Daily Madina

Daily Madina A complete guide for those who are living in Saudi Arabia/Bangladesh or planning to come soon.

ইউনেস্কো ২০১৫ সালে এই পরিত্যক্ত দ্বীপটিকে বিশ্বের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষনা দেয়। বর্তমানে ...
09/01/2024

ইউনেস্কো ২০১৫ সালে এই পরিত্যক্ত দ্বীপটিকে বিশ্বের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষনা দেয়। বর্তমানে পর্যটকরা সেখানে ঘুরতে যান। জাপানের এই দ্বীপটি একই সঙ্গে জাপানের অর্থনৈতিক অগ্রহতির সহায়ক এর পাশাপাশি অনেক শ্রমিকের নির্মম মৃত্যুর জন্য সর্বত্রই স্মরণীয়।

অনেক আগেই সবাই এই দ্বীপটি পরিত্যাগ করলেও মিৎসুবিসি কোম্পানিটি এখনো এই দ্বীপের মালিকানা রাখে। ভাঙ্গা দেয়ালগুলোকে পুনঃনির্মাণ করে এখানে পর্যটকদের আসার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। দ্বীপটির প্রাচীন ঘরবাড়িগুলো ও সমুদ্রের সৌন্দর্য পর্যটকদের আগ্রহের স্থান। তাছাড়াও এই দ্বীপটির স্থাপনা সবগুলোই প্রাচীন রোমান স্থাপনার আদলে নির্মিত হওয়ায় বাইরের পর্যটকদের কাছেও অনেক জনপ্রিয়। ২০১১ সালের একটি গবেষণার পর জানা গেছে, হাসিমা দ্বীপটির ক্ষয় হওয়া স্থাপনাগুলো টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

# ঐতিহাসিক হাসিমা দ্বীপঃ

কোনো এক কালে প্রায় ছয় হাজার মানুষের বসতি ছিলো জাপানের বিখ্যাত এই পরিত্যক্ত দ্বীপটিতে। দ্বীপটিতে ১৫ টি এপার্টমেন্ট আর প্রায় ১০০টি ছোট দোকান ছিলো। দ্বীপের উপর থেকে দেখলে এখনো মনে হবে নিশ্চয় এখানে মানুষের বসবাস আছে। কিন্তু বাইরে থেকে যা দেখতে পাওয়া যায় আসলে তা না। সেখানে কোনো মানুষের বসবাস নেই। নাগাসাকি থেকে মাত্র নয় মাইল দূরে অবস্থিত দ্বীপটি একসময় কয়লা উত্তোলনের জন্য বিখ্যাত ছিলো যা জাপানের শিল্পায়নের সঙ্গে যুতসই ছিলো।

হাসিমা দ্বীপটি গুনকানজিমা নামেও বেশ পরিচিত। গুনকানজিমা অর্থ হচ্ছে যুদ্ধজাহাজ দ্বীপ। কারণ বাইরে থেকে এই দ্বীপটি দেখতে ঠিক একটা যুদ্ধজাহাজের মতোই। দ্বীপটিতে ১৮৮৭ সাল থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। জাপানের মিৎসুবিসি ১৮৯০ সালে দ্বীপটি ক্রয় করে নেয় এবং সমুদ্রের নিচের খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করে। প্রায় ১৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করে জাপানের এই কোম্পানিটি। তখন এই হাসিমা দ্বীপের উত্যোলিত কয়লা জাপানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখে। পরবর্তী ৫৫ বছরে এখানে থাকা উত্তোলক ও তাদের পরিবারের সুবিধার্থে অনেক এপার্টমেন্ট, স্কুল, হাসপাতাল, টাউন হল ও একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মিত হয়। তাছাড়াও বিনোদনের জন্য একটি ক্লাব হাউস ও সিনেমা হল পর্যন্ত নির্মিত হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চাইনিজ বন্দীদের এখানে অনেক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হয়। তাদের জোরপূর্বক দ্বীপটিতে রেখে শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো হতো। সেই শ্রমিকরা অনেক দুর্যোগপ্রবণ অবস্থায় খনিতে কাজ করতো। তাছাড়াও তারা নিজেদের ন্যায্য অধিকার না পাওয়ার কারণে অপুষ্টিজনিত অনেকেই মারা যায়। তাছাড়াও অনেকে সুমুদ্রের নিচ থেকে কয়লা উত্তোলনের সময় দূর্ঘটনায় পানির নিচেও মারা যায়। তখন সেখানে শ্রমিকদের উপযোগী তেমন কিছুই ছিলো না। উলটো তাদের ছিলো দুর্ভোগ। সেখানে প্রায় এক হাজার শ্রমিক মারা যায়। অনেকের মতে এই সংখ্যা আরো বেশি (প্রায় ১৩০০ শ্রমিক)। ১৯৬০ সালের দিকে পেট্রোল জ্বালানী হিসেবে কয়লার স্থান দখল করলে এই জায়গাটি আগের মতো গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। তাই কোম্পানিও এখানের শ্রমিকদের রেহাই দেয়। তখন সবাই দ্বীপটি ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমায়।

"""""***"" শেষ কথাঃ
১৮০০ সালের শুরুর দিকে এই দ্বীপের কাছে প্রায় ১৬ একর জায়গায় কয়লার খনি আবিষ্কৃত হয়। সেই সময় পশ্চিমা বিশ্বের সমৃদ্ধ ও দ্রুতগতির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে তাল মেলানোর জন্য জাপান কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তাছাড়াও কয়লাই ছিলো তখনকার প্রধান জ্বালানী। তাই এই দ্বীপটি ছিলো জাপানের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদস্বরুপ। ১৮৯০ সালে মিৎসুবিসি এই দ্বীপ ক্রয় করার পর অনেক স্থাপনা তৈরি হতে থাকে। তখন এই হিসিমা দ্বীপই ছিলো জাপানের অন্যতম প্রধান সমুদ্রের নিচে থাকা কয়লা খনি। ১৯১৬ সালে প্রথম এখানে ৮তলা এপার্টমেন্ট তৈরি করা হয়। এর প্রধান লক্ষ্য ছিলো দ্বীপটির শ্রমিকদের টাইফুন ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো। ১৯৫৯ সালের দিকে এই দ্বীপের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ প্রায় ছয় হাজারে উন্নীত হয়। ঠিক তার পরেই ১৯৬০ সালে পেট্রোল জ্বালানী হিসেবে কয়লা স্থান দখল করে। ১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে মিৎসুবিসি কোম্পানিটি চিরতরে এই জায়গা থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে দ্বীপটি চিরতরে ত্যাগ করে। মাত্র তিন মাসের মধ্যেই পুরো দ্বীপটি জনমানবশূন্য হয়ে যায়। *********

পতন হলো সভ্যতার২ জানুয়ারী, ১৪৯১৷ সকালের সূর্য তখনো উদিত হয়নি৷ আল হামরা প্রাসাদে আজ অন্যদিনের মতন ব্যাস্ততা নেই৷ গাম্ভীর্...
03/01/2024

পতন হলো সভ্যতার

২ জানুয়ারী, ১৪৯১৷ সকালের সূর্য তখনো উদিত হয়নি৷ আল হামরা প্রাসাদে আজ অন্যদিনের মতন ব্যাস্ততা নেই৷ গাম্ভীর্য যেন গ্রাস করেছে পুরো প্রাসাদ এবং সেখানকার মানুষদের৷ কারন তাদের স্বাদের প্রাসাদে তাদেরই যে আজ শেষদিন৷....

