক্লাসে উঠলাম, কিন্তু পুলকের সেই আইসক্রিম কেনার কথা আর বাস্তবে ঘটল না।

আজও, এত বছর পর, যখন কোনো আইসক্রিমওয়ালাকে দেখি, আমার সেই ছোট্ট স্মৃতি জীবন্ত হয়ে ওঠে। এখনও যেন মনে হয়, পুলকের কাছ থেকে আইসক্রিম পাওয়ার অপেক্ষাটা শেষ হয়নি—সেই ছোট্ট, না-বলা প্রতিশ্রুতির অপেক্ষায় আমি আজও আছি।

When I was 5 years old and started school for the first time, entering Class 1, I met a classmate named Pulok. Pulok was the son of our teacher, whom we all called "Apa." Right next to our school, there used to be an ice-cream vendor, and just seeing his colourful ice creams would fill our hearts with joy.

One day, during a break, Pulok told his mother, "Mom, I want to buy him (me) an ice cream." With a soft smile, his mother replied, "Yes, go ahead and buy him one." That simple statement planted a huge sense of hope in my little heart. I wondered to myself, when would Pulok buy me that ice cream!

I spent a full 5 years at that school. Every time I saw the ice-cream vendor, I would think of Pulok. I thought, maybe today is the day Pulok will finally buy me that long-awaited ice cream. But that day never came. I kept waiting, moved on to new classes, but Pulok’s promise of buying me ice cream never came true.

Even today, so many years later, whenever I see an ice-cream vendor, that little memory comes alive. It still feels like the wait for Pulok to buy me that ice cream hasn’t ended—I'm still waiting for that unspoken promise to be fulfilled.

১৭৫৭ সালের ঢাকার এই ছবিটিতে তৎকালীন নগর জীবনের একটি সুন্দর চিত্র ফুটে উঠেছে। ঢাকার প্রাচীন নদীবন্দর, বুড়িগঙ্গা নদীর তীর...
26/09/2024

১৭৫৭ সালের ঢাকার এই ছবিটিতে তৎকালীন নগর জীবনের একটি সুন্দর চিত্র ফুটে উঠেছে। ঢাকার প্রাচীন নদীবন্দর, বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল। সেই সময় ঢাকার মূল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল নদী পথে, তাই ছবিতে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য নৌকা, যা পণ্য পরিবহন এবং মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল।

ঢাকার তখনকার জনসংখ্যা ছিল তুলনামূলকভাবে কম, কিন্তু শহরটি ছিল বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। ঢাকা সেই সময়ে মসলিন কাপড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল, যা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ছিল। এখানকার মসলিন শিল্প ছিল মূলত হাতের কাজ, এবং এর উৎপাদনকারী তাঁতিরা অত্যন্ত দক্ষ ছিল। এছাড়াও নীল চাষ ও অন্যান্য কৃষি পণ্যের জন্যও শহরটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

মুঘল স্থাপত্যের প্রভাব ঢাকার সর্বত্র দেখা যেত, বিশেষত মসজিদ, দুর্গ, এবং প্রাচীন প্রাসাদগুলোতে। মুঘল শাসনের অধীনে শহরটি উন্নত রাস্তা, বাণিজ্যিক কেন্দ্র এবং বাজারে ভরপুর ছিল। মানুষ সাধারণত মাটির ঘর বা ইটের তৈরি ঘরে বাস করত, এবং তাদের পোশাক-পরিচ্ছদে ছিল মূলত সাদা ধুতি, চাদর, এবং শাড়ির ব্যবহার।

শহরের অর্থনীতি ছিল মূলত বস্ত্রশিল্প ও কৃষিভিত্তিক। বণিকেরা বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্য করত, বিশেষ করে ইংরেজ, ফরাসি, এবং ডাচদের সাথে। ঢাকার বাজারগুলো ছিল মসলিন, রেশম, নীল, এবং মশলার জন্য বিখ্যাত। ধনী ও ব্যবসায়ী শ্রেণি এইসব পণ্যের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থান শক্ত করেছিল।

মানুষের জীবনযাত্রা ছিল সরল এবং প্রকৃতিনির্ভর। শহরের আশেপাশের এলাকাগুলো ছিল সবুজে ঘেরা, নারকেল গাছ, তাল গাছ এবং অন্যান্য গাছপালা ঢাকাকে একটি সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ দিত। তাদের খাদ্যাভ্যাস ছিল মূলত চাল, ডাল, মাছ এবং শাকসবজির ওপর নির্ভরশীল।

সেই সময়ের ঢাকার অর্থনীতি এবং সংস্কৃতি বেশ সমৃদ্ধ ছিল, এবং এর অধিবাসীরা ছিল কর্মঠ ও সৃজনশীল।

26/09/2024

"আমি কে?" — এই প্রশ্নটি এমন এক গভীর উপলব্ধির দিক নির্দেশ করে, যা আমাদের নিজেদের প্রকৃত সত্তার সন্ধান করতে সাহায্য করে। সাধারণত আমরা নিজেদেরকে পরিচয় করিয়ে দিই আমাদের শরীর, মন, এবং অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। আমরা বলি, "আমি একজন শিক্ষক," "আমি একজন মা," অথবা "আমি একজন ছাত্র।" কিন্তু এসব পরিচয় শুধুমাত্র বাইরের স্তরের। এগুলো আমাদের জীবনের ভূমিকা, পেশা বা পরিস্থিতি, যা সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল।

অতঃপর, আমরা অনেক সময় আমাদের অনুভূতি বা চিন্তাকে নিজেদের সাথে একাত্ম করি। আমরা বলি, "আমি দুঃখিত," "আমি খুশি," অথবা "আমি চিন্তিত।" কিন্তু এগুলোও আসলে আমাদের প্রকৃত পরিচয় নয়। অনুভূতি এবং চিন্তা আসা-যাওয়া করে, কিন্তু সেই সত্তা কে, যে এই সমস্ত অনুভূতি এবং চিন্তার সাক্ষী থাকে?

