HB Rita

HB Rita আমি এইচ বি রিতা। জন্মের কারণ খুঁজিনা, বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজি।
LIVE IF BEAUTIFUL. Allah is Almighty. কবি, লেখক, কলামিষ্ট, সাংবাদিক, শিক্ষক

আজ আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস! শুভেচ্ছা জানাতেই হয়, কারণ পুরুষেরা যে কী সহ্য করে আমাদের জন্য, তা বলার মতো না।যেমন ধরুন, আমা...
11/19/2024

আজ আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস! শুভেচ্ছা জানাতেই হয়, কারণ পুরুষেরা যে কী সহ্য করে আমাদের জন্য, তা বলার মতো না।

যেমন ধরুন, আমাদের সেই চিরন্তন প্রশ্ন, "দেখো তো, এই জামাটা আমাকে মোটা দেখাচ্ছে?”—এর উত্তরে কখনো এরা সত্যি বলার সাহস পায় না। গলায় দড়ি দেওয়ার মতো পরিস্থিতি! প্রশ্নের বিপরীতে কৌশলে উত্তর দেওয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে এরা প্রথম।

আবার শপিং মলে আমরা একটার পর একটা জামা ট্রাই করি, আর ওরা বাইরে ভাঙা চেয়ারে বসে "বাহ, অসাধারণ লাগছে" বলে। অথচ এদের মনে মনে চলছে, “খ‍্যামা দে খ‍্যামা দে!" —এটা তো নোবেল প্রাইজ পাওয়ার মতো যোগ্যতা!

আমরা যখন বলি, “আমি কি আগের মতো সুন্দর আছি?” তখন এরা জানে, এখানে ভুল উত্তর মানেই কেয়ামত। তাই নিঃশব্দে বলে, “তুমি আগের চেয়েও সুন্দর!” মুখে হাসি, মনে ত্রাস!

আমরা যখন বলে উঠি, “এই রাস্তা দিয়ে যাও না, ওইটা ছোট রাস্তা, তাড়াতাড়ি পৌঁছানো যাবে,” তখন এরা GPS-কে পর্যন্ত অবিশ্বাস করে। আমাদের নির্দেশ মেনে গিয়ে যদি ট্র্যাফিকে আটকে যায়, তখনও বলে, “তুমি ঠিকই বলেছিলে।”

"তোমার সাথে কথা আছে।” এই তিনটি শব্দ শুনলেই এদের মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা হয়। মনে করে, “কী ভুল করলাম? ভুলে কী বললাম?” কিন্তু আসলে আমরা হয়তো বলতে চাইছিলাম, “আজ কী খাওয়া যায়?”

আমরা যদি বলি, “কথা বলো না, মেজাজ খারাপ।" তখন বেচারারা রাতে সোফায় ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত থাকে। আর সকালে যদি আবার রাগ ভাঙে, তখন তারা বলে, "সোফায় ঘুমিয়ে অনেক ভালো হয়েছে। পিঠের ব্যথা কমে গেছে!” এইখানে ইগোও আছে।

আমরা যখন তাদের ফোন হাতে নিয়ে বলি, “দেখি তো কী কী অ্যাপ আছে,” তখন তাদের হৃৎপিণ্ড ক্র‍্যাশ করে। সবকিছুই ঠিক আছে, কিন্তু পুরনো মেসেজ বা পুরনো ছবি খুঁজে পেলে? তার জন্যই এদের অজ্ঞান হওয়ার ভয়।

আমরা যখন বলি, “একটা সেলফি তুলি?” ওদের মুখে একধরনের যন্ত্রণার হাসি আসে। তাও ১৫ বার ছবি তুলে দেয়, শেষে আবার আমরা বলি, "কী কাণ্ড! তোমার তোলা একটা ছবিও ভালো হয় না!”

আমরা যখন বলি, “তোমার ফেসবুক পাসওয়ার্ডটা বলো তো,” এরা যতই নিরীহ থাকুক না কেন, মনে মনে ভাবে, “এখন হয়তো সাত দিনের ব্রেকআপ হতে পারে!”

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল ছেড়ে ওরা বসে থাকে আমাদের সঙ্গে কোরিয়ান ড্রামার 'কু-ইয়ং-হু'র কান্না দেখতে। প্রশ্ন করলে বলে, “গল্পটা খুব ইন্টারেস্টিং লাগছে!” গল্পের কিছুই যে বোঝে না, তা ওদের মুখের এক্সপ্রেশনেই স্পষ্ট।

আর রাতে ঘুমানোর সময় বালিশ নিয়ে টানাটানি তো আছেই। আমরা বালিশ নিয়ে লড়াই করি, আর ওরা কোলবালিশ হয়ে থাকে।

এদের ধৈর্য পরীক্ষা করার জন্য আমরা যখন ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে রাগ করি, তারা তখন সব দোষ নিজের ঘাড়ে নিয়ে বলে, "তুমি ঠিকই বলছো।" আর ঘরের দরজা আটকে কান্না করেও এরা আমাদের সামনে এসে বলে, "তুমি হাসলে আমি ভালো থাকি।"

তাই পুরুষদের জন্য একটা দিন অবশ্যই থাকা উচিত। তাই, আজকের দিনে তাদের এই সব 'অলিম্পিক-লেভেলের' ধৈর্য আর কষ্টের জন্য একটু কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। অবশ্য আমরা জানি, ওদেরও আমাদের এই সব “ড্রামা” ছাড়া জীবনটা অসম্পূর্ণ লাগবে। তবুও একটু মজা না করলে দিবসটাই কীসের?

