01/01/2025
১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি। মাত্র কয়েকদিন আগে জন্ম নিয়েছে নতুন রাষ্ট্র- বাংলাদেশ। ঠিক তখনই ভিয়েতনামে নৃশংস গণহত্যা চালাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নতুন বছরের প্রথম দিনে ভিয়েতনামে মার্কিন হানাদারির বিরুদ্ধে মিছিল সংগঠিত করে বামপন্থী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। সেই মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় আওয়ামী লীগ/ শেখ মুজিব সরকারের পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মতিউল ইসলাম এবং মীর্জা কাদেরুল ইসলাম পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। স্বাধীন বাংলাদেশে সেই প্রথম পাকিস্তান আমলের ধাঁচে গণমিছিলে গুলি চলে। কোনো হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়নি, গুলিচালনার আগে লাঠিচার্জও করা হয়নি। সরাসরি গুলি।
এই ঘটনার অভিঘাত ছিল অকল্পনীয়। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামেন প্রতিবাদে।কাদের ও মতিউলের মৃতদেহ যেখানে পড়েছিল, সেই জায়গাটি ইট দিয়ে ঘিরে দেন ছাত্র-জনতা। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষ ওই জায়গাটি দেখতে আসেন। মহল্লায় মহল্লায় শুরু হয় মৌন মিছিল। পরদিন, ২ জানুয়ারি দেশজুড়ে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। কিছুদিন আগেই শেখ মুজিবকে আজীবন সদস্যপদ দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম তখন ডাকসুর সহ-সভাপতি। ৩ জানুয়ারি পল্টন ময়দানের সুবিশাল জমায়েতে সেলিম ঘোষণা করেন, ছাত্রহত্যার অপরাধে শেখ মুজিবের ডাকসুর আজীবন সদস্যপদ প্রত্যাহার করা হল। এরপর ডাকসুর সদস্যপদ বই থেকে সংশ্লিষ্ট পাতাটি তিনি ছিঁড়ে ফেলে দেন।
তারপর কী হল? সেই আলোচনা অন্য কোথাও, অন্য কোনও সময়ের জন্য তোলা থাক। তরঙ্গ 'মিলায়ে যায়' ঠিকই, আবার নতুন তরঙ্গও তো আসে। ইতিহাসের থেকে শেখার আছে অনেককিছুই৷ বিশ শতকের ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নিয়েই নিজেকে সাজাবে একুশ শতক।
ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা। শহীদ মতিউল-কাদের লাল সালাম।খুনিদের প্রতি ঘৃণা।
The Untold Story of Mujib Regime