Quranic Teacher NY

Quranic Teacher NY Learn the holy Quran with easy way Good

12/15/2024

صبح ازل سے شمع ہدایت
شام ابد تک قاطع ظلمت
جس پر آکر ختم رسالت
سب سے اخر سب سے مقدم
صلی اللہ علیہ وسلم


جلواے فطرت رحمت عالم
چشماے الفت محسن اعظم
پیکر شفقت خلق مجسم
سب کے والے سب کے ھمدم

شمع محبت جسنے جلای
رسم غلام جس نے مٹای
مدح سرا ہے جسکی خدای
درد کا درما زخم کا مرہم

مانع گل کا نقش اول
خیر سراپا فیض مسلسل
جسپے ہوا ہے دین مکمل
فخر رسول رہبر اعظم

نقش ہے جسکا روشن روشن
خوشبوا جسکا گلشن گلشن
عکس ہے جسکا درپن درپن
مہرے تابا نیر اعظم

সব সময় অজু অবস্থায় থাকার ফজিলত ও মর্যাদা॥অজু হচ্ছে পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। এটি অনেক ফজিলতপূর্ণ ইবাদতও বটে। শুধু ...
12/12/2024

সব সময় অজু অবস্থায় থাকার ফজিলত ও মর্যাদা॥

অজু হচ্ছে পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। এটি অনেক ফজিলতপূর্ণ ইবাদতও বটে। শুধু তা-ই নয়, অজু অবস্থায় ঘুমানোর ফজিলতও অনেক বেশি। সব সময় অজু অবস্থায় থাকার ব্যাপারে ইসলামের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনাও রয়েছে। কী সেই সব দিকনির্দেশনা?

শুধু নামাজ কোরআন তেলাওয়াত হজ ও ওমরার জন্যই ওজু অবস্থায় থাকা প্রয়োজন এমনটি নয় বরং সব সময় অজু অবস্থায় থাকার ফজিলত ও মর্যাদা অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা পবিত্র অবস্থায় থাকা ব্যক্তিদের ভালোবাসেন। কোরাআনুল কারিমে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-

اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তওবাকারী এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)

সব সময় অজু অবস্থায় থাকার আমলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর বিশেষ আমলও ছিল এটি। তিনি সব সময় অজু অবস্থায় থাকতেন। আর যখনই অজু করতেন সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। কানজুল উম্মালে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজের রাতে জান্নাতেও বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু হাটাচলায় জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, ‘তোমার সর্বোত্তম আমল সম্পর্কে আমাকে বল, আমি জান্নাতে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি। বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমার সর্বোত্তম আমল হলো, আমি রাতে অথবা দিনে যখনই পবিত্রতা অর্জন করি তখনই তার দ্বারা সাধ্যমত নামাজ আদায় করে থাকি।’

সব সময় অজু অবস্থায় থাকার অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। তাহলো-

১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী পরিপূর্ণভাবে অজু সম্পাদন করে, (তার জন্য) ফরজ নামাজগুলোর মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়।’ (মুসলিম)

২. হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছিলেন, ‘হে ছেলে! সম্ভব হলে সবসময় অজু অবস্থায় থাক। কেননা মৃত্যুর ফেরেশতা অজু অবস্থায় যার রূহ কবজ করবে; তার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ হয়।’ (বায়হাকি)

৩. সব সময় অজুর সঙ্গে থাকা ব্যক্তি হাশরের ময়দানে উজ্জ্বল চেহারার হবে। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত নুয়াইম মুজমির রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। এরপর তিনি অজু করে বললেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কেয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় আহ্বান করা হবে যে, অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল ঝলমল করতে থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ ঝলমলতা বাড়িয়ে নিতে চায় সে যেন বেশি বেশি অজু করে।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

৪. এমনকি বিশ্রামের জন্য শয্যাগ্রহণের সময় অজু করে বিশ্রাম নিলে বা ঘুমালেও রয়েছে বিশেষ ফজিলত। হাদিসে এসেছে হজরত বারা ইবনে আযিব হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছেন,

إِذَا أَتَيْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلَاةِ ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الْأَيْمَنِ

‘যখন তুমি তোমার শয্যা গ্রহণের ইচ্ছা করবে, তখন সালাতের ন্যায় অজু করে ডান কাত হয়ে শয়ন করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

৫. যে ব্যক্তি পবিত্রাবস্থায় (অজু অবস্থায় ) ঘুমায় তার সাথে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকে। অতঃপর সে ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সাথে সাথেই আল্লাহ্‌র সমীপে ফেরেশতাটি প্রার্থনায় বলে থাকে, হে আল্লাহ্‌! তোমার অমুক বান্দাকে ক্ষমা করে দাও, কেননা সে পবিত্রাবস্থায় ঘুমিয়েছিল।’ (আল ইহসান ফি তাকরিব, ইবনে হিব্বান)