যদি আমরা গভীরভাবে চিন্তা করি, আমরা দেখতে পাই যে আমাদের ভিতরে একটি নীরব পর্যবেক্ষক আছে — এক নিরব দর্শক, যে সবসময় সবকিছু প্রত্যক্ষ করে চলেছে। এই দর্শক কোনো অনুভূতি, চিন্তা বা শরীরের অংশ নয়। এটা হলো আমাদের আসল সত্তা, যা সবকিছুর সাক্ষী।

এই সত্তা হলো অবিচল, অমর, এবং পরিবর্তনহীন। এটি কোনো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবদ্ধ নয়, এটি সমস্ত সময়ের পরেও টিকে থাকে। আমরা যখন আমাদের চিন্তা ও অনুভূতির বাইরে গিয়ে এই দর্শকের সাথে একাত্ম হই, তখন আমরা জানতে পারি, আমরা আসলে সীমাবদ্ধ কোনো ব্যক্তি নই। আমরা এক বিশাল, অবাধ চেতনা, যা সবকিছু দেখছে, কিন্তু কোনো কিছুতে জড়িয়ে নেই।

"আমি কে?" প্রশ্নের উত্তর হলো— আমি সেই চেতনা, যা সবকিছুর উপর থেকে সবকিছু প্রত্যক্ষ করে।

এই ছবিটি মগধ সাম্রাজ্যের (মগধা) সময়কালের বাংলার একটি শহরের চিত্র তুলে ধরে, যা আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৪র্থ শতাব...
24/09/2024

এই ছবিটি মগধ সাম্রাজ্যের (মগধা) সময়কালের বাংলার একটি শহরের চিত্র তুলে ধরে, যা আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৪র্থ শতাব্দীর সময়ের দিকে নির্দেশ করে। এটি প্রাচীন বাংলার এক জীবন্ত শহরকে চিত্রিত করেছে, যেখানে বিভিন্ন প্রাচীন স্থাপত্য, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সাথে দৈনন্দিন জীবনের জোয়ার স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

মগধ সাম্রাজ্যের সময় বাংলার জীবনযাত্রা ছিল একদিকে বৌদ্ধ ধর্মের বিকাশ এবং অন্যদিকে বাণিজ্য ও কৃষি অর্থনীতির উন্নতির যুগ। ছবিতে আমরা প্রাচীন ইট ও কাঠের তৈরি বাড়িঘর এবং মন্দির দেখতে পাচ্ছি, যা সেই সময়কার স্থাপত্য শৈলীর একটি নিদর্শন। মন্দিরগুলো স্তরযুক্ত পিরামিড আকৃতির, আর প্রধান প্রবেশপথগুলোতে আর্চওয়ে বা খিলানযুক্ত গেটওয়ে দেখা যাচ্ছে। শহরের কেন্দ্রে রয়েছে বাজার এবং খোলা জায়গা, যেখানে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করছে।

লোকেরা ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় পোশাক পরে আছে—পুরুষেরা ধুতি এবং নারীরা শাড়ি পরিধান করছে। তারা প্রতিদিনের নানা কাজে ব্যস্ত, কেউ বাজারে বাণিজ্য করছে, কেউবা গৃহস্থালি কাজে নিযুক্ত। বৌদ্ধ বিহার ও মঠগুলি দেখা যাচ্ছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে এই সময়ে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব ছিল প্রবল। বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ও ভিক্ষুরা বিহারের চত্বরে ঘুরছে বা ধর্মীয় প্রার্থনায় মগ্ন।

ছবিতে হাতি ও গরু-টানা গাড়ি দেখা যাচ্ছে, যেগুলো শহরের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি স্পষ্টতই দেখায় যে এই সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ছিল এবং মানুষ বিভিন্ন পণ্য আদান-প্রদান করে জীবনযাত্রা নির্বাহ করত। এ সময় পাট, চাল, কাপড় ও মশলা বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।

জীবনযাত্রার মান ছিল খুবই সরল, কিন্তু সমৃদ্ধ। কৃষিকাজ, ব্যবসা ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড একে অপরের সাথে জড়িয়ে ছিল। প্রকৃতির মাঝে এই শহরের প্রাণবন্ত পরিবেশ প্রাচীন বাংলার একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসকে ফুটিয়ে তুলছে, যেখানে মানুষ প্রকৃতি ও নগরায়ণের মধ্যে এক ভারসাম্য বজায় রেখে জীবনযাপন করত।

এই ছবিটি প্রাচীন পৃথিবীর একটি দৃশ্য তুলে ধরে, যখন ডাইনোসররা পৃথিবীজুড়ে বিচরণ করছিল। সেই সময়কাল ছিল প্রায় ৬৫ মিলিয়ন ব...
23/09/2024

এই ছবিটি প্রাচীন পৃথিবীর একটি দৃশ্য তুলে ধরে, যখন ডাইনোসররা পৃথিবীজুড়ে বিচরণ করছিল। সেই সময়কাল ছিল প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বছরেরও বেশি আগে, যাকে বলা হয় মেসোজোয়িক যুগ। এই যুগটি আবার তিনটি প্রধান সময়ে বিভক্ত: ট্রায়াসিক, জুরাসিক এবং ক্রেটাসিয়াস। ডাইনোসররা এই সময়কালে পৃথিবীর অধিপতি ছিল এবং প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীতে বিচরণ করেছে।

পৃথিবীর বয়স সেই সময় প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর ছিল, আর ডাইনোসরদের বিলুপ্তি ঘটে প্রায় ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে একটি বিশাল উল্কাপাত বা মহাজাগতিক ধাক্কার কারণে। ডাইনোসরদের বিলুপ্তির পরেই স্তন্যপায়ী প্রাণীরা ক্রমবর্ধমান হয় এবং পরে মানুষের উদ্ভব ঘটে।

তখনকার সময় মানুষ এই পৃথিবীতে ছিল না। মানুষের আবির্ভাব ঘটে ডাইনোসর বিলুপ্ত হওয়ার কয়েক কোটি বছর পর। ডাইনোসরদের সময়ের সঙ্গে মানুষ একসাথে পৃথিবীতে বাস করেনি।

তবে, অনেক প্রাচীন প্রাণী যারা সেই যুগে ছিল, তাদের বংশধর আজও বেঁচে আছে। যেমন:
- কুমির (Crocodiles): কুমিরের পূর্বপুরুষরা প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীতে রয়েছে, এবং আজকের কুমিরেরা প্রায় ডাইনোসরদের সমসাময়িক।
- কচ্ছপ (Turtles): কচ্ছপেরও পূর্বপুরুষ সেই সময়কাল থেকে টিকে আছে।
- হাঙর (Sharks): প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে হাঙরের পূর্বপুরুষরা সমুদ্রের শীর্ষ শিকারি ছিল।
- পাখিরা (Birds): বিজ্ঞানীদের মতে, পাখিরা আসলে ডাইনোসরেরই বংশধর, বিশেষ করে ছোট থেরোপড ডাইনোসরদের।