সবাইকে পুরুষ দিবসের শুভেচ্ছা।

প্রচারে একেরারেই গলদা অ‍্যালার্জি আমার-অপছন্দের একটা বিষয়। গুটিয়ে থাকা মানুষ আমি, কেউ পুরস্কৃত করলেও লজ্জায় পড়ে যাই। বয়স...
09/26/2024

প্রচারে একেরারেই গলদা অ‍্যালার্জি আমার-অপছন্দের একটা বিষয়। গুটিয়ে থাকা মানুষ আমি, কেউ পুরস্কৃত করলেও লজ্জায় পড়ে যাই।
বয়স বাড়ছে। অভিজ্ঞতা বাড়ছে। দিনশেষে বুঝতে পারি, আমি ভদ্র সুশীল সমাজের অংশ নই, আমার সুখ শান্তিটুকু উৎপন্ন হয় এই শহরের পথে, ফুটপাতে, গাছ-কাঠবিড়ালি-ঝরা পাতার মরমর ধ্বনি, গৃহহীনের অস্থির চাহনী আর আমার চার দেয়ালে বন্দি ছোট পরিবারটিতেই।

সংগ্রাম, লড়াই, দ্বন্ধ, অভাব, ঘাটতি সবই আছে এ জীবনে তবু দিনশেষে জীবনটাকে বড্ড উপভোগযোগ‍্য মনে হয়। মৃত‍্যু আমার শেষ অধ‍্যায় অথচ মনে হয় এইমাত্র কেবল ভূমিকা শেষ করেছি।

আমার মতো করে জীবনকে বিনা অভিযেগে আর কে ভালোবাসতে পেরেছে?

চিকিৎসকের ক‍্যালকুলেটার দেখায় ১৫/১৬ বছর, নিশ্চিত আপডেট করা হয়নি পুরোনো মেশিন। 'তিনি' নিশ্চিত তাঁর মেশিনে আপডেট করেছেন আরো ৪০ বছর।

Life if beautiful bro!

09/18/2024
09/01/2024

কোথায় তাদের ঠিকানা
এইচ বি রিতা

তারা আসে শব্দহীন, যেন ছায়া মূর্ত
বিবেকের রং ধরা দেয় না, সবই সাদা কালো
তাদের পা মাটিতে পড়ে না, ভাসে শূন্যে,
কথায় মাধুর্য, অন্তরে শূন্যতার জল।

কাজ নয়, কথা শুধু, শুনতে অমৃত,
মুখে দয়ার বানী, হাতে থাকে শূন্যতা
বিবেকের নৌকো চলে, পেছনে থাকে স্রোত,
তারা দিশেহারা, গন্তব্য কোথায়?

তারা জানে না বাতাসের কথা,
জানে না বৃষ্টি
তারা জানে না স্রোতের কথা,
জানে না ঢেউ
গাছের পাতায় যে কাঁপন,
তাও থাকে অদৃশ্য
বিবেকের ভারে তারা নয় ভারাক্রান্ত,
হয়ত উড়ে চলে পাখির মতো অবাধ্য।

তাদের চোখে জল শুকিয়ে গেছে কবে,
হৃদয়ের গভীরতায় শুধুই মরুভূমি
মুখোশ পরে দাঁড়ায় আয়নার সামনে,
নিজেকে দেখে কাঁপে না একবারও।

নজরুলের কাব্য নয় এদের পথ,
মিথ্যে বুনে চলে সত্যের খেলা
বিবেকহীন মানুষ, জড় পুতুল
অন্ধকারে হারিয়ে যায়;
কোথায় তাদের ঠিকানা?

08/19/2024

৩১ জুলাইতে লেখা কবিতাটা রিপোস্ট করলাম।

হে স্বৈরশাসক
এইচ বি রিতা।
--------------

ধরে নিতে পারো আমায় কাটখোট্টা কেউ
কিংবা ধরে নিতে পারো-বামন চিকা-
নিঃসন্দেহে-
সে অধিকার আছে তোমার
তবে জেনো রেখো, আমি নই তোমার
অভিশাপ-জর্জরিত ভীরু প্রজা,
নই সেই নতজানু ভিখারি
তাই জ্বালিয়ে দেই ভেতরের আগুন-বজ্র
নির্দয় বুটের তলায় চূর্ণ করি তোমার মুখ—
অভিশাপ রেখে যাই প্রতিটা থুতুর সাথে

দেখছে বিশ্ব, বাংলার আকাশে আজ
অভিশাপের মেঘ,
অধিকারহারা জনতার কণ্ঠে-প্রতিবাদের সুর
এই মাটিতে জন্মেছে যে ক্ষোভ,
শহরের দেয়ালে দেয়ালে আগুন
তা নেভানোর উপায় জানা নেই তোমার

মানুষগুলো পড়ে আছে লাশ হয়ে
মর্গে যেতে ভয়
পরিচয় দিতে সংশয়
পাশ কাটিয়ে হেঁটে যায় পড়ন্ত বেলার সঙ্গী
বিষে রিষে পঙ্গু মানবতা-
ছোপ ছোপ রক্ত-পথে পড়ে রয়
গোঁয়ার্তুমিতে তুমি, ধরে রেখেছো জেদ
প্রতিশোধ স্পৃহায় রক্তস্নাত
অন্ধ, কুৎসিত, শাসনের এ তরী
ভাঙ্গবে কবে স্বৈরচারী বলয়?