সুতরাং মানুষের উচিত সব সময় অজু অবস্থায় থাকা। এমনকি ঘুমাতে যাওয়ার সময়ও অজু অবস্থায় ঘুমানো। অজু অবস্থায় থাকার মাধ্যমে হাদিসে উল্লেখিত ফজিলত অর্জন করাই মুমিন মুসলমানের কাজ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য পবিত্র অবস্থায় থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

12/10/2024

وَكَذَٰلِكَ جَعَلۡنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوّٗا شَيَٰطِينَ ٱلۡإِنسِ وَٱلۡجِنِّ يُوحِي بَعۡضُهُمۡ إِلَىٰ بَعۡضٖ زُخۡرُفَ ٱلۡقَوۡلِ غُرُورٗاۚ وَلَوۡ شَآءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُۖ فَذَرۡهُمۡ وَمَا يَفۡتَرُونَ
And so We have appointed for every Prophet enemies - Shayatin (devils) among mankind and jinns, inspiring one another with adorned speech as a delusion (or by way of deception). If your Lord had so willed, they would not have done it, so leave them alone with their fabrications. (Tafseer Qurtubi, Vol. 7, Page 67)

12/09/2024
সস্তায় ফ্লাইট টিকিট কেনার ৭টি কার্যকর টিপসসস্তায় ফ্লাইট টিকিট কিনতে কিছু কৌশল জানা থাকলে ভ্রমণের খরচ অনেক কমানো সম্ভব।...
12/05/2024

সস্তায় ফ্লাইট টিকিট কেনার ৭টি কার্যকর টিপস

সস্তায় ফ্লাইট টিকিট কিনতে কিছু কৌশল জানা থাকলে ভ্রমণের খরচ অনেক কমানো সম্ভব। নিচে এমন ৭টি কার্যকর কৌশল উল্লেখ করা হলো।

১. মঙ্গলবার ও বুধবার টিকিট বুক করুন

মঙ্গলবার এবং বুধবার হলো সস্তায় টিকিট কেনার সেরা দিন। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় তাদের টিকিটের মূল্য আপডেট করে। পরিসংখ্যান বলছে, অধিকাংশ মানুষ শুক্রবার, শনিবার বা রবিবার টিকিটের দাম খোঁজেন। তাই মধ্য সপ্তাহে টিকিট কিনলে দাম তুলনামূলক কম হয়।

২. আগে থেকে টিকিট বুক করুন, তবে অতিরিক্ত আগেও নয়

ভ্রমণের তারিখের অন্তত ২১ দিন আগে টিকিট কিনুন। এয়ারলাইনস সাধারণত প্রথম কয়েকজন যাত্রীকে সবচেয়ে সস্তা টিকিট দেয়। তবে খুব আগেও বুক করলে বেশি দাম দিতে হতে পারে।

৩. সঠিক দিন নির্বাচন করুন

মঙ্গলবার বা বুধবার ফ্লাইট বুকিং এবং ভ্রমণের জন্য আদর্শ। এই দিনগুলোতে ভ্রমণকারী তুলনামূলক কম থাকে। তাই টিকিটের দামও কম থাকে।

৪. আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য সেরা অফার খুঁজুন

আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ১১-১২ সপ্তাহ আগে টিকিটের সেরা অফার পাওয়া যায়। এই সময়ে নিয়মিত টিকিটের দাম চেক করুন।

৫. ছোট এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করুন

বড় এয়ারপোর্টের পরিবর্তে কাছাকাছি ছোট এয়ারপোর্টে নামার চেষ্টা করুন। যেমন, লন্ডনে যাওয়ার সময় হিথ্রোর পরিবর্তে ম্যানচেস্টার এয়ারপোর্টে নামুন এবং ট্রেনে লন্ডনে যান। এতে খরচ কমে।

৬. ব্রাউজারের 'কুকিজ' পরিষ্কার করুন

ফ্লাইট টিকিট খোঁজার সময় আপনার ব্রাউজারের কুকিজ পরিষ্কার করুন। না হলে এয়ারলাইন্সের বুকিং সিস্টেম আপনার আগের অনুসন্ধান ধরে নেবে এবং দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।

৭. টিকিটের দাম তুলনা করুন

একটি ওয়েবসাইটে নির্ভর না করে বিভিন্ন সাইটে টিকিটের দাম তুলনা করুন। প্রায়ই দেখা যায়, একই এয়ারলাইন্সের টিকিট অন্য ওয়েবসাইটে সস্তা পাওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: সাইটগুলো ব্যবহার করুন

সস্তায় টিকিট খুঁজতে এই সাইটগুলো ব্যবহার করুন:

1. Skyscanner
https://www.skyscanner.net

2. CheapFlight
https://www.cheapflights.com

3. Momondo
https://www.momondo.com

4. Kayak
https://www.kayak.com

5. Google Flights
https://www.google.com/flights

ফ্লাইটের টিকিট সস্তায় কিনতে এই টিপসগুলো অনুসরণ করুন। পরিকল্পিত ভ্রমণ আপনার সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচাবে।

Compare cheap flight prices from all major airlines and travel agents, and find the cheapest tickets to all your favourite destinations. Book online today.