এইভাবে, প্রাচীন পৃথিবী এবং তার বাসিন্দারা আজকের পৃথিবীর অনেক প্রাণীর উত্থান এবং বিকাশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।

অতি ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক সম্পন্ন যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ভাবছেন যে তারা সমাজের রক্ষাকর্তা হয়ে উঠেছেন, তাদের জন্য এই ...
20/09/2024

অতি ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক সম্পন্ন যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ভাবছেন যে তারা সমাজের রক্ষাকর্তা হয়ে উঠেছেন, তাদের জন্য এই কথাটি স্পষ্টভাবে বলতে চাই: যদি আইন নিজ হাতে নিতে এতই শখ হয়, তাহলে পুলিশ ফোর্সে যোগদান করুন। সেখানে আপনাকে সব ধরনের 'বীরত্ব' দেখানোর সুযোগ দিবে—কিন্তু অবশ্যই, নিয়ম মেনে, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, এবং জনগণের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে।

যারা ভাবছেন তারা 'বাঘের বাচ্চা', তাদের জেনে রাখা উচিত—পুলিশে যোগ দেওয়ার পর দেখবেন, শুধু গালভরা বীরত্ব দেখিয়ে কাজ চলে না। এখানে আসল বীরত্ব হলো ধৈর্য, শৃঙ্খলা আর কৌশল। আর যদি মনে করেন হাতের সামনে যে কোনো ঘটনা ঘটলে আপনি নিজেই আদালত, পুলিশ আর বিচারক—তাহলে সরাসরি পুলিশ ফোর্সে চলে আসুন। না হলে, এসব 'হিরোগিরি' আপনার জন্য নয়।

কল্পনা করুন, আপনাকে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে থানায় নিয়ে যাচ্ছে, আর আপনি চিৎকার করে বলছেন, "আমি তো সমাজের ভালো করতে চেয়েছি!"—ঠিক সেই মুহূর্তে পুলিশ ভাই আপনাকে বলবে, "আরে ভাই, এত যদি সমাজের ভালো করতে ইচ্ছা, আমাদের ফোর্সে যোগ দিন না! বেতন পাবেন, ইউনিফর্ম পাবেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মনের সুখে ডিউটি করতে পারবেন!" কিন্তু না, এত সহজে বীরত্ব ফলানোর সুযোগ পাবেন না।

তাই, এই 'সুপারহিরো' ভাবনা বাদ দিয়ে যদি সত্যিই দেশের জন্য কিছু করতে চান, তাহলে যথাযথ আইনের পথে আসুন। অন্যথায়, বুদ্ধির অভাবে সমাজের ক্ষতি করবেন না, কারণ শেষমেষ পুলিশকেই ডাকতে হবে!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র কর্তৃক একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে হত্যা করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং অমানবিক। এই ধরণ...
20/09/2024

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র কর্তৃক একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে হত্যা করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং অমানবিক। এই ধরণের ঘটনা সমাজের মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আইন এবং বিচার ব্যবস্থা যখন অদক্ষ হয়, তখন কিছু মানুষ নিজেদের হাতে আইন তুলে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি করে, যা আমাদের সমাজের জন্য একটি গভীর বিপদের সংকেত।

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে, এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে। আমরা যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে এবং সমাজের স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়বে। কোন ছাত্র বা ব্যক্তি আইন ও শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে নয়।

ছাত্রদের এভাবে 'ভিজিলান্টি' রূপে নিজেদের উপস্থাপন করার চেষ্টা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শুধুমাত্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর বর্তাবে। ছাত্ররা যদি বিচারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তবে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে, এবং সমাজ অরাজকতায় ডুবে যাবে।

আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই, যেন দ্রুত এবং কার্যকর তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। একমাত্র আইনের কঠোর প্রয়োগই পারে এ ধরনের হিংসাত্মক এবং অমানবিক কাজের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে।

19/09/2024

আমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, এবং লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স (LSE)-এর মতো বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বহু ছাত্রছাত্রীদের সাথে সাক্ষাৎ করেছি এবং কথা বলেছি, যারা বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে এসেছে। আমি তাদের মধ্যে অত্যন্ত নম্রতা ও বিনয় দেখেছি, এবং কখনোই তাদের মধ্যে কোনো অহংকারপূর্ণ আচরণ লক্ষ্য করিনি। কিন্তু তথাকথিত কিছু "প্রাচ্যের অক্সফোর্ড"-এর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এমন এক ধরনের আচরণ দেখি, যেন তারা শুধু সেখানে পড়ার সুযোগ পেয়ে দুনিয়া জয় করে ফেলেছে। এই অহংকারী মনোভাব, সমাজের নৈতিক বিচারক হয়ে ওঠা, এবং মনে করা যে তারা পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞান অর্জন করে ফেলেছে—এটা আসলে একটা সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি। বাইরের পৃথিবীটা যদি একটু ভালো করে দেখা যায়, তাহলে এই অহমিকা নিয়ে চলা লজ্জাজনক হয়ে উঠবে।

এই ধরনের আচরণের পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কিছু কারণ হলো:

1. অহংবোধ ও আত্মমুগ্ধতা: অনেক সময় যখন কেউ একটি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়, তখন তার মধ্যে একটি অহংবোধ জন্মাতে পারে। তারা মনে করতে শুরু করে যে শুধুমাত্র সেখানে পড়াশোনা করার কারণেই তারা অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠ। এই আত্মমুগ্ধতা থেকে অহংকারী আচরণ দেখা দেয়।

2. সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি: যদি কেউ শুধু নিজের সাফল্য বা অর্জনের ওপর অতিরিক্ত মনোযোগ দেয় এবং বৃহত্তর বিশ্ব ও সমাজের বাস্তবতাকে উপলব্ধি না করে, তবে সে সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। তারা অন্যদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানকে অবহেলা করে এবং নিজেকে সেরা মনে করে।

3. সমাজের চাপ ও প্রতিযোগিতা: অনেক সময়, উচ্চমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে সমাজ বা পরিবার থেকেও অতিরিক্ত প্রত্যাশা থাকে। এই প্রত্যাশার ভার নিয়ে তারা অন্যদের থেকে আলাদা বা উঁচু হয়ে থাকার প্রয়াস চালায়। এর ফলে তাদের আচরণে অহমিকা দেখা দিতে পারে।