দুর্নীতির কুৎসিত হাসি—
তৃষ্ণার্ত সূর্যের রক্তিম আভায়
ভেসে আসে শিশুর কান্না
গণহত্যার কালো অধ্যায়,
মায়ের হাহাকার— প্রতিটি শ্বাসে শ্বাসে
নির্বাক দিনমজুর পিতা
অভিশাপে অভিশাপে
রাষ্ট্রের নাম সোনা,
হৃদয় কুৎসিত কালিমায় বোনা—
বুকের রক্তে লাল পতাকা,
শোষণ, দমন, অত্যাচারে
গণতন্ত্রের অবমাননা
খেলছো তুমি রক্তের হোলি
নির্জীব যুবক, তারুণ্যের হাহাকার
ভেসে যাচ্চে পথ-টুকটুকা লালে
এত অভিশাপ তবে কার?
ক্ষমতায় জব্দ করছো প্রজন্মের অধিকার
বুলেটের চিহ্ন থেতলে দেয়
নিরস্ত্র বুকের হাড়
মুখ চেপে আর কতদিন
কতদিন খুবলে খাবে মেধার মগজ?
ঢের হয়েছে ঢের হয়েছে
এবার ছিঁড়ো গলার চন্দ্রহার

অধিকার নেই-
নেই মুখে শব্দ
অন্ধকার টেনে লুকানো বর্বরতায়
জনতাকে করেছো স্তব্দ
অর্থহীন চেতনায় ডাকিনীবিদ্যা
দলান্ধরা দিচ্ছে তুরি
বিবেকের খাঁচায় বন্দি তোমার
পূর্বপুরুষের চেতনার ফুলঝুড়ি

প্রাণঘাতি অস্ত্রের আঘাতে
থামবে না প্রতিশোধ
রক্তের জবাব দিতেই হবে
জাগছে জনতার বোধ
এই শাসনের চূড়া-ক্ষমতার বেদী
কুৎসিত চক্রান্তের ছায়া
ধ্বংস হবে নির্লজ্ব তান্ডবে-
জেনো রেখো ক্রুধী
নির্মমতার ছোবল,
শোষণ, নিপীড়ন আর বঞ্চনা
চক্রান্তের ফাঁদে ধরা ভবিষ্যত
প্রতিটি পাপের ঋণ ফিরে আসবে
আসতেই হবে

একদিন, তাদেরই রক্তে লেখা ইতিহাস
তোমার রক্তে পাবে পূর্ণতা
অভিশাপ নেমে আসুক তোমার মাথায়
অভিশাপ এই চোখে
অভিশাপ তোমার শিরায় শিরায়
রক্তস্রোতে করছো যে পরিহাস
জেনো, তোমার-ই রক্তে বোনা হবে
স্বাধীনতার নয়া ইতিহাস।

স্বাধীনতার নয়া ইতিহাসএইচ বি রিতা---------এই যে এত এত রক্ত, থেতলে যাওয়া মাথা,চূর্ণবিচূর্ণ স্বপ্নের কণাছিদ্র ছিদ্র তাজা বু...
08/04/2024

স্বাধীনতার নয়া ইতিহাস
এইচ বি রিতা
---------

এই যে এত এত রক্ত, থেতলে যাওয়া মাথা,
চূর্ণবিচূর্ণ স্বপ্নের কণা
ছিদ্র ছিদ্র তাজা বুক
এই যে বর্বরতার সাক্ষ্যবাহী এক একটা শরীর
কাঁপতে থাকা পায়ের নিচে বয়ে যাওয়া
লাল রক্তের স্রোত
অশ্রুর সাথে মিশে যাওয়া শোকের সমুদ্র-
এইসব নিতে পারি না আর
নিতে পারি না আর

এই যে পুড়ে যাওয়া ঘর,
অগণিত নিঃস্ব মানুষের সারি
এই যে ভাঙা হৃদয়ের আওয়াজ
শূন্যতায় হারিয়ে যাওয়া আশা
মৃত্যুর সাথে নিত্য লড়াই করা অন্ধ জীবন
এই যে আর্তনাদে ভরা রাত্রি,
অশান্তির আগুনে পোড়া দেশ
অবিচারের যাঁতাকলে পিষ্ট মানবতা
নির্বাক প্রতিবাদী কণ্ঠ
এইসব নিতে পারি না আর
নিতে পারি না আর

ঘুমাতে গেলেই জেগে উঠি
রক্তাক্ত পথের গোঙ্গানি কানে বাজে
'বাঁচাও বাঁচাও'
'আঙ্গেল গেটটা খুলবেন? খুলেন না আঙ্কেল'
'এই পানি লাগবে পানি?'
তোমাদের নির্মমতার কুৎসিত রূপে,
আমার হৃদয় ছিন্নভিন্ন হয়
এই শহরের নির্লিপ্ত শোকের ভিড়ে
আমার চোখ বিষে বিষে ফোলে উঠে

আমি একদিন তোমাদের শোকে মরে যাব
তোমাদের হাতে নীল শিরায় জড়ানো
জীবনের খোঁজে-উন্মাদ হয়ে মরে যাব

আমি একদিন নিজ ব্যর্থতায় মরে যাব
তোমাদের রক্তের বন্যায় ভাগিদার হওয়ার
পাপে মরে যাব
মরে যাব তোমাদের চোখের লাল আগুনে
মরে যাব প্রসব বেদনার অভিশাপে

করুণ আর্তনাদে সামিল হতে না পারার কষ্টে
মরে যাবো
নিরীহ প্রাণের বলি হওয়া পাপে মরে যাব
আমি একদিন তোমাদের রক্তের
ঋণ শোধ করতে না পারার যন্ত্রণায় মরে যাবো
পথে পড়ে থাকা লাশ
নিরীহ প্রাণে ক্ষমতার হাতকড়ায় গুম, খুন,
নির্যাতনের ভীষণ আঁধারে আমি মরে যাব

অভিশাপ নেমে আসুক তোমাদের মাথায়,
অভিশাপ এই চোখে
অভিশাপ তোমাদের শিরায় শিরায়
অভিশাপ তোমাদের বুকে
ঢের হয়েছে রক্তপাত,
ঢের হয়েছে গণতন্ত্রের পরিহাস
এবার প্রজন্মের রক্তে লেখা হবে;
স্বাধীনতার নয়া ইতিহাস।

