Love Birds

Love Birds Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Love Birds, News & Media Website, .

11/02/2020

#সময়_পরিবর্তনশীল
* ১০ বছর আগে ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দরী
নজর কাড়া মেয়েটাও এখন দুই সন্তানের মা..
কিন্তু সেই রুপ আর নাই....
* সব পরীক্ষায় নকল করে পাস করা
ছেলেটিও এখন বিসিএস ক্যাডার.....
* ক্লাসের পড়াশুনোয় সবচেয়ে বেশি সময়
ব্যয় করা ছেলেটিও এখন বেকার ঘুরছে...
*অন্যের গার্ল ফ্রেন্ড ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়া
বাইকওয়ালা ছেলেটার হবু বউও এখন
আরেক প্রতিষ্ঠিত টাকাওয়ালার বিয়ে করা বউ...
* ৮ বছর আগে ক্লাসে সবচেয়ে অহংকার
নিয়ে চলাফেরা করা ছেলেটাও এখন
ঋণের বোঝা নিয়ে কোন মতে বেচে আছে....
* ১০ বছর আগে ক্লাসের লাস্টে বসা
প্রতিনিয়ত খারাপ রেজাল্ট করা ছেলেটাও
এখন ডাক্তারি পড়া শেষ করে ফেলেছে...
* ৬-৭ বছর ধরে বারবার বয়ফ্রেন্ড চেঞ্জ করা
ফর্সা সুন্দরী মেয়েটাও এখন পাত্র পক্ষের কাছে
বার বার রিজেক্ট হচ্ছে....
* ৫ বছর আগের সবচেয়ে সেরা জুটিটা
এখন একজন আরেকজনের ব্লক লিস্টে....
* ৭-৮ বছর ধরে নিজের ইচ্ছামতো একের
পর এক প্রেম করা মেয়েটিও এখন নিজের
অনিচ্ছায় অপছন্দের মানুষের সাথে সংসার করছে...
* ১০ বছর আগে আড্ডা জমানো ছেলেটাকে
বন্ধু সার্কেল থেকে সরিয়ে দেওয়া মানুষটা
এখনো বন্ধুত্তহীনতায় ভুগছে....
কখন কার কপালে কি ঘটে তা আগে থেকে জানা সম্ভব নয়। অর্থ-বিত্ত,রুপ-গুনের কারনে সাময়িক কিছু দিনের জন্য আপনি-আমি হয়তো সময়কে নিজের মতো করে চালাতে পারবো.. কিন্তু সময় সবসময় আমার-আপনার
ইচ্ছামত চলবে,এমন আশা করা টা ভুল.. সময় সময়ের মতো করে শোধটা নিয়ে নেয়...
এত অহংকার কিসের আমাদের..?
মানুষকে মনুষত্বের চোখ দিয়ে দেখেন,কপালের নিচের চোখ দিয়ে নয়।
জীবনের প্রথম স্নান টা ও করছি অন্যজনের হাতে,
শেষ স্নান টা ও হবে অন্যজনেরই হাতে☹
আসুন নিজের জীবন কে আমল দ্বারা পরিবর্তন করে ফেলি❤