12/05/2024

এক বুযুর্গকে এক ধনী ব্যক্তি
একটি মুক্তা হাদিয়া দিল।তখন
তিনি "আলহামদুলিল্লাহ"
বলে খাদেমকে রেখে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন।
কয়েক দিন পর খাদেম খবর
নিয়ে এলো যে,মুক্তাটি চুরি হয়ে গেছে, তখনও
তিনি "আলহামদুলিল্লাহ" বললেন । খাদেম এরূপ
আচরনে অবাক হয়ে প্রশ্ন করল-হযরত যখন
আপনার নিকট হাদিয়া এলো,তখন
আলহামদুলিল্লাহ বলে আল্লার তারীফ
করলেন,আবার তা চলে যাওয়ার পরও আল্লাহর
তারীফ করলেন এটার রহস্য কি? বুযুর্গ
মুচকি হেসে বললেন-
মুক্তা আসাতে বা যাওয়াতে আমি আল্লাহর
তারিফ করিনি। বরং একারণে করেছি যে, যখন
আমার নিকট হাদিয়া এল,তখন এর দ্বারা আমার
মনে বিন্দুমাত্র অহংকার আসেনি,আবার যখন
শুনলাম তা চুরি হয়ে গেছে এর দ্বারা ও আমার
মনে কোনরূপ আফসোস আসেনি, আল্লাহ
তা'আলা এভাবে আমাকে দুনিয়ার মোহ
থেকে রক্ষা করেছেন, এ জন্য আমি তার
প্রশংসা করে আলহামদুলিল্লাহ বলেছি ।
শিক্ষাঃ আনন্দ ও বেদনা নির্বিশেষে সর্বাবস্তায়
আল্লাহর শুকুর আদায় করা মুমিনের কর্তব্য।

Not sighted
12/02/2024

Not sighted

12/01/2024

এখনও সময় আছে জনগণের মনের অবস্থা অনুধাবন করে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করুন। যা এখন সময়ের দাবি।
অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।

11/22/2024

আমরা কেন বেশি দরুদ পাঠ করব?

এক,
দরুদ পড়া আল্লাহর হুকুম,

اِنَّ اللّٰہَ وَ مَلٰٓئِکَتَہٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡہِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا ﴿۵۶﴾
নিশ্চয় আল্লাহ (ঊর্ধ্ব জগতে ফেরেশতাদের মধ্যে) নবীর প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর জন্য দো‘আ করে*। হে মুমিনগণ, তোমরাও নবীর উপর দরূদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।
আহযাব-৫৬

قال البخاري رحمه الله تعالى: قال أبو العالية رحمه الله تعالى: صلاة الله تعالى: ثناؤه عليه عند الملائكة عليهم الصلاة والسلام
আল্লাহ দরুদ পড়ার অর্থ হলো, ফেরেশতাদের কাছে নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশংসা করা।

، وصلاة الملائكة المكرمون: الدعاء.
ফেরেশতাদের দরুদ হলোঃ নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্য দুআ করা।
وقال ابن عباس رضي الله تعالى عنه: يصلون: يبركون. هكذا علقه البخاري رحمه الله تعالى عنهما"

বুখারী,,,

দুই,
দরুদ পড়া মানে আল্লাহকেও স্বরন করা

فَاذۡکُرُوۡنِیۡۤ اَذۡکُرۡکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لِیۡ وَ لَا تَکۡفُرُوۡنِ ﴿۱۵۲﴾٪
অতএব, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর আমার শোকর আদায় কর, আমার সাথে কুফরী করো না।
বাকারা-১৫২

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلاَ ذَكَرْتُهُ فِي مَلاَ خَيْرٍ مِنْهُمْ وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু' হাত এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৪০৫

তিন,
আমাদের দরুদ নবিজীর কাছে পৌঁছে যায়,

উদাহরণ-১

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَىَّ إِلاَّ رَدَّ اللَّهُ عَلَىَّ رُوحِي حَتَّى أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ আমার উপর সালাম পেশ করলে আল্লাহ আমার ‘রূহ’ ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের জবাব দেই।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২০৪১

