27/10/2019
......"তখন ব্রহ্মচারী মহেন্দ্রকে কক্ষান্তরে লইয়া গেলেন। সেখানে মহেন্দ্র দেখিলেন, এক অপরূপ সর্ব্বাঙ্গসম্পন্না সর্ব্বারণভূষিতা জগদ্ধাত্রী মূর্ত্তি। মহেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন,"ইনি কে?"
ব্র। মা -যা ছিলেন।
ম। সে কে?
ব্র। যিনি কুঞ্জর কেশরী প্রভৃতি বন্য পশুসকল পদতলে দলিত করিয়া, বন্য পশুর আবাসস্থানে আপনারপদ্মাসন স্থাপিত করিয়াছিলেন। যিনি সর্ব্বালঙ্কারপরিভূষিতা হাস্যময়ী সুন্দরী ছিলেন। ইনি বালার্কবর্ণাভা, সকল ঐশ্বর্যশালিনী। ইঁহাকে প্রণাম কর।
মহেন্দ্র ভক্তিভাবে জগদ্ধাত্রীরূপিণী মাতৃভূমিকে প্রণাম করিলে পর, ব্রহ্মচারী তাঁহাকে এক অন্ধকার সুড়ঙ্গ দেখাইয়া চলিলেন। "এই পথে আইস।" ব্রহ্মচারী স্বয়ং আগে আগে চলিলেন। মহেন্দ্র সভয়ে পাছু পাছু চলিলেন। ভূগর্ভস্থ এক অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কোথা হইতে সামান্য আলো আসিতেছিল। সেই ক্ষীণালোকে এক কালীমূর্ত্তি দেখিতে পাইলেন।
ব্রহ্মচারী বলিলেন, "দেখ, মা যা হইয়াছেন।"
মহেন্দ্র সভয়ে বলিল, 'কালী।"
ব্র। কালী - অন্ধকারসমাছন্না কালীমাময়ী। হৃতসর্ব্বস্বা, এই জন্য নগ্নিকা। আজি দেশে সর্ব্বত্রই শ্মশান - তাই মা কঙ্কালমালিনী। আপনার শিব আপনার পদতলে দলিতেছেন -- হায় মা।
ব্রহ্মচারীর চক্ষে দর দর ধারা পড়িতে লাগিল। মহেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন, "হাতে খেতক খর্পর কেন?"
ব্রহ্ম। আমরা সন্তান,অস্ত্র মার্ হাতে এই দিয়াছি মাত্র - বল, বন্দে মাতরম।
"বন্দে মাতরম' বলিয়া মহেন্দ্র কালীকে প্রণাম করিল। তখন ব্রহ্মচারী বলিলেন, "এই পথে আইস।" এই বলিয়া তিনি দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ আরোহণ করিতে লাগিলেন। সহসা তাঁহাদিগের চক্ষে প্রাতঃসূর্য্যের রশ্মিরাশি প্রভাসিত হইল। চারি দিক হইতে মধুকণ্ঠ পক্ষীকুল গাহিয়া উঠিল। দেখিলেন, এক মর্ম্মরপ্রস্তরনির্ম্মিত প্রশস্ত মন্দিরের মধ্যে সুবর্ণনির্ম্মিতা দশভুজা প্রতিমা নবারুণকিরণে জ্যোতির্ম্ময়ী হইয়া হাসিতেছে। ব্রহ্মচারী প্রণাম করিয়া বলিলেন, - "এই মা যা হইবেন। দশ ভূজ দশ দিকে প্রসারিত, - তাহাতে নানা আয়ুধরূপে নানা শক্তি শোভিত, পদতলে শত্রু বিমর্দ্দিত, পদাশ্রিত বীরকেশরী শত্রুনিপীড়নে নিযুক্ত। দিগভুজা - নানাপ্রহরণধারিণী শত্রুবিমর্দ্দিনী - বীরেন্দ্র-পৃষ্ঠাবিহারিণী - দক্ষিণে লক্ষী ভাগ্যরূপিণী - বামে বাণী বিদ্যাবিজ্ঞানদায়িনী - সঙ্গে বলরূপী কার্ত্তিকেয়, কার্য্যসিদ্ধিরূপী গণেশ; এস আমরা মাকে উভয়ে প্রণাম করি।" তখন দুইজনে যুক্তকরে উর্দ্ধমুখে এককণ্ঠে ডাকিতে লাগিল, -
"সর্ব্বমঙ্গল - মঙ্গল্যে শিবে সর্ব্বার্থ -সাধিকে।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণী নমোহস্তু তে।" ["আনন্দমঠ" - একাদশ পরিচ্ছেদের কিয়দংশ/ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়]