10/02/2020

দু’মাসের প্রেগন্যান্ট অবস্থায় একটু আগে রায়হানের সাথে অরুণির বিয়ে সম্পূর্ণ হলো।রায়হান নিজে ইচ্ছেই বিয়ে করেনি রায়হানকে এক প্রকার জোর করে ধরে বেঁধে ক্লাবের ছেলেরা অরুণির সাথে বিয়ে দিয়েছে।বিয়ে নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে। রায়হান পড়াশোনার জন্য ঢাকা থাকে।অরুণিদের পাশের ফ্ল্যাটে কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে ব্যাচেলর বাসায়।সেখান থেকেই মূলত প্রেমের শুরুটা।আস্তে আস্তে প্রেম গভীর থেকে গভীর হতে লাগল।এভাবেই একটু একটু করে রায়হান অরুণির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল।তার ফলস্বরুপ রায়হানের বাচ্চা অরুণির গর্ভে।রায়হানকে একদিন অরুণি ভয়ে ভয়ে ফোন করে বলল,
-”হ্যালো,রায়হান?
-“আরেহ্ সুইটহার্ট যে।তা কী খবর তোমার?এখন তো খুব একটা ফোন টোন দাও না।নাকী এখন আর আমাকে ভালো লাগে না!ডেটে ডাকলেও এড়িয়ে চলো!তুমি কিন্তু নিজেকে আমার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখে মহা অন্যায় করছ অরু।রাতে ঘুম হয় না।ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে সুখের সাগরে ডুব দেই।তোমার শরীরের ভাঁজে ভাঁজে মাদকতা ছড়িয়ে দেই।
রায়হানের কণ্ঠে অভিযোগ।অরু ফুঁপিয়ে কেঁদে দিল।রায়হান উত্তেজিত হয়ে বলল,
-“কী হয়েছে ময়নাপাখি কান্না করো কেন?আজ রাতে চলে এসো তোমার সব দুঃখ,কষ্ট,ভুলিয়ে দিব।
-“রায়হান প্লিজ স্টপ
রায়হান ফোনটা কাঁধের সাথে ঠেকিয়ে কানে চেপে ধরে একটা সিগারেট ধরাল।তাতে আয়েশ করে লম্বা একটা টান দিয়ে ধোঁয়া ছড়াতে ছড়াতে বলল,
-“কী হয়েছে আমার জানটার মন খারাপ?
অরু চোখ মুখ বুজে এক নিঃশ্বাসে বলল,
-“রায়হান আমার গর্ভে তোমার সন্তান।
রায়হান চমকে উঠল। মুখটা কাচুমাচু করে বলল,
-“সন্তান মা-নে?
-“ইয়েস আই এম প্রেগন্যান্ট।
রায়হানের মাথা ঘুরছে,চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে।অস্ফুট স্বরে বলল,
-“এখন কী করবা অরু?
-“কী করব মানে বিয়ে করব!
-“ইয়ে অরু আমরা দু’জন স্টুডেন্ট। বিয়ের পরে অনেক খরচ। জান প্লিজ এখন বিয়ে করতে পারব না আমি।তুমি অন্য ব্যবস্থা করো।
অরু তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
-“বিয়ে করতে পারবা না!সহবাস তো ঠিকই করতে পেরেছ।
-“অরু ওটা যাস্ট ক্ষণিকের ইনজয় ছিল।ভুলে যেও না তুমি আমি দুজনই মজা নিয়েছি।
-“আমি এতকিছু জানি না রায়হান তুমি বিয়ে কর প্লিজ?
রায়হান আর কিছু না বলে আচমকা ফোন কেটে দিল।অরু পাগলের মতো রায়হানের নাম্বারে কল ব্যাগ করল কিন্তু ফোনটা বার বার সুইচ অফ বলছে।অরু কী করবে?কী করা উচিৎ? কোনো দিক-দিশা না পেয়ে গুটিগুটি পায়ে বাবার ঘরে গেল।এখন একমাত্র বাবাই ভরসা।ছেলেমেয়েরা বিপদে পড়লে হয়ত বাবা-মা’কে জানাতে খুব ভয় পায়।ভয় পেয়ে না জানিয়ে জীবনে সবচেয়ে চরম ভুলটা করে।কারণ একমাত্র বাবা-মা মন থেকে সন্তানের ভালো চায়।হয়তো প্রথমে বকাঝকা করবে দু’একটা চড়,থাপ্পড় মারবে কিন্তু কঠিন বিপদের দিনে তারাই ঢাল হয়ে দাঁড়াবে, সন্তানদের ছোট বেলার মতই বুকে মাঝে আগলে রাখবে।অরু বাবার ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে বলল,
-“বাবা আসব?
জামাল সাহেব মৃদু হেসে বলল,
-“হ্যাঁ রে মা আয়
অরু অনেকক্ষণ ইতঃস্তত করে একসময় বাবার পা জড়িয়ে ধরে লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে সবটা খুলে বলল।সবশুনে জামাল সাহেব কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।এই মেয়েটাকে ছোট বেলা থেকে খুব আদর যত্ন দিয়ে মানুষ করেছেন তিনি। অরুরা দু’ভাই বোন।ছোট ভাইটা খুব ছোট বয়স আর কত হবে তিন’চার বছর।একমাত্র মেয়ের কূকীর্তি শুনে কোনো বাবা মায়ের মাথা ঠিক থাকার কথা না কিন্তু জামাল সাহেব খুব ঠাণ্ডা প্রকৃতির মানুষ।হুটহাট রাগ করা তার ধাতে নেই।খুব শান্ত গলায় বলল,
-“দেখ অরু তুই বড় হয়েছিস।ভালো মন্দ বোঝার বয়স তোর হয়েছে।ভুল তো করেই ফেলেছিস।চাইলেও শুধরাতে পারবি না। বরং এই ভুল থেকে শিক্ষা নে। জীবনে যা’তে এরকম ভুল দু’বার না হয়।বকাঝকা কিংবা মারামারি কোনো সলিউশন হতে পারে না।তাই আমি সেসবে যেতে চাচ্ছি না।তুমি কি করবি ভাবছিস?
-“বাবা আমি ওকে বিয়ে করব।তুমি যেভাবেই হোক ব্যবস্থা করে দাও।আমাদের ভুলের শাস্তি আমার অবুঝ, নিষ্পাপ বাচ্চাকে পেতে দিব না।
জামাল সাহেব ছলছল নয়নে মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইল।মাত্র কয়েক ঘণ্টায় মেয়েটা কেমন বড় হয়ে গেল।এই তো সেদিন বাজারে যাওয়ার জন্য বায়না ধরতো না নিয়ে গেলে কেঁদে কেটে বুক ভাঁসাত।আর আজ!জামাল সাহেব বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
-“বেশ তুই যা চাচ্ছিস তাই হবে।
জামাল সাহেব খুব কৌশলে ক্লাবের ছেলেদের বলে অরু আর রায়হানের বিয়ে দিয়েছে।প্রত্যেক বাবা মা চায় ছেলেমেয়েরা সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে বাঁচুক।জামাল সাহেবও তার উঁর্ধ্বে নয়। অরুর মা সবটা জানার পর মেয়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।হয়তো,অভিমানে, লজ্জায়,কিংবা কষ্টে।মুহূর্তেই চিরচেনা মানুষগুলো কেমন অচেনা হয়ে গেল।
রায়হান এবার অনার্স ফাইনাল এক্সাম দিয়েছে।ও অনেক মেধাবী ছাত্র।তাই তো গ্রাম থেকে শহরে পড়তে এসেছে।অরু এবার ইন্টার ১ম বর্ষে ভর্তি হয়েছে।বয়স ১৭/১৮হবে।বিয়ের পর থেকেই রায়হান মুখটা ভার করে রেখেছে।অরুর সাথে কোনো কথা বলছে না।অজানা ভয়ে অরুর মুখটাও শুকিয়ে গেছে।
বিয়ের মিনিট বিশেক পর অরু আর রায়হানকে বাসে উঠিয়ে দিল জামাল সাহেব।উদ্দেশ্য রায়হানের গ্রামের বাড়ি।অরু কিছুটা সংকোচ নিয়ে ভয়ে ভয়ে রায়হানের বুকে মাথা রেখে সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারেনি।রায়ান হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল,
-“অরু ওঠো?এসে গেছি আমরা।
রায়হানের ধাক্কায় অরুর ঘুম ভেঙে গেল।রায়হান অরুকে নিয়ে বাস থেকে নেমে একটা রিক্সা নিল।রিক্সা যত দ্রুত গতিতে ছুটছে রায়হানের মুখ ততই শুকিয়ে যাচ্ছে।অরুও খুব অস্থির লাগছে। একে তো নতুন যায়গা তার উপরে গ্রামে আগে কখনো আসেনি মেয়েটা।অরু মুগ্ধ নয়নে চারপাশে তাকিয়ে প্রকৃতি উপভোগ করছে।কী সুন্দর আঁকা বাকা মেঠো পথ
চারদিকে সবুজের সমারোহ।এত ক্লান্ত, অবসাদের পরেও অরুর খুব ভালো লাগছে গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ।অবশেষে অরুর শ্বশুড় বাড়িতে এসে পৌঁছাল।অরুদের দেখে একটা বয়স্ক মহিলা দৌড়ে এসে বলল,
-“বাপজান তুই আইছা?
রায়হান হালকা হেসে বলল,
-“হ্যাঁ আম্মা!
হঠাৎ অরুর দিকে তাকিয়ে মহিলাটি থম মেরে রইল।অরুর পা থেকে মাথা পর্যন্ত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে বলল,
-“বাপজান এই মাইয়া কেডা?
রায়হান চোখমুখ শক্ত করে উত্তর দিল,
-“তোমাদের বৌমা।
মহিলা অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল।একটু পর উঠানে বসে চিৎকার করে বলতে শুরু করল,
-“আল্লাহ্ গো আমার কি সর্বনাশ হইলো।ছাওয়ালরে পড়ুনের লেইগা ঢাহা পাঠাইছি ছাওয়াল আমার বিয়া কইরা মাইয়া ধইরা নিয়াইছে।এহন আমি কি করুম। এই মুখ আমি কারে দেহামু।বলেই মহিলা আঁচলে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগল।মহিলার চিৎকার চেঁচামিচির শব্দ শুনে গ্রামের অর্ধেক মানুষ জড়ো হয়ে গেছে।সবাই অরুর দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছে মনে হয় মেয়েটা ভিনদেশের কোন প্রানী। এদের অতিরিক্ত কৌতুহল দেখে অরুর খুব অস্বস্তি লাগছে।ভয়ে আমার হাত পা থরথর করে কাঁপছে।রায়হানের শার্টের কোণা খাঁমচে ধরে উঠানের এক কোণে জড়সর হয়ে মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে কে যেন গ্রামের চেয়ারম্যানকেও খবর দিয়েছে।তিনি রায়ানকে সব জেরা করতেই রায়ান মাথা নিচু করে একে একে গড়গড় করে সব বলে দিল।অরুর প্রেগন্যান্সির কথাশুনে সবাই একে অপরের মুখে চাওয়া-চাওয়ি করে ফিসফিস কি জানি বলাবলি করছে।