4. আত্মবিশ্বাসের অভাব: অনেক সময় এটি আত্মবিশ্বাসের অভাবের ফলও হতে পারে। যারা নিজেদের নিয়ে খুবই আত্মসচেতন, তারা অহংকারী আচরণ করে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার চেষ্টা করে। এইভাবে তারা নিজেদের আত্মসম্মানকে ধরে রাখার চেষ্টা করে, যদিও আসলে এটা তাদের অনিশ্চয়তা থেকে আসে।

5. পরিবেশের প্রভাব: যারা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে, তারা একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে থাকে। এই পরিবেশ তাদের মাঝে একটি “উচ্চতর” পরিচয়ের অনুভূতি তৈরি করতে পারে, যা পরবর্তীতে অহংবোধে রূপ নেয়।

এইসব কারণগুলো মিলিয়ে, তারা নিজেদেরকে সমাজের নৈতিক বিচারক বা জ্ঞানী মনে করতে পারে এবং এটাই তাদের আচরণে প্রতিফলিত হয়। তবে, একবার তারা বৃহত্তর বিশ্বের সাথে নিজেদের তুলনা করে দেখলে এই ধরনের আচরণের অযৌক্তিকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

19/09/2024

সুখের একটি নির্দিষ্ট সীমা বা থ্রেশহোল্ড রয়েছে, যা নির্দিষ্ট পরিমাণ উপকরণ ও আর্থিক সচ্ছলতার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব, তবে এর পরে অতিরিক্ত ভোগ-বিলাস আমাদের সুখ বাড়ায় না। প্রাথমিকভাবে আমাদের মৌলিক চাহিদাগুলি যেমন খাদ্য, বাসস্থান, ও নিরাপত্তা পূরণ করা হলে আমরা সুখী হই। কিন্তু যখন আমরা এই মৌলিক চাহিদাগুলি পূরণ করে ফেলি, তখন অতিরিক্ত ধন-সম্পদ বা ভোগবিলাস আমাদের সন্তুষ্টির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায় না।

উদাহরণস্বরূপ, যখন একজন ব্যক্তি নতুন গাড়ি কিনে, প্রথম দিকে তিনি খুব আনন্দিত বোধ করেন। কিন্তু কিছুদিন পর গাড়িটির প্রতি সেই উচ্ছ্বাস কমে যায় এবং নতুন কিছু কেনার ইচ্ছা জাগে। এটি "হেডোনিক ট্রেডমিল" নামে পরিচিত, যেখানে আমরা সবসময় আরও ভালো কিছু চাই, কিন্তু সেই নতুন বস্তু আমাদের স্থায়ী সুখ এনে দিতে পারে না।

অন্যদিকে, সম্পর্ক, মানসিক শান্তি, এবং জীবনের গভীর অর্থ খোঁজার মাধ্যমে যে সুখ আসে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাই শুধুমাত্র ভোগবিলাসের উপর নির্ভর না করে মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক উন্নতির দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত।

19/09/2024

ব্রিটেন দাঙ্গা মোকাবিলায় পুরোপুরি শক্তি প্রয়োগ না করে অত্যন্ত সচেতনভাবে কাজ করে। তারা দাঙ্গার সময় ভিডিওগ্রাফি ব্যবহার করে সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে। সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পাশাপাশি, পুলিশদের দেহে লাগানো ক্যামেরার (বডিক্যাম) মাধ্যমে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ রাখা হয়, যাতে জনসাধারণকে টেলিভিশনে দেখানো যায় যে অপরাধী কী অপরাধ করেছে, কীভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং তাকে কত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, একজন ব্যক্তি আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটানোর দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছে।

বাংলাদেশকেও এ ধরনের পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিত, যাতে আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং পুলিশি কার্যক্রমে পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। দাঙ্গা বা বিশৃঙ্খলার সময় সিসিটিভি ও বডিক্যাম ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে অপরাধীরা দায়ী হতে বাধ্য হবে, এবং জনগণের আস্থা বাড়বে। পুরো প্রক্রিয়াটি জনগণের সামনে তুলে ধরে বাংলাদেশে আইনের শাসন আরও সুদৃঢ় করা সম্ভব হবে।

19/09/2024

আমাদের গলার/কণ্ঠনালীর গঠন এবং তার বিকাশ মানব সভ্যতার এক অসাধারণ দিক। মানুষের কথা বলার ক্ষমতা গলার জটিল গঠনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত, এবং এটি বহু লক্ষ বছর ধরে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করেছে।

প্রাথমিক মানুষের পূর্বপুরুষরা পশুর মতোই কিছু বুনো শব্দ করতে পারত, কিন্তু প্রকৃত ভাষার উৎপত্তি তখনো ঘটেনি। বিবর্তনের ধারায়, ধীরে ধীরে মানুষের শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন এসেছে, যা তাদের গলার গঠনকে ভাষার জন্য উপযোগী করে তুলেছে। এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ ছিল ল্যারিংস বা স্বরতন্ত্রী।

মানুষের ল্যারিংস বা স্বরতন্ত্রী গলার নিচের দিকে সরে এসেছে। এই সরণ আমাদের গলার প্যাসেজকে বড় করেছে, ফলে জটিল ও বৈচিত্র্যময় শব্দ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে ল্যারিংস উপরের দিকে অবস্থিত থাকে, যা তাদের শুধু সাধারণ ধরনের শব্দ করার সুযোগ দেয়। তবে মানুষের ক্ষেত্রে ল্যারিংস নিচে নামার ফলে আমরা স্বরের উঁচু-নিচু, শব্দের সূক্ষ্মতা, এবং উচ্চারণের জটিলতাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।

এছাড়াও, বিবর্তনের ফলে আমাদের জিহ্বার গঠনেও পরিবর্তন এসেছে। মানুষের জিহ্বা গলার পেছনের দিকে অবস্থিত এবং এটি আরো নমনীয়, যা বিভিন্ন ধরণের ধ্বনি তৈরি করতে সাহায্য করে। এছাড়া ঠোঁট, দাঁত, এবং তালুর বিকাশও কথা বলার ক্ষমতায় ভূমিকা রেখেছে। এগুলো একসঙ্গে কাজ করে স্পষ্ট এবং অর্থপূর্ণ ভাষার উচ্চারণ তৈরি করে।