আস্তে আস্তে সুলতান আবু আবদুল্লাহ তার পরিবার পরিজন ও নিকটাত্মীয়দের নিয়ে গ্রানাডার জনমানবহীন অঞ্চল দিক দিয়ে শহর ত্যাগ করলেন৷

উদ্দেশ্য তাদের এই লজ্জাকর পরিনতি যেন মানুষ না দেখে৷ সুলতান তার এই কাফেলা নিয়ে গ্রানাডা থেকে বেরিয়ে ভেগা প্রান্তরের সেনিল নদী অতিক্রম করে আল পুজারিশ পাহাড় পাড়ি দিয়ে এক গ্রামে এসে দাড়ালেন৷

ওদিকে বিজয়ী খ্রিষ্টান সম্রাট ফার্ডিনান্ড ও রানী ইসাবেলা তাদের বাহিনী নিয়ে সেনিল নদীর পাড়ে শহীদ পাহাড়ের কাছে এক ক্ষুদ্র মসজিদের সামনে দাড়ালেন৷

সুলতান আবু আবদুল্লাহ তার কয়েকজন সঙ্গীসহ খ্রিষ্টান রাজ-দম্পতির নিকট উপস্থিত হলেন৷ বশ্যতার চিহ্নস্বরুপ তিনি নিজের ঘোড়া থেকে নামতে চাইলে সম্রাট তাকে ইশারায় নামতে নিষেধ করেন৷ অতঃপর তিনি অধীনতা জ্ঞাপনের জন্য সম্রাটের হস্ত চুম্বনে অগ্রসর হলে সম্রাট তাকে তখনো নিষেধ করেন৷ অতঃপর তিনি সম্মান প্রদর্শনের জন্য নত হয়ে ফার্ডিনান্ডের ডান হাতকে সালাম করলেন৷ অতঃপর গ্রানাডার স্বর্নালী চাবি ফার্ডিনান্ডের হাতে তুলে দিতে দিতে বললেন:

আবু আবদুল্লাহ: " এই চাবি স্পেনের মুসলিম শাসনের শেষ নিদর্শন৷ মহামান্য, আজ আমাদের রাজ্য, আমাদের সম্পদ এমনকি আমাদের প্রাণ পর্যন্ত আপনার করায়ত্ব৷

আপনি অঙ্গীকার করেছেন আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবেন৷ আমি আপনার কাছ থেকে সে দয়াই প্রত্যাশা করি৷"

অতঃপর তিনি ফার্ডিনান্ডের সামনে থেকে নিজের কাফেলা সহ সরে গিয়ে বিজয়ী বাহিনীর সেনাপতিদের পথ করে দেন দূর্গে প্রবেশের জন্য৷ পতাকাবাহী দলের সেনাপতির দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন,

আবু আবদুল্লাহ: " সেনাপতি! যান, দূর্গ হস্তাগত করুন৷ এ বৈভব আল্লাহ আপনার শক্তিশালী প্রভুকে অর্পন করেছেন মুরদের পাপের শাস্তির জন্য৷"

অতঃপর তিনি নিজের ঘোড়ার মুখ ঘুরিয়ে চলতে শুরু করলেন৷ তার যাত্রাপথের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন ফার্ডিনান্ড ও তার সভাষদেরা৷ কারন আজ তারা এক সভ্যতার পতন প্রত্যক্ষ করলো৷

স্প্যানিশ বাহিনী দূর্গে প্রবেশ করলো৷ দূর্গে প্রবেশ করেই তারা আল হামরার দূর্গশীর্ষ থেকে মুসলিম শাসনের অর্ধচন্দ্র পতাকাকে ভূলুন্ঠিত করলো৷ যা গত আটশো বছর ধরে উড্ডীন ছিল গ্রানাডার আকাশে৷ তদস্থলে সকালের সোনালী সূর্য কিরণে রৌপ্য নির্মিত প্রকাণ্ড ক্রস ঝলমল করে উঠলো৷ ক্রসটি স্থাপন করলেন একজন বিশপ৷

অতঃপর ফৌজের প্রধান পতাকাবাহী রাজকীয় পতাকা স্থাপন করলেন দূর্গপ্রাচীরে৷ সমাপ্তি ঘটলো শত বৎসরের রাজনৈতিক আধিপত্যের৷ সমাপ্তি ঘটলো এক স্বর্নোজ্জ্বল অধ্যায়ের৷

গ্রানাডা থেকে দুই মাইল দূরে একটি পাহাড়ে দাড়িয়ে দৃশ্যটি প্রত্যক্ষ করছিলেন আবু আবদুল্লাহ৷ তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠলো৷ তিনি তখন শিশুর মতন অঝোর ধারায় অশ্রু বর্ষন করতে করতে বললেন,

আবু আবদুল্লাহ: " আল্লাহু আকবার! আমার মতন দূর্ভাগ্য কার?"

তখন পিছন থেকে তার মা আয়েশাতুল হুররা এগিয়ে আসলেন সামনে৷ তার দিকে তীব্র শ্লেষপূর্ন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে এই মহিলা বলে উঠলেন:

শাহমাতা আয়েশা: " পুরুষের মতন যে রাজ্য তুমি রক্ষা করতে পারোনি তার জন্য নারীর মতন অশ্রু বিসর্জন দেয়া তোমারই শোভা পায়৷"

আবু আবদুল্লাহ তাকিয়ে রইলেন তার মায়ের দিকে৷ সে দৃষ্টিতে ছিল অসহায়ত্ব, সেই দৃষ্টিতে ছিল বেদনা৷

আজো আর্তনাদ করে গ্রানাডা৷ অপেক্ষা করছে আরো একজন তারিক বিন জিয়াদ, মুসা বিন নুসায়ের কিংবা ইউসুফ বিন তাশফিনের৷ কিন্তু আর কেউ কি আসবে? কেউ কি আবারো গ্রানাডার দূর্গশীর্ষ থেকে ক্রস নামিয়ে তদস্থলে হিলালের পতাকা উড্ডীন করতে পারবে? জাতির কাছে প্রশ্ন রইলো৷

(সংগ্রহীত)

মক্কা ও মাদীনাহ সংবলিত হেজাজ উপত্যকা হচ্ছে আল্লাহর প্রিয়তম রাসূল (সাঃ) এঁর পবিত্র মাতৃভূমি। পবিত্র এ হেজাজ উপত্যকার খেদম...
02/01/2024

মক্কা ও মাদীনাহ সংবলিত হেজাজ উপত্যকা হচ্ছে আল্লাহর প্রিয়তম রাসূল (সাঃ) এঁর পবিত্র মাতৃভূমি।

পবিত্র এ হেজাজ উপত্যকার খেদমতের দায়িত্ব ছিলো উসমানীয়া খেলাফতের হাতে। ১৯২৪ সালের পূর্ব একটি দীর্ঘ সময় পযন্ত উসমানীয় খেলাফতের বিরুদ্ধে বারংবার আক্রমণ ও হেজাজ দখলের চেষ্টা করা হয়, অতঃপর আরব বিদ্রোহ, এবং পরবর্তী সময়ে নজদ উপত্যকার শাসক সাউদী রাজবংশ কর্তৃক ১৯২৪ সালে হেজাজ দখলের পর মক্কা ও মাদীনাহ তায়্যিবাহ ও স্থানীয় এলাকাগুলোতে অনেক কিছু পরিবর্তন করা হয়।

আল্লাহর প্রিয়তম রাসূল (সাঃ) এঁর দানকৃত মুবারাক "জাজিরাতুল আরব" নাম পরিবর্তন করে, নাম রাখা হয় 'সাউদী আরব'!