সুহার্তো-কেন চলে গেলিএইচ বি রিতা(২০২৪-  শহীদ শিক্ষার্থী)নভেম্বরের প্রথম দিনে জন্মেছিল যে,সুহার্তো, হারিয়ে গেছে মমতাজ মায়...
07/26/2024

সুহার্তো-কেন চলে গেলি
এইচ বি রিতা
(২০২৪- শহীদ শিক্ষার্থী)

নভেম্বরের প্রথম দিনে জন্মেছিল যে,
সুহার্তো, হারিয়ে গেছে মমতাজ মায়ের তাজ
দিশেহারা মা, আমার খালামনি কাঁদছে,
ফুঁপিয়ে-একবুক শূন্যতা নিয়ে

এইচএসসি পরীক্ষায় বসা সুহার্তো
নিতে পারেনি বর্বরতা প্রিয় মুখগুলোর উপর
গ্রেনেডের আঘাত, টিয়ারশেল, রাবার বুলেট
বিঁধেছিল তার অন্তপুরে
অসহনীয় সে ক্ষত তারুণ্যে জ্বলে উঠেছিল
চে গুয়েভারা হয়ে
নেমেছিল মাঠে-পায়ে পায়ে তাল মিলিয়ে
ন্যায্যতার দাবিতে
জ্বলে উঠা সদ্য তারুণ্যের দীপশিখা
নিভে গেল
আমার ভাইটা শহীদ হয়ে গেল।

আর দেখা হবে না তার মুখ
দুষ্টুমিতে ছিল যত সুখ
আর শুনব না অভিযোগ
বলবে না সে, 'ওই রাখি আপু, নেটফ্লিক্স দাও'
কেউ দিবে না অপুর্বর নামে বিচার
ব্রাজিলের খেলা নিয়ে মজা করার-সুহার্তো
চলে গেছে

কাকে বলব আমি, কি রে পানোতি
আবার কি পইতালি করলি?
কাকে বলল, ভালো করে চল
কে শুনবে আমার কথা?

বারবার বারণ করে, কল করেও,
তোকে ফিরাতে পারলাম না
এই বোনের বারণ, তোরে একবারও নাড়া দিল না
আজ কষ্টটা এত বড় যে, কারো সাথে ভাগ করে
নেয়ার জায়গা নেই
সব কিছুই যেন সেকেন্ডে মুছে গেলো
সুহার্তো, কেন চলে গেলি আমাকে একা রেখে?

পরশ, সুহার্তো, অপুর্ব-তোরাই আমার ত্রিরত্ন
আজ তারা আছে-
তোকে খুঁজে পাই না
দেখিনা তোর মুখ
আর দেখাও হবে না কোনোদিন
বড্ড অসহায় লাগে
যন্ত্রণায় বুক ঝাঝরা হয়ে যায়

সুহার্তোর এই অবেলায় বিদায়
কে দায়ী? সবাই জানে
চিৎকার করি! বিচার চাই! বিচার চাই
দিনশেষে স্রষ্টাকে ডাকি
প্রার্থনায় নুইয়ে পড়ি
মানুষের কাছে দোয়া চাই-বড্ড অসহায়
কাকে বলি কেমন লাগে
কোথায় রাখি যন্ত্রণার ভার?

সুহার্তো-কেন চলে গেলি?

ফয়সাল আহামেদ শান্তএইচ বি রিতা(২০২৪-শহীদ শিক্ষার্থী)---বলেছিলি তুই ব্রিজের উপর দাঁড়িযে আছিচলে আয়মুরাদপুর থেকে দুই নাম্বা...
07/26/2024

ফয়সাল আহামেদ শান্ত
এইচ বি রিতা
(২০২৪-শহীদ শিক্ষার্থী)
---

বলেছিলি তুই ব্রিজের উপর দাঁড়িযে আছি
চলে আয়
মুরাদপুর থেকে দুই নাম্বার গেইটের দিকে
এগিযে যাই
তুই নেই -ছিল সেই মিছিল
সঙ্গীরা দৌড়ে গেল
তখনো তোকে খুঁজছি-
তুই নেই- সামনে পা বাড়ালাম
হঠাৎ তীব্র দুটো আওয়াজ-ঠা ঠা ...
তারুণ্যের শক্তি দুর্বল পায়ে পিচু হঠতে লাগল
সাথে আমিও -মুরাদপুরের দিকে

তখনো তোকে খুঁজছি-ভীষণ আতঙ্কে
হাঁপাতে হাঁপাতে একজন বলল,
গুলি করেছে, কেউ একজন মরে গেছে
ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল-
তুই না তো?
ফোনটা হাতে নিয়ে বাটন টিপি-
ওপাশ থেকে অজানা এক কণ্ঠ বলে উঠল-
ফয়সাল আহামেদ শান্ত-অবস্থা খারাপ।

কাঁপা কাঁপা হাতে তোর ছবিটা তুলে ধরি
দেখ তো, ও কিনা
ভয়ার্ত আক্ষেপ কণ্ঠেরা জানান দিল-
তুই-ই সেই, যার বুকের বাম পাশটায়
থোকায় থোকায় ফুটেছে রক্তকবরী।
দুই নাম্বার গেইটে,
শকুনেরা খুবলে খাচ্ছিল তাজা রক্তমাংস
দৌড়ছিল সবাই কেবল আটকে গেল সাজ্জাত-
আমাদের বন্ধু

