20/09/2022
মানবিক মেয়র পরিচয়ে অমানবিক কাজ! ক্ষমতার কাছে জিম্মি অসহায় পরিবার...
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৌর শহরের এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে ঘর ও সীমানা প্রাচীর ভেঙে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে জামালপুর পৌর মেয়র ছানুয়ার হোসেন ছানুর বিরুদ্ধে। এই কাজে বাঁধা দেয়ায় পৌরসভার দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ফেলে গেইট অবরোধ ও চলাচল বন্ধ করে দেয়ার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গেলো ১৮ সেপ্টেম্বর (রবিবার) পৌরসভার দুইটি ট্রাকে করে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা একরামুল হক রুবেলের বাসার মূল ফটকে ময়লা ফেলে যাতায়াত বন্ধের ঘটনায় সমালোচনা চলছে শহরজুড়ে।
শহরের বেলটিয়া এলাকায় একেএম একরামুল হক রুবেল নামে এক অবসরপ্রপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা একখন্ড জমি কিনে পৌরসভার অনুমতি নিয়ে একটি দ্বিতল বাড়ী ও পার্শ্বে একটি একতলা বিশিষ্ট বাড়ি নির্মান করেন। ২০১৭ সালে রাস্তা প্রশস্ত করার নামে একরামুল হকের বাড়িতে ২৪ ঘন্টার নোটিশ দিয়ে অবৈধ স্থাপনা অপসারনের নির্দেশ দেয় পৌরসভা। ভুক্তভোগী একরামুল হক বিজ্ঞ আদালতের আশ্রয় নিলে বিজ্ঞ আদালত উক্ত জমিতে স্ট্যাটাসকো জারি করেন। আদালতের স্ট্যাটাসকো নোটিশ পাওয়ার পরও পৌরসভার তৎকালীন মেয়র মীর্জা সাখায়াতুল আলম মনি ও তৎকালীন পৌর কমিশনার হেলাল উদ্দিন অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কতিপয় অবৈধ দখলদারদের বাড়িঘর বাঁচিয়ে দিয়ে স্ট্যাটাসকোকৃত একতলা বাড়ী, টিনের ঘর, সীমানা দেয়াল ভাঙাসহ গাছ কেটে ফেলে।
বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতকে অবগত করলে আদালত তাদের শোকজ করেন। পরবর্তীতে তারা জবাবে বাড়ীঘর ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করেন। এদিকে বিজ্ঞ আদালত সিসি কমিশন গঠন করে সরজমিনে তদন্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা ও পৌর কর্তৃপক্ষের ভাংচুরের ঘটনাটি অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে তৎকালীন মেয়রের প্রভাবে মামলাটি রায়ের মুখ দেখেনি।
এদিকে বর্তমান মেয়র ছানুয়ার হোসেন ছানু ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় বর্তমান কমিশনার মাসুদ মিয়া পুনরায় রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। বিষয়টি পুনরায় আদালতকে অবহিত করলে, আদালত পূর্বের স্ট্যাটাসকো বহাল রাখার জন্য ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। তবে বর্তমান মেয়র ছানুয়ার হোসেন ছানু আদালতের আদেশ অমান্য করে গেলো ১৮ সেপ্টেম্বর লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক টিনের বাউন্ডারি ভাংচুর করে রাস্তার কাজ শুরু করেন।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ রাস্তা নির্মাণে বাঁধা দিলে, নিজেদের সরকার দলীয় লোক পরিচয়ে হুমকি প্রদান করেন। পরে পুলিশ চলে গেলে মেয়রের নির্দেশে একরামুল হকের বাসার মূল গেইটে জামালপুর পৌরসভার দুই গাড়ী দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ফেলে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়া হয়। ময়লার দুর্গন্ধে বাসার ভাড়াটিয়াসহ এলাকার স্থানীয় লোকজন অসুস্থ হবার শঙ্কা থাকলেও মেয়রের দাম্ভিকতার বিরুদ্ধে কেউই কথা বলতে সাহস পায়নি।
মেয়রের এমন অমানবিকতা ও আদালতের আদেশ অমান্য করে দাম্ভিক আচরনের কারণে এলাকায় প্রশাসন ও সরকার সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। ভুক্তভোগী একরামুল হক বলেন, আমি সারাজীবনের অর্জিত অর্থ দিয়ে এই জায়গা কিনে বাসা করেছি। পৌরসভা থেকে রাস্তার জায়গা থাকলেও তা আরেকজনের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অন্যজনকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন রাস্তার জন্য আমার জায়গা দখলের পায়তারা চলছে। আমি আদালতের কাছে সহায়তা চাইলে, তাদের কাজে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কিন্তু মেয়র তার পেশী শক্তি প্রদর্শন করে আমার জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন। আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এই ঘটনার বিচার প্রার্থনা করি।