ক্ষমতার উক্ত রদবদল শুধুমাত্র আরব বিশ্বের মানচিত্রেই নয়, সময়ের সাথে পরিবর্তন নিয়ে আসে পবিত্র হেজাজের অভ্যন্তরীণ চিন্তাধারা, শিক্ষাব্যবস্থা, সংস্ক্রিতি(Culture) সহ বিবিধ পর্যায়ে। যদিও সকলে নয়, কিন্তু মুসলিমদের অনেকে সময়ের ব্যবধানে এ নব্য আগত চিন্তাধারার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়ে।

#ইসলামিক #ইসলামি #ইসলামেরআলো

নাটক-মুভির একটা হিউজ ইমপেক্ট আছে তরুণ তরুণীদের উপর। অজ্ঞতা বশত বায়াসড থাকা এবং অবচেতন মন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা মানুষের ...
16/12/2023

নাটক-মুভির একটা হিউজ ইমপেক্ট আছে তরুণ তরুণীদের উপর।

অজ্ঞতা বশত বায়াসড থাকা এবং অবচেতন মন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা মানুষের সংখ্যা পুরো পৃথিবীতেই বেশি। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় কিছু দেশে আরো বেশি।

উপন্যাস, নাটক, মুভিতে দাঁড়ি-পাগড়ি ও টুপিওয়ালাদেরকে ভিলেন দেখানোটা (খুবই হিংস্র চেহারা, অজ্ঞ, অনাধুনিক, অমানবিক) খুবই সূক্ষ্মভাবে ডি-ইসলামাইজেশন এবং ইসলাম ফোবিয়া বয়ান তৈরিতে বেশ সহায়ক।

এভাবেই চলছে, আগামীতেও চলবে। যারা আত্মার জাহেলিয়াত থেকে মুক্ত হতে পারবে না, প্রজ্ঞার আলো লাভে উৎসাহিত হবে না। তারা নানানভাবে সত্য থেকে ডিরেইলড হতেই থাকবে।

-- Cameron de Costa

আল্লাহ সত্য বলেছেন, বুরকিবা মিথ্যা বলেছে! ১৯৬১ সাল। তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট হাবিব বুরকিবা ঘোষণা দিলেন, কর্মক্ষম কোনো ব্যক...
09/12/2023

আল্লাহ সত্য বলেছেন, বুরকিবা মিথ্যা বলেছে!

১৯৬১ সাল। তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট হাবিব বুরকিবা ঘোষণা দিলেন, কর্মক্ষম কোনো ব্যক্তি রমযান মাসে রোযা রাখতে পারবে না। রোযা রাখার কারণে মানুষের শক্তি কমে যায়, ফলে দেশের উৎপাদনশীলতাও কমে যায়; দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়, জাতি পিছিয়ে পড়ে। জাতিকে এগিয়ে নেওয়া যেহেতু জাতীয় দায়িত্ব আর রোযা রাখা ব্যক্তিগত দায়িত্ব, তাই রমযানে কোনো কর্মক্ষম ব্যক্তি রোযা রাখতে পারবে না। অবসর গ্রহণের পর বা ছুটির সময় রমযানের রোযা কাযা করে নেবে।

এতটুকুতেই ক্ষান্ত না থেকে সে-বছরের রমযান মাসেই দিনের বেলা সে নিজে জনসম্মুখে জুস খেয়ে রোযা ভেঙে ফেলে এবং মানুষকে রোযা ভাঙতে আদেশ করে। তখন তিউনিসিয়ার গ্র্যান্ড মুফতী ছিলেন শায়খ মুহাম্মাদ তাহের ইবনে আশুর রহ.। প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে শায়খকে জাতীয় রেডিওতে রোযা ভাঙার ব্যাপারে ফতওয়া দিতে আদেশ করা হয়। কথামতো শায়খ ইবনে আশুর রহ. রেডিওতে ভাষণ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন।

ভাষণের শুরুতেই তিনি সূরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করেন।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
'হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমনভাবে ফরয করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।' [সূরা বাকারা, ২:১৮৩]

সবাইকে চমকে দিয়ে শায়খ ঐতিহাসিক এক বক্তব্য দেন। আয়াত তিলাওয়াত করে শায়খ তিন বার তার ঐতিহাসিক কথাটি বলেন,
صدق الله وكذب بورقيبة
আল্লাহ সত্য বলেছেন, বুরকিবা মিথ্যা বলেছে।

এ ঘটনার পর শায়খকে গ্র্যান্ড মুফতির পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং যাইতুনিয়্যাহ ইউনিভার্সিটির শরীয়া অনুষদের ডিনের পদ থেকেও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

ছবি: বাওয়াবাতু তুনুস

যাঁরা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তাঁদের প্রত্যেকেরই  রয়েছে Gmail। একাধিক কাজের জন্য Gmail এখন প্রায় সকলেই ব্যবহার করেন। কিন...
25/11/2023

যাঁরা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তাঁদের প্রত্যেকেরই রয়েছে Gmail। একাধিক কাজের জন্য Gmail এখন প্রায় সকলেই ব্যবহার করেন। কিন্তু এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁদের Gmail অ্যাকাউন্ট থাকলেও সেভাবে ব্যবহার করা হয়না। তাদের জন্য বড়সড় বিপদ। কারণ ১ ডিসেম্বর থেকে লাখ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেবে Gmail।

Google এর তরফে জানানো হয়েছে, যে সব অ্যাকাউন্ট বিগত ২ বছর ধরে ব্যবহার করা হয়নি সেই সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে অন্তত একবার করে Gmail ব্যবহার করলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

Gmail বন্ধ হওয়া থেকে বাঁচতে কী কী করণীয়?

# ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অন্তত একবার Gmail অ্যাকাউন্ট ওপেন করুন।
# কিছু আনরিড মেইল থাকলে সেগুলি পড়ুন।
# গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন।
# Youtube এর ভিডিও দেখুন এবং শেয়ার করুন।
# প্লে স্টোর থেকে অ্যপ ডাউনলোড কতে পারেন

এই কাজগুলি করলে Gmail অ্যাকাউন্ট বন্ধ হবে না।

25/11/2023

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যা প্রাপ্তবয়স্ক সকলের জানা প্রয়োজন।

শ্বশুর মারা যাবার পর স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করাতে কোন বিধিনিষেধ আছে কি? কিছু লোক আমার স্ত্রীকে বলেছে যে, চল্লিশ দিন পর্যন্ত এ থেকে বিরত থাকতে হবে। আমার নির্ভরযোগ্য তথ্য জানা দরকার।

# উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

সর্বোচ্চ তিনদিন পর্যন্ত বিরত থাকতে পারে। শোক পালন হিসেবে। কিন্তু এটাও জরুরী নয়। কিন্তু এর চেয়ে বেশি দিন স্বামী ছাড়া অন্য কোন আত্মীয়ের জন্য শোক পালন করার অনুমতি নেই।

তাই পিতা মারা গেলে চল্লিশ দিন পর্যন্ত স্ত্রী সহবাস করা যাবে না মর্মে যে কথাটি শুনেছেন তা সম্পূর্ণই গলদ ও ভুল। শরীয়তে এর কোন ভিত্তি নেই।

عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَتْ: لَمَّا أَتَى أُمَّ حَبِيبَةَ نَعِيُّ أَبِي سُفْيَانَ، دَعَتْ فِي الْيَوْمِ الثَّالِثِ بِصُفْرَةٍ، فَمَسَحَتْ بِهِ ذِرَاعَيْهَا، وَعَارِضَيْهَا، وَقَالَتْ: كُنْتُ عَنْ هَذَا غَنِيَّةً، سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، أَنْ تُحِدَّ فَوْقَ ثَلَاثٍ، إِلَّا عَلَى زَوْجٍ، فَإِنَّهَا تُحِدُّ عَلَيْهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا»

যায়নাব (রাঃ) বলেছেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী উম্মু হাবীবা (রাঃ) এর পিতা আবূ সুফিয়ান ইন্তেকাল করেন তখন আমি তাঁর কাছে গেলাম। আমি দেখতে পেলাম যে, উম্মু হাবীবা (রাঃ) হলদে বর্ণের মিশ্রিত সুগন্ধি আনালেন অথবা অন্য কোন প্রসাধনী চেয়ে পাঠালেন। এরপর তা থেকে একটি বালিকাকে নিজ হাতে লাগিয়ে দিলেন। এরপর তিনি তার দুই কপালে হাত মুছে নিলেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমার সুগন্ধি ব্যবহারের কোন প্রয়োজন ছিলনা। তবে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি যে, যে মহিলা আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে, সে মহিলার জন্য তার কোন আত্নীয়ের মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হালাল নয়। তবে বিধবা স্ত্রী তার স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশদিন শোক পালন করবে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪৮৬]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا المَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ»

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফেরেশ্তাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত লা‘নত দিতে থাকে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩২৩৭]

25/11/2023

আল্লামা (আরবি, উর্দু ও ফার্সি: علامه) হল ইসলামি চিন্তা, আইন ও দর্শনের ক্ষেত্রে উচু পর্যায়ের পণ্ডিতদের নামের সাথে ব্যবহৃত সম্মানজনক উপাধি। সুন্নি ও শিয়া উভয় পক্ষে এই উপাধি ব্যবহার হয়। আল্লামা উপাধিধারী অন্যান্য ধর্মবেত্তাদের উপরে অবস্থান করেন, যেমন আয়াতুল্লাহ ও হুজ্জাতুল ইসলাম (শিয়া উদাহরণ)। পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা মুহাম্মদ ইকবালকে আল্লামা ইকবাল বলে সম্বোধন করা হয়।

শাইখ খাদ্বরি (রহ.) লিখেছেন, ‘ওই আলেমকে আল্লামা বলা হয়, যিনি মানকুল ও মাকুল উভয় শাস্ত্রের জ্ঞানে সমানভাবে পারদর্শী।’ (শরহুল খাদ্বরি আলা শরহি ইবনি আকিল, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৬, তাহকিক : সাঈদ হামাদান)।

‘শরহে জামি’ গ্রন্থের ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘সুয়ালে কাবুলি’র টীকায় এসেছে—
কেউ যদি প্রশ্ন করে জামি (রহ.) ইবনে হাজিব (রহ.)-কে আল্লামা বলেছেন। অথচ তা ঠিক নয়। কারণ তিনি তো শুধু মানকুলাত শাস্ত্রের আলেম ছিলেন। আর আল্লামা হতে গেলে মাকুলাত ও মানকুলাত উভয় শাস্ত্রে সমান পারদর্শী হতে হয়।

জবাবে বলা হবে, যদিও ইবনে হাজিব মানকুলাতের আলেম হিসেবে প্রসিদ্ধ; কিন্তু মূলত তিনি মাকুলাতেরও আলেম ছিলেন। তবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন মানকুলাতের আলেম হিসেবে। (হাশিয়ায়ে সুওয়ালে কাবুলি, পৃষ্ঠা ২২)

# মানকুলাত ও মাকুলাত কাকে বলে?
- মানকুলাত মানে ওই সব ইলম, যা শ্রুতিনির্ভর এবং নুজুলে ওহির জামানা থেকে পরস্পর ক্রমধারায় বর্ণিত হয়ে এসেছে। আর তা হলো মোট ১২টি শাস্ত্র।
যথা :
১. হাদিস ও আসার।
২. তাফসিরের বৃহৎ (মাসুর) অংশ।
৩. কিরাত শাস্ত্র।
৪. তারিখ বা ইতিহাস।
৫. আসমাউর রিজাল
৬. লুগাত বা শব্দ জ্ঞান।
৭. সরফ বা শব্দের রূপান্তর জ্ঞান।
৮. নাহব বা আরবি বাক্য গঠন।
৯. বালাগাত বা আরবি অলংকার শাস্ত্র।
১০. আকায়েদ ও বিশ্বাস।
১১. ফারায়েদ বা মিরাস।
১২. আশআরুল আরব বা আরব্য কবিতা।

আর মাকুলাত মানে ইজেহাদি ও বুদ্ধিভিত্তিক ইলম। আর তা হলো ছয়টি শাস্ত্র। যথা :
১. ফিকাহ ও উসুলে ফিকাহ
২. তাফসিরের যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা।
৩. উসুলে হাদিস বা হাদিসের মূলনীতি।
৪. মানতেক বা তর্কশাস্ত্র।
৫. ফালসাফা।
৬. কালাম শাস্ত্র।

তাহলে বোঝা গেল, ‘আল্লামা’ মানে ওই আলেম, যিনি সমানহারে
মুফাসসির,
মুহাদ্দিস,
ফকিহ,
উসুলি,
মুতাকাল্লিমে,
কারি,
মুওয়াররিখ (ইসলামী ঐতিহাসিক),
আদিব (আরবি ভাষাবিশেষজ্ঞ),
ফালসাফি ইত্যাদি।

আকাবিরে দেওবন্দের মধ্যে শুধু আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি (রহ.)-এর নামের আগে ‘আল্লামা’ ব্যবহার করা হতো। তিনি ছাড়া কারো নামের আগে দেওবন্দের আকাবিররা ‘আল্লামা’ যোগ করতেন না।

