11/19/2024
আজ আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস! শুভেচ্ছা জানাতেই হয়, কারণ পুরুষেরা যে কী সহ্য করে আমাদের জন্য, তা বলার মতো না।
যেমন ধরুন, আমাদের সেই চিরন্তন প্রশ্ন, "দেখো তো, এই জামাটা আমাকে মোটা দেখাচ্ছে?”—এর উত্তরে কখনো এরা সত্যি বলার সাহস পায় না। গলায় দড়ি দেওয়ার মতো পরিস্থিতি! প্রশ্নের বিপরীতে কৌশলে উত্তর দেওয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে এরা প্রথম।
আবার শপিং মলে আমরা একটার পর একটা জামা ট্রাই করি, আর ওরা বাইরে ভাঙা চেয়ারে বসে "বাহ, অসাধারণ লাগছে" বলে। অথচ এদের মনে মনে চলছে, “খ্যামা দে খ্যামা দে!" —এটা তো নোবেল প্রাইজ পাওয়ার মতো যোগ্যতা!
আমরা যখন বলি, “আমি কি আগের মতো সুন্দর আছি?” তখন এরা জানে, এখানে ভুল উত্তর মানেই কেয়ামত। তাই নিঃশব্দে বলে, “তুমি আগের চেয়েও সুন্দর!” মুখে হাসি, মনে ত্রাস!
আমরা যখন বলে উঠি, “এই রাস্তা দিয়ে যাও না, ওইটা ছোট রাস্তা, তাড়াতাড়ি পৌঁছানো যাবে,” তখন এরা GPS-কে পর্যন্ত অবিশ্বাস করে। আমাদের নির্দেশ মেনে গিয়ে যদি ট্র্যাফিকে আটকে যায়, তখনও বলে, “তুমি ঠিকই বলেছিলে।”
"তোমার সাথে কথা আছে।” এই তিনটি শব্দ শুনলেই এদের মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা হয়। মনে করে, “কী ভুল করলাম? ভুলে কী বললাম?” কিন্তু আসলে আমরা হয়তো বলতে চাইছিলাম, “আজ কী খাওয়া যায়?”
আমরা যদি বলি, “কথা বলো না, মেজাজ খারাপ।" তখন বেচারারা রাতে সোফায় ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত থাকে। আর সকালে যদি আবার রাগ ভাঙে, তখন তারা বলে, "সোফায় ঘুমিয়ে অনেক ভালো হয়েছে। পিঠের ব্যথা কমে গেছে!” এইখানে ইগোও আছে।
আমরা যখন তাদের ফোন হাতে নিয়ে বলি, “দেখি তো কী কী অ্যাপ আছে,” তখন তাদের হৃৎপিণ্ড ক্র্যাশ করে। সবকিছুই ঠিক আছে, কিন্তু পুরনো মেসেজ বা পুরনো ছবি খুঁজে পেলে? তার জন্যই এদের অজ্ঞান হওয়ার ভয়।
আমরা যখন বলি, “একটা সেলফি তুলি?” ওদের মুখে একধরনের যন্ত্রণার হাসি আসে। তাও ১৫ বার ছবি তুলে দেয়, শেষে আবার আমরা বলি, "কী কাণ্ড! তোমার তোলা একটা ছবিও ভালো হয় না!”
আমরা যখন বলি, “তোমার ফেসবুক পাসওয়ার্ডটা বলো তো,” এরা যতই নিরীহ থাকুক না কেন, মনে মনে ভাবে, “এখন হয়তো সাত দিনের ব্রেকআপ হতে পারে!”
চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল ছেড়ে ওরা বসে থাকে আমাদের সঙ্গে কোরিয়ান ড্রামার 'কু-ইয়ং-হু'র কান্না দেখতে। প্রশ্ন করলে বলে, “গল্পটা খুব ইন্টারেস্টিং লাগছে!” গল্পের কিছুই যে বোঝে না, তা ওদের মুখের এক্সপ্রেশনেই স্পষ্ট।
আর রাতে ঘুমানোর সময় বালিশ নিয়ে টানাটানি তো আছেই। আমরা বালিশ নিয়ে লড়াই করি, আর ওরা কোলবালিশ হয়ে থাকে।
এদের ধৈর্য পরীক্ষা করার জন্য আমরা যখন ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে রাগ করি, তারা তখন সব দোষ নিজের ঘাড়ে নিয়ে বলে, "তুমি ঠিকই বলছো।" আর ঘরের দরজা আটকে কান্না করেও এরা আমাদের সামনে এসে বলে, "তুমি হাসলে আমি ভালো থাকি।"
তাই পুরুষদের জন্য একটা দিন অবশ্যই থাকা উচিত। তাই, আজকের দিনে তাদের এই সব 'অলিম্পিক-লেভেলের' ধৈর্য আর কষ্টের জন্য একটু কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। অবশ্য আমরা জানি, ওদেরও আমাদের এই সব “ড্রামা” ছাড়া জীবনটা অসম্পূর্ণ লাগবে। তবুও একটু মজা না করলে দিবসটাই কীসের?
সবাইকে পুরুষ দিবসের শুভেচ্ছা।