
31/12/2024
২০২৪ চলে যাচ্ছে কিন্তু ইতিহাস রেখে 📜
আল্লাহ শহীদের জাগায় গাজি বানিয়েছেন
আলহামদুলিল্লাহ ☺️✨
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমার কাহিনি সংক্ষেপে ‼️
আগেই বলি গত ৭ মাস যাবত আমার ফোন নেই
আন্দোলনের সময় ও ছিল না।
জুলাইয়ে ৩ তারখে শুরু হয় " কোঠা আন্দোলন "
শাহাবাগ ৪ রাস্তার মোরে আমিও একটি কাজে
অই জায়গাই যাই এবং এই বিষয় জানতে পারি।
১০ জুলাই হতে আমি আন্দোলনে যাওয়া শুরু করি।
কাজের জন্য বেশি সময় থাকা হতো নাহ ১/২ ঘন্টা
১৪ জুলাই পর্যন্ত।
১৫ জুলাই আমি আমার বন্ধু রিফাতের বাসায়
যাই অদের অই খানেই সারা দিন থকা হয়
রাতে এসে আম্মুর ফোন দিয়ে দেখি
ছাত্রলীগের পশুগুলা নিরস্ত্র ছাত্রদেরকে
মারধর করছে এবং গুরুতর আঘাত করছে
এটা দেখে মাথা পুরা গরম হয়ে যায়।
এই ঘটনার পর "কোঠা আন্দোলন" রূপান্তর হয়
" ৯ দফা আন্দোলনে"
১৬ জুলাই আমি সাইকেল নিয়ে
ঢাকা মেডিকেল যাই দেখতে
কি অবস্থা ছাত্রদের গিয়ে দেখি খুবই খারাপ।
এটা দেখে ১৬ তারিখ থেকেই আন্দোলনে
সকাল থেকে রাত থাকা শুরু করি
বিভিন্ন জাগায়। যেহেতু সাইকেল ছিল।
"ফ্যাসিস্ট সরকার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ
করে দিয়েছিল পুরা বাংলাদেশের।"
আমাদের এলাকার হাতে গোনা
কয়েকজন আমরা যারা আন্দোলনে যেতাম
এলাকার ভিতরের রাস্তাগুলো দিয়ে যেতাম ।
কারণ আমাদের এলাকা জুরাইনে আওয়ামী লীগের
বড় নেতাদের আড্ডা ছিল। সব রাস্তার মুখে ওদের
চাঙ্গুপাঙ্কু থাকতো।
১৬ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত
যাত্রাবাড়ী , কাজলা,
ধনিয়া, শনি আখড়াতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আন্দোলনে ছিলাম । এর মাঝে কত মানুষের রক্ত🩸
যে আমার হাতে গায়ে লাগছে এবং আমারও শরীরের অনেক জায়গায় ক্ষত হয়ে গিয়েছিল ছিটা গুলিতে।
২০ তারিখ রাত্রে ১২:০০ টার পরে
"ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পুরো দেশে কারফিউ দিয়ে দেয় সব জায়গায় সেনাবাহিনী মোতায়ন করে। "
২১ জুলাই হতে ২৪ জুলাই আন্দোলন খুবই শীতল ছিল
তখন আমি সাইকেল নিয়ে পুরো ঢাকা ঘুরে বেড়াইছি।
দেখার জন্য বিভিন্ন জায়গাতে পরিস্থিতি কেমন
দেখলাম পুরা শহর স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।
২৫ জুলাই থেকে " ৯ দফা আন্দোলন " আবার
সক্রিয় হওয়া শুরু করে।
২৫ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত
পুরো বাংলাদেশে ৯ দফা আন্দোলন
শুরু হয়ে গেছে এরমধ্যে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার
অনেক ভাই বোনদেরকে হত্যা করিয়েছে পুলিশ, বিজিবি এবং ইন্ডিয়ার গোয়েন্দাদের কে দিয়ে। সেনাবাহিনী
আন্দোলনকারীদের কিছু বলছিল না নিজেদের অস্থায়ী ক্যাম্পেই ছিল।
৩ আগস্ট শহীদ মিনারে সমন্বয়করা ডাক দেয়
এবং " ৯ দফা আন্দোলন " রূপান্তর হয়ে ১ দফা আন্দোলনে পরিণত হয়। শহীদ মিনারে আমি এবং
