12/01/2023
গবেষক, সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমদের বই বিএনপি সময়-অসময় থেকে একটা অংশ তুলে দিলাম আগ্রহী পাঠকদের জন্য।
---
জিয়াউর রহমান সেনানায়ক থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়েছিলেন। বিএনপি নামের একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি, যা টিকে আছে আজও। তাঁর নেতৃত্বের স্ফুরণ ঘটেছিল ১৯৭১ সালে, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে। তাঁর উত্থান ছিল নাটকীয়তায় ভরা।...
খালেকুজ্জামানের বর্ণনামতেঃ
জানজুয়া বললেন, 'জিয়া ইউ গো ফার্স্ট। খালিক উইল ফলো ইউ' আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করেছে, হোসাই ডিড হি এগ্রি টু গো? হাসির খবর এটা। আর্মিতে ট্রুপস হ্যাভ টু ওবে, ইউ ক্যান্ট রিফিউজ। জিয়া গাড়িতে উঠলেন। [...] আমি ওপাশে গেলাম। জিয়া বললেন, খালেকুজ্জামান, কিছু শুনলে জানিও। দ্যাট ওয়াজ অ্যা মেসেজ ফ্রম আল্লাহ থ্রু হিম। [...] আমি এখন চিন্তায় পড়ে গেলাম। তখন ওলি ওপর থেকে বলল, স্যার, আপনার একটা ফোন আসছে। আমি গেলাম। বাই দ্যাট টাইম ওলি হ্যাজ টকড। ফোনে ছিলেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অফ স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক আব্দুল কাদের। [...] বললেন, 'ঢাকায় তো ইপিআরের ওখানে ফায়ারিং শুরু হয়ে গেছে। আর্মি হ্যাজ রেইডেড দ্য ক্যাম্পস। তোমরা কী করছে?' [...] আমি ওলিকে বললাম, আই অ্যাম গোয়িং টু গেট ব্যাক আওয়ার বস জিয়া। দিস ইজ, আল্লাহ হ্যাজ ইনফিউজড সামথিং ইন মি।
পিকআপ আসলো। রাস্তায় ব্যারিকেড। দেওয়ানহাট ওভারব্রিজের সামনে, ওখানে আল্লাহর রহমতে ঐটা ছিল। জিয়া, লাইক আ ড্যন্ডি ম্যান, স্মার্ট, হাতে ফিল্টার উইলস, দ্যাট ফেমাস উইলস। সিগারেট খাচ্ছে। বললেন, 'ইয়েস খালিক, হোয়াট হ্যাপেন্ড?' আমি সেইড ফায়ারিং হ্যাজ স্টার্টেড। ইপিআর ক্যাম্প হ্যাজ বিন অ্যাটাকড, ব্লা ব্লা ব্লা। উনি তখন চিন্তা করলেন। 'খালিকুজ্জামান, খালিকুজ্জামান'। উনি শাউট করলে আমি আস্তে কথা বলি। সেম টোনে বলি না। বললাম স্যার, স্যার।
জিয়াঃ হোয়াট শ্যাল উই ডু?
আমিঃ ইউ নো বেটার।
জিয়াঃ ইন দ্যাট কেইস উই রিভোল্ট অ্যান্ড শো আওয়ার এলিজিয়েন্স টু দ্য গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের তখন কোন খবর নাই। লিডার হ্যাজ টু টেক লিডারশিপ। ফিরে এসে... হুমায়ুন আর আজম গাড়িতে বসা ছিল। তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নেয়া হলো। দে অয়্যার স্টান্ট। জিয়া বললেন, 'খালিক, লেট মি গো অ্যান্ড গেট দিজ বাস্টার্ড।'
খালেকুজ্জামানের বর্ণনা অনুযায়ীঃ 'এ লিডার মাস্ট বি সিন অ্যান্ড হার্ড। খালি পর্দার পেছন থেকে লিডার যদি বলে, ইফেক্ট ইজ নট দ্য সেম। ড্রামটা ফেলে দিলাম। জিয়া তো মানুষ ছোটখাটো। ওনাকে কেউ ধরেটরে ওপরে দাঁড় করিয়ে দিল। দেন হি কুড স্ট্যান্ড। ইট ইজ অ্যা ফ্যাক্ট দ্যাট হি ডেলিভার্ড। উই আর বিইং লেড। ওয়ান হু ইজ বিইং লেড, তার অত চিন্তা আসে না। লিডার টেকস দ্য রেসপনসিবিলিট। লিডারের চিন্তা বেশি। সো হি ওয়াজ অ্যাংশাস।'
একটা চরম মুহূর্তে জিয়াউর রহমান সিদ্ধান্তটি নিতে পেরেছিলেন। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে মেজর মীর শওকত আলী, ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান, ক্যাপ্টেন অলি আহমদ, ক্যাপ্টেন সাদেক হোসেন, লেফটেন্যান্ট শমসের মবিন চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট মাহফুজুর রহমান এবং অষ্টম বেঙ্গলের অন্যান্য বাঙালি সদস্য ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন।
জিয়াউর রহমানকে নানাভাবে ছোট করার চেষ্টা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের স্মৃতিকথা নিয়ে লেখা একটি বইয়ের ভূমিকায় বইয়ের সম্পাদক শাহরিয়ার কবির উল্লেখ করেছেন, মেজর রফিকুল ইসলামের বিশাল গ্রন্থের কোথাও জিয়াউর রহমান নামে একজন সেক্টর কমান্ডার যে মুক্তিযুদ্ধে করেছিলেন তার কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না, যদিও জিয়ার রণকুশলতা সম্পর্কে ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল অরোরা যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন।
শাহরিয়ার কবিরের মন্তব্য হলো, 'মেজর রফিকুল ইসলাম তাঁর স্মৃতিকথায় অন্য সব প্রসঙ্গ উত্থাপনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততার পরিচয় দিলেও জিয়াউর রহমানের ক্ষেত্রে যে তিনি কাল ও প্রেক্ষিতের সুযোগ গ্রহণ করেছেন- একথা অনিচ্ছা সত্যেও বলতে হচ্ছে।
বাংলাদেশের বিভাজনের রাজনীতির বিয়োগান্ত শিকার হয়েছেন যে কয়েকজন, জিয়াউর রহমান তাঁদের একজন। জিয়া শেখ মুজিবকে নেতা মানতেন এবং সব সময় তাঁর সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলতেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁকে যথেষ্ট সম্মান দেয়নি। 'আমরা বীরের সম্মান দিতে জানি না। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে বাংলাদেশের একজন মুক্তিযোদ্ধার ছবি আছে, বুকের ওপর দু-হাত আড়াআড়ি করে দাঁড়ানো। তিনি জিয়াউর রহমান।'