উদাহরণ-২

، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ قُبُورًا وَلاَ تَجْعَلُوا قَبْرِي عِيدًا وَصَلُّوا عَلَىَّ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ تَبْلُغُنِي حَيْثُ كُنْتُمْ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে ক্ববরস্থানে পরিণত করো না এবং আমার ক্ববরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করো না। তোমরা আমার উপর দরূদ পাঠ করো। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌছানো হবে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২০৪২

চার,
নবিজীর প্রতি দরুদ প্রসস্ত হৃদয়ের পরিচয়।

উদাহরণ -১
নবিজীর প্রতি দরুদ প্রসস্ত হৃদয়ের পরিচয় দেওয়া,
، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُغْفَرَ لَهُ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الْكِبَرَ فَلَمْ يُدْخِلاَهُ الْجَنَّةَ ‏

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তার নাক ভূলুন্ঠিত হোক যার কাছে আমার নাম উল্লেখিত হল, কিন্ত সে আমার উপর দরূদ পাঠ করেনি। ভুলুন্ঠিত হোক তার নাক যার নিকট রমযান মাস এলো অথচ তার গুনাহ্‌ মাফ হয়ে যাওয়ার পূর্বেই তা পার হয়ে গেল। আর ভূলুন্ঠিত হোক তার নাক যার নিকট তার বাবা-মা বৃদ্ধে উপনিত হলো, কিন্ত তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করায়নি (সে তাদের সঙ্গে ভাল আচরণ করে জান্নাত অর্জন করেনি)। আবদুর রহমানের রিওয়াইয়াতে কিংবা ‘‘যে কোন একজন’’ কথাটুকুও আছে।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৪৫

উদাহরণ-২

[عن أبي ذر الغفاري:]
خرجتُ ذاتَ يومٍ فأتيتُ رسولَ اللهِ
আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ননা:তিনি বলেন, একদিন ঘর থেকে বের হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলাম।
ﷺ قال ألا أخبِرُكم بأبخلِ النّاسِ
তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন:আমি কি তোমাদের কে সবচেয়ে কৃপন ব্যাক্তির ব্যাপারে অবহিত করবনা?
قالوا بلى يا رسولَ اللهِ
সাহাবারা বললেন জী,
قال من ذُكِرتُ عندَه فلم يُصلِّ عليَّ فذلك أبخلُ النّاسِ
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার সামনে আমার নাম নেওয়া হয় অথচ সে দরুদ পড়লনা, সে সবচেয়ে বড়ো কৃপন।
صحيح الترغيب ١٦٨٤

উদাহরণ-৩

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ مَنْ نَسِيَ الصَّلاَةَ عَلَىَّ خَطِئَ طَرِيقَ الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি দরূদ পাঠাতে ভুলে গেলো সে জান্নাতের পথই ভুলে গেলো।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৯০৮

পাচ,
নবিজীর প্রতি দরুদ পড়া ঈমানের আলামত,

، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই।(বেশি দরুদ পাঠ করা বেশি ভালোবাসার বহিপ্রকাশ)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৫

ছয়,
দরুদ পাঠকারি কেয়ামতের ময়দানে নবিজীর সবচেয়ে নিকটতম হবে।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ أَوْلَى النَّاسِ بِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَىَّ صَلاَةً ‏"‏ ‏.‏
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামতের দিন আমার নিকটতম ব্যক্তি হবে যে আমার প্রতি বেশি পরিমাণে দরূদ পাঠ করেছে।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৪৮৪

সাত,
একবার দরুদ পড়ার আশ্চর্য ধরনের ফজীলত

উদাহরণ-১

حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ، وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيئَاتٍ، وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ»

আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন, তাঁর দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তাঁর জন্য দশটি মর্যাদা উন্নীত করা হবে।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১২৯৭

উদাহরণ-২

عن أبي طلحة الأنصاري زيد بن سهل:]
আবু তালহা আনসারি থেকে বর্ননা:
أنَّ رسولَ اللهِ ﷺ جاء ذاتَ يومٍ والسُّرورُ يُرى في وجهِه
একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমন করলেন এমন অবস্থায় যে নবিজীর চেহারায় আনন্দ লক্ষ করা যাচ্ছিল,
فقالوا: يا رسولَ اللهِ إنّا لنرى السُّرورَ في وجهِك فقال:
তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল আমরা আপনার চেহারায় আনন্দ দেখতে পাচ্ছি, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
إنَّه أتاني الملَكُ فقال: يا محمَّدُ أما يرضيك أنَّ ربَّك عزَّ
وجلَّ يقولُ: إنَّه لا يصلِّي عليك أحدٌ من أمَّتِك إلّا صلَّيْتُ عليه عشرًا ولا يُسلِّمُ عليك أحدٌ من أمَّتِك إلّا سلَّمتُ عليه عشرًا؟ قال: بلى
আমার কাছে ফেরেশতা এসে বলল যে আপনি কি এতে সন্তষ্ট নয় আপনার রব বলেছেন, আপনার উম্মতের কেউ আপনার উপর দরুদ পড়লে আমি আল্লাহ তার উপর দশটা রহমত নাযিল করি, আপনার উম্মতের কেউ একবার আপনাকে সালাম পাঠাইলে আমি তার উপর দশটি শান্তি নাযিল করি?
আমি বললাম হা আমি সন্তষ্ট,,
صحيح الترغيب ١٦٦١

