হিন্দুধর্ম ও হিন্দুধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ।
আদর্শ ও উদ্দেশ্যঃ ১// কর্মসংস্থান এর ব্যবস্তা করা ২// মন্দির ভিত্তিক সনাতনী সমাজ গঠন ৩// সনাতনী ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলেধরা ৪// অবিভক্ত সনাতনী সমাজ গঠন ৫// সনাতন এর হারানো গৌরব ফিরে পাওয়া ৬// সামাজিক উন্নয়নে অংশগ্রহণ করা ৭// ধর্মীয়-বিজ্ঞান ও প্রগতিশীল শিক্ষার বিস্তার ৮// সমস্ত মন্দির গুলুকে শিক্ষার প্রাণ কেন্দ্র রূপে গড়ে তুলা ৯
// সনাতনী সমাজের ক্ষত গুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলিকে দূরকরার ব্যবস্থা করা ১০// নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা ১১// অহিংসা পরম ধর্ম, আগে চায় পেটে ভাত, সামাজিক প্রতিষ্ঠা, সাথে থাকবে নাম-কিত্তন
(বৈদিক সমাজের ঐতিহ্য কে আমারা সমাজে ফিরিয়ে আনতে চায়। কারণ আমারা মনে করি বৈদিক সমাজ ই আধুনিক তম সমাজ। বেদ পড়ুন বেদ প্রচার করুণ। বেদ ই আমাদের প্রধান ধর্ম গ্রন্থ)
“সনাতন” হিন্দুধর্ম ও হিন্দুধর্মাবলম্বীদের নামে যে পেইজটি খোলা হয়েছে তাতে সবার আংশগ্রহণ কামনা করি। “সনাতন” হল একটা ভাণ্ডার, যেখানে সকল সদস্য তাঁদের ধর্মীয় চিন্তা চেতনাকে তুলেধরবেন এবং তাতে নিজের যুক্তি এবং বুদ্ধি দিয়ে সে চিন্তাকে আরো বিকশিত করবেন সকলেকে। সুতরাং এটাই হল পারস্পরিক চিন্তা চেতনার আদান প্রদান এর স্থান।
“সনাতন” এর মূল নীতি হলঃ
১।- কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করা।
(আমরা বিশ্বাস করি আগে চাই অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা) শুধুমাত্র আর্থিক নিশ্চয়তাই পূরণ করতে পারে এই প্রধান চাহিদাগুলোকে। আমরা মনেকরি কর্মক্ষম মানুষ ই “সনাতন” কে শক্তিশালী করতে পারবে।
২।- মন্দির ভিত্তিক সনাতনী সমাজ গঠনঃ
বিভিন্ন ধর্মে আমরা দেখেছি তাঁদের আচার উৎসব গুলি ধর্মস্থান কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। বৈদিক যুগে ও সনাতন ধর্মের আচার অনুষ্ঠান গুলি মন্দির বা আশ্রম কেন্দিক ছিল। রাজসিক প্রথায় ও জমিদারী প্রথার ক্ষমতা বলে এই রীতি কে ঘর কেন্দ্রিক করা হয়েছিল যা আমাদের কাল হয়ে আমাদের একতাকে নষ্ট করেছে যুগ যুগ ধরে। যেহেতু আমরা মন্দির বিমুখি হয়ে রয়েছি সেহেতু মন্দির গুলি সুবিধাবাদীদের বা অথর্বদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে মন্দিরে সমাজ গঠনের বা ঐক্য প্রতিষ্ঠার বা শিক্ষা বিস্তারের মত কোন সামাজিক কাজ হয়না। এমন কি ঈশ্বরের বন্ধনার যে গুরু দায়িত্ত তাঁদের কাছে অর্পিত আছে তাও তাঁরা পালন করেন না।
** মন্দির ভিত্তিক বৈদিক শিক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষা, বিবাহ অনুষ্ঠান এর ব্যবস্তা করতে গিয়ে আমি নিজ চেষ্টায় অনেক গুলি মন্দিরে গিয়েছি এবং অবাক হয়ে লক্ষ করেছি “মন্দিরের লোকরা বা কমিটি কোন ভাবেই সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করতে চায় না” এখন প্রশ্ন হলো মন্দির যদি সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ না করে তাহলে আমরা যারা সমাজে বাস করি তাঁরা কেন মন্দিরে যাব? শুধু মন্দিরেই কি ঈশ্বর থাকেন? আর বর্তমানে মন্দির গুলির যে অবস্থা তাতে আমার মনে হয় ঈশ্বরের ইচ্ছে থাকলেও তিনি বিরাজ করতে পারবেন না মন্দির গিলিতে কারন এত স্বার্থান্বেষীর কবলে তিনি নিজেগে আবদ্ধ করতে চায়বেন না। (আমি মন্দির কমেটির কাছে প্রস্তাব রেখেছিলাম যে মন্দিরের আয় বারিয়ে মন্দির কে আরো উন্নত করতে চায় আমরা। তাঁদের কাছ থেকে আমি উত্তর পেলাম “আমরা যথেষ্ট ধনবান আমাদের আর চায় না”)
** আমারা যদি মন্দির কেন্দ্রিক হতে পারি তবে আমাদের মধ্যে ঐক্য গরেতুলা টা সহজ হবে। আমরা চায় বিয়ে, মুখেভাত, জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী, পুনরমিলনি, শিক্ষা(বৈদিক শিক্ষা, বিজ্জান শিক্ষা, সাংস্কৃতিক শিক্ষা ) , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ সকল অনুষ্ঠান গুলি আমরা মন্দিরেই করব। এতে যেমন মন্দিরের আয় যেমন বাড়বে তেমনি সামাদের উপার্জিত অর্থ গুলি আমাদের মধ্যেই বন্টিত হবে। মন্দির হবে শিক্ষার প্রাণ কেন্দ্র। মন্দির হবে বিদ্যাদেবীর আলয়।