এমনকি কাশ্মীরির উস্তাদ শাইখুল হিন্দ (রহ.)-এর নামের আগেও মাওলানা বলা হতো। তবে তাঁকে ‘বড় মাওলানা’ বলা হতো। পরে ইবরাহিম বিলইয়াবি (রহ.)-এর নামের আগে কোনো কোনো আকাবির আল্লামা ইবরাহিম বিলইয়াবি (রহ.) বলতেন।

ফজলে লোহানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এবং টেলিভিশনের একজন অসাধারণ উপস্থাপক হিসেবে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তার শিক্ষা ও ব...
05/11/2023

ফজলে লোহানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এবং টেলিভিশনের একজন অসাধারণ উপস্থাপক হিসেবে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তার শিক্ষা ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ‘যদি কিছু মনে না করেন’ এর কথা আজও অনেকের মনে পড়ে।’

‘প্রত্যেক মৃত্যুই আমায় ছোট করে ফেলে, জিজ্ঞেস কর না, ওই দুঃখের ঘণ্টাধ্বনি কার মৃত্যুর বারতা ঘোষণা করছে। তোমার জন্যই বাজছে ওই ধ্বনি।’—মৃত্যুর কিছুদিন আগে শেষ অনুষ্ঠানটিতে (‘যদি কিছু মনে না করেন’) লোহানী এ কথাগুলো বলেছিলেন।

সাহিত্যনুরাগী আবু লোহানী ও ফাতেমা লোহানীর মতো পিতা–মাতার সংসারে ফজলে লোহানী কৈশোর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি ও সাহিত্য অঙ্গনের মহান ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পান। ১৯২৮ সালের ১২ মার্চ ফজলে লোহানীর জন্ম। তার পুরো নাম ছিল আবু নাঈম মোহাম্মদ ফজলে আলী খান লোহানী।

আধুনিক বাংলাসাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমান তার আত্মজীবনী ‘কালের ধুলায় লেখা’য় অগত্যা সম্বন্ধে লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে মনে পড়ছে, একদা সাড়া জাগানো ফজলে লোহানী সম্পাদিত মাসিক ‘অগত্যা’র কথা। এ পত্রিকাটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন ফজলে লোহানীর অগ্রজ ফতেহ লোহানী। মুস্তাফা নূরউল ইসলাম ‘অগত্যা’র অন্যতম চালিকাশক্তি ছিলেন। ফজলে লোহানী এবং মুস্তাফা নূরউল ইসলামের লেখনী থেকে নিঃসৃত হতো অনেক রসালো রচনা, নানা চুটকি। ফতেহ লোহানী ছদ্মনামে নিয়মিত লিখতেন অনুজের পত্রিকায়। সেসব লেখায় প্রচুর হাসি–মশকরা থাকত। বহু পাঠক ‘অগত্যা’ পড়তেন বিমল আনন্দ লাভের জন্য। হাসি–মশকরা উদ্দিষ্ট ব্যক্তিরা বেজায় চটতেন, সন্দেহ নেই। ১৯৫২’র বাংলা ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারীদের ভেতর ফজলে লোহানী ছিলেন একজন অগ্রণী সৈনিক। এ সময় তিনি রচনা করেন বহুল আলোচিত কবিতা ‘একুশের কবিতা’। ‘একুশের কবিতা’ সুরকার খান আতাউর রহমানের সুরে জনপ্রিয় গানে পরিণত হয় এবং দেশবাসী ব্যাপকভাবে একুশের চেতনাকে উজ্জীবিত করে।

ফজলে লোহানীঃ জন্মঃ ১২ই মার্চ, ১৯২৮ - মৃত্যুঃ ৩০শে অক্টোবর, ১৯৮৫। দেখতে লোকটা মোটেও সুদর্শন ছিলেন না। চেহারা এবড়ো-থেবড়ো, ...
05/11/2023

ফজলে লোহানীঃ
জন্মঃ ১২ই মার্চ, ১৯২৮ - মৃত্যুঃ ৩০শে অক্টোবর, ১৯৮৫। দেখতে লোকটা মোটেও সুদর্শন ছিলেন না। চেহারা এবড়ো-থেবড়ো, মাথায় পরচুলা।

কিন্তু আশ্চর্য মায়াকাড়া ছিল তার চাহনি। তারচেয়ে চমৎকার ছিল তার কথা বলার ভঙ্গি আর অভিব্যক্তি। তিনি বাংলাদেশে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও টিভি সাংবাদিকতার জনক সেই ফজলে লোহানী।

সাংবাদিক-সাহিত্যিক-চলচ্চিত্র প্রযোজক এতোসব পরিচয় ঢাকা পড়ে গিয়েছিল তার 'যদি কিছু মনে না করেন'-এর আড়ালে। হ্যাঁ, টিভি মিডিয়ার ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের জনক তিনি। বাংলাদেশের টিভি মিডিয়ার প্রথম জনপ্রিয় উপস্থাপক। আজও তার গড়ে তোলা কাঠামোতেই ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সব ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান।

১৯২৮ সালের ১২ মার্চ সিরাজগঞ্জ জেলার কাউলিয়া গ্রামে এক শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ফজলে লোহানী। তার বাবা আবু লোহানী ছিলেন সেই সময়ের সুপরিচিত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। মা ফাতেমা লোহানী ছিলেন কলকাতা করপোরেশন স্কুলের শিক্ষিকা।

ফজলে লোহানী ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, লেখক, টিভি উপস্থাপক ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। বড় ভাই ফতেহ লোহানী ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা, আবৃত্তিকার, চিত্রপরিচালক, সাহিত্যিক, অনুবাদক ও বেতার ব্যক্তিত্ব।

ফজলে লোহানী সিরাজগঞ্জ বিএল স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে এমএসসিতে ভর্তি হলেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেননি। ভারত বিভাগের পর তিনি অন্য কয়েকজনের সাথে ঢাকা থেকে সাপ্তাহিক পূর্ববাংলা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের সাথে যুক্ত হন। ১৯৪৯ সালে তার সম্পাদনায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক মাসিক পত্রিকা অগত্যা।

পঞ্চাশের দশকে ফজলে লোহানী ইংল্যান্ড চলে যান এবং লন্ডনের বিবিসি’র ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে চাকরি করেন।

ষাটের দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে ফিরে এসে ফজলে লোহানী সাংবাদিকতা ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। এ সময় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং মওলানা ভাসানীর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৭ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনে শিক্ষা ও বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ও পরিচালনা করে সুপরিচিত হয়ে উঠেন। তবে তুমুল জনপ্রিয়তা পান নিজের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘যদি কিছু মনে না করেন' ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করে। অনুষ্ঠানটি ১৯৭৯ সালে থেকে তার মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত ছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে।

আজকের সময়ে তো প্রতিদিনই বিভিন্ন চ্যানেলে ডজন ডজন টিভি রিপোর্টিং চোখে পড়ে। বাংলাদেশ টেলিভিশন মিডিয়ার ইতিহাসে সত্যিকার অর্থে টিভি রিপোর্টিং চালু করেন ফজলে লোহানী। ‌প্রতি পনের দিন পর পর বিনোদনমূলক নানা আয়োজনে ভরপুর 'যদি কিছু মনে না করেন' অনুষ্ঠান নিয়ে দর্শকদের সামনে আসতেন তিনি। অনুষ্ঠানে শেষ অংশে থাকতো একটি করে টিভি রিপোর্টিং।