আট,

দূআ কবুলের কারণ
سَمِعَ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يَقُولُ سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَدْعُو فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ عَجِلَ هَذَا ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ ‏"‏ إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ ‏.‏

ফাযালাহ্‌ ইবনু ‘উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
এক লোককে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নামাযের মাঝে দু’আ করতে শুনলেন, কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর সে দরূদ পড়েনি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অপর কাউকে বললেনঃ তোমাদের কেউ নামায আদায় করলে সে যেন আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা ও তাঁর গুণগান করে, তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর দরূদ পাঠ করে, তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দু’আ করে।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪৭৭

নয়,

গুনাহ মাফের কারণ,
، عَنِ الطُّفَيْلِ بْنِ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا ذَهَبَ ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ ‏"‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللَّهَ اذْكُرُوا اللَّهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أُبَىٌّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلاَةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلاَتِي فَقَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ الرُّبُعَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ النِّصْفَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلاَتِي كُلَّهَا ‏.‏ قَالَ ‏"‏ إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ ‏"‏ ‏ ‏.‏

উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাতের দুই-তৃতীয়াংশ চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম থেকে জেগে দাঁড়িয়ে বলতেনঃ হে মানবগণ! তোমরা আল্লাহ্‌ তা’আলাকে স্মরণ কর, তোমরা আল্লাহ্‌ তা’আলাকে স্মরণ কর। কম্পন সৃষ্টিকারী প্রথম শিঙ্গাধ্বনি এসে পড়েছে এবং এর পরপর আসবে পরবর্তী শিঙ্গাধ্বনি। মৃত্যু তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে, মৃত্যু তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। উবাই (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তো খুব অধিক হারে আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করি। আপনার প্রতি দরুদ পাঠের জন্য আমি আমার সময়ের কতটুকু খরচ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইছা কর। আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ সময়? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়ে অধিক পরিমাণে পাঠ করতে পারলে এতে তোমারই মঙ্গল হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি কি অর্ধেক সময় দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ চাও, যদি এর চেয়েও বাড়াতে পারো সেটা তোমার জন্যই কল্যাণকর। আমি বললাম, তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ সময় দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়েও বাড়াতে পারলে তোমারই ভাল। আমি বললাম, তাহলে আমার পুরো সময়টাই আপনার দরুদ পাঠে কাটিয়ে দিব? তিনি বললেনঃ তোমার চিন্তা ও কষ্টের জন্য তা যথেষ্ট হবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৪৫৭

দশ
দরুদের শব্দ,
سَمِعَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى، قَالَ لَقِيَنِي كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ فَقَالَ أَلاَ أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً سَمِعْتُهَا مِنَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ بَلَى، فَأَهْدِهَا لِي‏.‏ فَقَالَ سَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ الصَّلاَةُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ‏.‏ قَالَ ‏ "‏ قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ‏"‏‏.‏

‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) আমার সঙ্গে দেখা করে বললেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না যা আমি নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছি? আমি বললাম, হাঁ, আপনি আমাকে সে হাদিয়া দিন। তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরুদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব। তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বল, “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম (‘আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (‘আঃ) এবং ইবরাহীম (‘আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৩৭০

এগারো,
দরুদের স্থানসমূহ

এক,
আযানের পর,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَىَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَىَّ صَلاَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوا اللَّهَ لِيَ الْوَسِيلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لاَ تَنْبَغِي إِلاَّ لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِيَ الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ ‏"‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্‌র ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি নাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ তোমরা যখন মুওয়ায্‌যিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমাত বর্ষণ করেন। অতঃপর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে ওয়াসীলাহ্‌ প্রার্থনা কর। কেননা, ‘ওয়াসীলাহ্‌’ জান্নাতের একটি সম্মানজনক স্থান। এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজনকেই দেয়া হবে। আমি আশা করি, আমিই হব সে বান্দা। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আমার জন্যে ওয়াসীলাহ্‌ প্রার্থনা করবে তার জন্যে (আমার) শাফা’আত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭৩৫

দুই,
জুমার দিন দরুদ পড়া,
عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، فِيهِ خُلِقَ آدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ، وَفِيهِ قُبِضَ، وَفِيهِ النَّفْخَةُ، وَفِيهِ الصَّعْقَةُ، فَأَكْثِرُوا عَلَيَّ مِنَ الصَّلَاةِ، فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَيَّ»

قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْكَ، وَقَدْ أَرَمْتَ أَيْ يَقُولُونَ قَدْ بَلِيتَ؟ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَنْ تَأْكُلَ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ»

আওস ইব্‌ন আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের সকল দিনের মধ্যে পরমোৎকৃষ্ট দিন হল জুমু’আর দিন, সে দিন আদম (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, সে দিনই তাঁর ওফাত হয়, সে দিনই দ্বিতীয় বার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে এবং সে দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। অতএব, তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়। কেননা, তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কিভাবে আমাদের দরূদ আপনার কাছে পেশ করা হবে। যেহেতু আপনি (এক সময়) ওফাত পেয়ে যাবেন অর্থাৎ তাঁরা বললেন, আপনার দেহ মাটির সাথে মিশে যাবে। তিনি বললেন, নিশ্চিয় আল্লাহ তা’আলা যমীনের জন্য নবীগণের দেহ গ্রাস করা হারাম করে দিয়েছেন।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১৩৭৪

তিন,
মজলিসে
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللَّهَ فِيهِ وَلَمْ يُصَلُّوا عَلَى نَبِيِّهِمْ إِلاَّ كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে সমস্ত লোক কোন দরবারে বসেছে অথচ তারা আল্লাহ তা‘আলার যিক্‌র করেনি এবং তাদের নাবীর প্রতি দরূদও পড়েনি, তারা বিপদগ্রস্ত ও আশাহত হবে। আল্লাহ তা‘আলা চাইলে তাদেরকে শাস্তিও দিতে পারেন কিংবা মাফও করতে পারেন।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৮০

চার,
মসজিদে প্রবেশ করার সময়, এবং বের হওয়ার সময়
، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ سُوَيْدٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حُمَيْدٍ، أَوْ أَبَا أُسَيْدٍ الأَنْصَارِيَّ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيُسَلِّمْ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لْيَقُلِ اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ فَإِذَا خَرَجَ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ ‏"‏ ‏.‏

‘আবদুল মালিক ইবনু সাইদ ইবনু সুওয়াইদ থেকে বর্ণিতঃ:
আমি আবূ হুমাইদ (রাঃ) বা আবূ আনসারী (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশকালে যেন সর্বপ্রথম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর সালাম পাঠ করে, অতঃপর যেন বলেঃ ‘হে আল্লাহ্! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাগুলো খুলে দিন।’ আর বের হওয়ার সময় যেন বলেঃ ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করি।’
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৬৫

أللهم صل على محمد

আরিফ বিন হাবিব

11/15/2024

“ জুলাইয়ের জাগ্রত চেতনা তোমরা বৃথা যেতে দিওনা। “

11/12/2024

বই: মৃত্যু শয্যায় শয়তানেযর ধোঁকা
লেখক: মুফতি মুহাম্মাদ শফী রহিমাহুল্লাহ
____মৃত্যু এক অনিবার্য সত্য। প্রতিটি প্রাণীকেই এর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।আর এই কঠিন সংকটময় মুহূর্তে শয়তান প্রতিটি মুসলমানকে বিভিন্ন ভাবে ধোঁকা দিতে চায়। শয়তান চায় সে যেন ঈমান হারা হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিক। আর এই আসন্ন মৃত্যুর মুহূর্তে কারাই বা শয়তানের বিপক্ষে বিজয়ী হয়ে ঈমান নিয়ে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে পারেন এবং কিভাবে শয়তান মুসলিমদের কে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করে সেসব বিষয় নিয়ে উপমহাদেশের প্রখ্যাত একজন বুজুর্গ আলেম এই বইটি তে খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় আলোচনা করেছেন।