** সুতরাং আমাদের মন্দিরের কমিটিকে চাপ প্রদান করতে হবে সামাজিক ভাবে। ঘরে ঘরে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। আর এবাবেই আমারা আমাদের লক্ষে পৌছাতে পারব।
৩।- বিধবা প্রথা তুলে দেয়াঃ-
** আমরা মনেকরি এর কোন প্রয়োজনীয়তা নেয় সমাজে (স্বামী মারা গেলে স্বামী
হারা হতেপারে কিন্তু তথা কথিত সাদা কাপড় আর নিরামিষাশী নয়) সমস্ত
শুভ কাজে তাঁদের অংশগ্রহন করার অধিকার থাকবে।
৪।- মেয়েদের পিতার ও স্বামীর সম্পদের অধিকার প্রদান।
** কত ভাগ (কত %) আধিকার দেয়া হবে তা আইনজ্ঞ দারা নির্ধারিত হবে।
** কোন কূলত্যাগি বা কুলভ্রষ্ট (ছেলে বা মেয়ে) এই অধিকার পাবেন না (যেহেতু তিনি জন্মকেই অস্বীকার
করেছেন সেহেতু তিনি সনাতন এর বহির্ভূত হিসাবেই গণ্য হবেন) ।
** যৌতুক কে না বলুন
** যোগ্যতা না থাকলে চিরকুমার থাকুন কিন্তু যৌতুকের জন্যে কাউকে চাপ
প্রদান করবেন না। প্রয়োজনে “সনাতন” ভুক্তভোগিদের পাশে থাকবে।
৫।- বিবাহের নামে ৭ টি অনুষ্ঠান ঃ- (আশীর্বাদ, বস্ত্রালংকার, বিয়ে, বাসিবিয়ে, বৌ-ভাত, জামাই-ভাত, বেয়ায়-ভাত)
** বিয়ে বৈদিক মতে মন্দিরে হতে হবে বা যেখানে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে বা যেখানে প্রতিদিন নারায়ণ পূজা হয় সেখানে।
** সনাতন রীতিতে বিয়েতে ৭ টি অনুষ্ঠান কে আমরা শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করি কিন্তু ঐ ৭ টি অনুষ্ঠানে (আশীর্বাদ, বস্ত্রালংকার, বিয়ে, বাসিবিয়ে, বৌ-ভাত, জামাই-ভাত, বেয়ায়-ভাত) অনেক লোক খাওয়ানোর রীতি করে কন্যা পক্ষকে অন্যায় চাপ প্রদান করা কে আমরা সমর্থন করিনা, উভই পক্ষ মিলে একটি অনুষ্ঠান (লোক খাওয়ানোর রীতি) করে বিবাহ সম্পূর্ণ করাকেই আমরা সমর্থন করি।
** আমারা চাই বিয়ের মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান টা মন্দিরেই হতে হবে লগ্ন যেদিন পরবে সে দিন। এর পর সুবিধা মত সময়ে কনে এবং বর পক্ষ মেলে একটি খাওয়ার অনুষ্ঠান করলে ক্লাব গুলি আমাদের থেকে বারতি অর্থ আদায় করতে পারত না। ১০,০০০ টাকার ক্লাব ১,০০,০০০ টকা নেয় হিন্দু দের বিয়ের লগ্ন পড়লে ক্লাব মালিকরা (যেহেতু একই দিনে অনেক গুলি বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়)। আমরা মনে করি বর্তমান ব্যস্ত নাগরিক জীবনে কারো পক্ষে ৬ টি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না সময়ের অভাবের কারণে বা ব্যস্ততার কারণে। লগ্নের দিন খাদ্যদ্রব্যের ও দাম অন্যদিন অপেক্ষা বেশি থাকে, যেমনঃ মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি। এক কথায় আমরা বর্তমান রিতিকে বলব “ সময় ও অর্থের অপচয়”।
** মন্দির ভিত্তিক বিয়ে না হলে তা যাতে সামাজিক মর্যাদা না পায় তার ব্যবস্তা করতে চায় আমরা।
** সরকারী ভাবে বিবাহকে নথিভুক্ত করতে হবে যা শুধু মাত্র সরকারী সনদের জন্যে কোন অবস্থাতেই ডিভোর্সের জন্যে নয়। আর সরকারীভাবে বিবাহকে নথি ভুক্ত করলেই সনাতনী সমাজে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ শুরু হয়ে যাবে এই ধারণা সঠিক নয় এটা হাস্যকর একটা চিন্তা। আমরা বৈদিক মতে ঈশ্বরকে ও অগ্নি কে সাক্ষী রেখে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে গ্রহণ করি এবং আমাদের বন্ধন এত দুর্বল নয় যে তা নথিভুক্ত করলেই ছিন্ন হবে।
৬।- সমস্ত বৃদ্ধাশ্রম সমাজ থেকে তুলে দেয়াঃ-