আমার ৩ বন্ধু গিয়েছিলাম,
৩ ও ৪ আগস্ট সবার স্লোগান একটাই ছিল
দফা ১ দাবি ১ হাসিনার পদত্যাগ । ৬ আগস্ট
লংমার্চ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু কিছু ষড়যন্ত্র
করতেছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার তাই
লংমার্চ ৫ আগস্টে নিয়ে আসা হয় ।
৫ই আগস্ট এই চিন্তা ভাবনা নিয়ে বার হই
আল্লাহ এতদিন বাঁচে রাখছে আজ হয়তো শহীদ হয়ে
যাব কিন্তু দফা পূরণ করিয়া ছাড়বো। আমার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে লংমার্চের জন্য রওনা দেই, প্রথমে শনি আখড়া, তারপর ধনিয়া, তারপর কাজলা, তারপর যাত্রাবাড়ী, যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ গুলি ছুটতেছে উরাধুরা
অনেকের গায়ে লাগছে ওই সময়েই
সেনাবাহিনী চলে আসে । সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলে
আবার লংমার্চের উদ্দেশ্যে রওনা, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, পল্টন, সচিবালয়, রমনা এরপর শাহবাগ।
শাহবাগের রোডেই জানতে পারি ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়েছে । যেই জায়গায় আন্দোলনের সাথে জড়িত হই
সেই জায়গায় জানতে পারি আমাদের আন্দোলন সফল
কি যে একটা শান্তি লাগছে বইলা বুঝাইতে পারবো না 😌।
এই খবরের পরে বন্ধুর ফোন দিয়ে কিছু ছবি তুলি,
তারপর রওনা দেই গণভবন ও সংসদ ভবনের উদ্দেশ্য।
ওইদিন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কিলো হাটাই হইছে। আসার সময় ঢাকা মেডিকেল হয়ে আসি ঢাকা মেডিকেলের
মর্গে লাশ রাখার জায়গা হইতে ছিল না এত পরিমান
লাশ আসতেছিল মিনিটের মধ্যে। 😢
খাতা কলমে দেখতেছেন ২০০০ শহীদ এবং
৩০০০০ আহত কিন্তু সংখ্যা এর থেকে নিশ্চয়ই বেশি।
জুলাইয়ের পুরো মাস আন্দোলনে এবং এরপর ৫ই আগস্ট এর পর থেকে বিভিন্ন সংস্কার কাজে সবার সহযোগিতা করা এবং বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণের কাজ এবং ত্রাণ দিয়ে আসা আরও অনেক কাজের সম্পূর্ণ করি। যেখানে সাহায্য দরকার সেখানে সাহায্য করা এবং যেখানে নেতৃত্ব দেওয়ার সেখানে নেতৃত্ব দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।
জুলাই,আগস্ট,সেপ্টেম্বর এই ৩ মাস
কাজ এবং পড়াশোনার থেকে একদম দূরে ছিলাম
এরপর আস্তে আস্তে আবার আগের জীবনে ফিরে আসি।
আন্দোলনের সময় আমার তেমন কোন ছবি নাই।
তোলার প্রয়োজনই মনে করি নাই ।যা তুলেছিলাম বন্ধুর ফোনে ৫ই আগস্ট এ ফ্যাসিস সরকার পালানোর পর।
আমি আন্দোলন করেছি এর মানি এই না যে আমার রাজনীতি করতে হবে। আমার কোনো ইচ্ছাই নেই রাজনীতি করার। নিজের ক্যারিয়ারে ফোকাস করবো
ইনশা'আল্লাহ আশা ভালো কিছু হবে। আমি নিজে প্রতিষ্ঠিত হইতে পারলে অনেকে সাহায্য করতে পারো।
এই বছরের শেষ দিন আজ তাই ভাবলাম টাইমলাইনে রেখে দেই এই মুহূর্তগুলো........
ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য ❤️🩹