কোরআনের আলো

কোরআনের আলো লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা ...

11/12/2024

হাদিস ১০: সা’ঈদ ইব্ন ইয়াহইয়া ইব্ন সা’ঈদ আল উমাবী আল কুরাশী (রঃ) ……….. আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ইসলামে কোন কাজটি উত্তম? তিনি বললেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে।

11/12/2024

হাদিস ৯: আদম ইব্ন ইয়াস (রঃ) …….. আবদুল্লাহ ইব্ন ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, প্রকৃত মুসলিম সে-ই, যার জিহ্বা ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাবে এবং প্রকৃত মুহাজির সে-ই, যে আল্লাহ তা’আলার নিষিদ্ধ কাজ ত্যাগ করে। আবূ আবদুল্লাহ (রঃ) বলেন, আবূ মু’আবিয়া (রঃ) বলেছেন, আমার কাছে দাউদ ইব্ন আবূ হিন্দ (রঃ) ‘আমির (রঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন; তিনি বলেছেন যে, আমি আবদুল্লাহ্ ইব্ন ‘আমর (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি এবং আবদুল আ’লা (রঃ) দাউদ (রঃ) থেকে, দাউদ (রঃ) আমির (রঃ) থেকে, আমির (রঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

11/12/2024

হাদিস ৮: আবদুল্লাহ ইব্ন জু’ফী (র) …….. আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেন, ঈমানের শাখা রয়েছে ষাটের কিছু বেশি। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।

07/12/2024

হাদিস ৭: ‘উবায়দুল্লাহ্ ইব্ন মূসা (রা) ……….. ইব্ন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি। ১। আল্লাহ ছাড়া ইলাহ্ নেই এবং নিশ্চয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য দান। ২। সালাত কায়েম করা। ৩। যাকাত দেওয়া। ৪। হজ্জ করা এবং ৫। রমদান এর সিয়াম পালন করা।