গলার এই শারীরিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের বিকাশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মস্তিষ্কের ভাষার জন্য নির্ধারিত অংশ, যেমন ব্রোকা ও ভার্নিকি এলাকা, ক্রমে উন্নত হয়েছে। ফলে মানুষের মধ্যে ভাষাগত চিন্তাভাবনা, শব্দ গঠন, এবং বাক্য তৈরি করার ক্ষমতা বেড়েছে।

অতএব, আমাদের গলার বিকাশ ও বিবর্তনই আমাদের ভাষা ও ভাব প্রকাশের ক্ষমতা দিয়েছে। এই ক্ষমতা না থাকলে, মানুষ কখনোই সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে এতটা এগিয়ে যেতে পারত না। ভাষার মাধ্যমে মানুষের ভাবনা বিনিময়, জ্ঞান বিতরণ এবং সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষমতা মানুষকে অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা করে দিয়েছে।

17/09/2024

আমাদের মহাবিশ্ব একটি বিশাল ও বিস্ময়কর স্থান, যা অবিরাম বিস্তৃত এবং অসংখ্য রহস্য ধারণ করে। মহাবিশ্বকে আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পারি সেই অংশকে বলা হয় "পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্ব"। এর গড় বয়স প্রায় **১৩.৮ বিলিয়ন বছর**। এই পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের আয়তন প্রায় ৯৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ জুড়ে বিস্তৃত, যা অর্থাৎ, আলো এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে ৯৩ বিলিয়ন বছর সময় নেবে। এই বিশাল মহাবিশ্বে অসংখ্য গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ রয়েছে।

গ্যালাক্সি
গ্যালাক্সি হলো মহাজাগতিক বস্তুসমূহের এক বিশাল সমষ্টি, যেখানে তারা, গ্যাস, ধূলিকণা, এবং অন্ধকার পদার্থ একসঙ্গে অবস্থান করে। গ্যালাক্সিগুলোর সংখ্যা অনন্ত হতে পারে, কিন্তু আমাদের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বে আনুমানিক **দুই ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি** রয়েছে। গ্যালাক্সিগুলোর গড় বয়স প্রায় **১০-১২ বিলিয়ন বছর**। আমাদের গ্যালাক্সি, **মিল্কিওয়ে**, একটি মাঝারি আকারের গ্যালাক্সি, যার বয়স আনুমানিক **১৩.৬ বিলিয়ন বছর**।

সৌরজগত
প্রত্যেক গ্যালাক্সিতে অসংখ্য সৌরজগত বা সোলার সিস্টেম রয়েছে, আর আমাদের সৌরজগতটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মধ্যে অবস্থিত। সৌরজগতের প্রধান কেন্দ্র হলো **সূর্য**, যার চারপাশে বিভিন্ন গ্রহ, উপগ্রহ, এবং অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু আবর্তন করে। আমাদের সৌরজগতের বয়স আনুমানিক **৪.৬ বিলিয়ন বছর**।

পৃথিবী
পৃথিবী হলো আমাদের সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ, যেখানে জীবন বিদ্যমান। পৃথিবীর বয়স প্রায় **৪.৫৪ বিলিয়ন বছর**। পৃথিবীর গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল সৌরজগতের জন্মের কিছু পরেই। কোটি কোটি বছরের বিবর্তনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রাণের বিকাশ হয়েছে, আর মানবসভ্যতা এখানে গড়ে উঠেছে মাত্র কয়েক লাখ বছর আগে।

সারসংক্ষেপে বলা যায়, আমাদের মহাবিশ্ব এবং তার প্রতিটি উপাদান অসীম বিস্তৃত এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিকশিত হয়েছে। পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্ব, গ্যালাক্সি, সৌরজগত, এবং পৃথিবী—এদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব বয়স এবং বিকাশের ধারা রয়েছে, যা একে অপরের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত।

মহাবিশ্ব এবং পৃথিবীর জন্মের সময়ের মধ্যে বিশাল এক পার্থক্য রয়েছে। মহাবিশ্বের জন্মের সময়কে আমরা **"বিগ ব্যাং"** বলে অভিহিত করি, যা ঘটেছিল প্রায় **১৩.৮ বিলিয়ন বছর** আগে। সেই সময়ে মহাবিশ্ব একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র এবং ঘন বিন্দু থেকে হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে প্রসারিত হতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মহাবিশ্বের স্থান, সময়, পদার্থ, এবং শক্তি সবকিছু গঠিত হয়েছিল। সেই সময় থেকে মহাবিশ্ব ক্রমাগত প্রসারিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন গ্যালাক্সি, তারা, এবং অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে, **পৃথিবীর জন্ম** হয়েছিল অনেক পরে। আমাদের সৌরজগতের সাথে পৃথিবী গঠিত হয় প্রায় **৪.৫৪ বিলিয়ন বছর** আগে। যখন মহাবিশ্ব প্রায় **৯.২ বিলিয়ন বছর** পুরোনো, তখন আমাদের সৌরজগত গঠন প্রক্রিয়ার শুরু হয়। সৌরজগতের কেন্দ্রে সূর্য গঠিত হয়, এবং সূর্যের চারপাশে থাকা ধূলিকণা এবং গ্যাসের মেঘ থেকে বিভিন্ন গ্রহ, উপগ্রহ, এবং অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু তৈরি হয়। সেই ধূলিকণা এবং গ্যাস থেকে পৃথিবীর গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, যা পরবর্তী কয়েক মিলিয়ন বছরে সম্পূর্ণ হয়।

সুতরাং, মহাবিশ্বের জন্ম এবং পৃথিবীর জন্মের মধ্যে **প্রায় ৯.২ বিলিয়ন বছরের** পার্থক্য রয়েছে। মহাবিশ্ব যখন থেকে গঠিত হয়েছে, তখন থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তারার জন্ম, গ্যালাক্সির বিকাশ, এবং গ্রহের গঠন হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে পৃথিবী এবং আমাদের সৌরজগত তৈরি হয়েছে।

17/09/2024

"মাস্টার কি সিস্টেম" আসলে এক ধরণের মানসিক এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানচর্চা যা আমাদের মন এবং চিন্তাধারার শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগানোর পথ দেখায়। এই দর্শন অনুযায়ী, আমাদের মন আমাদের বাস্তবতার মূল চাবি। আমরা যেভাবে চিন্তা করি এবং অনুভব করি, সেটাই আমাদের চারপাশের পরিবেশ ও পরিস্থিতি গঠন করে। এটা বলে যে, আমাদের সচেতন মন (যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি) এবং অবচেতন মন (যা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিশ্বাস ও চিন্তার ভিত্তিতে কাজ করে) একে অপরের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে আমাদের জীবনকে পরিচালনা করে।