নমস্তুতে মহামায়ে মহা ঘোরপরাক্রমী -
পরাক্রমী তিনি, শত্রুনাশিনী, উগ্রক্ষত্রিয়া, রক্তলেহন তাঁর স্বভাবজাত, তাঁর ভীষণদর্শনা উপস্থিতিই পাপীর হৃদয়ে আতঙ্ক ও মৃত্যুভয়ের সঞ্চার করে নিমেষে -- শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই ভয়ঙ্করীকেই পূজা করে এসেছে হিন্দু জাতি - তেজ ও পরাক্রমের প্র্রতিমূর্ত্তি রূপে। ধর্মরক্ষার যখন কোন আশাই নেই আর তখন ধার্মিকের একমাত্র প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে কালীর উদয়ে। তাঁর চিন্তা, স্ফুরণ হতাশাগ্রস্তকে মুহূর্তে পরিণত করে তেজোদৃপ্ত যোদ্ধায় যিনি আপন ও যবনের শোণিতে রক্ষা করবেন ধর্মকে।
অন্ধকারাচ্ছন্ন মধ্যযুগে আবির্ভাব হয় তান্ত্রিক কালী-সাধকদের মধ্যে অগ্রগণ্য শ্রী শ্রী কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের। মূলত, তাঁর মাধ্যমেই অখণ্ড বঙ্গে কালীপূজার প্রারম্ভ। কথিত আছে, যে ক্ষণে বঙ্গের সাধকেরা তন্ত্রের মূলধারা থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছিলেন তখন আদ্যাশক্তি মহামায়া তাঁকে তন্ত্রশাস্ত্রের পুনরুদ্ধার এবং তাঁর মাতৃরূপিণী বিগ্রহের পূজা করার নির্দেশ দেন। ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ, শ্রী রামপ্রসাদ, শ্রী শ্রী রামপ্রসাদ, শ্রী শ্রী কমলাকান্ত ও বহু অজানা পরম শ্রদ্ধেয় কালীসাধকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়, অনিমেষ সাধনায় স্মশানবাসিনী ক্রমে রূপান্তরিত হলেন গৃহদেবীতে। আতঙ্ককে পরিহার করে মানুষ মেতে উঠলেন এক নব ধর্মোপাসনায়।
অশান্ত, রক্তলোলুপা ভয়ঙ্করী কিন্তু রয়ে গেলেন মনসংযোগের কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর অধর্মের সর্বনাশসাধন রূপের প্রতি এক তীব্র আকর্ষণ ব্যাহত হলনা সমাজমধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার মধ্যে। ধর্ম ও সমাজের সঙ্কটকালে তিনিই রয়ে গেলেন এক ও অদ্বিতীয়া উপাস্যরূপে - যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বারংবার বঙ্গের জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের উচ্চতম তরঙ্গের কালে, সশস্ত্র বিপ্লবের বজ্রঘোষণায় ও তার বাস্তবায়নে।
এক নব দিগন্ত উপস্থিত হয় "Kali the Mother" নামক কবিতায় - স্বামী বিবেকানন্দ এই কবিতাটি রচনা করেন ১৮৯৮ সালে যখন উনি কাশ্মীরের ডাল লেকে একটি হাউসবোটের মধ্যে বসবাস করছিলেন। কবিতাটির মধ্য দিয়ে উনি মাতা কালীর ভয়ঙ্করী রূপকে পূজা করেছিলেন। প্রখ্যাত কবি শ্রী সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত দ্বারা কৃত ভাবানুবাদ "মৃত্যুরূপা মাতা" য় দেখা যায় -
".......কালী, তুই প্রলয়রূপিণী, আয় মা গো আয় মোর পাশে।
সাহসে যে দুঃখ দৈন্য চায়, মৃত্যুরে যে বাঁধে বাহুপাশে,
কাল-নৃত্য করে উপভোগ, মাতৃরূপা তারি কাছে আসে।'....
