25/05/2024
গোসলখানায় মিতু গোসল করা অবস্থায় দরজা ঠেলে আয়ান ঢুকে পড়তেই হতবাক হয়ে কাপড় টেনে শ*রীরে জড়ি*য়ে নিয়ে মিতু বললো– এ কেমন অসভ্যতা আয়ান, একটা মেয়ে গোসল করছে আর তুমি ফট করে সেখানে ঢুকে পড়বে!
আয়ান পকেট থেকে একটা প্যাকেট বের করে মিতুর হাতে দিয়ে বললো,– এতে জ*ন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি আছে, কি করবো মন যে আর মানে না, তোকে কাছে পেতে হবে এবং আজ রাতেই।
মিতু অবাক হয়ে বিস্ফা*রিত চোখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়ান হেসে ফেলে বললো– কিরে ভয় পেয়ে গেলি তো, হাহাহা, ভয় নেই, প্যাকেটে আন্টির জন্য কিসের যেন ওষুধ দিয়ে পাঠিয়েছে আঙ্কেল।
মিতু বললো,– তাই বলে এভাবে গোসলখানায় ঢুকে দিতে হবে! অপেক্ষা করলে কি হতো?
: মিতু আমিও আমার অষুধ দেখে নিলাম।
: গোসলখানার দরজার লকটা ন*ষ্ট হয়ে গেছে তাই সুযোগটা পেলে আয়ান।
: সুযোগ আমি তৈরি করে নিয়েছি মিতু, লকটা আমিই ন*ষ্ট করে রেখেছি হা হা হা।
: অসভ্য একটা।
: অসভ্য নয় মিতু, প্রেমিক।
: হুম সাইকো প্রেমিক।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বাসায় মিতু এবং আয়ান ছাড়া কেউ নেই।
বিকেলে সুযোগ বুঝে মিতুকে ঝাপটে ধরে পরপর কয়েকবার ইচ্ছে করে মিতুর ঠোঁটে চু*মু খেল আয়ান, মিতুর শরীর কাঁপ*ছে আর বিস্ফা*রিত চোখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে হয়তো এক অন্য আয়ানকে দেখে অবাক হচ্ছে ভীষণ!
আবারও মিতুর ঠোঁটে চু*মু খেয়ে আয়ান বলল,– কিছু স্মৃতি কখনও ভোলা যায়না মিতু, আমি তেমন কিছু স্মৃতি আজ তোমায় দিলাম, চাইলেই ভুলতে পারবে না।
মিতু কম্পিত কণ্ঠে বললো,– আমি ভাইয়াকে সবকিছু বলে দেবো।
মিতুর কথা শুনে আয়ান হেসে ফেলে বলল,– এটা করতে তুমিই আমায় বাধ্য করেছো মিতু, ভালোবাসা জিনিসটা নিয়ে খেলতে নেই, যতটা পোড়াবে, ততটাই পুড়বে, অন্তত আমার বিষয়ে আমি বলতে পারি, ভালো যখন বেসেই ফেলেছি, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে তোমাকে আমি আমার করেই ছাড়বো, এই যে অসংখ্য বার তোমার ঠোঁ*টে আমার ঠোঁ*ট স্পর্শ করালাম, কারণ কি জানো, অন্য কাউকে নিয়ে ওমন কিছু ভাবতে গেলেও যেন এই স্প*র্শ আমার কথা তোমায় মনে করিয়ে দেয়।
মিতুর চোখ মুখ রাগে ভয়ে লাল হয়ে আছে, মনে হচ্ছে এক্ষুনি আয়ানকে গিলে খাবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে মিতু বললো,– জোর করে চু*মু খেয়ে নিজেকে বাহাদুর প্রমাণ করলেন?! এভাবে কারো মন পাওয়া যায়না।