কিছু কথা এরকম,
-“মানসে ঢাহা যাইয়া টাহা কামাই করে, পড়ালেহা শিহে হিক্ষিত হয়,আর এই পোলা মাইয়া মাইসের লগে হুইয়া পেট বাজাইছে ছেঃ ছেঃ
-“ঠিক কইছো গো বুবু। গেরাম ডা আর গেরাম রইল না। আর মাইয়াডাও কী বেসরম দেখছনি।এতগুলান মানসের সামনে রায়হেনরে জড়াইয়া ধরছে।
-“হ গো কালে কালে আরো কততা দেখমু।
-“আমার মনে হয় কি বুবু পোলাডার কুনু দুষ নাই। মাইয়াডাই মনে হয় সরল সোজা পোলাডারে ফাঁসলায়া ফুঁসলায়া বিয়া করছে?
-“কি জেনি হইবার পারে।
নানা মানুষের নানান রকম কথা শুনে অরুর খুব গায়ে লাগছে।অরু ভাবছে,আমি কি একাই বাচ্চা গর্ভে ধারন করছি না কী? সবাই এমন কেন?অনেকে তো আমার মুখের উপরেও যা তা বলে দিচ্ছে।হাইরে মানুষ, হাইরে নিয়তি!
#গল্পপ্রেমিরা_আমাদের_Facebook_Page_টি_Like_করে_রাখুন।
খারাপ কথা হলো ছোয়াছে রোগের মতো বাতাসের আগে ছড়িয়ে যায়।তেমন ‘অরু’ বিয়ের আগে বাচ্চা গর্ভে নিয়ে ঘুরছে সেই কথাও ঘণ্টাখানিকের মাঝে ছড়িয়ে গেল গ্রাম কে গ্রাম।সবাই দলবল বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে অরুকে দেখতে আসছে।বাড়িতে এত মানুষের ভীরে পা ফেলার জায়গা নেই।সবার মুখে মুখে রটে গেল তালকদার বাড়ির পোলা ঢাহা গিয়া পোয়াতি মাইয়া বাইর কইরা আনছে।পুরোটা সময় অরু নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল।অতিরিক্ত লজ্জায় কান গরম হয়ে যাচ্ছে।এরচেয়ে তো মরে যাওয়া শ্রেয় ।তাহলে হয়ত এত অপমানিত হতে হতো না।সবচেয়ে বেশি বিরক্ত লাগছে রায়হানের মায়ের ন্যাকা কান্না।এই মহিলা সমানতালে বুক থাবড়াচ্ছে আর পাগলের প্রলেপ বকে হাউমাউ করে কাঁদছে!চেয়ারম্যানসাব সেসবে পাত্তা দিল না অবশ্য তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
-“রায়হানের মা কি করবা ভাবতাছ?পোলারে তো আর ফালাইতে পারবা না!
রায়হানের মা ফুলমতি বলল,
-“আমি আর কি কমু চেয়ারম্যানসাব! আপনেই এর একখান বিহিত করেন।
-“দেখ রায়হানের মা পোয়াতি অবস্থায় ইসলাম ধর্মে বিয়ে নিষিদ্ধ। তাই এই বিয়া আমরা মানি না।গ্রামে থাকতে গেলে কিছু নিময়-কারণ মেনে চলতে হয়।যেহেতু তোমার ছেলে শিকার করেছে মেয়েটার গর্ভের সন্তান তোমার ছেলের। তাই আমরা চাই বাচ্চা হওয়ার আগ পর্যন্ত ওরা দু’জন এক ঘরে থাকতে পারবে না।বাচ্চা হওয়ার পর ইমাম সাহেবকে ডেকে নতুন করে বিয়ে পড়িয়ে দিব।ততদিন মেয়েটাকে আলাদা ঘরে রাখবা।
ফুলমতি রাগে তেতে ওঠে হিসহিসিয়ে বলল,
-“এহন আর একলগে থাকলে কি হইবো চেয়ারম্যানসাব? বিয়ের আগে তো একলগে শুইয়া ঠিকই পেট বাজাইছে এই বেসরম ম্যাইয়া।
-“আহা রায়হানের মা এত বেশি বুঝো ক্যান? মাত্র তো সাতটা মাস। তোমার ছেলে, ছেলেবৌ কী এতটুকু সময় ধৈর্য ধরতে পারবে না।বলেই মুচকি হাসল চেয়ারম্যানসাব।
অরু,রায়হান দুজনেই মাথা নিচু করে ফেলল।এতটা অপমান,অবহেলা,উপহাস এর আগে কখনো শুনেনি অরু।আজ ভাগ্যের দোষে কতো কথাই না শুনতে হচ্ছে।কথাগুলো আপন মনে ভেবে দীর্ঘশ্বাস গোপন করল অরু।
অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো বাচ্চা জন্মের আগ পর্যন্ত দুজনকে আলাদা ঘরে ঘুমাতে হবে।এবং প্রয়োজন ছাড়া বেশি কথাও বলা যাবে না ।এতে অবশ্য রায়হানের কোনো আপত্তি নেই।কিন্তু অরু মনে প্রাণে চাচ্ছে রায়হান প্রতিবাদ করুক।যার হাত ধরে সব ছেড়েছুড়ে এল অরু তাকেই যদি কাছে না পায় তাহলে জীবনটায় বৃথা।কিন্তু মুখে কিছু বলার সাহস পেল না।
সন্ধা ঘনিয়ে এসেছে। লোকের কোলাহল ধীরে ধীরে কমছে।অরু বসে আছে রায়হানের ঘরে।আজ থেকে অরু রায়হানের ঘরে একা থাকবে।আর রায়হান থাকবে রাকিবের ঘরে।
#গল্পটি__পোস্ট_কারার_সাথেসাথে_নোটিফিকেশন_পেতে_আমাদের_Facebook_Page_টি_Like_করে_Follow_করে_রাখুন।
অরুর খুব খিদে পেয়েছে কিন্তু লজ্জায় কাউকে কিছু বলতেও পারছে না।একটু গরম ভাত আর চিংড়ি ভর্তা হলে মন্দ হতো না।একসময় ভাত না খেলে মা কতই না বকা দিত। আর আজ!একটু ভাতের জন্য চাতকপাখির মতো বসে আছে অরু। খিদেয় পেট জ্বলছে। চারপাশে এক নজর তাকিয়ে দেখল পানির বোতল ছাড়া খাবার মতো এ ঘরে কিছুই নেই।অরু হাত বাড়িয়ে বোতলটা এগিয়ে ঢকঢক করে অর্ধেক বোতল পানি খেয়ে নিল।তবুও খিদে কমছে না।অরু সময় কাটানোর জন্য সারাঘর ঘুরেঘুরে দেখল, একটা খাট পাতা,একটা আলমারি, আর একটা টেবিল ছাড়া এ ঘরে আর কিছুই নেই। মাথার উপর সশব্দে ফ্যান ঘুরছে।কী বিকট শব্দ!
রাত ৯টায় অরুর খাবার মিলল।কুচকুচে কালো একটি মেয়ে খাবারে প্লেট হাতে দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েটার বয়স আর কতো হবে ১৬/১৭।রায়হান একবার কথায় কথায় বলেছিল ওরা তিন ভাইবোন।তাহলে কী মেয়েটি রায়হানের বোন?অরু মেয়েটাকে দেখে একটু হাসার চেষ্টা করল,মেয়েটি বলল,
-“ভাবি আপনার খাবার?
-“ঘরে এসো?
মেয়েটি ঘরে এসে টেবিলে খাবার রেখে বলল,
-“তাড়াতাড়ি খেয়েনিন দেরি হলে আম্মা বকবে।
-“তুমি কী রায়হানের বোন?
মেয়েটি একগাল হেসে বলল,
-“সেকী আপনি জানেন না? হুম আমি দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন।
-“তোমার নাম কী?
-“রথী”
-“বাহ্ মিষ্টি নাম তো।কোন ক্লাসে পড়?
-“ক্লাস নাইনে।
-“আর তোমার মেঝভাই?
-“মেঝভাই তো এবার অনার্সে ভর্তি হয়েছে।
হঠাৎ রথী অরুর হাত চেপে ধরে ফিসফিস করে বলল,
-“ভাবি যে যাই বলুক আপনাকে কিন্তু আমার অন্নেক পছন্দ হয়েছে।আপনি কী ফর্সা,ডাগর ডাগর চোখে কি সুন্দর কাজলের রেখা এঁকেছেন।সরু ঠোঁটের ফাকে আপনার চিকুন দাঁত দেখা যাচ্ছে।সবচেয়ে বেশি সুন্দর আপনার গলার ভাঁজের কালো তিলটা।
অরু একটু হেসে রথীর গাল টেনে বলল,
-“তুমিও অনেক সুন্দরী রথী।
রথী মন খারাপ করে বলল,
-“কচু সুন্দর।আমি হলাম কালিমা।লোকে তো আমার দিকে ফিরেও তাকায় না।আমার মা’ই আমাকে দু’চোখে দেখতে পারে না।উঠতে বসতে কাইলেন্নী বলে গালি দেয়।আমার দু’ভাইও কিন্তু কালো।অথচ ওদের কখনো বকে না। পারলে মাথায় তুলে রাখে।
-“মন খারাপ করো না রথী। তুমি কি জানো কালো মেয়েরা ‘মায়াবতী’ হয়।তোমার চোখ,ঠোঁট,চুল, ভ্রুঁ কতো সুন্দর তুমি কি আয়নায় দেখেছ?
রথী ফিক করে হেসে দিয়ে বলল,
-“হুর, কাউলেন্নীদের আবার রুপ আছে না কী?যাইহোক ভাবি টেংরা মাছের ঝোল আর লাউ দিয়ে মসুর ডালের সাথে গরম ভাত এনেছি। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন ঠাণ্ডা হলে ভালো লাগবে না।
-“তুমি খাবে না?
-“আমি খেয়েছি ভাবি।
অরু আর কথা বাড়াল না।হাত ধুয়ে গপাগপ খেতে লাগল।যদিও তরকারি বেশ ঝাল হয়েছে তবুও খেতে খুব ভালো লাগছে ।গরম ভাতে ডাল দিয়ে মেখে অরু খুব তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছে। খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে টেংরা মাছে একটু করে কামড় দিচ্ছে। রথী মুগ্ধ দৃষ্টিতে ভাবির খাওয়া দেখছে।
খাওয়া শেষ হতেই অরু প্লেট, বাটি, গুছিয়ে রথীর হাতে দিয়ে বলল,
-“আমার হয়ে গেছে রথী তুমি এগুলো নিয়ে যাও।
-“আচ্ছা ভাবি এবার তাহলে ঘুমান।আর কোনোকিছু দরকার পড়লে আমাকে ডাকবেন।
-“আচ্ছা।
অরু ঘরের দরজা আটকে দিয়ে শাড়ির আঁচলটা ফেলে দিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিল।দক্ষিন পাশের জানালাটা খোলা, চাঁদের মৃদু আলোতে আশেপাশে দেখা যাচ্ছে।হঠাৎ অরুর মনে হলো জানালার পাশেই লোভাতুর দৃষ্টিতে এক জোড়া চোখ তাকে গিলে খাচ্ছে। অরু ভয়ে এক ঢোক গিলল। দ্রুত শাড়ির আঁচলে বুক ঢেকে নিল।একটু পরে দরজায় হালকা টোকা পড়ল।অরু রায়হান ভেবে স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলে দরজা খুলে দিতেই কেউ একজন হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে হালকা দরজা টেনে, আচমকা অরুকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরল।অরুও রায়হান ভেবে আলতো করে পিঠে হাত রেখে অভিমানি কণ্ঠে বলল,