(কারণ আমরা চাই পিতা মাতা সন্তানের কাছেই থাকবে। যদি কেও তার পিতা-মাতা কে না-দেখেন, তবে তাঁরা {পিতা-মাতা} আদলতের মাধ্যমে ভরণপোষণের জন্যে যৌক্তিক
অর্থ সন্তান হতে আদাই করে নিতে পারবেন। প্রয়োজনে “সনাতন” এই অধিকার আদায়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।)
৭।- সব সম্প্রদায়ের সাথে একটি সোপান তৈরি করা:-
যেমনঃ রামকৃষ্ণ মিশন এর সাথে ইস্কন, ইস্কন এর সাথে জন্মাষ্টমী, জন্মাষ্টমী এর সাথে কালীমন্দির এভাবে সবার সাথে সবার একটা সুষ্ঠু সমন্বয় যা আমাদেরকে আরো সুষ্ঠু ও শক্তিশালী করেতুলবে। সব সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন, একই উদ্দেশ্য আমাদের ও, আর তা হচ্ছে ঈশ্বরের আরাধনা (হতেপারে তা বিভিন্ন নামে, বিভিন্ন রূপে)। সূতরাং দূরত্ব কেন? চাই সমন্বয়।
৮।- সমাজ থেকে কুপ্রথা দুর করা:-
(সামাজিক আলোচনা দ্বারা কুপ্রথা গুলোকে আমরা চিহ্নিত করব, কারণ শুধু মাত্র একটা বা দুটা উদাহরণ দিয়ে কুপ্রথা কে চিহ্নিত করা যাবেনা )
৯।- আমাদের কৃষ্টি ও কালচার সম্পর্কে সবাইকে জানানো:-
(প্রাচীন সনাতনী ঐতিহ্য কে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা)
১০।- পূজার সময় মাত্রাতিরিক্ত সাউন্ড সিস্টেম এর ব্যাবহার (ডি, জে) কে আমরা সমর্থন করিনা। আমরা মনেকরি এটা সামাজিক অবক্ষয়।
** আনন্দ সবাই উপভোগ করতেচায়, আর তা একটি নিদিষ্ট সময়ের মধেই সুশৃঙ্খল ভাবেই করা সম্ভব।
** নিজ ধর্ম পালনের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে অন্য ধর্মালম্বিদের ধর্ম পালনে কোন প্রকারে বিঘ্ন না ঘটে। আমরা সকল ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধা পোষণ করি। সনাতন ধর্ম মতে সব পথ ই “সনাতন” হতেই তৈরি। সুতরাং সবাই যখন সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করেন তখন সবার কাজে সহযোগিতা করা আমাদের কর্তব্য।
১১।- মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সুতরাং মাদককে না বলুন। সনাতনী
সমাজে মাদকের কোন স্থান নেয়।
১২।- বাংলাদেশ সরকারের সমস্ত আইনএর প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আমরা মনেপ্রাণে
বিশ্বাস করি সরকার আমাদের অধিকারের প্রতি ও শ্রদ্ধাশীল। কেউ যদি সরকার বিরোধী কোন কাজ করেন বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকেন, সেটা তিনি নিজ দায়িত্বে করবেন এর সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেয়। আইন অমান্যকারিদের আমরা ঘৃণা করি। এই দেশ আমাদের সবার, তাই দেশের প্রতি আমাদের সকলেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।
** কোন প্রকার রাজনৈতিক কাজে কেউ “সনাতন” কে ব্যবহার করবেন না। আমরা রাজনীতি মুক্ত একটি সংগঠন গড়েতুলতে চায়। এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করি।
আমরা এখানে একতার কথা বলতে এসেছি, একশাথে পথ চলব বলে শপথ নিয়েছি। আশা করি একের বোঝা কেও পছন্দ করবেন না ...।। আমরা দশের মিলিত শক্তিকেই বেছেনিয়েছি। জয় হোক সনাতন এর।
** সবার উপর মানুষ সত্যি তাহার উপর নাই।
** জীব প্রেম করে যে জন সে জন সেবিছে ঈশ্বর।
** যত মত ততো পথ।
** মেরেছিস কলশির কানা তাই বলে কি প্রেম দিবনা।
“এই উক্তি গুলু মিথ্যা হতে পারেনা” এবং এগুলোই “সনাতন” এর মুল নিতি।।
** নেট এ বাংলা লিখা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার তাই ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন। দয়াকরে সবার মতামত প্রদান করুন।