এই চিন্তার ধারা আমাদের বলে যে আমরা যদি ইতিবাচক চিন্তা, আত্মবিশ্বাস এবং সফলতার প্রতি মনোযোগ দেই, তবে সেই রকম বাস্তবতাই আমাদের জীবনে ফুটে উঠবে। অর্থাৎ, আমাদের চিন্তাধারা আমাদের কর্ম ও অভ্যাসে প্রভাব ফেলে, এবং সেই কর্ম আমাদের ভবিষ্যৎকে গড়ে তোলে। মনকে একটি বাগানের মতো বিবেচনা করা হয়েছে; যদি ভালো বীজ বপন করা হয়, তবে ভালো ফল পাওয়া যাবে, আর যদি নেতিবাচক বা ক্ষতিকর চিন্তা মাথায় রাখা হয়, তবে সেই রকম ফলই আসবে।

এই শিক্ষাবিধিতে বিশ্বাস করা হয় যে, বিশ্বের সমস্ত বড় অর্জন, সৃষ্টিশীলতা, ও সাফল্যের পেছনে মানসিক শক্তির ব্যবহারই মূল। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা মানে নিজের জীবনের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করা।

এই দর্শন অনুযায়ী, আমাদের মন দুই ভাগে বিভক্ত: সচেতন মন এবং অবচেতন মন। সচেতন মন হচ্ছে সেই অংশ, যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি—যেখানে আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে চিন্তা করি, সিদ্ধান্ত নিই, এবং পরিকল্পনা করি। অন্যদিকে, অবচেতন মন হলো সেই অংশ, যা আমাদের অভ্যাস, বিশ্বাস এবং আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়, যা সচেতন মন দ্বারা বারবার প্রভাবিত হয়ে গঠিত হয়।

এই পদ্ধতির মূল কাজের প্রক্রিয়াটি তিনটি ধাপে বিভক্ত:

১. চিন্তার ফোকাস
এখানে বলা হয়েছে যে, আমরা যেভাবে চিন্তা করি, সেটাই আমাদের বাস্তবতায় রূপ নেয়। যদি আমরা ইতিবাচক চিন্তা করি, আত্মবিশ্বাস ও সাফল্যের দিকে মনোযোগ দেই, তবে আমাদের অবচেতন মন সেই চিন্তাগুলোকে বাস্তবতায় রূপান্তর করতে কাজ শুরু করে। আমাদের মনকে নিয়মিতভাবে সেই চিন্তা বা উদ্দেশ্যের দিকে পরিচালিত করতে হয় যা আমরা অর্জন করতে চাই।

২. অনুভূতির শক্তি
চিন্তার সঙ্গে অনুভূতির গভীর সংযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র চিন্তা করা যথেষ্ট নয়, সেই চিন্তার সঙ্গে অনুভূতিকে জুড়ে দিতে হবে। যখন আমরা আমাদের চিন্তাগুলোর সঙ্গে গভীর আবেগ এবং অনুভূতি যোগ করি, তখন সেগুলো অবচেতন মনে আরও দৃঢ়ভাবে প্রবেশ করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ নিজের সফলতার চিন্তা করে এবং সেই সঙ্গে সেই সফলতার আনন্দ ও গর্ব অনুভব করে, তবে অবচেতন মন সেই অনুভূতিগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

৩. বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া
যখন আমাদের অবচেতন মন কোনও ধারণা বা চিন্তায় গভীরভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করে, তখন সেটা বাস্তবতায় রূপ নেওয়ার জন্য কাজ শুরু করে। অবচেতন মন আমাদের এমনভাবে পরিচালনা করে যেন আমরা এমন কর্ম এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি, যা আমাদের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সহায়ক হয়। এই প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে ঘটলেও, ধারাবাহিকতা এবং ইতিবাচক মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে এটা কার্যকর হয়।

সর্বোপরি, এই দর্শনের মূল কথাটি হলো, আমরা যেভাবে নিজের মানসিকতাকে গঠন করি, সেটাই আমাদের জীবনের গতি নির্ধারণ করে। নিজেকে নিয়মিত ইতিবাচকভাবে চিন্তা করতে শেখানো এবং সঠিক অনুভূতি জাগিয়ে তোলাই সফলতার প্রধান চাবিকাঠি।

এই পদ্ধতিটি শুরু করার জন্য আপনাকে প্রথমে আপনার মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তাধারাকে ইতিবাচক এবং স্পষ্ট করতে হবে। নিচে কয়েকটি ধাপ দেওয়া হলো, যা আপনাকে এই যাত্রা শুরু করতে সাহায্য করবে:

১. উদ্দেশ্য নির্ধারণ
প্রথমেই আপনাকে স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি কী চান। এটি হতে পারে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য, যেমন আর্থিক সাফল্য, শারীরিক সুস্থতা, ব্যক্তিগত উন্নতি, বা কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুখ। যতটা সম্ভব বিস্তারিতভাবে সেই লক্ষ্যটি নির্ধারণ করুন। উদাহরণস্বরূপ, শুধু "আমি সফল হতে চাই" না বলে বলুন, "আমি আমার ক্যারিয়ারে আগামী ৬ মাসের মধ্যে একটি বড় উন্নতি চাই।"

২. ইতিবাচক চিন্তা অনুশীলন
প্রতিদিন আপনার চিন্তাগুলোকে ইতিবাচক রাখার চেষ্টা করুন। আপনার মনের মধ্যে যে নেতিবাচক চিন্তা বা সংশয় আসে, সেগুলোকে চিনতে এবং পরিবর্তন করতে সচেতন থাকুন। যদি কখনও মনে হয় যে "আমি এটা করতে পারব না," তাহলে সেই চিন্তাকে ইতিবাচকভাবে পুনরায় সাজিয়ে বলুন, "আমি এটি করতে সক্ষম এবং আমি সফল হব।"

৩. ভিজ্যুয়ালাইজেশন বা কল্পনা করা
আপনার লক্ষ্য পূরণের দৃশ্য কল্পনা করুন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে চোখ বন্ধ করে কল্পনা করুন যে আপনি ইতিমধ্যে আপনার লক্ষ্য অর্জন করেছেন। এই প্রক্রিয়ায় আপনার অনুভূতিগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করুন—সাফল্যের আনন্দ, গর্ব বা তৃপ্তি অনুভব করুন। ভিজ্যুয়ালাইজেশন হল অবচেতন মনে সেই ভাবনাকে গভীরভাবে প্রোথিত করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম।