আয়ান মিতুর চোখে চোখ রেখে বলল,– মিতু, যখন একটা মানুষ কারো প্রেমে পড়ে, তখন প্রেমকে ঘিরে অনেকগুলো স্বপ্ন মিলে একটা প্রেমের পৃথিবী তৈরি হয়। সেই স্বপ্ন গুলোর কিছু থাকে স্পর্শের, কিছু মেলামেশার, কিন্তু একথা কেউ প্রকাশ করেনা, ল*জ্জায় হয়তো। কিন্তু প্রত্যেকেই রোজ তার প্রেমিক অথবা প্রেমিকার ঠোঁ*টে হাজারটা চু*মু খায় মনে মনে। আদরে আদরে মাতিয়ে তোলে কল্পনায়। শুধুমাত্র মোবাইল যদি নিজে সাক্ষী দিতে পারতো, তবে লক্ষ কোটি চু*মুর কথা প্রকাশিত হতো সেই কবেই, ফোনে ফোনে হয়ে যাওয়া কত বাসর ঘরের গল্প পত্রিকায় প্রকাশিত হতো! ভাগ্য ভালো যে মোবাইল আমাদের কথোপকথন আদান প্রদান করতে পারলেও নিজে কিছু বলতে পারেনা। আমার কথা শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্য।
মিতু চুপচাপ আয়ানের কথা শুনছে নীরবে, আর ফর্সা গালে রাগ জমে লাল হয়ে আছে তার।
এক টানে মিতুকে বুকে এনে শক্ত করে চেপে ধরে বলল,– এই যে যৌ*বন, এই যে তোমার সমুন্নত বক্ষ যুগল স্প*র্শ করেছে আমার বু*ক, আমি এসব নিয়ে ভাবছি না, ভাবছি আমার ভালোবাসার মানুষটা আমার বু*কেই আছে, এটাই প্রকৃত সুখ।
আয়ানের বু*কে মিতুর বু*ক লেগে আছে, মিতুর হৃৎস্প*ন্দন আয়ান স্পষ্ট অনুভব করছে, মিতুর হৃৎস্পন্দনের হার স্বাভাবিক এর চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। আয়ান মিতুর পিঠে হাত বুলিয়ে বলল,– এই যে নবযৌ*বনা শরী*রটা তোমার, এই মূহুর্তে আমি যদি চাই, তোমার মন না করলেও তোমার শ*রীর ফেরাতে পারবে না জানো! কিন্তু শরী*রের প্রতি এই টান হয় কিছু সময়ের মাত্র, উত্তেজনা শেষে এটাও শেষ। কিন্তু মনের ভালোবাসা আজীবন একই রকম থাকে, কমেনা বরং বাড়ে দিনে দিনে। সুঠাম সুন্দর দেহের অহংকারে সত্যিকারের ভালোবাসা দূরে ঠেলে দিয়ো না কখনও, পরে পস্তাবে। যে তোমার শরী*রের লোভে পড়ে ভালোবাসার মুখোশের আড়ালে শ*রীরের প্রতি লোভ নিয়ে তোমার জীবনে প্রবেশ করবে, সে তোমাকে ঐ নির্দিষ্ট কয়েক মিনিটের জন্যই ভালো বাসবে, তারপর তার কাছে তুমি মূল্যহীন। তার তুমি আজীবন ঐ কয়েক মিনিটের জন্যই আক*র্ষণীয় হয়ে উঠবে, আবার শারী*রিক চাহিদা মিটে গেলেই মূল্যহীন। এবার তুমি ভেবে বলো, যে তোমাকেই ভালোবাসে তার জীবন সঙ্গী হওয়া ভালো? নাকি শুধু মাত্র তোমার শরী*রের লোভির শয্যা*সঙ্গী?
মিতু আমতা আমতা করে বললো,– এসব বলতে আপনার একটুও ল*জ্জা হয়না?
আয়ান বলল,– মিতু, তুমি আমি দুজনেই প্রাপ্ত বয়স্ক, এটা আমিও যেমন বুঝি, তোমারও বুঝবার কথা। যেজন তোমায় ভালোবাসে তুমি তার হও, ফুল প্যাকেজ পাবে, ভালোবাসা, আদর সোহাগ, সারাজীবনের ভরসা। আর যেজন তোমার চেয়ে তোমার শরীরের প্রতি বেশি আক*র্ষণ বোধ করে, তার কাছে তুমি দামী কেবল মাত্র বিছানায়, কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই চরম সত্যি। হঠাৎ করেই তুমি আমাকে অবহেলা করতে শুরু করলে, দূর্বল হচ্ছো তার প্রতি যে কিনা ইতিপূর্বে কয়েকটা মেয়ের জীবন ন*ষ্ট করেছে। তোমার শরী*রের উষ্ণতা শু*ষে নিয়ে তোমাকে যে সে ছু*ড়ে ফেলবেনা তার গ্যারান্টি কি বলো?
মিতু কিছু বলবে এমন সময় নিচে দরজা খোলার শব্দ...
চলবে...
গল্পঃ সাইকো প্রেমিক। ( প্রথম পর্ব )
হৃদয় চৌধুরী।