ফজলে লোহানীর এই টিভি রিপোর্টিং দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ টিভি দর্শক বিপুল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতেন। বিশ্বখ্যাত টিভি রিপোর্টারদের মতোই গভীর অভিব্যক্তি নিয়ে হৃদয়ছোঁয়া ভঙ্গিমায় তার করা টিভি রিপোর্টিং মানুষকে কখনো হাসাতো, কখনো কাঁদাতো, কখনোবা করে তুলতো বেদনা ভাড়াক্রান্ত কিংবা ক্ষুব্ধ। সেই আশির দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশে টিভি রিপোর্টিং এর প্রবর্তন ঘটানোর মতো যুগান্তকারী কাজ তিনি করেছেন। এসিড-নিক্ষেপের ভয়াবহতা নিয়ে সচেতনতার শুরুটা তাঁর হাত ধরেই। বাল্য বিবাহর বিরুদ্ধেও তিনিন গনমত তৈরি করেন।

ফজলে লোহানী লেখক হিসেবে গল্প আর প্রবন্ধ লিখতেন। পেনশন নামে একটি সৃজনশীল চলচ্চিত্রও তিনি প্রযোজনা করেন।

প্রসঙ্গত, বিবিসির 'ইউ আস্ক ফর ইট' নামে একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের অনুসরণে প্রয়াত ফজলে লোহানী বিটিভির জন্য “যদি কিছু মনে না করেন” নামে ঐ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি করতেন। সে সময় হানিফ সংকেত ছিলেন একজন কৌতুকাভিনেতা এবং 'যদি কিছু মনে না করেন' অনুষ্ঠানে তিনি ফজলে লোহানীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। দর্শক সারি থেকে তাকে টিভিপর্দায় নিয়ে আসেন ফজলে লোহানী।

ফজলে লোহানী প্রয়াত হওয়ার পর হানিফ সংকেত এখনকার সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন 'ইত্যাদি' অনুষ্ঠানটি শুরু করেন। তার অনুষ্ঠানটিতেও রয়েছে 'যদি কিছু মনে না করেন' অনুষ্ঠানটির কিছুটা প্রভাব।

ফজলে লোহানী ১৯৮৫ সালের ৩০ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৫৮ বছর বয়সে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন । তার মৃত্যুতে সে সময় টিভি দশর্করা শোকাচ্ছন্ন হয়ে উঠেছিল।

টিভি মিডিয়া কাজ করা আজকের প্রজন্মের অনেক নির্মাতাই হয়তো ফজলে লোহানী সম্পর্কে জানেন না। কিন্তু যারা পথ তৈরি করেছে এবং পথ দেখিয়েছে তাদের অবদান অবশ্যই আমাদের স্বীকার করতে হবে। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে হবে ফজলে লোহানীর মতো কৃতিজনদের জীবন ও কর্ম।

05/11/2023

Independence Cup 2023

⚽ Rahamatganj MFS: 4
🥅 Md. Murad- 33 min.
🥅 Samin yasar- 44 & 55 mins.
🥅 Md. Fofiqul- 90+4 mins.

VS

⚽ BD Air Force Football Team: 1
🥅 Md. Jowel Mia- 32 mins.
♦️ Red card: Md. Abudus Sattar

কালো চামড়া / চামড়ার রঙছাত্রকে পড়াতে পড়াতে একটু রাত হয়ে গেলো।ছাত্রের মাকে যখন যখন বললাম- ভাবী, কাউকে দিয়ে আমাকে একটু গলি...
05/11/2023