তুই হাতে থাকা ইটটি ছুঁড়ে মারলি
পিছু না হটে আরেকটু সামনে এগোলি
সাজ্জাত পেছলে, তুই সামনে
হাতে এক টুকরো ইট
গুলিটি এসে লাগলো ঠিক তোর বুক বরাবর
হেরে কী গেলি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে?
নাহ নাহ!
শত্রুর গুলির সামনে দাঁড়িয়ে,
এক বুক সাহসে ফুটিয়ে তুললি তুই;
স্বাধীনতার ইশারা

মুরাদপুরের সেই পথে,
যেখানে ছিল তোর সাহসের শিখা,
আত্মত্যাগে মিশে গেলি তুই
সাজ্জাদকে বাঁচাতে-শ্রদ্ধার অম্লান দীক্ষা

তুই ৫২’র রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত
শফিউর
তুই বাংলার পতাকার সবুজ হারিয়ে
রক্তে ভেজা লাল
মার্চের বীরত্বে তুই স্বাধীনতার কবিতা

তুই শান্ত কোমল নদীর স্রোতে বযে যাওয়া
ফয়সাল আহামেদ শান্ত।

হৃদয় তারুয়ার রক্তমাখা সকালএইচ বি রিতা(২০২৪-শহীদ শিক্ষার্থী)হৃদয় নামের ছেলেটির হৃদয়ে জ্বলে উঠল যে আগুন, সে আগুনে পুড়ে ...
07/25/2024

হৃদয় তারুয়ার রক্তমাখা সকাল
এইচ বি রিতা
(২০২৪-শহীদ শিক্ষার্থী)

হৃদয় নামের ছেলেটির হৃদয়ে জ্বলে উঠল যে আগুন,
সে আগুনে পুড়ে গেল তার স্বপ্ন, সামনের পথ
দরিদ্রের ঘরে পটুয়াখালির মাটিতে বেড়ে ওঠা,
চট্টগ্রামের সবুজ চত্বরে স্বপ্নের মশাল জ্বালা
হৃদয় ছিল সেই সংগ্রামী, গুলির আঘাতে রক্ত ঝরিয়ে
বলে গেল যে স্বাধীন বাংলার পরাধীনতার কথা

১৮ জুলাইয়ের রক্তাক্ত বহদ্দারহাট,
ছাত্রলীগের গর্জন, পুলিশের বুটের আওয়াজ
হৃদয়ের বুকে বুলেটের ঠা ঠা ঠা ঝংকার
স্বপ্নেরা ঢেকে গেলো রক্তের নদীতে
হাসপাতালের করিডোরে করুণ আর্তনাদ,
অসহায় হৃদয় বাঁচার আকুতি, কিন্তু কি লাভ,
যেখানে মানবতার খাতির নেই, সেখানে
জীবনের দাম কত?

ডিজিটাল ক্র্যাকডাউনের অন্ধকার
মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম বন্ধ
টাকার অভাবে চিকিৎসা-তাও বন্ধ
ছেলেটি আন্দোলনকারী ছিল বলে, পিজি, স্কযার,
বক্ষব্যাধি- হাসপাতালের দরজা হলো বন্ধ
বুকে গুলি-পাঁচদিন জীবনের শেষ সংগ্রাম,
হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল
কেউ নেই যে তাকাবে মমতায়
কেউ নেই সাড়া দেবার
প্রতিটি দরজায় অবহেলা আর নিষ্ঠুরতার প্রতিচ্ছবি
ছেলেটি হয়ে উঠলে রাষ্ট্রের অবহেলার প্রতীক।

২৩ জুলাইয়ের সেই নিঃশব্দ সকাল,
হৃদয়ের-হৃদয় থেমে গেলো চিরতরে
স্বপ্নেরা উড়ে গেল বাতাসে-লাশের গন্ধে

যেতে যেতে তুমি প্রশ্ন রেখে গেলে বাংলার গণতন্ত্রে
গণতন্ত্র মানে কী তবে ভাঙা স্বপ্নের খাঁচা?
যেখানে মুক্তির গান গেয়ে জেগে ওঠে না কেউ
নজরুলের কণ্ঠ?
যেতে যেতে প্রশ্ন রেখে গেলে মানবতা সংজ্ঞায়
মানবতা মানে কী তবে শুধু কাগজের কথা?
যেখানে চে গুয়েভারা কিংবা ম্যান্ডেলার মতো রক্তের
হিসাব কষে নেবার মতো নেই কেউ ?

জঙ্গির বুলেট বিঁধে গিয়েছিল ১৭টি প্রাণে
জেগে উঠেছিল প্যারিস, গোটা বিশ্ব
মুখরিত হল শহরের পথ গর্বের স্বরে,
একত্রিত হল ১৭ লক্ষ হৃদয়, শান্তির অঙ্গীকারে,
আলো-অন্ধকারের মাঝে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রনেতারা
মহাকাব্যিক ঐক্যে গেঁথে গেলো তাদের নাম,
নেতানিয়াহু-আব্বাস, দুই রাষ্ট্র যোদ্ধা, পথে নেমে
সাম্যের কাব্য রচনায়
ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের দুই হাত হলো ছয়হাত
যুদ্ধের পথে আঙ্গেলা মের্কেল, ডেভিড ক্যামেরন, মেত্তো রেনজি, দাভুতোগলু, আবদুল্লা —
খুঁজে পেল শান্তির পথ

অথচ, আমাদেরে দুইহাত হয়ে গেল একহাত
বাকহীন তুমি হেঁটে গেলে প্রশ্নের পথে
তোমার রক্তে লেখা হলো নতুন ইতিহাস
আলো জ্বলে উঠল শহর ছেড়ে বিশ্বে
বাংলার মাটি শুনলো না তোমার গোঙ্গানি
একদল পাখি কেবল দূর থেকে ডানা ঝাপটালো
ঘুম হারালো
শান্তি হারালো

হৃদয়ের রক্তে ভেজা বাংলার এই মাটি,
মনে রাখবে কী তাকে?
খুনের হিসাব, প্রতিটি অবহেলার জবাব
দেবে কী এ মাটি?