07/12/2024

হাদিস ৬: আবুল ইয়ামান হাকাম ইব্ন নাফি’ (রঃ) ……… আবদুল্লাহ্ ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ সুফিয়ান ইব্ন হরব তাকে বলেছেন, বাদশাহ হিরাকল একবার তাঁর কাছে লোক পাঠালেন। তিনি কুরাইশদের কাফেলায় তখন ব্যবসা উপলক্ষে সিরিয়ায় ছিলেন। সে সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আবূ সুফিয়ান ও কুরাইশদের সাথে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্ধিবদ্ধ ছিলেন। আবূ সুফিয়ান তার সঙ্গীদের সহ হিরাকলের কাছে এলেনে এবং তখন হিরাকল জেরুযালেমে অবস্থান করছিলেন। হিরাকল তাদেরকে তাঁর দরবারে ডাকলেন। দোভাষীকে ডাকলেন। তারপর জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এই যে ব্যক্তি নিজেকে নবী বলে দাবী করে—তোমাদের মধ্যে বংশের দিক দিয়ে তাঁর সবচেয়ে নিকটাত্মীয় কে?’ আবূ সুফিয়ান বললেন, ‘আমি বললাম, বংশের দিক দিয়ে আমিই তাঁর নিকটাত্মীয়।’ তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার খুব কাছে নিয়ে এস এবং তাঁর সঙ্গীদেরও কাছে এনে পেছনে বসিয়ে দাও।’ এরপর তাঁর দোভাষীকে বললেন, ‘তাদের বলে দাও, আমি এর কাছে সে ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করবো, সে যদি আমার কাছে মিথ্যা বলে, তবে সাথে সাথে তোমরা তাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রকাশ করবে।’ আবূ সুফিয়ান বলেন, ‘আল্লাহ কসম! তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করবে-এ লজ্জা যদি আমার না থাকত, তবে অবশ্যই আমি তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা বলতাম।’ এরপর তিনি তাঁর সম্পর্কে আমাকে প্রথম প্রশ্ন করেন তা হচ্ছে, ‘তোমাদের মধ্যে তাঁর বংশমর্যাদা কেমন?’ আমি বললাম, ‘তিনি আমাদের মধ্যে অতি সম্ভ্রান্ত বংশের।’ তিনি বললেন, ‘তামাদের মধ্যে এর আগে আর কখনো কি কেউ একথা বলেছে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর বাপ-দাদাদের মধ্যে কি কেউ বাদশাহ ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তারা কি সংখ্যায় বাড়ছে, না কমছে?’ আমি বললাম, ‘তারা বেড়েই চলেছে।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর দীন গ্রহণ করার পর কেউ কি নারায হয়ে তা পরিত্যাগ করে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘নবূয়তের দাবীর আগে তোমরা কি কখনো তাঁকে মিথ্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছ?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তিনি বললেন, ‘তিনি কি চুক্তি ভঙ্গ করেন?’ আমি বললাম, ‘না।’ তবে আমরা তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের চুক্তিতে আবদ্ধ আছি। জানি না, এর মধ্যে তিনি কি করবেন।’ আবূ সুফিয়ান বলেন, এ কথাটুকু ছাড়া নিজের পক্ষ থেকে আর কোন কথা সংযোজনের সুযোগই আমি পাইনি।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা কি তাঁর সাথে কখনো যুদ্ধ করেছ?’ আমি বললাম, ‘হাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর সঙ্গে তোমাদের যুদ্ধ কেমন হয়েছে?’ আমি বললাম, ‘তাঁর ও আমাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল কুয়ার বালতির ন্যায়। কখনো তাঁর পক্ষে যায়, আবার কখনো আমাদের পক্ষে আসে।’ তিনি বললেন, ‘তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন?’ আমি বললাম, ‘তিনি বলেনঃ তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুর শরীক করো না এবং তোমাদের বাপ-দাদার ভ্রান্ত মতবাদ ত্যাগ কর। আর তিনি আমাদের সালাত আদায় করার, সত্য কথা বলার, নিষ্কলুষ থাকার এবং আত্মীয়দের সাথে সদ্ব্যবহার করার আদেশ দেন।’ তারপর তিনি দোভাষীকে বললেন, ‘তুমি তাকে বল, আমি তোমার কাছে তাঁর বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তুমি তার জওয়াবে উল্লখ করেছ যে, তিনি তোমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত বংশের। প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণকে তাঁদের কওমের উচ্ছ বংশেই প্রেরণ করা হয়ে থাকে। তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি, এ কথা তোমাদের মধ্যে ইতিপূর্বে আর কেউ বলেছে কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি যে, আগে যদি কেউ এ কথা বলে থাকত, তবে অবশ্যই আমি বলতে পারতাম, এ এমন ব্যক্তি, যে তাঁর পূর্বসূরীর কথারই অনুসরণ করছে। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কোন বাদশাহ ছিলেন কি না? তুমি তার জবাবে বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি যে, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে যদি কোন বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি যিনি তাঁর বাপ-দাদার বাদশাহী ফিরে পেতে চান। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি- এর আগে কখনো তোমরা তাঁকে মিথ্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছ কি না? তুমি বলেছ, ‘না।’ এতে আমি বুঝলাম, এমনটি হতে পারে না যে, কেউ মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা ত্যাগ করবে অথচ আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলবে। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি, শরীফ লোক তাঁর অনুসরন করে, না সাধারণ লোক? তুমি বলেছ, সাধারণ লোকই তাঁর অনুসরণ করে। আর বাস্তবেও এরাই হন রাসূলগণের অনুসারী। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি, তারা সংখ্যায় বাড়ছে না করছে? তুমি বলেছ বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে ঈমানে পূর্ণতা লাভ করা পর্যন্ত এ রকমই হয়ে থাকে। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি, তাঁরা দীনে দাখিল হওয়ার পর নারায হয়ে কেউ কি তা ত্যাগ করে? তুমি বলেছ, ‘না।’ ঈমানের স্নিগ্ধতা অন্তরের সাথে মিশে গেলে ঈমান এরূপই হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি তিনি চুক্তি ভঙ্গ করেন কি না? তুমি বলেছ, ‘না।’ প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণ এরূপই, চুক্তি ভঙ্গ করেন না। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি তিনি তোমাদের কিসের নির্দেশ দেন। তুমি বলেছ, তিনি তোমাদের এক আল্লাহর ইবাদত করা ও তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরীক না করার নির্দেশ দেন। তিনি তোমাদের নিষেদ করেন মূর্তিপূজা করতে আর তোমাদের আদেশ করেন সালাত আদায় করতে, সত্য কথা বলতে ও কলুষমুক্ত থাকতে। তুমি য বলেছ তা যদি সত্য হয়, তবে শীঘ্রই তিনি আমার এ দু’পায়ের নীচের জায়গার মালিক হবেন। আমি নিশ্চিত জানতাম, তাঁর আবির্ভাব হবে; কিন্তু তিনি যে তোমাদের মধ্যে থেকে হবেন, এ কথা ভাবিনি। যদি জানতাম, আমি তাঁর কাছে পৌঁছাতে পারব, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আমি যে কোন কষ্ট স্বীকার করতাম। আর আমি যদি তাঁর কাছে থাকতাম তবে অবশ্যই তাঁর দু’খানা পা ধুয়ে দিতাম। এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সেই পত্রখানি আনতে বললেন, যা তিনি দিহ্য়াতুল কালবীর মাধ্যমে বসরার শাসকের কাছে পাঠিয়েছিলেন। তিনি তা পাঠ করলেন। তাতে লেখা ছিলঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম (দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে রোম সম্রাট হিরাকল এর প্রতি। –শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, নিরাপদে থাকবেন। আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুরষ্কার দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সব প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে। হে আহলে কিতাব! এস সে কথার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই; যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো ইবাদত না করি, কোন কিছুকেই তাঁর শরীক না করি এবং আমাদের কেউ কাউকে আল্লাহ ব্যতীত রব রূপে গ্রহণ না করি। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলো, ‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম’ (৩:৬৪)। আবূ সুফিয়ান বলেন, ‘হিরাকল যখন তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন এবং পত্র পাঠও শেষ করলেন, তখন সেখানে শোরগোল পড়ে গেল, চীৎকার ও হৈ-হল্লা তুঙ্গে উঠল এবং আমাদের বের করে দেওয়া হল। আমাদের বের করে দিলে আমি আমার সঙ্গীদের বললাম, আবূ কাবশার ছেলের বিষয়তো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, বনূ আসফার (রোম)-এর বাদশাহও তাকে ভয় পাচ্ছে। তখন থেকে আমি বিশ্বাস করতে লাগলাম, তিনি শীঘ্রই জয়ী হবেন। অবশেষে আল্লাহ তা’আলা আমাকে ইসলাম গ্রহণের তওফীক দান করলেন। ইব্ন নাতূর ছিলেন জেরুযালেমের শাসনকর্তা এবং হিরাকলের বন্ধু ও সিরিয়ার খৃষ্টানদের পাদ্রী। তিনি বলেন, ‘হিরাকল যখন জেরুযালেম আসেন, তখন একদিন তাঁকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। তাঁর একজন বিশিষ্ট সহচর বলল, ‘আমরা আপনার চেহারা আজ বিবর্ণ দেখতে পাচ্ছি,’ ইব্ন নাতূর বলেন, হিরাকল ছিলেন জ্যোতিষী, জ্যোতির্বিদ্যায় তাঁর দক্ষতা ছিল। তারা জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাদের বললেন, ‘আজ রাতে আমি তারকারাজির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম, খতনাকারীদের বাদশাহ আবির্ভূত হয়েছেন। বর্তমান যুগে কোন্ জাতি খতনা করে?’ তারা বলল, ‘ইয়াহূদী ছাড়া কেউ খতনা করে না। কিন্তু তাদের ব্যাপার যেন আপনাকে মোটেই চিন্তিত না করে। আপনার রাজ্যের শহরগুলোতে লিখে পাঠান, তারা যেন সেখানকার সকল ইয়াহূদীকে হত্যা করে ফেলে।’ তারা যখন এ ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত ছিল, তখন হিরাকলের কাছে এক ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হলো, যাকে গাস্আনের শাসনকর্তা পাঠিয়েছিল। সে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সম্পর্কে খবর দিচ্ছিল। হিরাকল তার কাছ থেকে খবর জেনে নিয়ে বললেন, ‘তোমরা একে নিয়ে গিয়ে দেখ, তার খতনা হয়েছে কি-না।’ তারা তাকে নিয়ে দেখে এসে সংবাদ দিল, তার খতনা হয়েছে। হিরাকল তাকে আরবদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। সে জওয়াব দিল, ‘তারা খতনা করে।’ তারপর হিরাকল তাদের বললেন, ‘ইনি (রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ) এ উম্মতের বাদশাহ। তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।’ এরপর হিরাকল রোমে তাঁর বন্ধুর কাছে লিখলেন। তিনি জ্ঞানে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন। পরে হিরাকল হিমস চলে গেলেন। হিমসে থাকতেই তাঁর কাছে তাঁর বন্ধুর চিঠি এলো, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আবির্ভাব এবং তিনিই যে প্রকৃত নবী, এ ব্যাপারে হিরাকলের মতকে সমর্থন করছিল। তাপর হিরাকল তাঁর হিমসের প্রাসাদে রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকলেন এবং প্রাসাদের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দলেন। দরজা বন্ধ করা হলো। তারপর তিনি সামনে এসে বললেন, ‘হে রোমবাসী! তোমরা কি কল্যাণ, হিদায়ত এবং তোমাদের রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব চাও? তাহলে এই নবীর রায়’আত গ্রহণ কর।’ এ কথা শুনে তারা জংলী গাধার মত ঊর্ধ্বশ্বাসে দরজার দিকে ছুটল, কিন্তু তারা তা বন্ধ অবস্থায় পেল। হিরাকল যখন তাদের অনীহা লক্ষ্য করলেন এবং তাদের ঈমান থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন, তখন বললেন, ‘ওদের আমার কাছে ফিরিয়ে আন।’ তিনি বললেন, ‘আমি একটু আগে যে কথা বলেছি, তা দিয়ে তোমরা তোমাদের দীনের উপর কতটুকু অটল, কেবল তার পরীক্ষা করেছিলাম। এখন আমি তা দেখে নিলাম।’ একথা শুনে তারা তাঁকে সিজদা করল এবং তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হলো। এই ছিল হিরাকল এর শেষ অবস্থা। আবূ আবদুল্লাহ্ [বুখারী (রঃ)] বলেন, সালেহ ইব্ন কায়সান (রঃ), ইউনুস (রঃ) ও মা’মার (রঃ) এ হাদীস যুহরী (রঃ) থেকে রিওয়ায়ত করেছেন।