কালো চামড়া / চামড়ার রঙ

ছাত্রকে পড়াতে পড়াতে একটু রাত হয়ে গেলো।ছাত্রের মাকে যখন যখন বললাম- ভাবী, কাউকে দিয়ে আমাকে একটু গলির মোড় পর্যন্ত এগিয়ে দিতে পারবেন? আসলে এই গলিতে কিছু বখাটে ছেলেরা বসে আড্ডা দেয়, তাই যেতে একটু ভয় লাগে।
আমার কথা শুনে ছাত্রের মা হাসতে হাসতে বললো- তুমি ভয় পাও, নাকি তোমাকে দেখে গলির ছেলেগুলো উল্টা ভয় পায়?
কিছুটা অবাক হয়ে বললাম- মানে!
উনি হেসে বললো- না কিছু না! তোমার গায়ের রঙ যে পরিমাণ কালো, তুমি অন্ধকারে হাঁটলে তোমাকে তো কেউ দেখার কথা না!
ছাত্রীর মায়ের কথার ইঙ্গিতটা ঠিকই বুঝতে পারলাম। তাই কিছু না বলে চুপচাপ বাসা থেকে একাই বের হয়ে গেলাম!
মাঝে-মধ্যে সৃষ্টিকর্তারকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে- হে খোদা, মানুষ রুপে যেহেতু পাঠিয়েছো, তাহলে গায়ের রঙটা একটু ফর্সা বানিয়ে পাঠালে কি এমন ক্ষতি হতো? মানুষের এতো লাঞ্চনা আর সহ্য হয় না!
রাতে যখন খাবার খাচ্ছিলাম, তখন মা কিছুটা ভয়ে ভয়ে বাবাকে বললো- কাল যে ছেলেটা রিতাকে দেখতে আসবে, শুনেছি সেই ছেলেটা নাকি আগেও একটা বিয়ে করেছিলো?
বাবা খেতে খেতে কর্কশ গলায় বললেন- হুম করেছিলো বিয়ে!
-সেই সংসারে নাকি ৬ বছরের একটা সন্তানও আছে?
-হুম আছে!
-জেনে-শুনে এমন একটা ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে আমাদের উচিত হবে?
বাবা প্লেটটা দূরে সরিয়ে মায়ের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো- তোমার মেয়ের জন্য এমন ছেলে পছন্দ করবো না তো রাজকুমার পছন্দ করবো? কে তোমার এই মেয়েকে বিয়ে করতে চাইবে শুনি? মেয়ে পেটে থাকাকালীন কি কয়লা খেতে যে এমন একটা মেয়ে জন্ম দিয়েছো!
একটা কথা কান খুলে শুনে রাখো, লুলা, ল্যাংড়া,কানা যে-ই মেয়েকে পছন্দ করবে, আমি তার সাথেই মেয়েকে বিয়ে দিবো। কোনরকম দায়মুক্ত হতে পারলেই বাঁচি।
বাবার কথা শুনে মায়ের চোখের জল ফেলা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। আর নিজের চোখের জলের কথা বাদেই দিলাম…
পরদিন পাত্রপক্ষ যখন আমাকে দেখতে আসলো, তখন মা নিজ হাতে আমাকে সাজিয়ে দিচ্ছিল। বাবা তড়িঘড়ি করে রুমে ঢুকে মাকে বললো- যেভাবে পারো মেকাপ-টেকাপ দিয়ে হলেও মেয়েকে সাজিয়ে দাও। মেয়েকে কোন রকম পছন্দ করলেই বাঁচি।
এই মুহুর্তে নিজেকে মানুষ না, সজিয়ে-গুজিয়ে কোরবানির হাটে তোলা গরু মনে হচ্ছিলো। গরুকে সুন্দর করে সাজালে ক্রেতাদের যেমন আকর্ষণ বাড়ে, তেমনি আমাকে সাজানো হচ্ছে যেন ছেলে পক্ষ পছন্দ করে।
ছেলে পক্ষ আমাকে দেখে খুব একটা পছন্দ করলো না। বাবার কাছে অনেক টাকা যৌতুক চাইলো, যৌতুকের বিনিময়ে বিয়ে হবে!
পাত্রপক্ষ চলে যাবার পর বাবা আমার কাছে এসে বললো- বাজারে তো বিষ পাওয়া যায় নাকি? খেয়ে মরে যেতে পারিস না?
আমি কিছু না বলে শুধু পাথরের মতো বসে রইলাম --
সৃষ্টিকর্তা বান্দাকে একদিকে অপূর্ণ রাখলে, অন্যদিকে পূর্ণতা বাড়িয়ে দেন। দেখতে অসুন্দর হলেও পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই ছিলাম।
নিজ কানে আশেপাশের মানুষ ছাড়াও, জন্মদাতা বাবার অনেক আপমানসূচক কথা শুনেছি, নিজ চোখে মাকে নিরবে চোখের জল ফেলতে দেখেছি!
নিজেও চোখের জল ফেলেছি, আর পড়াশোনায় মনোযোগ দিয়েছি। বছর খানেক পর আমি সফলও হয়েছি। আজ আমি উর্দ্ধতন সরকারী কর্মকতা।
একদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখি, ছাত্রের মা এসেছে তার ভাইয়ের সাথে আমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে!
এটা শুনে মুচকি হেসে উনাকে বললাম- ভাবী, আপনার ভাই আমাকে অন্ধকারে খুঁজে পাবে তো? আমাকে দেখে কি ভয় পাবে না? যা হোক, বাসায় যখন এসেছেন চা-নাস্তা খেয়ে চলে যান। কথাগুলো শুনে উনি কিছু না বলে মাথা নিঁচু করে চলে গেলো…
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, যে পাত্র আমাকে যৌতুকের বিনিময়ে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সে পাত্র বাসায় এসে হাজির।
বাবাকে বলছে সে কোন কিছু চায় না, শুধু আমাকে বিয়ে করতে চায়। বাবা কিছু বলার আগেই আমি ছেলের দিকে তাকিয়ে বললাম- ঠিক আছে, আমি বিয়ে করতে রাজি। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে, আমি বিয়ের পর চাকরি করবো না!
আমার কথা শুনে ছেলেটা অবাক হয়ে বললো- কেন, চাকরি করলে সমস্যা কি?
আমি তখন বললাম- আমি বিয়ের পর শুধু সংসারে মন দিবো। স্বামীর সেবা-যত্ন করবো, বাইরে চাকরি-বাকরি করতে পারবো না!
ছেলেটা অবাক হয়ে বললো- এতো বড় চাকরিটা না করলে তো হবে না!
রাগী চোখে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বললাম- বাইরে যাওয়ার দরজাটা ওই দিকে, তুই আর এক মিনিটও দাঁড়ালে থাপ্পড় মেরে তোর সবকটা দাঁত ফেলে দিবো! ছেলেটা কিছুটা ভয় পেয়েই বাসা থেকে দ্রুত পায়ে বের হয়ে গেলো।
বাবা আমার কাছে এসে বললো- তুই কি বিয়ে করবি না?
আমি বললাম- অবশ্যই বিয়ে করবো, যদি কোন ছেলে আমাকে চামড়া দেখে বিবেচনা না করে, আমার চাকরির প্রতি লোভ না করে, তাকেই বিয়ে করবো।
-কিন্তু মা…
বাবাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম- বাবা, আমি দেখতে কালো হই আর যেমন-ই হই না কেন, আমি তো তোমারই মেয়ে!
মানলাম বাবা হিসেবে আমাকে নিয়ে তোমার টেনশন হতো এবং হওয়াটা স্বাভাবিকও। তবুও তুমি কি করে পারতে, নিজের মেয়েকে এতোটা কষ্ট দিয়ে কথা বলতে?
বাবা, সৌন্দর্য্য বা শারীরিক গঠন মানুষের হাতে থাকে না, তবুও ঘরে-বাইরে সব জায়গায় প্রতিনিয়ত অপমানিত হয়েছি।
বাবা কালো মানুষের শরীর থেকে কি পঁচা গন্ধ বের হয় নাকি যে, ওদের দেখলে সভ্য সমাজের মানুষ নাক ছিঁটকায়?
আমার কথা শুনে বাবা যখন চুপ করে রইলো, আর আমি বাবার সামনে থেকে নিজ রুমে চলে গেলাম। জানি, বাবা কান্না করবে। করলে করুক, তবুও বাবা যদি আমার কষ্টটা একটু উপলব্ধি করতে পারে…

- চামড়ার রঙ
(আবুল বাশার পিয়াস)

মানুষের দৈহিক সৌন্দর্য আল্লাহর দান। এটি মানুষের ইচ্ছা ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই এই সৌন্দর্য নিয়ে যেমন গর্ব করার সুযোগ নেই, তেমনি অসৌন্দর্যের জন্য কাউকে তাচ্ছিল্য করার অধিকার কারো নেই। কারো চেহারার সৌন্দর্য ও অসৌন্দর্য নিয়ে মন্তব্য করতে ইসলাম নিষেধ করেছে

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বোলো না, আল্লাহ তার চেহারা কুৎসিত বানিয়েছেন। ’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৮৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ উপমা দেয়, সে যেন চেহারা পরিহার করে। সে যেন না বলে, আল্লাহ তোমার চেহারা কুৎসিত করেছেন এবং তোমার মতো যাদের চেহারা তাদেরও। কেননা আদমকে তার আকৃতিতে তৈরি করেছেন।’ (আস-সিলসিলাতুস সাহিহা : ২/৫১৯)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি মানবজাতিকে সম্মানিত করেছি। স্থলে ও জলে দান করেছি তাদের কর্তৃত্ব। তাদের দিয়েছি উত্তম রিজিক। আমার সৃষ্ট জীবের ভেতর অনেকের ওপর দিয়েছি তাদের শ্রেষ্ঠত্ব।’ (সুরা ইসরা, আয়াত : ৭০)

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘চেহারায় আঘাত করা, চেহারার নিন্দা করা সাধারণভাবে সব মানুষের ব্যাপারেই নিষিদ্ধ।’ (বয়ানু তালবিসুল জাহমিয়্যা : ৬/৫৮২)