আবু সাঈদএইচ বি রিতা(২০২৪-শহীদ শিক্ষার্থী)-----------আহ! আবু সাঈদ! লিখে গেলে নাম ইতিহাসের পাতায়দুই হাত প্রসারিত, বুক চিতি...
07/17/2024

আবু সাঈদ
এইচ বি রিতা
(২০২৪-শহীদ শিক্ষার্থী)
-----------

আহ! আবু সাঈদ!
লিখে গেলে নাম ইতিহাসের পাতায়
দুই হাত প্রসারিত, বুক চিতিয়ে
পুলিশের রাবার বুলেট
লাঠি হাতে একা
ন্যায়ের দাবির আলোক শিখায়
নিরস্ত্র এক যোদ্ধা-অদম্য সাহসিকতার গাঁথা
দাঁড়িয়ে একা নিবিড় সময়ে।

কোটা সংস্কার-চলমান যুদ্ধ
আলো আঁধারের মাঝে, হুঙ্কার ছুঁড়ে
তুমিই সেই যোদ্ধা
উঠে দাঁড়ালে দ্বিতীয়বার
কার সাধ্য কেড়ে নেয় প্রজন্মের অধিকার

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে, আন্দোলনের মোড়ে,
আবু সাঈদ দাঁড়িয়ে একা, প্রতিবাদের ঝড়ে।

তাদের চোখে ভয়, তোমার চোখে ক্রোধ
আন্দোলনের কণ্ঠ-রাবার বুলেটে আছড়ে পড়ে
বিচারক নির্বোধ

তুমি সটান, উঠে দাঁড়াও
এক হাতে লাঠি, অন্য হাতে ন্যায়
নুপুংশক আঁতকে উঠে
ঠাহ ঠাহ ঠাহ -শক্তির ব্যয়
রক্তে রঞ্জিত প্রতিবাদ-হায়
কেন হলো বলি?
প্রশ্ন থেকে যায় লাল সবুজের পতাকায়।

আবু সাঈদ কী কেঁদেছিল?
শুনতে পাইনি সে রোদন
লড়াইয়ের সুর ক্ষণে ক্ষণে বাজে কানে
আলো আঁধারের কাব্যে-এই তবে
জীবনের মানে

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে,
রাবার বুলেটের বৃষ্টি
আত্মত্যাগে, আবু সাঈদ অবিচল
বুকে নিল যন্ত্রণার ঝাপটায়-
শিক্ষার্থীদের চোখ-জলে টলোমল

জানতে তুমি, অন্ধের দেশ ক্যাটারাক চোখে
জেদ-ধরে রাখে ক্ষমতার পাতলুনে
ভাঙ্গবে শিকল, ক্ষমতা বিছানো ফাঁদ
জ্বলে উঠার অপেক্ষায়-তোমার রেখে যাওয়া
নীরব অভিসম্পাদ।

আহ! আবু সাঈদ
লিখে গেলে নাম ইতিহাসের পাতায়।


07/10/2024

স্ক্রিজো
এইচ বি রিতা
-----

কে ডাকে খরখরে কন্ঠে
কে সে-জাগিয়ে দেয় ভেতর?
তাকে আমি চিনতে পারি না।

বাস্তবতা ধোঁয়াশা
কে আসল, কে নকল—ভাবনারা অজানা
যেল্ডা ফিটজেরাল্ড-দরজা বন্ধ করে দেয়
তীব্র তাপ-সম্মুখভাগ ছড়ায়
আলো আর অন্ধকারে, দুটি চোখের মাঝে
সে হাসে, আমি কাঁদি,
আমি হাসি, সে কাঁদে
এ ব্যথা মনোলোকের গভীরে,
শব্দহীন তুমুল এক ঝড়
সত্যি কি, মিথ্যা কি, এ এক দ্বিধার ধাঁধা
স্মৃতিরা উড়ে আসে বর্তমানে
বর্তমান হয়ে উঠে অস্পষ্ট এই যন্ত্রণা

পঞ্চম তলায় ঘরে আঁটকা-যেল্ডা
আগুন! আগুন!
এ চোখ টের পায় সব
কে ডাকে-আঙ্গুলের ঈশারায়?
যেল্ডা যেল্ডা!
লাল টুকটুকা স্যান্ডেল জোড়া-
আহা যেল্ডা! কেন ডাকো আমায়?

ধোঁয়া! ধোঁয়া!
মেঘে ঢেকে যায় চাঁদ
আলো নিবে আসে ধীরে ধীরে
পাশের জানালা, ভাঙা কাঁচ
রক্তিম আভা, যেল্ডার চুল।

চিৎকারে ভেসে আসে নিচ থেকে
জীবনের খোঁজে, প্রতীক্ষায়
কিন্তু যেল্ডা, তুমি আঁটকা
পঞ্চম তলায়, আগুনে ঘেরা
অস্তিত্বের লড়াই, তুমি-আমি একা।

পায়ের তলে জ্বলে ওঠে মাটি
কে ডাকে আমায় যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে?
পঞ্চম তলায়, যেল্ডা ডেকে যায় আমায়।

07/06/2024

সহজ করে বলি জাগতিক কথা
ট্রেনের বগিতে বাদাম হাতে ঘুরে ঘুরে
ক্লান্ত হওয়া শিশুটির স্বরে-
কখনো চকরচকর করি দুর্বোধ্যতায় সীমা টানতে
কেননা, শ্বাসরুদ্ধকর চিত্রে রূপক-উপমা অনর্থক