07/12/2024

হাদিস ৫: আবদান (রঃ) ……… ও বিশর ইব্ন মুহাম্মদ (রঃ) …….. ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। রমযানে তিনি আরো বেশী দানশীল হতেন, যখন জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমযানের প্রতি রাতেই জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁরা পরস্পর কুরআন তেলওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রহমতের বাতাস থেকেও অধিক দানশীল ছিলেন।

07/12/2024

হাদিস ৪: মূসা ইব্ন ইসমাঈল (রঃ) ………… ইব্ন ‘আব্বাস (রঃ) থেকে বর্ণিত, মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘তাড়াতাড়ি ওহী আয়ত্ত করার জন্য আপনার জিহ্বা তার সাথে নাড়বেন না’ (৭৫:১৬) এর ব্যখ্যায় তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওহী নাযিলের সময় তা আয়ত্ত করতে বেশ কষ্ট স্বীকার করতেন এবং প্রায়ই তিনি তাঁর উভয় ঠোঁট নাড়তেন। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেন, ‘আমি তোমাকে দেখানোর জন্য ঠোঁট দুটি নাড়ছি যেভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নাড়তেন।’ সা’ঈদ (র) (তাঁর শাগরিদদের) বললেন, ‘আমি ইব্ন ’আব্বাস (রাঃ)-কে যেভাবে তাঁর ঠোঁট দুটি নাড়তে দেখেছি, সেভাবেই আমার ঠোঁট দুটি নড়াচ্ছি।’ এই বলে তিনি তাঁর ঠোঁট দুটি নাড়ালেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেনঃ “তাড়াতাড়ি ওহী আয়ত্ত করার জন্য আপনি আপনার জিহবা তার সাথে নাড়বেন না। এর সংরক্ষণ ও পাঠ করানোর দায়িত্ব আমারই।” (৭৫:১৬-১৮) ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন অর্থাৎ মনোযোগ সহকারে শুনুন এবং চুপ থাকুন। এরপর এর বিশদ ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই (৭৫:১৯)।’ অর্থাৎ আপনি তা পাঠ করবেন এটাও আমার দায়িত্ব। তারপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে জিবরাঈল (আঃ) আসতেন, তখন তিনি মনোযোগ সহকারে কেবল শুনতেন। জিবরাঈল (আঃ) চলে গেলে তিনি যেমন পড়েছিলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ঠিক তেমনি পড়তেন।

01/12/2024
29/11/2024

জুম্মার নামাজের দিন হল গরিবের হজ্জ এর দিন আল্লাহ সবাইকে জুম্মার নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন

28/11/2024
28/11/2024
28/11/2024
28/11/2024
26/11/2024

হাদিস ৩: ইয়াহইয়া ইব্ন বুকায়র (রঃ) ……… ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি সর্বপ্রথম যে ওহী আসে, তা ছিল ঘুমের মধ্যে সত্য স্বপ্নরূপে। যে স্বপ্নই তিনি দেখতেন তা একেবারে ভোরের আলোর ন্যায় প্রকাশ পেত। তারপর তাঁর কাছে নির্জনতা প্রিয় হয়ে পড়ে এবং তিনি ‘হেরা’ গুহায় নির্জনে থাকতেন। আপন পরিবারের কাছে ফিরে আসা এবং কিছু খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যাওয়া—- এইভাবে সেখানে তিনি একাধারে বেশ কয়েক রাত ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। তারপর খাদীজা (রাঃ)-র কাছে ফিরে এসে আবার অনুরূপ সময়ের জন্য কিছু খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যেতেন। এমনিভাবে ‘হেরা’ গুহায় অবস্থানকালে একদিন তাঁর কাছে ওহী এলো। তাঁর কাছে ফিরিশতা এসে বললেন, ‘পড়ুন’। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ “আমি বললাম, ‘আমি পড়িনা।’ তিনি বলেনঃ তারপর তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে এমন ভাবে চাপ দিলেন যে, আমার অত্যন্ত কষ্ট হলো। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, ‘পড়ুন’। আমি বললামঃ আমিতো পড়ি না।’ তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে জড়িয়ে ধরে এমন ভাবে চাপ দিলেন যে, আমার অত্যন্ত কষ্ট হলো। এরপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেনঃ ‘পড়ুন’। আমি জবাব দিলাম, ‘আমিতো পড়িন।’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তারপর তৃতীয়বার তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে চাপ দিলেন। এরপর ছেড়ে দিয়ে বললেন, “পড়ুন আপনার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক থেকে। পড়ুন আর আপনার রব মহামহিমান্বিত।” (৯৬: ১-৩) তারপর এ আয়াত নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফিরে এলেন। তাঁর অন্তর তখন কাঁপছিল। তিনি খাদীজা বিন্ত খুওয়ালিদের কাছে এসে বললেন, ‘আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও, আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও।’ তাঁরা তাঁকে চাদর দিয়ে ঢেকে দিলেন। অবশেষে তাঁর ভয় দূর হলো। তখন তিনি খাদীজা (রাঃ) এর কাছে সকল ঘটনা জানিয়ে তাঁকে বললেন, আমি নিজের উপর আশংকা বোধ করছি। খাদীজা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, কখনো না। আল্লাহ আপনাকে কখনো অপমানিত করবেন না। আপনিতো আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করেন, অসহায় দুর্বলের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সাহায্য করেন, মেহমানের মেহমানদারী করেন এবং দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে খাদীজা (রাঃ) তাঁর চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইব্ন নাওফিল ইব্ন ‘আবদুল আসাদ ইব্ন ‘আবদুল ‘উযযার কাছে গেলেন, যিনি জাহিলী যুগে ‘ঈসায় ’ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইবরানী ভাষা লিখতে জানতেন এবং আল্লাহ তওফীক অনুযায়ী ইবরানী ভাষায় ইনজীল থেকে অনুবাদ করতেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত বয়োবৃদ্ধ এবং অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। খাদীজা (রাঃ) তাঁকে বললেন, ‘হে চাচাতো ভাই! আপনার ভাতিজার কথা শুনুন।’ ওয়ারাকা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাতিজা! তুমি কী দেখ?’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যা দেখেছিলেন, সবই খুলে বললেন। তখন ওয়ারাকা তাঁকে বললেন, ‘ইনি সে দূত যাঁকে আল্লাহ মূসা (আঃ) এর কাছে পাঠিয়েছিলেন। আফসোস! আমি যদি সেদিন যুবক থাকতাম। আফসোস! আমি যদি সেদিন জীবিত থাকতাম, যেদিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে।’ তিনি বললেন, ‘হাঁ, অতীতে যিনিই তোমার মত কিছু নিয়ে এসেছেন তাঁর সঙ্গেই শত্রুতা করা হয়েছে। সেদিন যদি আমি থাকি, তবে তোমাকে প্রবলভাবে সাহায্য করব।’ এর কিছুদিন পর ওয়ারাকা (রাঃ) ইন্তিকাল করেন। আর ওহী স্থগিত থাকে। ইব্ন শিহাব (রাঃ) ………. জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ আনসারী (রাঃ) ওহী স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ একদা আমি হেঁটে চলেছি, হঠাৎ আকাশ থেকে একটি আওয়ায শুনতে পেয়ে চোখ তুলে তাকালাম। দেখলাম, সেই ফিরিশতা, যিনি হেরায় আমার কাছে এসেছিলেন, আসমান ও যমীনের মাঝখানে একটি কুরসীতে বসে আছেন। এতে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তৎক্ষণাৎ আমি ফিরে এসে বললাম, ‘আমাকে বস্ত্রাবৃত কর।’ তারপর আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন, “হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠুন, সতর্কবাণী প্রচার করুন এবং আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। আপনার পোশাক পবিত্র রাখুন। অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন।” (৭৪: ১-৪) এরপর ব্যপকভাবে পর পর ওহী নাযিল হতে লাগল। আবদুল্লাহ্ ইব্ন ইউসুফ (র) ও আবূ সালেহ্ (র) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হেলাল ইব্ন রাদ্দাদ (র) যুহরী (র) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইউনুস ও মা’মার ….. স্থলে …… শব্দ উল্লেখ করেছেন।

Address

Riyadh

Telephone

+966502095084

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কোরআনের আলো posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to কোরআনের আলো:

Videos

Share