-“এতক্ষণে আসার সময় হলো তোমার?
-”(নিশ্চুপ)
-“তুমি খুব পঁচা রায়হান। আমাকে একটুও ভালোবাসো না।
-“(নিশ্চুপ)
-“এ্যাঁই কথা বলছ না কেন?
পুরুষালী একজোড়া ঠোঁট অরুর কাঁধে স্পর্শ করল।অরু কিছুটা কেঁপে উঠল।আজ রায়হানের স্পর্শ বড্ড অচেনা লাগছে।অরু শাড়ির আঁচল খাঁমচে ধরে পরম আবেশে দু’চোখ বুজে বলল,
-“কী করছ কী ছাড়?
ওপাশ থেকে কোনো শব্দ শোনা গেল না। একজোড়া ঠোঁট কাঁধ ছেড়ে গলায় নেমে পড়েছে। ছোট ছোট চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে অরুর সারা গলা।অরু বেশামাল হয়ে ছেলেটির চুল আঁকড়ে ধরল।ছেলেটি থামল না তার হাত পায়চারী করছে অরুর পিঠে,পেটে।ঠোঁটের আদরমাখা স্পর্শ গলা ছেড়ে কপালে অনুভব করতেই অরু চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে অরুর সামনে দাঁড়িয়ে আছে সম্পূর্ণ অজানা অদেখা একটি নতুন মুখ।অরু ভয়ে এক চিৎকার দিতেই ছেলেটি অরুর মুখ চেপে ধরে বলল,
-“আরে ভাবি আস্তে চিল্লাও!এতজোড়ে চিৎকার করে শুধু শুধু আমাদের সুন্দর মুহূর্ত নষ্ট করছ কেন?
আতঙ্কে অরুর মুখ শুকিয়ে গেছে।ভয়ে হাত-পা থরথর করে কাঁপছে।এতক্ষণ রায়হান ভেবে এ কাকে কাছে টেনে নিয়েছিল অরু ভাবতেই ঘৃনায় সারাশরীর শিরশির করে উঠল। অস্ফুর স্বরে বলল,
-“আপনি কে?
রাকিব মুচকি হেসে দু’কদম পিছিয়ে গেল। বলল,
-“আমি তোমার দেবর রাকিব।
অরু চোখ মুখ শক্ত করে বলল,
-“এতক্ষণই আমার ঘর থেকে বেড়িয়ে যান?
-“আরে কম চিল্লাও তো।বেশি চিল্লাচিল্লি করলে আমি সবাইকে বলে দিব তুমি আমাকে সময় কাটানোর জন্য ঘরে ডেকেছ।তখন কিন্তু তোমাকেই লোকে বদনাম করবে,খারাপ ভাববে।বলেই রাকিব চাপা শব্দে হেসে দিল।
অরু দু’হাত জোর করে মিনুতির সুরে বলল,
-“প্লিজ আপনি এ ঘর থেকে বেড়িয়ে যান!
-“যাব তো!তার আগে আমাকে খুশি করো?
-“কী-ভা-বে?
-“বেশিকিছু করতে হবে না। শুধু একটু আদর দাও!তুমি একটা খাসা মাল বুঝলে,উফ,ফিগার কী হট।তোমার মতো হট মাল গ্রামে একপিছও নেই।তোমার উপর-নিচ একদম সমান। তোমাকে প্রথম দেখাতেই আমার ভালো লেগেছে।ইচ্ছে করছে এখনই…বলেই জীভ দিয়ে ঠোঁট ভিজাল রাকিব।তারপর অরুর চুলে হাত বুলিয়ে বলল,
-“শুধু আজকের রাতটা আমাকে দাও না জানপাখি? প্রমিস আর কখনো তোমাকে জ্বালাব না।
অরু নিঃশব্দে কেঁদে দিল।এক ঝটকায় মাথার উপর থেকে রাকিবের হাত সরিয়ে দিল।অরুর মাথা কাজ করছে না।রাগে,ঘৃন্নায় সারা শরীর জ্বলছে।যেভাবেই হোক এই পশুর হাত থেকে বাঁচতে হবে।এই লম্পটের হাতে নিজেকে তুলে দেওয়ার আগে নিজেকে শেষ করে দিবে তবুও অরু রাকিব নামের জানোয়ারের হাতে নিজেকে সোঁপে দিবে না।রাকিব একটু এগিয়ে এসে পকেটে দু’হাত ঢুকিয়ে অরুর মুখে ফু দিয়ে বলল,
-“কী ভাবছ সুন্দরী?
অরু দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বলল,
-“আপনি যাবেন কী যাবেন না?
রাকিব অরুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
-“যদি বলি যাব না!
অরু আর কথা বাড়াল না। আচমকা রাকিবের হাত টেনে ধরে খুব জোড়ে একটা কামড় বসিয়ে দিল।তারপর এক ধাক্কায় ঘর থেকে বের করে দিল রাকিবকে।দরজা আটকে বাঁলিশে মুখ গুঁজে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল অরু।ঘনটানা এত দ্রুত ঘটে গেল রাকিব এখনো হাবলার মতো উঠানে দাঁড়িয়ে আছে।তারপর কিছু একটা ভাবতেই শয়তানি হাসি দিয়ে বিড়বিড় করে বলল,
-“কতোদিন নিজেকে বাঁচাবে।আমার জালে তো তোমাকে ফাঁসাবোই সুন্দরী।
অরু ভাবছে,
ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে এক জানোয়ারের হাতে নিজেকে তুলে দিয়েই জীবনে চরম ভুল করেছি।এখন আবার আরেক পশু আমাকে খুবলে খাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে। এই জানোয়ারের হাত থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচাব?তাহলে কী কাল সকালে শাশুড়ি মা’কে আজ রাতের ঘটনা বলে দেওয়া উচিৎ?অবশ্যই বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগে শাশুড়িকে সবটা খুলে বলতে হবে।মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল অরু ভোর হলেও কোনো অঘটন ঘটার আগে শাশুড়িকে সব বলে দিবে সে।
রাত বারটার দিকে আবারও দরজার ওপাশ থেকে চাপা শব্দে অরুকে ডাকছে রায়হান,
-“এই অরু দরজা খুল,অরু?
অরু রায়হানের ডাক শুনেও না শোনার ভান করল। কোন কথা বলল না।দরজাও খুলল না।নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে ফ্যানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।রায়হান বেশ কয়েক বার ডেকে ভিতর থেকে কোনো সারা শব্দ না পেয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে গেল পুকুর পাড়ে।তারপর পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল। সিগারেটে আয়েশ করে লম্বা টান দিয়ে ধোঁয়া ছড়াল।
জেলেরা নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরায় ব্যস্ত। আর রায়হান একমনে সিগারেট টানায় ব্যস্ত। মাছেরা যেমন জালে বেঁধে ছটফট করছে ঠিক একই ভাবে ছটফট করছে রায়হানের বুক।অরুর সাথে আজ একবারও কথা হয়নি। মেয়েটা হয়তো খুব অভিমান করেছে।দিনের বেলা একসাথে বসে দু’দণ্ড কথা বলারও উপায় নেই।রাতে একটু দরজা খুললে কী এমন ক্ষতি হতো?
অরু সকালে ওঠে ধীর পায়ে শ্বাশুড়ি মায়ের ঘরে সামনে দাঁড়িয়ে নিচু গলায় বলল,
-“মা আসব?
-“(নিশ্চুপ)
-“মা আপনার সাথে একটু কথা ছিল?
-”(নিশ্চুপ)
অরু সাত পাঁচ না ভেবে ঘরে ঢুকে শ্বাশুড়ি মায়ের হাত ধরে সরল মনে বলল,
-“আমি জানি মা আপনি আমাকে পছন্দ করেন না।তবুও নিজের মা মনে করে আপনাকে কিছু কথা বলতে এলাম।
-“(নিশ্চুপ)
অরু ইতঃস্তত করে বলল,
-“আসলে মা কাল রাতে রাকিব ভাই আমার ঘরে গিয়েছিল।শুধু তাই নয় আমার সাথে বাজে ব্যবহার করছে!অনেক খারাপ কথাও বলেছে।
অরু মাথা নিচু করে কথাগুলো বললেও একসময় মাথা তুলে তাকাতেই ভয় পেয়ে গেল ।রাগে শ্বাশুড়ি মায়ের দু’চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। ফুলমতি এক ঝামটায় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
-“তোর সাহস তো কম না! একদিন যাইতে না যাইতেই আমার হিরের টুকরা পোলারে অপবাদ দেস।বান্দির বেডি বান্দি আমার সহজ সরল বড় পোলারে তো কালাজাদু কইরা হাত কইরা নিছা। এহন আবার আমার ছোডু পোলার পিছেও হাত ধুইয়া নামছা।ঐ ফকিন্নীর ছাও ফকিন্নী তোর সরম লজ্জ নাই।বিয়ের আগে পেট বাজাইছা আবার বড়বড় কতা কস।আসলে আমারই বুঝা উচিৎ ছিল তোগো মতো মাইয়ারা হইলো বারো ভাতার ধইরা খাওয়ার অভ্যাস।তোর বাপ মা এত ফকিন্নীর ফকিন্নী যৌতুক দেওয়ার ভয়তে তোরে ভাতার ধরা শিখাইছে। যাতে সহজেই টাহা ছাড়া মাইয়া পার করবার পারে।আমার ম্যাইয়া যদি তোর মতন বেজন্মা হইতো তাইলে নিজের হাতে গলা টিপ্পা এতক্ষণ মাইরা ফালাইতাম।এই গ্যামে খুঁজ নিয়া দেখ তো আমার রাকিবের মতন ভদ্র,শান্তশিষ্ঠ, আর একখান পোলা পাস না কী?ঐ রায়হান… রায়হানরে…. এইদিকে আয় এই ছেমড়ি কি কয় হুন?কয় কি রে এই ছেমড়ি নিজে পরপুরুষের লগে শুইয়া পেট বাজাইছে আবার কয় আমার ছোডু পোলার চরিত্র খারাপ? ঐ রায়হান,এইদিকে আয়? রাইতের আন্ধারে তোর ছোডু ভাই নাকী এই ছেমড়ির লগে লটর পটর করছে।
অরু কাঁদছে!নীরবে কাঁদছে।আজ পর্যন্ত অরুকে কেউ একটা বকা দিয়েছে না কী তাই সন্দেহ। অথচ আজ এই মহিলা বাজে ভাষায় কী সব গালাগালি করছে।বেশি খারাপ লাগছে অরুর জন্য অরুর বাবা মাকেও বকা দিচ্ছে।তার ছেলের মুখোশের আড়ালে কতো ভয়ানক রুপ লুকিয়ে আছে তা যদি জানত এই মহিলা তাহলে আজ হয়তো এভাবে বলতে পারত না।অথচ মহিলা সত্যি মিথ্যা যাচাই না করেই চিৎকার চেঁচামিচি শুরু করেছে।আজ অরু কাকে দোষ দিবে নিজেকে,না ভাগ্যকে?
🌎🌎 শেষ কান্না 🌎🌎
🌎🌎পর্বঃ ০১🌎🌎
📨📨চলবে📨📨