১৮৭০-এর দশকে Masculine Hinduism-এর উদ্ভব কালীপূজোকে করে তোলে মর্মস্পর্শী। শক্তি ও দেহচর্চার সাথে ভয়ঙ্করীর উপাসনা হয়ে যায় একাত্ম।
'স্বামী বিবেকানন্দ জগন্মাতার নিকট বাঙ্গালী জাতিকে মানুষ করিবার প্রার্থনা জানাইয়াছিলেন - সতীশচন্দ্র (শ্রী সতীশ্চন্দ্র বসু) সেই কর্মভার গ্রহণ করেন। ......বাঙ্গালী জাতিকে শৌর্যে, বীর্যে, সর্বাঙ্গসুন্দর করিতে হইবে, বাঙ্গালী জাতি সকল বিষয়ে শীর্ষস্থান অধিকার করিবে, ইহাই ছিল তাঁহার পরিকল্পনা। .....অপরদিকে খ্যাতনামা ব্যারিস্টার পি. মিত্র মহাশয়ও পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের প্রকৃষ্ট উপায় হিসাবে বাঙ্গালীর শক্তিচর্চার আবশ্যকতা অনুভব করিতেছিলেন। সরলা দেবী চৌধুরাণীও এই উদ্দেশ্যে বীরাষ্টমী ব্রত প্রবর্তন করিয়াছিলেন। ...সোদপুরের শশীদা (শশীভূষণ রায় চৌধুরী) মিত্তির সাহেবকে সমিতিতে আনেন। .....স্মরণ রাখিতে হইবে, জাতীয় জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে অনুশীলন সমিতির উদ্ভব ও প্রতিষ্ঠা। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের অনুশীলন তত্বে শারীরিক, মানসিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ-সমন্বিত আদর্শ মানবগঠনের যে নির্দেশ আছে -- যাহাই অনুশীলন সমিতির ভিত্তি।' - ''ভগিনী নিবেদিতা" - প্রব্রাজিকা মুক্তিপ্রাণা। .
এমতাবস্থায় শক্তিচর্চার প্রেরণাদাত্রী রূপে উপস্থিত কে হতে পারেন সম্মুখে? যাঁর সামনে মাতৃভূমির স্বাধীনতা সংগ্রামে সশস্ত্র বিপ্লবের পক্ষপাতী যুবকেরা নিজেদের ছাতির রক্ত উৎসর্গ করতে পারবেন? অধিষ্ঠিত হলেন মননে পুনরায় তাঁর ভীষণ দর্শন ও প্রকৃতি সহ - দেবী কালী।
এই সময় জেলা জজ শ্রী বরদাচরণ মিত্র প্রণীত সঙ্গীত বিপ্লবী তরুণদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
"শক্তি মন্ত্রে দীক্ষিত মোরা
অভয়া চরণে নম্র শির।
ডরিনা রক্ত ঝরিতে ঝরাতে
দৃপ্ত মোরা রক্ত বীর।
আবাহন মার যুদ্ধ ঝরণে
তৃপ্তি তপ্ত রক্ত ক্ষরণে
পশুবল আর অসুর নিধনে
মায়ের খড়গ ব্যগ্র ধীর
মায়ের অরাতি নাশন
পদে অঞ্জলি বাঞ্ছাপূরণ
শত্রু রক্তে মায়ের তর্পণ
জবার বদলে ছিন্ন শির -"...