♣‘তোমরা আসন্ন-মৃত্যু লোকদের (মুসলমান) কাছে উপস্থিত হইও। তাদের ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর তালকীন করো। সুসংবাদ প্রদান করো বেহেশতের। কারণ, বড় জ্ঞানবান ও বিচক্ষণ মানুষও (পুরুষ-মহিলা) সেই কঠিন সময়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। সুযোগ বুঝে শয়তানও সে মুহূর্তে অন্য সময়ের তুলনায় বেশি কাছাকাছি হয়।’ (কানযুল উম্মাল, খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ৭৮)
♣‘নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, তারপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন। ইহকালে ও পরকালে আমরা তোমাদের বন্ধু। সেখানে তোমাদের জন্যে আছে যা তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্যে আছে যা তোমরা দাবি কর। এটা ক্ষমাশীল করুণাময়ের পক্ষ থেকে সাদর আপ্যায়ন। (সূরা হা মিম সিজদাহ, আয়াত ৩০-৩২)
উল্লেখিত আয়াতসমূহে দুটি শব্দ বিশেষভাবে লক্ষ করার বিষয়। যেগুলোর ব্যাপারে বিভিন্ন রকমের তাফসীর উল্লেখ করা হয় ।
প্রথমত: استقامت (দৃঢ়তা ও অবিচলতা)
দ্বিতীয়ত: (ফেরেশতাদের অবতরণ)
‘ইস্তিক্বামাত’ শব্দের বিভিন্ন তাফসীর সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেঈন থেকে বর্ণিত হয়েছে। তবে মৌলিক বিচার-বিশ্লেষণে সেগুলো অভিন্ন। বরং ‘ইস্তিক্বামাতের’ বিভিন্ন ব্যাখ্যা অবলম্বন করা হয়েছে এর স্তরের বেশ-কম বিবেচনা করে। সেগুলোর মাঝে হযরত সিদ্দীকে আকবর আবূ বকর রাযি.- এর তাফসীর হল সবচেয়ে চমৎকার। তিনি বলেন, ‘ইস্তিক্বামাত' দ্বারা উদ্দেশ্য হল, ‘ঈমান ও তাওহীদের উপর ইস্তিক্বামাত। অর্থাৎ ঈমানের উপর অটল ও অবিচল থাকা, কুফর ও শিরকে জড়িয়ে না পড়া।' এ তাফসীরটি অন্য তাফসীরগুলোকে শামিল করে নেয়।
'তানাযযুলুল মালাইকা' এর ব্যাপারেও বিভিন্ন তাফসীর উল্লেখ করা হয়। কোনো তাফসীরবিদ বলেছেন, ফেরেশতারা মৃত্যুর সময় মানুষকে সহায়তা করতে অবতরণ করে। কেউ বলেছেন, ফেরেশতারা মানুষকে
সহায়তা করে কবরে। কেউ বলেছেন, ফেরেশতারা মানুষকে সহায়তা করবে কিয়ামতের ময়দানে ।
কিন্তু ইবনে কাসীর হযরত যায়েদ বিন আসলাম রাযি. থেকে নিম্নোক্ত তাফসীর উল্লেখ করেছেন,
يبشرونه عند موته وفي قبره وحين يبعث.
‘ফেরেশতারা মানুষকে মৃত্যুর সময় সুসংবাদ প্রদান করেন, তারা সুসংবাদ দেন কবরেও এবং তারা সুসংবাদ দিবেন কিয়ামতের মাঠেও যখন মানুষ পুনরুত্থিত হবে।' এটি অন্যান্য তাফসীর থেকে ব্যাপক। এটিই উত্তম ব্যাখ্যা। এমনটিই হবে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩৩৭)
মোটকথা, আয়াতে কারীমার মাধ্যমে একথা একদম স্পষ্ট, যে ব্যক্তি জীবনের শেষ প্রহর পর্যন্ত ইসলাম ও ঈমানের উপর দৃঢ়কদম থাকে, তার
মৃত্যুর সময় ফেরেশতারা তার শিয়রে অবতরণ করে এবং তাকে খোশ খবর শোনায় ।
তাফসীরগ্রন্থ রূহুল মা'আনীতে আছে, আসমান থেকে প্রেরিত‌ ফেরেশতাগণ মুমূর্ষু ব্যক্তির সকল কাজকর্মে সাহায্য করেন। ইহকালীন- পরকালীন যেকোনো ধরনের চিন্তা বা পেরেশানি মুমূর্ষু ব্যক্তির সামনে পেশ হয়, ফেরেশতাগণ সে ক্ষেত্রেই তাকে সহযোগিতা করে থাকেন। তারা তার অন্তর হতে সমূহ পেরেশানি দূর করেন এবং উদ্ধার করেন তাকে সকল প্রকার দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা থেকেও।
উপরে উল্লেখিত আয়াতে মুসলমানদের দুটি জিনিস হতে নিশ্চিন্ত ও নির্বিঘ্ন থাকার ঘোষণা দেয়া হয়েছে ।
এক- ভয় ও আশঙ্কা ।
দুই- দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি।
ভয় ও আশঙ্কা তো সে সকল জিনিসের বেলায় হয়ে থাকে, যা ভবিষ্যতে তার সামনে পেশ হবে । যেমন: কবর, হাশর ও নাশর ইত্যাদির ভয়।
আর দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি তো সে সকল বিষয়ের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে, যা পিছনে ছেড়ে আসা হয়। যেমন: পরিবার-পরিজনের জন্য দুশ্চিন্তা।
সুতরাং মানুষের প্রতি ফেরেশতাদের সান্ত্বনামূলক কথাবার্তার অর্থ এটিই যে, তোমরা সামনের বিপদাপদের ব্যাপারে শঙ্কিত ও ভীতিগ্রস্ত হয়ো না।
কেননা আমরা প্রেরিত হয়েছি তোমাদের সহায়তা করতেই। আর তোমরা দুনিয়াতে যে সকল আপন লোকজনকে ছেড়ে যাচ্ছ, তাদের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ও পেরেশান হয়ো না। কারণ আমরা তো আছিই তাদের দেখাশোনা করার জন্যে।
উপরে ‘মুখতাসার তাযকিরায়ে কুরতুবী'র বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জিবরাঈল আলাইহিস সালাম ও অপরাপর ফেরেশতাগণ শয়তানকে তাড়িয়ে দেয় মুমূর্ষু ব্যক্তির কাছ থেকে এবং তাকে তাকিদ করতে থাকে সঠিক দীনের উপর স্থির থাকার জন্য ।