এখানে রবীন্দ্রস্রোত, নজরুল ঝঙ্কার কিংবা
তিরিশের শব্দ-বাক্য বিন্যাসের তৎপরতা
অমূলক মনে হয়

এই সকাল আমার
এই দুপুর, রাত
জ্যোৎ্স্নার আলো কিংবা আঁধারের বেদনা
সবই আমার
হাসি-কান্না,
প্রেম-বিরহ
হারানোর শোক
নিজের শ্বাসঘাতে সংগীতময় হয়

এখানে জটিলতা, বড় বড় কথা নেই
কেবল সহজ-সরল অনুভূতির প্রতিধ্বনি,
যা দার্শনিক তত্ত্বের সীমা মাড়িয়ে বোধগম্য হয়-
অনুভবে

জানো না তোমরা, প্রসূতির নাড় কাটা চিৎকার
কোনো উপমা হতে পারে না
রক্তে ভাসা-রেললাইনের ধারে পড়ে থাকা
তরুণের নিস্পাপ দেহ
কাব্যিক ভাষায় অর্থের যোগান দেয় না
কৃষকের শ্রম কিংবা রিকসাওয়ার ঘাম
অনুপ্রাস, ব্যঞ্জনায় সঠিক পরিমাপ হয় না

তাই, তোমার আমার জীবনের প্রতিচ্ছবি,
একদম সহজ করে আঁকি উপলদ্ধির রঙে

তাই, বুঝতে গিয়ে শব্দের ভাষা,
কবিতারা তাই মুখ ফিরিয়ে নেয়-কলমের ডগা থেকে

আমি এভাবেই আটকে যাই
শব্দের সাথে জীবনের জটিলতার-
অর্থ মিলাতে পারি না
তাই হয়তো আমি কবি হয়ে উঠতে পারি না।

-এইচ বি রিতা

07/06/2024

পৃথিবীর ঋণ শোধ হয়নি,
গাছের পাতায় পাতায় লেখা আছে
আমাদের প্রত্যাশার গল্প—
মাটির গভীরে সুপ্ত বীজের মতো
শব্দেরা মাথা নাড়া দেয়
হয়ে উঠে কবিতা, কখনো কল্প

আমরা হাঁটছি কংক্রিটের রাজপথে,
নক্ষত্রের আলোর নিচে
স্বপ্নের ভাঙা কাচ মাড়িয়ে,
কিন্তু ঋণ, সে তো রয়ে গেছে

রাত পোহাতেই নির্জনতা ভেঙে বেজে ওঠে
আকাশের গভীর নীলের গান
প্রতিদিন, প্রতিরাতে
চোখের জলে ধুয়ে যায়
জ্যোৎস্নার বন্দনা-
ঘাত প্রতিঘাতে

পাহাড়ের পাথরে খোদাই করা
প্রাচীন কালের স্মৃতি,
নদীর ঢেউয়ে মিশে যাওয়া
শতাব্দীর কণ্ঠস্বর—
এই সবই আমাদের ঋণ।
শস্যের খেতে, বনভূমির মাঝে
ঋণ আমাদের পূর্বপুরুষের,
আমাদের শিকড়ের
আকাশের তারা, সূর্যের আলো,
চাঁদের মিষ্টি হাসি,
ফুলের সৌরভ
বন্যপাখির গান
শিশুর হাসি
মাটির প্রতিটি ধুলিকণা
আমাদের ঘর, আমাদের আশ্রয়
এ সবই পৃথিবীর ঋণ

আকাশের নীলে, মেঘের ছায়ায়
যে বৃষ্টি ঝরে, যে আলো ফোটে
তাদেরও ঋণ রয়ে গেছে,

মানুষের রক্তে, ঘামে, অশ্রুতে
গড়ে ওঠা সভ্যতা,
প্রতিটি ইট, প্রতিটি পাথর
তাদেরও ঋণ মেটেনি আজও—

হিসাবের পাহাড় ভাঙছি, গড়ছি,
গড়ছি আবার ভাঙছি,
এভাবেই ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে চলেছি

পৃথিবীর ঋণ শোধ হয়নি,
গাছের পাতায় তাই লেখা থাকে-
আমাদের প্রার্থনার কবিতা।

-এইচ বি রিতা।

07/03/2024

দুপুরের আকাশটাতে আজ মেঘ নেই
সোনালি তাপ আঁকড়ে ধরে আছে কর্মব্যস্ত মানুষের
ভাবনা; অবুঝ শিশুর মতো
চুপচাপ বসে আছি ওকের ছায়াতলে
দুশ্চিন্তা এলোমেলো কথার ছলে

পথের ধারে দাঁড়িয়ে আছে খেটে খাওয়া
স্পেনিশ গোত্র-দীর্ঘক্ষণ,
বিশাল গাড়িটির অপেক্ষায় সময় দীর্ঘ হয়
পাশের চেরিপ্লামে বসে আছে এক পাখি
চঞ্চল ডানার শব্দ থামিয়ে তাকিয়ে আছে ওদিকে
ভাবনায় ছলছল তার আখি

কার সাথে কথা বলি, কে ছিল দূরে
কেবলই ভাবি, কী বলতে চেয়েছিল
হয়তো মেঘের মতো, হয়তো বৃষ্টির মতো,
হয়তো নীরব পাহাড়ের মতো
কী ছিল সে সুরে; জানলাম নাতো

গাছের ছায়াতল মুখ ফিরিয়েছে-সতিনের মতো
এখন নদীর তীরে আমি একা
জলের ঢেউ বড্ড বেরহম,
শূন্যতায় ভরা
বৃষ্টির করুণ সুরের মতো
তুমি দাও ধরা

কিছু কথা বলা হয়নি, কিছু সুর কখনো বাজেনি
তারা মূক-বধির কিংবা বাঁজা
স্মৃতির পাতায়,
সেই চাহনি
খস্‌খসে দুপুরেও হয় তাজা

সন্ধ্যা এলে দুপুর হারিয়ে যায়
বৃষ্টিতে যেমন মেঘ
আজকের এই দুপুরে, ওকের নিচে দাঁড়িয়ে
কাকে মনে মনে পড়ে
নদীর তীরে একা আমি, কার স্মৃতি ধরে...