১৯০৫ সালে শ্রী/ঋষি অরবিন্দ ঘোষের "ভবানী মন্দির" প্রকাশিত হয়। দেবী ভবানী একাধারে দূর্গা এবং কালী ও তারই সাথে দেশমাতৃকার প্রতীক রূপে উপস্থিত হন।
"জন্মভূমির মুক্তিকল্পে শক্তিসাধনাই ছিল সে কালের যুগধর্ম। ........সমিতির অধিবেশন সমূহে সমবেতভাবে নীচের এই চন্ডীমন্ত্রটি আবৃত্তি করা হত -
ইত্থ্যং যদা যদা হি বাধা দানবোত্থা ভবিষ্যতি।
তদা তদা তদাবতীর্যাহং করিষ্যাম্যারিসংপক্ষয়ম।।
ভারতীয় কৃষ্টির চরম সামাজিক আদর্শ এক ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠা। শ্রীকৃষ্ণ, অশোক, শিবাজী প্রভৃতি আমাদেরই পূর্বপুরুষদের প্রদর্শিত পথে বাঙ্গালী তার স্বাধীনতার প্রেরণা পেয়েছিল।
….সমিতির সদস্যদের মধ্যে যে যেরকম কাজের উপযুক্ত তাকে সেই কাজের ভার দেওয়া হত। সাধারণ সভ্যদের মধ্য হতে পরীক্ষা করে বিশেষ বিশেষ কর্মী সংগ্রহ করা হতো। গুপ্তকাজের জন্য কালী মন্দিরে দীক্ষা দেওয়া হতো। দেবী সমক্ষে স্বীয় অঙ্গুলির রক্ত দ্বারা প্রতিজ্ঞাপত্র স্বাক্ষরিত হতো। কোন মন্ত্রণা বা তথ্য প্রকাশ করবে না, কোন প্রতারণা করবে না, সমিতির বিরুদ্ধাচরণ করবে না, বা রাজশক্তির গুপ্তচরবৃত্তি করবে না, নিমকহারামী করবে না। প্রাণ পর্যন্ত পণ করে উদ্দেশ্য সিদ্ধির সহায়তা করবে। কাজ সফল করবার প্রয়াস পাবে। এমন মন্ত্রগুপ্তি শিক্ষা দেওয়া হতো যে, একজন সভ্য কি করে না করে অন্য সদস্যদের কেউ জানতে পারতো না - এমন কি কেউ কেউ নিজেই কি করছে তাও বিশেষভাবে বুঝতো না।" - (ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুশীলন সমিতির ভূমিকা - শ্রী জীবনতারা হালদার)।
মাস্টারদা সূর্য সেনের সহযোগী শ্রীমতী কুন্দপ্রভা সেন দ্বারা লিখিত ও ১৯৬২ সালে প্রকাশিত “কারাস্মৃতি” অনুযায়ী, “কিছুদূর গিয়ে এক মন্দিরের কাছে দু’জনে পৌঁছলাম। দরজা খোলাই ছিল। মাস্টার ও আমি ভেতরে ঢুকলাম। তারপর সে টর্চ জ্বালাল। দেখলাম ভীষণা এক কালী মূর্তি। মাস্টার একহাত লম্বা একখানা ডেগার বার করে আমার হাতে দিয়ে বলল, মায়ের সামনে বুকের রক্ত দিয়ে পূজো কর। ওখানে বেলপাতা আছে। আমি বুকের মাঝখানের চামড়া টেনে ধরে একটুখানি কাটার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক ফোঁটা রক্ত বের হলো। তা বেলপাতায় করে মাস্টারের কাছে নিয়ে গেলাম, সে বেশ স্পষ্ট করে বলল-মায়ের চরণে দিয়ে বল জীবনে বিশ্বাসঘাতকতা করব না। আমি অসংকোচে মায়ের চরণে রক্ত আর মাথা রেখে এ প্রতিজ্ঞা করলাম।”