হযরত মাইমুনা বিনতে সা'দ রাদিআল্লাহু আনহা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আরয করলাম, গোসলের হাজতওয়ালা ব্যক্তি যদি গোসল ছাড়া শুয়ে থাকে তবে কোনো সমস্যা আছে কি না?
হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ما أحب أن يرقد حتى يتوضأ فإني أخاف أن يتوفى، فلا يحضره جبريل
আমি পছন্দ করি না যে, গোসলের হাজতওয়ালা ব্যক্তি অযু ছাড়া শুয়ে থাকবে। কারণ আমার আশঙ্কা হয়, তার শয়নকালে হঠাৎ মৃত্যু এসে গেল ৷কিন্তু তার শিয়রে জিবরাঈল ফেরেশতা উপস্থিত হলেন না।' (আল হাবী লিসসুয়ূতি, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৫২)
এ-হাদীসের মাধ্যমে জানা গেল, হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম মুমূর্ষু ব্যক্তির কাছে তাশরীফ নিয়ে যান। কিন্তু ব্যক্তি যদি জুনুবী অবস্থায় (যার উপর গোসল ফরয) মারা যায়, তাহলে জিবরাঈল আলাইহিস সালাম উপস্থিত হন না তার জানাযায় ।

♣ইমাম আহমদ বিন হাম্বলের মৃত্যুঘটনা:
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহির ছেলে বর্ণনা করেছেন, আব্বাজানের মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে আমি তাঁর চোয়াল বাঁধার জন্য হাতে কাপড় নিয়ে রেখেছিলাম। সে মুহূর্তে তিনি দরদর করে ঘামছিলেন। চৈতন্যশক্তি ফিরে পেলেই তিনি বলছিলেন, “ لا بعد”।
তাঁর এ-অবস্থা কয়েকবার অবলোকন করার পর আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
‘আব্বাজান! আপনি কী সব বলছেন?’
তিনি বললেন, ‘আমার সম্মুখে শয়তান দাঁড়িয়ে আছে। ঐ বজ্জাত মুখে আঙ্গুল রেখে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলছে, ‘হে আহমদ, আমাদের আফসোসের ব্যাপার, তুমি আমাদের হাত থেকে ছুটে গেছ।'
আমি ওর জবাবে বলছি “ لا بعد”।অর্থাৎ আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তোদের হাত থেকে নিরাপদ নই। (কেননা শেষ নিঃশ্বাস বাকি থাকা পর্যন্ত আমি তোদের দুর্বৃত্তপনা হতে উদাস ও অন্যমনস্ক হতে পারি না।)
মূলত শয়তান তাঁকে সে মুহূর্তে উদাসীন ও আনমনা করে আচমকা তাঁর ঈমানের উপর হামলা করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইমাম সাহেব রহমাতুল্লাহি আলাইহি শয়তানি চতুরতা বুঝে ফেলেন এবং যথাযথ জবাব দেন।
সুবহানাল্লাহ! অসংখ্য নেককার লোকজন এ-ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন এবং তাঁরা শয়তানের অপপ্রয়াসের জবাব দিয়েছেন।

মৃত্যুকালে শয়তানের সঙ্গে ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমাতুল্লাহি আলাইহির বাদানুবাদ— প্রসিদ্ধ ঘটনা, তাই তা উল্লেখ করছি না ।
সারকথা, মৃত্যুর সেই সঙ্গিন মুহূর্তে তারাই শয়তানের দুরভিসন্ধির শিকারে পরিণত হয়, যাদের ঈমান দুর্বল ও ত্রুটিযুক্ত।

♣‘‘হে আমাদের পালনকর্তা, সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য লঙ্ঘনে প্রবৃত্ত করো না এবং তোমার নিকট থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান করো।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৮)

♣“যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে, তাদের জন্য সুসংবাদ ইহকালীন জীবনে ও পরকালীন জীবনে।” (সূরা ইউনুস, আয়াত ৬৩-৬৪)

Address

New York, NY

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Quranic Teacher NY posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Quranic Teacher NY:

Videos

Share