৪. ধ্যান ও মনোসংযোগ
প্রতিদিন কিছু সময় ধরে ধ্যান বা মনোসংযোগের চর্চা করুন। এটি আপনাকে আপনার চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে এবং মনকে স্থির করবে। ধ্যানের মাধ্যমে আপনি আপনার অবচেতন মনকে শান্ত করতে এবং নিজের অভ্যন্তরীণ শক্তিকে জাগ্রত করতে পারবেন। প্রতিদিন সকালে বা রাতে ১০-১৫ মিনিটের জন্য ধ্যান করতে পারেন।

৫. ইতিবাচক অভ্যাস গঠন
চিন্তা এবং অনুভূতির পাশাপাশি, আপনার দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং অভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ। আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়ক এমন ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। যেমন, যদি আপনার লক্ষ্য স্বাস্থ্য ভালো রাখা হয়, তবে নিয়মিত ব্যায়াম এবং সুষম খাবার গ্রহণের অভ্যাস তৈরি করুন। সফলতা ধীরে ধীরে আসে, তবে এটি অভ্যাসের মাধ্যমে নিশ্চিত করা সম্ভব।

৬. ধৈর্য ও বিশ্বাস
এই পদ্ধতিতে ধৈর্য ধরতে হবে এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। পরিবর্তন রাতারাতি আসবে না, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনি লক্ষ করবেন যে আপনার চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং কর্মের মধ্যে সমন্বয় ঘটতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে আপনার বাস্তবতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে থাকবে।

সারাংশ: শুরু করার জন্য আপনাকে স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে, ইতিবাচক চিন্তা এবং অভ্যাস তৈরি করতে হবে, প্রতিদিন ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং ধ্যানের মাধ্যমে আপনার মনকে প্রশিক্ষিত করতে হবে, এবং সর্বোপরি ধৈর্য ধরে নিজের শক্তির উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।

16/09/2024

অসীম শক্তি সম্পর্কে আমরা সাধারণত শারীরিক বা বাহ্যিক উৎস থেকে শক্তি পাওয়ার কথা ভাবি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, আমাদের ভিতরেই রয়েছে এক অবিনশ্বর এবং অসীম শক্তির ভাণ্ডার। এই শক্তি আমাদের সচেতনতা এবং অন্তর্দৃষ্টির সাথে জড়িত, যা আমাদের স্বাভাবিক সীমাবদ্ধতা এবং অন্তর্নিহিত বাধাগুলি অতিক্রম করতে সাহায্য করে।

অসীম শক্তির ধারণা এমন একটি শক্তির সাথে সম্পর্কিত, যা কখনোই ফুরিয়ে যায় না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের চাপ, উদ্বেগ এবং নেতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলি আমাদের এই শক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। কিন্তু যদি আমরা নিজেদের এই সীমাবদ্ধ চিন্তা ও অনুভূতির থেকে মুক্ত করতে পারি, তাহলে এই অন্তর্নিহিত শক্তি আমাদের মাঝে প্রগাঢ়ভাবে উপস্থিত থাকে এবং আমাদের জীবনকে এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা দেয়।

উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি একটি বাগানে হাঁটছেন এবং হঠাৎ একটি সুন্দর ফুল দেখতে পান। প্রথমে আপনি হয়তো শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য লক্ষ্য করবেন, কিন্তু যদি আপনি গভীরভাবে দেখেন এবং অনুভব করেন, তাহলে উপলব্ধি করবেন যে সেই ফুলের সৌন্দর্য আসলে আপনার ভিতরেই এক ধরনের আনন্দের প্রতিফলন সৃষ্টি করছে। এই অনুভূতি আসলে আপনার ভেতরের শক্তির প্রকাশ। যতক্ষণ না আমরা বাহ্যিক অবস্থান এবং আবেগগুলোতে আবদ্ধ থাকি, ততক্ষণ আমাদের এই শক্তি অনুভব করা কঠিন। কিন্তু যখন আমরা আমাদের অন্তর্নিহিত শক্তি এবং সচেতনতার প্রতি মনোযোগ দিই, তখন আমরা আবিষ্কার করি যে আমাদের শক্তির উৎস আসলে সীমাহীন।

এই শক্তি আমাদের আত্মার সাথে সম্পর্কিত। যখন আমরা নিজেদের মুক্ত এবং চিন্তাশক্তি থেকে মুক্ত করি, তখন আমরা দেখতে পাই যে আমাদের ভিতরে এক ধরণের স্থিতিশীলতা এবং শক্তি রয়েছে, যা কখনোই হারিয়ে যায় না। এটি আমাদের জীবনকে গঠন করতে সাহায্য করে, এবং সকল প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য অনুভব করতে সক্ষম করে।

16/09/2024

বাংলাদেশের ইতিহাস প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ভাষার বিকাশের এক দীর্ঘ যাত্রা। প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে পার্ল সাম্রাজ্য, মুঘল শাসন, ব্রিটিশ শাসন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পর্যন্ত, বাঙালি জাতির ইতিহাস বৈচিত্র্যপূর্ণ।

প্রাচীনকাল
বাংলাদেশের ইতিহাসের সূচনা প্রায় ৪০০০ বছর আগে। এই অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতার প্রমাণ পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ অব্দের আশপাশে। মাটি, পাথর এবং ব্রোঞ্জের শিল্পকর্মে সেসময়ের সভ্যতার ধারা দেখা যায়। প্রাচীন বাংলায় আর্য, দ্রাবিড়, এবং অন্যান্য স্থানীয় জাতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

মহাজনপদ ও মাউর্য সাম্রাজ্য
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে তৃতীয় শতকে বাংলার একটি বিশাল অংশ মহাজনপদের অধীনে ছিল। মাগধের মাউর্য সাম্রাজ্যের (৩২১-১৮৫ খ্রিস্টপূর্ব) সময়ে বাংলার উন্নতি ঘটে। বিশেষ করে সম্রাট অশোকের সময়ে বৌদ্ধ ধর্ম ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করে।

গুপ্ত সাম্রাজ্য
গুপ্ত সাম্রাজ্যের (৩২০-৫৫০ খ্রিস্টাব্দ) অধীনে বাংলায় হিন্দু ধর্মের উত্থান ঘটে। এই সময়ে শিল্প, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটে। গুপ্ত সাম্রাজ্য ভাঙার পর বিভিন্ন স্থানীয় রাজ্য গঠিত হয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল গৌড় রাজ্য।