10/02/2020

দু’মাসের প্রেগন্যান্ট অবস্থায় একটু আগে রায়হানের সাথে অরুণির বিয়ে সম্পূর্ণ হলো।রায়হান নিজে ইচ্ছেই বিয়ে করেনি রায়হানকে এক প্রকার জোর করে ধরে বেঁধে ক্লাবের ছেলেরা অরুণির সাথে বিয়ে দিয়েছে।বিয়ে নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে। রায়হান পড়াশোনার জন্য ঢাকা থাকে।অরুণিদের পাশের ফ্ল্যাটে কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে ব্যাচেলর বাসায়।সেখান থেকেই মূলত প্রেমের শুরুটা।আস্তে আস্তে প্রেম গভীর থেকে গভীর হতে লাগল।এভাবেই একটু একটু করে রায়হান অরুণির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল।তার ফলস্বরুপ রায়হানের বাচ্চা অরুণির গর্ভে।রায়হানকে একদিন অরুণি ভয়ে ভয়ে ফোন করে বলল,
-”হ্যালো,রায়হান?
-“আরেহ্ সুইটহার্ট যে।তা কী খবর তোমার?এখন তো খুব একটা ফোন টোন দাও না।নাকী এখন আর আমাকে ভালো লাগে না!ডেটে ডাকলেও এড়িয়ে চলো!তুমি কিন্তু নিজেকে আমার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখে মহা অন্যায় করছ অরু।রাতে ঘুম হয় না।ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে সুখের সাগরে ডুব দেই।তোমার শরীরের ভাঁজে ভাঁজে মাদকতা ছড়িয়ে দেই।
রায়হানের কণ্ঠে অভিযোগ।অরু ফুঁপিয়ে কেঁদে দিল।রায়হান উত্তেজিত হয়ে বলল,
-“কী হয়েছে ময়নাপাখি কান্না করো কেন?আজ রাতে চলে এসো তোমার সব দুঃখ,কষ্ট,ভুলিয়ে দিব।
-“রায়হান প্লিজ স্টপ
রায়হান ফোনটা কাঁধের সাথে ঠেকিয়ে কানে চেপে ধরে একটা সিগারেট ধরাল।তাতে আয়েশ করে লম্বা একটা টান দিয়ে ধোঁয়া ছড়াতে ছড়াতে বলল,
-“কী হয়েছে আমার জানটার মন খারাপ?
অরু চোখ মুখ বুজে এক নিঃশ্বাসে বলল,
-“রায়হান আমার গর্ভে তোমার সন্তান।
রায়হান চমকে উঠল। মুখটা কাচুমাচু করে বলল,
-“সন্তান মা-নে?
-“ইয়েস আই এম প্রেগন্যান্ট।
রায়হানের মাথা ঘুরছে,চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে।অস্ফুট স্বরে বলল,
-“এখন কী করবা অরু?
-“কী করব মানে বিয়ে করব!
-“ইয়ে অরু আমরা দু’জন স্টুডেন্ট। বিয়ের পরে অনেক খরচ। জান প্লিজ এখন বিয়ে করতে পারব না আমি।তুমি অন্য ব্যবস্থা করো।
অরু তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
-“বিয়ে করতে পারবা না!সহবাস তো ঠিকই করতে পেরেছ।
-“অরু ওটা যাস্ট ক্ষণিকের ইনজয় ছিল।ভুলে যেও না তুমি আমি দুজনই মজা নিয়েছি।
-“আমি এতকিছু জানি না রায়হান তুমি বিয়ে কর প্লিজ?
রায়হান আর কিছু না বলে আচমকা ফোন কেটে দিল।অরু পাগলের মতো রায়হানের নাম্বারে কল ব্যাগ করল কিন্তু ফোনটা বার বার সুইচ অফ বলছে।অরু কী করবে?কী করা উচিৎ? কোনো দিক-দিশা না পেয়ে গুটিগুটি পায়ে বাবার ঘরে গেল।এখন একমাত্র বাবাই ভরসা।ছেলেমেয়েরা বিপদে পড়লে হয়ত বাবা-মা’কে জানাতে খুব ভয় পায়।ভয় পেয়ে না জানিয়ে জীবনে সবচেয়ে চরম ভুলটা করে।কারণ একমাত্র বাবা-মা মন থেকে সন্তানের ভালো চায়।হয়তো প্রথমে বকাঝকা করবে দু’একটা চড়,থাপ্পড় মারবে কিন্তু কঠিন বিপদের দিনে তারাই ঢাল হয়ে দাঁড়াবে, সন্তানদের ছোট বেলার মতই বুকে মাঝে আগলে রাখবে।অরু বাবার ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে বলল,
-“বাবা আসব?
জামাল সাহেব মৃদু হেসে বলল,
-“হ্যাঁ রে মা আয়
অরু অনেকক্ষণ ইতঃস্তত করে একসময় বাবার পা জড়িয়ে ধরে লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে সবটা খুলে বলল।সবশুনে জামাল সাহেব কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।এই মেয়েটাকে ছোট বেলা থেকে খুব আদর যত্ন দিয়ে মানুষ করেছেন তিনি। অরুরা দু’ভাই বোন।ছোট ভাইটা খুব ছোট বয়স আর কত হবে তিন’চার বছর।একমাত্র মেয়ের কূকীর্তি শুনে কোনো বাবা মায়ের মাথা ঠিক থাকার কথা না কিন্তু জামাল সাহেব খুব ঠাণ্ডা প্রকৃতির মানুষ।হুটহাট রাগ করা তার ধাতে নেই।খুব শান্ত গলায় বলল,
-“দেখ অরু তুই বড় হয়েছিস।ভালো মন্দ বোঝার বয়স তোর হয়েছে।ভুল তো করেই ফেলেছিস।চাইলেও শুধরাতে পারবি না। বরং এই ভুল থেকে শিক্ষা নে। জীবনে যা’তে এরকম ভুল দু’বার না হয়।বকাঝকা কিংবা মারামারি কোনো সলিউশন হতে পারে না।তাই আমি সেসবে যেতে চাচ্ছি না।তুমি কি করবি ভাবছিস?
-“বাবা আমি ওকে বিয়ে করব।তুমি যেভাবেই হোক ব্যবস্থা করে দাও।আমাদের ভুলের শাস্তি আমার অবুঝ, নিষ্পাপ বাচ্চাকে পেতে দিব না।
জামাল সাহেব ছলছল নয়নে মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইল।মাত্র কয়েক ঘণ্টায় মেয়েটা কেমন বড় হয়ে গেল।এই তো সেদিন বাজারে যাওয়ার জন্য বায়না ধরতো না নিয়ে গেলে কেঁদে কেটে বুক ভাঁসাত।আর আজ!জামাল সাহেব বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
-“বেশ তুই যা চাচ্ছিস তাই হবে।
জামাল সাহেব খুব কৌশলে ক্লাবের ছেলেদের বলে অরু আর রায়হানের বিয়ে দিয়েছে।প্রত্যেক বাবা মা চায় ছেলেমেয়েরা সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে বাঁচুক।জামাল সাহেবও তার উঁর্ধ্বে নয়। অরুর মা সবটা জানার পর মেয়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।হয়তো,অভিমানে, লজ্জায়,কিংবা কষ্টে।মুহূর্তেই চিরচেনা মানুষগুলো কেমন অচেনা হয়ে গেল।
রায়হান এবার অনার্স ফাইনাল এক্সাম দিয়েছে।ও অনেক মেধাবী ছাত্র।তাই তো গ্রাম থেকে শহরে পড়তে এসেছে।অরু এবার ইন্টার ১ম বর্ষে ভর্তি হয়েছে।বয়স ১৭/১৮হবে।বিয়ের পর থেকেই রায়হান মুখটা ভার করে রেখেছে।অরুর সাথে কোনো কথা বলছে না।অজানা ভয়ে অরুর মুখটাও শুকিয়ে গেছে।
বিয়ের মিনিট বিশেক পর অরু আর রায়হানকে বাসে উঠিয়ে দিল জামাল সাহেব।উদ্দেশ্য রায়হানের গ্রামের বাড়ি।অরু কিছুটা সংকোচ নিয়ে ভয়ে ভয়ে রায়হানের বুকে মাথা রেখে সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারেনি।রায়ান হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল,