এইচ বি রিতা

07/02/2024

বৃষ্টির সন্ধ্যার ঝড় নিয়ে বেঁকে আসে সময়
নীরব ফ্লাশিংয়ের ডালপালা ছুঁয়ে
অদ্ভুত এক সঙ্গীতের নীরব সুর
বয়ে যায় প্রতিটি পাতায়, মিশে যায় ঘাসের রঙে
বাতাসও যেন তাই আজ কথা বলে।

পথের ধারের চেরিপ্লাম গাছের ছায়ায়,
মেরুন রঙা পাতারা নেতিয়ে আছে
ঘাসেদের বুকে বসে থাকি দিনরাত
চেয়ে থাকি দূরের আকাশে—
নীলিমার মাঝে ভেসে থাকা সাদা মেঘ
কি যেন বলতে চায়।

চাঁদের আলো যখন ছড়িয়ে পড়ে নদীর জলে,
হৃদয়ের গহীনে জেগে ওঠে
অজানা এক আবেগ।
সময়ের তরঙ্গে ভেসে চলে স্মৃতি,
একটি প্রাচীন কাব্যের মতো।

এই জীবন, প্রতিটি মুহূর্ত
প্রায়শই বেসুরা কবিতা হয়ে উঠে
ছন্দের পতন
চিত্রকল্প
অনুভূতির দরজায় চিৎকার করে মরে

তুমি এলে! তুমি আসতেই
মাছের মরা চোখ দৃষ্টি ফিরে পেলো
থেকে গেল ঝমঝমে বৃষ্টি
প্রচণ্ড দাবদাহের পর পৃথিবী হলো শান্ত
বর্ষার শান্তিবারি বর্ষণে।

এই নিস্তব্ধতার একটি সমুদ্র আছে
যেখানে শব্দেরা ডুবে যায় মাতাল কবির মতো...

এইচ বি রিতা

শেডের তলে, একা বসে আছে কেউ চিরকাল গৃহ ছাড়াবাতাসের ঘ্রাণে হারিয়ে গেছে বিশ্ব তার পথহারা অন্ধকার সমুদ্রে ডুবে আছে সবুজের ব...
07/01/2024

শেডের তলে, একা বসে আছে কেউ
চিরকাল গৃহ ছাড়া
বাতাসের ঘ্রাণে হারিয়ে গেছে বিশ্ব তার
পথহারা
অন্ধকার সমুদ্রে ডুবে আছে সবুজের বন
আকুতি ছাড়া

আকাশের তলে এ এক বন্দী জীবন
অনুভবের জগৎ তারাতলে ছাওয়া
কে ছাড়াবে তার বাঁধন-ক্ষুধার
কে বুঝবে শেষ বিকালের অন্ধকারে তার
একাকী হারিয়ে যাওয়া?

আমি শূন্যের সাথে কথা বলি
এলোমেলো হয় ভাবনার পঙ্তিরা
প্রশ্ন করি
বিড়বিড় করি
কথার জগতে তার প্রাণ ছুঁতে পারে না স্বাধীনতা
নিঃশ্চুপ, প্রাণহারা
বিনয় করে প্রভাতের প্রতিধ্বনি আসবে কি ফিরে
তার আঙ্গিনায়?
প্রশ্নগুলো ভীষণ দিশেহারা

অন্ধকারেও সুরক্ষিত সে রহস্যের একা বন্দরে
বোধ আছে কি নেই-দিশেহারা
চিরকাল তালাবদ্ধ মন দেখবে কী অচেনা সমুদ্র
‌ভাবনারা ছন্দহারা

আমি অন্ধকারে বসে আছি তার সাথে
শেডের তলে লুকিয়েছে মহাকাশের নীল রঙ
লুকিয়েছে সময়ের মুখে তার হাসির ছায়া
শহরের ধূসরতা, পাখির মন জল খাওয়া
একা হৃদয়ে ভাসে কি তবে-বৃষ্টির বিদায় হাওয়া?

আমি জানি, তাদের চোখের দৃষ্টি রহস্যময়
অন্ধকারে ঘেরা
তারা কারা?
বৃষ্টিধোয়া মধ্যরাতে চোখ চিক চিক করে উঠে
আজ অসীম আকাশে নেই একটিও তারা

ঘন মেঘের মত বিষণ্ণ লাগে
নিশ্চুপ পাহাড়ের মত অসহায় লাগে
জন্মের রহস্য ভেদে মুহূর্তগুলি দিকহারা
শেডের তলে, একা বসে আছে কেউ
চিরকাল গৃহ ছাড়া....

(কাল থেকে সে এখানে বসা। আমি কিছুক্ষণ পর পর ঘরের কাজ শেষ করেই যাচ্ছি তার কাছে। সে কিছু নিতে চায় না। এখন কিছু ফল আর কালকের খাবারের জন্য সামান্য কয়টা ডলার তার হাতে দিলাম। সে নিল। তার চোখ ভিজে উঠল। আমার মন খারাপের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলো। সেই ছোটবেলার প্রশ্নটা আবারো মনে উঁকি দিতে শুরু করলো, 'আমার ঘর আছে তার নেই কেন?')

Address

New York, NY

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when HB Rita posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to HB Rita:

Videos

Share

Category