পাল সাম্রাজ্য
বাংলার ইতিহাসে পাল সাম্রাজ্য (৭৫০-১১৭৪ খ্রিস্টাব্দ) একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। গোপাল প্রথম পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। পালরা ছিল বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক এবং তাদের শাসনামলে নালন্দা ও বিক্রমশীলা মহাবিহার স্থাপিত হয়, যা শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করে। পালদের পর সেন বংশ ক্ষমতায় আসে, যারা হিন্দু ধর্মের পুনরুত্থান ঘটায়।

মুসলিম শাসন ও মুঘল আমল
১২০৪ সালে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা করেন। এরপর সুলতানি আমলে (১৩৪২-১৫৭৬) এবং মুঘল শাসনে (১৫৭৬-১৭৫৭) বাংলার অর্থনীতি ও সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হয়। ঢাকাকে মুঘলরা তাদের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলে। এই সময়ে বাঙালি মুসলিম সমাজে ইসলামিক সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাব পড়ে।

ব্রিটিশ শাসন ও ভাষা আন্দোলন
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারত বিভাজন করলে পাকিস্তানের অংশ হিসেবে পূর্ব বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশ) গঠিত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক, যেখানে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য শহীদ দিবস হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়।

বাঙালি ভাষার বিকাশ
বাংলা ভাষার উদ্ভব প্রায় ১০০০ বছরের বেশি পুরনো। এটি প্রাচীন ইন্দো-আর্য ভাষা থেকে উদ্ভূত। সংস্কৃত, পালি এবং প্রাকৃত ভাষার মিশ্রণে বাংলা ভাষার বিকাশ ঘটে। প্রাথমিকভাবে এটি পালি ভাষার উপর প্রভাবিত ছিল। ১৩শ থেকে ১৮শ শতকের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের বিকাশ ঘটে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কবি ছিলেন চণ্ডীদাস ও বিদ্যাপতি। পরবর্তীতে, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ সাহিত্যিকদের হাত ধরে বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য একটি আন্তর্জাতিক মাত্রা লাভ করে।

স্বাধীনতা ও সমকালীন বাংলাদেশ
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবন, ভাষা ও ঐতিহ্য গর্বের বিষয় হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি হাজার বছরের পুরনো এবং এর ভাষা ও জাতিসত্তা সময়ের সাথে আরও পরিণত হয়েছে।

---—------------------------------

বাংলার প্রাচীন রাজ্যগুলো ছিল ইতিহাসের এক সমৃদ্ধ অধ্যায়, যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাম্রাজ্য ও শাসকদের অধীনে গঠিত হয়েছিল। এসব রাজ্য বাংলার সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলার উল্লেখযোগ্য প্রাচীন রাজ্যগুলো নিম্নরূপ:

১. পুণ্ড্র রাজ্য (পুণ্ড্রবর্ধন)
পুণ্ড্র রাজ্য বা পুণ্ড্রবর্ধন প্রাচীন বাংলার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত ছিল, যা বর্তমানে বগুড়া, রাজশাহী এবং রংপুর অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করতো। এ রাজ্যের পুণ্ড্ররা ছিল দ্রাবিড় জাতি, এবং এই অঞ্চলে পরবর্তীকালে আর্যদের প্রভাব পড়ে।

২. গঙ্গারিডাই (Gangaridai)
গঙ্গারিডাই রাজ্য ছিল প্রাচীন বাংলার একটি শক্তিশালী রাজ্য, যা গ্রিক ঐতিহাসিকদের দ্বারা উল্লেখিত হয়। গ্রিক ইতিহাসবিদ ডায়ডোরাস সিকুলাস এবং স্ট্র্যাবো লিখেছেন যে, গঙ্গারিডাইরা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সেনাবাহিনী এই অঞ্চলে আগ্রাসন চালাতে ভয় পেয়েছিল। এই রাজ্য গঙ্গা নদীর তীরে ছিল বলে ধারণা করা হয়।

৩. বঙ্গ রাজ্য
বঙ্গ রাজ্য ছিল প্রাচীন বাংলার একটি অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজ্য। এটি মূলত গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। বঙ্গ রাজ্যের অধিবাসীরা ‘বঙ্গ’ নামে পরিচিত ছিল এবং তারা ভারতীয় মহাকাব্য, যেমন মহাভারতে উল্লেখিত হয়েছে।

৪. সমতট
সমতট ছিল বাংলার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি রাজ্য, যা মূলত বর্তমান বাংলাদেশের কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল। এটি প্রধানত বৌদ্ধ রাজ্য ছিল এবং পাল ও চন্দ্র বংশের শাসকদের অধীনে সমৃদ্ধি লাভ করে।

৫. হরিকেল
হরিকেল রাজ্য ছিল বর্তমান চট্টগ্রাম অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করা একটি প্রাচীন রাজ্য। এ রাজ্যের মানুষরা প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিল। এটি ৭ম শতাব্দীতে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।

৬. গৌড় রাজ্য
গৌড় ছিল বাংলার একটি ঐতিহাসিক প্রাচীন রাজ্য, যার রাজধানী ছিল গৌড় নগরী (বর্তমান মালদা ও রাজশাহী অঞ্চলে)। এই রাজ্য গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর গঠিত হয় এবং গৌড়ের শাসকরা বাংলার উত্তরাঞ্চলে শাসন করতো। এটি পাল এবং সেন বংশের শাসনের অধীনে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ হয়।

৭. বৃহদ্রথ ও মগধ সাম্রাজ্য
মগধ সাম্রাজ্যের অধীনে বাংলার একটি বিশাল অংশ শাসিত হয়েছিল। বৃহদ্রথ বংশ এবং পরে মগধের মাউর্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়ে বাংলায় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে।

৮. বঙ্গালা
বঙ্গালা বা বাঙ্গালা ছিল মুসলিম শাসনামলের পূর্বে গঠিত একটি রাজ্য, যা বাংলার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল। এর শাসকরা স্থানীয় এবং মুসলিম উভয় প্রভাবের অধীনে ছিল।

প্রাচীন বাংলার রাজ্যগুলো বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন শাসকদের অধীনে উন্নতি লাভ করে এবং এদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বাংলার ইতিহাসে গভীর ছাপ রেখে গেছে।

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Monir Ahamed posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share