-“অরু ওঠো?এসে গেছি আমরা।
রায়হানের ধাক্কায় অরুর ঘুম ভেঙে গেল।রায়হান অরুকে নিয়ে বাস থেকে নেমে একটা রিক্সা নিল।রিক্সা যত দ্রুত গতিতে ছুটছে রায়হানের মুখ ততই শুকিয়ে যাচ্ছে।অরুও খুব অস্থির লাগছে। একে তো নতুন যায়গা তার উপরে গ্রামে আগে কখনো আসেনি মেয়েটা।অরু মুগ্ধ নয়নে চারপাশে তাকিয়ে প্রকৃতি উপভোগ করছে।কী সুন্দর আঁকা বাকা মেঠো পথ
চারদিকে সবুজের সমারোহ।এত ক্লান্ত, অবসাদের পরেও অরুর খুব ভালো লাগছে গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ।অবশেষে অরুর শ্বশুড় বাড়িতে এসে পৌঁছাল।অরুদের দেখে একটা বয়স্ক মহিলা দৌড়ে এসে বলল,
-“বাপজান তুই আইছা?
রায়হান হালকা হেসে বলল,
-“হ্যাঁ আম্মা!
হঠাৎ অরুর দিকে তাকিয়ে মহিলাটি থম মেরে রইল।অরুর পা থেকে মাথা পর্যন্ত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে বলল,
-“বাপজান এই মাইয়া কেডা?
রায়হান চোখমুখ শক্ত করে উত্তর দিল,
-“তোমাদের বৌমা।
মহিলা অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল।একটু পর উঠানে বসে চিৎকার করে বলতে শুরু করল,
-“আল্লাহ্ গো আমার কি সর্বনাশ হইলো।ছাওয়ালরে পড়ুনের লেইগা ঢাহা পাঠাইছি ছাওয়াল আমার বিয়া কইরা মাইয়া ধইরা নিয়াইছে।এহন আমি কি করুম। এই মুখ আমি কারে দেহামু।বলেই মহিলা আঁচলে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগল।মহিলার চিৎকার চেঁচামিচির শব্দ শুনে গ্রামের অর্ধেক মানুষ জড়ো হয়ে গেছে।সবাই অরুর দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছে মনে হয় মেয়েটা ভিনদেশের কোন প্রানী। এদের অতিরিক্ত কৌতুহল দেখে অরুর খুব অস্বস্তি লাগছে।ভয়ে আমার হাত পা থরথর করে কাঁপছে।রায়হানের শার্টের কোণা খাঁমচে ধরে উঠানের এক কোণে জড়সর হয়ে মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে কে যেন গ্রামের চেয়ারম্যানকেও খবর দিয়েছে।তিনি রায়ানকে সব জেরা করতেই রায়ান মাথা নিচু করে একে একে গড়গড় করে সব বলে দিল।অরুর প্রেগন্যান্সির কথাশুনে সবাই একে অপরের মুখে চাওয়া-চাওয়ি করে ফিসফিস কি জানি বলাবলি করছে।
কিছু কথা এরকম,
-“মানসে ঢাহা যাইয়া টাহা কামাই করে, পড়ালেহা শিহে হিক্ষিত হয়,আর এই পোলা মাইয়া মাইসের লগে হুইয়া পেট বাজাইছে ছেঃ ছেঃ
-“ঠিক কইছো গো বুবু। গেরাম ডা আর গেরাম রইল না। আর মাইয়াডাও কী বেসরম দেখছনি।এতগুলান মানসের সামনে রায়হেনরে জড়াইয়া ধরছে।
-“হ গো কালে কালে আরো কততা দেখমু।
-“আমার মনে হয় কি বুবু পোলাডার কুনু দুষ নাই। মাইয়াডাই মনে হয় সরল সোজা পোলাডারে ফাঁসলায়া ফুঁসলায়া বিয়া করছে?
-“কি জেনি হইবার পারে।
নানা মানুষের নানান রকম কথা শুনে অরুর খুব গায়ে লাগছে।অরু ভাবছে,আমি কি একাই বাচ্চা গর্ভে ধারন করছি না কী? সবাই এমন কেন?অনেকে তো আমার মুখের উপরেও যা তা বলে দিচ্ছে।হাইরে মানুষ, হাইরে নিয়তি!
#গল্পপ্রেমিরা_আমার_প্রোফাইল_গুরে_আসতে_পারেন। খারাপ কথা হলো ছোয়াছে রোগের মতো বাতাসের আগে ছড়িয়ে যায়।তেমন ‘অরু’ বিয়ের আগে বাচ্চা গর্ভে নিয়ে ঘুরছে সেই কথাও ঘণ্টাখানিকের মাঝে ছড়িয়ে গেল গ্রাম কে গ্রাম।সবাই দলবল বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে অরুকে দেখতে আসছে।বাড়িতে এত মানুষের ভীরে পা ফেলার জায়গা নেই।সবার মুখে মুখে রটে গেল তালকদার বাড়ির পোলা ঢাহা গিয়া পোয়াতি মাইয়া বাইর কইরা আনছে।পুরোটা সময় অরু নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল।অতিরিক্ত লজ্জায় কান গরম হয়ে যাচ্ছে।এরচেয়ে তো মরে যাওয়া শ্রেয় ।তাহলে হয়ত এত অপমানিত হতে হতো না।সবচেয়ে বেশি বিরক্ত লাগছে রায়হানের মায়ের ন্যাকা কান্না।এই মহিলা সমানতালে বুক থাবড়াচ্ছে আর পাগলের প্রলেপ বকে হাউমাউ করে কাঁদছে!চেয়ারম্যানসাব সেসবে পাত্তা দিল না অবশ্য তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
-“রায়হানের মা কি করবা ভাবতাছ?পোলারে তো আর ফালাইতে পারবা না!
রায়হানের মা ফুলমতি বলল,
-“আমি আর কি কমু চেয়ারম্যানসাব! আপনেই এর একখান বিহিত করেন।
-“দেখ রায়হানের মা পোয়াতি অবস্থায় ইসলাম ধর্মে বিয়ে নিষিদ্ধ। তাই এই বিয়া আমরা মানি না।গ্রামে থাকতে গেলে কিছু নিময়-কারণ মেনে চলতে হয়।যেহেতু তোমার ছেলে শিকার করেছে মেয়েটার গর্ভের সন্তান তোমার ছেলের। তাই আমরা চাই বাচ্চা হওয়ার আগ পর্যন্ত ওরা দু’জন এক ঘরে থাকতে পারবে না।বাচ্চা হওয়ার পর ইমাম সাহেবকে ডেকে নতুন করে বিয়ে পড়িয়ে দিব।ততদিন মেয়েটাকে আলাদা ঘরে রাখবা।
ফুলমতি রাগে তেতে ওঠে হিসহিসিয়ে বলল,
-“এহন আর একলগে থাকলে কি হইবো চেয়ারম্যানসাব? বিয়ের আগে তো একলগে শুইয়া ঠিকই পেট বাজাইছে এই বেসরম ম্যাইয়া।
-“আহা রায়হানের মা এত বেশি বুঝো ক্যান? মাত্র তো সাতটা মাস। তোমার ছেলে, ছেলেবৌ কী এতটুকু সময় ধৈর্য ধরতে পারবে না।বলেই মুচকি হাসল চেয়ারম্যানসাব।

অরু,রায়হান দুজনেই মাথা নিচু করে ফেলল।এতটা অপমান,অবহেলা,উপহাস এর আগে কখনো শুনেনি অরু।আজ ভাগ্যের দোষে কতো কথাই না শুনতে হচ্ছে।কথাগুলো আপন মনে ভেবে দীর্ঘশ্বাস গোপন করল অরু।
অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো বাচ্চা জন্মের আগ পর্যন্ত দুজনকে আলাদা ঘরে ঘুমাতে হবে।এবং প্রয়োজন ছাড়া বেশি কথাও বলা যাবে না ।এতে অবশ্য রায়হানের কোনো আপত্তি নেই।কিন্তু অরু মনে প্রাণে চাচ্ছে রায়হান প্রতিবাদ করুক।যার হাত ধরে সব ছেড়েছুড়ে এল অরু তাকেই যদি কাছে না পায় তাহলে জীবনটায় বৃথা।কিন্তু মুখে কিছু বলার সাহস পেল না।