বাঁকুড়া জেলার কালীতলার কালীপুজোর সাথে বঙ্গের সশস্ত্র বিপ্লবের সম্পর্ক চিরস্থায়ী। লোকমুখে প্রচলিত, পুজোর সাথে মিশে আছে অগ্নিযুগের ক্ষত্রিয়দের যজ্ঞশক্তি। এই কালীতলা অঞ্চলেই শ্রী রামদাস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে কালী মন্দিরের পাশেই তৈরি হয় বিপ্লবীদের গোপন ডেরা ও যা পরিচিত ছিল রামদাস পালোয়ানের আখড়া হিসাবে। এই আখড়ায় তৎকালীন সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের বহু বিপ্লবীর আনাগোনা ছিল । ব্রিটিশদের চোখ এড়িয়ে এখানেই বিপ্লবীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত লাঠি খেলা , ছোরা খেলা , অস্ত্র চালনা , কুস্তি ও মল্ল যুদ্ধের প্রাথমিক পাঠ । নিয়মিত শরীর চর্চাও হত সেখানে । কথিত আছে রামদাস পালোয়ানের আখড়ার বিপ্লবীরা কোনো অভিযানে যাওয়ার আগে বড় কালী মন্দিরে পুজো দিয়ে তারপর আখড়া থেকে বের হতেন । বহু বিপ্লবী এই কালী মন্দিরে আরাধ্য দেবীর পায়ে হাত দিয়ে দেশ মাতৃকার নামে শপথও নিয়েছেন বলে শোনা যায় ।
পরিশেষে, ১৯৪৬-এর নোয়াখালীতে ঘটা হিন্দু গণহত্যার প্রতিবাদে ভাগলপুরে আগুন জ্বলে উঠলেও কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল স্তব্ধ থাকতে বাধ্য হয়েছিল ব্রিটিশ প্রশাসন ও সেনার চাপে। তাই সেই বছর প্রত্যেক কালী পূজার মণ্ডপেই শস্ত্র পূজার আধিক্য চোখে পড়ে যার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা হয়েছিল সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭ এ।
বাঙ্গালীর সাথে কালীপূজার সম্পর্ক অকৃত্ৰিম ও অবিচ্ছেদ্য। মাতা কালী বিনা বাঙ্গালী -প্রত্যেক অর্থেই অবাস্তব ও অসম্পূর্ণ। যেমন শস্ত্রহীন হিন্দু। নিরস্ত্র হিন্দু ধর্মদ্রোহিতার নামান্তর ও অশাস্ত্রীয় - যা আর্য সনাতন হিন্দু ধর্মের বিধি ও বিধানকে লঙ্ঘন করে প্রতিনিয়ত।
বাঙ্গালী হিন্দু তার মুলে ফিরুক - এইই তার অস্তিত্বরক্ষার একমাত্র পথ। তীক্ষ্ণ তরবারি হোক তার গঙ্গাজল, কটিমধ্যে লুক্কায়িত ছোরা হোক তার বীজমন্ত্র, বাঘনখ হোক তার অলঙ্কার। .
ওঁম জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী
দূর্গা, শিবা, ক্ষমা, ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোহস্তুতে।।
ওঁম কালী কালী মহাকালী কালীকে পাপাহারিণী
সর্ব বিঘ্ন হরে দেবী নারায়ণী নমোহস্তুতে
মহিষাগ্নি মহামায়ে চামুণ্ডে মুণ্ডমালিনী
আর্য়ুর আরোগ্য বিজয়ং দেহি দেবী নমোহস্তুতে।