আবু মুসা আশয়ারী রা. থেকে একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। রাসুল সা. বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা আদমকে এক মুঠো মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এই মাটি তিনি জমিনের সব জায়গা থেকে নিয়েছেন, যার কারণে আদম সন্তান হয়েছে জমিনের প্রকৃতির মতো, কেউ লাল, কেউ কালো, কেউ সাদা ও কেউ হলুদ এমন নানা বর্ণের । এভাবে কেউ হয়েছে নরম স্বভাবের, কেউ হয়েছে কঠিন, কেউ ভালো, আবার কেউবা খারাপ।’ (তিরমিযি, ইবনে হিব্বান)

আল্লাহ বলেছেন, ‘আর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য। (সুরা রুম, আয়াত ২২)

আল্লামা শানকিতি রহ. বলেন, ‘একাধিক জায়গায় আল্লাহ তায়ালা পরিষ্কার ঘোষণা করেছেন, মানুষের রং ও বর্ণের পার্থক্য অথবা তার অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যে তারতম্য আল্লাহর সৃষ্টিক্ষমতার বহির্প্রকাশ। এসব বস্তুর বিভিন্ন রং ও বর্ণ তার মহান সৃষ্টি ও নিখুঁত পরিকল্পনার ফসল।’ (আদওয়াউল বায়ান ৬/১৭৩)

সুরা আল ইমরানের ৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তিনি তোমার প্রতি যে গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন, তার মধ্যে আছে বিধান-সংবলিত আয়াত; এগুলোই কিতাবের মূল। আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ’ (যা প্রচ্ছন্ন)। যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, তারা ফেতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে ‘মুতাশাবিহ’ আয়াতসমূহের পেছনে লেগে থাকে, অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে গভীরতা রাখে, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে। আর বুদ্ধিমানেরই উপদেশ গ্রহণ করে।’

প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিন নামটা এসেছে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন থেকে। তবে প্যালেস্টাইন দেশটি কিন্তু বাইবেলের থেকেও পুরনো। ...
02/11/2023

প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিন নামটা এসেছে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন থেকে। তবে প্যালেস্টাইন দেশটি কিন্তু বাইবেলের থেকেও পুরনো। আর এই বিষয়টিকেই জোর দিয়ে দেখিয়েছেন ফিলিস্তিনি লেখক নুর মাসালহা। আমরা যদি ফিলিস্তিন জাতি এবং তাদের সংস্কৃতির আদি উৎসের খোঁজ করতে যাই, তাহলে দেখা যাবে- বাইবেলেরও বহু আগে থেকেই ফিলিস্তিনি জাতির একটি নিজস্ব সংস্কৃতি এবং পরিচয় রয়েছে। সেই ব্রোঞ্জ যুগ থেকে শুরু করে- আমরা যদি বিভিন্ন ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখি- তাহলে দেখা যাবে- বাইবেলের বিভিন্ন ঘটনার কারনে আসলে ফিলিস্তিনের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। ইসরায়েলের সাথে কণফ্লিক্টও এর একটি বড় কারন। তবে ফিলিস্তিনের ইতিহাস আসলে খুবই রোমাঞ্চকর এবং অনেক জটিল। এই বইয়ের পাতায় পাতায় সেই জট খোলা হয়েছে।

সবচেয়ে প্রাচীনকালে যেসব অঞ্চলে মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল তার মধ্যে একটি হলো বর্তমান ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন অঞ্চল। কিন্তু এই অঞ্চলের দখল নিয়ে ইতিহাসের প্রথম থেকেই চলছে একের পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ভেবে অবাক হতে হয়, কয়েক হাজার বছরের পুরনো সেই লড়াই এখনো পর্যন্ত চলছে। তার অবশ্য কারনও রয়েছে। একদিকে থেকে বিবেচনা করলে এই অঞ্চলটি হলো তিনটি মহাদেশের মিলনস্থল, তাই ভূ-রাজনৈতিক কারনে অঞ্চলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কালে কালে বিভিন্ন সাম্রাজ্য এই অঞ্চলকে দখলে রাখতে চেয়েছে।

প্রাচীন মিশরীয়রা, প্রাচীন পার্সিয়ানরা, আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট, রোমান সাম্রাজ্য, মধ্যযুগীয় মুসলিম রাজবংশ, ক্রুসেডাররা , অটোম্যান সাম্রাজ্য, আর একদম হাল আমলে এসে ব্রিটিস সাম্রাজ্য এই অঞ্চল শাসন করেছে। ব্রিটিশরা এই অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার পর সারা বিশ্বের ইহুদিরা এই এলাকার একটি বড় অংশ দখল করে তাদের নিজেদের জাতির জন্য “ইসরায়েল রাষ্ট্র” স্থাপন করে। আর এরপর থেকে লেগেই আছে বিখ্যাত ইসরায়েল - প্যালেস্টাইন যুদ্ধ।

কিন্তু কারা আসলে এই অঞ্চলের আসল দাবীদার? এই প্রশ্নটির উত্তর জানতে হলে আপনাকে এই অঞ্চলের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে সেই কয়েক হাজার বছর আগের থেকে। আর সেই কাজটিই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করেছেন প্যালেস্টাইন বংশোদ্ভুত লেখক নুর মাসালহা। তিনি ইংল্যান্ডের সেন্ট ম্যারিস বিশ্ববিদ্যায়ের ইতিহাসের প্রফেসর।

ইসরায়েলের ইহুদিরা মনে করে যে, প্যালেস্টাইনের বাসিন্দারা এই অঞ্চলে নতুন এসে বসতি গড়েছে, আর ইহুদিরা নিজেরা হলো এই অঞ্চলের আদি বাসিন্দা। কিন্তু নুর মাসলাহা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। তিনি প্রচুর পরিমান প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ ও প্রাচীন লিপির সাহায্যে দেখিয়েছেন যে- প্যালেস্টাইন ধারনাটাই আসলে বাইবেলের প্যালেস্টাইনের চেয়ে অনেক পুরনো। অর্থাৎ ইহুদিরা ওল্ড টেস্টামেনের রেফারেন্স দিয়ে যে ইতিহাস বলে, আসলে এই অঞ্চলের ইতিহাস আরও বেশি পুরনো। তার মানে ওল্ড টেস্টামেনে উল্লিখিত সময়ে আদি ইহুদি গোষ্ঠী যখন এই অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করে, তার আগের থেকেই এই অঞ্চলে প্যালেস্টাইনের জনগন বসবাস করত। তিনি ব্রোঞ্জ যুগ থেকে শুরু করে আধুনিক যুগ পর্যন্ত প্যালেস্টাইন অঞ্চলের ইতিহাসকে একদম ছবির মত করে তুলে ধরেছেন।

লেখক একে তো ইতিহাসের প্রফেসর, আর তার উপর তিনি নিজেই প্যালেস্টাইনের বংশোদ্ভূত। ফলে বুঝতেই পারছেন তিনি কতটা নিষ্ঠার সাথে এই অঞ্চলের সুপ্রাচীন ও গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেছেন। এই অঞ্চলের ইতিহাস বস্তুনিষ্ঠভাবে জানতে হলে এই বইটি কোনভাবেই মিস করা উচিৎ হবে না।

Palestine: A Four Thousand Year History
Author: Nur-eldeen Masalha

Address

Madina
Medina

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Daily Madina posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Daily Madina:

Videos

Share


Other News & Media Websites in Medina

Show All