সন্ধা ঘনিয়ে এসেছে। লোকের কোলাহল ধীরে ধীরে কমছে।অরু বসে আছে রায়হানের ঘরে।আজ থেকে অরু রায়হানের ঘরে একা থাকবে।আর রায়হান থাকবে রাকিবের ঘরে।
#গল্পটি__পোস্ট_কারার_সাথেসাথে_নোটিফিকেশন_পেতে_আমাকে__Follow_করে_রাখুন।
অরুর খুব খিদে পেয়েছে কিন্তু লজ্জায় কাউকে কিছু বলতেও পারছে না।একটু গরম ভাত আর চিংড়ি ভর্তা হলে মন্দ হতো না।একসময় ভাত না খেলে মা কতই না বকা দিত। আর আজ!একটু ভাতের জন্য চাতকপাখির মতো বসে আছে অরু। খিদেয় পেট জ্বলছে। চারপাশে এক নজর তাকিয়ে দেখল পানির বোতল ছাড়া খাবার মতো এ ঘরে কিছুই নেই।অরু হাত বাড়িয়ে বোতলটা এগিয়ে ঢকঢক করে অর্ধেক বোতল পানি খেয়ে নিল।তবুও খিদে কমছে না।অরু সময় কাটানোর জন্য সারাঘর ঘুরেঘুরে দেখল, একটা খাট পাতা,একটা আলমারি, আর একটা টেবিল ছাড়া এ ঘরে আর কিছুই নেই। মাথার উপর সশব্দে ফ্যান ঘুরছে।কী বিকট শব্দ!

রাত ৯টায় অরুর খাবার মিলল।কুচকুচে কালো একটি মেয়ে খাবারে প্লেট হাতে দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েটার বয়স আর কতো হবে ১৬/১৭।রায়হান একবার কথায় কথায় বলেছিল ওরা তিন ভাইবোন।তাহলে কী মেয়েটি রায়হানের বোন?অরু মেয়েটাকে দেখে একটু হাসার চেষ্টা করল,মেয়েটি বলল,
-“ভাবি আপনার খাবার?
-“ঘরে এসো?
মেয়েটি ঘরে এসে টেবিলে খাবার রেখে বলল,
-“তাড়াতাড়ি খেয়েনিন দেরি হলে আম্মা বকবে।
-“তুমি কী রায়হানের বোন?
মেয়েটি একগাল হেসে বলল,
-“সেকী আপনি জানেন না? হুম আমি দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন।
-“তোমার নাম কী?
-“রথী”
-“বাহ্ মিষ্টি নাম তো।কোন ক্লাসে পড়?
-“ক্লাস নাইনে।
-“আর তোমার মেঝভাই?
-“মেঝভাই তো এবার অনার্সে ভর্তি হয়েছে।
হঠাৎ রথী অরুর হাত চেপে ধরে ফিসফিস করে বলল,
-“ভাবি যে যাই বলুক আপনাকে কিন্তু আমার অন্নেক পছন্দ হয়েছে।আপনি কী ফর্সা,ডাগর ডাগর চোখে কি সুন্দর কাজলের রেখা এঁকেছেন।সরু ঠোঁটের ফাকে আপনার চিকুন দাঁত দেখা যাচ্ছে।সবচেয়ে বেশি সুন্দর আপনার গলার ভাঁজের কালো তিলটা।
অরু একটু হেসে রথীর গাল টেনে বলল,
-“তুমিও অনেক সুন্দরী রথী।
রথী মন খারাপ করে বলল,
-“কচু সুন্দর।আমি হলাম কালিমা।লোকে তো আমার দিকে ফিরেও তাকায় না।আমার মা’ই আমাকে দু’চোখে দেখতে পারে না।উঠতে বসতে কাইলেন্নী বলে গালি দেয়।আমার দু’ভাইও কিন্তু কালো।অথচ ওদের কখনো বকে না। পারলে মাথায় তুলে রাখে।
-“মন খারাপ করো না রথী। তুমি কি জানো কালো মেয়েরা ‘মায়াবতী’ হয়।তোমার চোখ,ঠোঁট,চুল, ভ্রুঁ কতো সুন্দর তুমি কি আয়নায় দেখেছ?
রথী ফিক করে হেসে দিয়ে বলল,
-“হুর, কাউলেন্নীদের আবার রুপ আছে না কী?যাইহোক ভাবি টেংরা মাছের ঝোল আর লাউ দিয়ে মসুর ডালের সাথে গরম ভাত এনেছি। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন ঠাণ্ডা হলে ভালো লাগবে না।
-“তুমি খাবে না?
-“আমি খেয়েছি ভাবি।
অরু আর কথা বাড়াল না।হাত ধুয়ে গপাগপ খেতে লাগল।যদিও তরকারি বেশ ঝাল হয়েছে তবুও খেতে খুব ভালো লাগছে ।গরম ভাতে ডাল দিয়ে মেখে অরু খুব তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছে। খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে টেংরা মাছে একটু করে কামড় দিচ্ছে। রথী মুগ্ধ দৃষ্টিতে ভাবির খাওয়া দেখছে।
খাওয়া শেষ হতেই অরু প্লেট, বাটি, গুছিয়ে রথীর হাতে দিয়ে বলল,
-“আমার হয়ে গেছে রথী তুমি এগুলো নিয়ে যাও।
-“আচ্ছা ভাবি এবার তাহলে ঘুমান।আর কোনোকিছু দরকার পড়লে আমাকে ডাকবেন।
-“আচ্ছা।
অরু ঘরের দরজা আটকে দিয়ে শাড়ির আঁচলটা ফেলে দিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিল।দক্ষিন পাশের জানালাটা খোলা, চাঁদের মৃদু আলোতে আশেপাশে দেখা যাচ্ছে।হঠাৎ অরুর মনে হলো জানালার পাশেই লোভাতুর দৃষ্টিতে এক জোড়া চোখ তাকে গিলে খাচ্ছে। অরু ভয়ে এক ঢোক গিলল। দ্রুত শাড়ির আঁচলে বুক ঢেকে নিল।একটু পরে দরজায় হালকা টোকা পড়ল।অরু রায়হান ভেবে স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলে দরজা খুলে দিতেই কেউ একজন হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে হালকা দরজা টেনে, আচমকা অরুকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরল।অরুও রায়হান ভেবে আলতো করে পিঠে হাত রেখে অভিমানি কণ্ঠে বলল,
-“এতক্ষণে আসার সময় হলো তোমার?
-”(নিশ্চুপ)
-“তুমি খুব পঁচা রায়হান। আমাকে একটুও ভালোবাসো না।
-“(নিশ্চুপ)
-“এ্যাঁই কথা বলছ না কেন?
পুরুষালী একজোড়া ঠোঁট অরুর কাঁধে স্পর্শ করল।অরু কিছুটা কেঁপে উঠল।আজ রায়হানের স্পর্শ বড্ড অচেনা লাগছে।অরু শাড়ির আঁচল খাঁমচে ধরে পরম আবেশে দু’চোখ বুজে বলল,
-“কী করছ কী ছাড়?
ওপাশ থেকে কোনো শব্দ শোনা গেল না। একজোড়া ঠোঁট কাঁধ ছেড়ে গলায় নেমে পড়েছে। ছোট ছোট চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে অরুর সারা গলা।অরু বেশামাল হয়ে ছেলেটির চুল আঁকড়ে ধরল।ছেলেটি থামল না তার হাত পায়চারী করছে অরুর পিঠে,পেটে।ঠোঁটের আদরমাখা স্পর্শ গলা ছেড়ে কপালে অনুভব করতেই অরু চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে অরুর সামনে দাঁড়িয়ে আছে সম্পূর্ণ অজানা অদেখা একটি নতুন মুখ।অরু ভয়ে এক চিৎকার দিতেই ছেলেটি অরুর মুখ চেপে ধরে বলল,
-“আরে ভাবি আস্তে চিল্লাও!এতজোড়ে চিৎকার করে শুধু শুধু আমাদের সুন্দর মুহূর্ত নষ্ট করছ কেন?

