03/09/2024
সুন্দর জীবনযাপনের উপায়
ছোট্ট একটি জীবনে হাজার ব্যস্ততার মাঝে নিজেকে একটুখানি সময় প্রায় দেয়াই হয়ে ওঠেনা । জীবনের ঘানি টানতে টানতে আমরা ভুলেই যাই যে সুন্দরভাবে বাঁচাটাও একটি শিল্প । আর এ শিল্পকে রপ্ত করার কিছু সহজ ও সুন্দর উপায়ও রয়েছে । এই সবগুলো উপায় বা এর অর্ধেকও যদি কাজে লাগানো যায়, তবে আপনার জীবনযাপন প্রক্রিয়া হয়ে উঠবে আরও আনন্দময় ! চলুন দেখে নেয়া যাক সুন্দর জীবনযাপনের কয়েকটি উপায়-
০১. প্রতিদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটুন । হাঁটার সময় মুখে মৃদু হাসি ধরে রাখুন, হতাশা নির্মূলে এর চেয়ে ভালো উপার আর হয়না ।
০২. প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট চেষ্টা করুন চুপচাপ বসে থাকতে । এ সময়টা নিজের ও চারপাশের সবকিছুকে নিয়ে মঙ্গলময় কিছু একটা চিন্তা করুন । আপনার ভেতরের ভালোটাকে বেড়ে উঠতে দিন ।
০৩. প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনার সৃষ্টিকর্তার কাছে সারাদিন চলার জন্য একটি দিকনির্দেশনা প্রার্থনা করুন । এতে নিজের উপর বিশ্বাসটা জোরালো হবে । দেখবেন আপনি চাইলেও ভুল পথে পা বাড়াতে পারছেন না ।
০৪. প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ কমিয়ে গাছের ও চাষকৃত খাবার বেশি করে গ্রহণ করুন । কারণ পুষ্টি এতে পুরোটাই পাবেন ।
০৫. সকালবেলায় খালি পেটে গ্রীন টি পান করলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে । তাছাড়া গ্রীন টি তে রয়েছে কিছু ভেষজ গুণ । তবে বিকেলের পর যেকোন ধরণের চা পান থেকে বিরত থাকুন ।নইলে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
০৬. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন । দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান নিশ্চিত করুন । পানি শরীরের ভেতর থেকে সব ধরণের বর্জ বের হতে সাহায্য করে এবং অভ্যন্তরীণ জটিলতা দূর করতে সাহায্য করে ।
০৭. আপনার খাবারের তালিকায় ব্রকলি, আলমন্ড ইত্যাদি রাখুন । মৌসুমী ফল ও শাক-সবজির প্রাধান্য রাখুন আপনার খাবারে ।
০৮. প্রতিদিন অন্তত ৩ জন মানুষকে হাসাতে চেষ্টা করুন । তাহলে আপনি নিজেও অনেক নির্মল আনন্দ পাবেন ।
০৯. আপনার মূল্যবান সময়কে অহেতুক আড্ডা, নেতিবাচক ও অতীত চিন্তা অথবা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরের চিন্তা-ভাবনায় নষ্ট করবেন না । বরং ইতিবাচক বর্তমান চিন্তায় তা নিয়োগ করে ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করুন ।
১০. আধুনিক কালে একটি প্রবাদ খুব জনপ্রিয়, “সকালের নাস্তা খান রাজার মতো, দুপুরের খাবার খান প্রজার মতো আর রাতের খাবার খান ভিক্ষুকের মতো” । প্রবাদটির নিগুঢ় অর্থ হচ্ছে, আমাদের সারাদিন কাজ করার যে শক্তি, তা সকালের নাস্তা থেকেই অর্জিত হয়ে থাকে । তাই সকালের নাস্তা খেতে হয় পেট পুরে । দুপুরবেলায় তার চেয়ে কিছু কম আর রাতে খেতে হয় সবচেয়ে কম ।
১১. জীবনটা খুব সহজ নয়, তারপরও জীবন অনেক সুন্দর ! কথাটাকে বিশ্বাস করে এগিয়ে চলুন ।
১২. ছোট এই জীবনটা কাউকে ঘৃণা করে কাটিয়ে দেয়াটা বোধহয় খুব বুদ্ধিমানের কাজ নয় । ছোটখাটো বিষয়ে ক্ষমা করে দিয়ে যদি শান্তি বজায় থাকে তবে ক্ষতি কী ?
১৩. সবকিছুকে এতটা সিরিয়াসলি নেয়ার কী দরকার ? কেউ নেয় না ! কাজেই রিল্যাক্স করুন, শান্ত থাকুন । উত্তেজিত হলেই বিপদ !
১৪. প্রতিটা তর্কে জেতা আপনার জন্য জরুরি নয় । ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা দেখলে এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম ।
১৫. অতীতেই শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করুন, যাতে তা আপনার সুন্দর বর্তমানকে কলুষিত করতে না পারে ।
১৬. নিজের জীবনকে অন্যের জীবনের সাথে তুলনা করতে যাবেন না । অন্যেরা কোন উপায়ে জীবনযাপন করে, সে সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা নেই ।
১৭. আপনার নিজের সুখ-শান্তি আপনার হাতেই । কেউ তা গড়ে দিতে পারবে না ।
১৮. জীবনের তথাকথিত সকল সমস্যায় নিজেকে একটি প্রশ্ন করুন, “৫ বছর পর এই সমস্যা কী আর থাকবে ?” মন শান্ত হয়ে আসবে ।
১৯. “ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ” কথাটাকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে আপনার চেয়ে যারা দুর্ভাগা, তাদের সাহায্য করুন । জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পাবেন ।
২০. অন্যেরা আপনাকে নিয়ে কী ভাবছে, তাতে আপনার কিছু আসে যায় না । অন্যের প্রশংসাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজে লাগান আর সমালোচনাগুলোকে মেনে নেয়ার চেষ্টা করুন । সমালোচনায় নিজের ভুলগুলোকে শুধরানোর সুযোগ পাবেন ।
২১. সময় সবকিছুকে ধুয়ে দেয় । পরিস্থিতি যত খারাপ বা ভালই হোক না কেন, সময়ের সাথে সাথে তা পরিবর্তিত হয় । আপনার কর্তব্য শুধু উদ্দীপনা ধরে রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা ।
২২.আপনি বিপদে বা অসুখে পড়লে আপনার চাকরি আপনার দায়িত্ব নেবে না, তবে বন্ধুবান্ধবরা নিতে পারে । কাজেই বন্ধু-বান্ধবের সান্নিধ্যে থাকার চেষ্টা করুন ।
২৩. এক জীবনে আপনি অনেক পেয়েছেন বা পাবেন । অকারণে ঈর্ষা করাটা তাই সময় নষ্ট আর নিজের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই না ।
২৪.প্রতিরাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিন জীবনে যা কিছু পেয়েছেন তার জন্য আর প্রার্থনা করুন আগামী দিনটির জন্য ।
২৫. উপরোক্ত কথাগুলো পৌঁছে দিন অন্য কারো কাছে তাকে সুন্দরভাবে বাঁচতে সাহায্য করার জন্য ।
অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য ।