আতঙ্কে অরুর মুখ শুকিয়ে গেছে।ভয়ে হাত-পা থরথর করে কাঁপছে।এতক্ষণ রায়হান ভেবে এ কাকে কাছে টেনে নিয়েছিল অরু ভাবতেই ঘৃনায় সারাশরীর শিরশির করে উঠল। অস্ফুর স্বরে বলল,
-“আপনি কে?
রাকিব মুচকি হেসে দু’কদম পিছিয়ে গেল। বলল,
-“আমি তোমার দেবর রাকিব।
অরু চোখ মুখ শক্ত করে বলল,
-“এতক্ষণই আমার ঘর থেকে বেড়িয়ে যান?
-“আরে কম চিল্লাও তো।বেশি চিল্লাচিল্লি করলে আমি সবাইকে বলে দিব তুমি আমাকে সময় কাটানোর জন্য ঘরে ডেকেছ।তখন কিন্তু তোমাকেই লোকে বদনাম করবে,খারাপ ভাববে।বলেই রাকিব চাপা শব্দে হেসে দিল।
অরু দু’হাত জোর করে মিনুতির সুরে বলল,
-“প্লিজ আপনি এ ঘর থেকে বেড়িয়ে যান!
-“যাব তো!তার আগে আমাকে খুশি করো?
-“কী-ভা-বে?
-“বেশিকিছু করতে হবে না। শুধু একটু আদর দাও!তুমি একটা খাসা মাল বুঝলে,উফ,ফিগার কী হট।তোমার মতো হট মাল গ্রামে একপিছও নেই।তোমার উপর-নিচ একদম সমান। তোমাকে প্রথম দেখাতেই আমার ভালো লেগেছে।ইচ্ছে করছে এখনই…বলেই জীভ দিয়ে ঠোঁট ভিজাল রাকিব।তারপর অরুর চুলে হাত বুলিয়ে বলল,
-“শুধু আজকের রাতটা আমাকে দাও না জানপাখি? প্রমিস আর কখনো তোমাকে জ্বালাব না।
অরু নিঃশব্দে কেঁদে দিল।এক ঝটকায় মাথার উপর থেকে রাকিবের হাত সরিয়ে দিল।অরুর মাথা কাজ করছে না।রাগে,ঘৃন্নায় সারা শরীর জ্বলছে।যেভাবেই হোক এই পশুর হাত থেকে বাঁচতে হবে।এই লম্পটের হাতে নিজেকে তুলে দেওয়ার আগে নিজেকে শেষ করে দিবে তবুও অরু রাকিব নামের জানোয়ারের হাতে নিজেকে সোঁপে দিবে না।রাকিব একটু এগিয়ে এসে পকেটে দু’হাত ঢুকিয়ে অরুর মুখে ফু দিয়ে বলল,
-“কী ভাবছ সুন্দরী?
অরু দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বলল,
-“আপনি যাবেন কী যাবেন না?
রাকিব অরুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
-“যদি বলি যাব না!
অরু আর কথা বাড়াল না। আচমকা রাকিবের হাত টেনে ধরে খুব জোড়ে একটা কামড় বসিয়ে দিল।তারপর এক ধাক্কায় ঘর থেকে বের করে দিল রাকিবকে।দরজা আটকে বাঁলিশে মুখ গুঁজে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল অরু।ঘনটানা এত দ্রুত ঘটে গেল রাকিব এখনো হাবলার মতো উঠানে দাঁড়িয়ে আছে।তারপর কিছু একটা ভাবতেই শয়তানি হাসি দিয়ে বিড়বিড় করে বলল,
-“কতোদিন নিজেকে বাঁচাবে।আমার জালে তো তোমাকে ফাঁসাবোই সুন্দরী।

অরু ভাবছে,
ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে এক জানোয়ারের হাতে নিজেকে তুলে দিয়েই জীবনে চরম ভুল করেছি।এখন আবার আরেক পশু আমাকে খুবলে খাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে। এই জানোয়ারের হাত থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচাব?তাহলে কী কাল সকালে শাশুড়ি মা’কে আজ রাতের ঘটনা বলে দেওয়া উচিৎ?অবশ্যই বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগে শাশুড়িকে সবটা খুলে বলতে হবে।মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল অরু ভোর হলেও কোনো অঘটন ঘটার আগে শাশুড়িকে সব বলে দিবে সে।

রাত বারটার দিকে আবারও দরজার ওপাশ থেকে চাপা শব্দে অরুকে ডাকছে রায়হান,
-“এই অরু দরজা খুল,অরু?
অরু রায়হানের ডাক শুনেও না শোনার ভান করল। কোন কথা বলল না।দরজাও খুলল না।নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে ফ্যানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।রায়হান বেশ কয়েক বার ডেকে ভিতর থেকে কোনো সারা শব্দ না পেয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে গেল পুকুর পাড়ে।তারপর পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল। সিগারেটে আয়েশ করে লম্বা টান দিয়ে ধোঁয়া ছড়াল।
জেলেরা নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরায় ব্যস্ত। আর রায়হান একমনে সিগারেট টানায় ব্যস্ত। মাছেরা যেমন জালে বেঁধে ছটফট করছে ঠিক একই ভাবে ছটফট করছে রায়হানের বুক।অরুর সাথে আজ একবারও কথা হয়নি। মেয়েটা হয়তো খুব অভিমান করেছে।দিনের বেলা একসাথে বসে দু’দণ্ড কথা বলারও উপায় নেই।রাতে একটু দরজা খুললে কী এমন ক্ষতি হতো?

অরু সকালে ওঠে ধীর পায়ে শ্বাশুড়ি মায়ের ঘরে সামনে দাঁড়িয়ে নিচু গলায় বলল,
-“মা আসব?
-“(নিশ্চুপ)
-“মা আপনার সাথে একটু কথা ছিল?
-”(নিশ্চুপ)
অরু সাত পাঁচ না ভেবে ঘরে ঢুকে শ্বাশুড়ি মায়ের হাত ধরে সরল মনে বলল,
-“আমি জানি মা আপনি আমাকে পছন্দ করেন না।তবুও নিজের মা মনে করে আপনাকে কিছু কথা বলতে এলাম।
-“(নিশ্চুপ)
অরু ইতঃস্তত করে বলল,
-“আসলে মা কাল রাতে রাকিব ভাই আমার ঘরে গিয়েছিল।শুধু তাই নয় আমার সাথে বাজে ব্যবহার করছে!অনেক খারাপ কথাও বলেছে।
অরু মাথা নিচু করে কথাগুলো বললেও একসময় মাথা তুলে তাকাতেই ভয় পেয়ে গেল ।রাগে শ্বাশুড়ি মায়ের দু’চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। ফুলমতি এক ঝামটায় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
-“তোর সাহস তো কম না! একদিন যাইতে না যাইতেই আমার হিরের টুকরা পোলারে অপবাদ দেস।বান্দির বেডি বান্দি আমার সহজ সরল বড় পোলারে তো কালাজাদু কইরা হাত কইরা নিছা। এহন আবার আমার ছোডু পোলার পিছেও হাত ধুইয়া নামছা।ঐ ফকিন্নীর ছাও ফকিন্নী তোর সরম লজ্জ নাই।বিয়ের আগে পেট বাজাইছা আবার বড়বড় কতা কস।আসলে আমারই বুঝা উচিৎ ছিল তোগো মতো মাইয়ারা হইলো বারো ভাতার ধইরা খাওয়ার অভ্যাস।তোর বাপ মা এত ফকিন্নীর ফকিন্নী যৌতুক দেওয়ার ভয়তে তোরে ভাতার ধরা শিখাইছে। যাতে সহজেই টাহা ছাড়া মাইয়া পার করবার পারে।আমার ম্যাইয়া যদি তোর মতন বেজন্মা হইতো তাইলে নিজের হাতে গলা টিপ্পা এতক্ষণ মাইরা ফালাইতাম।এই গ্যামে খুঁজ নিয়া দেখ তো আমার রাকিবের মতন ভদ্র,শান্তশিষ্ঠ, আর একখান পোলা পাস না কী?ঐ রায়হান… রায়হানরে…. এইদিকে আয় এই ছেমড়ি কি কয় হুন?কয় কি রে এই ছেমড়ি নিজে পরপুরুষের লগে শুইয়া পেট বাজাইছে আবার কয় আমার ছোডু পোলার চরিত্র খারাপ? ঐ রায়হান,এইদিকে আয়? রাইতের আন্ধারে তোর ছোডু ভাই নাকী এই ছেমড়ির লগে লটর পটর করছে।

অরু কাঁদছে!নীরবে কাঁদছে।আজ পর্যন্ত অরুকে কেউ একটা বকা দিয়েছে না কী তাই সন্দেহ। অথচ আজ এই মহিলা বাজে ভাষায় কী সব গালাগালি করছে।বেশি খারাপ লাগছে অরুর জন্য অরুর বাবা মাকেও বকা দিচ্ছে।তার ছেলের মুখোশের আড়ালে কতো ভয়ানক রুপ লুকিয়ে আছে তা যদি জানত এই মহিলা তাহলে আজ হয়তো এভাবে বলতে পারত না।অথচ মহিলা সত্যি মিথ্যা যাচাই না করেই চিৎকার চেঁচামিচি শুরু করেছে।আজ অরু কাকে দোষ দিবে নিজেকে,না ভাগ্যকে?

🌎🌎 শেষ কান্না 🌎🌎
🌀🌀লেখকঃ ববিতা রায়🌀🌀
🌎🌎পর্বঃ ০১🌎🌎

📨📨চলবে📨📨

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Love Birds posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share